বাংলাদেশ ভ্রমণ গাইড- ৪ | কখন বেড়াবেন এবং কী খাবেন |

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৬/০৮/২০১০ - ৮:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কখন বেড়াবেন

ষড়ঋতু এখন শুধু পঞ্জিকার পাতায়, কার্যত বাংলাদেশে ঋতু বা মৌসুম চোখে পড়ে ৪টি—বর্ষা (জুন-সেপ্টেম্বর), শরৎ (অক্টোবর-নভেম্বর), শীত (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি), এবং গ্রীষ্ম মৌসুম (মার্চ-মে)।

ঘোরাঘুরির শ্রেষ্ঠ সময় মধ্য-অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ঘন নীল আকাশ, রোদেলা দিন এবং শুষ্ক আবহাওয়া নিয়ে এই সময় দিনের গড় তাপমাত্রা থাকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এপ্রিলের মধ্যে এই তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত, আর্দ্রতা অসহনীয় হয়ে ওঠে এবং শিলাঝড়ও বিরল নয় এ সময়।

সূত্র : www.iexplore.com

বাংলাদেশ গ্রীষ্মপ্রধান দেশ। শীত মৌসুমে সাধারণত তাপমাত্রা ৯-২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গ্রীষ্ম মৌসুমে ২১-৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠা-নামা করে। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২৫৪ সে.মি. (১০০ ইঞ্চি)-এর বেশি হলেও বৃষ্টির পরিমাণ ওঠা-নামা করে পশ্চিমাঞ্চলে ১৬০-২০০ সে.মি., দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ২০০-৪০০ সে.মি. এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২৫০-৪০০ সে.মি. পর্যন্ত।

ভ্যাপসা গরম, সেই সাথে মৌসুমি বৃষ্টিপাত বজায় থাকে মে-র শেষ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। অবশ্য তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে মধ্য-মার্চ থেকে মে পর্যন্ত। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টি ততটা নির্ভরযোগ্য নয়, কিন্তু প্রায়ই বেশ ভারি বর্ষণ হয় এ সময় এবং সাধারণত এর সাথে বঙ্গোপসাগর থেকে সৃষ্টি হওয়া ভয়ংকর মৌসুমি ঘূর্ণিঝড় যুক্ত হয়। গড়ে প্রতি ৩ বছরে একটি প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাংলাদেশে। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে মে-জুন এবং অক্টোবর-নভেম্বরে। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা কম থাকে, তবে বিশেষত উপকূলবর্তী এলাকাগুলোয় এটি একেবারে বিরল নয়। এ ধরনের ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতিও হয় ব্যাপক, বলার অপেক্ষা রাখে না এ ধরনের ঝড়ে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। বাংলাদেশের আবহাওয়ার ধরন অনেকটাই যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা, মিসিসিপি এবং লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের মতো।

সূত্র : www.uni.edu/gai/Bangladesh

যদিও গরমের মৌসুমে ভারতের অনেক অঙ্গরাজ্যের তুলনায় বাংলাদেশে তাপমাত্রা কম থাকে, তবু এই তাপই অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে উচ্চমাত্রার আর্দ্রতার কারণে। এই স্যাঁতসেঁতে, গুমোট আবহাওয়া বজায় থাকে সারা বর্ষা মৌসুমজুড়ে, তবে তাপমাত্রা খুব কমই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সারা বছর ধরে অঞ্চলভেদে তাপমাত্রার তারতম্য খুব একটা দেখা যায় না। গরমের সময়, দেশের অভ্যন্তরে তাপমাত্রা একটু বেশি (ঢাকা—এপ্রিল—সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থাকে সমুদ্র-তীরবর্তী অঞ্চলের (চট্টগ্রাম—এপ্রিল—সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তুলনায়। বর্ষা মৌসুমে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে প্রায়ই, এ কারণে রৌদ্রোজ্জ্বল ঘণ্টার গড়ের দিক থেকে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের অবস্থান বেশ পেছনে (প্রতিদিন মাত্র প্রায় ৪ ঘণ্টা), কিন্তু বছরের বাকি সময়টায় বেশ ভালো (প্রতিদিন প্রায় ৬-৮ ঘণ্টা)।

নিতান্তই প্রয়োজন না হলে রমজানের সময় ভ্রমণে বের না হওয়াটাই ভালো। আত্মপরিশুদ্ধির এই মাসে দিনের খাবার খুঁজে পাওয়া যদি কষ্টকর না-ও হয়, তবু বিব্রতকর হয়ে উঠতে পারে তো বটেই (বিশেষত ছোট শহরে)। কিছু কমদামি হোটেল এ সময় বোর্ডার নেওয়া বন্ধ রাখে।

খরচ হবে কত

মাত্র ৬০৳ দিয়ে পুরো ১টি কক্ষ পেতে পারেন আপনি একাই, ৩০ টাকার বিনিময়ে দারুণ একটি ভূরিভোজ সারা হয়ে যেতে পারে এবং মাত্র ৫ টাকায় নাস্তার পর্ব সম্পূর্ণ করা যায়। পক্ষান্তরে, পাঁচ তারকা হোটেলের বর্ণচ্ছটাও তো কম নেই বাংলাদেশে, বিশেষত ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহরে।

তবে মধ্য পর্যায়ের পর্যটকই বেশি। ৪০০-১০০০ টাকায় থাকার ব্যবস্থা হয়ে যাবে প্রয়োজনীয় সব রকম সুবিধাসহ। ১২০ টাকায় এক বেলা খাবার খেতে পারবেন তৃপ্তির সাথে। পরিবহনের ক্ষেত্রে, হরেক শ্রেণীর লঞ্চ এবং ট্রেন, এবং নানা শ্রেণীর বাস রয়েছে, যা আপনাকে দিচ্ছে মূল্য এবং আরামের অপরিসীম স্বাধীনতা। জুটিদের ক্ষেত্রে, ভালো মানের হোটেলে থাকা, ট্রেনের ১ম শ্রেণীর বগিতে ভ্রমণ এবং রুচিসম্মত রেস্তোরাঁয় খাওয়া—সবই কুলিয়ে যাবে দৈনিক ১০০০ টাকার মধ্যে।

কী খাবেন

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মতোই বাংলাদেশি খাবারও ইতিহাস এবং আঞ্চলিক বৈচিত্র্য দ্বারা প্রভাবিত। বাংলাদেশ একসময় মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল, রন্ধন-প্রণালীতে এখনও সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। মচমচে কাবাব, কোফতা (মাংসের কিমা দ্বারা প্রস্তুত বড়ি বা গুলির ঝোল) এবং সব ধরনের বিরিয়ানি এখানে সহজলভ্য। এই ঐতিহ্যটি দাক্ষিণাত্যের নিরামিষ রান্নাপদ্ধতির সাথে যুক্ত হওয়ায় রসনা চর্চার ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হয়েছে বাঙালির জন্য।

উপাদান এবং বিশেষত্ব

ভুনা অনেক মেনুতেই উপস্থিত থাকে এবং সাধারণত এ রান্নাটির জন্য মাংসকেই বেশি বেছে নেওয়া হয়। আরেকটি সাধারণ ডিশ হলো দোঁপেয়াজা (আক্ষরিক অর্থে দ্বিগুণ পেঁয়াজ), যা মাছ অথবা মাংস সহযোগে পরিবেশিত হয়। সম্পূর্ণ ভেজিটেরিয়ান (নিরামিষ) খাবার খুঁজে পাওয়া মুশকিল হতে পারে কারণ বাংলাদেশের সর্বত্র মাছ বা মাংসকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ভাজি আছে কি না জিজ্ঞেস করুন। ভাজি বলতে যে কোনো ধরনের ভাজা সবজিই হতে পারে, যেমন শিম ভাজি, আলু ভাজি ইত্যাদি।

শুঁটকি, আচার, ডাল, পেঁয়াজ, মরিচ সহযোগেপান্তা ইলিশ 

প্রধান যে ৩টি রাইস ডিশ দেখতে পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে বিরিয়ানি, পোলাও (ভাজা এবং মশলা বিরিয়ানির মতোই, তবে মাংস ছাড়া) এবং সাদা ভাত। এ ছাড়া খিচুরি বেশ জনপ্রিয় খাবার। রেস্তোরাঁয় চিকেন টিক্কা সহজলভ্য এবং পরিবেশিত হয় নান (হাল্কা ফুঁ দেওয়া ময়দার রুটি যা স্যাঁকা হয় তন্দুরি ওভেনে) সহযোগে।

মাছ একটি প্রধান খাদ্য উপাদান কিন্তু নদীর মাছ কমে যাওয়ায় মেনুতে বেশি করে প্রবেশ করছে সামুদ্রিক মাছ। মাছ ঠিকভাবে রান্না হয়েছে কি না নিশ্চিত হোন, বিশেষত মাথা এবং অন্ত্রের ব্যাপারে, কারণ তা কিছু ভয়াবহ পরজীবী বহন করতে পারে।

দুটি মাছ খেতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করবেন হয়তো—ঝলসানো, স্মোকড্ (লবণ ইত্যাদি মিশিয়ে কাঠের ধোঁয়ায় শুকানো হয়েছে এমন) বা ভুনা—ইলিশ অথবা ভেটকি। স্মোকড্ ইলিশ খুবই ভালো, প্রধানত পাঁচতারা হোটেলে পাওয়া যায়। ভেটকি একটি সামুদ্রিক মাছ যার গায়ে কাঁটা কম থাকে। আপনি যেসব মাছ খাবেন তার মধ্যে এটি অন্যতম সেরা এবং মধ্য-পর্যায়ের রেস্তোরাঁয় এটি পরিবেশিত হয় চিংড়ি অথবা কাঁকড়ার ডিশের সাথে।

গরুর মাংস অনেকটাই সহজলভ্য, যদিও গুণগত মান অবস্থান ভেদে ভিন্ন হতে পারে। অনেক ধরনের কাবাব তৈরি হতে দেখা যায়, তার মধ্যে রয়েছে শামি কাবাব, যা মাংস কুঁচি কুঁচি করে ভুনা করা হয় এবং শিষ কাবাব, যা কম মসলাযুক্ত এবং সাধারণত গরুর মাংসে তৈরি।

সাধারণত নাস্তায় পরিবেশন করা হয় ভাজি বা ডালের সাথে রুটি অথবা চাপাতি। সব সময়ই নিরামিষ পাওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে।

মিষ্টির প্রতি বাঙালির রয়েছে স্বভাবজাত ঝোঁক, এবং মিষ্টি-ঠাসা হরেক রকম মিষ্টান্ন সহজলভ্য। রসগোল্লা, কালো জাম, সন্দেশ, মিষ্টি দই, শেমাই, চমচম... এই তালিকাটি সত্যিই অফুরন্ত!

পানীয়

নিরাপদ পানীয় জলের ব্যবস্থা অল্পই আছে দেশে। ঢাকায়, কলের পানি খাওয়া যাবে, তবে অবশ্যই সিদ্ধ অথবা ফিল্টারকৃত হতে হবে। রেস্তোরাঁয়, যদি নলকূপের পানিও সরবরাহ করা হয়, দূষিত হতে পারে গ্লাসের মাধ্যমে।

প্রায় সব জায়গায় বোতলজাত পানি পাওয়া সম্ভব। দেশেই তৈরি হয় বলে দাম তেমন বেশি নয় (১০-২০৳, রেস্তোরাঁয় ২৫৳), কিন্তু অনেক ব্র্যান্ডের বোতলেই দূষিত পানি পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে, জল পরিশ্রুত করার যন্ত্রে সমস্যা দেখা দিলেও তারা উৎপাদন বন্ধ রাখতে চায় না ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয়ে। যখন খোলা স্টল থেকে বোতলজাত পানি ক্রয় করবেন তখন নিশ্চিত হোন যে প্লাস্টিকের সিলটি কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

সাধারণ পানীয়

দেশের প্রায় সর্বত্র প্রতি কাপ চা আলাদাভাবে তৈরি হয়। ফলে ‘চিনি ছাড়া চা’ পেতে কোনো সমস্যা হবে না, কিন্তু যেহেতু কন্ডেন্সড মিল্ক ব্যবহার করা হয় তাই খুব বেশি পার্থক্য হবে না অবশ্য!

কফি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হতে পারে, তাই আপনার ট্রাভেল-ব্যাগে ইন্সট্যান্ট কফি রেখে দিতে পারেন।

টাটকা লাইম সোডা সাধারণভাবে ঢাকার উন্নত রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায়, ঢাকার বাইরে শুধুমাত্র অভিজাত হোটেলগুলোয়। কখনো কখনো পাকস্থলীর অম্লতা (এসিডিটি) উপশমে এটিই শ্রেষ্ঠ পানীয়।

ডাবের পানি পান করা নিরাপদ, সতেজকারক এবং ডায়রিয়ার রোগীর জন্য উপকারী।

লাচ্ছি। দধিজাত এই সতেজকারক পানীয়টি এখনও তেমন জনপ্রিয় হয়নি, তাই খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হতে পারে।

সুরা পান

প্রতিটি প্রধান শহরে অন্তত একটি সরকারি মালিকানাধীন শপ রয়েছে যা অ্যালকোহল বিক্রি করে, কিন্তু সেগুলো কৌশলগত কারণে (ইসলামী মূল্যবোধ যাতে আহত না হয়, সেজন্য!) গুপ্ত স্থানে রয়েছে। ‘বেছে নেওয়া’ যাবে শুধুমাত্র কড়া ড্রিংক, যেমন হুইস্কি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং টেকনাফে আপনি কখনো কখনো এশিয়ান হুইস্কি খুঁজে পেতে পারেন এবং হেইনেকেন অথবা টাইগার বিয়ার গোপনে বিক্রি হয়; প্রতি ক্যান ন্যূনতম ১৮০৳।

হিন্দু এবং আদিবাসীরা সাধারণভাবে অ্যালকোহল বিমুখ নয়, চোলাইকৃত মদ পান করা তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য—যা ঘরেই তৈরি করা হয়, প্রধানত ভাত দিয়ে। চা বাগানগুলোয়, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মচারীই হিন্দু, স্থানীয় মদ পান করা, বিশেষত উৎসবের সময়, খুবই সাধারণ দৃশ্য। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেসব মদ তৈরি হয় তা যেন ধাক্কা মারে উন্মত্ত খচ্চরের মতো!

প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোয় মিলতে পারে তাড়ি, যা মূলত তালের রস থেকে তৈরি। এটি যখন টাটকা তখন বেশ ঠাণ্ডা এবং মিষ্টি, কিন্তু গাজিয়ে তোলা হলেই পরিণত হয় স্থানীয় বিয়ারে। অনেক তাল গাছেই খাঁজ কাটা থাকে রস সংগ্রহ করার জন্য। তাড়ি পাওয়া যাবে শুধুমাত্র আদিবাসী এলাকাগুলোতে। কেসার রোজ একটি গ্রামীণ মদ, তৈরি হয় পুরোনো ঝোলাগুড় থেকে। এটি গরম পানির সাথে মেশানো হয় এবং স্বাদে অনেকটা ব্র্যান্ডি অথবা কনিয়্যাকের মতো।

কোথায় খাবেন

নিম্ন-পর্যায়ের রেস্তোরাঁগুলোয় স্বাস্থ্যবিধির খুব একটা তোয়াক্কা করা হয় না, উদাহরণ হিসেবে, বাড়তি ভাত হাত দিয়ে পরিবেশন করা হতে পারে। মেয়েরা খুব কমই খেয়ে থাকে, তবে তাঁরা সেখানে অবাঞ্ছনীয় নন। কিছু রেস্তোরাঁয় ‘ফ্যামিলি রুম’ আছে। প্রায়ই এটি একটি বক্স মাত্র, এখানে নারী এবং পরিবারসমূহ খাবে বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে এটি নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্যই একটি সুযোগ কিছুটা হলেও খাওয়ার আব্রু রক্ষা করার।

ঢাকায় আপনি দারুণ সব ইন্ডিয়ান, থাই, চাইনিজ এবং কোরিয়ান রেস্তোরাঁও খুঁজে পাবেন, কিন্তু ঢাকার বাইরে ভিন্ন স্বাদের খাবার বলতে শুধু চাইনিজ খাবার (পড়ুন চাইনিজের বাংলাদেশি রূপায়ন), যা আপনি সবখানেই পাবেন, এমনকি ছোট শহরগুলোতেও। অনেকের কাছেই চাইনিজ রেস্তোরাঁর এই প্রাধান্য ধাঁধার মতো মনে হয়, বিশেষ করে যখন হাতে গোনা কয়েকটি চাইনিজ লোক রয়েছে বাংলাদেশে! এসব প্রতিষ্ঠানে ডিশের দাম শুরু হয় ৬০৳ থেকে, কিন্তু ঢাকায় তা আরও ৩ গুন পর্যন্ত বেশি হতে পারে।

জলখাবার

রুটি এবং বিস্কুট সর্বত্র সহজলভ্য, এবং কিছু ছোট শহরে এগুলোই শুধু আপনাকে খাওয়ার অনুভূতি এনে দিতে সক্ষম। ‘সল্ট’ বিস্কুট ততটা নোনতা নয়, মিষ্টির মতো অতটা বৈচিত্র্যও এতে খুঁজে পাওয়া যায় না।

স্থানীয় ফাস্ট ফুড রয়েছে পর্যাপ্ত এবং খুব কম ক্ষেত্রেই মূল্য ৫ টাকার চেয়ে বেশি। চেষ্টা করুন পরিচ্ছন্ন এবং গরম খাবার খুঁজে পেতে।

নিরামিষ খাবার

বাঙালির হেঁশেল ঐতিহ্য বিকশিত হয়েছে প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে, মাংসের অপ্রতুলতার কারণে নিরামিশাষী হওয়াটা তাই প্রায় বাধ্যতামূলকই ছিল। এর অর্থ এই যে আপনি যদি বিচক্ষণ হন তাহলে কিছু উপাদেয় নিরামিষ খাবার খুঁজে পেতে সমর্থ হবেন। ভেজিটেরিয়ান হলে আপনাকে বুঝিয়ে বলতে হবে যে ‘মাংস ছাড়া’ মানে সব ধরনের প্রাণী, যার মধ্যে মাছও অন্তর্ভুক্ত এবং টুকরো-টাকরাও গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক ভেজিটেরিয়ান অভিযোগ করে থাকেন যে দৃশ্যমান নিরামিষ খাবারের মধ্যে তাঁরা মাংসের চিহ্ন খুঁজে পেয়েছেন।

যদি মনে সন্দেহ থাকে তাহলে সব সময়ই আশ্রয় নিতে পারেন তাজা ফলের, বিশাল ব্যাপ্তির কারণে যা শুধুই সান্ত্বনা মাত্র নয়। প্রধান ফল উৎপাদনকারী এলাকার মধ্যে রয়েছে সিলেটের পার্বত্যাঞ্চল, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিভাগ।

রীতিনীতি

বাঙালি খাবার মেঝেতে পরিবেশন করার ঐতিহ্য বহু দিনের। পেতে দেওয়া পাটির ওপর বসেন প্রতিটি লোক। পাটির সম্মুখে বড় একটি গামলা বা কলাপাতা রাখা হয়, যার চতুর্দিকে রাখা হয় বাটিগুলো।

টেবিল-চেয়ারের ব্যবহার দ্রুত বর্ধনশীল এবং রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী। শব্দ করুন, ঢেঁকুর তুলুন, মোটের ওপর, আমোদ করে খান। হাত দিয়ে খাওয়া শুধুই ব্যবহারিক বিষয় নয়, স্বাদ নেওয়ার জন্য জিহ্বায় দেওয়ার আগে মূল্যায়নের কাজটাও এভাবে সারা হয়ে যায়। সতর্কভাবে খাবার চিবান এবং অচর্বণযোগ্য উপাদান, যেমন হাড় রেখে দিন টেবিলের ওপর। ভুলে যান কব্জি ডুবিয়ে খেলে কেমন দেখাবে বা আঙুল চুষে খেলে লোকে কী বলবে। শুধু কাপড়ের হাতা গুটিয়ে নিন এবং শুরু করে দিন।

******
পূর্ববর্তী পর্ব : বাংলাদেশ ভ্রমণ গাইড- ১ | সংস্কৃতি ও স্থাপত্যরীতি |
বাংলাদেশ ভ্রমণ গাইড- ২ | বাংলাদেশ এল কোথা থেকে |

বাংলাদেশ ভ্রমণ গাইড- ৩ | পরিবেশ |

******
ছবি-কৃতজ্ঞতা : ১. www.guardian.co.uk/travel/bangladesh ২. উইকিপিডিয়া
তথ্যসূত্র : lonely planet Bangladesh
www.southtravels.com
www.worldtravelguide.net
wikitravel.org/en/Bangladesh
******
কুটুমবাড়ি


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এমনি জানতে চাইছি, আপনি এই অনুবাদকর্মে উৎসাহী হলেন কেন? শুধুই কি অনুবাদ করছেন নাকি তথ্য যাচাই/সংযোগও করছেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

পিপিদা, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি উত্থাপনের জন্য।

আপনি এই অনুবাদকর্মে উৎসাহী হলেন কেন?

আপনার এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দেয়াটা মুশকিলই। তবে আমার হয়ে একজন সম্মানিত পাঠক ভ্রমণ গাইডের প্রয়োজনীয়তাটা ব্যাখ্যা করেছেন ইতিমধ্যেই, এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্বে এই মন্তব্যে

শুধুই কি অনুবাদ করছেন নাকি তথ্য যাচাই/সংযোগও করছেন?

তথ্য যাচাই এবং সংযোগও করছি, অফকোর্স। অবশ্য যতটুকু প্রয়োজনীয় মনে হচ্ছে ততটুকুই সংযোজন/যাচাই করছি, কোথাও আবার রেফারেন্সের অভাবে এই প্রক্রিয়াটিতে কিছুটা অসম্পূর্ণতাও থেকে যাচ্ছে হয়তো। তার পরেও ভুল-ভাল হলে বা অসম্পূর্ণ মনে হলে পাঠকদের অনুরোধ করছি শুধু একটু ধরিয়ে দেয়ার জন্য। বাকি দায়িত্ব আমার। আর শুধুই অনুবাদ করতে চাইলে যে কোনো জনপ্রিয় উপন্যাস বা এ ধরনের কিছু নিয়েই পড়ে থাকতাম, ভ্রমণ গাইড লেখার সাহস করতাম না বোধ হয়। হাসি

কুটুমবাড়ি

মুস্তাফিজ এর ছবি

মাত্র ৬০৳ দিয়ে পুরো ১টি কক্ষ পেতে পারেন আপনি একাই, ৩০ টাকার বিনিময়ে দারুণ একটি ভূরিভোজ সারা হয়ে যেতে পারে এবং মাত্র ৫ টাকায় নাস্তার পর্ব সম্পূর্ণ করা যায়।

এই অফারটা বিপদজনক। পর্যটকদের জন্য তো বটেই, স্থানীয়দের জন্যও সমান। তবে ব্যাকপ্যাকার পর্যটকদের গড় হিসাবে প্রতিদিনের থাকা খাওয়ার খরচ ১০০০-১২০০ ঠিক আছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

অতিথি লেখক এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই, আর্থিক মানদণ্ডে বাংলাদেশে কয়টি স্তরের লোক বাস করে জানেন তো? নিশ্চয়ই জানেন, তবুও বলি - উচ্চ, উচ্চ-মধ্য, মধ্য, নিম্ন-মধ্য, এবং নিম্নবিত্তের মানুষ। এখানে ৫০,০০০ টাকার হোটেল রুম যেমন আছে, তেমনি আছে ৫০ টাকার রুমও (অবশ্য তেমন সুবিধার না, অথবা এটাচ বাথ ছাড়া)। সারা দেশেই আছে। কোথাও কোথাও ৬০৳ দিয়ে বেশ ভালোই রুম পাওয়া যায়, এমনকি আমি নিজেও থেকে দেখেছি। কজন ব্যাকপ্যাকার পর্যটক ১০০০-১২০০ টাকা প্রতিদিনের থাকা-খাওয়ার জন্য বাজেট করতে পারবেন আমার সন্দেহ আছে (মধ্যবিত্ত বা তারও ওপরের লেভেলের লোকের কথা আলাদা)। কারণ ঘুরতে গেলে থাকা-খাওয়া ছাড়া আরও অনেক খরচ থাকে, সেদিকটাও তো ভাবতে হবে। আর আমি যে অ্যামাউন্টের কথা বলেছি সেটা কিন্তু সর্বনিম্ন রেট, ধরে নিন না শুধু নিম্নবিত্তদেরই কাজে লাগবে। নিম্নবিত্ত হলেই নিশ্চয়ই ভ্রমণ করার সাধ-আহ্লাদ মরে যায় না মানুষের?

কুটুমবাড়ি

হাসিব এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভালো করসেন, হাসিব ভাই। অন্তত ভিত্তিহীন অভিযোগ বা ঢালাও মন্তব্য করে সরে পড়ার চেয়ে এইটা হাজারগুনে ভালো।

আশা করব ভবিষ্যতেও আপনি আমার পোস্টে ভোট দিবেন - তা এক তারাই হোক আর পাঁচ তারা। ভালো থাকবেন।

কুটুমবাড়ি

হাসিব এর ছবি

ভিত্তিহীন অভিযোগ আর ঢালাও মন্তব্য করে সরে পড়া বলতে কী বোঝালেন? আপনারে শিক্ষিত করা তো আমার দায়িত্ব না। আপনি ভুলভাল যা তা লিখে যাবেন আর আমরা সেটা নিয়ে মন্তব্য করলে গোস্বা হবেন এই চিন্তা থাকলে আপনার জন্য কাগুজে মাধ্যমই ভালো। ওয়েব নয়। ওয়েবে একটা কিছু লিখলে সেটার প্রতিক্রিয়া হজম করার প্রস্তুতিও থাকতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

এই তো আরেকটা বেহুদা মন্তব্য করে ফেললেন। আমি যতটুকু জানি উত্তর দিয়ে ফেলায় এখন আর আপনার মন্তব্যটি সম্পাদনাও করতে পারবেন না। আসুন দেখি আপনি কী কী বলেছেন এ পর্যন্ত?

আপনারে শিক্ষিত করা তো আমার দায়িত্ব না।

হাসিব ভাই, একইভাবে কোনো নতুন (তার ওপরে অতিথি) লেখকের পোস্টে কীভাবে মন্তব্য দিতে হয় তা আপনারে শেখানোও আমার দায়িত্ব না কিন্তু।

ভিত্তিহীন অভিযোগ আর ঢালাও মন্তব্য করে সরে পড়া বলতে কী বোঝালেন?
আরে ভাই, আপনি তো এই সিরিজের দ্বিতীয় পোস্টে 'তথ্যগত ভুল আছে' ট্যাগ মেরে দিব্যি চলে গেছেন হাওয়া খেতে। ওদিকে আপনার অবিবেচনাপ্রসূত মন্তব্যকে অনুসরণ করে কেউ কেউ 'ইতিহাস বিকৃতি'র অভিযোগও করে বসেছেন সেখানে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত একটিও তথ্যগত ভুল পাওয়া যায় নাই, আপনাকেও তো দেখলাম না দুঃখ প্রকাশ করতে। এখন আবার এই পোস্টে আসছেন 'ভুলভাল যা তা' লেখার ট্যাগ বসাতে। আগে ওই পোস্টে কী কী তথ্যগত ভুল আছে ধরিয়ে দিয়ে আসেন, তারপর আপনার মন্তব্য খুব মনোযোগ দিয়ে শুনব এবং আপনার কাছ থেকেও কিছু শিখতে চেষ্টা করব, যেমনটি অন্যান্য সচলদের কাছ থেকে আমরা, অতিথি লেখকরা, কিছু না কিছু শিখছি।

ওয়েবে একটা কিছু লিখলে সেটার প্রতিক্রিয়া হজম করার প্রস্তুতিও থাকতে হয়।

আশা করব এরপর কোনো অবান্তর মন্তব্য করার আগে সেটার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হজম করার সামর্থ্য আগে থেকেই অর্জন করে নিবেন। মন খারাপ

কুটুমবাড়ি

হাসিব এর ছবি

এই তো আরেকটা বেহুদা মন্তব্য করে ফেললেন।

বেহুদা ভুলেভালে ভর্তি পোস্টে বেহুদা মন্তব্যই করা দরকার।
একইভাবে কোনো নতুন (তার ওপরে অতিথি) লেখকের পোস্টে কীভাবে মন্তব্য দিতে হয় তা আপনারে শেখানোও আমার দায়িত্ব না কিন্তু।

এই সচলায়তন। ব্লগ নামের আলুপটলের গুদাম না। কথাটা খিয়াল কৈরা। গাধা পিটায় ঘোড়া বানানোর জায়গা এইটা না।
আরে ভাই, আপনি তো এই সিরিজের দ্বিতীয় পোস্টে 'তথ্যগত ভুল আছে' ট্যাগ মেরে দিব্যি চলে গেছেন হাওয়া খেতে। ওদিকে আপনার অবিবেচনাপ্রসূত মন্তব্যকে অনুসরণ করে কেউ কেউ 'ইতিহাস বিকৃতি'র অভিযোগও করে বসেছেন সেখানে।

নিজেরে কী ভাবেন? আপনার ভুলেভালে ভর্তি পোস্টে কী হৈলো না হৈলো সেইটা সবাই কাজকর্ম বাদ দিয়ে নজর রাখবে এই কনফিডেন্স কেমনে হৈলো? তানভীর, ষষ্ঠ পান্ডব, ধ্রুব বর্নন, অনিন্দ্য এদের মন্তব্য দেখে আপনার মনে হলো আমার মন্তব্য অনুসরন করে মন্তব্য করেছেন! এই মন্তব্য করে যে তাদের অসম্মান করলেন এই ধারনাটা মাথায় খেলে? ছাগুরামের নতুন সংস্করণ দেখি একটা!
আশা করব এরপর কোনো অবান্তর মন্তব্য করার আগে সেটার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হজম করার সামর্থ্য আগে থেকেই অর্জন করে নিবেন।

হে. হে. হে. আপনে মনে হয় নতুন ব্লগার। আলু ব্লগের কুটুম আর আপনে এক লুক নাকি?

অতিথি লেখক এর ছবি

নিঃসন্দেহে আপনার এই মন্তব্যটি সচলায়তনের নির্ধারিত মানদণ্ড অতিক্রম করতে পারেনি। তবে আমিও তা করতে চাই না বলে আমার আগে করা এই প্রতিমন্তব্যটি মুছে দিলাম।

কুটুমবাড়ি

রানা মেহের এর ছবি

আপনি কি এই লেখার ওয়ার্ড টু ওয়ার্ড অনুবাদ করেছেন? খুব গোছানো মনে হয়নি।

এই ঐতিহ্যটি দাক্ষিণাত্যের নিরামিষ রান্নাপদ্ধতির সাথে যুক্ত হওয়ায় রসনা চর্চার ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হয়েছে বাঙালির জন্য।

এ একথার মানে বুঝতে পারিনি। দাক্ষিণাত্য বলতে কোন জায়গা নির্দেশ করা হয়েছে? যতটুকু দেখেছি আমাদের নিরামিষ রান্না একদমই আমাদের পদ্ধতির রান্না।

ভেটকি একটি সামুদ্রিক মাছ যার গায়ে কাঁটা কম থাকে। আপনি যেসব মাছ খাবেন তার মধ্যে এটি অন্যতম সেরা এবং মধ্য-পর্যায়ের রেস্তোরাঁয় এটি পরিবেশিত হয় চিংড়ি অথবা কাঁকড়ার ডিশের সাথে।

এ লাইন পড়ে একটু আশ্চর্য হলাম। ভেটকি মাছ এতো সহজলভ্য আমি দেখিনি এবং নিশ্চিতভাবেই এটি অন্যতম সেরা নয়। আপনার নিজের কি তা মনে হয়?

লাচ্ছি। দধিজাত এই সতেজকারক পানীয়টি এখনও তেমন জনপ্রিয় হয়নি, তাই খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হতে পারে

বলেন কী? লাচ্ছি তো দেশে যথেষ্টই জনপ্রিয় পানীয়। আমি নিজেই অনেক ছোট শহরে লাচ্ছি দেখেছি। আর বড় শহরে তো প্রায় সব দোকানেই পাওয়া যায়।

হিন্দু এবং আদিবাসীরা সাধারণভাবে অ্যালকোহল বিমুখ নয়, চোলাইকৃত মদ পান করা তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য—যা ঘরেই তৈরি করা হয়, প্রধানত ভাত দিয়ে। চা বাগানগুলোয়, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মচারীই হিন্দু, স্থানীয় মদ পান করা, বিশেষত উৎসবের সময়, খুবই সাধারণ দৃশ্য। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেসব মদ তৈরি হয় তা যেন ধাক্কা মারে উন্মত্ত খচ্চরের মতো!

এটা খুব ঢালাও স্টেইটমেন্ট হয়ে গেল।আপনি এখানে এমনভাবে বলেছেন মনে হচ্ছে আদিবাসি নন এরকম হিন্দু ধর্মাবলম্বি এবং আদিবাসি হিন্দুধর্মাবলম্বিদের পানাভ্যাস একইরকম।এ্যালকোহলের ব্যাপারে মুসলমান পরিবারে ধর্মীয় অনুশাসন বেশি, সত্যি। তবে আদিবাসি নন এরকম হিন্দু পরিবারে এ্যালকোহলের বিপক্ষে বেশ শক্ত পারিবারিক - সামাজিক বাঁধা রয়েছে।
চা বাগান শ্রমিক কিংবা অন্যান্য অনেক আদিবাসিদের কাছে এ্যালকোহল সামাজিকভাবে স্বীকৃত। সেখানে ধর্ম খুব এ্যালকোহল গ্রহনের ক্ষেত্রে খুব বড় উতসাহ প্রদানকারি বা নিষেধাগ্গা জারির কারণ নয়।


বাঙালির হেঁশেল ঐতিহ্য বিকশিত হয়েছে প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে, মাংসের অপ্রতুলতার কারণে নিরামিশাষী হওয়াটা তাই প্রায় বাধ্যতামূলকই ছিল

এ কথার ভিত্তি কী? কোন রেফারেন্স দিতে পারবেন কি?

প্রধান ফল উৎপাদনকারী এলাকার মধ্যে রয়েছে সিলেটের পার্বত্যাঞ্চল, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিভাগ।

সিলেটের পার্বত্যাঞ্চল কোনটা? সেখানে ঠিক কী ধরনের ফল উৎপাদন হয়?

কুটুমবাড়ি
এই লেখার মূল লেখার দায় আপনার নয়। কিন্তু অনুবাদে যদি বিভ্রান্তিকর কোন তথ্য থাকে সেই দায় অবশ্যই আপনার। আপনার লেখার হাত ভালো। বাংলাদেশের মানুষ আপনি। এরকম অবিশ্বস্ত সুত্র থেকে অনুবাদ না করে নিজের অভিগ্গতা থেকে লিখুন না। এই লেখাটা থাকবে এখানে। মানুষজন পড়ে কিছু নির্ভরযোগ্য নয় এরকম তথ্য জানবে। এমনিতেই আমাদের দেশ নিয়ে ভুল তথ্যের শেষ নেই। এই তালিকা কেন আর লম্বা করবো আমরা বলুন?
ভালো থাকুন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার মন্তব্যটি সত্যিই চমৎকার। সেজন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানবেন। হাসি আপনি যেসব বিষয়ে জানতে চেয়েছেন তা একে একে বলছি।

এ একথার মানে বুঝতে পারিনি। দাক্ষিণাত্য বলতে কোন জায়গা নির্দেশ করা হয়েছে? যতটুকু দেখেছি আমাদের নিরামিষ রান্না একদমই আমাদের পদ্ধতির রান্না।
দাক্ষিণাত্য অঞ্চলটি ঠিক কোন জায়গায় অবস্থিত তা জানতে ক্লিক করুন এখানে অথবা এখানেও ক্লিক করতে পারেন

আসলে আমাদের রান্নাপদ্ধতি বিবর্তিত হতে হতে আজকে যে অবস্থায় এসেছে তার পেছনে 'মুঘল' এবং 'দাক্ষিণাত্য' - এই দুটোরই প্রভাব রয়েছে। অবশ্যই এখনকার রান্নাপদ্ধতিটি আমাদের নিজস্ব, যাকে বলে বাংলাদেশি স্টাইলের (কেন যে লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশি ভাইদের রেস্টুরেন্ট খুলতে হলে 'ইন্ডিয়ান' তকমার দরকার হয় তা আমি আজও বুঝে উঠতে পারিনি)। কিন্তু অতীতকে অস্বীকার করলে আমরা বোধ হয় বর্তমানকে হারিয়ে ফেলব, ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদী হওয়া তো দূরের কথা।

এ লাইন পড়ে একটু আশ্চর্য হলাম। ভেটকি মাছ এতো সহজলভ্য আমি দেখিনি এবং নিশ্চিতভাবেই এটি অন্যতম সেরা নয়। আপনার নিজের কি তা মনে হয়?
ভেটকি মাছ সহজলভ্য নয় সত্য, কিন্তু খেতে যে অতি সুস্বাদু তাতে আর সন্দেহ কী। অন্তত আমার কাছে এ মাছটি অন্যতম সেরা মনে হয়, হয়তো একই সাথে বিরল এবং সুস্বাদু বলেই।

বলেন কী? লাচ্ছি তো দেশে যথেষ্টই জনপ্রিয় পানীয়। আমি নিজেই অনেক ছোট শহরে লাচ্ছি দেখেছি। আর বড় শহরে তো প্রায় সব দোকানেই পাওয়া যায়।
লাচ্ছি জনপ্রিয় খাবার বলেই টুরিস্ট গাইডে পানীয়টির নাম উল্লেখ করতে হয়েছে। কিন্তু কতগুলি ট্যুরিস্ট স্পটে পানীয়টি অ্যাভেইলেবল তা জানাবেন আশা করি। আমি নিজে অন্তত ছোট শহরগুলোয় অথবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেভাবে লাচ্ছি বিক্রি হতে দেখিনি। কেউ খেতে চাইলে একেবারেই খুঁজে পাবেন না তা নয়, তবে একটু কষ্ট করতে হবে আর কী।

এটা খুব ঢালাও স্টেইটমেন্ট হয়ে গেল।আপনি এখানে এমনভাবে বলেছেন মনে হচ্ছে আদিবাসি নন এরকম হিন্দু ধর্মাবলম্বি এবং আদিবাসি হিন্দুধর্মাবলম্বিদের পানাভ্যাস একইরকম।এ্যালকোহলের ব্যাপারে মুসলমান পরিবারে ধর্মীয় অনুশাসন বেশি, সত্যি। তবে আদিবাসি নন এরকম হিন্দু পরিবারে এ্যালকোহলের বিপক্ষে বেশ শক্ত পারিবারিক - সামাজিক বাঁধা রয়েছে।
আপনার কাছে তা-ই মনে হয়েছে? শুধু শক্ত পারিবারিক-সামাজিক বাধা যে কাউকে অ্যালকোহলবিমুখ করতে যথেষ্ট নয়, তার জন্য নৈতিক এবং ধর্মীয় বাধারও প্রয়োজন হয় সে কথা আপনার মনে হয়নি? আমি কোনো ঢালাও স্টেটমেন্ট দিতে চাইনি, তবু আপনার কাছে একটু বেশিই সরলীকরণ করা হয়েছে মনে হলে দুঃখ প্রকাশ করছি।

বাঙালির হেঁশেল ঐতিহ্য বিকশিত হয়েছে প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে, মাংসের অপ্রতুলতার কারণে নিরামিশাষী হওয়াটা তাই প্রায় বাধ্যতামূলকই ছিল
এ কথার ভিত্তি কী? কোন রেফারেন্স দিতে পারবেন কি?
শুধু মাংসের অভাবে নিরামশাষী হওয়া কেন, এখনও বাংলাদেশে খাদ্যের অভাবে অনাহারী লোকের সংখ্যাটা ঠিক কত হবে? নিশ্চয়ই অনেক। যেহেতু আপনি রেফারেন্স চেয়েছেন তাই আপনারই পোস্টে হিমু ভাইয়ের একটি মন্তব্য এখানে কোট করে দিলাম -বাংলা এগারোশো ছিয়াত্তর সনের দুর্ভিক্ষ। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফল সম্ভবত। বাংলার তিনভাগের একভাগ মানুষ মারা গিয়েছিলো এই দুর্ভিক্ষে।

বাংলাদেশে নব্য ধনিক শ্রেণীর অভ্যুদয় হলেও এখনও যে নীরব দুর্ভিক্ষ রয়ে গেছে তাতে অন্তত আমার কোনো সন্দেহ নেই।

সিলেটের পার্বত্যাঞ্চল কোনটা? সেখানে ঠিক কী ধরনের ফল উৎপাদন হয়?
সিলেটের অপেক্ষাকৃত উঁচু অঞ্চলগুলোকে 'সিলেটের পার্বত্যাঞ্চল' বলার একটা রেওয়াজ আছে।
আম, কাঠাল, লিচু, কমলা- এগুলো হলো বাংলাপিডিয়ার মতে সিলেটের প্রধান প্রধান ফলের নাম। আনারসসহ আরও অনেক ফলের নামই এখানে নেই। আমার মনে হয় সিলেটের অধিবাসী কেউ ভালো বলতে পারবেন সত্যিই সেটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ফল উৎপাদনকারী অঞ্চল কি না।

কুটুমবাড়ি

রানা মেহের এর ছবি

বিন্ধাপর্বতের দক্ষিণদিকস্থ ভারতবর্ষের রাজ্য' আসলে খুব সহায়ক সুত্র নয়। উইকি থেকে বুঝতে পারলাম আপনি মোটামুটি দক্ষিণ ভারতের কথা বলছেন। দক্ষিণ ভারতের সাথে আমাদের নিরামিষ রান্নার মিল কী করে তার একটু রেফারেন্স দিতে পারবেন?

রেফারেন্স দিতে আমি নিজেও পারছিনা। আভিগ্গতা থেকে বলছি দক্ষিণ ভারত আর বাংলাদেশের নিরামিষ রান্নার খুব একটা মিল অতীতেও ছিলনা এখনো নেই।দক্ষিণ ভারতে রান্নায় প্রচুর টক ব্যাবহৃত হয়েছে সমসময় তাদের অতিরিক্ত উষ্ণ আবহাওয়ার জন্য। তাদের রান্নায় পুদিনা আর কারি পাতার উপস্থিতি অনেক। আর ইদানিং দক্ষিণ ভারতের খাবারে মশলার পরিমান পর্যাপ্ত থেকে একটু বেশি।
বাংলাদেশের নিরামিষ খাবারে এর কোনটার উপস্হিতি কি আপনি অতীত বা বর্তমানে কোথাও দেখেছেন?
অতীত কে আমি অস্বীকার করছিনা। কিন্তু অতীতের স্হানান্তরও স্বীকার করবোনা।

ভেটকি মাছ সহজলভ্য নয় সত্য, কিন্তু খেতে যে অতি সুস্বাদু তাতে আর সন্দেহ কী। অন্তত আমার কাছে এ মাছটি অন্যতম সেরা মনে হয়, হয়তো একই সাথে বিরল এবং সুস্বাদু বলেই

ভেটকি মাছের স্বাদ নিয়ে তর্ক বাদ। আপনি মন্তব্যে বলছেন এই মাছ সহজলভ্য নয়। কিন্তু লেখায় বলা হচ্ছে এটা মধ্যম মানের রেস্তোরায় এই মাছ কীকরে বিক্রি হয়। আপনার লেখায় সহজলভ্য কথার উল্লেখ নেই। কিন্তু পড়ে মনে হবে এরকমই কিছু একটা।

লাচ্ছি জনপ্রিয় খাবার বলেই টুরিস্ট গাইডে পানীয়টির নাম উল্লেখ করতে হয়েছে। কিন্তু কতগুলি ট্যুরিস্ট স্পটে পানীয়টি অ্যাভেইলেবল তা জানাবেন আশা করি। আমি নিজে অন্তত ছোট শহরগুলোয় অথবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেভাবে লাচ্ছি বিক্রি হতে দেখিনি। কেউ খেতে চাইলে একেবারেই খুঁজে পাবেন না তা নয়, তবে একটু কষ্ট করতে হবে আর কী।

আপনি মন্তব্যে বলছেন লাচ্ছি জনপ্রিয় পানীয় কিন্তু লেখায় বলছেন "দধিজাত এই সতেজকারক পানীয়টি এখনো তেমন জনপ্রিয় হয়নি"। একরকমের তথ্য থাকা উচিত না? আপনি টুরিস্ট স্পটে লাচ্ছি খোঁজার কষ্ট নিয়ে বলতে পারেন।কিন্তু এর জনপ্রিয়তাকে এভাবে তুলে ধরবেন না।

আপনার কাছে তা-ই মনে হয়েছে? শুধু শক্ত পারিবারিক-সামাজিক বাধা যে কাউকে অ্যালকোহলবিমুখ করতে যথেষ্ট নয়, তার জন্য নৈতিক এবং ধর্মীয় বাধারও প্রয়োজন হয় সে কথা আপনার মনে হয়নি?

এখানে নৈতিকতা আসলো কোথ্থেকে? আ্যালকোহল নেয়াকে আমি অনৈতিকতার কিছু দেখিনা। হিন্দু ধর্মে আ্যালকোহলের ব্যাপারে কী অনুশাসন আছে, আমি নিশ্চিত নই। না থাকলেও কোন আপত্তি নেই। হিন্দু মুসলিম কেউই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে বাধ্য নন। কিন্তু আপনি হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের আ্যালকোহল বিমুখ করতে পারিবারিক সামাজিক বাঁধাকে যথেষ্ট মনে করেন না বরং মনে করেন তাদের মধ্যে নৈতিকতা কম। এরকম একটা মন্তব্য কী করে করলেন আপনি?

শুধু মাংসের অভাবে নিরামশাষী হওয়া কেন, এখনও বাংলাদেশে খাদ্যের অভাবে অনাহারী লোকের সংখ্যাটা ঠিক কত হবে? নিশ্চয়ই অনেক। যেহেতু আপনি রেফারেন্স চেয়েছেন তাই আপনারই পোস্টে হিমু ভাইয়ের একটি মন্তব্য এখানে কোট করে দিলাম -বাংলা এগারোশো ছিয়াত্তর সনের দুর্ভিক্ষ। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফল সম্ভবত। বাংলার তিনভাগের একভাগ মানুষ মারা গিয়েছিলো এই দুর্ভিক্ষে।

নিরামিশাষি নিয়ে আপনার কি কোনরকম কোন ধারনা আছে? নিরামিশাষি একটা খাদ্যাভ্যাস। এর সাথে খাদ্যের অভাবের কোন সম্পর্ক নেই। নিরামিশাষি রা এমন না যে আমিষ নেই বলে হা হুতাশ করে শাক পাতা গলঃধকরণ করবেন আর আমিষ পেলেই হালুম হুলুম করে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।

বাংলাদেশের খাদ্যের অভাবে অনাহারী মানুষের সংখ্যা অনেক, সন্দেহ নেই। তারা সেই দুর্ভাগা দল যারা অনাহারী থাকেন যেকোন খাবারের অভাবে। মাংস বা সবজির অভাবে নন।লেখায় নিরামিষ রান্নার অবতারনায় আপনার সেই কথা আর এই মন্তব্য দুটোতেই খুব বিরক্ত হলাম।

সিলেটের অপেক্ষাকৃত উঁচু অঞ্চলগুলোকে 'সিলেটের পার্বত্যাঞ্চল' বলার একটা রেওয়াজ আছে।
আম, কাঠাল, লিচু, কমলা- এগুলো হলো বাংলাপিডিয়ার মতে সিলেটের প্রধান প্রধান ফলের নাম। আনারসসহ আরও অনেক ফলের নামই এখানে নেই। আমার মনে হয় সিলেটের অধিবাসী কেউ ভালো বলতে পারবেন সত্যিই সেটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ফল উৎপাদনকারী অঞ্চল কি না।

সিলেটের উঁচু অঞ্চলগুলোকে পার্বত্যাঞ্চল বলার রীতি থাকতে পারে, যদিও আমি শুনিনি। আমার প্রশ্ন ছিল সেই অঞ্চল কোনগুলো? উঁচু বলেই যে আপনি পার্বত্যাঞ্চল বলছেন এটুকু বোঝার বুদ্ধি আমার নেই আপনি নিশ্চয়ই এরকম কিছু ভেবে বসেন নি।

আপনার লিঙ্কে গিয়ে বাংলাপিডিয়ার সিলেট অংশটা পড়লাম। আম কাঁঠাল লিচু আনারস সিলেটের প্রধান ফল হতে পারে কিন্তু একে 'বাংলাদেশের ফল উতপাদনকারি' অঞ্চল বানিয়ে দেয়না।আমি সিলেটের অধিবাসি হিসেবে বলছি সিলেট এবং সিলেটের পার্বত্যাঞ্চল (!) বাংলাদেশের প্রধান ফল উতপাদনকারি অঞ্চল নয়।

আপনাকে আগেও অনুরোধ করেছি আবার করছি। বাংলাদেশ নিয়ে ভুল তথ্যের এমনিতেই কোন সীমা পরিসীমা নেই। দয়া করে এই তালিকা আরো দীর্ঘ করবেন না। আপনি হয়তো দেশের কিছু জায়গায় ঘুরেছেন। আপনার অভিগ্গতার কথা লিখুন। কিংবা এরকম কোন ভ্রমন গাইড লিখতে চাইলে আরেকটু পড়ুন। রেফারেন্স দিন। তথ্য নিজে যাচাই করুন।আমাদের দেশকে যদি আমরাই/ ঠিকমতো তুলে না ধরি কে ধরবে?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার এই মন্তব্যটির বেশির ভাগ কথাই আমার কাছে স্পষ্ট নয়। একে একে উদ্ধৃতি দিচ্ছি।

আভিগ্গতা থেকে বলছি দক্ষিণ ভারত আর বাংলাদেশের নিরামিষ রান্নার খুব একটা মিল অতীতেও ছিলনা এখনো নেই।
বাঙালির ভাষা বাংলার ওপর যেভাবে সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে সেভাবেই বাঙালির রান্নায়ও দাক্ষিণাত্যের প্রভাব পড়তে পারে। সুদূর অতীতের কথা কি আর শুধু অভিজ্ঞতা দিয়ে নির্ণয় করা সম্ভব? যেহেতু এ মুহূর্তে কেউই রেফারেন্স দিতে পারছি না, তাই ওদিকে আর না যাই। চিরকাল অন্যের রেঁধে দেয়া খাবার খেয়ে গেলাম, এই শেষ বয়সে এসে আর হেঁশেলে উঁকিঝুকি না-ই বা দিলাম। হাসি

আপনি মন্তব্যে বলছেন এই মাছ সহজলভ্য নয়। কিন্তু লেখায় বলা হচ্ছে এটা মধ্যম মানের রেস্তোরায় এই মাছ কীকরে বিক্রি হয়। আপনার লেখায় সহজলভ্য কথার উল্লেখ নেই। কিন্তু পড়ে মনে হবে এরকমই কিছু একটা।
মধ্যম মানের রেস্তোরাঁয় কিছু পরিবেশিত হলেই তা সহজলভ্য হয়ে যায় না। একটি রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন মূল্যমানের খাবার থাকে। এ ধরনের রেস্তোরাঁয় কেউ হয়তো এক বেলার খাবার খেয়ে নিচ্ছেন ১৫০ টাকায়, কারও বিল আসছে হাজার টাকার ওপর। সব ধরনের কাস্টমারের কথাই রেস্তোরাঁর মালিকদের মাথায় থাকে। নয়তো তারা ব্যবসা করবে কীভাবে?

আপনি মন্তব্যে বলছেন লাচ্ছি জনপ্রিয় পানীয় কিন্তু লেখায় বলছেন "দধিজাত এই সতেজকারক পানীয়টি এখনো তেমন জনপ্রিয় হয়নি"।
আসলে আমি বোঝাতে চেয়েছি সারা দেশে, সর্বস্তরে লাচ্ছি জনপ্রিয় হয়নি। শহুরে মধ্যবিত্তরাই প্রধান গ্রাহক এই পানীয়টির। কিন্তু ট্যুরিস্ট স্পটগুলোয় এর অভাব আছে তীব্রভাবে। আবার দ্যাখেন কোক ফান্টার কিন্তু কোনো অভাব নাই কোথাও। যত গণ্ডগ্রাম বা দুর্গম জায়গায়ই যান না কেন সবখানেই এই 'ফুস পানি' সগৌরবে উপস্থিত, তা এটি স্বাস্থ্যকর হোক আর না হোক।

এখানে নৈতিকতা আসলো কোথ্থেকে? আ্যালকোহল নেয়াকে আমি অনৈতিকতার কিছু দেখিনা। হিন্দু ধর্মে আ্যালকোহলের ব্যাপারে কী অনুশাসন আছে, আমি নিশ্চিত নই। না থাকলেও কোন আপত্তি নেই।
আপনি যখন বলছেন 'অ্যালকোহল নেয়া অনৈতিক নয়', আমি মেনে নিলাম। তাহলে আমাকে বলুন সামাজিক-পারিবারিক বাধাটা ঠিক কী কারণে? হিন্দু ধর্মে অ্যালকোহলের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা নেই, আমি হিন্দু না হয়েও এ কথাটি জানি। আমি অন্তত এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার কথা কখনো শুনিনি, দেখিনি। আমি নিজ চক্ষে দেখেছি কলকাতা আর ব্যাঙ্গালোরে অ্যালকোহল বিকোয় আমাদের পাড়ার মুদি দোকানের মতো করে। আইনত বাংলাদেশেও আপনি অ্যালকোহল নিতে পারবেন নন-মুসলিম হলে (আমি যতটুকু জানি মুসলিম হলে লাইসেন্স লাগবে যেটি ডাক্তারি সার্টিফিকেট ছাড়া পাওয়া যায় না)।

হিন্দু মুসলিম কেউই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে বাধ্য নন।
এই কথাটিই বা কে নির্ধারণ করে দিল? রাষ্ট্র বাধ্য করতে পারে না ঠিকই। কিন্তু পারিবারিক বা সামাজিক বাধাকে ঠিক এ জায়গাটিতেই আপনার কাছে উপেক্ষণীয় মনে হলো কেন?

কিন্তু আপনি হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের আ্যালকোহল বিমুখ করতে পারিবারিক সামাজিক বাঁধাকে যথেষ্ট মনে করেন না বরং মনে করেন তাদের মধ্যে নৈতিকতা কম। এরকম একটা মন্তব্য কী করে করলেন আপনি?
আমি আবার কখন বললাম যে হিন্দুদের মধ্যে নৈতিকতা কম? প্রসঙ্গক্রমে বলি, অ্যালকোহলবিমুখ হওয়া না হওয়ার মধ্যে ধর্মীয় অনুশাসনটি বড় নিয়ামক - পারিবারিক বা সামাজিক বাধা নয়। কারণ 'বাধা' পেলে আপনি বড়জোর 'বিরত' থাকবেন। কিন্তু 'বিরত' থাকা আর 'বিমুখ' হওয়ায় বিশাল পার্থক্য আছে (বিমুখ হওয়া মানে আপনি কখনোই মুখ দিবেন না এমনটি বোঝায়)।

নিরামিশাষি নিয়ে আপনার কি কোনরকম কোন ধারনা আছে? নিরামিশাষি একটা খাদ্যাভ্যাস।
জি, ধারণা আছে। নিরামিশাষী হওয়া কারও জন্য 'খাদ্যাভ্যাস', কারও জন্য 'ভাগ্যের পরিহাস'। মানুষ যে কত বিচিত্র কারণে নিরামিশাষী (সকল অর্থে) হতে বাধ্য হয় তা বোঝার জন্য উইকির এই পাতাটিতে ক্লিক করতে পারেন।

নিরামিশাষি রা এমন না যে আমিষ নেই বলে হা হুতাশ করে শাক পাতা গলঃধকরণ করবেন আর আমিষ পেলেই হালুম হুলুম করে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।
যারা 'সংস্কারবশত নিরামিশাষী' তারা আমিষ পেয়েও হালুম হুলুম করে ঝাঁপিয়ে পড়বে না - ঠিকই আছে এ কথাটা। কিন্তু যারা 'দায়বশত নিরামশাষী' তারা যে আমিষের জন্য হেঁদিয়ে মরেন তাতে কি কোনো সন্দেহ আছে? আর আপনি কিন্তু প্যারার এই প্রথম লাইনটি ধরেই বসে আছেন। পরের লাইনই বলছে - এর অর্থ এই যে আপনি যদি বিচক্ষণ হন তাহলে কিছু উপাদেয় নিরামিষ খাবার খুঁজে পেতে সমর্থ হবেন। বাংলাদেশের শতকরা কত জন মানুষ নিরামিশাষী (আপনার বোঝানো অর্থে) হবেন? অথচ প্রতি ঘরে ঘরে নিরামিষ রান্না হয়। এটি শুধুই স্বাস্থ্যগত কারণে নয়, অর্থনৈতিক একটি বাস্তবতাও (ঘুরিয়ে বললে মাংসের দুষ্প্রাপ্যতা) লুকিয়ে আছে এর পেছনে। কারণ যা-ই হোক, ফলাফলটা কিন্তু চমৎকার। যে কোনো পরিবারে (একইভাবে হোটেলে) নিরামিষ রান্নাটা অবধারিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই রান্না যে যথেষ্টই উপাদেয় তাতেও কোনো সন্দেহ নেই।

সিলেটের উঁচু অঞ্চলগুলোকে পার্বত্যাঞ্চল বলার রীতি থাকতে পারে, যদিও আমি শুনিনি।
আপনি দেখি একেবারে আভিধানিক অর্থ ধরে বসে আছেন। তা সে অর্থে বললে তো বাংলাদেশে একটিও পর্বত নেই। হ্যাঁ, পাহাড় আছে। পাহাড় আর পর্বত কিন্তু এক কথা নয়। একইভাবে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বলাটাও তাহলে ভুল (?)। বলা উচিত পাহাড়ি চট্টগ্রাম (?)। আর আমি যে জানতাম সিলেটে প্রচুর ফল উৎপন্ন হয়, বিশেষত পাহাড়ি এলাকাগুলোয়, সেটি তাহলে ভুল? তা, আপনার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের প্রধান ফল উৎপাদনকারী অঞ্চল কোনগুলো একটু জানাবেন কি? (নিছকই একাডেমিক কৌতূহল) হাসি

আপনাকে আগেও অনুরোধ করেছি আবার করছি। বাংলাদেশ নিয়ে ভুল তথ্যের এমনিতেই কোন সীমা পরিসীমা নেই। দয়া করে এই তালিকা আরো দীর্ঘ করবেন না।
আপনার আগের সব প্রশ্নকেই নির্দোষ কৌতূহল বলে মেনে নিয়েছি। কিন্তু এই লাইনটি পড়ে একটু বিরক্তিই লাগল, কিছু মনে করবেন না। এই সিরিজের প্রথম ৪টি পর্ব ছিল বাংলাদেশের পরিচয় পর্ব। পরবর্তী পর্বগুলোয় বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পট এবং ট্যুর রিলেটেড তথ্য থাকবে। আপনি একটু লক্ষ করলেই দেখতে পেতেন প্রতিটি লাইনে লাইনে, শব্দে শব্দে তথ্য দিতে হচ্ছে। শতকরা কয়টি তথ্যে ভুল পাওয়া গেছে? একটি বা দুটি? এই হারটিকে যদি অযৌক্তিক মনে হয় তাহলে প্রথম আলোর এই ফিচারটি (স্বয়ং বাংলাদেশ সরকার ঠিকভাবে বলতে পারে না বাংলাদেশে কয়টি আদিবাসী গোষ্ঠী আছে, কী বিচিত্র এই দেশ!) পড়ে আসতে বলব। সে তুলনায় আপনি নিতান্তই একটি ভ্রমণ গাইড পড়ছেন এবং সেটি দশ জনে খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ে বা শত রেফারেন্স, ক্রস-রেফারেন্স চেক করার পরেও ছোটখাটো দু-একটির বেশি ভুল ধরা পড়ছে না।

আমাদের দেশকে যদি আমরাই/ ঠিকমতো তুলে না ধরি কে ধরবে?
এই শেষ লাইনটির জন্য আপনাকে একটা বিগ স্যালুট দিলাম। ভালো থাকবেন।

কুটুমবাড়ি

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মূসা আপারে সিলেট পাঠাইলে সে কিন্তু ভালো ফল বয়ে আনতে পারত ...
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অতিথি লেখক এর ছবি

পার্বত্য চট্টগ্রামে উঁচা উঁচা পাহাড় আছে, কিন্তু ওইখানে তো আবার বৌদ্ধ মন্দির বেশি... দেঁতো হাসি

'বৌদ্ধ মন্দিরে অ্যালার্জি' থাকলে তাই সিলেটের পাহাড়ই ভালা মনে করি... চোখ টিপি

কুটুমবাড়ি

রানা মেহের এর ছবি

আচ্ছা 'পছন্দ সরান' ট্যাবে ক্লিক করলে কী হয়?
হাসিবের শেষ মন্তব্যে আমার না এই ট্যাবে ক্লিক পড়ে গেছে। ইচ্ছে করে দেইনি মন খারাপ
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

রানা মেহের ভাই, আপনার এই মন্তব্যটি ঠিক বুঝতে পারি নাই। তবুও বলছি, সুযোগ থাকলে লাইকাতাম। কারণ আমার মতোই আপনারও মন খারাপ হৈছে, তা তো বুঝতে পারছি। আপনার আগের মন্তব্যটির উত্তর দিতে একটু দেরি হবে (আমাকে অফিসে যেতে হবে, ঘুমাতে হবে। তা ছাড়া আপনি যেসব মন্তব্যের ব্যাখ্যা বা রেফারেন্স জানতে চেয়েছেন তা লিখতে একটু নিরিবিলি, ঠাণ্ডা পরিবেশের প্রয়োজন। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে পরিবেশটি ঠিক সেরকমটি নেই এই মুহূর্তে) বিধায় এখানেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন। হাসি

কুটুমবাড়ি

রানা মেহের এর ছবি

কুটুমবাড়ি
আমার শেষ মন্তব্যটি আপনার আর হাসিবের কনভারসেশন শুরু হবার আগে শুধুমাত্র হাসিবের মন্তব্যের ক্ষেত্রে করা।আমি তার মন্তব্যে পছন্দ অপছন্দ কোন ট্যাবে ক্লিক করিনি। শুধু 'পছন্দ সরাও' ট্যাবে ক্লিক পড়ে গিয়েছিল। এই অপশন যখন সচলে যুক্ত হয় তখন আমি ব্যাস্ত থাকায় তার নিয়ম জানতে পারিনি। তাই প্রশ্ন করেছি।

আপনার কেন মনে হলো আপনার মতো আমারো মন খারাপ হয়েছে? আপনি নিশ্চয়ই দেখেছিলেন আমি মন্তব্যটা কখন করেছি।এখন পড়ে হাসিবের কথাও আমার ভালো লাগেনি। কিন্তু আপনি যেভাবে উনার ওপর চড়াও হয়েছেন তাতে ভোট দিতে হলে হাসিবের পক্ষেই দেবো।

আপনার আগের লেখায় আর এই লেখায় দু জায়গাতেই লক্ষ্য করলাম আপনি মন্তব্যকে আপনার মতো করে অনুবাদ করেন। আগের লেখায় তানভীর ষষ্ঠ পাণ্ডবের করা মন্তব্যকে আপনি হাসিবের পেছনে আসা মন্তব্য বলে অসম্মান করলেন। এখন আমার কথাকে আপনার পক্ষে নিয়ে যেতে চাইছেন। আপনি কি বুঝতে পারছেন এটা খুব খারাপ একটা চর্চা?

আমার কথা ভালো না লাগলে জানাবেন। ভবিষ্যতে আপনার লেখায় মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবো। ধন্যবাদ
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার কেন মনে হলো আপনার মতো আমারো মন খারাপ হয়েছে?
আসলে যাকে গালি দেয়া হয় বা যাকে ফালতু মন্তব্য হজম করতে হয় শুধু তারই মন খারাপ হবে এটা আমি ভুলে গেছিলাম। কোনো দর্শক বড়জোর গালিদাতাকে সমর্থন করবে বা গালি হজমকারীর প্রতি সহানুভূতি জানাবে এটাই তো স্বাভাবিক। আমি কিন্তু প্রথমেই বলে নিয়েছিলাম আপনার এই মন্তব্যটি আমি বুঝতে পারিনি, যাকগে সে আমারই অজ্ঞতা হবে হয়তো।

কিন্তু তানভীর ভাইকে বা পান্ডবদাকে অসম্মান করতে যাব কেন শুধু শুধু? তানভীর ভাইয়ের সাথে তো রেফারেন্স নিয়ে দীর্ঘ আলাপচারিতাও হলো, লক্ষ করেননি বুঝি? ওনারা কেউ আমাকে কোনো কটু মন্তব্য করেছেন বলেও মনে পড়ছে না। তার পরও আমার কোনো মন্তব্যে যদি আপনার তা-ই মনে হয়ে থাকে তাহলে তো আমার দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া গত্যন্তর থাকে না।

সর্বোপরি আপনার কথা ভালো না লাগার কিছু নেই। এই মন্তব্যটিতে আপনি যা বলেছেন তা আপনার মতামত, আমিও একান্তই আমার মতামত জানালাম। আশা করি ভবিষ্যতেও আমার লেখায় মন্তব্য করবেন। ভালো থাকবেন।

কুটুমবাড়ি

স্পর্শ এর ছবি

পছন্দ বা অপছন্দ (নিচে ডান কোনায় থাম্বস আপ থাম্বস ডাউন) কিছু একটা চেপে ফেলার পরে যদি মনে হয় যে আপনি আপনার সেই 'ভোট' ক্যানসেল করতে চান। তখন পছন্দ সরাও ক্লিক করতে হয়। এমনিতে পছন্দ সরাওতে ক্লিক পড়ে গেলে কোনো সমস্যা নেই। হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

অ, রানা মেহের ভাই ঠিক কী বলতে চেয়েছিলেন এখন বুঝতে পারলাম (আবার পারিও নাই, অচল তো!)। ধন্যবাদ আপনাকে।

কুটুমবাড়ি

আরিফ জেবতিক এর ছবি

লেখাটা ভালো হয়েছে। প্রচুর নতুন তথ্য আছে লেখায়। যেমন ধরেন,

হিন্দু এবং আদিবাসীরা সাধারণভাবে অ্যালকোহল বিমুখ নয়, চোলাইকৃত মদ পান করা তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য—যা ঘরেই তৈরি করা হয়, প্রধানত ভাত দিয়ে।

আমার গন্ডা গন্ডা বন্ধুবান্ধব আছে, যারা পৈত্রিক উত্তরাধিকা সূত্রে হিন্দু ধর্মের। এরা যে ঘরে বসে ভাত দিয়ে মদ বানিয়ে খায়, এবং আমাকে কোনোদিনও এক চামুচ সাধেও না, এইটা জেনে কষ্ট পেয়েছি। এরকম বন্ধুবান্ধবের মুখে ঝাটার বাড়ি।

-
মন খুলে ৫ দিয়েছি। এই সিরিজের পরবর্তী লেখাগুলো পড়ার অপেক্ষায় থাকব।
-

সচলায়তনের মডারেটরদের প্রতি মায়া লাগছে। আহা, বেচারারা!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হিন্দু এবং আদিবাসীরা সাধারণভাবে অ্যালকোহল বিমুখ নয়, চোলাইকৃত মদ পান করা তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য—যা ঘরেই তৈরি করা হয়, প্রধানত ভাত দিয়ে।

বাংলাদেশকে ও হিন্দু জনগোষ্ঠীকে নতুনভাবে চিন্তেছি। দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

কৌস্তুভ এর ছবি

কুটুমবাড়ি ভাই, আপনাকে একটা অনুরোধ করি। এই লেখাগুলো আপনি ঠিক কোন উদ্দেশ্যে লিখছেন জানি না, তবে ভবিষ্যত বাংলাদেশ-ভ্রমণকারী হিসাবে সেগুলো উৎসাহ নিয়ে পড়ি। ইচ্ছা করলেই আমি লোনলিপ্ল্যানেট বা ফ্রমারস থেকে পড়ে নিতে পারি, তবে বাংলায় লেখা বলে আপনারটা পড়তে একটু বেশি আরাম পাই। এবং শুরুর পর্বগুলোতে আপনাকে এই সিরিজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহও দিয়েছি। এই পরিপ্রেক্ষিতে একটা কথা বলি।

ওদের ওয়েবসাইটে লেখার যে ধাঁচ সেটা স্বাভাবিকভাবেই এইরকম, যে একজন বিদেশী আরেকজন বিদেশীকে একটা অচেনা দেশ সম্বন্ধে ইন্ট্রোডাকশন দিচ্ছে। কিন্তু আপনি যখন দেশের লোক হয়ে দেশের সম্বন্ধে দেশের মানুষের কাছেই লিখছেন, তখন আপনার লেখায় সেই ভিনদেশীর গন্ধটা পাওয়া গেলে অস্বস্তি তো লাগবেই। এই যেমন আরিফ ভাই এবং রাণা মেহের যে পয়েন্টটা তুলেছেন, সেইটা নিয়ে একটু বলি।
"হিন্দু এবং আদিবাসীরা সাধারণভাবে অ্যালকোহল বিমুখ নয়, চোলাইকৃত মদ পান করা তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য—যা ঘরেই তৈরি করা হয়, প্রধানত ভাত দিয়ে।"
এইটা আপনি কি অর্থে বলতে চেয়েছেন সেটা আপনি মন্তব্যের ঘরে বিশদে বলেছেন। কিন্তু এটা সত্যি যে শুধু এই বাক্যটা পড়লে আপনি যা বোঝাতে চেয়েছেন সেটা মনে হচ্ছে না, মনে হচ্ছে আপনি অনেকটা জেনারেলাইজ করে ফেলেছেন। এখন বিশেষ করে আপনি যেহেতু দেশেরই মানুষ তাই আপনার লেখায় এটা পড়তে দৃষ্টিকটু তো লাগবেই।

বা রীতিনীতির শেষ অনুচ্ছেদটা যদি ধরি,
"টেবিল-চেয়ারের ব্যবহার দ্রুত বর্ধনশীল এবং রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী। শব্দ করুন, ঢেঁকুর তুলুন, মোটের ওপর, আমোদ করে খান। হাত দিয়ে খাওয়া শুধুই ব্যবহারিক বিষয় নয়, স্বাদ নেওয়ার জন্য জিহ্বায় দেওয়ার আগে মূল্যায়নের কাজটাও এভাবে সারা হয়ে যায়। সতর্কভাবে খাবার চিবান এবং অচর্বণযোগ্য উপাদান, যেমন হাড় রেখে দিন টেবিলের ওপর। ভুলে যান কব্জি ডুবিয়ে খেলে কেমন দেখাবে বা আঙুল চুষে খেলে লোকে কী বলবে। শুধু কাপড়ের হাতা গুটিয়ে নিন এবং শুরু করে দিন।"
এই কথাটা একজন বিদেশীকে বলা হয়ত দরকারী, কিন্তু একজন বাঙালীকে বলা দরকারী কিনা সন্দেহ আছে। তাছাড়া এই ভাবে বলার মধ্যেও বিদেশী গন্ধটা পরিষ্কার।

আপনি যখন অনুবাদ করছেন, তখন সেটা বাঙালী ছন্দে ফেলার চেষ্টা করুন, তাহলে আশা করি অনেকটা ভাল হবে। একজন বাঙ্গালী হিসাবে এটা পড়তে গিয়ে যেমন অন্যদের চোখে লাগছে, তেমন ভাবে নিজেও পড়ে দেখুন, আপনারও চোখে লাগবে। তথ্যগুলো তো আপনার অজানা নয়।

ভাল থাকুন, আর হাত খুলে লিখতে থাকুন। আমরা হলাম গিয়ে কচিলেখক, মুরুব্বিরা একটু বকাঝকা করবেন বই কি। হাসি

রানা মেহের এর ছবি

কৌস্তভ
একটু ওপরে খেয়াল করলেই দেখবেন আমার নামের বানান 'রাণা' নয় 'রানা'।
যার যা নাম তাই তো ডাকা উচিত, না? হাসি
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

কৌস্তুভ এর ছবি

এ হে হে, টাইপো হয়ে গেছে, মাফ করেন। কিন্তু প্রতিমন্তব্য করে ফেলেছেন, এখন তো আর সংশোধন করতেও পারব না... ওঁয়া ওঁয়া

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনিও দেখছি একই ভুল করেছেন, মানে প্রতিমন্তব্য করে ফেলেছেন! এখন আপনার নামের বানানটি রানা মেহের ভাই ঠিক করবেন কীভাবে? চিন্তিত

কুটুমবাড়ি

কৌস্তুভ এর ছবি

ও, ওটা আমার চোখে পড়ে নি। আসলে আমার নাম অনেকেই কৌস্তভ লেখেন, ও কিছু না।

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম... আপনার কথাগুলা ভালোই, দ্বিমত করার সুযোগ নাই বললেই চলে।

বা রীতিনীতির শেষ অনুচ্ছেদটা যদি ধরি,
"টেবিল-চেয়ারের ব্যবহার দ্রুত বর্ধনশীল এবং রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী। শব্দ করুন, ঢেঁকুর তুলুন, মোটের ওপর, আমোদ করে খান। হাত দিয়ে খাওয়া শুধুই ব্যবহারিক বিষয় নয়, স্বাদ নেওয়ার জন্য জিহ্বায় দেওয়ার আগে মূল্যায়নের কাজটাও এভাবে সারা হয়ে যায়। সতর্কভাবে খাবার চিবান এবং অচর্বণযোগ্য উপাদান, যেমন হাড় রেখে দিন টেবিলের ওপর। ভুলে যান কব্জি ডুবিয়ে খেলে কেমন দেখাবে বা আঙুল চুষে খেলে লোকে কী বলবে। শুধু কাপড়ের হাতা গুটিয়ে নিন এবং শুরু করে দিন।"
এই কথাটা একজন বিদেশীকে বলা হয়ত দরকারী, কিন্তু একজন বাঙালীকে বলা দরকারী কিনা সন্দেহ আছে। তাছাড়া এই ভাবে বলার মধ্যেও বিদেশী গন্ধটা পরিষ্কার।
বাঙালিদের মধ্যেও অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন খাওয়ার রীতিনীতি নিয়ে। খেয়াল করে দেখবেন খাওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে, কেউ কেউ অন্যদের তুলনায় বেশি মার্জিত। ট্যুরিস্টরা অন্তত একটু ক্যাজুয়াল থাকুক সব কিছুতে এটাই তো কাম্য। সেই উদ্দেশ্যেই বলা। ধন্যবাদ

কুটুমবাড়ি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।