(প্রায় দেড় বছর আগে যখন এই লেখাটা লিখি তখন সাইফুর রহমান জীবিত ছিলেন। আজ তিনি নেই কিন্তু তার ভালো-মন্দ সব কাজগুলো আমাদের মাঝে রেখে গেছেন। তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি। RIP সাইফুর রহমান!)
এই লেখাটা অতি চিন্তাশীল এবং সিরিয়াস পাঠকদের জন্যে নয়। পড়তে চাইলে নিজ দায়িত্বে পড়বেন
‘মাল’ শব্দটা আদি বাংলা না এবং বাংলা অভিধানে না থাকারই কথা। যদিও এটা বাংলা ভাষায় আত্মীকরণ হয়েছে। মাল শব্দটা আ ...(প্রায় দেড় বছর আগে যখন এই লেখাটা লিখি তখন সাইফুর রহমান জীবিত ছিলেন। আজ তিনি নেই কিন্তু তার ভালো-মন্দ সব কাজগুলো আমাদের মাঝে রেখে গেছেন। তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি। RIP সাইফুর রহমান!)
এই লেখাটা অতি চিন্তাশীল এবং সিরিয়াস পাঠকদের জন্যে নয়। পড়তে চাইলে নিজ দায়িত্বে পড়বেন
‘মাল’ শব্দটা আদি বাংলা না এবং বাংলা অভিধানে না থাকারই কথা। যদিও এটা বাংলা ভাষায় আত্মীকরণ হয়েছে। মাল শব্দটা আদিতে আরবী শব্দ যার অর্থ কোষাগার বা ট্রেজারী (উদাঃ বাইতুল মাল)। আদি বাংলা শব্দ না হলেও বাংলা ভাষায় এর ব্যবহার বহুবিধ। নিচে উদাহরনসহ মালের কিছু ব্যবহৃত প্রতিশব্দ দেয়া হলো-
১। টাকা বা অর্থঃ বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বিশাল মালদার মানুষ, মন্ত্রী মিনিষ্টার পোঁছে না।
২। মদঃ ওস্তাদ, আইজ কইলাম কেরু কোম্পানীর মাল খামু।
৩। চুলঃ স্যারের ছাদে মাল নেই কিন্তু বগলে বাবরী।
৪। মেধা বা ব্রেইনঃ ছেমড়ার মাথায় মাল নাই, কিচ্ছু পইড়া মনে রাখতে পারে না।
৫। সুন্দরী/নারীঃ দোস্ত, তোদের অফিসের রূমানা ম্যাডাম কিন্তু ফাটাফাটি একটা মাল।
৬। বীর্য বা সিমেনঃ এর্শাদ চাচা আবার কিসের ব্যাটা মানুষ! ভায়াগ্রা না খাইলে তো উনার শর্টেই মাল আউট হইয়া যায়।
৭। ঘুষঃ সচিবালয়ে মাল না খাওয়ালে আপনার ফাইলও মুভ করবে না আর বিলও পাশ হবে না।
৮। চরিত্রঃ আমাদের এমপি সাহেব একটা জটিল মাল; কখন কার পিছনে থাকে বোঝা যায় না।
৯। লোহাঃ গাড়ির ক্রাঙ্কশ্যাফট ক্ষয়ে গেছে, এখন ওটায় মাল ধরাতে হবে।
১০। অস্ত্রঃ ব্যাটা বিশাল টেরর। সবসময় সাথে মাল নিয়া ঘোরে।
সময় নিয়ে ভাবলে বা খুজঁলে মালের আরও সমার্থক শব্দ বা সিনোনিমস্ পাওয়া যেতে পারে। তবে উদাহরন হিসেবে একটা জোক বলার লোভ সামলাতে পারছি না-
মেয়েঃ (স্কুল থেকে ফিরে)- মা, মা, আমি আর স্কুলে যাবোনা। বখাটেগুলো আমাকে দেখলেই মাল-মাল বলে টিজ করে।
মাঃ (দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে)- কি আর করবি রে মা, আমাকে দেখলেও এক সময় ওরা মাল-মাল বলে টিজ করতো। কিন্তু তোর আব্বা ঘসে ঘসে আমার ‘ল’ তুলে ফেলেছে। তাই এখন আর তেমন একটা টিজ করেনা।
আমাদের বর্তমান মাননীয় অর্থমন্ত্রীর নামের সাথে পদবীর কাকতালীয়ভাবে মিলন ঘটে গেছে। ‘আবুল মাল’ বিশ্লেষন করলে পাওয়া যায় ‘মালের আব্বা’। বাস্তবেও তিনি বাংলাদেশের যাবতীয় অর্থ বা মালের আব্বা বা বলা যায় বৈধ অভিভাবক। তিনি ব্যাক্তিজীবনে কতবড় ১ নং মালের মালিক তা আমি জানিনা। আশা করি তার ২ নং মালের নেশা নেই। যদিও তার ছাদে ৩ নং মাল নেই তবে মাথা ৪ নং মালে ভরপুর। তিনি ৫ নং মালের লিংগভুক্ত নন। তার ৬ নং মালের প্রসঙ্গ ভেরি প্রাইভেট; তাছাড়া তিনি পিতৃতূল্য, প্রবীন। তার ৭ নং মালের অভ্যেস আছে কিনা আমার জানা নেই তবে তাকে ৮ নং মালের মতো মনে হয়না। ৯ নং মালের খবর তার ড্রাইভার সাহেব ভালো দিতে পারবেন। আর তার লাইসেন্স করা ১০ নং মাল থাকতে পারে, আমার জানা নেই। তবে সব কথার বড় কথা হচ্ছে তিনি দেশের মালের আব্বা হয়েছেন নিজ যোগ্যতাবলে, নামাধিকারবলে নয়।
আমাদের পূর্ববর্তী রেকর্ডহোল্ডার ফাইনান্স মিনিষ্টার মহোদয় সাইফুর রহমান সাহেবের নামের আভিধানিক অর্থ ‘সোর্ড অব দ্য কমপ্যাশনেট’ বা ‘করূণাময়ের তরবারী’। তার এই তরবারী অনেক ফাইনানশিয়াল ক্রিমিনালের কেশাগ্র স্পর্শ না করলেও অনেক নিরাপরাধীর কল্লা এক কোপে নামিয়ে দিয়েছিলো। মাত্র ১০ হাজার টাকা লিমিটের ক্রেডিট কার্ডেও তিনি অগ্রিম আয়কর (এআইটি) বসিয়ে জাতিকে রাজস্বের এক মহাখাত উপহার দিয়েছিলেন। তবে একজন ক্যারিয়ার ‘মালনীতিবিদ’ না হয়েও দেশের মালের আব্বাগিরি করেছেন কয়েক মেয়াদে এবং তিনি ফ্লপ ছিলেন এটা বলা সততা হবে না। ব্যাক্তিগত মালবিশ্লেষনে বর্তমান অর্থমন্ত্রীর সাথে তার পার্থক্য হচ্ছে তার মাথায় বেশ কিছু ৩ নং মাল আছে যা বর্তমান অর্তমন্ত্রী মহোদয়ের নেই।
তবে চরম দুঃখের বিষয় এই যে সাইফুর রহমান সাহেবের বুড়ো ছেলে ‘বাবু’ এতো বেশি ১ নং এবং ৭ নং মালে আসক্ত ছিলেন যা বলে শেষ করা যায়না। আর ‘সোর্ড অব দ্য কমপ্যাশনেট’ সবসময় তার বিশাল সোর্ড দিয়ে তার আদরের বুড়ো ‘বাবু’ কে আগলে রাখতেন। খুব কষ্ট পেয়েছিলাম যখন সিলেটের একজন ব্যবসায়ী বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন যে যখন তিনি তৎকালীন মালের আব্বার কাছে করুণা ভিক্ষা চাইতে; আব্বার বুড়ো ‘বাবু’ যেনো তাকে ৭ নং মালের হাত থেকে রেহাই দেয়। তিনি মালের আব্বা সোর্ড অব দ্য কমপ্যাশনেটের পা জড়িয়ে ধরেছিলেন এবং সোর্ড অব দ্য কমপ্যাশনেট ওই ব্যবসায়ীকে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছিলেন। মালের পাওয়ার এমনই পাওয়ার যে মালের আব্বাও তার বুড়ো বাবুকে এভাবে অবাধ মাল সেবনে প্রশ্রয় দিতেন।
মন্তব্য
চমৎকার লেখা। একটু পেছনে ঘাঁটলে সাইফুর রহমানের ৭ নং মালের প্রতি আসক্তিটুকুও তুলে আনতে পারতেন।
ধন্যবাদ, কী কমু (ভাই কমু না আপা কমু বুঝতে পাতেছি না) যে লোক বাবুর মতো একটা ছেলের প্রোডাকশন দিয়েছেন, তার আর পিছন ঘাঁটা লাগেনা। ওয়ান ইজ এনাফ।
রাতঃস্মরণীয়
জব্বর লিখছেন নানাভাই,...... কা'মাল করদিয়া আপনে!!!
তা, ইদানিং মাল কড়ি কেমন কামাচ্ছেন?
বেহেস্তি বান্দা সাইফুর রহমান সাহাবের ৫ নাম্বার মালের নেশা ও ছিল...ঐ যে সুতপা সিনহা...!!!
স্বর্গীয় সাইফুর রহমান সাহেব বেঁচে থাকতে বাথরুমে বসে জানালা দিয়ে ছেরি (!!!) দেখতেন।
কি মাঝি, ডরাইলা?
অতিথি ভাই এবং দোহী দা, এইসব কাহিনী তো জানতাম না!!! যাইহোক, এডিট করা লাগবে বুঝতে পারছি। খালি আফসোস যে সচলায়তন আমার এই পোষ্টটাকে নীড়পাতায় দিলোনা। ধন্যাবাদ আপনাদের দুজনকে।
রাতঃস্মরণীয়
আপনাকে ও ধন্যবাদ। সাইফুর রহমা্ন সাহেবের এই কার্যকলাপ সম্পর্কে আমি ও খুব বেশি জানতাম না, যে টুকু জেনেছি তার সবটাই দৈনিক প্রথম আলো থেকে পড়া।
নতুন মন্তব্য করুন