২০০৬ সালের মে মাসে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি গিয়েছিলাম ১০ দিনের জন্য; ট্রেনিং করতে এবং করাতে। নাইরোবি থেকে ৯ ঘন্টার একটানা ফ্লাইট। কোমর, নিতম্ব, পিঠ সব যেন নিস্পন্দন হয়ে গিয়েছিলো। প্লেন থেকে নামতেই যেন আগুনের একটা হলকা এসে মুখে লাগলো। তারপর আবার ঢুকলাম এয়ারকন্ডিশানড্ লাউঞ্জে। নাইরোবির তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে স্যুট পরা ছিলাম। আরেকটা বিষয়, অভিজ্ঞতায় দেখেছি আফ্রিকান বিমানবন্দরগুলোতে একটু ভালো স্যুট-টাই পরা লোকজনকে একটু খাতির করা হয়। তাই বামাকোতে নামার পর মনে হচ্ছিলো গরম যেন বেশি লাগছে।
পাসপোর্ট কন্ট্রোলে লাইন দিয়ে দাঁড়ালাম আর এদিক ওদিক তাকাতে থাকলাম আমাকে নিতে কে এসেছে সেই খোজে। দেখলাম কেউ আমার নাম লেখা বোর্ড নিয়ে দাড়িয়ে নেই। আমার পালা এলো। ইমিগ্রেশন অফিসার আমাকে ফরাসী ভাষায় বোঁ জ্যঁ বলে স্বাগত জানালে আমি শুধু বললাম ‘বোঁ জ্যঁ মশিয়ে; এক্সখ্যুজে মোয়া, জ্য ন্য পা পাহ্খ্লে ফ্রঁসে’, শুভদিন জনাব; মাফ করবেন, আমি ফরাসী বলতে পারি না/বলি না। এরপর তিনি ইংরেজিতে জানতে চাইলেন আমার অরিজিনাল ভিসা কই। আমি জানালাম যে আমার অফিস থেকে লোক আসার কথা অরিজিনাল ভিসা নিয়ে। এখানে নিয়ম হলো কেউ যদি ভিসার স্কানড্ বা ফ্যাক্স ভার্সন নিয়ে এখানে আসে, তবে তার স্পন্সরের আসল ভিসা নিয়ে পাসপোর্ট কন্ট্রোলে অপেক্ষা করতে হয়। আমি আমার বিজনেস কার্ড দিলে অফিসার আমাকে অপেক্ষা করতে বললেন যতক্ষণ না আমার লোক আসে। আমি বিনীতভাবে তাকে বললাম যে আমার একটি সিগারেট টানা নিদারূন প্রয়োজন কারণ প্রায় ১২ ঘন্টা সিগারেট টানিনি। তিনি একজন ষ্টাফকে ডেকে আমাকে লাউঞ্জের বাইরের দিকটায় কয়েকজন প্লাম্বার কাজ করছে, ওখানে নিয়ে যেতে বললেন এবং আমাকে বললেন সিগারেট টানা হলে ওর সাথে আবার ফিরে আসতে। মুগ্ধ হলাম অফিসারের আচরণে। পরম শান্তিতে ২টা সিগারেট টানলাম একটার পর একটা, তারপর আবার লাউঞ্জে এসে বসলাম। কিন্তু বিপত্তি বাধলো যে, যে প্লেনে এসেছি ওই প্লেন আবার ডাকারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। আমাদের তার আগেই ক্লিয়ার হতে হবে। আমার সাথে একটা ইন্টারন্যাশনাল রোমিং মোবাইল ফোন ছিলো এবং সহকর্মী আবদেলহাদীকে ফোন করতে যাবো এসময় একজন অফিসার এসে আমাকে নিয়ে গেলেন চিফ ইমিগ্রেশন অফিসারের রুমে। বয়ষ্ক লোক চেয়ারে বসে টেবিলের উপর দুই পা তুলে দিয়ে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন। তরূন অফিসার চিফের কানের কাছে মুখ নিয়ে ‘এক্সখ্যুজে মোয়া’ ‘এক্সখ্যুজে মোয়া’ বলে কয়েকবার ডাকতে তিনি বিরক্তভাবে চোখ খুলে তাকালেন এবং নিতান্ত অনিচ্ছায় পা দুটি টেবিল থেকে নামালেন। ভদ্রলোক মোটেই ইংরেজি রোঝেন না। আমার হাতের মোবাইল ফোনটি দেখিয়ে বলতে লাগলেন ‘কল ফ্রেঁদ ফ্রঁসে স্পিকিং’, ‘কল ফ্রেঁদ ফ্রঁসে স্পিকিং’। আমি আবদেলহাদীর ন্যাশনালিটি জানতাম না। ওকে ফোন করে পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলাম ও ফ্রেঞ্চ বলতে পারে কি না। না পারলে ফ্রেঞ্চভাষী কাউকে ডেকে ফোন ধরতে। ফোনেই একগাল হেসে আবদেলহাদী বললেন যে সে আলজেরিয়ান এবং ফেঞ্চ তার মাদার টাঙ। আরও বললো যে আমাকে রিসিভ করতে আমাদের এ্যাডমিন্সট্রেইটার ‘বিখায়ী’ আসছে। বিখায়ী অফিস থেকে রওনা হয়েছে বেশ আগে এবং এতক্ষণে তার পৌছে যাবার কথা। এরপর ফোন দিলাম অফিসারকে এবং তারা ফ্রেঞ্চ ভাষায় কিসব বললেন বুঝলাম না; শুধু বুঝলাম চিফ যখন বললেন ‘দ্য খ্য’ (ইই আর ওয়েলকাম); নিশ্চই আবদেলহাদী তাকে বলেছেন মেখ্বসি ব্যুকু (থ্যাংকস্)।
হঠাৎই বিশাল গম্ভীর একটি কণ্ঠস্বরে রুমটি কেঁপে উঠলো, ‘বোঁ জ্যঁ মশিয়ে; কমঁ তালে ভ্যু? মাদামে অঁফঁ বিয়্যাঁ?’। তাকিয়ে দেখি প্রায় সাড়ে ছয় ফুট লম্বা এবং সমানুপাতিক চওড়া বিশাল এক দানব আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছে, মুখটা অবিকল বিখ্যাত অভিনেতা জিম ব্রাউনের মতো। ‘আজজালামুআলাইকুম, দিজ ইজ বিখায়ী, জরি মাই ফেরেন্দ টু কিপ ইউ ওয়েইটিং’। কুশল বিনিময় করলাম। বুঝলাম বিখায়ীর সাথে চিফের ভালো পরিচয় নইলে তার বৌ-বাচ্চার খবর তো নেওয়ার কথা না। যদিও এমনও হতে পারে যে এটা ওদের রীতি।
চিফ আমার পাসপোর্টটা খুলো দড়াম করে একটা ষ্ট্যাম্প করে দিয়ে আবার বিখায়ীর হাতে ফেরত দিলেন। আমরা বেরিয়ে পড়লাম, গাড়িতে উঠে বিখায়ী কাকে যেনো মোবাইল ফোনে আমার পাসপোর্ট নাম্বার, ডেট অব ইস্যু এন্ড এক্সপায়ারি, ইত্যাদি বলছে। বেশ কিছুদুর যাবার পর বিখায়ী পাসপোর্টটা আমার হাতে দিলো। এরপর আমি আমার অভ্যাসবশতঃ পাসপোর্ট খুলে ষ্ট্যাম্পটা চেক করে দেখি কম্ম সাবাড়। আমিই আজকে প্রথম ব্যাক্তি যাকে উনি নিজে ষ্ট্যাম্প করলেন। উনি ষ্ট্যাম্পের তারিখ চেঞ্জ করেননি; গতকালকের তারিখই রয়ে গেছে। বিখায়ী চিফকে মোবাইলে কল করলে চিফ জানালেন তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে গেছেনে এবং আর ফিরবেন না কারণ রাতে নাইজার থেকে বাকী যে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট আসবে তখন অন্য চিফ ডিউটিতে আসবেন। বিখায়ী বরঞ্চ পরে কোনও একসময় তার অফিসে এসে সঠিক তারিখের ষ্ট্যাম্প করে নিয়ে যাবে। যদিও সেই সঠিক ষ্ট্যাম্প আর করা হয়নি।
ছোটবেলায় পড়েছিলাম দাবদাহের ফলে মাটিতে আগুন ধরে যায়। নিজের চোখে তাই দেখলাম রাস্তার পাশের জমিতে। মাটি ফেটে চৌচির তার মাঝ থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। দুএকটা আগুনের ফুলকিও দেখা যাচ্ছে। গাড়ির এসি সবথেকে কম তাপমাত্রায় দেয়া, কোট খুলে ফেলেছি তার পরও দরদর করে ঘামছি। এগুলো দেখে মনে হচ্ছিলো আমরা বাংলাদেশে কত শান্তিতে আছি। হঠাৎই নামলো বৃষ্টি, মুষলধারে। কিছুক্ষণ পরে থেমেও গেলো কিন্তু গরম কমলো না।
দেখতে দেখতে এগোচ্ছি বামাকো শহরটাকে। খুবই যে সুন্দর বা সাজানো গোছানো তা কিন্তু বলা যাচ্ছে না। তবে ঢাকার মতো এতোটা জনবহুল না। এখানে আপনি মার্সডিস বেঞ্জ আর বিএমডব্লিউর ছড়াছড়ি দেখবেন। কাঠের তক্তার উপর পুরু ছালা দিয়ে রেকসিন মোড়ানো সিটওয়ালা হদ্দপুরানো মার্সিডিস বা বিএমডব্লিউ ট্যাক্সি পাবেন অহরহ।
একটু দুরেই দেখা যাচ্ছে উঁচু পাহাড়ের উপরে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ, পার্লামেন্ট এবং সচিবালয়। সেখানে যাওয়ার মাত্র একটাই রাস্তা আছে। ট্রেকিং করে ওঠাও একরকম অসম্ভব কারণ রাত-দিন চব্বিশটা ঘন্টা সেখানে পাহারায় থাকে সুসজ্জিত কমান্ডোবাহিনী। এতো ক্ষমতাধর মানুষ কিন্তু তারও মানুষের মাঝে বসবাসে ভীতি।
এভাবেই ঘামতে ঘামতে অফিসে পৌঁছলাম। দিনটি ছিলো সপ্তাহান্ত (উইকএন্ড)। তারপরও দেখি আবদেলহাদী অফিসে বসে আছেন। আমার ১১ দিনের যে ডিএসএ (ডেইলি সাবসিস্টেন্স এ্যালাউঞ্জ) হবে, তার হিসেব করে, মালি শিলিংএ কনভার্ট করে ক্যাশ নিয়ে বসে আছেন। লোকটা ডিরেক্টর অব অপারেশনস্ এবং এ্যাকটিং কান্ট্রি ডিরেক্টর কিন্তু তার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলাম। আধ ঘন্টার আলাপে বন্ধু হয়ে গেলাম। বিখায়ীকে জানতে চাইলেন আমার লাঞ্চের কি ব্যবস্থা হচ্ছে। জবাবে বিখায়ী তাকে উদ্বিগ্ন হতে বারণ করলো। আবদেলহাদী প্রতি মাসে বার দুয়েক আলজিয়ার্সে যান পরিবারের কাছে; দুরত্ব কম, প্লেন ফেয়ার কম; ভিসা লাগেনা; ইত্যাদি অনেক সুবিধা। তার স্ত্রী অবশ্য বামাকোতে তেমন একটা আসতে পারেন না কারণ তিনিও চাকরী করেন তাছাড়া বাচ্চাদেরও স্কুলিং আছে।
আমাকে গেষ্ট হাউসে নিয়ে যাবার পথে বিখায়ী একটি ডিপার্টমেন্টাল শপে দাড়িয়ে কিছু কেনাকাটা করলেন এবং এরপর তার বাড়িতে দাড়ালেন। তারপর আমাকে বিনীতবাবে খাবার আমন্ত্রন জানালেন। আমি ধন্যবাদের সাথে তার আমন্ত্রন গ্রহন করলাম। আমি খেয়াল করিনি যে বিখায়ী শপ থেকে আমার জন্যে চিকেন পেটিস কিনেছেন। আমাকে লজ্জিতভাবে বললেন যে যদি আমি তাদের খাবার খেতে না পারি তাই পেটিস কেনা। আমি পেটিসও খেলাম আর ওদের বাড়ির হাতরুটি আর গরুর গোশতও খেলাম। বেশ ঝোল দিয়ে রান্না তরকারী। ওদের বাড়ি একটা বিরাট ৩ তলা। আমি জানতে চাইলাম বাড়িতে কারা কারা থাকেন। ও বললেন ওর মা আছেন ভাইয়েরা আছে আর তাদের পরিবার আছে। আমি জানতে চাইলাম ওর বাচ্চাদের কথা। ও বললেন আমার বাচ্চা ১৮টি। শুনে আমি তো তাজ্জব, চোখ ছানাবড়া। বিখায়ী হয়তো আমার থেকে খুব বেশি হলে ৬-৭ বছরের বড় হবেন। ও একটি বিরতি দিয়ে বলা শুরু করলেন, আমার বড় ভাইয়ের ৫টি সন্তান; আমি মেঝো, আমার ৬টি সন্তান, তার মধ্যে প্রথম স্ত্রীর থেকে ৫টি এবং ২য় স্ত্রীর ১টি; আমার ৩ নাম্বার ভাইয়ের সন্তান ২টি; ৪ নাম্বার ভাইয়ের ২ স্ত্রী, উভয়ের ২টি করে সন্তান; এবং ৫ নাম্বার ভাইয়ের ১টি সন্তান। এটা যে ওদের বলার রীতি তা পরে আরও দেখেছি অন্য বন্ধুর বাসায় গিয়ে বা আলাপ করে। খাওয়া শেষে বিখায়ীর স্ত্রী আমাকে টি ব্যাগের চা দিলেন। এরা টি ব্যাগের চা'কে বলেন লিপটন, সে যে ব্যান্ডের হোক না কেনো। মবিলের মতো বিষয়টা। মালির মানুষ ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চা খান তবে সেটা কাঁচা পাতার চা। অত্যন্ত কটু স্বাদ লাগলো আমার কাছে। সারা দিনের জ্বালানো পাতা। এই চা না হলে নাকি তাদের চলে না।
এসময় আমি বোকার মতো একটি প্রশ্ন করে বসলাম, ‘তুমি ২টি বিয়ে করলে কেনো’? বিখায়ী খুবই স্বাভাবিকভাবে বললো যে তার ‘লিবিডো’ অত্যধিক ‘হাই’, নিয়মিত সেক্স না করতে পারলে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। প্রথম স্ত্রী ২-৩টা বাচ্চা হওয়ার পর থেকে তাকে আর ভালো সাপোর্ট দিতে পারেন না। আবার একজন মুসলমান হিসেবে তিনি যত্রতত্র সেক্সও করে বেড়াতে পারেন না। তাই প্রথম স্ত্রীর অনুমতিক্রমে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তবে তিনি কারও প্রতি পক্ষপাত করেন না। এরপর বিখায়ী আমাকে গেষ্ট হাউজে তুলে দিলেন।
বিখায়ীর বাসা থেকে গেস্ট হাউজে যাওয়ার পথে এক ট্রাফিক পুলিস আমাদের থামালেন এবং সাথে সাথেই ছেড়ে দিলেন। বিখায়ী ব্যাখ্যা করলেন যে ট্রাফিক পুলিস কিছু ঘুষ চাইলেও গাড়িতে ফরেনার দেখে ছেড়ে দিয়েছেন।
আমি হলাম গেষ্ট হাউজের প্রথম গেষ্ট। রাতে নাইজার থেকে এলেন বন্ধু বাল্লা ইয়াহইয়া। এরপর যে কয়দিন বামাকোতে ছিলাম, সবসময় থাকতাম বন্ধু মামাদৌ এবং বাল্লার সাথে। সারাদিন কাজ করে সন্ধায় বেরিয়ে পড়তাম নাইট ক্লাবের উদ্দেশ্যে। আর বলতে হবে, অতিরিক্ত গরমের জন্যে দিনে বার বার, এমনকি ৪-৬ বার গোসল করতে হতো। নিচের ছবিটায় আমরা বামাকোর বিখ্যাত 'ল্য এ্যারিস্ট্রোক্র্যাট' এবং 'ব্লাহ ব্লাহ' নাইটক্লাবে।
এখানে দেখতে পেলাম চাইনিজরা কিভাবে তাদের স্কিল দিয়ে স্থান করে নিচ্ছে। একটা চাইনিজ পরিবার দেখলাম যাদের কর্তাকে দেখেছিলাম কাঁধে ল্যাডার ঝুলিয়ে আমাদের অফিসের ইলেক্ট্রিক মেইনটেন্যান্সের কাজ করতে আসছে। পরে দেখি সে বামাকোর অন্যতম প্রধান একজন ইলেক্ট্রিক সাপ্লাইজ ও মেইনটেন্যান্সের ব্যবসায়ী এবং তাদের বাড়ির নারীরা চায়নিজ রেস্টুরেন্ট চালাচ্ছে। লেবানিজরাও দারুনভাবে উঠে আসছে বিশেষ করে গ্রোসারী এবং রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ে। তবে ইনডিয়ানদের দেখলাম না মোটেও।
একদিন মামাদৌ নিয়ে গেলেন মালির ঐতিহ্যবাহী এবং জনপ্রিয় ছাগলের গোশত পোড়া খেতে। রাস্তার পাশের ঘেরা বসার জায়গায় মাঝখানে আগুন জ্বেলে আস্ত ছাগল বারবিকিউ হচ্ছে কোনওরকম মশলা বা তেল ছাড়া। খেতে হবে লবন আর পেঁয়াজের টুকরো দিয়ে। লবন-পেয়াজ দিয়ে সেই পোড়া পেড়ো গোশত, কি যে অসাধারণ তার স্বাদ, জিভে লেগে থাকে! বহুবছর পর সেইরকম গোশত কেনিয়ার নাইবাসা'য় খেয়েছিলাম। গোটা একটা ঠ্যাং তিনজনে মিলে খতম করে দিয়েছিলাম, সাথে দেড়টা মুরগির রোস্ট, সব্জী আর এক বাটি ভাত থাকার পরেও।
এর মাঝে মামাদৌর সাথে ঘুরতে গেলাম মালি মিউজিয়ামে, ম্যুসি নাসিওনাল দ্যু মালি এবং বামাকোস্থ ন্যাশনাল প্রাণীশালায়। মিউজিয়ামটা খুবই ছোট্ট, তেমন সমৃদ্ধও না। অতি সামান্য কিছু ঐতিহাসির নিদর্শনের দেখা পেলাম কিন্তু ভিতরে ক্যামেরার অনুমতি না থাকায় আর ছবি নেওয়া হয়নি, সামনে দাঁড়িয়েই ছবি তুলেছি। এদিন আমাদের সাথে যুক্ত হলো মামাদৌর কিশোরী মেয়ে আওয়া। ওয়েস্ট আফ্রিকানরা নামটাকে হাওয়া লিখলেও উচ্চারণ করে আওয়া।
প্রাণীশালায় গিয়ে আসলেই মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। এতো অব্যবস্থা আমি পৃথিবীর আর কোনও প্রাণিশালায় দেখিনি। দুর্গন্ধে পেট পাকিয়ে আসতে চাচ্ছে। সিংহের আস্তানাজুড়ে এখানে সেখানে ছড়িয়ে আছে গাধার মাথা। সিংহের খাবার হিসেবে গাধা দেওয়া হয়। সিংহ মাথা ছাড়া গোটা গাধাটাকেই খেয়ে ফেলে। গাধার মাথা নাকি এতোই শক্ত যে তা ভেঙে খাওয়ার সাধ্যি সিংহমামার নেই। তাই মাথাগুলো পঁচতে থাকে সিংহমামার ডেরার মধ্যে। ছয়মাসে-বছরে একবার পরিষ্কার করা হয়। শকুনেরাই অবশ্য আস্তে আস্তে পরিষ্কারের কাজে ভলান্টারিং করতে থাকে।
আমরা প্রায়ই দুপুরে খেতে আসতাম অফিস থেকে বেশ কাছে একটি ভালো রেষ্টুরেন্টে। ভাঙা চালের ভাতের দাম আস্ত চালের ভাত থেকে ৩-৪ গুন। অথচ আমরা বাংলাদেশে ভাঙা চাল বা খুদ মুরগি-হাস বা গরুকে খেতে দেই। রেষ্টুরেন্টটি বামাকো শহরের প্রধান রোডের্ একটি জাংশনএ। একটি বিশাল রাউন্ডএ্যাবাউট, যেখান থেকে ৪-৫ দিকে রাস্তা চলে গেছে। তার ভিতরে একটি রাস্তা গেছে আমাদের অফিসের দিকে। হঠাৎ একদিন চোখ পড়ে গেলো রাউন্ডএ্যাবাউটের উপর একটি রোড ইন্ডিকেটরের দিকে, লেখা রয়েছে ‘অ্যভেন্যু শহীদ জিয়াউর রহমান’।
মামাদৌকে জিজ্ঞাসা করলাম যে কে এই জিয়াউর রহমান। মামাদৌ বললেন যে তিনি তার ছাত্রজীবন থেকে এই নাম দেখে আসছেন কিন্তু তিনি জানেন না যে কে এই লোক। তবে তিনি এটা বোঝেন যে এই জিয়াউর রহমান বিদেশী কারণ মালিতে এই ধরনের নাম হয়না। আমার আগ্রহ দেখে মামাদৌ রেষ্টুরেন্টের তরুনী মালিককে জিজ্ঞাসা করলে মেয়েটি বললেন যে তিনি তার জন্মের পর থেকে এই নাম দেখে আসছেন। তিনিও জানেন না যে কে এই লোক। মামাদৌ আমাকে বললেন যে এই সংক্রান্ত তথ্যের জন্যে বিখায়ী আদর্শ লোক। আমরা অফিসে ফিরে গিয়ে বিখায়ীকে জিজ্ঞাসা করবো।
বিখায়ী শুনে বললেন যে তিনিও জানেন না তবে এসম্পর্কে তবে সিটি কর্পোরেশনে খোঁজ নিয়ে তিনি জানবেন। বিকেলে বিখায়ী জানালেন যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আজ ছুটিতে তাই তথ্য সংগ্রহ করা গেলোনা। তবে তিনি আগামীকাল ছুটি থেকে আসবেন, তখন জানা যাবে।
পরদিন আমি তাগিদ দেবার আগেই বিখায়ী আকর্ণবিস্তৃত হাসি দিয়ে বললেন, মাই ফেরেন্দ, হি ওয়াজ ইউয়ার কান্ট্রিম্যান, ফরমার প্রেসিদেন্ত। আমি শুনে আবেগে অবিভূত হলাম। বিখায়ী অনেক তথ্য এনেছেন যা তাদের বামাকো সিটি কর্পোরেশনের গেজেটে লেখা আছে। বললেন, ইসলামী রাষ্ট্রগুলির সংহতির সৃষ্টিতে তার অবদানের জন্য জিয়াউর রহমান অমর হয়ে আছেন। তিনি ১৯৮০ সালের ৩০ মে কতিপয় বিদ্রোহী সেনাসদস্যের দ্বারা নির্মমভাবে শহীদ হন। তার এই মৃত্যু ইসলামী উম্মাহর জন্য অপুরণীয় ক্ষতি। মালি তথা ইসলামী রাষ্ট্রসমূহ আজীবন এই মহান নেতাকে স্মরণ করবে। এই নিমিত্তে বামাকোর প্রানকেন্দ্রে এই সড়কটির নাম করা হলো ‘অ্যভেন্যু শহীদ জিয়াউর রহমান’। বিখায়ী বললেন, এই রাস্তার প্রান্তে জিয়াউর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনী লিখলে হয়তো মানুষ তার সম্পর্কে জানবে।
অদ্ভুত একটা ভালোলাগা আর সীমাহীন গর্ব মানের ভিতরে দোলা দিলো। মালিতে আমাদের দূতাবাস নেই; মালির সাথে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য নেই; মালিতে আমাদের দেশের ‘আদম’ সমাজ কখনও জীবিকার খোজেঁ যান না; আর আমাদের দেশের ছাত্ররাও ওখানে পড়তে যান না। তার পরও এই দেশের বুকে আমাদের একজন বাংলাদেশের মানুষের নাম খোদিত হয়ে আছে, আর থাকবে চিরদিন।
আমি ব্যাক্তিগতভাবে রাজনৈতিক চর্চা থেকে সম্পূর্ণ বিরত একজন মানুষ। আমি মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী মানুষ এবং একাত্তুরের চেতনায় উজ্জিবীত একজন। এমনকি আমার কোনও রাজনৈতিক দলের জন্য নীরব সমর্থনও নেই। তাই দলীয় পক্ষপাতের বাইরে থেকে যখন দেখি কলকাতায় শেখ মুজিবর রহমান স্মরণী, তখনও গর্বে বুক ভরে যায়। কিন্তু ইনডিয়া তো আমাদের বাড়ির পাশে, আমাদের ইতিহাসের প্রায় সবকিছুর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর মালি, হাজার হাজার মাইলের দূরত্বের একটা দেশ, বাংলাদেশের মানুষ এমনকি কখনও ওখানে বেড়াতে যেতেও ভাবেন না; এমনই একটা দেশ আমার দেশের মানুষের নামে সেই দেশের সড়কের নাম দেয়। এই গৌরবের কোনও দলীয়করণ না করাটাই হবে সততা।
এর মাঝে দুইদিন করে গেলাম শপিং করতে স্থানীয় বাজারে। রাহিলা নামের এক কৃষ্ণসুন্দরী নাইজার থেকে এসে বামাকোতে মেডিক্যাল পড়ছেন। বিবাহিত এবং একটা বাচ্চার মা। তিনিই আমাদের, মানে আমার আর বাল্লার গাইড হলেন। রাহিলার বড় বোন বাল্লার সহকর্মী, আমাদের সংস্থাতেই কাজ করেন নাইজারের রাজধানী নিয়ামীতে। শুক্রবার দুপুরে রাহিলা এলেন গেস্টহাউসে এমনই সময়ে যখন বাল্লা এবং হাউসের কর্মীরা সবাই জুম'আর নামাজে গেছেন। সেই অবসরে তার সাথে কাটাতে হলো কিছুটা সময়। মালির সিল্কের কাপড় নাকি খুব বিখ্যাত। দুই সেট কাপড় কিনলাম। বাল্লা কিনলেন ২০ সেট, নাইজারে নিয়ে বিক্রির জন্যে। নাইজারে কাকে যেনো ফোন করে বলে দিলেন ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নে আর্জেন্ট টাকা পাঠাতে, আরও কিনবেন। আরও বলে রাখলেন নিয়ামী কাস্টমসে লোক সেট করে রাখতে।
চলে আসার আগের দিন মামাদৌ তার বাড়িতে আমাদের লাঞ্চ করালেন মালির ঐতিহ্যবাহী খাবার দিয়ে। তার ভাইদের দু'জন আর সন্তান-ভাইপো-ভাইঝির এক দঙ্গল পিচ্চিপাচ্চা আমাদের সাথে খেলেন। এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটা হচ্ছে বিরিয়ানির মতোই তবে মাছ, গোশত আর ডিম একসাথে দেওয়া। মাছ থাকায় খাওয়াটা জমলো না। তবে তাদের আন্তরিকতায় আমি সত্যিকার মুগ্ধ হলাম।
দেখতে দেখতে ফেরার সময় ঘনালো। মামাদৌ আমাকে এয়ারপোর্টে নামিয়ে দিতে আসলেন। সেখানে আবার বাধলো এক ঝামেলা। ইন্সপেক্টর বলছেন আমি নিয়ম থাকা সত্ত্বেও এখানে আসার পর পুলিসে রিপোর্ট করিনি। যাই হোক মামাদৌ ১৫,০০০ শিলিংএ রফা করলেন। ওই ইন্সপেক্টর আমাকে একদম বোর্ডিং গেটে বসিয়ে দিয়ে আসবেন। পরে বুঝলাম যে এই রফা না হলে আমার কপালে অনেক দূর্ভোগ ছিলো।
মন্তব্য
পড়লাম।
ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই। লেখাটার শুরুর একটা লাইন কিভাবে যেনো দেখছি মিসিং হয়ে গেছে। লাইনট ছিলোঃ
"২০০৬ সালের মে মাসে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি গিয়েছিলাম ১১ দিনের জন্য; ট্রেনিং করতে এবং করাতে।"
আর বুঝলাম না ছবি কেনো আসছে না! ভাই একটু পরামর্শ দেন প্লিজ, ফ্লিকারের ছবির লিংক না কি এইচটিএমএল পেষ্ট করতে হয় এখানে?
রাতঃস্মরণীয়
শেয়ার দিস বাটনে ক্লিক করে গ্র্যাব দি এইচটিএমএল এ যান। তার পরে কোড কপি করে পেস্ট করেন। সবসময়ই প্রিভিউ দেখে তার পরে লেখা সাবমিট করবেন। এখন তো কোডটা contact @ sachalayatan.com এ পাঠাতে হবে।
ধন্যবাদ ভাই। আমি আসলে লিংক পেষ্ট করেছিলাম। তবে এখন থেকে প্রিভিউ না দেখে সাবমিট করবো না।
আর কোডগুলো ইমেইল করে পাঠাচ্ছি। দেখি কাজ হয় কি না।
রাতস্মরণীয়
গৌরবের দলীয়করণের প্রয়োজন নাই, অবশ্যই। কিন্তু অবৈধ অসাংবিধানিক অনির্বাচিত সামরিক শাসকের নাম মঙ্গলগ্রহে গিয়ে দেখলেও আমার বিরক্ত লাগবে। যেমন আমার দেশে ফ্রাঙ্কো বা পিনোশের নামে রাস্তা হলে আমি ক্ষুব্ধ হবো।
গৌরব জিনিসটা যেনতেন প্রকারে অর্জন করা যায় না।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
‘দ্য খ্য' = দ্যাকখ্ = d'accord = ok!
ধন্যবাদ অনিন্দ্য ভাই, আমি লিখেছি আমার পাসেপশন থেকে আর আপনি মন্তব্য করেছেন আপনার পারসেপশন থেকে। আমি আপনার পারসেপশনকে সমর্থণ করছি না তবেৃ পূর্ণ শ্রদ্ধা করছি।
দুর্দান্ত ভাই, আপনি ঠিক বলেছেন। তবে আপনি তো জানেন অঞ্চলভেদে ফরাসী ভাষার এ্যাকসেন্ট বা টোনে একটু ভিন্নতা দেখা যায়। যেমনঃ আফ্রিকান ফরাসী ভাষাভাষীদের এ্যাকসেন্ট অনেকটা 'ভোকাল' ফ্রান্সের ফরাসীদের থেকে। তবে এটা ভাই বড়ই জটিল ভাষা। আমি ২ বার ফরাসী ভাষার কোর্স করেছি; একবার বাংলাদেশে একবার বিদেশে। এখন যদি আমাকে সাধারণ একটা ফরাসী জিজ্ঞেস করেন, আমি শ্রেফ ঢেলে দেবো। চর্চা না থাকার ফল। কিচ্ছু মনে নেই।
রাতঃস্মরণীয়
রাতঃস্মরণীয়, ধন্যবাদ। আপনার লেখা সাবলীল। এজন্যই পড়েছি। আপনার বিভিন্ন দেশ দেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আরো অনেক কিছু জানতে চাই। এবার আমার করা মন্তব্যটির বিষয়ে ... হ্যাঁ, অবশ্যই ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার পার্সেপশন সম্পর্কেও আমি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু একটি বিষয় সবিনয়ে জানাতে চাই, আমি যখন মন্তব্যটি করেছি সেটা কোনো পার্সেপশন থেকে করিনি। আমি যা বলেছি তা কতগুলো ফ্যাক্ট থেকে বলেছি।
জিয়াউর রহমান,
অবৈধ
(কারণ) অসাংবিধানিক
(এবং) অনির্বাচিত
সামরিক শাসক (সন্দেহ আছে কি?) ছিলেন।
- এগুলো কোনোটাই আমার ব্যক্তিগত পার্সেপশন নয়।
আশা করি ভুল বুঝবেন না। অনেক ধন্যবাদ। আরো লিখবেন।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
অনিন্দ্য ভাই, ভুল বোঝাবুঝির কথা বললে কিন্তু লজ্জা পাবো। আপনার মন্তব্যের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। পারসেপশন তো অবশ্যই ঘটনা থেকে আসে। এখানে আপনি যে ফ্যাক্টগুলো উল্লেখ করেছেন তার ভিত্তিতে আমার ধারণামতে আপনার পারসেপশন হচ্ছে যে এই ধরণের লোকের নামে স্থাপনা হলেও তাতে গৌরবের কিছু নেই। মোটেও দ্বিমত নেই। এখানে জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপনি যে ফ্যাক্টগুলো উল্লেখ করেছেন সেগুলো নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক হতে পারে তবে আমি সেই বিতর্কে মোটেই আগ্রহী না কারণ রাজনৈতিক বিষয়ে আমার আগ্রহ খুবই কম এবং এই বিতর্ক আমার কাছে প্রোডাকটিভ মনে হয় না। আমি সব নেতাদেরকেই তাদের ভালো কাজের জন্যে প্রশংসা জানাই আর মন্দ কাজের জন্যে নিন্দা জানাই। এদেশের অনেক নেতাই মন্দ পন্থার মধ্যে দিয়ে ক্যারিয়ারের সূচনা করে পরবর্তীতে কিছু ভালো কাজ করেছিলেন। আবার অনেক নেতাই পরিচ্ছন্নভাবে ক্যারিয়ার শুরু করার পরও চুড়ান্ত খারাপে পরিনত হয়েছিলেন। আমার এই অবস্থানের জন্যে ব্যাক্তিজীবনে অনেক ভুল বোঝাবুঝির স্বীকার হতে হয়। যেমন, কোথাও যদি বিএনপির নিন্দা করি, লোকে ধরে নেয় আমি আওয়ামী লীগের লোক। আবার আওয়ামী লীগের নিন্দা করলে ভাবে বিএনপি করি। আবার যারা আমার মুখ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে উভয় দলের প্রশংসা শুনেছেন, তারা ধরে নেন যে আমি একটা পাতি/নব্য পলিটিক্যাল 'হোর', সুবিধাবাদের চুড়ান্ত উদাহরণ। যদিও এতে আমার কিছুই এসে যায় না।
আপনি যে এ্যাপ্রোচে আমার মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন আমি তাতে মুগ্ধ। সবাই এরকম করলে ব্লগিং-এ ঝগড়াঝাটি বা ব্যাক্তিগত আক্রমন-প্রতিআক্রমন এড়ানো যায়, আলোচনাগুলোও হৃদ্যতাপূর্ণ ও গঠনমূলক হয়।
আপনার শুভকামনায়,
রাতস্মরণীয়
একদিন বসে দীর্ঘ আলোচনাটা সেরে ফেলব আশা রাখি। কী বলেন
আপাতত এই পোস্টের মন্তব্য না বাড়াই।
লিখবেন।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আমিও উদগ্রীব হয়ে রইলাম ................. দেখা হবে একদিন, সিটিং, মিটিং এন্ড ইটিং
রাতঃস্মরণীয়
ঠিক কি নিয়ে বিতর্ক হতে পারে?
জিয়াউর রহমান অবৈধ ক্ষমতাদখলকারী সামরিক শাসক ছিলো এটা তো এখন আইনদ্বারা স্বীকৃত সত্য। অন্ততঃ এই পয়েন্টে বিতর্কের সুযোগ কোথায়?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
অনেকক্ষণ দেখেও মন্তব্য করছিলাম না একটু ভয়েই। অনিন্দ্য ভাই আমার হয়ে মন্তব্যটা করে দিলেন।
আপনার ভাল লাগাটা বুঝতে পেরেছি, কোন কিছু মাথায় না রেখে স্রেফ একজন বাংলাদেশীর নামে বিদেশে গিয়ে একটা রাস্তার নাম দেখলে বোধ করি আমারও ভাল লাগবে। কিন্তু ঐ যে বললাম, কোন কিছু মাথায় না রেখে। লেখাটা পড়ে মনে হল, আরও কত ভাল নামী বাংলাদেশী আছেন, তাঁদের ফেলে এই লোকটার নামে কেন?!
লেখা ভাল লেগেছে অবশ্যই। আপনার বিদেশের অভিজ্ঞতা নিয়ে আরও লেখার আশায় রইলাম।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
মালি এবং অন্যান্য আফ্রিকার দেশ সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা আরও জানতে চাই। অনেকটা আপনার মত আমিও প্রথম যখন নিউ মেক্সিকোর রাজধানী 'সান্তা ফে' শহরে জিয়ার নামের রাস্তাটি দেখলাম তখন বেশ অবাক হয়েছিলাম। পরে জানলাম স্থানীয় ইন্ডিয়ান ভাষায় জিয়া মানে সূর্য। জিয়ার নামে এখানে অনেক কিছু আছে। ভাবছি খালেদাকে এখানে বেড়িয়ে যেতে বলবো কিনা।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
হাহাহাহা দারুণ বলছেন!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
সাইফ ভাই, এই সংবাদ কোনও একটিভ বিএনপির লোক পেলেই হয়, আপনার আর খালেদাকে কিছু বলতে হবে না, এরপর আপনি কেবল শুনবেন।
রাতঃস্মরণীয়
নামেই পরিচয়, নামেই সুগন্ধ কিংবা নামেই দুর্গন্ধ, নামেই ১ কিংবা নামেই ৫
বেশ পুরোনো লেখা। হঠাৎ করেই কিছু হারিয়ে যাওয়া ছবি বাসার পুরোনো ডেস্কটপের হার্ডড্রাইভে খুঁজে পেয়ে সেগুলোকে আপলোড করলাম। সাথে লেখাটাকে একটু পরিবর্ধন করলাম আর নামটাও বদলে দিলাম।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
নতুন মন্তব্য করুন