বর্তমান সময়ে সিলেট জামাতের শক্ত একটা ঘাটি হিসেবে গড়ে উঠলেও ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের আগে পর্যন্ত সিলেটে জামাতের তেমন কোনো অবস্থানই ছিলো না। তখন প্রগতিশীলরাই সিলেটকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। সিলেটে জাসদ ছাত্রলীগের রমরমা দিন ছিলো। ছাত্রলীগও জাসদের সামনে দাঁড়ানোর খুব একটা সাহস পেতো না। পুরো শহরেরই নিয়ন্ত্র্রণ তখন একচ্ছত্রভাবে জাসদ ছাত্ররীগের হাতে ছিলো।
সেই সময়ে, সময়টা ১৯৮৮ সাল, কোনঠাসা জামাত সিলেটে নিজেদের অবস্থান তৈরি করার জন্য ছাত্রশিবিরকে খুনের রাজনীতিতে লেলিয়ে দেয়। আর সিলেটে প্রথম খুনের রাজনীতিরও সুচনা করে একাত্তরের ঘাতক রাজাকার জামাতের উত্তরসুরি ইসলামি ছাত্রশিবির। একেবারে কোনঠাসা জামাতশিবির সিলেটে নিজেদের অবস্থান করে নিতে ১৯৮৮ সালের একই দিনে খুন করে জাসদ ছাত্রলীগের তিন অকুতোভয় সৈনিক মুনির তপন ও জুয়েলকে। এই তিনজনের অপরাধ ছিলো, তারা সিলেটে জামাত শিবিরের অবস্থানের বিপক্ষে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।তখন জাসদ ছাত্রলীগ সিলেট শহর থেকে শিবির উৎখাত করার পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু শিবিরের নারকীয় তাণ্ডবলীলার কাছে তারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। জাসদ ছাত্রলীগের দুর্গে চরম আঘাত করে সিলেটে খুনের রাজনীতির শুরু ও নিজেদের অবস্থান করে নেয় জামাত শিবির ১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। একদিনেই জাসদ ছাত্রলীগের নিবেদিতপ্রাণ মুনির, তপন ও জুয়েল এই তিন কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা পিশাচরা। সেই সময়ে শিবিরের তান্ডবে সিলেট নগরীতে আহত হয় অনেকেই।
বর্তমানে সিলেট নগরীতে জামাত শিবিরের অবস্থান অন্যান্য দলগুলোর চেয়ে অনেক মজবুত। আওয়ামীলীগ বা বিএনপি ভোটের রাজনীতিতে যোজন যোজন এগিয়ে থাকলেও মাঠ দখলের লড়াইয়ে সিলেটে শিবিরের ধারেকাছেও কেউ নেই। যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে প্রায় প্রতিদিনই জামাত শিবির সিলেটে কোনো না কোনো কর্মসুচি পালন করছে। রমজান শুরু হওয়ার ঠিক আগের দিন তারা সিলেট নগরীতে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করার নামে নগরীতে তান্ডব চালায়। বর্তমানে সিলেটে যারা জামাতকে নেতৃত্ত্ব দিচ্ছে অথবা শিবিরের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করছে তারা অনেকেই সিলেটের প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ী, এবং এই প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ীদের অনেকেই মুনির তপন জুয়েলের খুনী। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর মনির তপন জুয়েলের খুনীরা সিলেটে ব্যবসায়িকভাবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নেয়। তারা নিজস্ব ক্যাডারবাহিনী ব্যবহার করে সিলেটের যত্রতত্র হিন্দু সম্প্রদায় ও দরিদ্র মানুষের জমি দখল করতে শুরু করে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তার উপরে এই খুনীরা জামাত শিবির স্টাইলে অত্যাচার করেছে। অনেককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিও করেছে। আবার কাউকে ভয় দেখিয়ে পানির দামে কিনে নিয়েছে তার মূল্যবান জমিটুকু। সিলেটে এখন অনেক বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্টান ও প্রায় সব হাউজিংয়েরই মালিক বনে গেছে মুনির তপন জুয়েলের খুনী সহ জামাতিরা।
মুনির তপন জুয়েলের খুনীরা বর্তমানে কে কোথায় আছে :
মুনির তপন আর জুয়েল এই তিন হত্যাকান্ডের মাধ্যমেই সিলেটে নিজেদের অবস্থান করে নেয় জামাত শিবির। এরপর তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইস্যূতে সিলেটে তান্ডক চালিয়েছে বারবার। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ বিরোধী আন্দোলনেও জামাত শিবিরের খুনী চক্র নামকরণের পক্ষে আন্দোলনকারী ও সাধারণ মানুষের উপরে তান্ডব চালায়। বিডিআরের সাথে প্রকাশ্যে নগরীর রাস্তায় গুলাগুলিও করে তারা। অথচ প্রশাসন বা সরকার কিছুই করেনি জামাত শিবিরের এই খুনীদের বিরুদ্ধে। কেউ কেউ গ্রেফতার হয়ে জেলে গিয়েছিলো ঠিকই কিন্তু বের হতেও তাদের খুব একটা সময় লাগেনি। বর্তমানে ১৯৮৮ সালে সিলেটে শিবির হঠাও আন্দোলনে খুন হওয়া মুনির তপনের জুয়েলের খুনীরা এখন কি করছে আর কোথায় আছে...
জিয়াউদ্দিন নাদের
মুনির তপন জুয়েল ট্রিপল মার্ডারের প্রধান পরিকল্পনাকারী হচ্ছে এই জিয়াউদ্দিন নাদের। এছাড়া দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার জিয়াউদ্দিন নাদের এখন জামায়াত নেতা। তবে ভূমিদস্যু হিসেবেই সে বেশি পরিচিত। সিলেটের ছাত্র রাজনীতির সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হত্যা মিশনে নেতৃত্ত্ব দিয়েছিলো এই নাদের। ১৯৮৮ সালে নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় জাসদ ছাত্রলীগের নেতা মনির, তপন ও জুয়েল হত্যাকান্ডের মাধ্যমে তার উত্থান। নাদেরের বাড়ি সিলেটে না। তার বাবা খাদিমনগরে একটি সরকারি অফিসে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী ছিলো। নাদের ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে একজন দুর্ধর্ষ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। ৯৩ সালে তার নেতৃত্বে শিবির ক্যাডাররা ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি নিয়াজ ও সহ-সভাপতি আদনানের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের গুরুতর আহত করে। সন্পাসী কর্মকান্ডের জন্য একাধিকবার জেলেও গেছে নাদের। কিন্তু বারবারই সে জেল তেকে বেরিয়ে এসেছে খুব সহজেই। ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত থাকা অবস্থায় নাদের শিবিরের ক্যাডার বাহিনী দ্বারা বিরোধপূর্ণ জায়গা দখল এবং জাল দলিলের মাধ্যমে অন্যের জায়গা হাতিয়ে নেওয়া শুরু করে। নাদের বাহিনীর রোষানলে পড়ে অনেক নিরীহ মানুষ তাদের সব হারিয়েছে। নাদেরের টিলাগড় শাপলাবাগ এলাকায় দখল করা জায়গায় এখন গড়ে উঠেছে গাজী বোরহান উদ্দিন আবাসিক প্রকল্প। এছাড়া দক্ষিন সুরমার শিববাড়ি জৈনপুরে হিন্দুদের জায়গা দখল করে নাদের তৈরি করেছে সিলভার ভ্যালি হাউজিং নামের আরেকটি প্রকল্প। সিলভার ভিলেজ হাউজিং নিয়ে সিলেটে অনেক মামলা পাল্টা মামলা হয়েছে। পরে নাদেররা চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে কিভাবে যেনো রাতের আধারে বিশাল একটা জায়গা দখল করে নেয়। যারা বাধা দিয়েছিলো তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হয়েছিল। এখন এখানে প্লট করে জায়গা বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। নগরীর মা মণি পলি ক্লিনিকের একজন মালিকও এই নাদের । এছাড়া নগরীর ইসলামপুর মেজরটিলায় আল আমিন জামেয়া নামে নাদেরের একটা স্কুল রয়েছে।
নাদের নগরীর উপশহরের রোজভিউ কমপ্লেক্সের নিচতলায় সিলভার ভিলেজের অফিসে বসে অফিস করে। মা মণি ক্লিনিক মারামারি ও প্রতিপক্ষের হামলায় আহত শিবির ক্যাডারদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
নাদেরের ছোট ভাই শিবিরের অস্ত্র সংরক্ষক এবং ক্যাডার। নামটা মনে নেই। নামকরণ বিরোধী আন্দোলনে নাদের ও তার ছোটভাই য়ের নেতৃত্বেই সংগঠিত হয়েছিল শিবির ক্যাডাররা।
জিয়াউদ্দিন নাদের এখন সিলেট জজকোর্টের একজন আইনজীবি।
যতরপুরে বাসার গেটে লেখা- জিয়াউদ্দিন নাদের, এডভোকেট, জজকোর্ট, সিলেট। সে বর্তমানে ২২ লাখ টাকা দামের একটি মাজদা আক্সেলা গাড়ি ব্যবহার করে।
মাওলানা লোকমান
দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার থেকে এখন কোটিপতি জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান । বর্তমানে সে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান। বাতিল হওয়া ২০০৭ এর ২২ জানুয়ারির নির্বাচনে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ) আসনে চারদলীয় জোটের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করেন লোকমান। ভূমি দখল, জঙ্গি কানেকশনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ আছে তার নামে। তার নামে একাধিক মামলাও আছে। জেলও খেটেছে বহুবার। জুয়েল তপন মনির হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ছিল এই লোকমান।
১৯৮৮ সালে লোকমান যোগ দেয় ছাত্রশিবিরে। একপর্যায়ে মদনমোহন কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি হয়। অথচ সে কোনোদিনই ওউই কলেজের ছাত্র ছিল না। সে পড়তো আলিয়া মাদ্রাসায়। মদন থেকে শুরু করে সে ধীরে ধীরে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা ও ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায়। বিশেষ করে বরইকান্দি এলাকাকে সে পুরোপুরি শিবিরের একটা নিরাপদ ঘাটি বানিয়ে ফেলে। বরইকান্দি এলাকার পলিটেকনিকের ছাত্রদের মেসগুলোকে সে চট্রগ্রাম ভার্সিটির আদলে গড়ে তুলে।
১৯৯৩ সালে এক রাতে রিকাবীবাজারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ডা. নিয়াজ মোহাইমিন, সহ-সভাপতি ডা. আদনানের ওপর নৃশংস হামলা চালানো হয় তার নেতৃত্ত্বে। ১৯৯৫ সালে সিলেট পলিটেকনিক ছাত্রদলের ঘুমন্ত নেতাকর্মীদের ওপরও লোকমানের নেতৃত্ত্বে হামলা চালানো হয়। পরে পুলিশ লোকমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে। এই অস্ত্রগুলোর মধ্যে বিপুল পরিমান রাম দা ও পাইপগান ছিল্ পুলিশ সেদিন লোকমানকে বাড়িতে না পেয়ে তার ভাই ও মাকে গ্রেফতার করে। অথচ অস্ত্র মামলায় লোকমানের কিছুই হয় না।
১৯৯৭ সালে তার নেতৃত্বে এমসি কলেজ ছাত্রদল সভাপতি মীর মোশাররফ হোসেনকে কলেজ হোস্টেল থেকে ধরে এনে হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়।
ভূমিদখল, এলাকায় সালিশ বৈঠকের নামে আর্থিক সুবিধা আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার নামে। সে সিলেট পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব। সিলেট শহরে যে টাউন বাসগুলো চলে সেগুলোর এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান লোকমান। এছাড়া সিলেট মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল রুট দখল করে আছে লোকমান। লোকমান টার্মিনালে ব্যাপক চাদাবাজি করে এবং সাগরিকা বাসের কাউন্টার দখল করে আছে ৫ বছর থেকে।
দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুল থেকে হুমায়ুন রশীদ স্কয়ারের যে বাইপাস রোড আছে তার দুই পাশে হিন্দুদের প্রচুর জায়গা দখল করেছে লোকমান। এই জায়গা দখল আর বিক্রি করেই সে মূলত টাকাওয়ালা হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি দক্ষিন সুরমার বরইকান্দির কামুশানা গ্রামে। লোকমানের বাবা দিনমজুর ছিলো। তার চাচাতো ভাইয়েরা এখনো দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। লোকমানের বড় ভাই মানিক দক্ষিণ সুরমার আরেকজন কুখ্যাত ভুমি খেকো। মানিক আর লোকমান মিলে চন্ডিপুল থেকে শুরু করে হুমায়ুন রশীদ স্কয়ার পর্যন্ত যে বাইপাস গেছে তার দুইপাশে প্রায় শত বিঘা জায়গা দখল করেছে। এমনকি তারা পিরোজপুর গ্রামবাসীর গোরস্থান দখল করতেও ছাড়েনি। লোকমানের এসব অপকর্মে তার সাথী দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর গ্রামের মুহুরী ফয়সল। সে ডিসি অফিস ও রেকর্ডরুমের সব ফাইল গায়েব করে লোকমানকে জায়গা দখলে সহায়তা করে আসছে। দক্ষিন সুরমায় এই কথাটা প্রায়ই শোনা যায়, লোকমান ২ কোটি টাকা খরচ করে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছে।
লোকমানের সিলসিটি নামের একটা ঢাকা সিলেট রুটে চলাচলকারী বাসের কোম্পানী আছে। এছাড়া সে একটা হাউজিং প্রতিষ্টানেরও মালিক। স্টেশন রোডে আপতাব ম্যানশন নামে একটা মার্কেট আছে তার । সেখানে একটি রঙের দোকান সে নিজে পরিচালনা করে। লোকমানের ছোট দুই ভাই মুজাহিদ ও সুরমানও শিবির ক্যাডার।
লোকমান সিলেট থেকে একটা দৈনিক পত্রিকা বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। লোকমান ব্যবহার করে ৫০ লাখ টাকা দামের মিৎসুবিশি পাজেরো।
আব্দুর রহমান
নগরীর উপকন্ঠের কালাগুল সাহেববাজার এলাকায় ভূমিদস্যূ বলে পরিচিত আব্দুর রহমান। দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার থাকাকালে ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ছাত্রলীগের তপন, মনির ও জুয়েল হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল এবং সে এই হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ছিলো।
এ জামায়াত নেতা অল্প দিনে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে নগরীর অদূরে গড়ে তুলেছে দু’টি হাউজিং প্রকল্প। বিমানবন্দর এলাকার কালাগুল ও এর আশেপাশের এলাকায় জনপদের হতদরিদ্র মানুষের কয়েকশ’ একর জমি গ্রাস করে নিয়েছে ।
তার নেতৃত্বাধীন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীচক্র এলাকার মানুষকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে গড়ে তুলে আল মক্কা ল্যান্ড এন্ড কোং ও নর্থইস্ট ল্যান্ড ডেভেলপম্যান্ট কোম্পানী নামে হাউজিং প্রকল্প। সেখানে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে এলাকার গরীব ও অসহায় লোকজনের জায়গা জমি। এখন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে আবদুর রহমান গং সেই জমি প্লট আকারে বিক্রি করছে।
জয়নাল আবেদীন :
এককালের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার জয়নাল আবেদীন এখন ভূমিখেকো জয়নাল নামেই পরিচিত। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দক্ষিণ সুরমায় বিপুল পরিমাণ সরকারি জমি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি দখল করে গড়ে তুলেছেন সোনারগাঁ আবাসিক প্রকল্প। জানা যায়, নব্বইয়ের দশকে জয়নাল তার চাচা ডা. আবদুল মতিনের চেম্বারে এটেনডেন্ট হিসেবে কাজ করত। অথচ সে কোটি টাকা দামের গাড়ি চালায় আর জৈন্তাপুর উপজেলার চেয়ারম্যান। এই জয়নাল জুয়েল তপন মুনির হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ছিলো।
১৯৮৮ থেকে ‘৯৫ সাল পর্যন্ত নগরীতে শিবিরের বিভিন্ন অপারেশনে সে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর জড়িয়ে পড়ে ব্যবসায়। আরো কয়েকজনকে নিয়ে দক্ষিণ সুরমার লালমাটিয়া এলাকার জলাভূমি দখলে নামে। এলাকার গরিব মানুষের কাছ থেকে নামমাত্র দামে কিছু জমি কিনে আশপাশের সরকারি বিল-নালা ও খাল ভরাট করে গড়ে তোলে সোনারগাঁ আবাসিক প্রকল্প। এ প্রকল্পের নামে প্রবাসীসহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জয়নাল সোনারগা আবাসিক প্রকল্প ছাড়াও দক্ষিন সুরমার লালমাটিয়ায় আরেকটি আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলছে। এখানে সে বেশিরভাগ জায়গা দখল করেছে হিন্দু আর দরিদ্র মানুষদের।
জয়নাল বর্তমানে জৈন্তাপুর উপজেলার চেয়ারম্যান।
এরা ছাড়াও মুনির তপন জুয়েলের খুনে সরাসরি জড়িত শিবির ক্যাডার শাহিন ও ফখরুল সিলেটে প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ী ও চিহ্নিত ভুমি দখলকারী হিসেবে পরিচিত। তারা দুজনে সিলেট নগরীর বেশ কয়েকটি আবাসন প্রকল্পের সাথেও সরাসরি জড়িত।
যুদ্ধাপরাধীর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু মুনির তপন ও জুয়েলের খুনী চিহ্নিত এই সাবেক শিবির ক্যাডাররা নানাভাবে যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সিলেটে প্রায় প্রতিদিনই এরা কোনো না কোনো ব্যানারে সরকার বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার বিরোধী আন্দোলনের পেছনের কারণট, যে কোনো মূল্যে যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
যুদ্ধাপরাধীর বিচারের পাশাপাশি সিলেটে খুনের রাজনীতি শুরু করা জামাত শিবিরের এই খুনী পিশাচদেরও বিচার হওয়া প্রয়োজন।
মুনির তপন জুয়েল, যারা একদিন রুখে দাঁড়িয়েছিলো এই নরপশুদের, যাদেরকে রুখে দাঁড়ানোর কারণে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছিলো, তারা আজ মুনির তপন জুয়েলের স্মৃতি বিজড়িত নগরে দামি গাড়ি চড়ে...!
এই খুনীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সমাজে প্রতিষ্টিত হয়ে গেছে, একদিনে তিন খুন করেও তাদের বিচার কোনো বিচার হলো না, মুনির তপন জুয়েলের পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে এটা কি আমাদের ব্যর্থতা নয় ?
লিখেছেনঃ- জাহামজেদ
মন্তব্য
পোষ্টে পাঁচতারা। এইসময়ের জন্য খুব দরকারী পোষ্ট।
বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের জামাত-শিবিরের নৃশংসতার আর্কাইভ থাকা দরকার।
পড়তে গিয়ে অনেক স্মৃতি, অনেক কিছু মনে পড়ে গেলো। যদিও মুনীর-তপন-জুয়েল জাসদ ছাত্রলীগের ছিলেন তবে প্রতিরোধপর্বটা সর্বদলীয় ছিলো। সিলেটে তখন ছাত্রদল গোনায় ধরার মতো ছিলোনা। জাসদ ছাত্রলীগ, আওয়ামী ছাত্রলীগ, বাকশাল ছাত্রলীগ, ছাত্রইউনিয়নের কর্মীরা ছিলো সশস্ত্র প্রতিরোধে। আমার মেজোমামা ঐ প্রতিরোধের সামনের সারির একজন ছিলেন। আমাদের বালুচরের বাসা ছিলো শহরের কয়েকটি গোপনঘাঁটির একটি।
একটানা কয়েকদিন চলছিলো সংঘর্ষ-পাল্টা সংঘর্ষ। কিন্তু প্রশাসনের সহযোগীতা, শিবিরের প্রশিক্ষিত খুনীদের পরিকল্পিত নৃশংসতা এবং ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের কারো কারো হঠকারীতার জন্য শেষপর্যন্ত শিবির টিকে যায়।
'৯০ এর পর তো সবকিছুই বদলে গেলো। এখন শহীদ মুনীর তপন জুয়েলের বন্ধুরা তাদের ঘাতকদের সাথে ব্যবসা-বানিজ্য করেন।
জুয়েল, তপন সম্পর্কে তেমন কিছু মনে নেই এখন। কিন্তু শহীদ মুনীরকে ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। এমসি কলেজের ছাত্র ছিলেন, ছিলেন নাট্যকর্মী, শহর সিলেটের দারুন উজ্জ্বল এক তরুন।
তাদের ছবিগুলো কি সংগ্রহ করা সম্ভব এখন?
এবার ২৪ সেপ্টেম্বর তিন শহীদের স্মরনে সিলেটে কোন আয়োজন হবে নিশ্চয়ই। অনেক তো ভুলে থাকা হলো। আর কতো?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
মোরশেদ ভাই, আপনারা তখন বিষয়গুলো একেবারে কাছে থেকে দেখেছেন। আমরা তখন একেবারেই ছোট ছিলাম। এই পোস্ট লিখতে গিয়ে তাই অগ্রজ অনেকের কাছ থেকে সেই সময়ের অনেক তথ্য ধার করতে হয়েছে।
সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আপনিও লিখেছেন, সেদিন যারা মুনির তপন আর জুয়েলের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে হাতে হাত রেখে শিবির বিরোধী আন্দোলন করেছিলেন, স্বৈরাচার পরবর্তী সময়ে তারা ছাত্রদলে যোগ দিয়ে জামাত শিবিরের সাতেই নানা আন্দোলন করেছেন। এখন অনেকেই আছেন, যারা এই খুনীদেরকে সিলেটে অবস্থান দাঁড়াতে দিতে চাননি, অথচ আজ একসাথে ব্যবসা করছেন, এক টেবিলে বসে আড্ডা মারছেন, সামাজিক বন্ধনে এক অপরকে আবদ্ধ করেছেন।
মুনির তপন জুয়েলের ছবি সংগ্রহ করা অবশ্যই সম্ভব ।
জাহামজেদ
আরিফ, লীলেন ভাই এই পোষ্টে আরো তথ্য যোগ করতে পারবে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
খুব ভালো একটা লেখা।
ধন্যবাদ আপনাকে
:::::: :::::::: ::::::::::::::: ::::::::::::::: ::::::::: ::::::::: :::::: ::::::: ::::::::::::
অভিলাষী মন চন্দ্রে না-পাক জোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
জিয়া উদ্দিন নাদেরের ছোট ভাই রায়হান। এমসি কলেজ ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক- ১৯৯০-৯২ সালে।
এই রায়হান কি নামকরণ বিরোধী আন্দোলনেও শিবিরের নেতৃত্ত্ব দিয়েছিলো ?
আরিফ ভাই তো একসময় সক্রিয় রাজনীতি করতেন। কলেজে সবসময় জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে ছিলেন। এমসি কলেজের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডও আপনাদের কারণেই সম্ভব হতো। আপনি চাইলে হয়তো তখনকার সময়ের অনেক কিছুই এখানে যোগ করতে পারেন।
জাহামজেদ
না, নামকরণ বিরোধী আন্দোলন অনেক পরের ব্যাপার। এইটার অন্যতম কান্ডারি এহসান মাহবুব জুবায়ের (সাবেক কেন্দ্রীয় শিবির সভাপতি) সহ অনেকে। শিবিরের তখনকার মহানগর সভাপতি বর্তমানে ডাক্তার রেজওয়ান...এরা নামকরণ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিল।
নামকরণ বিরোধী আন্দোলনের সময়ও একটা রায়হান ছিলো। সম্ভবত তখন সে শিবিরের এমসি কলেজের কোনো একটা দায়িত্বে ছিলো। পরে শিবিরের মহানগরের দায়িত্বেও ছিলো। এটা মনে হয় আপনার জানা নেই। কারণ, এই রায়হানের উত্থান হয়েছিলো আপনি কলেজ থেকে বের হয়ে আসার পর।
রেজওয়ানের কথা আমার মনে আছে। আর জুবায়ের তো এখন মহানগর জামাতের সেক্রেটারি। লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়তে গেছিলো,পড়ার কোনো সুযোগ করতে না পেরে দেশে ফিরে আসছে। এখন সিলেট কোর্টে উকালতি করে।
জাহামজেদ
শিবিরের হাতে সাগরদিঘিরপাড়ে নিহত ওসমানী মেডিকেলের ছাত্র সৌমিত্রের কথা কিছু লিখলেন না যে ?
--টুটুল বরকত
লেখক সম্ভবতঃ '৮৮র প্রতিরোধ এবং ট্রিপল মার্ডারের খুনীদের তথ্যেই পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে চেয়েছেন।
সৌমিত্রকে শিবির হত্যা করেছিল ২০০০ সালে( নাকি ১৯৯৯?)। এর আগে পরে ও শিবিরের হাতে সিলেটে বেশ কয়েকটি খুন এবং অনেকগুলো রগকাটার ঘটনা ঘটেছে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এখানে আমি সিলেটে শিবিরের রাজনীতির শুরু ও ট্রিপল মার্ডারের খুনীদেরকে নিয়েই লিখতে চেয়েছি। তারপর আপনার আগ্রহের কারণে সৌমিত্র হত্যাকান্ডের ব্যাপারে একটা ছোট তথ্য দিলাম।
১৯৯৮ সালের ২৪ মে শিবির হত্যা করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা সৌমিত্র বিশ্বাসকে । শামসুদ্দিন ছাত্রাবাসে ক্রিকেট খেলা দেখা নিয়ে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হলে শিবির ক্যাডাররা নগরীর ব্লু বার্ড স্কুলের সামনে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে সৌমিত্রকে। কিন্তু হত্যাকারী কেউই গ্রেফতার হয়নি এবং এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কারোরই বিচার হয়নি। অথচ তখন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিলো।
জাহামজেদ
তথ্যবহুল পোস্ট। তারা দেওনের খ্যামতা থাকলে ৫ দিতাম।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
“জাসদের সামনে দাঁড়ানোর খুব একটা সাহস পেতো না” কিংবা “পুরো শহরেরই নিয়ন্ত্রণ তখন একচ্ছত্রভাবে জাসদ ছাত্রলীগের হাতে” এই জাতীয় ভূমিকার কারণে আমি একটু সংশয়ে আছি।
শহীদ মুনির, শহীদ তপন ও শহীদ জুয়েল সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আশির দশক ও তার পরবর্তী সময়ের ছাত্র রাজনীতির অবস্থা বিবেচনায় জানতে ইচ্ছে হয় শিবিরের নারকীয় বর্বরতার শিকার জাসদ ছাত্রলীগের এই তিন নেতাকর্মী কি সুস্থধারার রাজনীতির প্রতিনিধি ছিলেন নাকি তারাও জড়িত ছিলেন শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের চলমান ধারার সাথে?
শিবিরের বর্বরতার প্রতিবাদ জানাই জানাই।
বিচার দাবি করি প্রতিটি হত্যাকান্ডের।
তবে কোন “প্রগতিশীল” সন্ত্রাসী যদি জামাত শিবিরের মতো বর্বরদের হাতেও নিহত হয় তবে তাকে শহীদ, অকুতোভয় সৈনিক, নিবেদিতপ্রাণ অভিহিত করে আদর্শিক অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসকে আমি সাধুবাদ জানাই না।
জামাত শিবিরের সন্ত্রাসের প্রতি ঘৃণা।
প্রগতিশীল সন্ত্রাসের প্রতি ঘৃণা।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
যতটুকু জানি এই তিনজন প্রগতিশীল রাজনীতির নামে সন্ত্রাস করে বেড়াতেন না, এরকম কখনো শুনিনি । মুনির নাটক করতেন, এমসি কলেজে পড়তেন, নানা ধরণের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন।
জাসদ ছাত্রলীগের সিলেট শহরে তখন আধিপত্য ছিলো। তারা সেই আধিপত্য ধরে রেখে চেয়েছিলেন জামাত অথবা শিবির যেন শহরে না ঢুকে অথবা অবস্থান নিতে না পারে। পরবর্তীতে যেটা ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের কেউই করেনি। আর এই সুযোগে সিলেট শহর ও এর আশেপাশের এলাকায় জামাত শিবির তাদের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলে। যার খেসারত এখন সিলেটের প্রায় সর্বস্তরের মানুষকেই দিতে হচ্ছে।
জাহামজেদ
উহু, এখানে তথ্যগত কিছু কারেকশন আছে।
শিবিরকে প্রতিরোধ করা হয়েছে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত। এমন কোনো মাস নেই, এমন কোনো ক্যাম্পাস নাই, যখন ছাত্রদল-শিবির মারামারি হয়নি তখন। ছাত্রলীগ তো চিরকালই দুধভাত, কোনো ক্যাম্পাসেই তাদের কোনোদিন দেখি নি তেমন ভাবে, নিজেদের গ্রুপিংয়ের ঠ্যালায় এরা তো জীবনে মিছিলও করতে পারে নাই।
জাসদ থেকে আসা ছাত্রদল কর্মীরা ১৯৯৬ সাল পরে আর তেমন থাকে নাই, সেই জায়গা নিয়েছে পিওর ছাত্রদল কর্মীরা। ১৯৯৬ সালে ছাত্রদল বেসরকারী হওয়ার পরে শক্তি ক্ষয় করেছে নিজেদের গ্রুপিংয়ে।
শিবিরের মূল বিকাশ আসলে ২০০১ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার পর। এই চারদলীয় জোট পুরো বাংলাদেশে শিবিরের বিকাশে মূল শক্তি।
উপরে যে সম্পদের হিসাব দিয়েছ, এর সবই, সব ধরনের ব্যবসা বানিজ্যই জামায়াত -শিবির করেছে ২০০১ সালের পর।
সিলেটে জামায়াতের বিকাশে দুইটা ফ্যক্টর অনেক বড়, যদিও এ নিয়ে কথাবার্তা হয় না। এই দুইটা হচ্ছে, তাঁদের একজনকে বিএনপির সভাপতি বানানো ( এম.এ হক) আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে আরেক জামাতি কামরানকে লীগের ব্যানারে মেয়র বানানো। এরা এই বেনিফিট খুব বেশি পেয়েছে, এখনও পাচ্ছে।
যদিও হক ক্ষমতায় নেই কিন্তু কামরান রয়ে গেছেন।
'৮৮ এর প্রতিরোধ আর পরের ছাত্রদল-শিবির সংঘর্ষের গুনগত পার্থক্য ছিলো কিন্তু। পরেরটা যতোটুকু আধিপত্য বিস্তারের ততোটা আদর্শিক কারনে নয়। তোর মনে আছে কিনা ইমরান ভাই তখন এমসি কলেজের সভাপতি সম্ভবতঃ । সেবারই প্রথম ছাত্রদল- শিবির সংঘর্ষের পর রজনীগন্ধা বিনিময় করে আপোষ হয়েছিল। '৯২ র ঘটনা সম্ভবতঃ। ইমরান ভাইকে আমরা প্রায়ই ক্ষ্যাপাতাম এটা নিয়ে।
'৮৮র ঘটনা অনন্য বিভিন্ন কারনে। ছাত্র রাজনীতির চরিত্র তখন আলাদা ছিলো। প্রতিরোধ ছিলো সর্বদলীয়।জামাত শিবিরকে সামাজিক প্রতিরোধের জন্য লিফলেটিং করা হয়েছিল। কোন কোন দিন ফুলতলী- হাবিবুর রহমানের মাদ্রাসার ছাত্ররাও যোগ দিয়েছিলো শিবির প্রতিরোধে একটানা দীর্ঘদিন পুরো শহরে যুদ্ধাবস্থা ছিলো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
৮৮ পরবর্তীর প্রতিরোধও আসলে ঠিক ঐ ভাবে আধিপত্য বিস্তার প্রতিরোধের রাজনীতি না, আমার চোখে এটা হচ্ছে ৮৮'র প্রলম্বিত রূপ। একটা বড় আন্দোলন এবং সে আন্দোলনের ফলে গড়ে উঠা সচেতনতা একদিনেই নিভে যায় না, সুতরাং শিবিরের সঙ্গে ছাত্রদলের সেই সংঘর্ষগুলো আসলে আধিপত্যের নয়, সেই একই ভাবে প্রতিরোধেরও।
এই ধারা শেষ হয়ে গেছে জাসদ থেকে আসা নেতাকর্মীদের যুগের শেষ হওয়ার পর।
আরিফ ভাই, প্রতিরোধ করা হয়েছিলো শুধুই শহরে। কিন্তু জামাত শিবির সিলেটে শহরতলী অথবা গ্রামকেন্দ্রিক রাজনীতি করে নিজেদের সংগঠিত করেছে। আপনারা হয়তো কলেজে প্রতিরোধ করেছেন। কিন্তু শাবি বা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে তারা নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে। মেডিকেলে শক্তি বাড়াতে অথবা প্রদর্শন করতে গিয়ে সৌমিত্রকে হত্যা করেছে।
ছাত্রদল একটা সময় শিবিরকে শহরে জায়গা না দেওয়ার জন্য অনেক যুদ্ধ করেছে। কিন্তু আওয়ামীলীগ ৯৬ এর পর যখন ক্ষমতায় আসে তখন ছাত্রলীগ এদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারেনি। সরকারি কলেজে শুধু দুইবার শিবির কঠিন প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলো। কিন্তু ২০০১ এর নির্বাচনের পর শিবির ছাত্রদলের ছায়ায় নিজেদের অবস্থান শহরে পুরোপুরি সংগঠিত করে ফেলে। একটা তথ্য জানলে অবাক হবেন, ২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পরও কিন্তু এমসি আর সরকারী কলেজে শিবির ছাত্রদলের প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলো। কিন্তু বিএনপির হক, মেয়র কামরান ( তখন পৌর চেয়ারম্যান ) আর জামাতের শফিকুর রহমান মিলে সর্বদলীয় সিদ্ধান্ত নেয় সিলেটের কলেজগুলোতে প্রকাশ্যে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের। এই সুযোগে শিবির সিলেটের প্রতিটি কলেজে নিজেদেরকে প্রতিষ্টা করে এবং জামাত শিবিরের একেকজন সরকারের ছায়ায় থেকে টাকার কুমির বনে যায়। এরপর তারা সিলেট শহরে নিজেদের আধিপত্য বাড়াতে বেশ কয়েকটি হত্যাযজ্ঞ চালায়।
কিন্তু কামরান, হক, আর শফিক তখন প্রকাশ্যে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ এই বুলি আওড়াচ্ছেন !!!
জাহামজেদ
আমার এক প্রভাবশালী বন্ধু'র সূত্রে সিলেটের ছাত্র রাজনীতি আমি দেখেছি ২০০০ এর দিকে। হুম একক আধিপত্য শিবির ২০০১ এর পরই পেয়েছে এটা সত্য। ছাত্রদলের গ্রুপিং একোতা কারণ, আমাদের তখনকার অনেক ছাত্রদল নেতাকেই দেখেছি পিঠ বাঁচানোর স্বার্থে শিবিরে যোগ দিয়েছে তবে, মূল ক্ষতিটা যেটা হয়েছে (আমার যা মনে হয়) পঙ্গু হয়ে থাকা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কারণেই! ছাত্রলীগ, ছাত্র শিবির দিয়ে সম্ভব নয়! বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরী করতে পারলে অনেক কিছুই আজও সম্ভব! এটা সহজেই করতে পারে সাংস্কৃতিক সংঘটনগুলো! উপরের মন্তব্য দেখুন আজকালকার ছেলেরা জানেই না মুনীর, তপন, জুয়েল কে ছিল কি ছিল! এই জানানোর কাজটা ছাত্রদল বা ছাত্রলীগের কাছ থেকে আশা করা যায় না!
কাজী মামুন
বাবু বাংলা ভাইয়া,
আপনি ঠিকই বলেছেন।বাংলাদেশের এক মহাবুদ্ধিজীবি '৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের ও অস্ত্রধারী গুন্ডা বলেছিলেন।
তিনি ঠিকই বলেছিলেন। যুদ্ধ যেহেতু করেছে অস্ত্র হাতে তো ছিলোই, খুন টুন তো করেছেই, নিরীহ বিহারীদের ও খুন করেছে। বিহারী নারী ও শিশু দুচারজন যে খুন হয়নি তাওতো না। নিজেদের মধ্যে গুলাগুলি করেও কিছু মরেছে- এরকম ও শুনা যায়।
তারপর ধরেন- এরশাদের জাতীয় ছাত্রসমাজ আর পুলিশকে যারা প্রতিরোধ করতো তারাও সশস্ত্রগুন্ডা ছিলো যেমন রাউফুন বসুনিয়া। গুলী খেয়ে মরে সময় তার হাতে ও অস্ত্র ছিলো। বসুনিয়া নিশ্চয়ই সুস্থ ধারার রাজনীতির প্রতিনিধি ছিলোনা।
আমরা তাকে শহীদ বলবোনা।
আপনার এই মন্তব্যে আপত্তি জানালাম।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কিছু করার নাই, কতো লোকের ল্যাঞ্জা যে বের হয়ে যায়...
হা হা হা! উত্তর দিতে গিয়ে দেখলাম হাসান মোরশেদ ভাই দিয়ে ফেলেছেন। এ ধরনের মন্তব্য আসলে ওরা করে ইচ্ছে করেই, মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য!
কাজী মামুন
মন্তব্যে লাইক মেরে গেলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এরকম তথ্যবহুল পোস্টের খুব দরকার ছিল...
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে...
মন্তব্যে আরোও অনেক তথ্য বের হয়ে আসবে বলে মনে হয়...
--------------------------------------------------------------
নির্জলা নৈবেদ্য
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
ট্রিপল মার্ডারে সাথে জড়িত অনেকেই আছে যারা এখন লন্ডনে প্রতিষ্টিত। বিদেশে বসেই এরা অনেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে নানা কথা বলছে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। স্কুলে আমার এক কাছের বন্ধু ছিলো, কলেজে উঠে সে শিবির হয়ে যায়। এরপর থেকে ব্যক্তিগত যোগাযোগও তার সাথে আমার কমে যায়। আমার এই স্কুল বন্ধু মদন মোহন কলেজে নিজ হাতে দোয়ের নামের ছাত্রদলের এক কর্মীকে খুন করে। তারপর সে পালিয়ে থাকে অনেকদিন। বর্তমানে সে এক জামাত নেতার মেয়েকে বিয়ে করে লন্ডনে রেস্তোরা ব্যবসা করছে। সম্প্রতি আমার আরেক বন্ধু দেশে এসেছে, তার কাছ থেকে জানা তথ্য, আমাদের শিবিরের খুনী বন্ধু নাকি এখন লন্ডনের বিভিন্ন মসজিদ আর কমিউনিটিতে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কথা বলার জন্য জনসমর্থন আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং ওখানের প্রবাসী মানুষকে ইসলাম আর ধর্মের কথা বলে যুদ্ধাপরাধীদের জন্য ফান্ড সংগ্রহ করছে।
তার মানে, খুনীরা শুধু খুন করেই বসে নেই। বিদেশে বসেও তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
জাহামজেদ
ধন্যবাদ আপনাকে এই পোস্টের জন্য। এই ঘটনাগুলোর কিছুই জানতাম না, এইসব তথ্য সামনে আসা দরকার।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শিবিরের উথান নিয়ে আলাদা একটা লেখা হতে পারে। কেস স্টাডি হিসেবে সিলেটকে নিলেই বোধহয় সুবিধাজনক। একটা শহর কিভাবে প্রগতিশীলদের হাত ছাড়া হয়ে গেল, তা খতিয়ে দেখা যেতে পারে।
আমার মনে হয় ৯০ দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে পড়ায় বামপন্থী রাজনীতিতে যে আঘাত আসে, সেটাই মূল।
ফুলকুড়ি রয়ে গেছে, কিন্তু আমরা হারিয়ে ফেলেছি খেলাঘর।
আরেকটা ব্যাপার আরিফ ভাইয়ের জানা আছে কিনা জানি না, চারদলীয় জোটের ক্ষমতার শেষভাগে সিলেট অডিটোরিয়ামে নাটক করার জন্য নাটকের দলগুলোকে ডিসির কাছে সম্ভবত পান্ডুলিপি জমা দিতে হতো। ডিসি অনুমতি দিলে তখন নাটক হতো ! অনেকে নিজেদের নাটকের শো করতে পারতো, আবার অনেকেই অনুমতির ঝামেলায় নাটক করতে পারতো না। কিন্তু তখন শিবিরের একটা বা দুইটা নাট্যদল প্রায়ই সিলেট অডিটোরিয়ামে নাটকের শো করতো। তাদের অনুমতি পেতে কোনো সমস্যা হতো না, ফুলকুঁড়ির অনুষ্টানে অনুমতি পেতে সমস্যা হতো না !!!
সিলেটে শিবিরের উত্থানে রাজনৈতিক অঙ্গনের মানুষ ছাড়াও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কিছু মানুষের নিষ্ক্রিয়তা তাদের উত্থানের পথে পরিপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
জাহামজেদ
গল্পগুলো সবসময় একই রকম হয়।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
হাসান মোরশেদ ভাই,
মুক্তিযুদ্ধের মতো বৈপ্লবিক সময়ের সারথীদের সাথে এসময়ের শিক্ষাঙ্গনের সন্ত্রাসীদের তুলনার প্রসঙ্গটা আপত্তিজনক।
সময়ের প্রয়োজনের যে বিরাট ব্যবধান- সে কারণেই আপত্তিজনক।
তার চেয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী সময়ের শিক্ষাঙ্গনের অকুতভয় সৈনিকদের ও সন্ত্রাসীদের তুলনাটা অনেক বেশী প্রাসঙ্গিক। আপনার কথায় ভাবনার অনেক কিছু আছে। এবং এই বিষয়টা নিয়ে অনেক আমি দ্বিধায় ভুগি।
ধরা যাক, আমাদের জাতীয় জীবনে কিংবা শিক্ষাঙ্গনে আবারো নেমে এলো স্বৈরশাসকের কালো থাবা।
ছাত্র সংগঠনগুলোকে যদি সশস্ত্র প্রতিরোধে নামতে হয়, তবে এসব সংগঠনের হয়ে অস্ত্র হাতে মাঠে নামবে কারা?
আজ যারা ঘৃণ্য সন্ত্রাসী, দল্গুলো তাদেরই মাঠে নামাবে প্রথম।
তাহলে সেই “সম্ভাব্য” বীরদের আজ আমি কোন চোখে দেখব?
এসময়ের সন্ত্রাসী হিসেবে নাকি ভবিষ্যতের “সম্ভাব্য বীর” হিসেবে?
জীবিত সন্ত্রাসী এবং মৃত বীর হিসেবে?
সন্ত্রাসী লালনের এই চক্র তো তাহলে চলতেই থাকবে।
এসব প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই।
শুধু জানি ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বীরদের আনাগোনায় এখনো কলুষিত হয় আমার ক্যাম্পাস।
সবচেয়ে ভালো হতো যদি মেধা ও মননে প্রজ্জ্বলিত তরুণেরাই প্রয়োজনে রাজপথে ও সশস্ত্র লড়াইয়ে নেমে আসতে পারতো। কিন্তু হায়, ওরা তো শুধুই ব্লগার।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
বাবু ভাই,
আপনার উদ্দেশ্য সৎ ধরে নিয়েই কথা আরেকটু বাড়াই।
আপনার কথিত 'মেধা ও মননে প্রজ্জ্বলিত তরুণেরাই প্রয়োজনে রাজপথে ও সশস্ত্র লড়াইয়ে' সাধারনতঃ নেমে আসেনা।
সৈয়দ শামসুল হক মুক্তিযুদ্ধ চলছে সময় তার ভরা তারুন্য নিয়ে বিলেত চলে গেছেন কিন্তু প্রত্যন্ত কোন গ্রামের মেধা ও মননহীন এক কিশোর যে হয়তো যুদ্ধের আগে চুরি-চামারি করতো সে কিন্তু অস্ত্র হাতে যুদ্ধে চলে এসেছে।
হয়তো যুদ্ধ শেষে সে আবার তার পুরনো পেশায় ফিরে গেছে।
আপনি তার যুদ্ধকালীন ভূমিকাকে অশ্রদ্ধা করবেন? সে যদি যুদ্ধে প্রান দিতো তাকে শহীদ বলতেননা?
তত্বে যেমন হয়, বাস্তব ততোটা পিউরিটান নারে ভাই। আমাদের বন্ধু মঞ্জুর ছিলো শহর সিলেটের একসময়ের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ক্যাডার। মঞ্জুর মরে গেছে কিন্তু তার একটা কথা এখনো মনে পড়ে। ও বলতো- 'অন্য দলের ছেলেদের মারার পর খারাপ লাগে, শিবির মারার সময় লাগেনা। আলাদা শক্তি পাই শরীরে।'
মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে কথাটা নৃশংস কিন্তু বড় ক্যানভাসে দেখুন এটা ওদের প্রাপ্য।
একটা ব্যক্তিগত অনুমান করি। ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আপনি সম্ভবতঃ ঢাকা নগরীতে বড় হওয়া সেই সময়ের মানুষ যখন ঢাকার বাইরের মফস্বলগুলো শিবিরের সন্ত্রাসে ক্ষতবিক্ষত কিন্তু ঢাকাবাসীরা নিজেদের প্রগতিশীল আর অন্যদের মৌলবাদী ভেবে ঘুম দিচ্ছেন।
অথবা আপনি ছাত্ররাজনীতির ভালো খারাপ সবকিছু থেকে নিজেকে সবসময় দূরে সরিয়ে রেখেছেন। ৮০র দশকে যদি বড় হয়ে উঠেন তাহলে কোনদিন পুলিশের দিকে একটা ইট ও ছুঁড়ে মারেননি।
অভিজ্ঞতার অভাব থাকলে পিউরিটান হওয়া সম্ভব।
যেমন বাংলাদেশের মহাবুদ্ধিজীবিটি মুক্তিযোদ্ধাদের সসশ্ত্র গুন্ডা বলেছিল- আমি নিশ্চিত '৭১ এ দামড়া থাকা স্বত্বে ও অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যায়নি।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কিসু করার নাই রে ভাইয়া, আপনের জ্ঞানী বাণীর বাইরে দাড়াইয়াই আমরা তখন শিবিরও পিটাইছি, এরশাদও পিটাইছি। অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধও আসলে করছে রেললাইনের পাশে আড্ডা দেওয়া ফাউল গাতক আযম খান। চিন্তা চেতনায় আধুনিক ও প্রগতীশীলরা চিরকালই বিবিসিতে ইন্টারভিউ দিছে, সংবাদপত্রে কলাম লিখছে, আর গুলি খাইয়া চিৎ হইয়া পইড়া আছে রিক্সাঅলা নূর হোসেন।
আপনের সাট্টিফিকেটের আশায় বইসা থাকলে হৃষ্টপুষ্ট সুশীল হইতে পারতাম, তবে সবাই তো আর এমন হয় না। সমাজে সুশীলরেও দরকার আছে, আবার ফাউল পুলাপানেরও দরকার আছে।
বাবুবাংলা,
আপনার জানার মধ্যে অনেক ঘাটতি আছে। জামাত শিবির বা মৌলবাদবিরোধী আন্দোলন শুধু ছাত্রদল আর ছাত্রলীগের ছেলেরাই করে না। মেধা ও মননে প্রজ্বলিত তরুণরাই এসব কাজে অগ্রণী ভুমিকা রাখে । আপনার জানার অনেক ঘাটতি আছে বলেই এমনটা বলছেন অথবা আপনি নিজেকে দিয়ে অন্যকে তুলনা করছেন। যদি কখনো জামাত শিবির বিরোধী হোক আর রাষ্ট্রের স্বার্থে অন্য যে কোনো আন্দোলনই হোক, সেগুলোতে নিজে সরাসরি জড়িত থাকতেন তাহলে কখনোই বলতেন না, ওরা তো শুধুই ব্লগার ! এখানে মন্তব্য করতে এসে আপনি আয়নায় শুধু নিজের ছবিটাই দেখছেন।
জাহামজেদ
সারাদেশে শিবির সন্ত্রাসের আর্কাইভ করা জরুরী। যার কাছে যা তথ্য আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চমৎকার প্রস্তাবনা নজরুল ভাই, আমি আমার শহর কুমিল্লা নিয়ে কি করা যায় দেখি!
কাজী মামুন
হাসান ভাই,
বিষয়টা এমনই এই নিয়ে আমার দ্বিধার শেষ নেই।
কোন কোন ক্ষেত্রে সশস্ত্র প্রতিরোধ অবশ্যই প্রয়োজন, তবে এই প্রতিরোধ ক্ষেত্র ও মাত্রার নিয়ন্ত্রনহীণতা এক সময় এমনই দৈনন্দিন বিষয়ে পরিনত হয় যে তার পরিণতিতে আমাদের দেখতে হয় আজকের এই সময়কার ছাত্র রাজনীতির কলুষিত পরিবেশ। সন্ত্রাসী তৈরীর এই প্রক্রিয়াটাই মেনে নিতে পারিনা। তবে শিবির যখন অস্ত্র হাতে নেমে আসে এবং আইন নিশ্চুপ থাকে, তখন প্রগতিশীল সন্ত্রাস ছাড়া অন্য কোন রণকৌশল যথার্থ- তার উত্তর আমার জানা নেই। হত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে, তবে আমার প্রয়োজনে ব্যবহার করা সন্ত্রাসীকে আমি আদর্শিক অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে আমি নারাজ। কেন নারাজ তার উত্তর হয়তো সন্ত্রাসের পরিণিতিতে বেঘোরে জীবন দেয়া অনেক আবু বকরদের পরিবারকেই জিজ্ঞেস করলে সহজেই পাওয়া যাবে। সন্ত্রাসী হিসেবে সুবিধে অনেক, বীরের মতো জীবন দিয়েও মর্যাদা না পাওয়াই হয়তো তার মূল্য।
শহীদ মুনির, তপন, জুয়েল কেমন ছিল তা আমি জানি না।
লক্ষ্য করবেন আমার প্রথম মন্তব্যে তাই আমি প্রত্যেককে আলাদা ভাবে শহীদ হিসেবে উল্লেখ করে সন্মান জানিয়েছি।
আপনারা যারা তাদের জানতেন- তারাই ভালো বলতে পারবেন ব্যক্তি হিসেবে তারা কোন মানসিকতার বা কোন আদর্শের ছিলেন।
আপনার অনুমান ভূল হয়ে থাকলেও আমি অযৌক্তিক কিছু দেখি না। সাধারণতঃ যেমন হয়, তার ভিত্তিতেই তো আমরা অনুমান করি। আমি মফস্বলে বড় হয়ে ওঠা মানুষ। কোন দল না করেই প্রথম গ্রেফতার হই নবম শ্রেনীতে- শিক্ষকদের প্রশ্ন ফাঁসের প্রতিবাদ করতে গিয়ে। তিন দিন পুলিশের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে বের হয়ে এসে এরপর আবারো ধরা খাই এরশাদ পতনের আন্দোলনে। ততদিন ভালোমত দৌড়ানো শিখে গেছি বলে শিবিরের মার চড়-চপড়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। নব্বুই দশকের ক্যাম্পাসে পদচারনা করলেও ষাটের দশকের প্রোফাইলই বোধহয় ভালো মানায়- রাজপথের আন্দোলনে যেমন অনুপস্থিতি ছিল না, তেমনি অনুপস্থিতি ছিল না বোর্ডের কোন মেধাতালিকা থেকেও। এসব সবই অপ্রাসঙ্গিক। অসুস্থ রাজনৈতিক পরিমন্ডলই বোধহয় আমাদের চোখে “কি বলা হলো” এর চেয়ে “কে বললো” প্রসঙ্গটাকে বড় করে দেখতে শেখায়।
আমি পিউরিটান নই। অভিজ্ঞতাতেও অত দরিদ্র নই।
তবে আমি বোকা। বোকারা সুর না মিলিয়ে বিব্রতকর প্রশ্ন তুলে ফেলে।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ঠিকাছে
দ্বিধা একদিন কাটবে আপনার। হয়তো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
দ্বিধা আর কাটলো কৈ? এই ব্লগে আমাদের কিছু আলোচনা চলছে। এদিকে প্রথম আলোতে আজই প্রকাশিত হয়েছে এই রিপোর্ট। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির বিতারন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রলীগের সুর্যসৈনিকেরা আজ নেমেছে ছাত্রদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের আভিযানে। এখন শিবির নেই; সূর্যসৈনিকেরা বেকার। তাই হয়তো সময় কাটানোর জন্যে চলছে এই চাঁদা অভিযান। কিন্তু শিবির হাত থেকে মুক্তিদাতা এক সূর্যসৈনিকদের সামান্য কটা টাকা চাঁদা দিতে ছাত্রদের এত আপত্তি কেন? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব অকুতভয় ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পস শিবির মুক্ত করলো, আর তাদের সেই অবদানের কথা মনে রেখে ছাত্ররা সামান্য টাকাটুকু পর্যন্ত দিবে না? শালারা সব নিমকহারাম।
সুত্রঃ প্রথম-আলো (১৪ আগস্ট ২০১০)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে গত ছয় মাসে ৪৫২ জন সাধারণ ছাত্র হল ছেড়েছেন। ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনে অতিষ্ঠ হয়ে এই শিক্ষার্থীরা তাঁদের নামে বরাদ্দ সিট বাতিল করে চলে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য স্থগিত হওয়া কমিটির সভাপতি আওয়াল কবির বলেন, ‘আমার জানামতে, ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন।’ শিক্ষার্থীদের সিট বাতিল করে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাঁরা সিট বাতিল করে চলে গেছেন, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া হলে থাকতে ভালো না লাগলে কেউ সিট বাতিল করে চলে যেতেই পারেন। এর জন্য ছাত্রলীগ দায়ী নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়। এর পর থেকেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন ধরনের হুমকিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জিম্মি হয়ে পড়েন। তবে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের সঙ্গে শিবিরের সংঘর্ষে ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হোসেন নিহত হওয়ার পর শিবিরের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। এরপর ছাত্রলীগের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মারধরের পাশাপাশি শিবিরের কর্মী আখ্যা দিয়ে কিংবা ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হত্যায় জড়িত বলে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ, তিনি মাদার বখ্শ হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। সম্প্রতি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে মারধর করা হয়। হলে থাকা নিরাপদ নয় ভেবে সিট বাতিল করে তিনি ক্যাম্পাসের বাইরে একটি বেসরকারি ছাত্রাবাসে থাকছেন।
এস এম হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এমন একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, হলে থাকার সময় তিনি কোনো ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সম্প্রতি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে ‘ছাত্রশিবিরের কর্মী’ আখ্যা দিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে না পারায় তিনি সিট বাতিল করে হল ছেড়ে দিয়েছেন।
শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্প্রতি তাঁর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি সিট বাতিল করেছেন।
আরও অনেক শিক্ষার্থী প্রথম আলোর কাছে এ ধরনের অভিযোগ করেছেন। তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নাম প্রকাশ করা হলো না।
অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী জানান, শিবির ‘ইয়ানত’-এর নামে চাঁদা আদায় করত। আর ছাত্রলীগ বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা আদায় করছে। ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি থেকে সাংবাদিক কিংবা সাংস্কৃতিক কর্মীরাও রেহাই পাচ্ছেন না।
জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র ও একটি জাতীয় দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কর্মী সম্প্রতি তাঁর কাছ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা নেন। বিষয়টি হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাদের জানালেও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে সাংবাদিকদের জানালে শেষ পর্যন্ত ওই টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কিছু কর্মীর চাঁদা দাবিতে তিনি অতিষ্ঠ। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের মিছিল-সমাবেশেও অংশ নেওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়।
এদিকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগ ও শিবিরের সংঘর্ষের পর বিভিন্ন হলের অনেকের কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল। কিছু কক্ষ শিবিরের নেতা-কর্মীর হলেও অধিকাংশই ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এসব কক্ষের তালা ভেঙে কম্পিউটার, কাপড়চোপড় ও বইখাতা লুট করা হয়।
এসএম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সেলিম জানান, ছাত্রলীগ-শিবিরের সংঘর্ষের আগে তিনি বাড়ি চলে যান। সংঘর্ষের কয়েক দিন পরে হলে ফিরে দেখেন তাঁর কম্পিউটারসহ অনেক কিছু খোয়া গেছে। পরে জানতে পারেন, একটি ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা তালা ভেঙে এসব নিয়ে গেছেন। বিষয়টি হলের প্রাধ্যক্ষকে জানালে তিনি কোনো ব্যবস্থা নিতে অসহায়তা প্রকাশ করেন।
শের-ই-বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানান, কয়েকজন শিক্ষার্থী সিট বাতিল করে চলে গেছেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজির কারণে শিক্ষার্থীরা চলে গেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে হল ছেড়েছেন।’
শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ মর্ত্তুজা খালেদ সাধারণ শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত নাকি অন্য কোনো কারণে হল ছেড়েছেন তা ওই শিক্ষার্থীরাই ভালো বলতে পারবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, শিবিরের সশস্ত্র হামলায় ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক নিহত হওয়ার পর ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিল। কিন্তু চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপতৎপরতার কারণে তা এরই মধ্যে ম্লান হয়ে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শিক্ষার্থীরা লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতিসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের সভাপতি মলয় ভৌমিক বলেন, ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা দুঃখজনক। এটা চলতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন পেয়ে মৌলবাদী সংগঠন ছাত্রশিবির লাভবান হবে।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
নিজামী ঘাতক হলেও সৎ- বলেছেন আসিফ নজরুল।
দোয়া করেন সৎ লোকের বাচ্চারা ক্যাম্পাসে ফিরে আসুক, চাঁদাবাজি চলবেনা আর। আপনারো দ্বিধা কেটে যাবে।
আপনার আর আমার আলোচনা এক লেংথে যাচ্ছেনা। অন্ততঃ এই মুহুর্তে। তাই থামছি।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কি বুঝলেন? কমেন্টগুলো কি পরিচিত লাগছে না? খুব খেয়াল কইরা!
কাজী মামুন
ভাবনা, মত আর দৃষ্টিভঙ্গির বৈচিত্র্য আছে বলেই তো জীবন সুন্দর।
ধন্যবাদ সময় নিয়ে এতক্ষণ আলোচনার জন্য।
ভাবার মতো, শেখার মতো দারুণ অনেক প্রসঙ্গ আপনি তুলে এনেছেন।
একদিন হয়তো আপনার বক্তব্যগুলো আমি আরো ভালো ভাবে বুঝতে পারবো।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ঠিক এই যায়গাই আলোচনার মূলবিন্দু। প্রথম আলোর খবরে যেই ক্যাডারবাজির বর্ণনা দেয়া হয়েছে সেখানেও অনেকেই অনেক বীর দেশপ্রেমিকদের গল্প দেখতে পান। সেখানে বাবুবাংলার সাদাচোখ দেখে সন্ত্রাস। আর আপনি সেখানে লেংথের পার্থক্যের কথা বলে পাশ কাটিয়ে যান। নির্জলা সত্য হচ্ছে ব্যপারটা আসলে 'লেন্সের'। 'লেংথ' ব্যপারটা কেবল আপনার অবস্থানকে একটা উচ্চতর তকমা দেবার চেষ্টা মাত্র।
বাবুবাংলা, আপনি বারবার আবু বকরের কথা বলছেন। ছাত্রলীগ রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে চাঁদাবাজি করছে এই প্রমাণও দিয়ে দিলেন। অথচ একবারও বললেন না, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক নামের একটা ছেলেকে শিবিরের কুত্তার বাচ্চারা খুন করে ম্যানহোলে ফেলে রেখেছিলো, অধ্যাপক তাহেরকে হত্যা করেছিলো, এই বিষয়গুলো দেখি আপনার চোখ এড়িয়ে গেল ! আপনি বারবার শুধু আবু বকরের কথাই তুলছেন।
আপনার কাছে কিছু প্রশ্ন:
বলেন তো একাত্তরে নিজামী কি করছে ?
একাত্তরে মুজাহিদ কি করছে ?
একাত্তরে গোলাম আযম কি করছে ?
একাত্তরে জামাত আর ছাত্রসংঘের ভুমিকা কি ছিলো ?
যেহেতু আপনি ক্লাস নাইন থেকে পুলিশের দৌড় খাইতেছেন বলেছেন, তাহলে আপনার খুব ভালো করে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার কথা ?
জাহামজেদ
জামাত-শিবিরের শুয়োরের বাচ্চাদের বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করার দলে যদি একজন ছিঁচকে চোরও থাকে আমি তাকে খুশি মনে আলিঙ্গণ করবো। পাশাপাশি 'সে ছিঁচকে চোর হয়ে কেনো জামাত-শিবিরের পাছার ছাল তুলে নিলো'- টাইপের সুশীল বক্তব্যদানকারী স্যুটকোট পরিহিত ভদ্রলোকের জন্য থাকবে আমার সজোরে উত্থিত মধ্যমাখানা।
জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে যে কারো, যে কোনো কিছুই জায়েজ। ফিনিতো।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভাবছিলাম এই একটা ব্লগ মনে হয় ছাগুমুক্ত আছে! না! এদের একটা কমন ঢং এর কথা বলি- নিরপেক্ষতার নামে দেখবেন এরা যখন শিবির হত্যার কথা বলবে তখন বলবে- অন্যদলের হাতে শিবির নিহত আর যখন অন্যদলের কেউ নিহত হওয়ার কথা বলবে তখন বলবে শিবিরের সাথে সংঘর্ষে নিহিত। এখানেও আমি লেজ দেখতে পাচ্ছি! শিবিরের তুলোধুনো যেখানে হবে সেখানে এরা এসে প্রথমে প্রয়োজনে শিবির কে একটা গালি দিয়ে, এরপর প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে অপরাপর ছাত্র সংগঠনের চেয়ে যে শিবির ভালো এটা কৌশলে প্রমান করার চেষ্টা করবে।
এখানেও লেজের দেখা মিলছে!
খুব খেয়াল কইরা!!
কাজী মামুন
বাবু ভাই, আপনে পয়েন্টটা বুঝতেসেন না। এখানে ব্যাপারটা হইতেসে এমন, কেউ যদি খুন করে, তাইলে সে খুনী। সে মানবহত্যার মত জঘন্য পাপকাজ করসে। কিন্তু সে যদি জামাত-শিবির বা এই টাইপ কাউকে খুন করে্, তাইলে আমরা তাকে পিঠ চাপড়ায়ে দিব। It doesn't matter সে আগে কি করসে। বড় ব্যাপার, সে একটা শুয়ার মারসে, একটা bigger evil দূর করসে। সে যদি পরে আবার খারাপ কিসু করে, তাইলে তাকে হয়ত আবার খারাপ বলা হবে। কিন্তু তাও, তার রেকর্ডে একটা বিশাল বড় পূণ্য লেখা থাকবে যে সে ঐ শিবির মারসিল। সে যদি শিবির মারতে গিয়া মরে, তাও তারে সবাই মনে করবে, আহা রে , ছ্যামড়াটা ভাল একটা কাজ করতে গিয়া মরল।
এইটাই আসল কথা।
[আমি এখানে তপন, মুনির, জুয়েলের কথা চিন্তা না করে জেনারালাইজড একটা কমেন্ট ছাড়লাম।]
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
পল্লব, তোমার ইমোশনটা আমি বুঝি। এটাই এখানে সবার ইমোশনঃ মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা এবং যুদ্ধাপরাধী ও তাদের অনুসারীদের প্রতি ঘৃণা। তবে এমন যদি হতো আমাদের আছে একদল জামাতশিবির মারা মারকুটে তরুন- যারা শুধু জামাতশিবির দেখলেই প্যাদানী দেয়- আমিও তাদের সোনার সন্তান বলতাম। সমস্যা হলো আমাদের যারা আছে, তারা জামাতশিবির যেমন মারে, তেমনি স্বার্থের টানে তোমাকে আমাকে মারতেও ছাড়েনা। সমস্যাটা এখানেই। এককালে আদর্শিক সন্ত্রাস বলে একটা কথা ছিলো। কিন্তু আজকের এই সন্ত্রাসে আদর্শ নেই। যে হাত শিবির মারে- সেই একই হাত মারে তোমাদের সনিদের, মারে আমাদের আবু বকরদের। সেই সনি হত্যাকারী আজ একজন শিবির মেরে আসুকঃ নাও দেখি তাকে বুকে টেনে! ভুলে যেতে পারলে ভালো হতো- তবে আমি এখনো ভুলতে পারি না আবু বকরের মৃত্যুর সেই শিরোনামঃ “ঘামে ভেজা জীবন, রক্তে ভিজে শেষ”। তুমি আমি মানবিকবোধ সম্পন্ন বলেই যে জামাতীরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে হত্যা করেছে, আমরা তাদের সরাসরি খুন করে না ফেলে আজ বিচার করি।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আবু বকর আপনাদের!
গুড... আপনার এবং আপনাদের পরিচয়টা স্পষ্ট করে দেওয়ার জন্য।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
একদম ঠিক ধরেছেন! আপনার বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা না করে পারি না। উপরের কথোপকথন চলছিল ব্যক্তিগত পরিচয়ের সুত্রধরে একজন বুয়েট ছাত্র ও একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মধ্যে।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
সেটাই তো বললাম। "সে যদি পরে আবার খারাপ কিসু করে, তাইলে তাকে হয়ত আবার খারাপ বলা হবে। কিন্তু তাও, তার রেকর্ডে একটা বিশাল বড় পূণ্য লেখা থাকবে যে সে ঐ শিবির মারসিল।"
কিন্তু এখানে যাদের কথা হচ্ছিল, তারা বোধ করি এমন কেউ ছিলেন না, তাদের নামে খারাপ কিসু শুনিনাই।
ব্যাপারটা হচ্ছে এমন, এখন যে যতই খারাপ কাজ করুক, তাদের কারোটাই গণস্কেলে (শিওর না টার্মটা ঠিক হলো নাকি) কখনো ৭১ এ জামাতী-পাকিদের লেভেল পর্যন্ত নামবে না, সম্ভব না নামা। আর শিবির? তারা তো এদেরই সাপোর্টার, জেনে, বুঝে। অন্য যে কারো থেকে এরা অনেক বেশি খারাপ, কারণ এরা মানুষকে ধোঁকা দিয়ে ধর্মের নাম নিয়ে এই কাজগুলাকে "হালাল" বা এই টাইপ কিসু বানানোর চেষ্টা করে, সহজেই মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলা করে, বোকা বানিয়ে নিজের দলে ভিড়িয়ে নিতে পারে।
কেউ চায় না, একটা ছেলে শিবির মারার জন্য হাতে লাঠি নিয়ে তারপরে অন্যদেরও মারা শুরু করুক। কিন্তু সবাই চায়, সে শিবির মারুক। হ্যাঁ, সে পরে খারাপ হতে পারে, কিন্তু সেটা দুর্ভাগ্য, সিস্টেমের দোষ or whatever, এবং সেটা কেউ চায় না।
আদর্শিক সন্ত্রাস মনে হয় এখনও আছে। এখনো সবাই শিবির খ্যাদানোর জন্য এক হয়, তাই না?
অন্যদের কথা জানিনা, আমি, সত্যিকার অর্থে, রাজাকারগুলার বিচার চাই না, চাই slow painful death। এরা যা করসে, তার তুলনায় আদালতের দেওয়া যেকোন শাস্তিই হয়ত অনেক বেশি লঘু হবে।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
বাবুবাংলা, এই কথাটা বুঝতে আপনার এত সমস্যা হচ্ছে কেন ?
জাহামজেদ
পোস্টে ৫ তারা
অ.ট. আরেকটা লিটমাস পেপার পাইলাম ...
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ঘটনা আমি অনেক আগেই সন্দেহ করছিলাম। দুয়েকজনরে জানাইছিলামও....
কি মাঝি, ডরাইলা?
উত্তম লেখা।
ছাগুরা উন্নত বিশ্ব হইতে যতই ল্যাজ সার্জারি করুক না ক্যান, সচলায়তনে ঢুকলেই কট!
নতুন মন্তব্য করুন