জর্জ হ্যারিসন, সারা বিশ্বের কাছে দুনিয়া কাঁপানো বিটলস ব্যান্ডের একজন সদস্য। কিন্তু প্রতিটি বাংলাদেশির কাছে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। অস্ত্র হাতে নন, গীটার আর গান দিয়ে যিনি যুদ্ধ করেছেন খুব দূরের অচেনা কিছু মানুষের জন্য। আজ লিখব সেই মুক্তিযোদ্ধার জীবনগাঁথা।
১৯৪৩ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারী লিভারপুলে জন্মগ্রহন করেন হ্যারিসন। চার ভাইবোনের মাঝে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তাঁর স্কুল জীবনের শুরু হয় ডোভডেইল প্রাইমারি স্কুলে, যেখানে পড়ালেখা করেছেন বিটলসের আরেক কিংবদন্তী জন লেনন। ভালো রেজাল্ট করার সুবাদে তিনি লিভারপুল ইন্সটিউট অফ বয়জ এ পড়ালেখা করার সুযোগ পান। সেখানে তিনি ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৮ পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। ১৪ বছর বয়সে তাঁর গীটারের প্রতি ঝোঁক বাড়ে, ক্লাসের ব্যাকবেঞ্ছে বসে গীটারের ছবি আঁকাই নেশা হয়ে দাঁড়ায় : “আমি তখন গীটারে পুরোপুরি ডুবে ছিলাম। আমাদের স্কুলের ১টা ছেলে তখন ৩ পাঊন্ড ১০ পেনি দিয়ে ১টা অ্যাকুয়েষ্টিক গীটার কিনেছিল। যদিও তখনকার সময়ে সেটা অনেক টাকা ছিল, মার কাছ থেকে টাকা নিয়ে জীবনের প্রথম গীটারটি কিনলাম।” সেই স্কুলে হ্যারিসনের সাথে পরিচয় হয় পল ম্যাককার্টনির সাথে। পল ম্যাককার্টনি লেননের “দ্য কোয়ারিম্যান” ব্যান্ডে যোগ দেন, পরে সেটাই হয় দিগ্বজয়ী দ্য বিটলস। ম্যাককার্টনি হ্যারিসনকে দলে নেওয়ার জন্য লেননকে অনুরোধ করেন। ১৯৫৮ সালে হ্যারিসন সেই ব্যান্ডে যোগদান করেন। বিটলসে সবার ছোট ছিলেন হ্যারিসন। প্রথমদিকে কম বয়সের অযুহাতে লেনন এবং ব্যান্ডের অন্যান্য সদস্যরা তাঁকে নিতে গড়িমসি করলেও পরবর্তীতে হ্যারিসনের পারফরম্যান্সে সন্তষ্ট হয়ে তাঁকে দলে নেন। ১৫ বছর বয়সে হ্যারিসন সেই ব্যান্ডের পুরোদস্তুর সদস্য হয়ে যান।
১৬ বছর বয়সে তিনি স্কুল ছেড়ে স্থানীয় ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরে কাজ শুরু করেন। ১৯৬০ সালে বিটলসের সাথে হামবুর্গে ব্যান্ডের সাথে পারফর্ম করেন। হ্যারিসনের সেই পারফরম্যান্স তাঁকে মিউজিকের উপর বৃত্তি এনে দেয়, সেখানে তিনি টনি শেরিডানের কাছ থেকে গীটারের উপর তালিম নেন। এই শিক্ষাই বিটলসের সঙ্গীত এবং হ্যারিসনের শান্ত পারফরম্যান্সের ভিত্তি তৈরি করে দেয়। জর্জ হ্যারিসন তাঁর এই নিরব অংশগ্রহনের কারনে “শান্ত বিটলস” খ্যাতি পান। বৃত্তি পেলেও হ্যামবুর্গে হ্যারিসনের বেশিদিন থাকা হয়নি। অল্প বয়সের কারনে তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
১৯৬১ সালের নভেম্বরে বিটলসের প্যারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে ব্রায়ান এপ্সটেইন ব্যান্ডটির ম্যানেজারের দায়িত্ব নেন। ১৯৬৩ সালে এমির ব্যানারে তাদের প্রথম অ্যালবাম রিলিজ পায়; ততদিনে বিটলস উন্মাদনা ছড়িয়ে গেছে পূরো বিশ্বে। তার আগে ১৯৬২ সালে অ্যা্লবামের প্রথম সিঙ্গেল গান ইউকে চার্টে ১৭ নাম্বারে জায়গা করে নেয়।
এর পরের অংশটুকু শুধুই বিটলস এবং হ্যারিসনের সাফল্যগাঁথা। দ্বিতীয় পর্বে থাকবে বিটলস উন্মাদনা, ভাঙ্গন, কন্সার্ট ফর বাংলাদেশ এবং তার পরবর্তী জীবন।
রিয়াদ পারভেজ
মন্তব্য
চলুক।
খুব ভালো
ধন্যবাদ।
রিয়াদ পারভেজ
চলুক। বিটলস উন্মাদনা বোধ হয় বাংলাদেশেও ছড়িয়েছিল। পরের পর্বে এ ব্যাপারে আলোকপাত করবেন আশা করি। আর যদি সম্ভব হয় কন্সার্ট ফর বাংলাদেশ সম্পর্কে একটু ডিটেলস তথ্য দিয়েন। ভিনদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের কথাও জানুক সবাই। ভালো থাকবেন।
কুটুমবাড়ি
রিয়াদ ভাই, লেখাটা ভালো লেগেছে যদিও খুবই সংক্ষিপ্ত। আশা করছি পরের পর্বে তার সম্পর্কে আরও জানাবেন। তবে বিটলস সম্পর্কে যখন উল্লেখ করলেন তখন অবশ্যই রিঙ্গো ষ্টারকে উল্লেখ করা দরকার ছিলো, নাহলে যে বিটলস অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
রাতঃস্মরণীয়
হ্যাঁ, লিখাটা আসলেই ছোট হয়ে গেছে। যাই হোক, পরের পর্বে পুষিয়ে দিব।
আসলে লিখাটা বিটলস নিয়ে নয়, ছিল জর্জ হ্যারিসনকে নিয়ে। তাই রিঙ্গো ষ্টারের কথা আসেনি
কি মাঝি, ডরাইলা?
ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ
রিয়াদ পারভেজ
লালসালাম তাঁকে।
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
নতুন মন্তব্য করুন