- অনন্ত আত্মা
আমার নাখাস্তা গল্পগুলো যারা করুণা করে পড়েন, তারা আমার বন্ধু কমলের নাম নিশ্চয়ই জানেন। আজকের লেখা কমলকে নিয়েই। কমল ওর নামের মতই হালকা, পলকা কিন্তু আসর জমানো ছেলে বলে আমাদের কাছে ওর কদর বি এন্ড এইচ এর চেয়ে কম না।
আমাদের আর কমলদের বাসার দূরত্ব খুব বেশি না। যখনকার কথা বলছি, কমলদের বাড়ীটা তখন একতলা। গেট দিয়ে ঢুকতেই প্রথমে যেই রুমটা পরে সেটা কমলের। কমলের রুমে কমল একাই ঘুমায়। একরাতে খুঁট-খাট শব্দে কমলের ঘুম ভেঙ্গে গেল। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের আলোয় একটা মানুষের ছায়া জানালায় এসে পড়েছে। ভয়ে কমলের হৃৎপিন্ড ধরাস্ করে একবার লাফিয়ে ওঠে, দ্বিতীয় বার হৃৎপিন্ডকে লাফানোর সুযোগ না দিয়ে কমল নিজেই বিছনা থেকে লাফিয়ে ওঠে সঙ্গে দেয় চিল-চিৎকার – চোর – চোর। বিছনা থেকে নেমেই কমল লাইট জ্বেলে দেয় আর খাট থেকে মশারী টানানোর ডাঁশা খুলে নিয়ে মাথার উপর পাঁই পাঁই করে ঘুরাতে থাকে। গল্প যখন এই পর্যায়ে, আমরা কমলকে জিজ্ঞাস করলাম –
- তারপর কি করলি? দরজা খুলে চোরকে ধাওয়া করলি?
কমল বলল –
- পাগল; চোরের হাতে আজ কাল যন্ত্রপাতি থাকে। দেখা যাবে আমি কিছু করার আগেই পত্রপাঠ মন্ত্র দিয়ে ওই যন্ত্র আমার অন্ত্রে ঢুকিয়ে দিছে।
সম্ভবত এই ঘটনার পরেই ওর নাম হয়ে যায় ‘বাঘা কমল ’
একটা সময় আমাদের পাড়াটা যখন ছোট ছিল, সবার ভেতর সম্প্রীতিটা প্রবল ছিল। কারো বাসার সবাই গ্রামে বা অন্য কোথাও বেড়াতে গেলে প্রতিবেশীদের উপর দায়িত্ব পড়ত বাসাটা দেখে রাখার এবং প্রয়োজনে কেউ একজন হয়তো রাত্রে ঐ বাসায় থাকতও। আবার, কারো বাসায় অতিরিক্ত অতিথি এসে পড়লে, রাত্রে অন্য প্রতিবেশীর বাসায় যাওয়াতে কেউ সঙ্কোচ বোধ করত না। প্রতি এলাকার মতই আমাদের এলাকাতেও একটা হাজী বাড়ী আছে। কমলদের বাসার একটু দূরে হচ্ছে সেই হাজীদের বাড়ী। হাজী পুত্র গিয়াস আমাদের বন্ধু মানুষ। তো গিয়াস এক রাত্রে কমলদের বাসায় ঘুমাতে আসছে।কমলের রুমে এক খাটেই গিয়াস ঘুমিয়েছে।
এর কয়েকদিন পরে গিয়াসের সাথে আমাদের দেখা; কথায় কথায় গিয়াস বলছে –
- শোন, কারো বাসায় গেস্ট আসলে ঘুমানোর জন্য কোন বাসা যদি না পাস তাইলে দরকার হইলে মসজিদে গিয়া ঘুমাবি কিন্তু খবরদার কমলের লগে ঘুমাবি না।
আমরা বললাম –
- ক্যান?
গিয়াস বলল –
- ক্যান, ক্যান করিস না, যা কইলাম মাথায় রাখিস।
আমাদের তো তখন আগ্রহ চরমে পৌছে গেছে; সবাই ভাবছি নিশ্চয়ই আদি রসাত্মক কোন ব্যাপার। গিয়াস তো মুখ খলবেই না। বহু কষ্টে গিয়াস যেই কাহিনী বলল তা হচ্ছে –
সারাদিন অনেক পরিশ্রমের কারনে কমলের বিছনায় গিয়ে কমলের পাশে শুয়ে পড়তেই গিয়াসের চোখে ঘুম চলে আসে। আর সেই ঘুম ভাঙ্গে একদম সকাল নয়টায়। ঘুম ভেঙ্গেই গিয়াস দেখে ওর কেমন ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। বিছনা থেকে নামতে গিয়ে দেখে ও পা নাড়াতে পারছে না। পরে ভাল করে তাকিয়ে দেখে ওর পরনের লুঙ্গি আর পরনে নাই ওটা একদম চরণে চলে গেছে মানে লুঙ্গি দিয়ে ওর দু’পা বাঁধা আর নাঙ্গু বাবার মুরিদ হয়ে গিয়াস বিছনায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে।
মন্তব্য
পুরনো ঘটনা মনে পড়ল। ছোট বেলায় শবে বরাতের রাতে মসজিদে নামাজ পড়ার নাম করে পাড়ায় ছেলেরf দল বেঁধে মসজিদে যেতো। তার পর শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়ে পড়া লোকজনের লুঙ্গি খুলে দিতো। ঘটনার সত্যি মিথ্যা জানিনা, তবে পাড়াতো বন্ধুদের মুখেই শুনেছি
হুম, শবে বরাত নিয়ে মজার অনেক কাহিনী আছে। কোন এক সময় সেগুলো শেয়ার করার আশা রাখি। আইডিয়া দেয়ার জন্য ধন্যবাদ
উম... খারাপ না, তবে তেমন জমল না...
পরের পর্বে জমানোর চেষ্টা থাকবে ইনশাল্লাহ্ ।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
অনন্ত আত্মা
নিশ্চয়ই। লিখতে থাকুন।
অবশ্য বড় মুখ করে জ্ঞান দিচ্ছি, আমি নিজেই যেন কত লিখি!
আরে ব্যাপার না, জ্ঞান তো দেবার জন্যই।
শুভ কামনার জন্য ধন্যবাদ।
অনন্ত আত্মা
ঠিক বুঝতে পারলাম না কি ঘটলো। পরের পর্বে আশাকরি পরিষ্কার হবে।
রাতঃস্মরণীয়
আমার সব লেখাই জল রূপ তরল টাইপের এটাও সেই ধারার বাইরে নয়। মনে হয় তাড়াহুড়া করে পড়েছেন তাই বুঝতে সমস্য হয়েছে। আরেক বার পড়লে একদম বুঝে ফেলবেন। পরের পর্ব অন্য বন্ধুকে নিয়ে।
পড়ার আর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
অনন্ত আত্মা
নতুন মন্তব্য করুন