১.
তারাশঙ্করের উপন্যাস পড়ে আগেই মুগ্ধ হয়েছিলাম, এবার মুগ্ধ হলাম তার গল্পগুলো পড়ে।
২.
থার্ড ইয়ারের শুরুতে আমি প্রথম চিল্ড্রেন অফ বডম এর গানগুলো শুনি। অনেকদিন ধরেই পিসি তে পড়ে ছিলো গানগুলো। যে কোন কারনেই হোক, শোনা হয় নি। এনিওয়ে, গানগুলো যখন শুনলাম, বলতে দ্বিধা নেই, যারপরনাই মুগ্ধ হলাম। 'মুগ্ধ' হলাম বললে আসলে কম বলা হয়, মোটামুটি ফ্যানাটিক হয়ে গেলাম ওদের গানগুলো শুনে। এর আগে যে মেটাল একদম শুনিনি, তা না। কিন্তু এদের সবকিছুই অন্যরকম। নিজের অজান্তেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বসলাম, "Bodomized".
এরপর আরো একবার এরকম 'ized' হয়েছিলাম। সেটা কুবরিকের 'ড. স্ট্রেঞ্জলাভ' দেখে। অদ্ভূত একটা মুভি। মুভিটি দেখার পর দু'দিন ধরে পুরো ব্যাপারটা মাথায় ঘুরছিলো। যারা মুভিটি দেখেছেন, তাদের অনেকেই হয়ত আমার সাথে একমত হবেন। আর এখানেই কুব্রিকের সাফল্য। তার মুভি আপনার পছন্দ হোক বা না হোক, মাথার ভেতর ঠিকই কিলবিল করতে থাকবে। কিছুতেই আপনি তা সরাতে পারবেন না। এ অবস্থায় আপনার ফেসবুক স্ট্যাটাস কি হতে পারে?"Kubrickized"???
৩.
এ মুহূর্তে আমি "তারাশঙ্করাইজড"। কেন? তার গল্পগুলো পড়ে। তার গল্প পড়া মানে প্রতিদিনের প্থিবীটাকে নতুন করে দেখা। তার গল্প পড়া মানে আশেপাশের মানুষগুলোকে নতুন করে জানা। আর অনেক দূরের মানুষ, যাদের কখনো দেখিনি, দেখবো এমনটাও আশা করি না, তাদের সাথে এক ধরণের বন্ধনে জড়িয়া যাওয়া। বাংলা সাহিত্যে তারাশঙ্কর ই সম্ভবত প্রথম (একমাত্র কিনা বলতে পারবো না) লেখক যিনি কিনা এক ঘ্ণিত ডাইনী্র জীবন কাহিনীকে পর্যন্ত গভীর সহানুভূতির সাথে তুলে ধরতে পেরেছেন। ডাইনী বা পিশাচিনীদের নিয়ে জাফর ইকবাল স্যার এরও কিছু গল্প আছে। কিন্তু স্যার এর গল্পগুলোতে কিসের যেন কমতি ছিল। বড়সড় সাহিত্য সমালোচক হলে কমতিটা হয়তো ধরতে পারতাম। পাঠক মানুষ, সাহিত্যিকদের সমালোচনা করার দুঃসাহস বা যোগ্যতা কোনটাই আমার নেই।
তারাশঙ্করের গল্পের একটা দিক যে কোন পাঠকেরই চোখে পড়বে। তার গল্পগুলোকে ঠিক 'ছোটগল্প' বলা যায় না। মোটামুটি প্রতিটা গল্পই বেশ বড়সড় ক্যানভাসে বেড়ে উঠেছে। রবীন্দ্রনাথের গল্পের মত 'শেষ হইয়াও হইলো না শেষ' এমন ভাবও নেই কোন গল্পে। প্রতিটা গল্পেরই একটা স্পেসিফিক সমাপ্তি আছে। মোটকথা, তারাশঙ্করের গল্পে নাটকীয়তার তেমন স্থান নেই। হয়তো নিখাদ বাস্তবতা তুলে ধরতেই লেখক সমস্ত নাটকীয়তাকে সযত্নে এড়িয়ে গেছেন। তবুও, পাঠক হিসেবে মাঝে মাঝে একটা অত্ত্প্তি কাজ করে। আমরা বাঙ্গালীরা হয়তো স্বভাবগত ভাবেই নাটকপ্রিয়।
৪.
তারাশঙ্কর নিয়ে আরেকটু ব্হৎ পরিসরে কিছু লেখালেখির ইচ্ছা আছে। দেখা যাক, মাইক্রোপ্রসেসর প্রজেক্টের কাজে ফাঁকিঝুকি দিয়ে সময় বের করে কিছু লেখা যায় কিনা।
---আশফাক আহমেদ
মন্তব্য
তারাশঙ্করের গল্পগুলো পড়েছিলাম ম্যালা আগে, তবে ভেবেছিলাম আপনার গল্প পড়ে দুধের স্বাদ সামান্য একটু হলেও ঘোলে মেটাব। সেটা আর হল কই? আশা করি ,সামনে জম্পেশ আলোচনা পাব।
অদ্রোহ।
এত ছোট লেখা? প্রিয় লেখকের নাম দেখে ঢুকলাম কিন্তু পড়া শুরু করতে না করতেই শেষ। তবে লেখার সাবলীলতা ভাল লাগল। আশা করি প্রজেক্টের কাজে ফাঁকিঝুকি দেওয়া আর ভালভাবে শিখে ফেলবেন, সাথে তারাশঙ্কর নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ গুলো আর বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরবেন।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
বস, মাত্র তো শুরু করলাম। সময় করে ডিটেইলস লিখবো আশা করি।
তবে, পাঠক হিসেবে আপনাকে হতাশ হতে হবে মনে হয়। একে তো আমি সাহিত্যের ছাত্র না, প্লাস আমার পর্যবেক্ষণশক্তিও দুর্বল। তবুও চেষ্টা করে যাবো বৈকি
তাইলে আরেকটা গোপন কথা বলি, আমি নিজেও সাহিত্যের ছাত্র না
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
আমি আজই 2001 দেখে Kubrickized হইলাম। তারাশঙ্করের গণদেবতা ও পঞ্চগ্রাম আমার প্রিয় উপন্যাস। লিখবেন নিয়মিত আশা করি।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এইটুকুতেই শেষ!
লেখার ধাঁচ ভাল্লেগেছে, লিখুন আরো...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমার খুব বড় একটা দুঃখ হল, হঠাৎ করে একটা বাংলা গল্প পড়তে যদি ইচ্ছা হয়, এই যেমন এখন তারাশঙ্করের 'ডাইনী' পড়তে ইচ্ছা হচ্ছে, বেচারা ল্যারি পেইজ আমাকে কোন সাহায্যই করতে পারবে না । কবে যে আমরা বাংলা গল্পবইয়ের একটা ওয়েব আর্কাইভ পাব ?
তোর লিখায় একটা প্রচ্ছন্ন সহজতা আছে , গল্পের রিভিউ এর লোভ জাগিয়ে শেষে আমাদের বুভুক্ষু রেখে পালালি কেন, সেই ক্ষোভ কিন্তু রয়েই গেল ।
জলদি নেক্সট টোপ ফ্যাল, এম-প্রসেসর রসাতলে যাক ।
আরোগ্যনিকেতন, কবি, ও অভিনেত্রী পড়ে আমি চিরস্থায়ী তারাশঙ্করাইজড, অনেক দিন ধরেই।
রিক্তা
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
চমৎকার লেখা। গোছানো, মার্জিত, ও সাবলীল।
কি মাঝি, ডরাইলা?
ভালই লিখেছিস কিন্তু একটু বেশি ছোট হয়ে গেছে । চালায় যা। আমার কাছে যদিও তারাশঙ্কর বেশ কঠিন লাগে । একবার কবি পড়া শুরু করসিলাম আর শেষ করা হয় নাই। তোর লেখা পড়ে আবার পড়ার ট্রাই দিব ভাবতেসি
আমার কাছে তিন ব্যানার্জীর মধ্যে তারাশঙ্করকেই সহজবোধ্য মনে হইসে।
ট্রাই করে দেখ। পড়ে জমজমাট কিছু লেখাও দিস কিন্তু। অপেক্ষায় রইলাম
খুব গোছানো লেখা! ভাল্লাগলো! [লিঙ্ক পেয়ে দেখে গ্লাম! ]
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
নতুন মন্তব্য করুন