পিছলানো প্রসঙ্গে বুদ্ধিজীবি-পলিটিশিয়ান-কনডম এবং সিকিউরিটি মেজার্স

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি
লিখেছেন রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] (তারিখ: শনি, ২৮/০৮/২০১০ - ৩:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোট বেলায় একটা কৌতুক শুনে খুব মজা পেতাম। বাজী ধরে বিশাল ভিড়ের মধ্যে থেকে লাইনে না দাঁড়িয়েও সিনেমা হলে টিকেট কাটার কৌতুক। লুঙ্গি কাঁছা মেরে সারা গায়ে সরশের তেল মেখে তিনি সুড়ুৎ করে পিছলিয়ে টিকেট কাউন্টরের সামনে গিয়ে টিকেট কেটে আনলেন।

[img=auto]young-somali-mooryaan[/img]
সোমালিয়ার কিশোর মিলিশিয়া

এবার সত্যি ঘটনা বলি একটা। আমাদের কলেজ জীবনে খুলনার নিরালা আবাসিক এলাকার মাঠে আবুল খয়ের স্মৃতি কাবাডি টুর্ণামেন্ট হচ্ছে। লোকে লোকারণ্য। আয়োজক আবুল খয়ের স্মৃতি সংসদ। আবুল খয়ের হচ্ছে নিহত শেখ আবুল কাশেমের বড় ভাই এবং ক্রসফায়ারে নিহত শেখ আসাদুজ্জামান লিটুর পিতা। তখন আবুল কাশেম এবং লিটু দুজনেই জীবিত। তপন চৌধুরী এসেছে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গান গাইতে। আবুল কাশেম ব্যাস্ততার মধ্যেও দলবলসমেত ফাইনাল খেলা দেখতে আসছে। তুমুল প্রতিদ্ধন্ধিতা। মাঝে খেলার কিছু বিরতি। বিরতির সময় একদলের ষ্ট্রাইকাররা তাদের দুই হাতে এবং পায়ে গ্রীজ মেখে নিলো। তারপর প্রতিপক্ষের কোর্টে হানা দিলেই তাদেরকে প্রতিপক্ষের ঝানু ডিফেন্ডাররাও ধরে রাখতে পারছিলো না গ্রীজজনিত পিছলানোর কারনে। তারপর প্রতিপক্ষ টাইম আউট নিয়ে কোর্টে ফিরলো ষ্ট্রাইকাররা গ্রীজ মেখে আর ডিফেন্ডাররা হাতভর্তি বালি আর ছাই নিয়ে। এরপর যা হবার তাই। খেলা পরিনত হলো মারামারিতে আর এমন সময় আবুল কাশেমের আগমন। কাশেম সবশুনে উভয় দলের কয়েকজনকে পয়জারাঘাত করে নির্দেশ দিলো ছালার চট এনে গ্রীজস্নাত ষ্ট্রাইকারগুলোকে আচ্ছামত মোছা দিতে। কাশেম ধরে আনতে বললে তো সাঙ্গপাঙ্গরা বেঁধে আনে। তাই হলো এবং বাকীরা বালি-ছাই ঝেড়ে খেলায় মনোযোগ দিলো। বাকীসময় শান্তিপূর্ণভাবে খেলা শেষ হলো এবং আমরা তপন চৌধুরীর গান শুনে হৃষ্টচিত্তে বাড়ি ফিরলাম।

[img=auto]somalia_militia[/img]
সোমালিয়ার কিছু নারী চরমপন্থী

আসলে দুনিয়াটা চলছেই পিছলানোর উপরে। যানবাহনের গিয়ারগুলো যদি না পিছলায় তবে ওগুলো চলবে না। কলকারখানাতেও পিনিয়ামসগুলো না পিছলালে গোটা দুনিয়ার শিল্প অচল। আর বাকযুদ্ধে শিক্ষিত লোকজনই বেশি পিছলায়। চোর যদি সারা গায়ে শবরি কলা মেখে পিছলা না হয়, তবে তারও ভাতে মরন। টাক মাথায় রোদ পিছলায় নাহলে ঘিলু সিদ্ধ হয়ে যেতো। বুদ্ধিজীবি, পলিটিশিয়ান ও কনডমের মধ্যে পিছলানোজনিত কিছু মিল আছে। যে বুদ্ধিজীবি বেশি পিছলায় সে বড় বুদ্ধিজীবি; প্রায় সবাই তার বুদ্ধিবৃত্তিক সমর্থন পায় (পারিশ্রমিক প্রদান সাপেক্ষে)। যে পলিটিশিয়ান বেশি পিছলায়, তার সাফল্যগাথা সূদীর্ঘ; একাধিক ক্যাবিনেটে সে থাকে। আবার যে কনডমগুলো বেশি পিছলায় সেগুলোর জনপ্রিয়তা ও দাম, দুটোই বেশি।

[img=auto]somalia-forces-483[/img]
সোমালিয়ার যুবক মিলিশিয়া

এবার আসি কাজের কথায়, যা বলার জন্যে এতো ভূমিকা। সোমালিয়ায় কর্মরত সংস্থাগুলোকে সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্টের জন্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে হয়। বিশেষ করে সাউথ-সেন্ট্রাল তো ভয়াবহ জায়গা। আল কায়েদার বংশবদ আল-শাবাব আর হিজবুল ইসলাম ব্যাপক সক্রিয়। আহলে সুন্নাহ আল জামেয়া অবশ্য পাবলিকের জন্যে অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় কিন্তু আল-শাবাব বা হিজবুল ইসলামের জন্যে আজরাইল। এখানে উচু দেওয়ালওয়ালা কম্পাউন্ড ভাড়া করতে হয়। দেওয়ালে রেজর ওয়্যার আর হাই পাওয়ার স্পট লাইট লাগাতে হয়। কয়েকজন আর্মড হাউজগার্ড রাখতে হয়। বিদেশীদের বাইরে ঘুরতে হলে এসপিইউ (ইউএনডিপি সহায়তাপুষ্ট স্পেশাল প্রোটেকশন ইউনিটের কমান্ডো বাহিনী) নিয়ে ঘোরা মাষ্ট। আমি ব্যাক্তিগতভাবে ৭জন আর্মড হাউজ গার্ড আর ৬ জন এসপিইউ কমান্ডো নিয়ে থাকি; আমার অন্নদাতার নির্দেশে। এই ৭ জন হাউজ গার্ডের মধ্যে একজন আবার নারী। সে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত থাকে আমার অফিসে আগত নারী ভিজিটরদের দেহ ও ব্যাগতল্লাসী করার কাজে। সকালে অফিসে আসলে তাকে একটা ফাইভষ্টার দেওয়া হয় আবার বিকেলে সে ওটা জমা দিয়ে চলে যায়। আমার অনেক বন্ধু বেডরুমে লোডেড একে ৪৭ বা ফাইভষ্টার রাখে তবে আমি ব্যাক্তিগতভাবে এটা ভালো আইডিয়া মনে করিনা, তাই রাখিওনা। কোনও কোনও অফিসে কিছু গ্রেনেডও মজুদ থাকে।

[img=auto]16239_167990549834_739419834_2674192_2988431_n[/img]
একটা রিফিউজি/আইডিপি ক্যাম্পে আমি আর বন্ধু বিশ্ববিখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী জ্যান গ্রারাপ (জ্যান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে Jan Grarup লিখে গুগল সার্চ দেন, কয়েক হাজার লিংক পাবেন)

গতকাল সাউথ সেন্ট্রাল সোমালিয়ার গালমুডুগ ষ্টেটের দুটো সংস্থায় মিটিং ছিলো। আমি সংস্থাগুলোর নাম উল্লেখ করছিনা সংগত কিছু কারনে। প্রথম আমেরিকান একটা সংস্থার অফিসে গেলে দেখলাম মেইন গেইট থেকে অফিসের সদর দরজা পর্যন্ত নুড়ি পাথর ছড়ানো। এক কারন হলো যদি অফিস আক্রান্ত হয় তবে আক্রমনকারী দ্রুতবেগে নুড়ি পাথরের উপর দিয়ে দৌড়ে আসতে গেলে নিশ্চিত পিছলিয়ে পড়বে, সেই ফাঁকে সিকিউরিটি তাকে ধরাশায়ী করবে। সোমালিয়ায় ধরাশায়ী করা আর যা’ই করা বলেন, মানে হচ্ছে মৃত্যু। আহত করার বিজনেস এখানে অচল। এখানে হয়তো শুনবেন কোনও যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৭০ জন আর আহত ২ জন। নুড়িপাথর দিয়ে পিছলানোর ব্যবস্থা অবশ্য আমার কাছে নতুন কিছু না। নুড়ি পাথরের উপর দিয়ে দৌড়ানোর কায়দাও আমি ভালোই জানি।

[img=auto]13939_170847229834_739419834_2697371_420627_n[/img]
সান্ধ্য আড্ডায় আমি, সাথে দুই হাউজ গার্ড আবদিরাহমান শ্যাকে আর আবদিনূর আলী

এরপর গেলাম একটা ইটালিয়ান সংস্থার অফিসে। ওদের ম্যানেজার আমাকে অফিসের সামনের দরজা দিয়ে না ঢুকিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে ভিতরে নিলো। এতে অবশ্য অবাক হইনি। মিটিং সেরে আমি নিজেই সামনের দরজার দিকে এগোলাম কারন ম্যানেজারের অফিসটা ঠিক সামনের বারান্দার সংলগ্ন। বারান্দায় প্রথম ষ্টেপটা ফেলেই টের পেলাম মেঝে পিছলা। আমি ভাবলাম হয়তো সদ্য ডেটল দিয়ে মেঝে মোছা হয়েছে। কিন্তু আসলে তা না। ওদের সিকিউরিটি অফিসার আমাকে সাবধানে পা ফেলতে বলে বললো যে গোটা মেঝেতে পুরু করে গ্রীজ মেখে রাখা হয়েছে সিকিউরিটি মেজার হিসেবে। পিছলানোর এই ফর্মুলা আমি আগে কোথাও দেখিনি।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালই লাগল। বলা যায় মজাই পাইলাম।

আসলে দুনিয়াটা চলছেই পিছলানোর উপরে। যানবাহনের গিয়ারগুলো যদি না পিছলায় তবে ওগুলো চলবে না। কলকারখানাতেও পিনিয়ামসগুলো না পিছলালে গোটা দুনিয়ার শিল্প অচল। আর বাকযুদ্ধে শিক্ষিত লোকজনই বেশি পিছলায়। চোর যদি সারা গায়ে শবরি কলা মেখে পিছলা না হয়, তবে তারও ভাতে মরন। টাক মাথায় রোদ পিছলায় নাহলে ঘিলু সিদ্ধ হয়ে যেতো। বুদ্ধিজীবি, পলিটিশিয়ান ও কনডমের মধ্যে পিছলানোজনিত কিছু মিল আছে। যে বুদ্ধিজীবি বেশি পিছলায় সে বড় বুদ্ধিজীবি; প্রায় সবাই তার বুদ্ধিবৃত্তিক সমর্থন পায় (পারিশ্রমিক প্রদান সাপেক্ষে)। যে পলিটিশিয়ান বেশি পিছলায়, তার সাফল্যগাথা সূদীর্ঘ; একাধিক ক্যাবিনেটে সে থাকে। আবার যে কনডমগুলো বেশি পিছলায় সেগুলোর জনপ্রিয়তা ও দাম, দুটোই বেশি

যেমনে সব পিছলাইতাছে তাতে তো মনে হয় আমরাই কবে পিছলাইয়া পড়ি তারই কোনো ঠিক নাই। খাইছে

এলেবেলে
_________________________

অস্থির চিত্তের বিস্ময়কর পদচারনা

কৌস্তুভ এর ছবি

রাতঃস্মরণীয় ভাই কি এখনও সোমালিয়াতেই আছেন? আমি ভাবছিলাম দেশে ফিরে এসে "তেঁতুলপাতার ছায়ায় হাওয়া খেতে খেতে"* শান্তিতে আমাদের সেসব দিনের গল্প শোনাচ্ছেন। সরাসরি মাঠ থেকেই লাইভ ফিড দিচ্ছেন শুনে আরো অবাক হলাম। এমনিতেই অমন একটা জায়গা নিয়ে আপনি লিখছেন, বেশ অন্যরকম লাগে।

শেষ ছবিটায় খাঁটি বাঙালি পোষাকে লেখককে দেখে বড় ভাল লাগল! কিন্তু ঠিক আপনার পিঠের দিকেউ বন্দুক তাক কেন?

লেখা ভাল হইসে।

* দেশে বিদেশে-তে মুজতবা আলি সাহেবের এরকম একটা লাইন ছিল।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তভ ভাই, আমি সোমালিয়াতেই আছি, এবং আরও অল্প কিছুদিন থাকবো। তবে আমি প্রতি ২ মাস পর পর ২ সপ্তাহের জন্যে দেশে আসি। ফিল্ডে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা ব্লগে বা ফেসবুকে লিখিনা, লিখলে আমার কাজিনগুলো বাড়িতে বলে দেবে আর তার ফল হবে আমার সোমালিয়া মিশনে এমবারগো!

সোমালিদেরও প্রধান পোশাক কিন্তু লুঙ্গি। এরা বলে 'মাওইস'। এরা লুঙ্গি আর শার্ট পরে। পাঞ্জাবী বা ওই জাতীয় কোনও পোশাক এদের নেই। তবে অকেশনালি দুইএকজন এ্যারাবিয়ান আলখেল্লা পরে। শ্যাকে সম্ভবত পোজপাকে জোরদার করতে গিয়ে আমার দিকে রাইফেল তাক করেছে।

রাতঃস্মরণীয়

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশ বেশ। চীন-জাপানের মত আফ্রিকাও আমাদের কাছে 'এক্সোটিক' অঞ্চল বলেই পরিচিত ছিল, অ্যাডভেঞ্চারের স্বপ্নগুলোয় থাকত, তবে সেটা তার দুর্গম ঘন জঙ্গলের জন্য। এই দুর্ভিক্ষপীড়িত সন্ত্রাসলাঞ্ছিত দেশগুলি আমাদের সেই ফ্যান্টাসির উদ্রেক করে না। তবুও সেগুলোর সম্বন্ধে আমাদের কৌতুহল অনেক, বিশেষত আজকের দিনে বরং তার ভিতর থেকে প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ পাওয়াটাই কঠিন, মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো তো অনেক পর্যটকই গেছেন। তাই আপনাকে অনুরোধ, এই বিষয়টা নিয়ে লেখা চালিয়ে যান। ভালো-মন্দ যেমনই হোক।

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে এমন একটা সময়ে সোমালিয়াতে এসেছি যখন সোমালিয়া তার ইতিহাসের ভয়ংকরতম সময় অতিবাহিত করছে। গত পরশু কমান্ডোপরিবেষ্ঠিত হয়ে স্থানীয় বাজারে গিয়েছিলাম আমার মায়ের জন্যে দুটো স্বর্ণালংকার কিনতে। কমান্ডোদের উপস্থিতিতে আমাদের ২০ মিটার পিছনে মিলিশিয়ারা একজন লোককে গুলি করে মেরে ফেলে হেঁটে চলে গেলো। কারো ভিতরে কোনও শোকতাপ দেখলাম না। শুধু আমার সিকিউরিটি অফিসার বললো বস এখানে বেশিক্ষণ না থাকাই ভালো। চলে আসলাম।

ইচ্ছে আছে আগামীতে আরও লিখবো।

রাতঃস্মরণীয়

বিপ্লব কুমার কর্মকার এর ছবি

আপনার সাথে দ্বিমত। পিছলানো ব্যাপারটাকে আমি
“বৃষ্টি যেদিক থেকে আসে ছাতা সেদিকেই ধরা উচিত”
“স্রোতের বিপরীতে টিকে থাকা যায় না”
“যস্মিন দেশে যদাচারঃ”
“য পলায়তি স জীবতি”
“চিরন্তন আদর্শ বা নীতি বলে পৃথিবীতে কিছু নাই”
“নীতিবানের ভাত নেই”

জাতীয় বেদবাক্যের কারন বলে মনে করি।

বিপ্লব কুমার কর্মকার

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

অভিজ্ঞতা শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।

অ.ট : এখনকার সোমালিয়ানদের সিয়াদ বাররে সম্পর্কে মূল্যায়ন কী? ২-৪ কথায় জানায়েন পারলে। aninda.rahman[অ্যাট]hotmail[ডট]com
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ অনিন্দ্য ভাই। সিয়াদ বারে সম্পর্কে এক কথায় কিছু বলা অসম্ভব। তবে ২-৪ কথায় কিছু বলা যায়। সিয়াদ বারে আধুনিক সোমালিয়ার জনক। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের আলোকে সোমালিয়ার আধুনিকায়ন করে তারপর তিনি তার আধুনিক সোমালিয়াকে নিজের হাতে ধ্বংস করেছিলেন। তিনিই প্রথম সোমালিয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যাল কলেজ এবং ভালো ফ্যাকাল্টিসমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। প্রকাশ্যে গান-বাজনা অনুমোদন করেন। চার্চগুলোকে অধিক নিরাপত্তা প্রদান করেন। শিল্পায়নের দিকেও অগ্রসর হন ..........................। কিন্তু তিনি চরমভাবে ব্যার্থতা দেখান অর্থনৈতিক উন্নয়নে। জোর করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিশাল অংকের চাঁদাআদায় সহ নানা কার্যকলাপে জনগন তার উপরে আস্থা হারাতে থাকে। এছাড়া তার প্রতিপক্ষদমনের কৌশল মানুষের মনে ভীতির জন্ম দেয়। একপর্যায়ে এরপরই তিনি মেতে ওঠেন ধ্বংসযজ্ঞে। বোমা ফেলতে থাকেন তৎকালীন বৃহত্তর সোমালিয়ার ব্যবসায়িক প্রানদেন্দ্র হারগেইসায়, গ্যালকাইওতে, এবং আরও অন্যান্য জায়গায়। তার আমেরিকা ও রাশিয়ার সাথে একযোগে বন্ধুত্বরক্ষার নীতি তার জন্যে কাল হয়ে দাঁড়ায় এবং একপর্যায়ে তিনি উভয় দেশের কাছে ঘৃনিত ব্যাক্তিতে পরিনত হয়ে পড়েন।

আরও অনেক কথা, সহজে বলে ফুরানোর মতো না ...................

রাতঃস্মরণীয়

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

অতঃপর দেশটি বহুজাতিক কোম্পানির সোনার খনি হয়ে দাঁড়ায়। ইতিহাসটা চেনা লাগল?

আমার সোমালিয়া সম্পর্কে অনেক দিনের আগ্রহ ছিল। আপনার চোখ দিয়ে এই দেশটা সম্পর্কে দেখতে পেরে ভালো লাগছে।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অতিথি লেখক এর ছবি

তারা এসেছিলো তবে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। এদের মধ্যে ছিলো বিশ্ববিখ্যাত সিগারেট প্রস্তুতকারক ফিলিপ মরিসের বাবা। সে খুন হয়ে যায় এবং তার লাশটা গুম করে ফেলা হয়।

রাতঃস্মরণীয়

অতিথি লেখক এর ছবি

অতিথি লেখক লিখেছেন:
যেমনে সব পিছলাইতাছে তাতে তো মনে হয় আমরাই কবে পিছলাইয়া পড়ি তারই কোনো ঠিক নাই।

আসলে আমরা তো জ্ঞাতসারে-অজ্ঞাতসারে প্রতিনিয়ত পিছলাচ্ছি। না পিছলে তো ঠিকে থাকা মুশকিল।

রাতঃস্মরণীয়

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বুদ্ধিজীবীদের পিছলানোর দুয়েকটা উদাহরণ দিলে কামে লাগতো

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মাহবুব ভাই। এই উদাহরণ তো হরহামেশাই দেখা যায়। এখানে লেখার মতো যথেষ্ঠ সাহস আমি আসলে প্রদর্শণ করতে পারছিনা। দুঃখিত। যদি আপনার অবস্থান বাংলাদেশে হয় তবে শুধু ডাইনে আর বায়ে তাকান, অনেক কিছু দেখবেন।

রাতঃস্মরণীয়

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

দেইখেন মেটাব্লগিং-এর আওতায় না পড়েন হাসি
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

মাহবুবুল হক এর ছবি

পিছলানো নিয়া আপনার গবেষণা রীতিমত ঈর্ষণীয়। লুব্রিকেশন ব্যাপরটার সাথে আদিরসের নিবীড় সম্পর্ক আপনি ধরতে পারলেও সেদিকে খুব একটা যান নি। তবে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পিচ্ছিলতার ব্যবহার সম্পর্কে আলোকপাত করে আপনি নতুন দিগন্ত উন্মেচন করেছেন।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে লিখি কথা
আমি তো বেকার পেয়েছি লেখার স্বাধীনতা

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

দ্রোহী এর ছবি

মেটাব্লগিংয়ের প্রচ্ছন্ন ছাপ আছে। সে ছাপটুকু বাদ দিলে অভিজ্ঞতার বর্ণনা দারুণ হয়েছে। হাসি


কি মাঝি, ডরাইলা?

অতিথি লেখক এর ছবি

বিপ্লব কুমার কর্মকার লিখেছেন:
আপনার সাথে দ্বিমত।

মতের জন্যে ধন্যবাদ বিপ্লবদা, দ্বিমত তো হতেই পারে। তবে আমার মন হয় কি, পিছলানো বিষয়টা সম্পূর্ণটাই ব্যাক্তিকেন্দ্রিক। অনেকে ক্যাপাবিলিটস থাকলেও পিছলানো নীতি অবলম্বন করে থাকেন কিছু রিস্ক এন্ড এ্যাজাম্পশান এড়ানোর জন্যে। আবার অনেকের প্রয়োজনীয় সক্ষমতা না থাকলেও প্রতিকূল অবস্থা আত্মীকরণ ও লড়াই করার মানসিকতা পোষণ করে থাকেন। এই আর কি .........

রাতঃস্মরণীয়

অতিথি লেখক এর ছবি

মাহবুবুল হক লিখেছেন:
লুব্রিকেশন ব্যাপরটার সাথে আদিরসের নিবীড় সম্পর্ক আপনি ধরতে পারলেও সেদিকে খুব একটা যান নি।

ধন্যবাদ মাহবুব ভাই। লুব্রিকেশনের সাথে আদিরসের সম্পর্ক তো ধরতে পেরেছিলাম সেই স্কুলজীবনের পড়া চটিবই থেকে। তারপর অনেক পানি গড়িয়েছে তার আখ্যান আর নাইবা দেই।

আমি আসলে চেয়েছি এই লেখায় পিচ্ছিলতার সাথে সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্টের একটা যোগসূত্র দেখাতে। সাথে যুক্ত করেছি কিছু আজাইর‌্যা প্যাচাল লেখাটাকে একটু বড় করার জন্যে।

রাতঃস্মরণীয়

অতিথি লেখক এর ছবি

মহাস্থবির জাতক লিখেছেন:
দেইখেন মেটাব্লগিং-এর আওতায় না পড়েন হাসি

দ্রোহী লিখেছেন:
মেটাব্লগিংয়ের প্রচ্ছন্ন ছাপ আছে। সে ছাপটুকু বাদ দিলে অভিজ্ঞতার বর্ণনা দারুণ হয়েছে। হাসি

মহাস্থবির ভাই এবং দ্রোহী ভাই, আপনাদের দুজনকেই ধন্যবাদ। আমি আসলে ব্লগে নতুন। ফেসবুকে দুকলম লিখতাম সময় পেলে। বন্ধুরা চাপাচাপি না করলে হয়তো কখোনোই ব্লগ পড়া ছাড়া এখানে লেখা হতোনা। মেটাব্লগিং নিয়ে কখনও ভাবার সময় বা সূযোগ কোনওটাই হয়নি। মেটাব্লগিংএর ধারনাটাই যেহেতু আমার কাছে পরিষ্কার না তাই ডেলিবারেটলি আমার পক্ষে এটা করা সম্ভব না। তবে ব্যাক্তিগতভাবে কেউ আমার লেখায় নিজেকে আক্রান্ত মনে করলে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারবো না। আমি নিজমতের প্রতি যেমন শ্রদ্ধাশীল, পরমতেও পরমসহিষ্ণু এবং শিক্ষাচাতক। আমার কাছে পৃথিবীটা একটা শিক্ষালয় যার প্রতিটা সেকেন্ডে আমি শিখছি।

হাবিব এর ছবি

রাতস্মরনীয় ভাই, এই আজব দেশে আপনি কি করতে গেছেন? আপনার তো ভাই ভাল সাহস।

অতিথি লেখক এর ছবি

এই আজব দেশে আপনি কি করতে গেছেন? আপনার তো ভাই ভাল সাহস।

হাবিব ভাই, আমরা বরং আসেন সোমালিয়াকে আজব দেশ না বলে বলি হতভাগ্য একটা দেশ।

আমি এখানে এসেছি পেটের দায়ে চাকরী করতে। শুধু যে পেটেরই দায় তাও ঠিক না, সাথে একটুখানি মানবিক কমিটমেন্টও আছে। নইলে তো অন্য জায়গায়ও কোনমতে বেঁচে থাকার মতো কিছু একটা জুটিয়ে নিতে পারতাম।

আর সাহসের কথা যদি বলেন, তো বলি, আমরা সবাই কিন্তু সাহসী কিন্তু আমরা নিজেরা তা জানিনা। পরিস্থিতি সবাইকে সাহসী করে তোলে। এখানে সারাটা রাত শত শত রাউন্ড গুলির শব্দ ভেসে আসে কাছের কোনও জায়গা থেকে। কিন্তু ঘুমাতে অসুবিধা হয়না। সবই অভ্যাসের ব্যাপার। এইরকম গোলাগুলি যদি বাংলাদেশে হয়, তবে আমি নিশ্চিত না যে কতটুকু সাহসী থাকবো।

রাতঃস্মরণীয়

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার পুরানো একটা পোষ্টের লিংক এখানে দিচ্ছি। যারা পড়েননি, পড়তে পারেন। এটাও বাস্তব ঘটনার উপর লেখা।

সোমালি জলদস্যু এবং ওরা চার হতভাগা

লেখাটা যদিও একটু লম্বা তবে কষ্ট করে পড়লে সোমালিয়ার পাইরেসি সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যাবে।

রাতঃস্মরণীয়

হলুদ-মডু এর ছবি

সুধী,

আপনার নিবন্ধিত অ্যাকাউন্টটি কয়েক সপ্তাহ আগে সক্রিয় করা হয়েছে। আপনি সেটি ব্যবহার না করে অতিথি লেখক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে চলেছেন। যে ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে সচলায়তনে নিবন্ধন করেছেন, সেটি পরীক্ষা করুন। ভবিষ্যতে আপনি নিজ অ্যাকাউন্ট [অতিথি হিসেবে সক্রিয়] ব্যবহার করে লিখতে পারবেন। ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।