আজকে ইফতারে অতিভোজন হয়েছে। খাবারের আইটেমগুলা ছিল জটিল, পেটে ক্ষিধাও ছিল প্রচুর, তাই গলা পর্যন্ত খেয়েছি!
রমজান মাসে খাওয়া-দাওয়া বড়ই উমদা হয়। সারাদিন অভুক্ত থাকার কারণেই হয়ত মানুষ ইফতারের সময় উপাদেয় খাদ্য দিয়ে রসনা মেটাতে চায়। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এই রমজান মাসের অধিকাংশ দিনই মোটামুটি ঘরে বসে কাটিয়েছি। আজকে ঈদের কেনাকাটার জন্য দিনের বেলা বাইরে অনেক্ষণ ঘুরাঘুরি করতে হয়েছে, তাতেই গলা শুকিয়ে কাঠ। রিকশায় করে বাসায় ফিরার সময় ঘর্মাক্ত রিকশাওয়ালার দিকে তাকিয়ে আছি, শ্লথ গতি, ধীরে ধীরে রিকশা টানছে। রোজা রাখার কারণেই যে এই কাহিল অবস্থা বোঝা যায়। এই রোঁদে এরকম পরিশ্রম করে লোকটা রোজা রাখে কিভাবে? যতটুকু জানি রোজা রাখার একটা বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে গরিবদের অভুক্ত থাকার কষ্টটুকু অনুধাবন করা। কিন্তু এই গরিব রিকশাওয়ালা, তাকে নিশ্চয় এই জীবনে অনেকবার অভুক্ত থাকতে হয়েছে। তার কাছে তো রোজা রেখে ক্ষুধা-তৃষ্ণা নতুন করে উপলবদ্ধি করার কিছু নেই। রমজান মাসে রোজা রাখার কারণে সে ঠিকমতো রিকশা চালাতে পারবেনা, এবং সে কোন ঈদ বোনাসও পাবেনা। তাই তার আয়-রোজগারও এই রমজানে অন্য মাসের তুলনায় বেশি হওয়ার কোন কারণ নাই। আচ্ছা, রোজা রেখে বিত্তবানরা গরীবদের দুঃখ কষ্ট কতটুকু বোঝে? এই ব্যাপারটা আমার কাছে এক ধরণের কৌতুক বলে মনে হয়। সারাদিন না খেয়ে ইফতারে এবং ইফতারের পরে যে পরিমাণ খাওয়া-দাওয়া হয়, অন্য মাসগুলাতে এই পরিমাণে খাওয়া দাওয়া হয় কি না সন্দেহ। রোজা রাখার মাধ্যমে পয়সাওয়ালা মানুষেরা গরিবের দুঃখ-কষ্ট না হয় বুঝলো, কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষগুলারতো এইটা বোঝার প্রয়োজন নেই।
আসল বাস্তবতাটা এই যে, রমজান মাসটা হচ্ছে পয়সাওয়ালাদের জন্য উত্তম খানা-পিনার উৎসব, গরিবের জন্য আযাব।
সত্যান্বেষী
মন্তব্য
রোজার মাসে যে পরিমান 'ইফতার পার্টি' হয় সমাজের উঁচু মহলে, তাতে খাবার দাবারের আয়োজন করার পর যে পরিমান উচ্ছিষ্ট হয় সেই খাবারের এক পঞ্চমাংশও গোটা মাসে কোনো এক রিক্সাচালক পান কি না সন্দেহ করি। অথচ রোজার মাস সংযমের মাস! বেশ ভালোই সংযম হয় এই মাসে!
আরেক প্রহসন শুরু হয় যাকাত নিয়ে। ছোটবেলা থেকে এই প্রহসন দেখতে দেখতে অবস্থা কাহিল আমার। সেদিনও মায়ের সাথে হাউকাউ হলো এই নিয়ে। মা কয়, তোর কথা মতো যাকাত দিতে গেলে মানুষের বদ্দোয়ায় ডুবে যাওয়া লাগবে! অথচ যাকাতের সিস্টেমটাই আমার 'কথা মতো' হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সেটা না হয়ে যাকাত হয়ে ওঠে স্ট্যাটাস রক্ষার আর সবাইকে নুনচুনআমেরকষ দিয়ে বুঝ দেওয়ার একটা প্রক্রিয়া।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এমনও দেখেছি যে নির্দিষ্ট কিছু মানুষকে বছরের পর বছর ধরে যাকাত দেওয়া হয়। মানুষগুলাও নিশ্চয় প্রতিবছর যাকাত নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে।
সত্যান্বেষী
হায়রে রোজা!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ফেসবুকে এক বন্ধুর স্ট্যাটাস:
"সারাদিন পথে ক্ষুধার্ত মানুষ দেখি শুধু...সংযম দেখি না!"
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
শুধু রিকশাওয়ালারা নন, আরও কাহিনি আছে। যেসব মহিলারা বাড়ি বাড়ি গিয়া কাজ করেন, সকাল থেকে শুরু করে কয়েকটা বাসায় ঘুরে ঘুরে যাবতীয় ভারি কাজগুলো করে দেন, সাহায্য করেন ইফতারির ভুরিভোজ বানাইতেও, তাদের কাহিনিও একইরকম।
দেশ গ্রামে যারা মাঠে কাজ করেন বা বাড়ির কাজ কাজ করেন তাঁদেরও ওই একই রকম জিভ বের করা অবস্থা হয়। বিশ্রামের সময় নাই সুযোগ তো নাইই।
দোকানে বাজারে যাঁরা কাজ করেন, সকাল থেকে মাঝরাত অব্দি বা আরো বেশি, সারাদিন রোজা রেখে তাঁদের বিশ্রামের কোনো অবকাশ নাই।
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
শ্রমজিবী মানুষদের রোজা মাসে কাজ বরং বেশিই করতে হয় ঈদের বাড়তি খরচ পোষানোর জন্য।
সত্যান্বেষী
আমার দেখামতে রিকশাওয়ালারা সচরাচর রোজা রাখেন না। রাখা সম্ভব হয় না। তারা তো বছর জুড়েই অর্ধাহারী। তাই রোজার মাসেও তারা রোজকার রুটিনে পথের পাশের টং থেকে কলা-রুটি খেয়ে সংযমীদের ভারবহন করে চলেন।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আসল বাস্তবতাটা এই যে, রমজান মাসটা হচ্ছে পয়সাওয়ালাদের জন্য উত্তম খানা-পিনার উৎসব, গরিবের জন্য আযাব।
একমত।
আমরা যেভাবে রোযা পালন করি, তা এক অর্থে দরিদ্রদের ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিয়ে কৌতুকই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ব্যবসায়ীদের জন্য, ক্রেতা ঠকানোর মাস। কথা ছিল এই মাসে আত্মশুদ্ধি করবে, ১১ মাস সেটা চালু রাখবে। হয়েছে উল্টোটা, পুরাতন ঢাকায় থাকি। স্বজন ও বন্ধুদের অনেকেই তৈরী পোষাক ও জুতার কারখানাদার কিংবা পাইকার। ১১ মাস বসে থাকে এই মাসে দেদারসে ঠকিয়ে আয় করবার জন্য। চিনি ও তেলের সিন্ডিকেট ওয়ালাদের কথা কি বলবো। ব্যাংক এ নাকি কলমানির সুদের হার উপরে উঠে যায়। রমজানে একটা অর্থনৈতিক মন্থন হয়, যার অমৃত যায় - পিরামিডের চূড়ায়। বাংলাদেশে বর্তমানে রোজা আসলে যা হয়, তারচে' বরং না আসলে ভালো হতো।
রমজান মাসে ১% রিকসাওয়ালাও রোজা রাখে না বলে আমি জানি। কারন রোজা রেখে বড় জোড় ২/৩ টা ক্ষ্যাপ সে মারতে পারে - এর বেশী না। রমজান মাসে রিকসাওয়ালাদের গড় আয়ও অন্য মাস থেকে বেশী, আর ঢাকায় যদি ঈদ করতে পারে তাহলে তো শুধু চান রাতেই দুই দিনের রোজগার হয়ে যায়। তবে আপামর গরীবদের ইফতার এবং যাকাত বিষয়ক আপনার বক্তব্যর সাথে আমি একমত। যাকাত ব্যবস্থাটা ইসলামে রাখা হয়েছেই ধনী-গরীবের বৈষম্য কমাবার জন্য।
অনন্ত আত্মা
কথাটা কি আপনি কোন নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে বলছেন না কি শুধুই অনুমান করছেন? আমি নিজে অনেক রিকশাওয়ালাকে রোজা রাখতে দেখেছি।
সত্যান্বেষী
নতুন মন্তব্য করুন