১.
বুড়ো রাইনাস আজ বাঁজাবে। প্রায় এক শতাব্দীর স্বেচ্ছা-নির্বাসনের পর। সবুজ গ্রহের অধিবাসীরা আসছে বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে। তাঁদের সম্মানে বাঁজাবে রাইনাস। প্ল্যানেট ভরবিসে আজ তাই উৎসবের দিন।
নগরীর ধারে এক বাবা প্রাতঃভ্রমনে বের হলেন তার ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে।
- বাবা, বুড়ো রাইনাস নাকি সবুজ গ্রহের অতিথিদের বাঁজিয়ে শোনাবে?
- হ্যাঁ মা। আমরাও শুনতে পাব। খুব খুশির একটা দিন মা।
- রাইনাস ওটা কি বাঁজায় বাবা? ভায়োলিন?
- না মা। কেউ জানেনা বুড়ো কোন যন্ত্রে সুর তোলে। লোকে তো বলে বুড়োর নাকি বাদ্যযন্ত্র লাগে না। একটা পুরনো ভরবিস প্রবাদ আছে – “রাইনাস সুরের সাথে কথা বলে, সুর রাইনাসের সাথে”।
খুকি বুঝল কিংবা বুঝল না। মাথা নাড়ালো গম্ভীর ভাবে।
২.
সোনালী সকাল। আকাশে শুভ্র মেঘের দল। মন ভাল করা একটি দিন। একটু পরেই পৌঁছে যাবে সবুজ গ্রহের যান। অদম্য কৌতুহল নিয়ে অপেক্ষা করছে ভরবিসবাসী।
নগরীর সবচেয়ে উঁচু মিনার হতে বেঁজে উঠল ঘন্টা। বুড়ো রাইনাস ধীর পায়ে আগালো নগরীর খোলা চত্বরের দিকে; তার অদ্ভূত বাদ্যযন্ত্র নিয়ে। গুঞ্জন উঠল জনতার মাঝে। বুড়ো কি অতিথি আসার আগেই বাঁজানো শুরু করে দেবে নাকি?! হয়তো বা। রাইনাসকে বাঁধা দেয়া যায় না। বুড়ো চলে আপন খেয়ালে।
হঠাৎ এক কর্কশ কন্ঠ বলে উঠল-“আমি বাঁজাবো। প্ল্যানেট ভরবিস আর ভিন-গ্রহের বন্ধুদের জন্য!”। জনাকয়েকের কানে পৌঁছাল সে কন্ঠ। জনস্রোত দেখল রাইনাস ওঠাচ্ছে তাঁর অদ্ভূত বাদ্যযন্ত্র। থেমে গেল গুঞ্জন।
ক্ষীন একটা সুর ভেসে এল প্রথমে। ধীরে ধীরে মোলায়েম সে সুর ভারী হয়ে এল। সুরের মূর্ছণায় স্তব্দ হয়ে গেল প্ল্যানেট ভরবিস আর তার অধিবাসীরা। আহ্, সে কি সুর! মোলায়েম, সুখ-বিস্তারী, শান্তিময়। বুড়ো রাইনাস বাঁজাচ্ছে এক মনে, চোখ বুঁজে। আর ভরবিসের মৃদুমন্দ বাতাস সে সুর ভাসিয়ে নিয়ে চলছে এ নগরীর, এ গ্রহের দূরতম প্রান্তে। রাইনাসের সুর পৌঁছে যাচ্ছে ভরবিসের বাগান গুলোয়, দূরের পাহাড় চূঁড়োয়, হু-হু বাতাসের খোলা মাঠে, তীব্র-গন্ধী বুঁনোফুলের ঝোঁপে। রংধনু রঙের প্রজাপতিরা ডানা দোলালো সে সুরের তালে, আর ভরবিসের ফুলেরা ছড়ালো আকুল গন্ধ । শিশির ভেজা ঘাসের দল শীর্ষ নাচালো সুরের বাতাস গায়ে মেখে, কুঁড়িরা ফুটলো ফুল হয়ে। ছোট, বড়, মুখর, মুখচোরা, সোনালী, হলুদ, সাদা, কালো, নীল পাখির দল ডানা মেলে দিল সুর-বিস্তারী বাতাসে। আহ্! এমনটা কে কবে শুনেছে? সুর, সুরের ভরবিস, স্বর্গোদ্যাণ ভরবিস।
৩.
সুর যখন ভরবিসবাসীদের নিয়ে যাচ্ছিল অন্য ভুবনে, তখন ভরবিস প্যারিমিটার প্রবেশ করল এক জোড়া ধাতব স্পেস্শিপ। সবুজ গ্রহের অতিথিরা দেরী না করে পাঠিয়ে দিল শুভেচ্ছার বার্তা। অপরিক্ষীত সিক্সথ্ জেনারেশন নিউক্লিয়ার ওয়ারহ্যাড নিয়ে আছড়ে পড়লো মিসাইল গুলো।
হারিয়ে গেল রাইনাসের সুর। চিরতরে।
-------------------
আসাদ-বাবু
ই-মেইলঃ
মন্তব্য
গল্পটা ভালো লেগেছে।
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
ধন্যবাদ
গল্প ভাল্লাগ্লো।
কিছু বানান শুধরে নিতে পারেন:
বাঁজাবে>বাজাবে (বাজানোর নানা ফর্মেই অতিরিক্ত চন্দ্রবিন্দু লাগিয়েছেন দেখলাম)
রাইনাসকে বাঁধা দেয়া যায় না > রাইনাসকে বাধা দেয়া যায় না
ক্ষীন একটা সুর > ক্ষীণ একটা সুর
সুরের মূর্ছণায় স্তব্দ হয়ে গেল > সুরের মূর্ছনায় স্তব্ধ হয়ে গেল
আহ্, সে কি সুর! > আহ্, সে কী সুর!
দূরের পাহাড় চূঁড়োয় > দূরের পাহাড় চূড়োয়
তীব্র-গন্ধী বুঁনোফুলের ঝোঁপে > তীব্র-গন্ধী বুনোফুলের ঝোপে
স্বর্গোদ্যাণ ভরবিস > স্বর্গোদ্যান ভরবিস
প্যারিমিটার প্রবেশ করল > পেরিমিটার প্রবেশ করল
এক জোড়া ধাতব স্পেস্শিপ > এক জোড়া ধাতব স্পেসশিপ (এই স ও শ-এর যুক্তাক্ষরটি অপ্রচলিত ও উচ্চারণ দুরূহ)
অপরিক্ষীত সিক্সথ্ জেনারেশন নিউক্লিয়ার ওয়ারহ্যাড > অপরীক্ষিত সিক্সথ্ জেনারেশন নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড
আরো লিখুন।
ধন্যবাদ।
দেখা যাচ্ছে আমি চন্দ্রবিন্দু রোগে আক্রান্ত! অনেকদিন বাংলা না লেখার ফল হয়তো ( ভয়ানক দূর্বল অজুহাত ) । বোঝা যাচ্ছে বানানে আমার দূর্বলতা রীতিমত বিস্ময়কর। স্পেসশিপ, অপরীক্ষিত, বাধা এই ধরনের বানানে কিভাবে ভুল করলাম আমি নিজেই ঠিক বুঝলাম না।
ভুল বানান গুলো দেখিয়ে দেয়ার জন্য আবারো ধন্যবাদ।
গোড়ায় বানান ভুল হবেই, এক যদি না আপনি বাংলার টিচার হন। ও নিয়ে ভাববেন না, লিখে যান। টাইপো আটকাতে চাইলে পোস্ট করার আগে প্রিভিউ মোডে একবার দেখে নিতে পারেন।
"আহ্, সে কি সুর! > আহ্, সে কী সুর!"
কেন?
কি ও কী'র পার্থক্যটা এই রকম:
তুমি কি কেবলই ছবি, আর
কী গাব আমি কী শুনাব।
আপনার উদাহরণটা ইংরিজি করে বলি:
আহ্, সে কি সুর! Is that a melody?
আহ্, সে কী সুর! What a melody!
বেছে নিন এবার।
ভাই বাঁজাবে/বাঁজায়/বাঁজে/বাঁজবে কী জিনিস? শুদ্ধ শব্দটা বাজানো/বাজায়/বাজে/বাজবে/বাজাবে।
গল্পের প্লটটা অসম্পূর্ণ মনে হল। রাইনাসের সুরের সাথে ভিনগ্রহবাসীদের আক্রমণের কোন যোগসূত্র আছে কি না গল্পে সেটাও পরিষ্কার হল না। বলতে চাইছি কার্যকারণ ও
ফলাফল পরিস্কার বুঝতে পারিনি।
অমার্জনীয় বানান ভুল গুলোর জন্য দুঃখিত। রীতিমত চন্দ্রবিন্দু রোগ। আমি নিজেই কিছুটা হতবাক। ভাই, কেম্নে লিখলাম?! এইসব বানান কই পাইলাম?!
হ্যাঁ। প্লট অসম্পূর্ণ মনে হতে পারে। পাঠক নিজেই অনেক কিছু ভেবে নিক ।
শেষটাতে তো চমকে গেলাম। ব্যাপারটা কি বলুন তো ?
ব্যাপার অনেক কিছুই হতে পারে ।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
এটা আগে কোথায় পড়েছি বলুনতো?
কাজী মামুন
গুরুতর অভিযোগ!
ভাই, ভুল-ভাল যা লিখলাম -- সবই মৌলিক। দৈবাৎ মিল খুঁজে পাওয়া টা অবশ্য খুব অস্বাভাবিক না। দুনিয়া জুড়ে অসংখ্য লেখক, অসংখ্য লেখা। কারো কারো চিন্তার ধরনটাও হয়তো খুব কাছাকাছি।
মনে করতে পারলে জানাবেন। বেশ কৌতুহল অনুভব করছি। ধন্যবাদ।
হুম কাকতালীয় হতে পারে, তবে ঠিক এটাই না হলেও এ ধরনের একটা লেখা আমি কোথাও পড়েছি।
আচ্ছা হুমায়ুন আহমেদ এর সর্বশেষ সায়েন্স ফিকশান টার নাম কি কারো মনে আছে?
কাজী মামুন
নতুন মন্তব্য করুন