“ঘাতক ট্রাক/বাস রাজধানীর ‘অমুক’ জায়গায় কেড়ে নিল একটি তাজা প্রান!”-শিরনামটা আমাদের পত্রিকায় প্রায় নিয়মিত।আমরা আশাহত হই;আমাদের বুক ভেঙ্গে যায়।বেপরোয়া গাড়ী চালকদের হাতে খুন হচ্ছে ভিখারী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পর্যন্ত! অত্যন্ত মর্মস্পর্শী খবর বের হয় পত্রিকার পাতায়!আমরা ঘৃণায় মুখ বিকৃত করে ফেলি;খুনী ড্রাইভারের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার হয়ে উঠে আমাদের পরম দায়িত্ব!
কিন্তু কখন ও কি আমরা ভেবে দেখেছি যে লোকটা গাড়ীর চাকায় পিষ্ট হল সে কি করছিল তখন রাস্তায়?
ঢাকা শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ী চালান যে কতটা অসম্ভব তা আমার পাঠকদের মাঝে একজন ও যদি নিজে ড্রাইভ করে থাকেন তো অবশ্যই তা স্বীকার করবেন।(আমি যতটুকু ঢাকা শহর চিনি বনানী ঢাকা গেইট থেকে এয়ারপোর্ট এই রাস্তাটুকু ছাড়া ঢাকায় বেপরোয়া গাড়ী চালানো প্রায় অসম্ভব!)তারপর ও নিত্যই ঘটছে দূর্ঘটনা,নিত্যই মরছে মানুষ।এর পুরোটা দায়ভারই কি ঘাতক ড্রাইভারের??
একবার চোখ বন্ধ করে স্মৃতি হাতড়ে দেখেনতো –“গত দশ বছরে কয়টা গাড়ী ফুটপাতে উঠে অথবা ওভার ব্রীজ এ পাখি হয়ে উড়ে ক’জন মানুষ খুন করেছে?”
আমরা ভিষন ঔদাত্ত নিয়ে রাস্তা পার হই;ভাবটা যেন রাস্তাটা আমাদের পৈত্রিক! হাত তুলে দৌড় দেই রাস্তার মাঝ বরাবর!ওভার ব্রীজ এর নিচ দিয়ে গ্রীল টপকে রাস্তা পারাপার আমাদের শহরের নিত্য দৃশ্য!
র্দুঘটনা যতটা ঘটে আমরা ঘটাই তারচেয়ে ঢ়ের বেশী!অবশ্যই ত্রুটিপূর্ন গাড়ী অথবা বেপরোয়া ড্রাইভারে জন্যও র্দুঘটনা ঘটছে, তারপর ও সব র্দুঘটনা চালকের দোষে হয়না এ আমি হলফ করে বলতে পারি!একজন গাড়ীর চালক নিতান্তই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ কোন পেশাদার খুনী নয়!৪৫ কিঃমিঃ গতির কোন গাড়ীর সামনে যদি আমরা ঝুপ করে উদয় হই তো চালক কতটা নিরুপায় চালক মাত্রই তা মেনে নিবেন।তারপর ও আজ পর্যন্ত কোনদিন কোন চালক আমাদের সহানুভূতি পায়নি।
র্দুঘটনায় আমরা শুধু একামরি না সাথে নিয়ে মরি আমাদের পরিবার… চালকের পরিবার..বাস মালিকের পরিবার!
আমার লেখা এ পর্যন্ত পড়ে দয়াকরে কেউ ভেবে বসবেন না যে আমি ঘাতক ড্রাইভারদের সাফাই গাইছি!
আমার লেখার মূল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে আমরা যারা বেঘোরে মরার জন্য ছুটে যাচ্ছি রাস্তায় তারা যেনো একেবারেই প্রাথমিক কিছু আইন মেনে চলি।
আমরা যেন সবসময় মাথায় রাখি রাস্তাটা গাড়ীর জন্য অতিঅবশ্যই পথচারীর জন্য নয়।আমাদের যত তাড়া থাক,যত কষ্টই হউকনা কেন আমরা ওভার ব্রীজ ব্যবহার করি।জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হই।
কোথায়ও যদি অগত্যা রাস্তাপার হতেই হয় তো অত্যন্ত সময় নিয়ে ,দেখে শুনে আমরা রাস্তা পার হই।
একবার ভাবুনতো আমরা আইন মেনে চলছি সবাই তো ঘাতক ড্রাইভার পথচারী কোথায় পাবে চাকায় পিষ্ট করার??
পরিশিষ্টি:আজ হঠাৎ করে অষ্ট্রেলিয়ান রোড অথরিটির র্দুঘটনা এড়ানোর সচেতনতা মূলক বিলবোর্ড পড়তে গিয়ে থমকে দাড়ালাম।চারটা উপদেশের মধ্যে একটা হল এরকম:-
“তুমি কখন ও ভাববেনা চালক তোমাকে দেখতে পেয়েছে”
ঢাকা শহরে কুড়ি বছরের রাস্তাপারাপার এবং পাঁচ বছরের গাড়ী চালানোর অভিঙ্গতা নিয়ে আমি হলপ করে বলতে পারি, প্রত্যেকটা পথচারীই ভাবেন চালক তাকে দেখতে পেয়েছে অথবা পাবে!!
রফিক
সিডনী
৯/৯/১০
মন্তব্য
ভাই রফিক, আপনার লেখার উদ্দেশ্যটা ভাল, কিন্তু বানানপ্রমাদের জন্য পড়তে কষ্টকর। ওদিকে একটু যত্ন নেবেন দয়া করে।
ভাল লেখা।
আমাদের লেখা/চিন্তাভাবনাগুলো সবসময়ই রিঅ্যাকশনারী হয়, প্রোঅ্যাকটিভ নয়। এ ধরনের লেখা নরম্যালী কেউ দুর্ঘটনায় মারা গেলে প্রতিক্রিয়া হিসেবে পাওয়া যায়। ঘাড়ের উপর বিপদ এসে না পড়লে আমাওরা এ ব্যাপারগুলো নিয়ে খুব একটা চিন্তা করি না
নতুন মন্তব্য করুন