মনমাঝি
(১ম পর্ব)
One Moment in Annihilation’s Waste,
One Moment, of the Well of Life to taste –
The Stars are setting, and the Caravan
Draws to the Dawn of Nothing – Oh make haste !
-- Omar Khayyam*
(১)
প্রাচীন মিশরের মরুভূমিতে পিঠ ঠেকিয়ে মাথার উপর প্রাগৈতিহাসিক তারার মেলায় হারিয়ে গেছি। এমন সময় আমাকে ভাসিয়ে চারিদিকে ঝমঝমিয়ে নামলো এক আদিম নিরবতা আর শুন্যতার মহাসমুদ্র। স্থান-কাল নিয়ে আমার পরীক্ষাটা এতক্ষনে বোধহয় একটা সন্ধিক্ষনে পৌঁছে গেল।
বাহারিয়ানামে পশ্চিম মরুভূমির এক মরুদ্যান থেকে বেরিয়ে প্রায় সারাদিন মরুভুমির বুক চিরে ড্রাইভ শেষে নিরুদ্দেশের মাঝখানে কোন এক ‘উদ্দেশে’ এসে পৌঁছেছি মনে হয়। রাতের মত তাঁবু ফেললাম এমন এক জায়গায় যাকে বলা যেতে পারে – প্রাকৃতিক ভাষ্কর্যের এক অপ্রাকৃতিক প্রদর্শণীশালা (এখানে দেখুন)। এখানকার অপার্থিব নির্জনতার - নির্জনতা আর অপার্থিবতা দুটোই যেন আরো তীব্র করে তুলেছে বালি ফুড়ে বেরুনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ১৫-২০ ফুট উঁচু অদ্ভুত কিছু চুনাপাথরের মূর্তি। মানুষের বানানো কিছু নয়, অথচ দেখতে গায়ে কাঁটা দেয়ার মত নানা রকম জীবন্ত প্রাণী আর ঘটনার ভাস্কর্যের মত! এখানে আছে মুর্গি ও ডিম, আছে ঘোড়ামুখো, আছে আইসক্রিম, আছে পারমানবিক মাশরুম মেঘ – যাকে আমাদের একজন নাম দিয়েছে ‘হিরোশিমা’, আছে এমন আরো অনেককিছু। এ যেন বিশাল জায়গা জুড়ে কোন এক ভিনগ্রহের ভৌতিক পরিত্যাক্ত ওপেন-এয়ার গ্যালারি।
হিরোশিমা
আইসক্রিম
মাশরুম
জায়গাটা কায়রো থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিন-পশ্চিমে, আর বাহারিয়া থেকে বোধহয় ১৫০-২০০ কিলো – মিশরের ‘পশ্চিম মরুভূমিতে’ (‘লিবীয় মরুভূমি’ নামেও পরিচিত) । ‘পশ্চিম মরুভূমি’ বৃহত্তর সাহারা মরুভূমির ইজিপশীয় একটা অংশমাত্র – ঐটুকুই আয়তনে ৭ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। তো, বেশির ভাগ পথই মরুপথ ধরেই এসেছি, যার শুরু বাহারিয়ারও আরো ২০০ কিলোমিটার পেছনে আল-ফাইয়ুম থেকে।
কায়রো থেকে সকাল সকাল রওনা দিয়ে, আল-ফাইয়ুম হয়ে আমরা দুপুরের আগে আগেই বাহারিয়া পৌঁছে একটা মোটেলে চেক-ইন করি। ছয় জনের একটা গ্রুপ – সবাই বাংলাদেশি। দুজন বাদে বাকিদের সাথে ইজিপ্টেই পরিচয়। সামান্য বিশ্রাম নিয়ে তাড়াতাড়ি লাঞ্চ সেরে নিতে নিতেই আমাদের পূর্ব-নির্ধারিত দুই বেদুঈন গাইড এসে হাজির, তাদের মরুযাত্রার উপযোগী খাবার-দাবার আর মালপত্রে ঠাসা ফোর-হুইলার নিয়ে। আমরা ল্যান্ডক্রুজারে উঠে পড়লাম তাড়াতাড়ি, দারুন এক রোমাঞ্চকর অভিযানের প্রত্যাশায়।
এই ঘটনার পর বছর পেরিয়ে গেছে, স্মৃতির পাতাতেও ধুলো জমেছে কিছুটা। ফলে এর পরের কাহিনি ঐ ধুলো জমা টুকরো স্মৃতি থেকেই লেখা। চোখে দেখার বিবরনের থেকে মনের দেখার অভিব্যক্তিই এখানে প্রাধান্য পাবে।
আমাদের এই মরুযাত্রার ইংরেজি নাম ‘ডেজার্ট সাফারি’। এই সেই ডেজার্ট বা ‘মরুভূমি’, যার সম্পর্কে এত পড়েছি – কত ‘ওয়েস্টার্ন’, কত আরব্য-পারস্য উপন্যাস, কত উপকথা-রূপকথা-ইতিকথা, কতকিছু – কিন্তু জীবনে এই প্রথম নিজের চোখে দেখছি। চোখে-মুখে-চুলে-ত্বকে সর্বাঙ্গে অনুভব করছি। কেমন যেন লাগছে। জীবনের রঙ অন্য রকম লাগছে! তার উপর এসেছি এক শ্বাসরূদ্ধকর জনঘনজলবৃষ্টিবন্যাশাসিত, সবুজ পিচ্চি একটা দেশ থেকে – যেখানে এখন আর তিল ধারনের ঠাঁই নেই। মরুভূমির এই উষর-ধূসর-অপার শুন্যতা আমার অস্তিত্বের ভিত নাড়িয়ে দিল। মরুরাজ্য আমার মত এক নবাগতকে এমন অভ্যর্থনা জানাবে তা আগে ভাবতেই পারিনি।
উটের পিঠে নয়, আমাদের যাত্রাটা ছিল একটা আধুনিক ফোর-হুইল-ড্রাইভেই। কিন্তু ঝাঁকি খেতে খেতে গাড়িসুদ্ধ প্লেনের মত প্রায় শুন্যে উড়াল দেয়া, ঝড়ের সাগরে খোলামকুচির মত হেলে পড়া – নাচতে থাকা, বিশাল বালিয়াড়ির মাথায় ওঠার জন্য শক্তি সঞ্চয় করে বুনো বাইসনের মতো তেড়ে যাওয়া, আবার সেখান থেকে বা অন্য কোন উচ্চতা থেকে মরুভূমির যৌনাবেদনময় অচিন পিচ্ছিল বক্রতা ঘেষে দুর্দমনীয় গতিতে ঝাপ দেয়া –
কোমল-মধুর মরুবক্রতায় প্রলোভনের শিহরন...
ভলাপচুয়াস কার্ভস্
-- আর এইসব কিছুর সাথে সাথে পাকস্থলিতে খালি-খালি ভাব, পেটের পেশীতে সঙ্কোচন আর সারাদেহে এ্যাড্রেনালিনের টাইফুন – এক কথায় অপুর্ব। রোমহর্ষক। কিন্তু সভ্যতার সাথে সব সম্পর্ক চ্ছিন্ন করে এই শত-সহস্র মাইলব্যাপী উষর -অপার শুন্যতার প্রায় অনন্ত বিস্তৃতির মধ্যে হারিয়ে যাওয়া, এক অচেতন-অনন্ত-অদম্য নাস্তির বুক চিরে এক সচেতন অস্তির অবিরাম নিঃসঙ্গ সংগ্রাম – দুর্বোধ্যভাবে শিরশিরিয়ে উঠে কল্পনার স্নায়ুতন্ত্রে, নাড়া দিয়ে যায় আমার মত ‘গিজগিজ’ জগতের প্রাণীর অস্তিত্বের মর্মমূলে।
নিজেকে মনে হচ্ছিল অচেনা ডাঙায় আছড়ে পড়া মাছের মত – অথবা অবরুদ্ধ প্রেশার-কুকারের ভাল্ব থেকে উদ্দাম গতিতে বেরিয়ে এসে এক ধাক্কায় অদৃশ্য বাতাসে বিলীন হয়ে যাওয়া বাষ্পের মত। ঠান্ডা বাতাসের সাথে হঠাৎ ধাক্কা খেয়ে ঐ অকস্মাৎ মুক্তিপ্রাপ্ত উদ্দাম তপ্ত বাষ্পের মিলিয়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে ঠিক কি প্রতিক্রিয়া হতো, যদি তার একটা মন থাকতো ? নিশ্চয়ই আমার মত! এ এক অনির্বচনীয়, দেহাতীত অনুভূতি।
ভেবে দেখলে, এই ফানাপ্রাপ্ত বাষ্পের রূপক মনে হয় একাধিক ভাবে প্রযোজ্য। আমিও তার মতই ছিটকে বেরিয়ে পড়েছি। আমার হোমটাউন ঢাকাকে হাজার হাজার মাইল পেছনে ফেলে দেশকালের মনোদৈহিক ব্যাপ্তি ভেদ করে কোন্ অধরার উদ্দেশে অন্ধবেগে ছুটে চলেছি এখনো জানিনা। তবে আপাততঃ এখন ইজিপ্টে। পুরো দেশটাই কিছুদিন ধরে ঘেটে বেড়াচ্ছি – উত্তরে নীলনদের মোহনা বা আলেকজান্দ্রিয়া থেকে দক্ষিনে আবু সিম্বেল, পূবে সিনাই থেকে বর্তমানে পশ্চিমে পশ্চিম (লিবিয়ান) মরুভূমি পর্যন্ত।
এয়ারপোর্ট, ট্রানজিট, মেঘ-নদী-সাগর-পর্বত, কায়রোর হিমবাহের মত ধেয়ে আসা ট্রাফিক আর তার ঐতিহাসিক স্থানগুলি, গাজী সালাউদ্দিনের দুর্গ, মুকাদ্দিম; শহরের মধ্যে নীলনদের ওপর প্রেমিকদের সেতু ‘কুবরি গামা’য় বহু রাত পর্যন্ত সুন্দরী ললনাদের স্রোত বা তার
নিচে নদীবক্ষে ভেসে বেড়ানো রেস্টুরেন্ট ও বেলি-ড্যান্সার সমৃদ্ধ বিনোদনতরী, নগরীর নতুন অংশে চৌকষ পশ্চিমা পোশাক পরিহিত নারীপুরুষের স্রোত বা পুরনো অংশের ঐতিহ্যবাহী আবায়া-আবৃত দরিদ্র মানুষগুলি্র পায়চারি, অত্যাধুনিক অপেরা-মিউজিয়াম-গ্যালারি, গলির ভিতরের শীসা আর কালো-কফির দোকানগুলি বা তার ভেতরে বুড়ো আর নিষ্কর্মাদের অনন্তকালকে পকেটবন্দী করে ব্যাকগ্যামন খেলে যাওয়া; ভূমধ্যসাগর-পারের আলেকজান্দ্রিয়া নগরীর রোমান্টিক-করুন ঐতিহাসিকতা, সিনাই ও লোহিত সাগরের ধর্মীয় আকর্ষন, গিজাতে পিরামিড বা আবু সিম্বেলে পাথুরে পর্বতের খাড়া গা ঘেষে ভিতরে বিশাল
মন্দির আর বাইরে সেই গা খুদে তৈরি দৈত্যাকৃতি মূর্তির সারির রূপধারন করে অহমের অভ্রভেদী মিনার; কর্নক মন্দিরের রাজসিকতা বা লু্কজরের বাদশাহি উপত্যকার মাটির নিচে ফুসতে থাকা অমরত্ব ও চিরস্থায়ীত্বের প্রাচীন গোপন বাসনা – এ সব কিছুই অন্ধকার মহাশুন্যে গ্রহ-নক্ষত্রের আলেয়ার ফুটকির মতো আমার পাশ ঘেষে ছুটে গেছে। আমি তাদের বিয়ারিং পাইনি এই এতদিন পর্যন্ত।
শুভ্র মরুতে সাঁঝের মায়া
আইসক্রিম
(২)
For some we loved, the lovliest and the best
That from his Vintage rolling Time has prest,
Have drunk their Cup a Round or two before,
And one by one crept silently to rest.
কি যেন বলছিলাম? ও হ্যাঁ, পশ্চিম মরুভূমির বুক চিরে ছুটে চলেছি। গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে বালু আর শুন্যতার সাগরের দিকে অপলক তাকিয়ে আছি। সেই অসীম আদিম শুন্যতা – যার ভেতর দিয়ে নিশ্চয়ই অনেক ইতিহাস, অনেক সভ্যতা, অনেক দিগ্বিজয়ী বীর ও তাদের সৈন্যবাহিনী রথ হাঁকিয়ে গেছে যুগে যুগে তাকে জয়ের বাসনায়। কিন্তু না, সেই শুন্যতা - সেই শুন্যতাই রয়ে গেছে। বেমালুম হজম করে ফেলেছে সবাইকে। সবকিছুকে। নিঃশেষে। সেই সর্বব্যাপী শুন্যতার প্রায় স্পর্শগ্রাহ্য অমোঘতা, অনিবার্যতা, ঠিক জানালার বাইরেই যেন ভয়ঙ্কর নিরবতায় হাসতে হাসতে আমাদের সাথে সাথে ছুটে চলেছে। দেখতে দেখতে নিজেকে ভীষন ক্ষুদ্র আর অপ্রাসঙ্গিক মনে হল, আবার আশ্চর্যজনকভাবে এক অদ্ভুত শান্তি আর মেনে নেওয়ার মনোভাবে ছেয়ে গেল মন একই সাথে। ল্যান্ডক্রুজারের ক্ষুদ্র, উষ্ণ, নিরাপদ গর্ভে বসে থাকতে থাকতে মনে হচ্ছিল আমরা যেন শুন্যতা থেকে, শুন্যতার মধ্য দিয়ে, শুন্যতার পানেই ছুটে চলেছি অবিরাম - মধ্যখানে অর্থময়তা আর অস্তিত্বের ক্ষনিকের উষ্ণ বুদ্বুদ তৈরি করার সংগ্রাম করতে করতে। এ যেন বৃহত্তর পরিসরে মানুষের অভিযাত্রারই এক সংক্ষিপ্তসার। তবে আগে হোক - পরে হোক, বুদ্বুদ্গুলি শেষমেশ ফেটেই যায়।
উষর মরুভূমিতে শুন্যতার অপার বিস্তৃতির বুক চিরে ছুটতে ছুটতে সব অঙ্কই যেন আস্তে আস্তে মিলতে শুরু করলো - যতই আমি শুন্যতার এই মহাপরিকল্পনায় – অস্তিনাস্তির এই উদ্ভট দ্বৈরথে - নিজের অনিবার্য ভূমিকার সাথে শান্তিস্থাপন করতে থাকলাম।
...........................................
রাঙাসোনা
(২য় পর্ব)
Come, fill the Cup, and in the fire of Spring
Your Winter-garment of Repentance fling:
The Bird of Time has but a little way
To flutter—and the Bird is on the Wing.
(৩)
মিশরের মরুভূমি ঈশ্বররূপী-রাজাদের পর্বতসম মূর্তি...মন্দির...আর...পিরামিডের রূপ ধারন করা অহমের অভ্রভেদী বিজ্ঞাপনে আকীর্ণ হতে পারে - কিন্তু আমার কাছে মনে হতে লাগলো, চতুর্দিক থেকে নিত্য-প্রসারমান অপরাজেয় করাল শুন্যতার মুখে এই বিজ্ঞাপন তাদের স্রষ্টাদের নিজেদের অনিবার্য অসহায়ত্ব ও তুচ্ছতার-অনুভূতির বিরূদ্ধেই একরকম নিস্ফল করুন বিদ্রোহ ও আস্ফালনমাত্র। হয়তো, শুন্যতার মহাফাঁদে আটকা পড়া চেতনার স্থায়িত্ব, প্রাসঙ্গিকতা আর অর্থময়তার আকাঙ্খায় আর্তচিৎকার। ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে! হয়তোবা অনিত্যতার সমস্যা সমাধানে এ এক মরিয়া প্রয়াস।
কিন্তু অনিত্যতার সমস্যা সমাধানহীনই থেকে যায়। তাঁদের যাপিত জীবনের অনুভবযোগ্য বাস্তবতা ও প্রানময়তা, তাঁদের রক্তমাংসের মনুষ্যত্ব, তাঁদের একান্ত প্রেম-ভালোবাসা-দুঃখ-কষ্ট-আবেগ-অনুভূতি এবং যা কিছু অব্যবহিত জীবনে তাঁদের কাছে সত্যি প্রানতপ্ত ছিল – সবকিছুই মরুভূমির নিসীম শুন্যতায় চিরতরে বিলীন হয়ে গেছে। যা পড়ে আছে তা কেবলই পোড়া কাঠকয়লার তৈরি বিকট-বিকৃত কালো কঙ্কালের মতো দেখতে নগ্ন মমি মাত্র। তাও কাঙ্খিত স্বর্গে নয়, বরং – হাজার হাজার বছর পরে চুইংগাম চিবুনো – ক্যামেরা ফুটানো – চপ্পল-ফটফটানো একদল অপ্রাসঙ্গিকতার মহাক্যারিকেচারদের অবাঞ্ছিত কিলবিলানো কৌতুহলের পিচ্ছিল দৃষ্টির নিচে – মরুভূমির মাঝখানে, মিউজিয়ামের শোকেসে; অথবা কোন ডাইসেক্টিং টেবিলের উপরে ‘প্রত্নতাত্ত্বিক’ নামক নতুন এক প্রজাতির স্থায়িত্ব-সন্ধানীদের অধিকারহীন অশ্লীল স্ক্যালপেলের তলায়।
আমার মনে হয় না ফারাওরা নিজেদের জন্য এমন ভবিষ্যৎ চেয়েছিলেন।
ব্ল্যাক ডেজার্ট
(৪)
What, without asking, hither hurried Whence ?
And, without asking, Whither hurried hence !
Ah, contrite Heav’n endowed us with the Vine
To drug the memory of that insolence !
বাহারিয়া থেকে বেরুনোর পর*চলতে চলতে দুলতে দুলতে ঝাপাতে ঝাপাতে উড়তে উড়তে চলার পথে আমরা ‘ব্ল্যাক ডেজার্ট’ নামে বৃহত্তর মরুরই একটা অংশে এসে পৌঁছুলাম, আর তার কিছু পরে ‘ক্রিস্টাল মাউন্টেইন’ নামে আরেকটি জায়গায়। ‘ব্ল্যাক ডেজার্ট’ নামে কালো হলেও এবং কিছু কিছু জায়গায় একদম কালো হলেও, মোটের ওপর এর নিচের অদ্ভুত কমলাটে রঙের মাটি দেখা যায়। যদিও তার দূরবর্তী প্রতিবেশী ‘হোয়াইট ডেজার্ট’কে দেখায় প্রায় মেরু-অঞ্চলের মতই স্বেতশুভ্র তার দিগন্ত-বিস্তৃত গা-ছমছমে অলৌকিক শুভ্রশুন্যতাসহ । ব্ল্যাক ডেজার্টের মহিমা তার প্রাগৈতিহাসিক ধারালো-চিকচিকে কৃষ্ণসুন্দরী আগ্নেয়-শিলার আচ্ছাদনে। ব্ল্যাক ডেজার্ট ছাড়িয়ে আমরা ‘ক্রিস্টাল মাউন্টেনের’ কাছে কিছুক্ষনের জন্য থামলাম। নামে ‘মাউন্টেইন’ হলেও – কামে বড়সড় একটা ঢিবি আর অতিপিচ্চি একটা টিলার মাঝামাঝি কিছু। নামের শেষাংশের ক্ষেত্রে নামের দৌড় নামমাত্র হলেও, প্রথমাংশটা ঠিকই আছে। এর খ্যাতি এর গঠনে অদ্ভুত সব ব্যারাইট বা ক্যালসাইট কৃস্টালের (মতান্তরে কোয়ার্জ) কারনে। এটা নাকি প্রাগৈতিহাসিক কোন হাইড্রোথার্মাল অঘটনের কারনে সৃষ্ট একটা ‘সাবভল্কানিক ভল্ট’। কিছু কিছু জায়গা দেখলে সুপারম্যান ছবির সুপারম্যানের শক্তির আধার সেই রহস্যময় ক্রিস্টাল-গুহার কথা মনে পড়ে যায়। মরুভূমির মাঝখানে একটা টিলার মধ্যে ক্রিস্টালগুলি রোদের তেরছা আলোয় অদ্ভুতভাবে জ্বলজ্বল করছে।
স্ফটিক-পর্বত থেকে নেমে আমি কাছেই আরেকটা ছোট টিলায় উঠে পড়লাম।*এটা আবার ব্ল্যাক ডেজার্টের মত চকচকে ভীষন ধারালো কৃষ্ণসুন্দরী ব্যাসাল্টে ঢাকা। উপর থেকে চারিদিকে তাকিয়ে আমি তো স্তম্ভিত। যতদুর চোখ যায় এ যেন বাকরুদ্ধকারী হৃৎপিন্ড-শিরশিরানো, অভূতপূর্ব, অচিন্তপূর্ব এক ল্যান্ডস্কেপ – যেন বহু-সহস্র আলোকবর্ষ দূরে স্টার ওয়ার্স মুভির এম্পায়ারের কোন এক দুরবর্তী প্রানহীন অচিন গ্রহ। জীবনে এই প্রথম বুঝলাম ‘এগজটিক’ আসলে কাকে বলে!
কৃষ্ণ ও শুভ্র মরুতে বিরতির পর আমরা সেই প্রাকৃতিক ভাষ্কর্যের অপ্রাকৃতিক প্রদর্শণীশালায় এসে পৌঁছুলাম যার কথা শুরুতেই বলেছি। আগেই যেমন বলেছি, এটা এক অলৌকিক আবহে আচ্ছন্ন অপার্থিব সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অপূর্ব অপার্থিব জান্তব মূর্তিগুলি শুন্যতার অপার্থিব পার্থিবতাকে যেন আরো তীব্র করে তুলেছে। আমার এক অভিভূত সহযাত্রীর ভাষায় এই সেই হারিয়ে যাওয়া গার্ডেন অফ ইডেন। আমারও মনে হলো - এই সেই ঈশ্বরবিহীন ঈশ্বরের বাগান – অস্তিত্বের ইস্থেটিক প্যারডি।
এখানে আমরা কিছুক্ষনের জন্য যাত্রাবিরতি করলাম। সবাই ঘুরে ঘুরে এমন বিস্ফারিতনেত্রে দেখছিল যেন আদেখলা এ্যাস্ট্রোনট বা মহাকাশ পাড়ি দেয়া একদল গ্রহচারী শিল্পবোদ্ধার দল। যাত্রাবিরতি শেষে প্রদর্শণীশালা ছাড়িয়ে এরপর আমরা মরুভূমির আরো গভীরে প্রবেশ করলাম। ঘুরতে ঘুরতে আস্তে আস্তে রাত ঘনিয়ে আসলো। সময় হলো ফেরার। আমাদের পরিকল্পনা ছিল অপ্রাকৃতিক প্রদর্শণীশালাটায় ফিরে গিয়ে সেখানেই রাতের মতো তাঁবু ফেলব।
ফেরার পথে দিশাহীন মরুপথে হেডলাইটের নিয়ত-বেদিশা সরুরেখাটুকু বাদে অন্তহীন আঁধারের সাগরে একসময় সমস্ত দিকজ্ঞান-সময়জ্ঞান লুপ্ত হলো। প্রথম দিকে মনে হচ্ছিল, বাহ এভাবেই যদি চলতো সারাজীবন, বেশ মজাই হতো। কিন্তু না, শিরদাঁড়া বেয়ে একসময় শিরশির করে একটা হিমশীতল স্রোত আস্তে আস্তে নামতে শুরু করলো। অন্যদের দিকে তাকিয়ে দেখলাম – তাদের মুখচোখেও কেমন একটা শুকনো ভাব। একটা লুকানো উদ্বেগ। আসলে আমাদের বেদুঈন ড্রাইভারের অন্ধকারে মধ্যে অনবরত বাঁক নেয়া, তার সঙ্গির সাথে উত্তেজিত কিন্তু চাপা স্বরে আরবিতে দ্রুত কথাবার্তা এবং তাদের মধ্যে অনুমিত টেনশন ও ইনডিসিশন – এইসব দেখে মনে হচ্ছিল তারা বোধহয় মরুভূমির মধ্যে পথ হারিয়ে ফেলেছে। এইটা যদি সত্যি হয়, তাহলে সত্যি সত্যি সত্যি খবর আছে! আমি হেডলাইটের আলোয় সামনে কোন ট্র্যাক, মার্কার, চিহ্ন-ফিহ্ন কিছুই দেখছিলাম না। চারিদিকে নিকষ দুর্ভেদ্য অন্ধকার। জানিনা নিকটতম জনবসতি কতদুরে। মরুভূমির বালু ফুড়ে কোন এ্যান্টেনা বেরোয়নি কিছু পাথর ছাড়া, কোন মোবাইল নেটওয়ার্ক কাভারেজও নেই এখানে। এই নিসীম আঁধার ও শুন্যতার সাগরে আমরা দুনিয়া থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন, একাকী, নিঃসঙ্গ। কোন ব্যাক-আপ সাপোর্ট ছাড়া একটিমাত্র ফোর-হুইলার সম্বল করে আমাদের যাত্রাটা গোড়াতেই হয়তো একটু ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, কিন্তু ভরসা ছিল কোন ঝামেলা হলে বেদুঈনের মরুজ্ঞান ও দক্ষতাই আমাদের সে যাত্রা পার করে দিবে। কিন্তু এখন যদি কোন কারনে আমাদের ফোর-হুইলারটা খারাপ হয়ে যায় ? আমাদের মধ্যে আলাপটা সম্ভাবনার দিকে মোড় নিল.....পথ তাহলে কেবল দুটাই খোলা থাকে। হয় মরুভূমিটা আমাদের পায়ে হেটেই পাড়ি দিতে হবে.... নয়তো এখানেই চুপচাপ বসে থাকতে হবে এবং একজন বেদুঈনকে সম্ভাব্য নিকটতম লোকালয়ের সন্ধানে হাটাপথে পাঠিয়ে দিতে হবে। যতক্ষন বা যতদিন না সে ফিরে আসে.... আমাদেরও কি সাহারার মধ্যে সেই প্রাগৈতিহাসিক তিমির ফসিলের পরিণতি হবে ? মরুভূমির মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার কল্পনায় একইসাথে রোমাঞ্চিত এবং হিমায়িত – দুটোই হলাম। মনে মনে বললাম, এই জন্যই আমাদের মত অন্য দলগুলি এধরনের মরুযাত্রা কাফেলার মত করে – অন্তত একসাথে দু-তিনটা ফোর-হুইলার সাথে নিয়ে বেরোয়। যেমনটা দেখেছি বাহারিয়া ছাড়ার আগে।
কিন্তু না, ডরো মাৎ বে~টা! আমাদের বেদুঈন এই সূচীভেদ্য অন্ধকারে অনেক ঘুরপ্যাঁচ করেও পথ ঠিকই খুঁজে পেল। হয়তো আদপেই হারায়নি। হয়তো সবটাই আমার উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা।
যাইহোক, শেষমেশ আমরা অপ্রাকৃতিক গ্যালারিতে পৌঁছে গেলাম। বেদুঈনরা তাঁবু খাটানো, স্পটলাইট জ্বালানো, খাবার-দাবার তৈরি ইত্যাদিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। বাকি সবাই সারাদিনের অভিযানের পর খোলা বালুতে পেতে দেয়া চাদরের উপর পাথরের টুকরোর মত ঝপাৎ করে পড়ে গেল বেশ কিছুক্ষনের জন্য। আমি আস্তে আস্তে গুটি-গুটি পায়ে বেরিয়ে পড়লাম মরুর বুকে স্পটলাইটের আওতার বাইরে। উদ্দেশ্যহীনভাবে একা একা ঘুরতে ঘুরতে একসময় বাকিদের থেকে শ’খানেক গজ দূরে নিরব অন্ধকারের মধ্যে একটা বড়সড় বোল্ডারের পাশে মরুভূমির বুকে পিঠ ঠেকিয়ে, মাথার উপর প্রাগৈতিহাসিক তারার মেলায় হারিয়ে গেলাম। এখান থেকে আমি বাকিদেরও দেখতে পাচ্ছি – তাদের ধুলিধূসরিত ক্লান্ত উষ্ণ মুখমন্ডলগুলি – সুস্বাদু খাবারে পরিপূর্ণ মুখ, হাসিতে-ঠাট্টায়-আনন্দে উদ্বেলিত মুখ। চতুর্দিকে আঁধার-সাগরের মধ্যখানে ডুবে থাকা স্পটলাইটের আলোয় আলোকিত ছোট্ট জায়গাটা যেন ক্ষনিকের সুখে টইটুম্বুর একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ।
হঠাৎ মনে হলো – এইতো, আবারো নতুন কিছু বুদ্বুদ পেয়ে গেছি আমি। বুদ্বুদে-বুদ্বুদে সেতু স্থাপনের জন্য নতুন বুদ্বুদ। এ-ও নিশ্চয়ই টিকবে না, কিন্তু এখন এই মুহূর্তে এখানে তো আছে। সুতরাং, কেন হেলায় হারাবো ? তাছাড়া, এটাই বোধহয় আমার নিয়তি – আমার সর্বস্ব : এক বুদ্বুদ থেকে আরেক বুদ্বুদে মরুপথে চলতে চলতে পেছনে ফেলে আসা এবং নিসীম আঁধারে চিরতরে মিলিয়ে যাওয়া পুরনো বুদ্বুদদের প্রতি কৃতজ্ঞতাসহ। চলার সময় হয়েছে বোধহয় আবার।
নিঃসঙ্গ মরু...
শুভ্র মরু
....................................
* এই লেখায় ব্যবহৃত সবক’টি চতুষ্পদীই (‘রুবাঈ’) এডওয়ার্ড ফিটজেরাল্ড অনুদিত (২য় সং) ওমর খৈয়ামের ‘রুবাঈয়াত’ থেকে নেয়া হয়েছে।
#Photo credit (see alt_text or image info for specifics): Amr Soliman, Owen Murray, Lia, Qioment, Dietmar Temps, Kerstin, Moser. Video credit: ebl753
মন্তব্য
পোস্ট দেখে অভিভূত। পুরোটা পড়ে আবার মন্তব্য দিব
ধন্যবাদ।
সবচেয়ে ভালো হয় যদি লেখাটা আগে পড়ে নেন ছবিগুলো না দেখেই অনেকটা তেতো ঔষধ গেলার মতো করে। ছবিগুলি যদি আগে বা একসাথে দেখতে বসেন, তাহলে আমার জোলো লেখাটা আর পড়তে মন চাইবে না!
পড়া শেষে ছবিগুলি পরে আয়েশ করে, সময় নিয়ে, একটা একটা করে, মনোযোগ দিয়ে তারিয়ে তারিয়ে দেখতে পারেন। তাড়াহুড়ো করে দেখতে গেলে ভুল করবেন।
মনমাঝি
অপূর্ব সব ছবি।
তারাপ কোয়াস
ধন্যবাদ।
পুরো লেখাটাই মুগ্ধ করার মতো। ছবিগুলোও অসাধারণ।
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
ধন্যবাদ।
অনবদ্য! যেমন লেখা তেমনি ছবি গুলো। পৃথিবীতে যে এতো সুন্দর জায়গা থাকতে পারে এই লেখা না পড়লে জানা হত না।
অনন্ত
ধন্যবাদ।
আপনার কথিত জোলো লেখাটা তারিয়ে তারিয়ে পড়লাম। বুঝতেই পারছেন মোটেও তেতো ঔষধ গেলার মতো মনে হয়নি!
আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার যথেষ্ট সংশয় ছিল লেখাটা আদপেই কিছু হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে। এটাই আমার প্রথম নিজস্ব লেখা। তাছাড়া মরুভূমি-ভ্রমনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে (ব্যাতিক্রম তো আছেই) বাহ্যিক দৃশ্যের সমাহার, বৈচিত্র্য বা ঘটনার ঘনঘটা খুব বেশী নেই, ফলে নেই খুব বেশী বর্ননার সুযোগ - যদি না আপনি খুব শক্তিশালী লেখক হন অথবা একজন জিওলজিস্ট। মরুভূমির ইফেক্টটা আসলে মনের উপর - এবং সেটা অনেকটাই বিমূর্ত আকারে। উপরে লেখার মধ্যে শুরুতেই এজন্যে 'চোখের দেখা' বনাম 'মনের দেখা'র মধ্যে পার্থক্যের কথা বলেছি। অন্ততঃ আমার ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। অব্জেক্টিভ বিবরন দিতে চাইলে - "ধূ ধূ মরুভূমি আর অপার শুন্যতা" - এই ৬ শব্দেই পুরো লেখা শেষ! তো, এর চেয়ে বেশি লিখতে চাইলে, ঐ 'বিমূর্ত মানসিক ইফেক্টের' প্রকাশ করতে গিয়ে বিশেষন, তুলনা, উপমা ইত্যাদির হাত এড়ানো মুশকিল। অথচ বিশেষন, তুলনা, উপমা ইত্যাদি বেশি হয়ে গেলে আবার পড়তে ভালো লাগে না। এটা একটা বিরাট সমস্যা ছিল আমার জন্য।
২য়তঃ ইজিপ্টে আসলে আমি বেড়াতে যাইনি! কাজেও নয়! এর একটা আভাস হয়তো আমার লেখার মধ্যেই পাবেন। যাওয়ার আগে ভেবেছিলাম বড়জোর হয়তো ১-২ সপ্তাহ থাকবো। কিন্তু, কি করে যেন যেন সেই ১ সপ্তাহ ৩ মাস হয়ে গেল আর এই বিরাট এবং ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক ও প্রাকৃতিক সম্পদ ও বৈচিত্র্যে ভরপুর এবং এক হিসেবে বোধহয় পৃথিবীর মধ্যে অতুলনীয় একটা দেশে সারাদেশ জুড়ে হাজার-হাজার মাইল চষে বেড়ালাম (যা নিজদেশেই এখনো তেমন করা হয়ে উঠেনি) - তা এখনো ঠিক নিজেই বুঝে উঠতে পারছি না। বেড়াতে যেহেতু যাইনি তাই তেমন প্রস্তুতিও নিয়ে যাইনি। সাথে একটা ক্যামেরা পর্যন্ত ছিল না। ছবি অবশ্য পরে তুলেছি বেশ কিছু - কিন্তু সেগুলি নেহাতই ধার করা ভাঙা অতি সস্তা ( ২-৩ এমপি) ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে তাড়াহুড়ো করে তোলা - অন্যের পাতে দেয়ার মতো নয়। ভালো ক্যামেরা কেঊ ধারও দেয় না। এখানে যে ছবিগুলি দিয়েছি, আশা করি বুঝতেই পারছেন - বেশির ভাগই আমার তোলা নয় (ফুটনোটে ও অল্ট_টেক্সটে ক্রেডিট দেয়া আছে)। তাছাড়া ছবি তোলার কথা বা এমনকি পরে ভ্রমন-কাহিনি লিখব মনে করে নোট নেওয়া (ফলে অনেক কিছু ভুলে গেছি)- এসব কথা আসলে তখন মনেও আসেনি। এখন লিখতে গিয়ে বুঝতে পারছি, তখন আরেকটু ভালো প্রস্তুতি থাকলে খুব ভালো হতো। সবচেয়ে ভালো হতো সাথে একটা ভিডিও ক্যামেরা থাকলে। নিজের একটা ছিলও, কিন্তু সাথে নেইনি! তাহলে হয়তো দারুন একটা ডকুমেন্টারি বানানো যেত! কিন্তু এখন আর আফসোস করে লাভ নেই।
তবু, আপনাদের ভালো লাগলে আরো ২-১ পর্ব লেখা ইচ্ছা আছে (যদি স্মৃতি ঘেঁটে লেখার মত যথেষ্ট উপকরন পাই)। সেগুলি অবশ্য একদম অন্যরকম হবে - অব্জেক্টিভ বিবরনকেই প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করব । নিজের তোলা বাজে ছবিগুলিও তখন দেয়া যাবে। আর হ্যাঁ, চাইলে (এবং সচল আপত্তি না করলে) একটু বেলি ড্যান্সের ভিডিও-ও দিতে পারি
- মনমাঝি
ছবিগুলো দারুন।
ভ্রমন কাহিনীও ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ।
অভিভূত। মিশর, মরুভূমি নিয়ে আরো লিখবেন (ছবিসহ) আশা করি।
ধন্যবাদ। চেষ্টা করব।
লেখাটা ভালো। ছবিও ভালো।
আপনি ব্লগ লিখছেন দেখে খুব খুশি।
পাঁচালাম।
---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
সত্যি বলতে কি, কিছুটা আপনার উৎসাহেই লিখেছি আপনি আমাকে আমার 'রাষ্ট্রচিন্তা' নিয়ে লিখতে বলেছিলেন। ঐটা নিয়ে পড়তে-ভাবতে গিয়ে দেখলাম অনেক কঠিন ইঞ্জিরি বিষয় এসে যায় যা বাংলায় লেখা আমার কম্ম নয়। শেষে ধুত্তোরি বলে নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই কিছু একটা লিখতে গিয়ে এটা বেরিয়ে আসলো!
যাইহোক, কখন কোন ফাকে গরীবের ঘরে এসে ঘুরে গেলেন টেরও পেলাম না - একটু যে বসতে দিব, চা-পানি দিয়ে আপ্যায়ন করব সে সুযোগও পেলাম না। এরপরে আশা করি আগে থেকে একটু জানান দিয়ে আসবেন !
খাইছে, এই লেখাটার পর জীবনের দশটা বছর পার হয়ে গেছে??? বিশ্বাসই হচ্ছে না!!!
****************************************
কিন্তু সব ছবি পলাইল কুথায়?
..................................................................
#Banshibir.
ফ্রি ইমেজ হোস্টিং একাউন্টটা ভবলীলা সাঙ্গ করেছেন মনে হয়!!! হা হা হা!
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন