অচেনা পাখি

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি
লিখেছেন রকিবুল ইসলাম কমল [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০২/১০/২০১০ - ৩:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিশাল একটি চেইনশপ। কত জিনিস যে পাওয়া যায় এখানে! হুলুস্থুল ধরণের মোটা একটি মহিলা দোকানটা ঘুরে ফিরে ঠিকঠাক করে রাখছে। ক্যাশ-কাউন্টারে আছে মডেলদের মত চেহারার সোনালী চুলের মেয়ে। তারা কথায় কথায় ‘ত্যাকসোমিকাত’ আর ‘ভর্সোগুড’ বলে। যার মানে হচ্ছে - ধন্যবাদ, স্বাগতম। আমি হাটছি আর দেখছি সস্তায় কিছু পাওয়া যায় কিনা। ডিম-মাখন-পনিরের দিক থেকে সবজির দিকে গেলাম। বেশ সস্তায় ব্রকলি পাওয়া যাচ্ছে। বেছে বেছে ঝুরিতে তুলছি, সেসময় হট্টগোলের শব্দ। বিশালদেহী মহিলাটি একটা পাখির পেছনে অদ্ভুত ভঙ্গিতে ছুটছে। কিভাবে যে এই শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দোকানটিতে পাখি ঢুকল কে জানে! আমি আগ্রহী হয়ে কাছে গেলাম। এবং আশ্চর্য্য হয়ে লক্ষ্য করলাম পাস্তা আর নুডুলস রাখার সবচেয়ে উপরের তাকের একটি ফোকরে পাখিটির বাসাও আছে। জামার পিঠের উপর ল্যাটিন হরফে ‘নেট্টো’ লেখা, দোকানের লগো আঁকা হলুদ পোষাক পরা দুই তিন জন মাসকুলার ম্যান ছুটে এলো। এরা পাখিটাকে পুলিশে দিতে চায়। রোবটদের মত চেহারার এখানকার পুলিশ গুলো দেখলে আমি নিজেই ভয়ে শুকিয়ে যাই আর এই ছোট্ট পাখিটা কী ভয়টাই না জানি পাবে। পাখিটার কথা ভেবে আমার বুকের ভেতর কেমন জানি করে উঠলো।

আমি বন-পাখি-ফুলের দেশ থেকে এসেছি। এভাবে নিরীহ পাখির উপর আক্রোশে ফেটে পরা মানুষগুলোর কাছ থেকে কিভাবে পাখিটাকে বাঁচাবো তাই নিয়েই ভাবছিলাম। ঘটনার চারপাশে জমে উঠা উৎসুক মানুষের ভীর ঠেলে এগিয়ে গেলাম। মিনমিন করে বললাম, পাখিটাকে পুলিশে দিবেন না প্লিজ।

মহিলা তার থলথলে হাত পা নাড়িয়ে বললো, আমাদের কিচ্ছু করার নেই। আমারা পাখিটাকে যেহেতু নিরাপত্তা দিতে পারবো না তাই এটাকে পুলিশের কাছে দিয়ে দেয়াটাই ভাল। পাখিটি আমাদের অনেক পাস্তা খেয়ে ফেলেছে। এটাকে এখানে কিছুতেই থাকতে দেয়া যাবে না।

আমি বললাম, তাহলে ওকে বাইরের পার্কটিতে ছেড়ে দিন। পুলিশে দেবার দরকার কি? মহিলাটা এবার চেঁচিয়ে উঠে বললো, যা বোঝ না তা নিয়ে কথা বলতে এসো না। এখানে এনিম্যাল প্রোটেকশন আইন খুবই কড়া। কেউ যদি একবার কমপ্লেইন করে যে, আমরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং পর্যাপ্ত খাদ্যের মাঝে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা একটি অচেনা পাখিকে হঠাৎ করে তার অপরিচিত প্রকৃতির প্রতিকূল অবস্থার মাঝে ছেড়ে দিয়েছি; তাহলে আমাদের অনেক টাকা জরিমানা হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া এই অচেনা অজানা পাখিটা এখানে কোথা থেকে এসেছে তাইবা কে জানে। নিশ্চয়ই বেখেয়ালি কোন ভিন দেশী ক্রেতার খাঁচা থেকে বের হয়ে এখানে রয়ে গেছে। এমনকি এটার বার্ড ফ্লু’র মত মারাত্মক কোন অসুখ বিসুখও থাকতে পারে। এই বদমাশ পাখিটাকে পুলিশে দেয়া ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই। তারা হয়ত কোন হিপনোটিক ড্রাগ পুশ করে পাখিটাকে একটি কষ্টহীন মৃত্যু দিতে পারবে।

কথোপকথনের এ পর্যায়ে হুইসেলের শব্দ আর লাল নীল বাতি জ্বালিয়ে দুই গাড়ি পুলিশ চলে এল। সবাই কেমন সায়েন্সফিকশন ছবির মত পিলে চমকানো অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত। এরকম হট্টগোলে পাখিটা ভয়ে কুকরে গেল।

আমি কোন রকমে মাটির দিকে তাকিয়ে বললাম, পাখিটাকে যদি আমি আমার বাসায় নিয়ে যাই তাহলে কোন অসুবিধা আছে? আমি পুষবো পাখিটাকে। তখন তারা সবাই অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকালো।

মোটা মহিলাটি ভুরু উঁচিয়ে বললো, তুমি কি জানো এদেশে কুকুর আর বিড়াল ছাড়া অন্য যে কোন বন্য পশু-পাখি পালন করার লাইসেন্স পেতে হলে অনেক আইন কানুনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়?

আমি মাথা নাড়লাম। বললাম, অসুবিধা নাই। আমি লাইসেন্স করবো। হঠাৎ তখনি কেন যেন হলুদ ঠোঁটের খয়েরি পাখিটি আমার পায়ের কাছে এসে দাঁড়ালো; যেন সে বুঝতে পারছে কে তাকে পুলিশের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

ততো ক্ষণে পুলিশগুলো তাদের তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। হাতে গ্লাভ্স পরে স্বচ্ছ একটি পলিইথিলিনের ব্যাগে পাখিটার পালক আর কি সব যেনো ঢুকিয়ে নিলো ডিএনএ টেস্ট করার জন্যে। এতক্ষণ সেই মহিলাটা আমার সাথে ইংরেজীতে কথা বললেও পুলিশ গুলোর সাথে তাদের নিজেদের ভাষায় কী যেন বলল। তারা পাখিটাকে একটি স্টেইনলেসস্টিলের খাঁচার মাঝে ঢুকিয়ে মশারির মত কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দিল। গাড়িতে উঠার সময় আমাকেও তাদের সাথে উঠার জন্যে ইশারা করলো।

সবুজ নীল কমলা রঙের ফ্লুরোসেন্ট ট্যাগ মারা গাড়িটিতে উঠার সময় লক্ষ্য করলাম অতি-উৎসাহী জটলা পাকানো মানুষগুলো সবাই আমার দিকে কেমন করুণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। গাড়িতে উঠে বসার পর পাশে বসা পুলিশটি আমার স্যোশাল সিকিউরিটি নাম্বারটি জানতে চাইলেন। আমি জানি, যেহেতু আমি এ দেশের নাগরিক নই, তাই আমার এই সিকিউরিটি নাম্বারের শেষ চারটি ডিজিট টেম্পোরারি। পাশে বসা পুলিশটি বহু চেষ্টা করেও সেই নাম্বারটি দিয়ে সেন্ট্রাল ডাটাবেস থেকে তাদের যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে হয়ত সনাক্ত করতে পারলো না। তাই কিছুটা বিরক্ত হয়ে, ড্রাইভিং সিটে বসা সহকর্মী কে বললো স্টেশনে না গিয়ে প্রথমে স্কাটেভার্কেটে নিয়ে যেতে। স্কাটেভার্কেট মুলত ট্যাক্স অফিস; কিন্তু সেখান থেকেই প্রত্যেক নাগরিকদের জন্য স্যোশাল সিকিউরিটি নাম্বার ইস্যু করা হয়। সেখানে গেলে হয়তো আমার রেকর্ড দেখে আমার সমন্ধে নিশ্চিত হতে চায়।

সন্ধ্যা হয়ে আসছে। যখন বাসা থেকে বের হয়েছিলাম তখন কাঠফাটা রোদ ছিল। অথচ একটু আগে মেঘলা লাগলো আকাশটা। এখন আবার ঝিরঝির করে বেগুনি রঙের বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টির ফোটা গাড়ির কাচে জমে জমে ভারি হয়ে গড়িয়ে পরছে। আমার কেমন জানি ঝিমুনি আসছে। আসলে ভিনদেশে এ ধরনের পুলিশি ঝামেলায় জড়িয়ে অজানা উদ্বেগে নার্ভাস সিস্টেমে কিছু একটা গণ্ডগোল হয়ে গেছে বোধহয়। নইলে এরকম একটি মূহুর্তে আমার ঘুমপায় কী করে!

স্কাটেভার্কেট ডাটাবেস থেকে আমার ইমিগ্রেশনের সব কাগজ পত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হল। এদিকে পাখিটাকে কী একটা স্পেশাল মেডিক্যাল টিমের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কোন ভাইরাল ডিজিজ না ধরা পরলে হয়তো পাখিটাকে আমার কাছে রাখার অনুমতি পাওয়া যাবে।

আমাদের গাড়িটি মসৃণ গতিতে স্কাটেভার্কেট অফিস এর সামনে এসে থামল। এই অফিসের লোকজন কেমন মাতালের মত ঢুলে ঢুলে কাজ করে। সিনেমার স্লোমৌশনের মত তাদের অদ্ভুত ধীরগতির কাজ শেষ হবার পর আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো শহরের পৌরসভা অফিসে। সেখানের একজন আইন বিশেষজ্ঞ বন্য পাখি পালন সংক্রান্ত আইনি ব্যাপার গুলো দেখবেন। পার্কিং এ দেখতে পেলাম ওয়াইল্ড এনিমেল সোশালাইজেশন কমিটির সাদা রং এর মাইক্রোবাস। ভেতরে ঢুকে দেখলাম লম্বা রেক্সিনের কাভারে ঢাকা একটি টেবিল, তার চারিদিকে উচু উচু এবং ভারী কাঠের চেয়ারে ঘেরা। চারিদিকের দেয়ালে ছাঁদ পর্যন্ত টানা বুক শেল্ফ। কাউন্সিলার আমার বোঝার জন্যে আইনগুলো ইংরেজীতে অনুবাদ করে শুনাচ্ছিলেন। আমাকে বললেন, তুমি যদি পাখিটা কে পালক নিতে চাও তাহলে সেটা তোমার কাগজ পত্রে আর পাসপোর্টে লেখা থাকতে হবে। তারা হঠাৎ করে পাসপোর্টের চিলড্রেনের ঘরে লিখে দিলো আমার একটি পোশ্য আছে! আমিতো লজ্জায় পরে গেলাম। এখন কী হবে! সবাইতো ভাববে আমি কোন বাচ্চা পালোক নিয়েছি। অথচ আমিতো এখনো বিয়েই করি নাই।

কোন রকমে বাসায় গিয়ে ফোন দিলাম আরিকার কাছে। (এবার ফিরে গিয়ে আমি আর আরিকা বিয়ে করব বলে ঠিক করেছি। এমনিতেই সে বিয়েতে তার বাবা মা কে রাজি করাতে গিয়ে নানান ঝামেলায় আছে। তার উপর আমার এই পাখি পালোক নেবার ঘটনাতে যারপর নাই বিরক্ত হলো।)
তার কথা হচ্ছে, পাখি পালবা ভালো কথা কিন্তু পাসপোর্টের চিলড্রেন ঘরে সেটা লেখা থাকবে কেন?! জীবনেওতো এই সব আজগুবি কথা শুনি নাই!
আমি তাকে অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে শান্ত করলাম। বললাম যে দেশের যেই নিয়ম। আমার তো কিছু করার নাই। পাখিটা যে কী বিপদে পরেছে সে সব বলে এইবারের মত কোন রকমে ওকে বুঝ দেয়া গেলেও আমার বিপদ যে এখানেই শেষ না তাকি আর আমি জানতাম!

পরদিন নেট্টো থেকে সেই মহিলার ফোন এল। আমাকে এখুনি দেখা করতে বললো। আরও বললো, পাখিটার বাসায় এরিক্সনের একটা মোবাইলে পাওয়া গেছে। খুব সম্ভবত পাখিটা বাসা বানানোর সময় এটা কোথাও থেকে নিয়ে এসেছে। যেহেতু পাখিটা তুমি পালোক নিয়েছো তাই মোবাইলটাও তোমারই প্রাপ্য। আমি বললাম মোবাইল আমার লাগবে না। সে একটু রেগে গিয়ে আরো জোরদিয়ে বললো- অবশ্যই তোমার মোবাইল লাগবে!

আমি কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম। ভাবলাম, থাক একে রাগিয়ে লাভ নেই, সাইকেলে করে গিয়ে মোবাইলটা নিয়ে আসি। দোকানটা তে ঢুকে দেখি গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন আর সহযোগী কিছু পুলিশ এখনো ব্যাপারটা নিয়ে তদন্ত করছে। এসব দেখে আবার আমার ভয় লাগতে লাগলো। নিজেদের মধ্যে সেই অবধ্য ভাষায় কথা বলে কি মনে করে যেন তারা আবার আমাকে সেই কাউন্সিলার এর কাছে নিয়ে গেলো। তারা এবার যা বললো তাতে আমি পুরোপুরি হতভম্ব হয়ে গেলাম।

পাখির বাসাটতে নাকি মা পাখিটাকেও পাওয়া গেছে। এখন তারা আমাকে বলছে মা পাখিটাকেও আমাকে নিয়ে যেতে হবে। মা পাখিটা আলো পছন্দ করে না। তাই যতদিন পাখি থাকবে ততদিন আমার ঘর দিনের বেলাতেও অন্ধকার করে রাখতে হবে। কিন্তু মোবাইলের ডিসপ্লেতে যেটুকু আলো জ্বলে সেটুকু আলো জ্বালা যাবে। পাখির খাবারদাবারে কখনো কোন সমস্যা হবে না এই মর্মে তারা আমার কাছ থেকে একটি বন্ডও সই করিয়ে নিলো। সব চেয়ে ভয়ের যে ব্যাপারটি ছিলো সেটা হলো, তারা নানা রকম আইনি মারপ্যাঁচ দেখিয়ে, অনেকটা জোর করে মা পাখিটার নাম আমার পাসপোর্টের ওয়াইফের ঘরে লিখে দিলো! আমাকে বললো, যেহেতু আগের পাখিটার তথ্য তোমার পাসপোর্টের চিল্ড্রেনের ঘরে লেখা হয়ে গেছে তাই এই পাখিটার কথা তোমার ওয়াইফের ঘরে না লেখা ছারা আমাদের আর কোন উপায় নাই।

আমি নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ভাবছিলাম, এই লোক গুলা কী বলে! এদের মুখের ভঙ্গি দেখে তো মনে হচ্ছে না যে এরা আমার সাথে রসিকতা করছে। উল্টো একটা সহানুভুতির ভাব নিয়ে বলছে, আমাদের সত্যিই কিছু করার নেই। তোমাদের পাসপোর্টে পালিত পশু-পাখির তথ্য লেখার কোন জায়গা নাই। কিন্তু এ দেশের নিয়ম অনুযায়ী তা অবশ্যই পালকের সর্বোচ্য পরিচয় পত্রে লেখা থাকতে হবে। যেহেতু এই মুহুর্তে তোমাদের দেশের পাসপোর্টটাই এ দেশে তোমার লিগ্যাল আইডেন্টিটি সত্যায়ীত করার সর্বোচ্য গ্রহনযোগ্য মাধ্যম, তাই বাধ্য হয়েই এটা তোমার পাসপোর্টে লিখতে হচ্ছে। আমার হতাশাগ্রস্থ মুখ দেখে আমাকে ভরসা দেবার জন্যেই হয়তো আরো বললো, তোমার ভয়ের কিছু নাই আমারা তোমার ম্যারিটাল স্ট্যাটাস পরিবর্তন করছি না। ভবিষ্যতে তুমি বিয়ে করলে পাখির পাশে তোমার ওয়াইফ এর নাম লেখতে পারবে।
এসব কথা শুনতে শুনতে আমি ঘামছিলাম। আমার এত ক্লান্ত আর অসহায় লাগছিলো যে আমি আর কোন কিছুই ভাবতে পারছিলাম না। কোন রকমে বাসায় ফিরে স্কাইপিতে আরিকা পেয়ে সব কিছু খুলে বললাম। সব শুনে এইবার ও তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। ও বললো, তুমি এইসব কি শুরু করছো? আমি বাবা মা কে কি বুঝাবো, আমার নিজেরই তো এখন সন্দেহ হচ্ছে। ও কান্না জড়ানো কন্ঠে বললো, তুমি নিশ্চয়ই কোন বিদেশি মেয়ের সাথে কিছু করছো এখন সে তোমাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছে বলে এই সব তালবাহানা শুরু করছো…।

আমার সব কিছু কেমন অবশ লাগছিল। পখির জন্যে অন্ধাকার করে রাখা ঘরে বসে থেকে পুরো পৃথিবীটাকেই অন্ধকার লাগছিল। পাখির জন্য এত যন্ত্রনা আর সহ্য করতে পারছিলাম না। একটা পাখির জন্য আমার জীবনটা প্রতিদিন কিভাবে পালটে যাচ্ছে! আমি চোখ বন্ধ করে বিছানাতে এলিয়ে পরলাম।

কতক্ষন ঘুমিয়েছি বুঝতে পারছিনা। ঘুম ভাঙ্গলো বন্ধুর ডাকে- এই ক্লাসে যাবি না? বাস মিস করবি তো।
আমি ধরফর করে উঠলাম। উঠেই টেবিলের নিচে তাকালাম, ঘরের কোনা-কাঞ্চিতে উকি দিলাম। কোথাও কোন পাখি নেই। খুশীতে আমার বত্রিশটা দাত বের হয়ে পরলো। এই প্রথম এত সকালে কারো ডাকে ঘুম ভাঙ্গার পরও এত আনন্দ লাগছে।

কত সুন্দর সকাল। সূর্য উঠি উঠি করছে। মনটা শান্তিতে ভরে গেলো। যতবার ভাবছি পুরো ঘটনাটাই একটা স্বপ্ন ছিল, ততবার মনেমনে হাসি পাচ্ছে!
কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। কী একটা শান্তির পরশ নিয়ে আজ দিনটা শুরু হলো।


মন্তব্য

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

চমৎকার গল্প। স্বপ্ন থেকে না জাগলেও হইত। কিন্তু জাগলেও ঠিকাসে। খুব ভালো।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। লাল তারা দেইখা ব্যাপক খুশি লাগতেছে!

কমল

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

কমুনিস্ট নাকি ! (জাস্ট জোকিং)


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অতিথি লেখক এর ছবি

খাইছে! প্রায় ধইরা ফেলছিলেন। আমি আসলে কমুনিস্ট না, কমলেখুনিস্ট! তাই মাঝে মইধ্যে যে লেখা দেই সেখানে লাল তারা দেখলেই বেয়াপক আনন্দ হয়। মনেহয়, খালি নিয়মিত লেখি না দেইক্ষা, লেখলে তো পুরা লাল তারা দিয়া দ্বিকবেদ্বিক জয় কইরা ফালাইতাম। দেঁতো হাসি

কমল

...অসমাপ্ত [অতিথি] এর ছবি

হাসি লেখা চ্রম হইছে।
আপনার লেখার ভঙ্গি খুবই চমৎকার।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার মন্তব্যের ভঙ্গিও আমার ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ। হাসি

তার-ছেড়া-কাউয়া এর ছবি

ধুর মিয়া। 'স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার' গানটা শুনেন নাই? স্বপ্ন বাড়ি নিয়ে যাইতে হয়। হুদাই মিয়া ঘুম থেইকা উঠলেন। ধুর। না উঠলেই বেশি ভালু হইতো।

লেখাটা অনেক ভালু লাগছে। এইরকম আরো লিখবেন আশা করি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই, কী বলেন এইটা! স্বপ্ন না ভাঙ্গলে তো আমারে শেষমেশ 'পাখি বৌ' নিয়াই খুশি থাকতে হইতো! মন খারাপ

গানটা আগে শোনা হয় নাই। এই মাত্র খুজে বের করে শুনলাম।

আপনার মন্তব্যে আরো লেখার উৎসাহ পাইলাম। হাসি

ধন্যবাদ
কমল

তার-ছেড়া-কাউয়া এর ছবি

হে হে হে। অসুবিধা কি? শুধু পাখি বৌ কেন? আসল বউও থাকবে। আপনি লিজেন্ডে পরিণত হবেন, যার একজন মনুষ্য বউ আর একটি পাখি বৌ থাকবে। কয়জনের আছে এরকম হিম্মত? বউ এর চেচামেচি প্লাস পাখির কিচিরমিচির। আহা আহা । কি কম্বিনেশন! হিম্মত করে এগিয়ে যান। আমরা নাই আপনার সাথে। হে হে হে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

রকিবুল হাসান কমল,

গল্প লেখা খুব কঠিন একটা কাজ বলে আমি মনে করি। সবাই পারে না। আপনি পারেন, এবং আপনার লেখার ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে সময়ের সাথে সাথে আরও ভালো পারবেন!

গল্পের থিমটা বা কাহিনীটা ভালো লেগেছে। কিন্তু 'গল্প' হিসেবে পুরো গল্পটাতে কিছু কিছু জায়গায় পড়তে একটু অমসৃণ লাগছিলো। যেমন, নিচে দেয়া এরকম কিছু বাক্য -

আমি আগ্রহী হয়ে কাছে গেলাম।
তখন তারা সবাই অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন।
তারা হঠাৎ করে পাসপোর্টের চিলড্রেনের ঘরে লিখে দিলো আমার একটি পোশ্য আছে! আমিতো লজ্জায় পরে গেলাম। এখন কী হবে! সবাইতো ভাববে আমি কোন বাচ্চা পালোক নিয়েছি। অথচ আমিতো এখনো বিয়েই করি নাই।

এটা একদম বিচ্ছিন্ন একটা পাঠানুভূতিও হতে পারে, অর্থাৎ হয়তো পাঠক হিসেবে শুধু আমারই এরকম মনে হয়েছে, বেশিরভাগ পাঠকেরই এমনটা লাগবে না - সেটা হতেই পারে।

পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিলো চমৎকার একটা কাঠামোর গায়ে হাড়মাস যোগ করার সময় কয়েকটা জায়গা হঠাৎ বাদ পড়ে গেছে।

তবে সবকিছু মিলিয়ে গল্পটা ভালো লাগলো। আরও লিখবেন হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

স্নিগ্ধা,

হঠাৎ করে এত বড় একটা মন্তব্য দেইখা ঘাবড়াইয়া গেছিলাম। ভাবছি নিশ্চয়ই লেখককে তুলাধুনা করা হইছে! সম্পুর্নটা পড়ার পর জানে পানি ফিরা আসছে। এত সুন্দর করে উৎসাহ প্রাদানের সাথে সাথে আপনার সমালোচনাও ভালো লেগেছে। গল্প থেকে আপনার উল্লেখিত লাইন গুলো কিভাবে আরেকটু সুন্দর করে লেখা যেত দু'একটি উদাহরন দিলে আমার জন্য সুবিধা হতো। পরবর্তিতে লেখার সময় ব্যাপারটা মাথায় রাখতাম।

ধৈর্য ধরে লেখাটি পড়ে মুল্যায়ন করার জন্যে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

(মাই নেম ইজ রকিবুল ইসলাম কমল। বাট আই অ্যাম নট এ টেররিস্ট! হাসি )

স্নিগ্ধা এর ছবি

মাই নেম ইজ রকিবুল ইসলাম কমল।

অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখিত।

গল্প লিখতে তো পারি না, তাই ঠিক কীরকম হলে বাক্যগুলো আরও ভালো হতো সে ব্যাপারে বিশেষ ভালো কোন সাজেশন দিতে পারবো বলে মনে হয় না। তবে - আমি আগ্রহী হয়ে কাছে গেলাম। এর বদলে 'আমি আগ্রহী হয়ে কাছে এগিয়ে গেলাম' বা তারা হঠাৎ করে পাসপোর্টের চিলড্রেনের ঘরে লিখে দিলো আমার একটি পোশ্য আছে! আমিতো লজ্জায় পরে গেলাম। এখন কী হবে! সবাইতো ভাববে আমি কোন বাচ্চা পালোক নিয়েছি। অথচ আমিতো এখনো বিয়েই করি নাই। এর বদলে 'হঠাৎ করে ওরা পাসপোর্টের চিলড্রেনের ঘরে লিখে দিলো আমার একটি পোষ্য আছে! এখন কী হবে! আমি তো রীতিমতো লজ্জায় পড়ে গেলাম। সবাইতো ভাববে আমি হয়তো কোন বাচ্চা পালক নিয়েছি, কারণ আমি তো এখনো বিয়েই করি নাই।'

এরকম কিছু একটা। তবে, আবারও বলি, আমি নিজে গল্পকার নই, আমার চাইতে আপনিই ভালো জানবেন কী হলে ভালো হবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লাইন গুলো পড়ার পর স্পষ্ট বুঝতে পারছি কোথায় মসৃনতাটা নষ্ট হয়েছে। এডিট করার ব্যবস্থা থাকলে আমি এক্ষুনি এডিট করে ঠিক করে নিতাম।

এবার আপনাকে ধন্যবাদের সাথে কৃতজ্ঞতাও জানাচ্ছি।

কমল

কামরুল হাসান রাঙা [অতিথি] এর ছবি

স্বপনে বা জাগরণে যাই হোক, লেখা ভাল হয়েছে। চালিয়ে যান।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

থিম দূর্দান্ত লেগেছে, যদিও শেষে স্বপ্নের চমক এরকম একটা গল্পের জন্য বেশি ক্লিশে মনে হয়েছে। যার মাথায় এরকম একটা প্লট আসতে পারে সে যে ভবিষ্যতে আরো ভাল গল্প আমাদের উপহার দিতে সক্ষম হবে তাতে সন্দেহ নেই।

ফারাবী

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

একটানে টান টান উত্তেজনা নিয়ে পড়লাম! ভাই, খুব খুব ভালো লাগলো! এমন আরো মুগ্ধ হবার মতো লেখা পড়তে চাই!
রোমেল চৌধুরী

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও খুব ভালো লাগছে। আবার কোন গল্প লিখতে পারলেই পোস্ট করে দিব। সবাই এত সুন্দর করে উৎসাহ দেয় যে স্বাভাবিক ভাবেই আবার লিখতে ইচ্ছা করে।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমে ভাবছিলাম সাই-ফাই পরে দেখি স্বপ্ন দেখলেন চোখ টিপি ... মজা পাইছি হাসি ...

পাগল মন

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম দিকে সাই-ফাই এর ভাব ধইরা পাঠকগো লগে পলেটিক্স করছি! দেঁতো হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ও কান্না জড়ানো কন্ঠে বললো, তুমি নিশ্চয়ই কোন বিদেশি মেয়ের সাথে কিছু করছো এখন সে তোমাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছে বলে এই সব তালবাহানা শুরু করছো…।
কী আর কমু ভাই! আপনার কষ্টে কষ্টিত হইলাম। তবে সান্ত্বনার কথা একটাই, কান্না জড়িত কণ্ঠে শুনছেন। গলার ভলিউম ঊনিশ হাজার নয়শো নিরানব্বই হার্জে শোনেন নাই।


বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা হা...

Asif এর ছবি

Simply Jooss

দ্রোহী এর ছবি

দেঁতো হাসি

চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক

গল্প ভালো লেগেছে।


কাকস্য পরিবেদনা

অতিথি লেখক এর ছবি

মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম। উঠেই দেখি আপনার মন্তব্য। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না। গতকাল রাতে ঘুমাতে যাবার আগে সচলায়াতন এ ঢুকছিলাম। ভাবছিলাম, আস্তে আস্তে লেখাটা নিচের দিকে চলে যাচ্ছে অথচ দ্রোহী ভাই লেখাটা পড়লো কিনা কে জানে!

আপনি নিশ্চই খুব অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন, ''এই ব্যাটা বলে কি? এরে তো আমি জীবনেও দেখি নাই। এই লোক কি আবার আমারে উদ্দেশ্য কইরা গল্প লেখলো নি!''

দাড়ান খোলাসা করতেছি। আসলে আমি লেখালেখি খুবই কম করলেও সচলে বেশ কয়েক জনের লেখা নিয়মিত পড়ি। তাদের মধ্যে আপনি একজন। আপনার কয়েকটা লেখা তো আমার ব্যাপক পছন্দ।

তাই হয়তো অবচেতন মনে চাচ্ছিলাম আমার একটা লেখাও আপনার চোখে পড়ুক।

প্রিয় ব্লগারের মন্তব্য পেয়ে ব্যাপক খুশী লাগতেছে।

- কমল

aunonto এর ছবি

গল্পের থিমটা ভাল লেগেছে। আর আপনার বর্ণনাভঙ্গিও।

অনন্ত

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

বাউলিয়ানা এর ছবি

অসাধারন লেগেছে গল্প।

ভাই রকিবুল ইসলাম কমল (হু ইজ নট এ ট্যারোরিষ্ট চোখ টিপি) এমন গল্প আরও চাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা একটা স্বপ্নে পাওয়া গল্প তো ভাই। তাই আপনাদের উৎসাহে দিনে রাইতে সমানে ঘুমাইতেছি। দেখা যাক লেখনের মত আরেকটা কিছু পাই কিনা। হাসি

কমল

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার গল্প ভালই লাগল। কিছু কিছু জায়গায় ভাষার জন্য একটু অস্বস্তি লাগছিল, সেটা অন্যেরা উপরে বলেছেন। আর বানানগুলো একটু দেখবেন।

অফটপিক: ট্যাগে লেখার বিষয়বস্তুর বদলে লেখকের নাম থাকলে কেমন অস্বস্তি লাগে। বরং ওটা লেখার শুরুতে দিয়ে দেওয়াই আমার মতে ভাল।

অতিথি লেখক এর ছবি

বানানে আমি আসলেই অনেক কাঁচা। পোস্ট করার আগে অনলাইন ডিকশনারি থেকে কিছু কিছু চেক করে নেই। কিন্তু সব শব্দ পাইও না। এমন এক জায়গায় থাকি যে চাইলেই বাংলা ডিকশনারি কিনতে বা জোগার করতে পারি না।

মজার ব্যাপার হচ্ছে ভাষার অস্বস্তিটা আমিও ধরতে পারি, কিন্তু পোস্ট করার পড়ে যখন নিজে পাঠক হয়ে পড়ি তখন। অতিথি লেখকদের এডিট করার অপশন থাকে না বলে কিছু করতেও পারি না।

কী ওয়ার্ডে নিজের নাম লেখাতে ট্যাগে সেটা চলে এসেছে। সচলায়াতনে আমার পুরানো লেখা গুলোর নাম দিয়ে সার্চ করেও খুজে পাচ্ছি না বলে এই বার এই ব্যাবস্থার আশ্রয় নিয়েছি।

লেখা হারিয়ে গেলে মন খারাপ লাগে।

কমল

Sadmani এর ছবি

I like your story Kamol vai. I don't know how to write Bangla here.
I know the places that's why I enjoyed it more. Thanks.
Aro likhle link dien , please.

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

একটু কষ্ট করে পাতার নীচের দিকে তাকালে জিজ্ঞাস্য নামে একটা লিংক পাবেন। সেই পাতায় বাংলা লেখা সংক্রান্ত সাহায্য আছে।

তিথীডোর এর ছবি

চলুক

লিখুন আরো।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো। আরো লেখা আসুক

----------------------------
- প্রতিটি দিন-ই হোক, একটি সুন্দর দিন

ছাইপাঁশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।