কিছুদিন আগে মার্কিন প্রবাসী বাংলাদেশী সালমান খানের শিক্ষাবিষয়ক ওয়েবসাইট নিয়ে লিখেছিলাম। মনে হল, এর ফলোআপ হিসেবে আরো কিছু বিষয় মনে হয় আসা উচিৎ ছিল।
প্রথমতঃ পাঠক ও দর্শকদের আলোচনার কমন প্রশ্ন ছিল যে, সালমান খানের এই ভিডিওগুলি বাংলাদেশের ব্যাবহারের উপযোগী কিনা। আমার হিসেবে একই সাথে হ্যাঁ এবং না। না হল দুটো কারণে, প্রথমত, দেশের গড়পড়তা ছাত্রের ইংরেজী ভীতি ও অদক্ষতা, দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের আধমরা ইন্টারনেট কানেকশনের দ্বারা ইউটিউবের শত শত ভিডিও থেকে জ্ঞানলাভ করার চিন্তা করাই রীতিমত দুঃসাহস। এই পর্যন্ত এসে আমি মোটামুটি সমস্যার শেষ দেখছি। আমার হিসেবে সমস্যার দিকে না তাকিয়ে সমাধানের প্রায়োগিক দিক নিয়ে কাজ করলে অনেকটাই এগিয়ে যাওয়া যায়।
এইটা ধ্রুব সত্য যে বাংলাদেশে ছাত্রদের ইংরেজী শেখা, বোঝা ও বলার মান বেশ খারাপ। তবে এইটাও সত্যি যে, ঢাকা চট্টগ্রাম সহ মহানগরীগুলোতে গত দুই দশকে এক গুচ্ছের ইংরেজী স্কুল তৈরি হয়েছে যেগুলোতে ইংলিশ মিডিয়াম নামের ফার্মের মুরগী চাষ করা হয়। এইসব ছাত্রদের অনেকেরই বাপমায়ের একগুচ্ছের টাকা খরচ হলেও আসল পড়াশোনার অংশে তথৈবচ। বেশী খোঁজা লাগবে না, আপনার নিজের আত্মীয়-স্বজন চিন-পরিচিতের মধ্যেই এরকম কয়েকটা কেস পেয়ে যাবেন। সেইরকম কেস যদি থাকে তাহলে তাদেরকে এই ভিডিওগুলি মজার বস্তু হিসেবে যদি ধরিয়ে দিতে পারেন তাহলে হয়তো তার বিরাট একটা উপকার করবেন আপনি। একই সাথে বাংলা মিডিয়ামের বহু ছাত্রছাত্রী আছে যারা ক্লাস ফাইভ সিক্স থেকেই ইংরেজী মুভী, গানবাদ্যি আর টিভি প্রোগ্রামের পোকা। এদেরকে জোর করেও বাংলা বা হিন্দী গেলানো যায়না, এইরকম কেসও আমাদের পরিচিতদের মধ্যে একদম কম না। তাদের জন্যও একটা খুব ভাল এডুকেশনাল রিসোর্স হওয়া উচিৎ এই টিউটোরিয়ালগুলো। একই সাথে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে কর্মক্ষেত্রে যারা আছেন বা আরো উচ্চতর পড়াশোনা করছেন কিন্তু প্রাথমিক বা মাধ্যমিকের কোন বিষয়ে দুর্বলতা রয়ে গেছে, তাদের জন্যেও জড়তা কাটিয়ে উঠে নিজের দুর্বলতা সারিয়ে নেবার জন্য চমৎকার রিসোর্স। আরেকটি জিনিষ বিশেষভাবে খেয়াল করার জন্য বলছি তা হল, আমেরিকা ও সারা বিশ্বেই এই ভিডিওগুলি মূলত জনপ্রিয় হয়েছে কিছুটা দুর্বল ছাত্রদের কাছেই। অনেকেই আছে যে কলেজে শিক্ষক ত্রিকোনোমিতির একটি অধ্যায় পড়িয়ে চলে গেলেন কিন্তু ছাত্রের জন্য সেইটুকু সময় বা ব্যাখ্যা যথেষ্ট ছিলোনা, তাই বাড়িতে বসে নিজের সময়ে কয়েকবার দেখে নিলে হয়তো জিনিষটা স্পষ্ট হয়ে যেতে পারতো। তাই এই জ্ঞানসাগরের টার্গেট সুপার জিনিয়াসরা না হয়ে একটু দুবলা পাতলা ধরনের শিক্ষার্থী হলেও কোনো সমস্যা নেই।
দ্বিতীয় যে স্পীড ও ব্যান্ডউইথের সমস্যা সেটির ঠেকায় কাজ চালানোর মত একটি সমাধান আছে। সেটি হল, ভিডিওগুলো অফলাইনে ছড়িয়ে দেয়া। আমার বাড়িতে একটু দ্রুতগতির কানেকশন থাকায় প্রায় বারো গিগাবাইটের দেড়হাজারের মত ভিডিও আমার কম্পিউটারে ডাউনলোড করা। কেউ আগ্রহী হলে আমার থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন। আমার পরিকল্পনা হল, এলিফেন্ট রোডের একটি কম্পিউটারের দোকানে আমি এই খান একাডেমীর পুরো ভিডিওর কালেকশন রাখব। কেউ নিতে চাইলে হয় নিজের ল্যাপটপ ইত্যাদি নিয়ে এসে কপি করে নিয়ে যাবেন, অথবা তিনটি ভালো মানের খালি ডিভিডি দিয়ে এক সেট কালেকশন নিয়ে যেতে পারেন। তাতে জ্ঞানটুকু ফ্রি হলেও একটু নিজের গতর খাটানো লাগবে। আশা করি কিছু হলেও আগ্রহী দর্শক পাঠক এথেকে উপকৃত হবেন। আমি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আশা করছি, আরো কয়েকজন এই প্রয়াসকে আরো বেগবান করার জন্য এগিয়ে আসবেন। আমার মনে হয় ঢাকার মধ্যে উত্তরা, মিরপুর, পুরান ঢাকা, মালিবাগ, বনানী এইরকম আট দশটা যায়গায় এক বা একাধিক দোকানে বিনামূল্যে, স্বল্পমূল্যে, নামমাত্রমূল্যে এইগুলোকে পাবার ব্যাবস্থা করে দিলেই হুজুগে বাঙ্গালী হয়তো এই থেকে অনেকটুকুই এগিয়ে নিতে পারবে। ঢাকার বাইরে হলে অবশ্য সমস্যা, তবে সেটার জন্য ভাবছি হয়তো মোবাইলে ফ্লেক্সি করে দিলে আমি কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিতে পারব। আরেকটা অপশন মনে হয়, সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রাবাসগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া। যেখানে একজনের কম্পিউটারে কোন ইন্টারেস্টিং বস্তু ঢুকলে আটচল্লিশ ঘন্টার ভেতরে সারা হলে বা ডিপার্টমেন্টে ছড়িয়ে পড়ে সেখানে এই জিনিষ চললেও চলতে পারে। তবে সব কথার শেষ কথা হল, আপনি যদি মনে করেন সারা দেশে বিলি করা আমার দায়িত্ব তবে মোটামুটি নিশ্চিত যে আসলে কিছুই হবে না, কিন্তু যদি ঠিক করেন যে আমার মেজো খালার ছোট ছেলে, পাশের বাড়ির বদমাশ পিচ্চি আর মহাখালীর চাচাতো ভাই এই তিনজনকে আমি এই বস্তু খাওয়াবো তাহলে হয়তো প্র্যাক্টিকালি করা সম্ভব। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যস্থির করে সেটি অর্জনের চেষ্টা করাই যথেষ্ট।
আমার আগের লেখায় খান একাডেমীর ভিডিও গুলো অনুবাদ করার পক্ষে বিপক্ষে কথা হচ্ছিল। তখন অনেকেই বলেছিলেন যে, ভিডিওগুলির জনপ্রিয়তার মূল কারণ কঠিন বিষয়গুলোক সহজভাবে বুঝিয়ে দেবার জন্য সালমানের দক্ষতা। যেটি বাংলায় একই ঢঙ নিয়ে করা মুশকিল। তার বদলে বাংলায় একই বিষয় নিয়ে আলাদাভাবে ভিডিও টিউটোরিয়াল করার বিষয়ে অনেকে মত দিয়েছিলেন। এইখানে আমি আপত্তি তুলব একটু অকারণেই। আমার আপত্তি এই কারণে, যে সালমান খান বাংলাদেশের ছেলে আর তাকে অলরেডী পাকিস্তানী বানানোর জন্য জোর চেষ্টা ইতোমধ্যে হয়েছে এবং এখনো চলছে। উইকিতে রেফারেন্সের এক্সটার্নাল লিঙ্কে গেলে দেখবেন অর্গানাইজেশন ফর পাকিস্তানি এন্টারপ্রেনুয়ার্সের পৃষ্ঠা থেকে সালমানের জীবনীর রেফারেন্স নেয়া হয়েছে। কদিন পরে হয়তো দেখব যে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় সম্মান ধরণের কিছু দেয়া হচ্ছে আর সেটি উনি গ্রহণও করে নিয়েছেন। তখন আমাদের নিজেদের পক্ষ থেকে দেখানোর মত কিছুই থাকবে না। আশঙ্কা এই জন্য করছি যে, খান একাডেমীর ক্রেডিটস এর পাতায় গেলে স্বচ্ছাসেবীদের তালিকা পাওয়া যায়। তাতে অনুবাদের কাজের জন্য দুজনের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা হয়েছে, একজন স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদের জন্য আর দ্বিতীয়জন উর্দু!
ভালো হোক, মন্দ হোক, জঘন্য হোক, বাংলার ছেলের অসামান্য কীর্তির কয়েকশো ভিডিও বাংলায় থাকবেনা এটা কি হতে পারে?
ফরিদ
প্রশ্ন থাকলে করুনঃ
আপডেটঃ
এই পোস্টটি মূলত একটু হুড়োতাড়া করেই লেখা হয়েছে। খান একাডেমীর ভিডিওগুলোর জন্য অনেকেই ইমেইলে প্রাপ্তিস্থান জানতে চেয়েছেন। দোকান ঠিক করে তার পরে পোস্ট দিলে বেশী পাঠক উপকৃত হতেন। বর্তমানে (৮৩ ল্যাবরেটরী রোড) / এলিফেন্ট রোডের স্মার্ট কম্পিউটারে তিন ডিভিডির ভেতরে সবগুলো ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে। কেউ চাইলে সংগ্রহ করতে পারেন আর যতখুশী কপি পেস্ট করে সবাইরে ফ্রী বিলি করতে পারেন। দোকানে বলেছি তিনটা খালি ডিভিডি নিয়ে কেউ আসলে তারে ফ্রী দিয়ে দিতে আর নাহলে ১০০ টাকা খসায়ে রাখতে। চলে নাকি?
কোন স্বেচ্ছাসেবী যদি ঢাকার অন্য কোথাও দোকান ঠিক করতে পারেন অথবা যারা ডিভিডি বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করেন, তাদের মাধ্যমে ছড়ানোর ব্যাবস্থা করতে পারেন তারাও মন্তব্যের ঘরে যোগ করতে পারেন।
মন্তব্য
মার্কিন প্রবাসী বাংলাদেশী, কথাটা ঠিক হচ্ছেনা। লিখতে পারতেন বাংলাদেশী বংশদ্ভূত মার্কিন নাগরিক।
তানজিরুল আজিম
আপনার বক্তব্য সঠিক, একবার লেখা হয়ে গেছে এখন এডিট করার সুযোগ কই?
=======
ফরিদ
মেইল করে জানান কনট্যাক্ট অ্যাট সচলায়তনে। মডুরা সাহায্য করবে নিশ্চয়ই।
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আপনার আগের লেখা থেকে অনেক প্রথমবারের মতোন জানতে পারি সালমান খানের কথা। তখন ফেসবুকেও শেয়ার করেছিলাম। আজ আরো অনেক কিছু জানলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো থাকুন।
সাবরিনা সুলতানা
তথ্যগুলো জেনে উপকৃত হলাম, ধন্যবাদ।
রোমেল চৌধুরী
সালমান খান যদি বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত হন [কোনো এক সূত্রে দেখলাম তিনি একটি মেইলে এ কথা জানিয়েছেনও], তাকে কি পাকিস্তান রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পারবে? ইউনুসকেও তো পেরু আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দিয়েছে, তো?
সালমান খানের কাজ দেখেছি, চমৎকার আইডিয়া আর ইমপ্লিমেন্টেশন। কিন্তু আমাদের দেশে গণিত শিক্ষার জন্যে এর আক্ষরিক অনুবাদ কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। বরং আইডিয়াটাকে রেপ্লিকেট করা যেতে পারে। নতুন কিছু স্লাইড তৈরি করা যেতে পারে বাংলায়।
১। একজন কীর্তিমানের সাফল্যকে যে কেউই সম্মান জানাতে পারে, তবে আমি সব সময়েই চাইব বাংলাদেশীর সাফল্যে আমরা রাষ্ট্রীও ও বেসরকারীভাবে অন্ততঃ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থাকি। আর বাকি দুনিয়া তাকে আসমানে তুলুক না মাটির তলে চাপা দিক তাতে খুব একটা আসে যায় না।
২। আক্ষরিক অনুবাদ/ভাবানুবাদের পক্ষে আমার যুক্তিগুলো দিয়েছি। তবে বেশ কয়েকজন ইংরেজী ভিডিওগুলোই চেয়েছেন। আশা করছি কাল থেকে দিতে পারবো।
কথা ভুল বলেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন এক হলে নিয়ে গেলেই তা সারা শহরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আমি চিন্তা করছিলাম আমার এক বড় ভাইকে বলবো ডাউনলোড করে দেবার জন্য। মাঝখান থেকে, কিন্তু আপনার এ লেখা পড়ে ভাবছি আপনার কাছে থেকেই নিয়ে নিব। আমার বাসাও এলিফ্যান্ট রোডের কাছেই।
আর বাংলা করতে হলে প্রথমে ইংরেজিটা হাতে পাওয়া দরকার। সেটা না হলে বাংলা করা সম্ভব নয়।
অলস সময়
কোথায় পাওয়া যাবে আপডেটে জানানো হয়েছে। সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
কথা ভুল বলেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন এক হলে নিয়ে গেলেই তা সারা শহরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আমি চিন্তা করছিলাম আমার এক বড় ভাইকে বলবো ডাউনলোড করে দেবার জন্য। মাঝখান থেকে, কিন্তু আপনার এ লেখা পড়ে ভাবছি আপনার কাছে থেকেই নিয়ে নিব। আমার বাসাও এলিফ্যান্ট রোডের কাছেই।
আর বাংলা করতে হলে প্রথমে ইংরেজিটা হাতে পাওয়া দরকার। সেটা না হলে বাংলা করা সম্ভব নয়।
অলস সময়
এই ভিডিওগুলার কোন ট্রান্সক্রিপ্ট নাই। সে একটা টপিক ধরে একটা পর্যায়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। অনুবাদের থেকে নতুন ভিডিও বানানো সোজা হবে যদি ঐরকম একটা স্টাইলাস থাকে আপনার। আর অনুবাদ করলে ফ্লুয়েন্সিটা নষ্ট হয়ে যাবে, যেটা এই ভিডিওগুলার মূল আকর্ষন।
খান একাডেমির সাইটে অনুরোধ করেছিলাম বাংলা ভিডিওর জন্য, হয়ত সালমান খান নিজেই করতে পারবেন। ডীন ব্রিটল নামে একজন উত্তর দিয়েছেন, আমি আগ্রহী হলে কিভাবে অডিও ফাইলটা বাংলা দিয়ে পালটে দিতে পারি, অন্যান্য ভাষার অনুরোধেও একি উত্তর দিচ্ছেন।
যেই করুক না কেন, তার সহজভাবে বোঝানোর ক্ষমতা সবচে জরুরী।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
সালমান খান কি নিজেকে বাংলাদেশী বংশদ্ভূত হিসাবে পরিচয় দিতে আগ্রহী নন? উনি গণমাধ্যমে কথাটা স্পষ্ট করে বললেই তো পাকিরা উনাকে নিয়ে মাতামাতি করার চান্স পায়না।
বাংলা ভাষায় এই ভিডিওগুলোর মতো করে টিউটরিয়াল আমাদের দেশে বসে করা কঠিন কিছু না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুখড় ছাত্ররা এই কাজে এগিয়ে আসতে পারে। এতে করে অবশ্য আমাদের দেশে 'প্রাইভেট কোচিং' ব্যবসার বারোটা বাজার সমূহ সম্ভাবনা!
সত্যান্বেষী
প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যে আছি, তাই এই প্রসংগে কয়েকটা কথা বলি বলি করেও আর বলা হয় না।
হয়তো সালমান খানের মতো প্রাঞ্জল না ( হয়তো বললাম, কারণ তুলনার ব্যাপার আপেক্ষিক), তবে বাংলাদেশেও কিন্তু বাংলাতে এই ধরনের ভিডিও টিউটোরিয়ালের কাজ হয়েছে।
এখানেই অনেক হয়তো দেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠাণ পাই ল্যাবসের নাম শুনেছে। অত্যন্ত ব্যতিক্রমী এবং প্রশংসনীয় উদ্যোগটির পিছনে আছেন কয়েকজন প্রাক্তন বুয়েটের ছাত্র (আরো হয়তো কেউ আছেন- যাদের নাম আমি জানি না। এমন হয়ে থাকলে তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী)। ইলেকট্রিক্যালের গত পাঁচ সাত বছরের অনেকেই তাঁদের চিনবেন। বিশেষত সোহাগ ভাই খুবই জনপ্রিয় মুখ- শুধু বুয়েটেই না, অনেক অল্প বয়সী কিশোর কিশোরীদের মধ্যেও। এছাড়াও মিখাইল ভাই, মাসুম ভাই (দুইজনই পরবর্তীতে বুয়েটের লেকচারার ছিলেন)দের নামও অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
যাই হোক, মূল প্রসংগে ফিরে আসি। এই সোহাগ ভাই, মাসুম ভাই, মিখাইল ভাইদের একটি প্রজেক্ট ছিলো এই ধরনের ভিডিও টিউটোরিয়াল বানিয়ে বিনামূল্যে উচ্চ মাধ্যমিক কিংবা মাধ্যমিকের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা। আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো কয়েকটা টিউটোরিয়ালের সাথে খুব সামান্য পরিসরে যুক্ত হওয়ার। ভিডিওগুলি দেখে আমি রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছিলাম। সোহাগ ভাইয়ের পড়ানোর দক্ষতা ঈর্ষণীয়, ভেক্টরের কঠিন কঠিন বিষয়গুলির উপরে তিনি এতো সাবলীলভাবে বলছিলেন যে, যে কেউ খুব সহজেই এর সাথে নিজেকে কানেক্ট করতে পারবে। এরকম আরো কয়েকটা ভিডিও দেখেছিলাম- সবকটিই দারুণ। পরবর্তীতে নানা ব্যস্ততায় আমার সেই প্রজেক্টে সময় দেওয়া হয়নি, তাই ঠিক জানি না, কতোদূর সফল হয়েছিলো সেই প্রজেক্ট।
এ প্রসঙ্গে আরেকটা কথা মনে পড়লো- গত পাঁচ সাত বছরে বুয়েটে মাইক্রোকন্ট্রোলার জনপ্রিয় করার পিছনে যে ক'জন লোকের নাম আসবে, পাই ল্যাবসের এই গবেষকরা তাঁর সামনের দিকেই থাকবেন আশা করি। শুরুতে তাঁরা পাই ল্যাবসের অফিসেই একটি ক্লাসে মাইক্রো কন্ট্রোলারের উপর ক্লাস নিতেন- উদ্দেশ্য নিছক কোচিং নয়, বরং তাঁদের সাথে কাজ করার জন্য কিছু গবেষক খুঁজে বের করা। আমার সৌভাগ্য ছিলো সেই ক্লাসগুলি করার। সারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কোনদিন ঝালাই করা শেখার সুযোগ হয়নি, কিন্তু পাই ল্যাবসে নিজের মাইক্রো কন্ট্রোলার বোর্ড বানানোর জন্য ঝালাই তো বটেই, হাতে কলমে আরো অনেক কিছুই শিখে গিয়েছিলাম। সেদিন শুনতে পেলাম, মাইক্রো কন্ট্রোলার আর তাঁরা ক্লাস নিয়ে শেখান না, বরং সবকটি ক্লাস সুন্দর করে ভিডিও টিউটোরিয়াল হিসেবে রেকর্ড করে, হলের ল্যানগুলিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যে কেউ বিনামূল্যে এই ভিডিওগুলি সংগ্রহ করে মাইক্রোকন্ট্রোলার শিখে নিতে পারে।
যাই হোক, আজ থামি। পাই ল্যাবস কিংবা এর পিছনের লোকদের নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে মনে হয় না এতো অল্পে সারা যাবে। আর আমিও সেই কথাগুলি বলার জন্য পার্ফেক্ট লোক না। আমার মনে হয়, পাই ল্যাবসকে খুব কাছের থেকে চিনেন, এমন কেউ সচলায়তনে লিখে জানাতে পারেন। এতো চমৎকার উদ্যোগের কথা সবার জানা দরকার।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
এই ধরনের কাজ বাংলায় হয়েছে জেনে খুব ভালো লাগলো। ভিডিওগুলোর লিঙ্ক পাওয়া যাবে কোথাও?
কর্মসূত্রে মাইক্রোকন্ট্রোলার নিয়ে কাজ করতে হয়েছে অনেকদিন। আমার এক বন্ধু এরকম একটা এম্বেডেড বোর্ড নিয়ে কিছু কাজ করার জন্য ঢাকায় লোক খুঁজছিল (২০০৭/২০০৮ সালে), আমি বুয়েটিয়ানে লিস্টে একটা পোস্ট দিয়ে বেশ কিছু রেসপন্স পাই। ভালো লেগেছিল খুব, যে এটা দেশে এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে। এই টিউটোরিয়ালগুলোর লিঙ্ক কেউ দিলে খুব খুশি হব।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সবজান্তাদা, গেল টার্ম প্রজেক্টে মিকাইল স্যারের ভিডিওগুলো দস্তুরমত কাজে দিয়েছিল, মাইক্রোকন্ট্রোলারের মত বিষয় এত সহজে উপস্থাপন করা চাট্টিখানি কথা নয়।
--------------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
আমি সৌভাগ্যবান যে আমি একটা কোর্সে মাসুম স্যার ও মিকাইল স্যার'কে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম। তখন তাদের ভিডিওগুলো সদ্য তৈরি হচ্ছে। আমার মনে আছে, আমাদের টার্ম প্রজেক্টের শেষে তারা আমাদের দিয়ে সেই প্রজেক্টগুলোরও ভিডিও তৈরি করিয়ে নিয়েছিলেন (যদিও আমার ক্র্যাপ ভিডিও দেখে কারো পক্ষে ঐ প্রজেক্ট আবার তৈরি করা আদৌ সম্ভব কি-না সে সন্দেহ রয়ে গেছে)।
যাই হোক সচলবাসী, মাসুম হাবিব ও রাজিব মিখাইল-- এই দু'টো নাম মনে রাখুন। যদি আম্রিকাশরিফের সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি এদের আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে না যায়, তবে এদের নাম আরো শুনতে পাবেন আশা করি।
আর পাই ল্যাবসকে নিয়ে আসলেই কিছু লেখা দরকার। সবচেয়ে দারুণ হয় যদি এর উদ্যোক্তারা নিজেরাই লেখেন। কেউ সোহাগ ভাইকে বলবেন?
পাই ল্যাবসের ওয়েবসাইট পাবেন এখানে। তবে আর দশটা বাংলাদেশি সাইটের মত এটারও বেশ ক'টা লিঙ্ক কাজ করে না
চমৎকার উদ্যোগ।
কাকস্য পরিবেদনা
pi labs এর ভিডিও গুলার youtube link গুলা কি দিয়া যাই এই পোস্ট এ . পোস্ট খুব ভালো হইসে . ধনে পাতা
এটা যে কোন ধরনের ব্লগে আমার প্রথম লেখা। লেখা লেখির ব্যাপারে আমি খুবই অলস। আমার এক ফ্রেন্ড এর কাছ থেকে এই পোস্ট এর কথা জানতে পারলাম। পড়ে খুবই ভাল লাগল এবং উৎসাহ বোধ করলাম। এতটাই উৎসাহ যে, জীবনের প্রথম পোস্ট লিখতে বসে গেলাম।
পাই ল্যাবসের পক্ষ থেকে আমাদের যে উদ্দোগ, ওটা নিয়ে আমার লেখার ইচ্ছা আছে। সময় নিয়ে লিখে ফেলব।
আর আমাদের তৈরী করা ভিডিও গুলোর লিঙ্ক খুব তাড়াতাড়ি ইউ টিউবে দিয়ে দিব ইনশাল্লাহ।
আপনার লেখাগুলি ছড়িয়ে দেবার চেষ্টাটা অত্যন্ত ভাল একটা উদ্যোগ। কথার কাজের বেশী। অন্তর থেকে ধন্যবাদ।
অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম
আজকেই গুগলে খান একাডেমী লিখে সার্চ দিয়ে আপনার এই লেখাটি আমার চোখে পড়ল । ভাই আমার বাসা দিনাজপুরের রানীরবন্দরে । আপনি ভিডিওগুলো অফলাইনে ছড়িয়ে দিতে চান শুনে খুব ভাল লাগল । আপনার উদ্দোগকে সাধুবাদ জানাই । আমার ও ভিডিওগুলো খুব দরকার । আমি কি আপনার সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ করতে পারি ? আমার ইমেইল-
নতুন মন্তব্য করুন