শুরুতে স্নুজ বাটন চেপে চেপে ঘুম চালিয়ে যেতাম, এখন আর ওই কষ্ট করিনা। অ্যালার্ম বেজে ওঠা মাত্র বন্ধ করে দেই, তারপর যেসময়ের পর ঘুমালে ক্লাস বা মীটিং মিস হয়ে যাবে সেইসময়ে জেগে উঠে ব্রাঞ্ছ সেরে পিঠের ঝোলায় ল্যাপটপ আর বই পুরে হাটা দেই বাস-স্টপের দিকে। এভাবে দিন শুরু হয় সকাল দশটায় কি দুপুর একটায়।
ছোট শহর, হেটেই পুরোটা পাড়ি দেয়া যায়। ফ্রী বাস, আর রাস্তা যতই সুবেশা () বালিকাতে পরিপূর্ণ থাকুক, তাও একা একা হাটাটা ঠিক রোমান্টিক মনে হয়না, তাই বয়সের ভার ক্লান্ত পায়ের উপর চাপ না বাড়িয়ে বাসেই চড়ে বসি। দশ মিনিটে পৌছে যাই ডিপার্টমেন্টে, নিজের অফিসে ঢুকে বিশাল মনিটরে নিজের অসহায় চেহারার দিকে তাকাতে তাকাতে পিসি অন করি । তারপর নিরূপায় সময়যাপন শেষে অনিচ্ছুক পদক্ষেপে ক্লাস কি গ্রুপ মীটিং এ নিজের উপস্থিতি জাহির।
ক্লাসগুলো এত লম্বা, বুয়েটের পঞ্ছাশ মিনিটের ক্লাসগুলিকে জীবনে প্রথমবারের মত মিস করতে থাকি। প্রফেসর ক্লাসে বকে যায়, আমি নিয়মিত ঘড়ি চেক করতে থাকি। এই রেস ক্লান্তিকর ঠেকলে কখনো কখনো দুই একটা প্রশ্ন ও করে বসি। গ্রুপ মীটিং এর অবস্থাও এর চেয়ে খুব একটা আলাদা কিছুনা, কেউ না কেউ কোন একটা কঠিন বিষয়ে বাকিদের আলোকিত করার চেষ্টা করে। আর আমি কিছুই বুঝতে পারিনি ভাবটা ঢাকার জন্য মাঝে মাঝে দুয়েকটা প্রশ্ন করে নিজের উপস্থিতি জানান দেই। তারপর সব শেষ হলে, বাসস্টপ পর্যন্ত হেটে যাওয়ার অনিচ্ছাতেই, হোক আর বেচে আছি সেটা নিজেকে জানান দিতেই হোক হেটে হেটে বাড়ি ফেরা। তারপর রান্নার চেষ্টা। প্রতিবার রান্নার শেষে অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা হয় কিছু অমূল্য জ্ঞান, “হলুদ একটু কম দিতে হবে ”, “মরিচ আরেকটু দিলে ভাল”, “রসুন না দিলেই ভাল হত”, ...,“হলুদ একটু কম দিতে হবে ”। ঘুরেফিরে একই জ্ঞান, মোক্ষ লাভ আর হয়না। তবু নিজের রান্না নিজেরই জন্য, তাই কোনভাবে খেয়ে নিই। আর নাহয় ছবি তুলে ফেসবুকে আপ করি। এভাবেই শেষ হয় একেকটা দিন।
তবু সবকটা দিন একই ভাবে শুরু হয়না, শেষ ও হয়না একই ভাবে। তখনো সোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বার (SSN) এর জন্য অ্যাপ্লাই করা হয়নি। আগের একটা ডেট মিস করেছি, তাই ভোরবেলা জেগে উঠে ইন্টারন্যাশনাল অফিসে সবার আগে হাজির। অনেকক্ষন অপেক্ষা করেও যখন অন্য কাউকে দেখতে পেলামনা, তখন ক্যালেন্ডার চেক করে দেখা গেল, আমি চব্বিশ ঘন্টা আগেই চলে এসেছি। কাচা ঘুমের বিরক্তির সাথে আচমকা এসে যোগ দেয় একমাস আগে ছেড়ে আসা স্বদেশের জন্য কষ্ট। আর মনে হয় তল্পিতল্পা গুটিয়ে এবার দেশের দিকে হাটা দেই। যদিও বাস্তববুদ্ধি অ্যাপার্টমেন্টের দিকেই হাটতে প্ররোচিত করে, তবুও মন জুড়ে বইতে থাকে ঝড়, সবকিছুকে বড় নির্মম মনে হতে থাকে। একটা লোকও কি আমাকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেনা, ছেলে তোমার দুঃখ কিসের?
আমি থাকি প্রায় বাঙ্গালী বর্জিত শহরে, তাই সামনা সামনি বাংলায় কথা বলা হয়না প্রায়ই। মাঝে মাঝে নিজেকে বোবা মনে হতে থাকে। তাই বেপরোয়া হয়ে ফোন করে আগের দুই/তিন মিনিট একনাগাড়ে কথা বলার রেকর্ড ভেংগে প্রগলভ হয়ে যাই কখনো কখনো।
তবে সব দুঃখ ভুলিয়ে দিতে মাঝে মাঝে আমার কোর্স টিচার আর অ্যাডভাইজর এগিয়ে আসেন; একগা্দা কুইজ, অ্যাসাইনমেন্ট, পরীক্ষা আর পেপার নিয়ে।
সজল
০৯/১০/২০১০
মন্তব্য
শহরটার নাম জানতে ইচ্ছে করে। বাঙালী নেই এমন শহরও দুনিয়াতে আছে নাকি? এমনকি নোয়াখালী অথবা সিলেটেরও কেউ নেই :-)? যাইহোক, ভালো থাকুন।
চ্যাপেল হিল। বাঙালী নেই তা কিন্তু না, বাংলাদেশি দুইটা পরিবার আছে জানি, কিন্তু তাদের সাথে দশ-বারো দিন পরপর দেখা হয়। তবে ভারতীয় বাঙালী কিছু আছে। এইজন্যই "প্রায়" ব্যবহার করলাম
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সজল
আপনার কথায় মনে হচ্ছে "ভারতীয় বাঙ্গালী"রা অচ্ছুৎ, তাদের সাথে মেশা যায় না!
আমার কথায় এমনটা মনে হলে খুবই দুঃখিত। এখানে ক্ষুদ্র হলেও আমার একটা বন্ধু সার্কেল গড়ে উঠছে, যার একজন ভারতীয় বাঙালী। এখন বলি কেন আলাদা করে "ভারতীয় বাঙালী" উল্লেখ করেছি।
এখানে দেখেছি এক দেশীয় হলে নিজেদের মাঝে যোগাযোগ থাকে। যেমন ভারতীয় একটা স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন আছে, যেখানে সবাই প্রায়ই যায়। কিন্তু আমার সাথে তাদের দেখা বা কথা প্রায় হয়ই না। একদিন তিনজন কে বাংলায় কথা বলতে দেখে নিজে থেকেই কথা শুরু করেছিলাম, কিন্তু সবারই তাড়া থাকায় আর নাম্বার নেয়া হয়নি। ওই পর্যন্তই। চ্যাপেল হিলে বাংলাদেশী অনেকে থাকলে হয়ত সবার উপস্থিতি এমনিতে জেনে যেতাম, নিয়মিত গেট-টুগেদার হত। আশা করছি বুঝাতে পারলাম।
সজল
চমৎকার লেখা। আপনার লেখার হাত বেশ ভাল।
কাকস্য পরিবেদনা
ধন্যবাদ দ্রোহী, আমার লেখায় আপনার উৎসাহমূলক মন্তব্য দেখে লেখার সাহস বেড়ে যাচ্ছে। ভাল থাকবেন।
সজল
লেখার শেষাংশে পৌঁছানোর আগেই বুঝতে পারছিলাম লেখক কে...
যাবতীয় বিষাদছোঁয়া লেখাই আমার ভাল্লাগে!
ভাল থাকুন, নিয়মিত লিখুন...
ইয়ে, বানানে একটু নজর দিন!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হাহা, একই রকম লেখার হাত থেকে বের হতে পারছিনা তাহলে । বানান নিয়ে আসলেই কোন আত্মবিশ্বাস নেই, মাঝেমাঝে গুগলে সার্চ দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে খুশি হব।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
সজল
রিপিটেশন নয় কিন্তু, বোঝাতে চেয়েছি আপনার লেখার নিজস্ব ধাঁচের কথা..
ঝরঝরে ভঙ্গি পাঠককে আরাম দেয়!
আমি নিজেই ভুলের ডিপো,
তবু দু- আনা পেয়ে যাবেন ঠিকই!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ আবার ও
সজল
সুন্দর লেখা। বাঙালী নেই তাতে কি? বিদেশি বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে ওদের মত করেই নাহয় কাটিয়ে দেন ক'টি দিন। সব কিছুরই মজা আছে।
সচলায়তনে আপনার আরো লেখাপড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বিদেশী বন্ধুদের সাথেই কাটিয়ে দিচ্ছি মোটামুটি। তবু মাঝে মাঝে কিছু একটা চেপে বসে। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আর, আপনার আবজাব লেখাগুলি অনেক ভাল লাগে।
সজল
সেই থেকে আছি তো আছিই। একসময় এই দেশ, এই শহর, এই শহরের বাসগুলো, এই শহরের পাখিগুলো, এই শহরের মেঘের দল, এই শহরের শরত আর বসন্ত, কিংবা শীত-- সবই ভালো লাগা শুরু হবে। মনে হবে নিজের দেশ নিজের মাটি। কিন্তু তার পরেও কোন এক সন্ধ্যায়, কিংবা ভোরে, হঠাৎ করে "ধন ধান্য পুষ্প ভরা গানটি নিজের অজান্তেই বেজে উঠবে হৃদয় তন্ত্রীতে। দেখবেন চোখ ভেসে যাবে জলে, কণ্ঠ যাবে ভেঙে। বুঝবেন যতটা ভালোবেসেছিলেন বাংলা নামের দেশটাকে, সেই ভালোবাসা আসলে হৃদয়ের আরো বেশী গভীরে প্রথিত। জন্মভূমির জন্য প্রেম, ভালোবাসা কোন কিছু দিয়েই প্রতিস্থাপন করা যায় না।
নিয়মিত লিখুন।
আসার পরপর দেশের কথা মনে আসা মাত্র কিছু একটা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়তাম। ভালই চলছিল কিছুদিন, তারপর দেখলাম সব বাঁধ একসময় ঠিকই ভেঙ্গে যায়। আমি এখন প্রতিসপ্তাহে অন্তত একবার দেশে ফিরে যাওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করি, কিন্তু ঠিক সাহস হয়না। আপনার কথাই হয়ত ঠিক, একদিন ঠিক ভাল লেগে যাবে সবকিছু। আপনার মন্তব্যে খুবই ভাল লাগল, দেশের প্রতি ভালবাসা মনে হচ্ছে টের পাওয়া শুরু করেছি ইতিমধ্যে
সজল
চ্যাপেল হিলে একগুচ্ছ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি আছে আমার ইউনির। তাদের কাছে শুনেছি, জায়গাটা সত্যিই ফাঁকা ফাঁকা, আপনার প্রথম প্রথম তো অমন লাগবেই।
ডর্মের লাইফ খুব ইন্টারেস্টিং হয় অনেকের, অনেকের খুব বোরিং। আশা করব আপনারটা বেশ মশলাদার হবে, তারপর আপনার হাতের গুণে এক্কেবারে 'স্পাইসি' হয়ে সচলে পরিবেশিত হবে। পাত পেড়ে বসে রইলাম।
আমার ডিপার্টমেন্টে দুইজন বাঙালি আছে, আমার বাংলায় যতটুকু কথা হয় তার বেশিরভাগ তাদের সৌজন্যে। ডর্মের লাইফ তেমন ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছেনা, তবে মানুষ সবকিছুকেই ইন্টারেস্টিং করে তুলতে পারে, এটাই ভরসা।
আপনার পাতে ভাল কিছু দেয়ার চেষ্টা করব
সজল
ডর্মে রান্নার দিকে যাচ্ছেন যখন, এই চামে হিম্ভাইয়ের 'বালিকা, তোমাকে চুমু' রান্নাটা শিখে রাখুন, সুযোগে খেতে পারবেন।
হা হা, ওইটা পড়ে হাসতে হাসতে শেষ। দেখি রান্না নিয়ে গবেষণাকর্মের বর্ণনা ও লিখে ফেলতে হবে।
সজল
প্রায় ডুপ্লি, এটা পাবলিশ হয়েছে, খেয়াল করিনি।
সজল
সজল...তোমার মাঝে আমি আনিসুল হক আর আসিফ নজরুলের (মন্দার্থে না...লেখার স্বকীয়তা আর সুপাঠ্যতা বুঝাইসি ) ব্লেন্ড দেখতে পাচ্ছি। কয়দিন পর না দেখি Dr. Dash উপন্যাস লিখা শুরু করসে :D।
এনিওয়ে, যথারীতি ভাল হইসে। নর্থ ক্যারোলিনাতে তুষারসহ অনেকেই আছে...বেশি মন খারাপ হলে ঢুঁ মারতে পার
আর নেক্সট ফল থেকে আমাদের সৈকত (URP)কে ও প্রতিবেশি হিসেবে পাইতে পার।
নোবেলদা, শরমিন্দা হইলাম । তুষারদার সাথে দেখা করতে যাব একদিন। সৈকতদা আসলে তো খুবই ভাল হয়।
সজল
আপনের অবস্থাটা বুঝতে পারতেছি। ফার্স্ট সেমিস্টার আমারো প্রায় একই গেছে। প্রায় ৩ মাস অল্প কয়েকজন বাঙ্গালী আর গাদা খানেক বিদেশী লোকজনের সাথে কাটানোর পর যেদিন এইখানকার বাঙ্গালী কমিউনিটি ইফতারে গিয়ে নানী-দাদী বয়সের থেকে শুরু করে ন্যাদা পোলাপাইনের গ্যাদারিং দেখলাম, বহুত কষ্টে হাউ-মাউ কান্না ঠেকাইছি।
চ্যাপেল হিল জায়গা হিসাবে চমৎকার, সেইটাকে এনজয় করার চেষ্টা কইরেন। কয়েক বছর পর চইলা গেলে তখন দেখবেন মিস করতেছেন
আমি আসার কিছুদিন পরই পাশের শহরে একটা ইফতার পার্টিতে গিয়েছিলাম, অনেক বাঙালি দেখে খুব খুশি লাগছিল। কিন্তু এখন আর তেমন যোগাযোগ হয়না, ভূগোল অনেক কিছুতেই ভূমিকা রাখে। চ্যাপেল হিলকে সবাই সুন্দর বলে, কিন্তু কেন জানি আমার কাছে এখনো তেমনটা লাগছে না । তবে ধীরে ধীরে লাগতে শুরু করবে আশা করি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
সজল
সজলের লেখা চমতকার। সময় সুযোগ পেলেই লিখো কিন্তু। সচলে আমার আসা হয় না একেবারেই, লিংক ধরে ধরে মাঝে মাঝে আসি। তুমি কি এখানে নিয়মিত লিখ? লিখলে ফেইসবুকে শেয়ার দিও।
রন্টি
রন্টি ভাই, অনেক ধন্যবাদ। আমি এখানেই লিখি, তবে খুব একটা নিয়মিত না। তবে যে কয়টা লিখি, ফেসবুকে শেয়ার দেয়ার চেষ্টা করি
সজল
চমৎকার লেখার হাত।আর এমন লেখা পড়লে আমার নিজের খুব মন খারাপ হয়ে যায়। মনে পড়ে যায় ঠিক এমনি করে আমার ছেলেকেও নিজের হাতে রান্নাবাড়া করে খেতে হয় ,ক্লাসে যেতে হয়।
অনেক শুভকামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। মন খারাপ করবেননা, আমরা রান্না নিয়ে আমাদের যতটা কষ্ট হয় বলে দেখাই, ততটা আসলে হয়না । একটু প্ল্যান করে করতে পারলে কম পরিশ্রমেই ঝামেলা মিটে যায়।
সজল
দিনপঞ্জি ভালো লাগলো। বানানে যদিও মাঝে মাঝে একটু হোঁচট খেয়েছি
ধন্যবাদ । বানান নিয়ে নিজেই লজ্জিত। অঙ্কুরের স্পেলচেকার এ্যাড অন ইনস্টল করেছি, দেখি কিছু উন্নতি হয় কিনা।
সজল
মন ছুঁয়ে গেল!
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
সজল
লেখা পড়তে পড়তে কেন যেন মনে হল আপনারই লেখা। চলুক ব্লগাব্লগি।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ধন্যবাদ । এখন থেকে ট্যাগে লিখে দিব, "এটা আমার লিখা না"
সজল
ভাল আইডিয়া!
হ, অনেকের মতই আমিও বুঝতার্সিলাম যে আপনে লিক্সেন... ভাল্লাগসে কিন্তু।
ভালো মত পড়াশুনা কইরেন, মানুষের মত মানুষ হইয়েন, দেশের মুখ উজ্জ্বল কইরেন...
_________________________________________
সেরিওজা
প্রথম ভয় পেয়ে গেছিলাম, আমার বাবা-কাকা ছদ্মনামে ব্লগে কমেন্ট করতে আসল কিনা । পরে আবারো আপনার নাম দেখে নিশ্চিত হলাম
ভালো লাগাতে ভালো লাগল।
সজল
পড়ে মনে হচ্ছিল আমার জীবনের কাহিনী আবার কে লিখছে। আমিতো কাউকে বলিনি! আমিও থাকি সবুজ সুন্দর প্রকৃতির মাঝে কিন্তু মনে হয় গভীর অরন্যে একা। আর দেশে ফিরে যাওয়ার তাড়াটা একবছর পরও যাচাই করে দেখি।
অনন্ত
কপিরাইটের মামলা করে দিয়েন না কিন্তু । ফিরার আগ পর্যন্ত এই যাচাই চালিয়ে যেতে হয়, মনে হয়।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
সজল
চমৎকার লেখা দাদা,পড়ে ভালো লাগল আবার মনটা খারাপও হয়ে গেলো।ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ শুভ্র। তুমিও ভালো থেকো।
সজল
প্রকৃতিপ্রেমিক-ই ত সব বলে দিল। এই সব অনুভূতি আসবে যাবে, কিন্তু কখনই বিদায় নেবার নয়। আপনি জ্ঞানসাধনার জন্য গেছেন, ইচ্ছা থাকলে ফিরেও আসবেন, দেশ ত পালিয়ে যাচ্ছে না। সুতরাং, হাকুনা মাটাটা।
লেখা ভাল লাগল ভাইয়া। এরকম লেখা গল্প ক্যাটাগরিতে পাইলে আরো ভাল লাগত। ভাল থাকবেন।
এই আসা-যাওয়ার মাঝে থাকা অনুভূতি গুলো আসলে অমূল্য। হুম, দেশ থাকবে, দরকার নিজের এখনকার মত থেকে যাওয়া।
লেখা ভালো লাগায় খুশি হলাম। তবে গল্প ক্যাটাগরির কিছু লেখার সাহস এখনো হয়নি।
সজল
আপনার লেখার স্টাইলটা সুন্দর। লেখাটা পড়তে ভালো লাগল। আর ক'টা দিন যেতে দিন। ধীরে ধীরে আরকটু অভ্যস্থ হয়ে গেলে এত কষ্ট হবে না। নতুন শহর, নতুন জীবনও এক সময় ভালো লাগবে দেখবেন। দেশের প্রতি ভালোবাসা, দেশের জন্যে মন কেমন করা তো থাকবেই, সেটা চলে গেলে তো আর আপনি আপনি থাকবেন না! কিন্তু নিজের দেশের মানুষ না পেলেও যাদেরকে আশে পাশে পাচ্ছেন বন্ধুত্ব করে ফেলুন। ঘুরে ফিরে মনে হয় সব দেশের মানুষই কম বেশি একই রকম। আর যা-তা হোক, মজার হোক, সব অভিজ্ঞতা লিখে ফেলুন। আমরা পড়ে ফেলি!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি, কিছুটা হয়তো হয়েও গেছি।
আপনার এই পর্যবেক্ষণের সাথে একমত। কিছু বন্ধুত্ব আসলে গড়ে ও উঠছে। আর লিখে ফেললে আসলেই ভালো লাগে, বেশ একটা আড্ডার মত হয়ে যায়।
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
সজল
আপনার জন্যে একটা গান খুঁজে বের করে পোস্ট করতে আসলাম।
Jason Mraz - Life is Wonderful
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শুনলাম, অনেক ভালো লাগলো। চমৎকার গানটার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
"It takes some silence to make sound"--আসলেই
সজল
অনেকেই বুঝলেন এইটা আপনি লিখছেন, আমি কেনো বুঝলাম না এইটা কে লিখলো!
বালিকা বুঝলেন! বালিকা যোগাড় করে ফেলেন। না, দুষ্টু কথা মনে আনবেন না যেনো। বলছিলাম, গল্প করার জন্য। কথা বলার জন্য। তার সাথে আকাশ-বাতাস-ফুল-পাখি এগুলো নিয়ে কথা বলবেন, কিন্তু ভুলেও প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা এগুলো নিয়ে কথা বলবেন না! মনের দুঃখ ঘোচাতে তার সাথে দুয়েকটা বাংলা শব্দও ব্যবহার করতে পারেন। বুঝলে বুঝলো, না বুঝলে নাই। আপনের বলা দরকার, আপনে বলছেন। বাকিটা আল্লা ভরসা।
আর নিজের সাথে কথা বলবেন বেশি বেশি। অবশ্য তখন লোকে পাগল টাগল ভেবে বসতে পারে। এইটারও অবশ্য একটা উপায় আছে। মনে মনে একটা চরিত্র তৈরী করবেন (যদি বাস্তবে না থাকে)। চরিত্রটা হবে আপনার প্রেমিকা কিংবা পরিবার। তারপর সকালে ঘুম থেকে উঠে, হাত-মুখ ধুতে ধুতে, বাসের জন্য দৌড়াতে দৌড়াতে, বাসে উঠে হাঁপাতে হাঁপাতে, বাস থেকে নেমে একটা ক্রসোঁ আর এক কাপ চা কিনে হাঁটতে হাঁটতে, দুপুরের ঘুমের তোড়ে অনবরত হাই তোলার মুহূর্তে, বিকেলের চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কিংবা সন্ধ্যায় ঘরে ফেরার পথে শুরু করে দেন তার সাথে আলাপ। দেখবেন সেই আলাপ কেমন করে কাইজ্যায় রূপ নিয়েছে। আর সেই কাইজ্যায় আপনার বিশাল ব্যবধানে পরাজয় অবলোকন করার পরে দেখবেন সময় আর বেশি অবশিষ্ট নাই। এইবার ঘুম দিতে হবে।
এভাবে প্রতিদিন সকাল বিকাল দুই ডোজ হিসেবে এই পথ্য পালন করেন। মন উদাস হবে কখন? টাইম পেতে হবে না?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
দুনিয়াতে কত লেখা, তার কত লেখক। সব বুঝতে যাবেন কেন আপনি, আপনার অন্য কাজ আছে না?
বালিকার বুদ্ধিটা মনে ধরলো। বাংলা বুঝেনা, এমন কেউ হলেই আরো ভাল। চাই কি বাংলায় "প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা" নিয়েও কথা বলে ফেললাম, যেহেতু বুঝতে পারছেনা, সেহেতু মাইর খাওয়ার চান্স ও তেমন নাই। কিন্তু আপনি এইটা নিয়ে কথা বলতে না করছেন কেন? কোন বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা আছে নাকি এর পিছনে?
নিজের সাথে মনে মনে কথা বলি প্রায়ই, তবে বেশিদিন এটা চালালে মনে হয় একটু পাগলামি শুরু হয়ে যেতে পারে। সময় কাটানোর জন্য, মাঝে মাঝে লাঞ্চ কিনে আনতে গিয়ে বিশ-বিশ চল্লিশ মিনিট খরচ করি। তবে চাপ যেভাবে বাড়ছে, তাতে আশা করি আর কোন ফন্দি-ফিকির করা লাগবে না অদূর ভবিষ্যতে। দৌড়ের চেয়ে কাজের জিনিস আসলে আর নাই।
আপনার আন্তরিক মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ
সজল
দুঃখবিলাসীর লেখাতে
কয়টা দিন যাইতে দ্যান, ক্যারমে ক্যারমে সব ভাল লাগতে শুরু করবে।
ধন্যবাদ। ক্যারমে ক্যারমের উপর আমার অগাধ আস্থা।
সজল
নতুন মন্তব্য করুন