চিন্তার বিভাজন

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ২৩/১০/২০১০ - ৫:১৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকাল ঢাকায় একটা চোখে পড়ার মত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। মানুষ যেন কেমন একটা ধর্মভিত্তিক মেরুকরণে বিভাজিত হয়ে যাচ্ছে। এই বিভাজন ক্রমশই স্পষ্ট ও প্রদর্শিত। আর একটু খোলাসা করে বলি। অফিস-আদালতে এখন প্রচুর মানুষজন দেখি টুপি,লম্বা আলখাল্লা,মাথায় কাপড় দেয়া এমনকি একেবারে পূর্ন বোরখা মানে খালি চোখ দেখা যায় আরকি। একই সাথে একই টেবলে দেখা যায় আবার স্যুট, শার্ট, উত্তেজক বক্তব্যধারী টিশার্ট কিংবা বুকের কাছ পর্যন্ত সাইড-ফাঁড়া কামিজ। সাধারনভাবে বললে কোনটাতেই কোন সমস্যা হবার কথা নয়। তাহলে বলবেন খামোখা ব্লগ লেখার চেষ্টা করছেন কেন? আসলে ব্যপারটা ব্যক্তিগত পোশাক নিয়ে না। সামষ্টিকভাবে দেখলে এই বিভাজন রেখাটা বেশ প্রকট। আরো প্রকট যার যার দলে টানার প্রচেষ্টা। মধ্যপথটাই যেন এখন একটা অপরাধ। বিশ্বাসের ঘুর্নিপাকে না ঘুরলেই পাঠান হতে থাকে উদ্বুদ্ধকরণ মেইল, কফি টেবলের পাকড়াও মিটিং কিংবা সিগারেটের সাথে মতদর্শিতার মিশেল। মাঝে মাঝে মনে হয় বলে ফেলি, নিজের ভোট নিজে দেব, যাকে খুশি তাকে দিব। ভয়ে নিজের কাছেও বলি না যে 'না' ভোট দিতে চাই। চাই আমার মত থাকতে। আমার অজানার অসীমের মাঝেই আমি খুশি। আমি আমার মত করে জানতে চাই। যেটা বলছিলাম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকা অবশ্যই উচিত। তবে প্রকাশিত মতের পোশাকী প্রতিফলনটাই বেশী বেশী হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে এই দুই গোত্রকেই একটু বাড়ি দিয়ে দেখি বিশ্বাসের গভীরতা কতটুকু। তলের ছোঁয়া পেতে বেশী কিছু করতে হয় না। বিশ্বাসের চেয়ে ফ্যাশনের প্রতি সবারই আকর্ষণ বেশী। নিজেকে প্রতিভাত করার চেষ্টা কারোর চেয়ে কারো কম না। সেটা টি-শার্ট/ফাঁড়া কামিজেই হোক আর হিজাব/আলখেল্লায়ই হোক। বিগত দশকগুলির তুলনায় কর্মক্ষেত্রের পরিধী বেড়েছে অনেক। বেড়েছে নারীর কর্মে অংশগ্রহন। বেড়েছে রাজনৈতিক মতসংঘর্ষ। তারই মনে হয় ক্ষুদ্র প্রতিফলন দেখা যায় অফিসগুলোতে। এই মেরুকরণ এখন এতটাই যে তৃতীয়মতের লোকজন বিলুপ্তপ্রায়। কোথায় জানি পড়েছিলাম, যখন মানুষ নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য একত্রিত হয়ে দল গঠন করে তখন তা সমাজের সাধারণ সংগঠনের বিপক্ষে যায়। চিন্তা একটাই, মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা বিলুপ্ত হলে সামাজিক অগ্রগতি অসাধ্য। আজকাল অবশ্য মুক্তচিন্তারও একটা বিশেষ অর্থ আছে। আমার কাছে মুক্তচিন্তা মানে যা খুশি চিন্তার অধিকার। আজ সেই অধিকার বড়ই সংকুচিত। চারপাশে সবাই দুই রংয়ের কালির বোতল নিয়ে ঘোরে। অমিত্রাক্ষর অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম


মন্তব্য

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

এই বিভাজনটা শুধু বাংলাদেশে নয়, মনে হয় সারা পৃথিবীর মুসলমানদের মধ্যেই প্রকট হচ্ছে - বিশেষ করে গত দশ বছর ধরে। এটা বোধহয় ৯/১১-এর ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকার প্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া। কখনো সচেতনে, কখনো অবচেতনে।

তবে আমার আরেকটা কৌতুকোদ্দীপক অব্জার্ভেশন আছে। টুপি, দাড়ি আর বোরখার সাথে সাথে বাংলাদেশে মনে হয় মদারুদের সংখ্যাও দারুনভাবে বাড়ছে! নিদেনপক্ষে এর প্রকাশ্যতা তো বটেই। এবং আরো মজার ব্যাপার হলো, অনেক সময় টুপি, দাড়ি, বোরখা আর মদ সবকিছুই একই সাথে চলে চোখ টিপি প্রথম যেদিন এক সুন্দরী বোরখাওয়ালী ও হিজাবওয়ালীর হাতে রঙিন পানীয়ের গ্লাস দেখেছিলাম - সেদিন সত্যি ভিরমি খেয়েছিলাম। মেলাতে পারিনি। তবে এখন মনে হয়, মদে মদে মদ-স্কয়্যার হবে সেটাই তো স্বাভাবিক দেঁতো হাসি

কিম্বা, কে যেন একবার বলেছিলেন ধর্ম বিষয়টা আসলে একটা পারলৌকিক ঘুষ। আমরা বাংলাদেশিরা এখন দুনিয়ার তাবৎ জিনিষই ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলতে অভ্যস্ত। ইদানিং প্রায়ই শুনি, 'ঘুষে ম্যানেজ হয় না এমন কোন কাজই নেই'। আমরা বোধহয় এখন টুপি, দাঁড়ি, বোরখা, হিজাব ইত্যাদি ঘুষের মাধ্যমে স্বয়ং স্রষ্টাকে ম্যানেজ করে নিয়ে তারপর গভীর অভিনিবেশে ষড়রিপুর পরিপূর্ণ চর্চায় আত্ননিয়োগ করার একুশ শতকীয় সহি মযহাবে উপণীত হয়েছি। এদিক থেকে দেখলে বিভাজন আসলে খুব বেশি নাই। কিম্বা হয়তো কোথাও আছে, তবে চর্মচক্ষে খুব একটা দেখি না...

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই,

ডায়েট কোকাকোলা কিংবা পেপসি ঠান্ডা গ্লাসে ঢাললে কিন্তু ঐরকমই লাগে। তবে আমিও একমত যে মদারুদের সংখ্যাও ভয়াবহ ভাবে বাড়ছে। আগে তাবৎ পাড়া ছান মারলেও একটা বিয়ার পাওয়া যেত না। মামা-চাচারা সারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে দশ-বার বন্ধুর সাথে শেয়ারে তিন ক্যান বিয়ার খেয়েছে বলে গর্ব করত। এখন স্কুলের পোলাপান নাকি মদাসক্তির কারণে মারা যায়। কই যাব বলেন দেখি?

স্রষ্টাকে ম্যানেজ করার চিন্তাটা জটিল হয়েছে হাসি

অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

[সতর্কতাঃ এটা একটা বারো হাত কাকুড়ের ছাব্বিশ হাত ফিলিবাস্টার মন্তব্য! সাধু সাবধান চোখ টিপি ]

অমিত্রাক্ষর ভাই,

সেটা আমিও জানি হাসি

বছর দুয়েক আগে আমি দীর্ঘ ১৫ বছর পর প্রবাস-ফেরৎ এককালে খুব ঘনিষ্ঠ পুরনো এক বন্ধুর বাড়ি ঐ 'সুন্দরী বোরখাওয়ালি-হিজাবওয়ালি'কে দেখি - সরাসরি বোতল থেকে নিজ হাতে ঢেলে নিতেই দেখেছি। 'রঙিন পানীয়' কথাটার আসলে আক্ষরিকতার উর্ধ্বে একটা বিশেষ অর্থ আছে।

তবে কাহিনী কিন্তু এখানেই শেষ নয় এবং আবারো কমেন্টানোর উদ্দেশ্য আমি যে পেপসি আর হুইস্কির পার্থক্য বুঝি সেটা প্রমান করাও নয় হাসি ঐ দিনের কথা ভাবলে আমার এখনো হাসি পায়। ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া আমি, ৭০-দশকের বাংলা সিনেমায় গ্রাম থেকে প্রথম ঢাকায় আলট্রা-মডার্ন বড়লোক আত্নীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসা নায়ক ফারুকের ঐ আত্নীয়ের বাড়িতে মদের পার্টি শেলফের পেছন থেকে উঁকি মেরে দেখতে গিয়ে হুড়মুড় করে উলটে পড়ে ধরা খাওয়া চেহারার মত চেহারা করে আমতা আমতা করে আমার বন্ধুটিকে আমার বিস্ময়ের কথা এক ফাঁকে মুখ ফুটে বলেই ফেলেছিলাম। আমার বন্ধুটি তখন আমার থেকেও সহস্রগুন বেশি বিস্ময় আর অনুকম্পাভরে 'এ কোন গাঁইয়া-ভুতের পাল্লায় পড়লামরে বাবা'-দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে তাফসীর (নাকি 'ওয়াজ'?) দিলঃ "এতে এত অবাক হওয়ার কি হলো ?! মদ খাচ্ছে ওর ভালো লাগে তাই। এখন অনেক মেয়েই খায়। আর বোরখা পরেছে ওর আইডেনটিটি আর বিলিফকে এসার্ট করার জন্য। শী বিলিভস ডিপলি।"

কিছু বুঝলেন ? আমি তখন কিছু বুঝি নাই আমার গ্রাম্যতার কারনে। তবে এখন বোধহয় একটু একটু বুঝি। আসলেই, কি 'ক্ষ্যাতের' মতই না একটা প্রশ্ন করেছিলাম ! দেঁতো হাসি

আরো মজার কথা শুনবেন ? আমার পরিচিত প্রায় সবকটা মদারুই কিন্তু একেকজন মহা বিলিভার। কেঊ কেঊ এমনকি নামাজ-কালামও পড়ে মাঝেমধ্যেই। আরো সাঙ্ঘাতিক হলো আমার মতো কিছুটা সংশয়বাদী মানুষ এদের সামনে ধর্ম নিয়ে কখনো কোন সংশয় প্রকাশ করলে এরা রীতিমত খেপে যায় - আমাকে তীব্রভাবে অপছন্দ করা শুরু করে।

একটু অফটপিকঃ আমার পরিচিত সবকটা চরম ঘুষখোর/ঘুষদাতা/পুকুরচোর দুর্নীতিবাজও বিলিভার। আমার ব্যাবসায়ী একদল বন্ধু আছে - নিয়মিত প্রবল্ভাবে পাড়ার মসজিদ জমিয়ে রাখে, বোধহয় সব ওয়াক্তের নামাজই পড়ে (অন্তত মাগরিব, এশা ও জুম্মা তো বটেই) - রমযানের ৩০ দিনে তারাবীর কোর্স কমপ্লিট করার জন্য মহাঅস্থির হয়ে থাকে - হ্যাঁ, ওদিকে আবার দুর্নীতির মহোৎসবও করে বটে! এই বৈপরীত্য নিয়ে একদিন মিনমিনিয়ে কৌতুহল প্রকাশ করায় আমার মতো 'কাফের' 'মুরতাদ' 'মোনাফেক'কে প্রায় মারতে বসেছিল!

আমার পাশের বাড়ির বয়ষ্ক ভদ্রলোক পুরো এলাকায় একজন দৃশ্যমান ভাবে নিয়মিত তাবলীগার। স্থানীয় মসজিদ কমিটির একজন নেতাও বোধহয়। নামাজের পরে দীর্ঘ সময় ধরে (যখন সবাই চলে গেছে) তাকে মসজিদে বসে ছোট একটা গ্রুপের সাথে ধর্মালোচনায় রত দেখা যায়। প্রায় সবসময়ই তাকে মুসল্লি পরিবৃত দেখা যায়। সবকটি ছেলেকেই দেশে বিদেশে 'চিল্লায়' পাঠিয়েছেন। আমাকেও একসময় দলে ভিড়াতে চেয়েছিলেন। সবসময় টুপি-পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত এবং দাড়ি-শোভিত নুরানী চেহারা। তো এই একই ভদ্রলোক এই এলাকার সবচেয়ে বড় অতি-হিংস্র ঘুষরাজ-দুর্নীতিবাজ হিসাবেও পরিচিত। পরিচিত প্রতিবেশি থেকে শুরু করে পাড়ার সামান্য পানের দোকান্দারের কাছ থেকেও ঘুষ চাইতে তার সামান্যতম চক্ষুলজ্জা হয় না। ঐ পরিত্যাক্ত জমিটা/এবান্ডন্ড-প্রপার্টি্টা (যা আইনত সরকারের) সবার সামনে জবরদখল করে ৮-মহলা বাড়ি বানিয়েছেন - অধর্ম হয় নাই। সেদিন স্থানীয় ডেসা (বিদ্যুৎ সাপ্লাই) অফিসে গিয়ে শুনলাম তার ৮-তলা বাড়ির (যার পুরোটাই তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়েছেন যারা সবাই প্রচুর এসি/ হেভিডিউটি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে) বিশাল 'কমার্শিয়াল' ক্যাটাগরির বিল ফাঁকি দেয়ার জন্য তিনি ডেসা ইন্সপেক্টর/ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য নাকি কেসভর্তি করে বিয়ার নিয়ে গিয়েছিলেন, নগদেরও উপরি হিসাবে। তার 'চিল্লায়' যাওয়া ছেলেগুলিও একেকখান পিস বটে। হেরোইন থেকে শুরু করে অন্য কিছুই বাকি নেই। তো এনাকেই আবার এলাকার অঘোষিত ধর্ম-নেতা/মুতাওয়াল্লী হিসাবে অনেকে সালাম দেয়। না দিলে বা বিরোধিতা করলে আপনি, খোদা না করুন, দুনিয়া থেকে হাপিসও হয়ে যেতে পারেন হঠাৎ করেই।

আমার এককালের বন্ধু, এককালের অত্যন্ত মেধাবী - মেধাবীদের মধ্যেও মেধাবীতম বলে স্বীকৃত এবং বুয়েটের সতীর্থমহলে 'শার্পেস্ট ব্রেইন এমাং আস' হিসেবে প্রশংসিত - বর্তমানে সরকারি কোন বিভাগে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার, আগপাস্তলা দুর্নীতির দুর্গন্ধময়তম পঙ্কে পরিপুর্নভাবে নিমজ্জিত ও কুখ্যাত ইনকরিজিবল ড্রাগ-এ্যডিক্ট (বহুবার মৃত্যমুখ থেকে ফিরে আসা এবং শরীরে ইঞ্জেকশন-পুশরত অবস্থার ছবি পত্রিকার পাতায় ছাপা হওয়া) এবং হোমো, যে অফিস করে পুরোপুরি প্রক্সি দিয়ে যায় শুধু ঘুষের জন্য (বেতনের টাকা নাকি এখন সরাসরি বঊয়ের একাঊন্টে জমা হয় শুনেছি) - সেই বন্ধুও বাহ্যিকভাবে কঠোর ধর্মবিশ্বাসী। একটু নাস্তিক্যবাদী, সংশয়বাদী বা মধ্যবাদী কথা বলেই দেখুন আপনার অবস্থা কি হয় !

এগুলি যদিও নেহাৎই মাইক্রো-লেভেলে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং এনেকডোটাল - তবে আপনি আপনার চারদিকে চোখ মেলে তাকালেই দেখতে পাবেন যে ম্যাক্রো-লেভেলেও এই চিত্রই সারাদেশে বিদ্যমান। এই দেশে কারা সবচেয়ে উচ্চকন্ঠে ধর্মপ্রচার করে ? - গনহত্যাকারী গনধর্ষক যুদ্ধাপরাধীরা। ডাঃ আবুল বারকাতের হিসাবে বাৎসরিক ১৫ হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি পরিচালনা করে এরা। অনেক মদের ব্যবসাও দেখা যাবে এদেরই হাতে। একই ভাবে কারা সবচেয়ে বেশি 'ধর্ম গেল ধর্ম গেল' বলে মুখে ফেনা তুলে রাজনীতি করে? কারা সবচেয়ে বেশি 'ইফতার পার্টি' করে? পাড়ার মসজিদে সবচেয়ে বেশি চাঁদা দেয় কারা ? আবার ঐ মসজিদের প্রপার্টিতে কোন মার্কেট থাকলে ওটা বানানোর বা বানানোর পরে দোকান বরাদ্দ দেয়া-নেয়ার নয়ছয়ের সাথে কারা জড়িত থাকে ? সরকারি কোন অফিসে কোন কাজে গেলে ইট-কাঠ-পাথর-টেবিল-চেয়ার-দরজা-জানালাগুলি পর্যন্ত যেভাবে 'টাকা খাব টাকা খাব' বলে দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে তেড়ে এসে রাক্ষুসে ব্যারাকুডা থেকে শুরু করে ভয়ঙ্কর পিরানহা মাছের মত ছেকে ধরে সেইসব অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে টপ-বস পর্যন্ত বাড়ি ফিরে কি করে জানেন ? মহা-ধার্মিক হয়ে যায়। নিয়মিত মসজিদে যায়। তারাবী পড়ে। নফল পড়ে। ধর্মের লেকচার দেয়। নাস্তিক বা প্রগতিশীলদের মুরতাদ হিসাবে কোতল চায়। আবার সুরারসে মজ্জমানও হয় একই সাথে।

প্রগতিশীল, তথাকথিত 'মুক্তচিন্তক', সুশীল সমাজ, ইত্যাদিদেরও একই অবস্থা। প্রকাশ্যে বিপ্লবীপনা আর তলে তলে অন্য কাম। সচলায়তনেই বরবাদ ভজহার থেকে শুরু করে আরো অনেকের কীর্তিকলাপ প্রকাশিত। পত্রিকার পাতাতেও প্রকাশিত হয়েছে গ্রেপ্তারকৃত যুদ্ধাপরাধীর বাসা থেকে উদ্ধারকৃত তাদের ভাড়াটে ছদ্ম-প্রগতিশীল-সুশীল-বিপ্লবী-মুক্তচিন্তক-বাম-সেকুলার-গনতন্ত্রবাদী-এমনকি যুদ্ধাপরাধবিরোধী-লিপসার্ভিসদাতা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা। ঐ যে ঘাদানির গনতদন্ত কমিশনের তদন্ত রিপোর্টটা দেয়ার কথা ছিল, ঐ লোকটার নাম কি যেন...তার নাম পর্যন্ত তো এসেছে।

তো এই কথাটাই বলতে চাচ্ছিলাম আসলেঃ বিভাজন আসলে খুব একটা নেই। যা আছে তার বেশির ভাগই বাইরে বাইরে। বহিরঙ্গের অর্থহীন প্রদর্শনীতে। ভেতরে আসলে আমরা সবাই একই মাল। এই জন্যই দুনিয়াতে এই দেশ একই সাথে ধর্ম নিয়ে বাগাড়াম্বড়ে চ্যাম্পিয়ন, আবার দুর্নীতিতেও চ্যাম্পিয়ন। আমাদের সংবিধানে এখন একই সাথে সহাবস্থান করছে 'ধর্মনিরপেক্ষতা', 'রাষ্ট্রধর্ম', আর 'বিসমিল্লাহ'। এতগুলি স্ববিরোধিতা মেলাবেন কি করে? তবু সব স্ববিরোধিতা মিলে যায় যদি আমাদের জাতিগত অন্তর্গত প্রকৃত দর্শনটা বুঝে যাই। আমার ধারনা আমরা আসলে প্রচন্ড ভোগবাদী জাতি। হ্যাঁ, পশ্চিমাদের থেকেও হয়তো সহস্রগুন বেশি। জীবনটা আমাদের কাছে গভীর ভাবে ভোগ করার জন্য। এই জীবনের যেমন 'ম্যাটেরিয়াল' ভোগের দিক আছে, তেমনি একটা 'স্পিরিচুয়াল' ভোগের দিকও আছে (বিশ্বাসীদের ক্ষেত্রে ধর্মের রিচুয়ালে আর 'প্রগতিশীল'দের ক্ষেত্রে এই স্পিরিচুয়ালিটি তাঁদের বিপ্লবীপনায় নিহিত)। সুখী ভোগী জীবন যাপন করতে হলে দুটোকেই সন্তুষ্ট রাখা দরকার। এটা কোন 'ফ্যাশান'-এর বিষয় না - এটা একটা সুগভীর জীবনদর্শন। আরে, 'স্রষ্টাকে ম্যানেজ করে নিয়ে' আমরা সবকূল রক্ষা করতে পারি বলেই তো বিশ্বের সবচেয়ে সুখী জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছি ! আমরা সবাই এক গোয়ালেরই তো গরু, নাকি ? এখানে তো কোন বিভাজন নাই রে ভাই - না চিন্তায়, না কর্মে। তো আমরা সেভাবে পূর্নাঙ্গরূপে সুখী হতে চাইলে দোষের কি আছে? এখানে স্ববিরোধিতা কোথায়? আমাদের সুখে অন্যদের এত গা-জ্বালা করে কেন ? এ নিয়ে এত মাতামাতির কি আছে ?! বাংলাদেশিরা এটা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারে না !!!

আর হ্যাঁ, এটাই হচ্ছে একুশ শতকীয় সহি মযহাব। এখানে মান্ধাত্তার আমলের ঐসব ফালতু নীতিবাগিশতার-আদর্শবাদীতার-কার্মিক-ও-বৌদ্ধিক-সততার 'চরমপন্থা' বা চরমপন্থী মযহাবের কোন স্থান নেই। আমরা সব মিলিয়ে-মিশিয়ে এক্কেবারে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ 'মধ্যপন্থা'র জন্ম দিয়েছি। এই জন্যই যার তার নয়, খোদ বিশ্ব-মোড়ল আম্রিকার সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত ও প্রিয়ভাজন সহি 'মডারেট'-মযহাবের অনুসারী মডারেট নেশন। সোজা কথা ?!

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই,

পেপসির ব্যাপারটায় হালকা রস করার চেষ্টা ছিল। সিরিয়াসলি নিয়েন না। এই আদমও রকমারী কিছু ঘটনার সকরুণ সাক্ষী। তবে আপনি একটা নতুন দিক তুলে ধরেছেন - 'চরম বৈপরীত্য'। আমার লেখা চিন্তার বিভাজন যদি হয় আড়াআড়ি,আপনার চিন্তার বিভাজন অনেকটাই লম্বালম্বি। এদেরকেতো আবার প্রশ্নও করা যায়না। তবে মনভাবটা জানতে পারলে ভাল হত।

অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম

সিরাত এর ছবি

এই ফিলিবাস্টার মন্তব্যটি পোস্ট হিসেবে প্রকাশের দাবি জানাই! হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

চরম কমেন্ট।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

@মন মাঝিঃ
আজ থেকে আট বছর আগে আপনি যে অ্যানেকডোটগুলো দিয়েছিলেন সেগুলো এখনো প্রবলভাবে বিদ্যমান। অথচ এই আট বছরে দুনিয়াটা এতোটাই পাল্টেছে যা তার আগের ৮*৫ = ৪০ বছরে হয়নি। উত্তরটা যদি এখন দিতেন তাহলে বোধকরি আরও ভয়ঙ্কর কিছু অ্যানেকডোট হাজির করতে পারতেন। অ্যানেকডোটগুলোর বাইরে আপনার যে নিজস্ব পর্যবেক্ষণ এবং তৎজাত অনুসিদ্ধান্ত সেসব নিয়ে আজকের কনটেক্সটে দাঁড়িয়ে একটা স্বতন্ত্র পোস্ট দাবি করছি। দয়া করে 'এসব লিখে কী হবে' ধরনের কথা বলে অনুরোধটা এড়িয়ে যাবেন না। এই আলোচনাগুলো আমরা চেপে রাখি বলে অনেকের ভেতরে টক্সিক মেটেরিয়াল জমে যায়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

আমি ঐসব নিষিদ্ধ এলাকা মাড়াই না আর! এখন বরং বানপ্রস্থের প্রস্তুতি নিচ্ছি! হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রস্তুতি নিয়ে লাভ নাই। বানপ্রস্থে যাওয়া সম্ভব কি সম্ভব না সেটা নিয়ে আরও সাড়ে সাত বছর আগে গবেষণা হয়ে তার ফলাফলও প্রকাশিত হয়ে গেছে। সুতরাং আপাত নিষিদ্ধ এলাকার সাবেক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লেখার পরিকল্পনা করতে পারেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

যদিও মাঝেমাঝে ইচ্ছা করে, তবু এখনই পার্মানেন্টলি সাবেক অভিজ্ঞতার প্রায় সমবয়সী হয়ে যেতে আগ্রহবোধ করছি না! হাসি

****************************************

মন মাঝি এর ছবি

আপনি আসলে কি চাচ্ছেন - বাইরের টক্সিসিটি দূ্র করতে, নাকি বাইরের টক্সিসিটির কারনে "ভেতরে জমে যাওয়া টক্সিক মেটেরিয়ালটাল"-টার একটা রিলিজ, যাতে করে এটা dissipate করে একটু আরাম বা সাময়িক স্বস্তি পান? প্রথমটা হলে আমার কাছে কোনো বুদ্ধি নাই। ২য়টির ক্ষেত্রে একেকজনের সমাধান একেকরকম। আমি নিজে এখন প্রচণ্ড পেসিমিস্টিক হয়ে গেছি। আমি 'এসব লিখে কী হবে' ধরনের কথা এখন আর বলি না, আরও বেশি নেগেটিভ কথা বলি। আমার এখনকার প্রশ্ন, "কেন? কার জন্য?" লেখালেখি করে কারা? করে যাদের মধ্যে সামান্যতম হলেও অন্তত কোন আশা বা ইলিউশান আছে দেশ, দুনিয়া বা মানুষ সম্পর্কে। যতই তীব্র নিন্দামন্দ-সমালোচনা করুক, মনের কোনো গহীন অচেতন কোনে হলেও কোনো হোপ বা ডিলিউশান থেকে গেলেও তার তাগিদে অনেকে লিখে, কিছু হোক বা না হোক। কিন্তু আমার সেসবের এখন কিছুই নাই। অত্যন্ত ভদ্র ভাষায় বললে, আমার বর্তমান অনুভূতি হচ্ছে মানুষ - বিশেষ করে পৃথিবীর বিশেষ কিছু অঞ্চলের - একটি চরমতম ওভাররেটেড প্রাইমেট। পৃথিবীর অন্য সব প্রাণীই - কীট থেকে ডাইনোসর - বোধহয় এর থেকে অনেক উন্নততর। এর চেয়ে খুলে বললে তা বস্তির হিরোইনচিদের আড্ডাতেও বলা যাবে না, সচলায়তনে দূরে থাক। তাই আর কথা না বাড়াই এ প্রসঙ্গে, মোদ্দা কথা হলো, এই প্রাণীর উন্নতির বা বিবর্তনের - বিশেষ করে এতদঞ্চলের - কোনোই সম্ভাবণা নাই! তাই এইরকম প্রাণীকে ভালোবেসে তো নয়ই, রাগ বা ঘৃণা করেও কিছু লেখা সম্পূর্ণ অর্থহীণ, বোকামি এবং সময় ও শ্রমের চূড়ান্ত অপচয় (আমার আট বছর আগের ঐ মন্তব্যটার মতো কোনো মন্তব্যও তাই এই আমির পক্ষে আজ আর লেখা সম্ভব না!)।

মুশকিল হচ্ছে এগুলির মধ্যেই বাস করতে হবে বাকি জীবন। আর এই টক্সিসিটির সমুদ্রে বাস করলে ভেতরে টক্সিক মেটেরিয়াল জমবে সেটাই স্বাভাবিক। তাহলে কি করা?! এই টক্সিক মেটেরিয়াল কিভাবে dissipate করানো যাবে? এজন্যেই বানপ্রস্থের কথা বলেছিলাম। বানপ্রস্থে যেতে পারলে হয়তো ঐ টক্সিক মেটেরিয়াল ধীরে-ধীরে dissipate করবে বলে আশা করা যায়, এবং নতুন করে হয়তো সহজে জমতেও পারবে না। আপনার ঐ লেখাটার কথা আমি আগেই পড়েছি। তবে আমি কিন্তু আফ্রিকা বা আমাজনের বন বা অন্যকোন ফিজিকাল বনের কথা ভাবছি না। আমি ভাবছি মনোবনের কথা। মনোবনে বানপ্রস্থ। এটা কেমন ব্যাপার? সেকথা এখন আর ব্যাখ্যা করতে ইচ্ছা করছে না। আপাতত আমি নটিংহামশায়ারের পাশে উস্টারশায়ারের জঙ্গলে আমার সাময়িক বানপ্রস্থবাস থেকে লিখছি বলে বোধহয় এলোমেলো অনেককিছুই লিখে ফেললাম। না বলা কথা বুঝে নিয়ে, ত্রুটিবিচ্যুতি নিজগুণে ক্ষমা করে দিয়েন প্লিজ! হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অনেস্টলি বলছি, আপনার এই মন্তব্যের উত্তর দেবার মতো অবস্থাতে এখন আমি নেই। যদি কখনো অমন অবস্থাতে পৌঁছাই তাহলে এর উত্তর দেবো। আমি উত্তর দিতে চাই। এই আলোচনাটা অনেক আগেই এই পোস্টের সীমার বাইরে চলে গেছে, তাই উত্তরটা ভিন্ন কোথাও ভিন্ন কোন উপায়ে আপনার কাছে পৌঁছাবো।

পুনশ্চঃ উস্টারশায়ারের কথা বলে তো একটা পেন্ডিং ইস্যুর কথা মনে করিয়ে দিলেন। Worcestershire sauce দিয়ে রান্না (!) করতে হয় এমন একটা আইটেমের একটা ইনগ্রেডিয়েন্ট আপনার নিয়ে আসার কথা ছিল।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কামরুল হাসান রাঙা [অতিথি] এর ছবি

দিনদিন সবাই চরম্পন্থার দিকে ঝুকছে, তাই মধ্যপন্থা আজ অস্তিত্ব সংকটে।

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমতের জন্য ধন্যবাদ।

অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম

শংখ [অতিথি] এর ছবি

চরমপন্থীরা, মধ্যপন্থীদের ধর্তব্যের মধ্যে আনেন না। তাদের যুক্তিটি হলো, তুমি যদি বিশ্বাসী হয়ে থাকো, তাহলে নিজের মতো করে একটা 'modified version' এ ধর্ম পালন করার অধিকার তোমার নেই। এটা বিশ্বাসের নামে একধরনের প্রহসন। আর তুমি যদি অবিশ্বাসী হয়ে থাকো, তাহলে 'ধর্মের ট্যাগ' গায়ে লাগিয়ে কার্য উদ্ধার করা তোমার অক্ষমতা এবং অন্তঃসারশূণ্যতার পরিচয় দিচ্ছে ! এক্ষেত্রে মধ্যপন্থীদের কি বলার আছে? নাকি তারাও যুক্তির প্যাঁচে পড়ে, কোনো একটা দিক বেছে নেবেন??
লেখক ঠিক কাদেরকে বাড়ি দিয়ে দেখেছেন আমি জানিনা, তবে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, চরমপন্থীরা যা করে একধরনের গোড়া আথবা অন্ধ বিশ্বাস থেকেই করে। শুধুমাত্র একধরনের 'ভাব' বা ফ্যাশন impose করার জন্য, এই গরমের দেশে কেউ আগাগোড়া নিজেকে কালো কাপড়ে আবৃত করে ফেলবেন এটা একটু কষ্টসাধ্য চিন্তা। আর যারা অবিশ্বাসী, তারা তো রীতিমতো ব্যপক পড়াশোনা করে আবিশ্বাসী হয়। অবশ্য, অনেকরকমের মানুষই আছে।
-শংখ

অতিথি লেখক এর ছবি

চরমপন্থীদের বিশ্বাসের ব্যাপারে সহমত। কিন্তু মধ্যপন্থীরা যুক্তির প্যাঁচে পড়ে মনে হয় চিন্তার প্রারম্ভিক পর্যায়। মানে উইকেটে সেট হবার আগেই বোল্ড। সমস্যাটা সেখানেই। চরমপন্থীদের কিছু স্বতঃসিদ্ধ যুক্তি আছে। এগুলোর উত্তর যদি দেয়া যায় তবে কিন্তু ব্যাপারটা সিরিয়াস মারামারিতে পৌঁছে যায় দ্রুত। আর যদি থাকে ক্ষমতার বা লিঙ্গের ভেদাভেদ,তাহলে তো ইমোশনের বৃষ্টি অবধারিত।

ফ্যাশনটা হল একধরনের বাহ্যিক চাল। অন্যের চোখে নিজের একটা ঈপ্সিত অবয়ব তৈরীর সক্রিয় প্রচেষ্টা। অনেকক্ষেত্রেই ব্যাপারটা নিজেকে গোপন করে। অনেকে আবার নিজেকে স্বমূর্তিতে প্রকাশ করে বলেন এটাই আমার ফ্যাশন। 'মনমাঝি'ভাই কিছু চমৎকার উদাহরণ দিয়েছেন উপরে। এরা প্রবলভাবেই সক্ষম। অন্তঃসার ও তার রকমারী নিয়ে অবশ্য বিতর্কের যথেষ্ট অবকাশ আছে।

অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. লেখা প্যারা ভাগ করে দেবেন তাতে পড়তে আরাম, চোখের আরাম, বুঝতে সুবিধা।

২. আপনার অবজারভেশনের সীমাটা আরেকটু বাড়িয়ে কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়ে যান। সেখানে আরো মজার এবং ভয়ঙ্কর ব্যাপার দেখতে পাবেন। আপনার দেখা চরমপন্থাগুলোর শুরুটাও দেখতে পাবেন।

৩. আসলে মধ্যপন্থা বলে কিছু নেই। আপনি বড়জোর তৃতীয় পন্থা হতে পারেন। টিকে থাকতে গেলে আপনাকে গোত্র গঠন করতেই হবে। আপনার গোত্রে চিন্তা ও বিশ্বাসের স্পেকট্রাম চওড়া হতে পারে, কিন্তু গোত্র থাকতেই হবে। কারণ, রবিনসন ক্রুসো একটা মীথ।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

১। প্যারা তো ভাগই করেছিলাম,কিন্তু কি করে কি হল বুঝলাম না।
২। বুদ্ধিটা মেরে দিচ্ছি পর্ব ২-এর জন্য।
৩। সহমত। মধ্যপন্থা বলতে আসলে ৩য়,৪র্থ,৫ম ইত্যাদি মতের সমন্বয়ে মাঝখানের বড়ভাগটাকে বুঝাতে চেয়েছি। ভাষার দূর্বলতায় ঠিকমত প্রকাশ হয় নি।

অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম

কৌস্তুভ এর ছবি

লেখাটা ভাল লাগল, মন্তব্যগুলোও। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সহৃদয় মন্তব্যের জন্য।

অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম

সিরাত এর ছবি

এই মেরুকরণ-এর ব্যাপারটা নিয়ে বেশ স্টাডি হয়েছে; ইন্টারনেট এই ট্রেন্ডটাকে ফুয়েল করসে। এই পোলারাইজেশন নিয়ে আমি একটা লেখায় আংশিক আলোচনা করেছিলামও, সেদিন নিউ ইয়র্ক টাইমস না কই যেন একটা বেশ ইন্টারেস্টিং প্রবন্ধও এসেছিল। টেডে একটা দারুণ ভিডিও-ও।

এই লেখায় আলোচনা পুরাই দৃষ্টান্তমূলক। এমনই আলোচনা হওয়া উচিৎ।

ইগো-র ব্যাপারটা আপনি ছুঁয়ে গেছেন। আমার কেন যেন মনে হয় আজকের দুনিয়ার পরিবেশ ইগো-স্টোকারদের জন্য খুব 'উপকারি'। 'সেল ইওরসেল্ফ' এস্ট্রনমিকাল পর্যায়ে চলে গেছে। হাসি

মধ্যপন্থা অনুসরণ করতে হবে এমন তো কোন কথা নাই। ১০০টা জিনিসের মধ্যে মানুষ কিন্তু ৮০-৯০টাতেই মধ্যপন্থা অনুসরণ করে। বাকি ৫টায় যেটায় সে .5% সেটায় অন্যরা তাকে নোটিশ করে: "ও, সিরাত তো এগনস্টিক!" কিন্তু সেটাও তো আবার বাকি ব্যক্তিকে ডিফাইন করে।

অতিথি লেখক এর ছবি

বিভিন্ন চিন্তার ধারায় ব্যাক্তিসাতন্ত্র তো থাকবেই। একে অন্যকে প্রভাবিত করার চেষ্টাও করবে। কিন্তু জবরদস্তি কেন হবে?

অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম

দুর্দান্ত এর ছবি

পান্ডবদার সাথে একমত। মধ্য পন্থার চাইতে দরকার তৃতীয়, চতুর্থপন্থা, ইত্যাদি। মূলধারার পোশাক-আশাক সবসময়ই ক্ষমতাশীল ধারনার বাহক। ১/১১ এর পরে ব্যাঙ্ক ও সরকারি দপ্তরে গোলটুপি ধারনের প্রাচুর্য এরই কথা বলে। আবার ফতুয়া-জিন্স এর প্রাচুর্যও একটা আসন্ন ক্ষমতার কথা বলতে পারে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।