[img=small][/img]
সম্প্রতি আমেরিকার ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম হিন্দু দেব-দেবী-ধর্মগুরুদের ছবিসম্বলিত ৭টা স্মারক ডাকটিকেট বাজারে ছেড়েছে। এগুলো ৪৪ সেন্ট মূল্যমানের তবে স্যুভেনির হিসেবে অনেক বেশি দামে (১৮.৯৯ ডলার) বিক্রি হচ্ছে। এখানে সবগুলো টিকেট দেখা যাবে। ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম ওয়েবসাইটে এই ডাকটিকেট ছাড়া নিয়ে লিখেছে,
ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম গর্বিত যে তারাই প্রথম কোম্পানি য ...[img=auto][/img]সম্প্রতি আমেরিকার ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম হিন্দু দেব-দেবী-ধর্মগুরুদের ছবিসম্বলিত ৭টা স্মারক ডাকটিকেট বাজারে ছেড়েছে। এগুলো ৪৪ সেন্ট মূল্যমানের তবে স্যুভেনির হিসেবে অনেক বেশি দামে (১৮.৯৯ ডলার) বিক্রি হচ্ছে। এখানে সবগুলো টিকেট দেখা যাবে। ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম ওয়েবসাইটে এই ডাকটিকেট ছাড়া নিয়ে লিখেছে,
ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম গর্বিত যে তারাই প্রথম কোম্পানি যারা ঐশি ছবিসম্বলিত বিশেষ ধরণের ডাকটিকেট প্রবর্তন করেছে যার সুষ্পষ্ট আবেদন রয়েছে আমেরিকায় বসবাসরত ভারতীয় কমিউনিটিতে।আমেরিকা সম্পর্কে আমার জ্ঞ্যান শুণ্যের কাছাকাছি, আবার বলা যেতে পারে মাইনাস লেভেলে। কারন আমেরিকা সম্পর্কে জানি তো না’ই বরঞ্চ অনেক কিছু ভুলও জেনে থাকতে পারি। ইউএসএ-পোষ্টেজ.কম সম্ভবতঃ আমেরিকার সরকারি ডাকবিভাগ না। আরও দুটো পোষ্টাল সার্ভিসের হদিস পেলাম গুগল থেকে। এক একটা হলো ইউনাইটেড ষ্টেটস পোষ্টাল সার্ভিস এর অন্যটা হলো অফিস অব ইন্সপেক্টর জেনারেল ইউনাইটেড ষ্টেটস পোষ্টাল সার্ভিস। শেষেরটার ওয়েব এ্যাড্রেসে .গভ এক্সটেনশন থাকায় ধরে নেই যে এটাই সরকারি। কিন্তু আমার সীমিত জ্ঞ্যান বলে যে চাইলেই যার ইচ্ছে সে একটা ডাকটিকেট বের করে ফেলতে পারেনা। প্রস্তাবিত ডাকটিকেট সরকারের অনুমোদন পেলে তবেই বাজারে আসতে পারে। সুতরাং ধরে নেয়া যেতে পারে যে এই ডাকটিকেটগুলো আমেরিকা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত।
প্রশ্ন হচ্ছে কেনো এই ধর্মীয় অনুভূতিসম্পন্ন ডাকটিকেটের প্রকাশ? ডাইভারসিটির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞ্যাপন, নাকি অন্য কিছু? ভাবনা আসলো। যদিও এতে আমার মাথাব্যাথার কারন থাকার কথা ছিলোনা। তবুও ভাবনায় পেলো। আমি ব্যাক্তিগতভাবে একটা ধর্মের অনুসারী কিন্তু সব ধর্মের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে কারন ধর্ম অহিংসার কথা বলে, ধর্ম সাম্যের কথা বলে, ধর্ম মানবতার কথা বলে। তাছাড়া একজন হিউম্যানিটারিয়ান ওয়ার্কার হিসেবে আমার পেশাগত এথিক্স নন-সেকটারিয়ানিসম। কিন্তু আমার কাছে একটু প্রশ্নবোধক ঠেকলো যে হঠাৎ করেই আমেরিকা কেনো হিন্দু ধর্মের ঐশি ব্যাক্তিত্বদের ডাকটিকেট ছাড়তে গেলো। এনিয়েই একটু স্থুলাকারের বিশ্লেষন করতে ইচ্ছে হলো।
প্রথম কারন হতে পারে বাণিজ্যিক। ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেশনের যুগে পোষ্টাল সিষ্টেম ভিষন প্রতিযোগিতার মুখে এবং এই প্রতিযোগিতায় তাদের অবস্থান ক্রমশঃ নিম্নমূখী। বিলেতপ্রবাসী আমার ছোটনানা-নানুকে এখন তো চিঠি তেমন পোষ্ট করা হয়না। আমি দেশে থাকলে আমার নানু, বড়মামা বা আম্মার চিঠি স্ক্যান করে মামাদের ইমেইল করে দেই। মামার সেই এ্যাটাচমেন্ট প্রিন্ট করে নানা-নানুকে দেয়। কনফিডেনশিয়ালিটির সমস্য নেই, মামারা এক অক্ষরও বাংলা পড়তে পারেনা। এছাড়া ডিএইচএল, ফেডএক্স, বা এইসব বড়বড় কুরিয়ার কোম্পানিগুলোওতো সদর্পে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। গতিশীল জীবনে এখন পোষ্টাল সার্ভিস ক্রমশই কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। তার পরও মানুষ কিন্তু পোষ্টাল সার্ভিসকে একেবারে অবসোলিট ঘোষনা করে দেয়নি। বিশেষতঃ আমাদের উপমহাদেশীয় সংস্কৃতিতে পোষ্টাল সার্ভিস কিন্তু এখনও আদরণীয়। ঢাকায় থাকতে দেখেছি অনেক বন্ধুর বাড়ি থেকে টাকা আসতো পোষ্টাল মানি-অর্ডারে; তারা কুরিয়ার সার্ভিসকে গ্রহন করেননি। তেমনভাবে, আমার বিশ্বাস আমেরিকার ভারতীয় উপমহাদেশীয় কমিউনিটি কিন্তু এখনও পোষ্টাল সার্ভিস ব্যবহার করে থাকেন সাংস্কৃতিক অভ্যাস থেকে। বিশেষকরে বাংলাদেশ, ইনডিয়া বা পাকিস্তানে তাদের নেটিভ এলাকায় হয়তো এখনও ডাকবিভাগই একমাত্র ভরসা। তাই ধারণা করা যেতে পারে যে আমেরিকার ডাকবিভাগ এই ষ্ট্যাম্পগুলো প্রবর্তন করে বিশালসংখ্যক ধর্মপ্রাণ হিন্দু অভিবাসীদেরকে এগুলো ব্যবহারের প্রতি উৎসাহের মাধ্যমে কিছুটা হলেও রেভিনিউ বাড়াতে পারবে। মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি হিসেবে মন্দ না এটা।
বিষয়টাকে স্থুলভাবে পলিটিক্যালি দেখারও অবকাশ থেকে যায়। বারাক ওবামার সরকারের সাম্প্রতিক জনপ্রিয়তায় ঘাটতি এবং গ্রাউন্ড জিরোতে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে অব্যহত বিতর্ক একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। ওবামার মুসলিম পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং এই মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত; এ দু’টোর মধ্যে কেউ যোগসূত্র স্থাপন করতে চাইলেই করতে পারেন। এখানে ব্যাপারটা এমন কি হতে পারে যে এই পোষ্টেজগুলো কিছুটা হলেও হিন্দু ধর্মের অভিবাসীদের মধ্যে ডেমোক্র্যাটদের জন্যে সহানুভূতির জায়গা সৃষ্টি করবে?
বাকি থাকলো ডাইভার্সিটির নামে এই পোষ্টেজ প্রবর্তণ করা এবং এটার কনসিকোয়েন্স সবথেকে খারাপ। আমেরিকায় সংখ্যালঘুদের জনসংখ্যা সম্পর্কে উইকিতে পেলাম অভিবাসী হিন্দু ধর্মের জনসংখ্যা ৮ লাখের মতো। মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ে মতভিন্নতা আছে। সাধারনভাবে স্বীকৃত জনসংখ্যা ২৫ লাখ আর কোনও কোনও সূত্র দাবী করে ৬০ থেকে ৭০ লাখ। বৌদ্ধ জনসংখ্যা মতভেদে মোট জনসংখ্যার .৫% থেকে .৯%। ২০০৮ সালের আদমশুমারী বলছে ইহুদীর সংখ্যা ৬৫ লাখ। এছাড়া শিখ আছে, বাহায়ী আছে, আরও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা আছেন। আমেরিকায় অভিবাসীদের আনাগোনা, সেও তো শতবর্ষের ইতিহাস। তাই প্রশ্ন জাগে হঠাৎ করে তারা সংখ্যালঘুদের ধর্মকে শ্রদ্ধা জানাতে ব্যাকুল হয়ে উঠলো কেনো।
আমার তো তথ্যসূত্র বলতে ইন্টারনেট সার্চ এঞ্জিন। সার্চ দিয়ে দেখলাম আমেরিকা ডাকবিভাগ এর আগে ক্রিসমাসের, জিউইশদের উৎসবের এবং ইদের ডাকটিকেট ছেড়েছিলো। এর আগে তারা রিলিজিয়াস ফ্রিডমের কথা বলে একটা ডাকটিকেট ছেড়েছিলো ১৯৫৭ সালে। কিন্তু আমি সার্চ দিয়ে পেলাম না জেসাস বা অন্য কোন ঐশি মানবের ছবিসম্বলিত ডাকটিকেট।
তাহলে কি ব্যাপারটা এরকম দাঁড়াতে পারে যে আমেরিকা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কতোটা গুরুত্ব দেয় এবং শ্রদ্ধা করে এটা দেখাতে এখন উঠে পড়ে লেগেছে? তাহলে কিন্তু আলামত ভালো না। দু’দিন পরে আবার কোন মুসলিম নবীর ছবি (সম্ভাবনা কম, ডেনিশ কার্টুনিষ্টের ঘটনা তো জানা আছে) দিয়ে না পোষ্টেজ ছেঁপে ফেলে, নতুবা নিদেনপক্ষে মক্কা-মদীনার ছবি তো আছেই। জেরুজালেম বা স্বর্ণমন্দিরের কথা বাদ দেই কেনো। যাইহোক, আলটিমেট উদ্দেশ্য কি সেটাই মূখ্য বিষয়। আমেরিকার সাধারন মানুষ কিন্তু পরধর্মসহিষ্ণু। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কোন ঘটনা আমি কখনও শুনিনি। ৯/১১ পরবর্তীকালে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হলেও তা উন্মাদনার রূপ তো নেয়ই নি বরং সাধারন আমেরিকানরা তাদের মুসলিম প্রতিবেশিদেরকে প্রটেক্ট করেছে, মেন্টাল সাপোর্ট দিয়েছে। সুতরাং আকষ্মিক পরধর্মপ্রেম একটু সন্দেহের উদ্রেক করে বৈ কি।
মন্তব্য
ওই usps ই আমেরিকার সরকারি পোস্টাপিস। এদেরটা নেহাতই ব্যবসা। তাড়ায় আছি, পরে বাকি পড়ে বিস্তারিত লিখুম নে।
অপেক্ষায় থাকলাম।
রাতঃস্মরণীয়
আমি যতটুকু বলতে পারতুম তার চেয়েও ভাল ভাবে লোকজন বলে দিয়েছেন এর মধ্যেই। আর কি বলি।
আমেরিকাতে যে কেউ পোস্টাল স্ট্যাম্প তৈরি করতে পারে...এই লিঙ্কে দেখুন। প্রাইভেটলি বের করা স্ট্যাম্পের দাম অবশ্যই বেশি পড়ে।
তবে ঈদ গ্রিটিংসের পোস্টাল স্ট্যাম্পটা মনে হয় সরকার থেকে বের করা। ইউনাইটেড ষ্টেটস পোষ্টাল সার্ভিস (usps.gov এবং usps.com দুটো ডোমেনই আছে) সরকারী পোস্ট অফিস।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ তাসনীম ভাই। প্রাইভেট কোম্পানির বের করা ষ্ট্যাম্প ব্যবহার করা নিয়ে সরকারের রেগুলেশন কি? সরকার কিভাব ওই ষ্ট্যাম্প বিক্রির রেভিনিউ পায়? আর ডিজাইন-লেআউট-দাম, এগুলোর জন্যে কি সরকারের অনুমোদন লাগে? অনেকগুলো প্রশ্ন করে ফেললাম।
রাতঃস্মরণীয়
স্ট্যাম্প বিক্রির রেভিন্যু নিশ্চয় সরকার পায়...এটা করা হয়েছে পয়সা আয়ের উদ্দেশ্যেই। কিন্তু রেগুলেশন যে কী সেই বিষয়ে কোন ধারণাই নেই, অশ্লীল কিছু হয়ত স্ট্যাম্পে ছাপা যাবে না, কিন্তু আমি সুন্দর একটা ছবি দিয়ে নিচে বাংলায় "মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক", লিখে দিলে হয়ত ছাপানো যাবে। মার্কিন দেশের অভিজ্ঞতায় বুঝি, এগুলো নিয়ে ওদের মাথাব্যথা কম।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার মনে হলো আমি অনেকদুর ভেবে ফেলেছেন। আমি এটাকে একটা কাজ না করা মার্কেটিং ট্রিক হিসেবেই দেখছি।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ঠিক পরিষ্কার বুঝলাম না ভাই।
রাতঃস্মরণীয়
মানে বলতেছিলাম বিষয়টা এতো সিরিয়াস না মনে হয়।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমেরিকা সম্পর্কে যদি ন্যূনতম জ্ঞ্যান থাকতো তবে এ পোষ্টটাই আসতো না। স্থুলভাবনারাজি থেকেই লেখা। তবে মন্তব্যের মাধ্যমে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম।
দুনিয়ায় সব মার্কেটিং ট্রিক কাজ করেনা হাসিব ভাই। তাই যদি করতো, মার্কেটিংএ প্রথম শ্রেণীর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে আমার আফগানিস্তান-সোমালিয়া কামলা খেটে বেড়ানো লাগতো না। আশা করি বুঝাতে পারলাম।
রাতঃস্মরণীয়
পোস্ট দেয়া ঠিকই আছে। আপনি কনফিউজড ছিলেন এবং প্রকাশ করেছেন। আমি এই ডাকটিকেটের বিষয়টা জানতাম। কিন্তু যারা জানতেন না তারা জানলেন এই পোস্টের মাধ্যমে।
আর মার্কেটিং বিষয়ে আমিও সেটাই বলছিলাম, এটা কাজ-না-করা মার্কেটিং ট্রিক।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
পোস্ট পড়ে মন্তব্য লিখতে গিয়ে দেখি রাগিব ভাই আর তাসনীম ভাই সব কইয়া দিছেন, এখন হা কইরা বইয়া মাথা চুলকাইতেছি।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
বাংলাদেশী স্ট্যাম্প, মেড ইন আমেরিকা।
আরে! এ বিষয়েতো কিছুই জানতামনা।
রাগিব ভাইকে অনেক ধন্যবাদ বিষয়টা খোলাসা করবার জন্য।
পোস্টে হিন্দু ট্যাগিঙের তাৎপর্য বোধগম্য নয়। আপনার পোস্টেই দেখলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসবে স্ট্যাম্প আছে বলে আপনি নিজেই লিখেছেন, ছবিও দিয়েছেন। তাহলে, আর আলাদা করে হিন্দু ট্যাগিং কেন?
আর, শেষ অনুচ্ছেদটার তাৎপর্যও বুঝলাম না। পুরোমাত্রায় স্ববিরোধী মনে হলো। সম্ভবত, আসল কথাটা স্পষ্টই হয় নি।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
নতুন মন্তব্য করুন