একক

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ২৬/১০/২০১০ - ১১:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[ইদানিংকার লেখাগুলোর মত এটাও তৃপ্তিদায়ক হয়নি, তবুও বিষয়বস্তু প্রিয় হওয়া বিধায় শেয়ার করা]

একক

ফারাবী

আমি নাচছি, আমি নাচছি
আমি আমার সাথেই নাচছি!
উর্ধ্বগ্রীবা, উদ্বাহু হয়ে দুনিয়া নরক একসাথ করে
উন্মাদ হয়ে হাসছি-
আমি হাসছি।

উন্মুক্ত নটমঞ্চ পিছল, কাটা মুন্ডুর গড়াগড়ি-
ঢেউ তুলে তুলে দেহ দুলে দুলে নাচছে সবাই-
নাচো রে!
বিশ্বজগত কাঁপানো শব্দে মাথা ঢুকিয়ে ভোলো কোন অব্দে
কোন ভূসীমানায় লাখো লোক মরে পড়েছিল নিঃশব্দে;
আহত পশুর চিতকারে কোথায় উড়ল সবুজ মেঘ আর কবে
নবজাতকের কান্না নেকড়ে করেছিল নিঃস্তব্ধ।
আপাদমস্তক ঢেকে যাও শুধু বিস্মৃতি-উল্লাসে- ভোলো
কোটি বছরের সাধনা ভাঙলে লহমায়, নিঃশ্বাসে।
এলোপাথারে করতালি মেরে সুনীল আভায় সব ঢেলে দিয়ে
সব ভুলে যাও-
ভোলো রে!

আমি আমার সাথেই নাচছি-
আহা আনন্দ, আহা আনন্দ!
নানান অঙ্গে বিচিত্র ভঙ্গে আমি ভাঙছি আবার গড়ছি-
আমি উঠছি আবার নামছি, আমি
জগত ভুলে মুখে ফেনা তুলে নাচছি নটেশ্বর।

জল এত জল পেরোই কিভাবে, ভাবি মুখোশ-অন্তরালে—
মাছ ধরতে পানি না ছুঁয়ে, বিষটুকু শুষে দ্রবণ না পিয়ে
গভীর ডাঙায় ডুবছি।
“আমি ডুবছি”- শুনে তাকায় না কেউ,
জল উতরিয়ে আগায় না কেউ,
নিরাক পড়া নদে কেবল ভাসায় দুঃখী মুখোশ।

থামলে কেন? নাচো!
রঙিন আলোর পর্দা কাঁপিয়ে,
চোখে গ্লাস কানে তার গুঁজে দিয়ে
আমার সাথেই নাচছি-
আমি নাচছি!


মন্তব্য

কাজী মামুন এর ছবি

"[ইদানিংকার লেখাগুলোর মত এটাও তৃপ্তিদায়ক হয়নি, তবুও বিষয়বস্তু প্রিয় হওয়া বিধায় শেয়ার করা]"

কবিদের একটু কম বিনয়ী হলেই বেশি মানায়!


জল এত জল পেরোই কিভাবে, ভাবি মুখোশ-অন্তরালে—
মাছ ধরতে পানি না ছুঁয়ে, বিষটুকু শুষে দ্রবণ না পিয়ে
গভীর ডাঙায় ডুবছি।

এই অংশটুকু বেশি ভালো লাগলো।

শুভেচ্ছা! শুভকামনা!

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

অতিথি লেখক এর ছবি

মামুন ভাই, কথাটা বিনয় করে নয়, বরং অনেকটা দুঃখ নিয়ে বলা। আমি সত্যিই আগের মত কবিতা লিখে তৃপ্তি পাই না, বুঝতে পাই না সীমাবদ্ধতা আমার না কবিতার। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়েই চাপিয়ে দেয়া সহজতর মনে হয়। তবে অনেক সময় এমন হয় লেখক কিংবা কবি ভাল কিছু লিখে নিজেও বোঝেন না কিছু হল কিনা আদৌ, বা তৃপ্তি পান না পুরোপুরি। 'মেটামরফোসিস' লিখে কাফকার মনে হয়েছিল জিনিসটা তিনি মোটেই যেমন করে চেয়েছিলেন তেমনটা লিখে উঠতে পারেননি, গল্পের সমাপ্তি টেনে তিনি মোটেই খুশি হতে পারেননি। বুঝুন ব্যাপার! নিজের অনুভূতিটাকে বিচার করতে গেলেও তাই বোদ্ধা পাঠকের মন্তব্য প্রয়োজন হয়। সেজন্যেই এটাকে এখানে দেয়া বলতে পারেন।

আপনার আন্তরিক মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। হাসি

ফারাবী

সাইফ তাহসিন এর ছবি

কপিতা? আবার? রাসেল ভায়া আইলো তাইড়া! জানে কি ভয় ডর নাই আপনার! গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি চোখ টিপি

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

ও হ্যাঁ খ্যাপা রাসেলের কথা ত মনেই ছিল না। ডরাইসি!

রাসেল ভাইয়ের ভয়ে 'কপিতা'য় মন্তব্য দিলেন না নাকি? খাইছে

ফারাবী

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আচ্ছা আপনি মির্জা গালিব (নাকি খৈয়াম) অনুবাদ করতেন না? সেসবের কী হলো?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

হ্যাঁ একবার একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, অনুবাদই, তবে আমার না। নজরুলের খৈয়ামের অনুবাদ। প্রথমে ভূমিকা, তারপর ব্লগারদের দাবীতে কয়েকটা রুবাইয়ের অনুবাদ তুলে দিয়েছিলাম। নিজে অনুবাদ করতে পারলে ত হতই (সরাসরি)। কয়েকমাস আগে ফিটজেরাল্ডের অনুবাদ করা রুবাইগুলো পড়লাম, এর আগে এখানে ওখানে পড়েছিলাম। ফলে তুলনা করার কিছু সুযোগও মিলছিল। সেটা নিয়ে ব্যক্তিগত ব্লগে একটা পোস্টও করেছিলাম।

ফারাবী

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল আবৃত্তি করা যাবে এই কবিতা নিয়ে। করলামও কিছুক্ষণ আমার দুর্বল গলায়। হাসি

অনন্ত

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার কবিতা কেউ আবৃত্তি করতে চেষ্টা করেছে শুনেই ত মনটা দিব্যি ভাল হয়ে গেল। আমার নিজেরও আবৃত্তির গলা সেইরকম(!)।শখে কয়েকবার জীবনানন্দের কবিতার আবৃত্তির রেকর্ড করেছিলাম, পরে শুনে নিজেই ভড়কে গেছি। ভাল থাকবেন অনন্ত। হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।