--------- দেবাশিস মুখার্জি ---------
[db.mukherjee.blog@gmail.com]
আমাদের দেশের খুব কম মানুষই আছেন যারা ছোটবেলায় বাঘমামার গল্প শুনেন নি।শুধু আমাদের দেশ কিংবা এই ভারতীয় উপমহাদেশ না, মায়ানমার, মালয়েশিয়া থেকে ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, চীন, রাশিয়া এমন কি পারস্যের শিশুরাও বাঘের নানারকম গল্প শুনে বড় হয়েছে।কারণ বাঘের বিচরণ ছিল এই বিশাল সীমানা নিয়েই।গল্পগুলোতে বাঘকে সাধারণত বাঘমামা বলেই অভিহিত করা হয়।আর অদূর ভবিষ্যতে এই বাঘদের বিচরণ শুধু গল্পের বোকা বাঘমামা হয়ে থাকার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।কারণ এদের অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত এবং বাকিরাও হুমকির সম্মুখীন।
বাঘ (Panthera tigris) বড় বিড়াল পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। Panthera গোত্রের অন্তর্ভুক্ত বড় বিড়ালের মধ্যে এটি একটি। এটি Felidae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত সবচেয়ে বড় প্রাণী। বাঘ ভারতের জাতীয় প্রাণী| আর বাঘের অন্যতম সেরা প্রজাতি রয়েল বেঙ্গল টাইগার (Panthera tigris tigris)হল বাংলাদেশের জাতীয় প্রাণী।TV Channel 'Animal Planet' এর সমীক্ষা অনুযায়ী বাঘ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাণী।
বঘের বিভিন্ন প্রজাতির মাঝে উল্লেখযোগ্য হল:
১। বাংলার বাঘ (P. tigris tigris)
বাংলাদেশের জাতীয় প্রাণী এই বাঘ প্রজাতি হুমকির সম্মুখীন।বর্তমানে এদের সংখ্যা ২,৫০০ এরও কম।এর মাঝে ভারতে ১,১৬৫-১,৬৫৭, বাংলাদেশে ২০০-৪১৯(মূলত সুন্দরবন), নেপালে ১০০-১৯৪ এবং ভূটানে ৬৭-৮১ টি আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।তবে মায়ানমার এবং দক্ষিণ তিব্বতেও কিছু আছে বলে মনে করা হয়।প্রথাগতভাবে মনে করা হয়, সাইবেরীয় বাঘের পর বেঙ্গল টাইগার দ্বিতীয় বৃহত্তম উপপ্রজাতি।
২। ইন্দোচীনা বাঘ (P. tigris corbetti)
হুমকির সম্মুখীন ইন্দোচীন বাঘ দক্ষিণ পুর্ব এশিয়ার কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে পাওয়া যায়।চীনের দক্ষিণে অংশে এদের বিচরণ ছিল।মালয়েশিয়ার বাঘও এই গোত্রভূক্ত ছিল।পরে মালয় বাঘ নামক নতুন শ্রেণীতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।এ জাতের বাঘ সাধারণত বেঙ্গল টাইগার থেকে ছোট হয়।
৩। মালয় বাঘ (P. tigris jacksoni)
পূর্বের মালয়েশিয়ার ইন্দোচীনা বাঘই আজকের মালয় বাঘ।বাঘদের সর্বশেষ শ্রেণীকরণে এদেরকে আলাদা করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার অরণ্যে এদের সংখ্যা ৬০০-৮০০।থাইল্যান্ডেও কিছু রয়েছে।এটি মালয়েশিয়ার জাতীয় প্রতীক।এরা আকারে বাংলার বাঘের চাইতে ছোট।
৪। সুমাত্রার বাঘ (P. tigris sumatrae)
এদের বিচরণ ক্ষেত্র শুধুমাত্র মালয়েশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ।এরা বিলুপ্তপ্রায়।এরা আকারে সবচেয়ে ছোট প্রজাতির বাঘ।
৫। সাইবেরিয়ার বাঘ (P. tigris altaica)
হুমকীর সম্মুখীন বাঘের এই প্রজাতির বিচরণ পূর্ব ও মধ্য এশিয়া এবং রাশিয়া। প্রাচীন কালে সুদূর আলস্কাতেও এদের দেখা মিলত।এরা সবচেয়ে বড় জীবন্ত প্রজাতির বাঘ।এরা দেখতে প্রায় কাস্পিয়ান বাঘের মতই।
৬। দক্ষিণ চীনা বাঘ (P. tigris amoyensis)
এটি বিপন্ন প্রজাতির বাঘ।এদের বর্তমান বিচরণ শুধুমাত্র চীনের দক্ষিণ-পুর্বের কিছু বন।এরা আকারে খুবই ছোট।এরা বিলুপ্ত বলে ধারণা করলে ২০০৭ এ এদের দেখা পাওয়া যায়।
এছাড়া বালির বাঘ (P. tigris balica), জাভার বাঘ (P. tigris sondaica) ও কাস্পিয়ান বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।বালি বাঘের বিচরণ ছিল ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে। জাভা বাঘের বিচরণ ছিল ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে।কাস্পিয়ান বাঘ সাইবেরিয়ান বাঘেরই পশ্চিমাঞ্চলীয় জাত এবং বিচরণ করত পারস্য, ইরাক, মঙ্গোলিয়া থেকে ককেশাস অঞ্চল পর্যন্ত।
রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কিছু নমুনা:
সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার:
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া
চিত্রসূত্র: গুগল ইমেজ এবং উইকিপিডিয়া
মন্তব্য
প্রথম ছবিটা দারুন!
আমার একটা বাঘের বাচ্চা পোষার এত শখ, কিন্তু কেম্নে হবে?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ধন্যবাদ।
এটা আমারও বেশ পছন্দ হয়ছে।বাঘ জলের নিচেও শিকার করতে পারে ব্যাপারটা আমাকে অবাক করেছিল।আর বিড়ালের সব প্রজাতিই বেশ ভালো লাগে।
এইসব বাঘ সাধারণত ঘরে পোষা হয় না।চিতা ঘরে পোষা যায়।কিনতে পারেন।
--------- দেবাশিস মুখার্জি ---------
[db.mukherjee.blog@gmail.com]
পড়ার আগেই ছবিগুলা দেখলাম ... রয়েল বেঙ্গল টাইগার সাদাও হয় এটা জানতাম না ...
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ।
শুধু রয়েল বেঙ্গল টাইগার না অন্যান্য বাঘও সাদা হতে পারে।মিউটেশনের কারনে কিছু বাঘ সাদা হয়ে যায়।
--------- দেবাশিস মুখার্জি ---------
[db.mukherjee.blog@gmail.com]
ছবিগুলো বেশ লাগলো ...
_________________________________________
সেরিওজা
ধন্যবাদ।
পোস্ট দেখার জন্য ধন্যবাদ।
--------- দেবাশিস মুখার্জি ---------
[db.mukherjee.blog@gmail.com]
এইটা মনে হয় ওই উইকি আর্টিকলটার সংক্ষিপ্ত অনুবাদ। তা খারাপ কিছু না। ছবিগুলোও ভাল। তবে লেখাটা কমই হয়ে গেছে।
আগেই ধন্যবাদ জানাই পোস্টটাতে চোখ বুলানোর জন্য।
হুম, অনেকটা উইকির সারমর্মই হয়ে গেছে।
লেখা কম হয়ে গেছে, কারণ ভবিষ্যতে বাঘের প্রতিটি প্রজাতি নিয়ে বিশদভবে লিখতে চাই।আশা করি তখন উইকির ছাপ এতটা পাবেন না।
--------- দেবাশিস মুখার্জি ---------
[db.mukherjee.blog@gmail.com]
নতুন মন্তব্য করুন