নির ভাবতে বসে। আসলে ভাবা ছাড়া কোন কাজও নেই তেমন। চিন্তার একবার আকাশে ডানা মেলে দিলে মনটা আস্তে আস্তে ভাল হয়ে যায়। জীবনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়গুলো তখন গৌণ। উপর থেকে মনের চোখ মেলে তাকিয়ে থাকা,নিচে পরিচিতজনেরা তাদের নিজশ্ব কাজে মত্ত। আপাতঃ দৃষ্টিতে ভিন্ন অথচ মূলত একই। হটাৎ হটাৎ এর মাঝে নিজেকে খুঁজে পায় না নির। সব ঠিকই থাকে।'সমাজের বাঁধা ঘাটে, নিয়মের লন্ঠন জ্বালিয়ে'বসে থাকে স্থিতধী। নিস্তরঙ্গ মনের নদী। ঠিক যেন শান্ত হয়ে জাঁকিয়ে বসে উল্টোদিকের জলপাই গাছে কটা মাছরাঙ্গা বসল তার গুনতির চেষ্টা। অতর্কিতে ডাকে বান। স্রোতের তোড়ে ভাসে যায় গাছ,ঘাট,মানুষ,এমনকি নিরও। কেন সেই বান,কেনই বা তার প্রাবল্য বুঝে পায় না নির।
দূঃখ আর ভাললাগার অনূভূতিগুলো যেমন জটিল,আরো দূর্বোধ্য তার ভাষায় প্রকাশ। কবি-সাহিত্তিকদের এই একটা মজা,শব্দের উপর দখল। নির ভাবল,একটা অনূভূতির অভিধান কোথায় পাওয়া যায়। তার মত আমজনতার শব্দের ভাঁড়ার বড় বেশী শুন্য। আর শুন্যতা নিয়েই ভীষন বিপদ। বলতে চায় একটা,হয়ে যায় আরেক জিনিষ। না বললেও বিপদ। অনেক নামের মাঝে,'রামগুড়ুড়ের ছানা'টাই নির-র সবচেয়ে প্রচলিত নাম। কারনটা স্বাভাবিক। লোকে দেখে সে কম কথার রাশভারী মানুষ। কথা যে সে কম বলে তা ও না কিন্তু সংক্ষিপ্ত। নিজের উপরই রাগ হয় মাঝে মাঝে। কিন্তু চারপাশে তাকিয়ে সামলে নেয়। আর হাসি এমন আরেকটা অনূভূতি যার উপর নির-র কোন নিয়ন্ত্রন নেই। সে হাসে প্রচুর,খালি মুখের উপর বহিঃপ্রকাশ হয় কম। সবমিলেই ঝঞ্ঝাট।
সবাই বলে দূঃখ থাকবে নিজের কাছে আর সুখ বিলানোর জিনিষ। কথাটা নির-র খুব ভাললাগে। সুখ বিলাতে মন চায়। ভাবে এর একটা ইশকুল থাকলে ভাল হত। কারন যখনই সে চেষ্টা করে একটা না একটা ভজঘট বাঁধবেই। বেশী
চেষ্টায় 'জোকার' আর হালকা চেষ্টায় 'যন্ত্র'। ঘুরেফিরে একই নাম দেয় লোকজন। আরে বাবা চেষ্টার একটা দাম থাকবে না তাই বলে। বিরক্তিতে ভরে ওঠে নির-র মনটা।
অবশ্য চেষ্টায় কি যায় আসে,মানুষ চায় বাহ্যিক প্রকাশ আর প্রকাশিতের জনসমর্থন। অল্পকিছু আছে যারা বাহ্যিকতার আবরণ তলে অন্তরটা দেখার চেষ্টা করে। উদ্দেশ্য মহৎ হলেও,বিপদ এদের থেকেই বেশী। বাহ্যিকতার পিয়াসী বাইরে দেখেই শেষ। তাদের সাথে নির-র মানসিক যোগাযোগ কম। অন্তর দেখা গোত্র আবার ভিতর-বাহির দুয়ের সাজুজ্য খোঁজে। একদিক থেকে ভাল যে এরা মানুষের কষ্টিপাথরের কাজ করে। পারস্পরিক চিন্তার মুক্ত প্রকাশ আর স্বেদহীন স্বীকারক্তি। মুশকিল হল চিন্তার লেনদেন আবার নির্ভরশীলতা তৈরী করে দ্রুত। নির্ভরশীলতা থেকে ভাললাগা আর ঈপ্সিত আচরণের আকাঙ্খা।
নির নিরন্তর খুঁজে ফেরে এই ভাললাগার একটা জুতসই প্রতিশব্দ,যেটা এর আসল অর্থে কাছাকাছি। প্রেম নয়, মোহ নয়, আস্বাদের আকাঙ্খা নয়, শুধুই অবগাহনের ইচ্ছা। নতুন নতুন আবিস্কারের আনন্দ। পুনরাবৃত্তিক জীবনে অত্যল্প কিছু বেঁচে থাকার অবলম্বনের মত। গ্লানিহীন। আর ছোট্ট একটা অধিকারবোধ - ভাবনাগুলো পারস্পরিক প্রকাশের আর সংরক্ষণের আশ্বাস।
আর তাতেই বানভাসির পুনরাবৃত্তি।
(উৎসর্গিত)
অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম
মন্তব্য
লেখার শব্দচয়ন ক্লিশে মনে হয়েছে। গল্পটাও ঠিক মতো বলা হয়েছে বলে মনে হয়নি। এমন লেখা পড়তে কষ্ট হয়। এটা পাঠক হিসেবে আমার দুর্বলতাও হতে পারে - লেখা ভালো লাগেনি।
মতামতের জন্য ধন্যবাদ। পাঠকগ্রাহ্যতা লেখার অন্যতম একটা পারিমাপক। উন্নতির চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম
নতুন মন্তব্য করুন