পূর্বলেখঃ ১৯৮৩ সাল। তখন আমি দশম শ্রেণীর ছাত্র। ক্যাডেট কলেজের আন্তঃ হাউস বাংলা কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় সেবারের নির্বাচিত কবিতা শামসুর রাহমান রচিত ‘বিপর্যস্ত গোলাপ বাগান’। ধুম প্রাক্টিস চলছে আমাদের হাউস টিউটর ও বাংলা শিক্ষক জনাব সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে। আবৃত্তিতে বিগত তিন বছরের শিরোপা আমাদের। দু’তিনদিনের প্রাকটিসেই কবিতাটি মোটামুটি আয়ত্ত্বে এসে যায়। এর পর চলে নিজস্ব ধরণে কন্ঠস্বর ওঠানো-নামানোর খেলা আর কবিতার পরতে পরতে স্বকীয়তা বুনে দেবার নিপুন অনুশীলন। শব্দনদীর ভাঁজে ভাঁজে ছোট ছোট লহরী তুলে ভালোই এগুচ্ছিল তরী। হঠাৎ কেন জানি আনমনা হয়ে হারিয়ে যাই এই ক’টি চরণের মাঝে।
“নেরুদা আবার শিউরে ওঠেন
এখনি পঙ্গু ঈগল সাম্যবাদ
মাদ্রিদ আর চরাচর জুড়ে
লোরকা করেন কৃষ্ণ আর্তনাদ”
আমার কন্ঠ বাষ্পরুদ্ধ হয়ে আসে, আমি যেন ষ্পষ্ট শুনি লোরকার আর্তনাদ। কলেজের লাইব্রেরী থেকে ইস্যু করা পাবলো নেরুদার কবিতা আর সেই স্মৃতিধর বিখ্যাত বইটি 'Confieso que he vivido: Memorias' আগেই পড়েছিলাম। কিন্তু পুস্তকায়িত লোরকা তখনো আমাদের লাইব্রেরীতে পদধুলি দেন নি। ছুটিতে এসে রংপুরের লাইব্রেরী পাড়ায় লোরকাকে খুঁজি, হঠাৎ আলোর ঝলকানি লাগা কোন এক বিকেল বেলায় তাঁকে পেয়ে যাই, মূলে নয়, অনুবাদে। সেই থেকে একান্ত আপন কোন নির্জন মুহূর্তে চকিতে আমার মাঝে লোরকা সুর তোলেন বিষন্ন গীটারের। সেই সুর আমার লেখার টেবিলে, দেরাজে, চালশে চশমার কাঁচে, আলো হারাবার দিনের গোধুলী বেলায়, এলোমেলো পথ চলায় আজো প্রিয় সঙ্গী।
ইগনাথিও সাঞ্চেস মেহিয়াসের জন্য শোকোচ্ছাস
১. আলোড়ন ও মৃত্যু
তখন ঘড়িতে বিকেল পাঁচটা বাজে
কাঁটায় কাঁটায় বিকেল পাঁচটা বাজে
সাদা থান নিয়ে অমল বালক এক
এলো ঠিক ঠিক বিকেল পাঁচটা যবে
ঝুড়ি ভরে রাখা আছে সাদা সাদা চুন
ঘড়িতে তখন বিকেল পাঁচটা বাজে
শুধু মৃত্যুর, মৃত্যুর পথ চেয়ে
গোধুলী আলোয় থেকে থেকে উঠে নেয়ে
বাতাসে ওড়ায় পেঁজা তুলো ছিল যতো
ঘড়িতে তখন পাঁচটা বাজার সুর
অক্সাইড ছাড়ে ষ্ফটিক-নিকেল কিছু
হলো বেলাবেলি, বিকেল পাঁচটা বাজে
ঘুঘু আর চিতা সমানে লড়াই করে
পাঁচটার ক্ষণে, ঠিক পাঁচটার ক্ষণে
একটি উরু বিষন্ন শিংয়ের সনে
যুদ্ধে মেতেছে, ঠিক পাঁচটায়, রণে
আর্সেনিকের ঘন্টা এবং ধোঁয়া
পাঁচটায় জেনো, পাঁচটায় ঠিকঠাক
চারপাশে জমে স্তব্ধতা নির্বাক
ঘড়ি ধরে ধরে বিকেল পাঁচটা বাজে
বুনো ষাঁড় শুধু ভীষণ উল্লসিত
পাঁচটা বেজেছে, ঘড়ির কাঁটায় মাপা
যে সময়ে দেখা দিল তুষারের ঘাম
ঘড়িটা জপছে ঠিক পাঁচটার নাম
যে সময়ে ঢাকা বুল রিং আয়োডিনে
ঘড়ির কাঁটাটি পাঁচের ঘরটি ছোঁয়
ক্ষতের কোটরে মৃত্যু পেড়েছে ডিম
বিকেল পাঁচটা বিকেল পাঁচটা বাজে
গুনে গুনে ঠিক বিকেল পাঁচটা বাজে
চাকাঅলা এক কফিন শয্যা তাঁর
ঘড়ির ঘন্টা পাঁচটার বোল তোলে
হাড় আর বাঁশি তাঁর কানে বাজে ফের
সময় গড়ায় বিকেল পাঁচের কোলে
এখন ষাঁড়ের গর্জন ভরা রোষ
ঠিক পাঁচটায় খুঁজে পায় যত জোশ
রামধনু রঙে ঘর হলো জ্বালাময়
জানি পাঁচটায় বিকেলের হবে ক্ষয়
বহুদূর হতে ক্ষতের পচন আসে
বিকেল পাঁচটা বুদ্বুদ তুলে কয়
সবুজ কুচকি তূর্য ধ্বণিতে নাচে
ঘড়িতে তখন পাঁচটাই লিখা আছে
ক্ষত জ্বলে উঠে সূর্যের তেজ নিয়ে
বিকেলের বুকে পাঁচটি গোলাপ যেন
এবং জনতা ভাঙে জানালার কাঁচ
ঘড়িতে হেনেছে পাঁচটা বাজার বাজ
পাঁচটা বেজেছে, বিকেল পাঁচটা ঠিক
বিকেল পাঁচটা বেজেছে দিগ্বিদিক
আহা, ভয়াবহ বিকেল পাঁচটা আজ
সব ঘড়িতেই প্রেতায়িত বাজে পাঁচ।
রোমেল চৌধুরী
মন্তব্য
খুব ভালো লাগলো। আপনি সম্ভবত ইংরেজী অনুবাদ থেকে বাংলা করেছেন, আগ্রহীদের জন্য এই লিংকটা দিলাম।
কবিতার জন্যই পৃথিবীর সবগুলো ভাষা শেখা দরকার।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বোন,
কি ভালোই না হতো তাহলে।
রোমেল চৌধুরী
তাসনীম ভাই,
আপনাকে ধন্যবাদ। ঠিক ধরেছেন, ইংরেজী থেকেই ভাবানুবাদ, লোরকার মূল ভাষাটি জানা নেই আমার। লিংক দিয়ে দেবার জন্য আরেক দফা ধন্যবাদ।
রোমেল চৌধুরী
দারুন লাগল পড়তে। আর আপনার অনুবাদটাও বেশ ভাল হয়েছে। একই সাথে তাসনীম ভাইকে ধন্যবাদ ইংরেজি অনুবাদের লিংক দেয়ার জন্য।
অনন্ত
অনন্ত ভাই,
ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশাকরি ভবিষ্যতেও পাশে পাব।
রোমেল চৌধুরী
আমি কবিতা বুঝিনা। তারপরও কোনো কোনো কবিতা কেন বুঝিনা মনের ভেতর এতো আলোড়ন তোলে যতটা আলোড়ন কোনো গদ্য তুলতে পারেনা। খুবই ভালো লাগলো।
তাসনীম ভাইকে ধন্যবাদ লিংকের জন্য।
আপনার মন্তব্য আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল অতীতের মায়াবী চত্বরে। বাংলা শিক্ষক জনাব সাইফুল ইসলামের হাত ধরে আধুনিক বাংলা কবিতার সাথে আমার প্রথম সখ্যতা। দূর্বোধ্যতার কন্টকিত পথে রক্তঝরানো পথ হেঁটে আধুনিক বাংলা কবিতা শতদল মেলেছে তখন। আমার কিশোর বুদ্ধি ও মনন তখনও সেই মদিরা পানের জন্য ঠিক পরিপক্ক হয়ে উঠেনি। অথচ সীমাহীন আগ্রহ ও এক ধরণের মোহন ঘোরের মাঝে বিচরণ করি, কলেজ লাইব্রেরীর নীরব কিউবিকলে, দুপুরের প্রেপ আওয়ারে ডরমিটরির জানালার ফাঁক গলে সুনসান খেলার মাঠের নিস্তব্ধতায় হেঁটে যাওয়া কাব্যদেবীর নুপুরে কোন সুর বেজে উঠলো তা শোনার জন্য, বোঝার জন্য কান পেতে রই। এরই মধ্যে জনাব সাইফুল ইসলাম বদলী হয়ে গেলেন সিলেটে। মন ভালো নেই, মন ভালো নেই, কবিতাকে কি ছুটিই দিয়ে দিতে হবে? সাইফুল ইসলামকে লিখলাম অধরা মাধবীর কথা, এরই মধ্যে চল্লিশ-পঞ্চাশ-ষাটের দশকের দুই বাংলার যে ক'জন কবির কাব্যগ্রন্থ আমাদের কলেজ লাইব্রেরীতে পদধুলি দিয়েছে তা নেড়ে চেড়ে দেখেছি। জীবনানন্দ দাশ, প্রেমেন্দ্র মিত্র, অমিয় চক্রবর্তী, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, শক্তি চট্টপাধ্যায়, শঙ্খ ঘোষ, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, ফজল শাহাবুদ্দিন, আবুল হাসান, নির্মলেন্দু গুণ, রফিক আজাদ, দাউদ হায়দার আমাকে লাইব্রেরীর বুকশেলফ থেকে উপেক্ষার হিম হানে। সাইফুল ইসলামকে সেকথা জানিয়ে চিঠি লিখলাম, ছিন্ন বীণা হাতে বসে থাকলাম উত্তরের অপেক্ষায়। যথাসময়ে উত্তর এলো, বাজারের ফর্দের মত করে কাটা রুল টানা কাগজে তিনি লিখলেন, "পড়, শুধুই পড়, একসময় তোমার চোখের সামনে কবিতার সোনালী তোরণ খুলে যাবেই যাবে"।
রোমেল চৌধুরী
আপনার এই মন্তব্যটা আমাকেও কিছু সুন্দর স্মৃতি মনে পড়িয়ে দিল। কলেজে আমরাও একজন বাংলার শিক্ষক পেয়েছিলাম, অসাধারণ পড়াতেন। আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতাম। আর আমাদের কলেজ লাইব্রেরীর কাছে আমি ভীষণ কৃতজ্ঞ। বিভূতিভূষণের সাথে পরিচয় এই লাইব্রেরীর সৌজন্যেই। 'আরণ্যক' এ ডুব দিয়ে তখন আমার রীতিমত পাগল পাগল অবস্থা! অনেক সুন্দর ছিল দিনগুলি।
ভাল থাকবেন।
........................................
উজবেক কবি নদ্দিউ নতিম এর কথা মনে পড়ে গেলো।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
স্পর্শ ভাই,
স্মৃতিবিহারী করলেন। কবি নদ্দিউ নতিম এতো ভালো লিখে গেছেন যে অনুবাদের দুঃসাহস রাখি না। যদি তাকে স্পর্শ করা যেতো স্পর্শহীন! যোগ্যতা হাতছানি দিলে কোন সময় হয়ত ঝরণা কলম হাতে তুলে নেব। আপনাকে ধন্যবাদ।
রোমেল চৌধুরী
একটা সিনেমা দেখে এই কবিকে নিয়ে লিখতে বসেছিলাম, মাঝপথে ঝুলে আছে সে লেখা মাসখানেক হলো। যাক, আবার বসতে হবে, আপনার লেখা পড়ে উৎসাহ পেলাম।
মিডল নেম'টা "গার্সিয়া" হবে না?
অনুবাদ শুধু ভালো না, দুর্দান্ত রকমের ভালো হয়েছে! প্রশংসা করে তৃপ্তি হচ্ছে না এই রকম ভালো!
দু একটা কথা:
- গোধুলী আলোয় থেকে থেকে উঠে নেয়ে > গোধূলি
- অক্সাইড ছাড়ে ষ্ফটিক > স্ফটিক
- সবুজ কুচকি তূর্য ধ্বণিতে নাচে > কুঁচকি, ধ্বনি (যদিও সবুজ কুচকি/কুঁচকি'র ব্যাপারটা ভালো বুঝলাম না, মূলে কী ছিলো তাও জানি না)
- ঘড়িতে তখন পাঁচটাই লিখা আছে > লেখা (যে ভাষায় লিখেছেন তাতে 'লিখা'টা বেমানান লাগে)।
একটি উরু বিষন্ন শিংয়ের সনে > ঊরু, বিষণ্ণ
আর এই লাইনে একটু ছন্দপতন হচ্ছে:
"একটি উরু বিষন্ন শিংয়ের সনে"
এই রকম হলে ছন্দ মেলে, যদিও অর্থের বারোটা বাজে:
"একখানি ঊরু বিষণ্ণ শিং সনে"।
যাক, দারুন লাগলো সেইটা আরেকবার বলে যাই।
লিটস এশেস এর রিভিউ পড়ে এই ব্লগে আবার আসলাম। মিডল নেম গার্সিয়া, এটা মন্তব্যে আমিও বলতে চেয়েছিলাম, ভুলে গেছি।
ভদ্রলোকের পুরো নাম Federico del Sagrado Corazón de Jesús García Lorca, ভাগ্যভালো উনি ম্যাট্রিক পরীক্ষায় বসেননি ঢাকা বোর্ড থেকে...সার্টিফিকেটে নামের ভুল ঠেকানো কারো সাধ্য ছিল না
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভাই,
এত মনযোগ দিয়ে লেখাটি পড়ে এত চমৎকার মন্তব্য উপহার দেবার জন্য আমি সত্যি বড় সম্মানিত বোধ করছি। সেই সাথে আরেক দফা কৃতজ্ঞতা ভুলগুলি শুধরে দিয়ে আমাকে ও পাঠককে যথার্থই উপকৃত করবার জন্য।
বাংলায় মুদ্রিত পত্র-পত্রিকা-পুস্তকাদিতে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই মধ্যনামটি 'গার্সিয়া' হিসেবে এসেছে, তবে দু'এক জায়গায় যে 'গার্থিয়া' মুদ্রিত হয়নি তা নয়। লোরকা বিশেষজ্ঞ পুস্কর বন্দোপাধ্যায় যেমন সবসময় 'গার্থিয়া' লিখেছেন তেমনি 'Ignacio Sánchez Mejías' কে লিখেছেন 'ইগনাথিও সানথেস মেহিয়াস'। তবে 'ci' এর উচ্চারণ 'সি'-ই বোধকরি অধিকতর শ্রুতিগ্রাহ্য।
ভাই, লজ্জায় ফেললেন। আমার পেশা ও নেশা পরস্পরের অব্যর্থ শত্রু। ঠিক যেমন 'ইগনাসিও সাঞ্চেস মেহিয়াস'এর ঊরু ও তেজী ষাঁড়ের বিষণ্ন শিং।
প্রমিত বাংলা বানান রীতি ও ণ-ত্ব ষ-ত্ব বিধানে আমার দুর্বলতা ইথিওপিয়ার কঙ্কালসার ভুখা শিশুটির শারীরিক ঊনতাকেও হার মানাবে। এই সমঝদার আসনে নিজেকে কেমন অপাংতেয় মনে হচ্ছে। এবার বোধকরি সচেতন হবার সময় এলো। আপনাদের এমন বান্ধব সহযোগিতা পেলে সেটি পুষিয়ে নিতে পারবো, সে বিশ্বাস আছে। আশাকরি সবসময়ই পাশে পাবো।
ভাই, মূলে কী আছে, কবুল করতে দ্বিধা নেই যে সেটি আমারও জানা নেই। তবে ইংরেজী অনুবাদে আছে এমনটিঃ
Horn of the lily through green groins
at five in the afternoon.
সবুজ কুচকি তূর্য ধ্বণিতে নাচে
ঘড়িতে তখন পাঁচটাই লিখা আছে
'groins' কে 'কুঁচকি' বলেছি, মনে ধরেনি, তাই না?
আরেক দফা ধন্যবাদ। এখন পালটে দিলে কী 'প্লাজারিয়াজম' হবে?
বাপরে, আপনি পাকা জহুরী। আমি কবি নই, তবে ধারণা করি কবিকে প্রায়শই ছন্দ ও অর্থের ভারসাম্য রক্ষা করে সার্কাসের মেয়ের মতো সরু দড়ির উপর দিয়ে হাঁটতে হয়। তাই রবীন্দ্রনাথ বলেছেনঃ
১। ভাবকে কথাকে ছন্দের মধ্যে জাগিয়ে তুললেই তা কবিতা হয়। সেই ছন্দ থেকে ছাড়িয়ে নিলেই সে হয় সংবাদ; সেই সংবাদে প্রাণ নেই, নিত্যতা নেই।
২। সাহিত্যের মধ্যে কারুকাজ, কাব্যে যার প্রাধান্য, তার একটা দিক হচ্ছে শব্দের বাছাই-সাজাই করা। কালে কালে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ভাষায় শব্দ জমে যায় বিস্তর। তার মধ্যে থেকে বেছে নিতে হয় এমন শব্দ যা কল্পনার ঠিক ফরমাশটি মানতে পারে পুরো পরিমাণে।
৩। যেমন আছে শব্দের বাছাই তেমনি আছে ভাবপ্রকাশের বাছাইয়ের কাজ।
দেখুন তো, "জগার হলো যে বিষম দায়"।
রোমেল চৌধুরী
আহা!
লোরকার কবিতা পড়েছি অমিতাভ দাশগুপ্তের অনুবাদে। আপনি যেই অনুবাদটা করেছেন, সেটা যখন প্রথম পড়ি অমিতাভ দাশগুপ্তের অনুবাদে, মুগ্ধ হয়েছিলাম। মজার ব্যাপার হলো, দিন কয়েক আগেও দৈনিক আড্ডাতে কী প্রসঙ্গে যেন লোরকার নাম উঠাতে এই কবিতাটার কথা মনে পড়েছিলো।
আপনার অনুবাদটাও ভালো লাগলো- তবে কিছু খটকা ছিলো যেগুলির কথা মূলত পাঠক দিয়েছেন।
লোরকার কিছু চমৎকার গীতিনাট্য জাতীয় মানে ওই কবিতার মধ্য দিয়ে লেখা নাটক (কিছুতেই শব্দটা মনে পড়ছে না ) আছে না? সেগুলি অনুবাদ করতে পারেন। বড়ই মধুর সেই কবিতাগুলি।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
সবজান্তা ভাই,
আমি মোটেই কোন কবি বা কাব্য অনুবাদক নই। কাব্যানুরাগী হয়ত কিছুটা। কবি হবার উচ্চাভিলাষও করিনা। অমিতাভ দাশগুপ্ত কিম্বা পুস্কর বন্দোপাধ্যায়ের স্তরে উঠার দুরাশাও নেই। আমি লিখি আমার মনের আনন্দে, আর সচলায়তনে পোষ্ট করি সেই আনন্দটিকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে শতধা বাড়িয়ে নিতে। এরপরেও যে আমার কাঁচা হাতের কর্মটি আপনার কিছুটা হলেও ভালো লেগেছে তা জেনে খুশী হলাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
রোমেল চৌধুরী
ভালোলাগা জানাই।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
মৌনপ্রিয় আফসার ভাই,
আপনার ভালো লাগা 'সুরের আগুন ছড়িয়ে দিল' এই প্রাণে।
রোমেল চৌধুরী
নতুন মন্তব্য করুন