অর্থবোধক ধ্বনির সমষ্টিই ভাষার প্রধান উপাদান। বর্ণ ধ্বনির প্রতিনিধিত্ব করে। তাই যদি সত্যি তাহলে মুখের উচ্চারণ আর ভাষার লিখিত রূপের পার্থক্য থাকার কথা নয়। কিন্তু বিশ্বের অধিকাংশ ভাষাতেই শব্দের বানান ও উচ্চারণে পার্থক্য রয়েছে। ইংরেজির কথাই ধরা যাক। ইংরেজিতে এক 0 দিয়ে বোঝানো হয় অ (hot), ও (note), আ (dove), উ (move) প্রভৃতি ধ্বনিকে। আবার বিপরীত ঘটনাও রয়েছে। অর্থাৎ উচ্চারণ একই, কিন্তু বানান ভিন্ন। শ-ধ্বনি লিখতে গিয়ে c, s, sh, ss, ti ব্যবহার করা হয় এমন শব্দ ইংরেজি ভাষায় ভুরি ভুরি। উদাহরণ :
c - malicious (ম্যালিশাস)
s - sure (শিওর)
sh - fashion (ফ্যাশন)
ss - profession (প্রফেশন)
ti - fiction (ফিকশন)
আমরা ইংরেজি ভাষার এসব গণ্ডগোলে আপত্তি করি না। তাহলে শুধু মাতৃভাষা বাংলার বেলায়ই এত আপত্তি কেন?
এ কথা সত্য যে, বাংলা ভাষায়ও শব্দের বানান বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চারণানুগ (phonetic spelling) নয়। এ কারণেই বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে বাংলা বানান সংস্কারের। এ বিষয়ে আবার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন মত দেখা যায়। একটি মত হচ্ছে, সমস্ত শব্দের ধ্বনিসংবাদী বানান প্রবর্তন। সত্যি, এমনটা করা গেলে বাংলা লেখা ও পড়ার কাজটি অনেকটাই সহজ হয়ে যেত। কিন্তু এর প্রধান অসুবিধা এই যে, এর ফলে বহু শব্দের ব্যুৎপত্তি-ইতিহাস হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া এতে অনেক চেনা শব্দের বানান অচেনা হয়ে যাবে, বিশেষত সে সব শব্দও, যেগুলির বানান নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। দ্বিতীয় মত, কোথাও কোনো সংস্কার বা পরিবর্তন না করা। বলাই বাহুল্য, এ মতটিও ঠিক গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ একজন বিশেষজ্ঞ একটি শব্দের যে বানান লেখা উচিত বলে মনে করবেন, আর একজন বিশেষজ্ঞ তা না-ও মনে করতে পারেন। তাই তো কেউ লিখছেন জিনিস, যেহেতু শব্দটি আরবি জিন্স থেকে এসেছে; কেউ বা লিখছেন জিনিশ, যেহেতু এটি বিদেশি শব্দ এবং এক্ষেত্রে, সেই মত অনুসারে, বাংলা উচ্চারণই গ্রহণযোগ্য। এ কথা তো সত্যি, এই শব্দের উচ্চারণে তালব্য শ-ই আসে। এই বিতর্ক, সংশয় দূর করতে সংস্কারের বিকল্প আছে কি? তৃতীয় মতটি তাই সর্বাধিক প্রণিধানযোগ্য। এই মতের অনুসারীদের উদ্দেশ্য বাংলা শব্দভাণ্ডারের বিমিশ্র চরিত্রের সাথে সংগতি রেখে তৎসম শব্দের মূল বানান 'মোটামুটিভাবে' অপরিবর্তিত রাখা। আর তদ্ভব, অর্থতৎসম, দেশি ও বিদেশি শব্দের বানানকে কমবেশি ধ্বনিসংবাদী করা। কারণ সমস্ত তদ্ভব বা অর্ধতৎসম শব্দে ধ্বনিসংবাদী বানান প্রবর্তন করতে গেলে আমাদের পূর্বসংস্কার বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই যেখানে ব্যুৎপত্তি-সম্বন্ধের দূরত্ব বা অস্পষ্টতা রয়েছে অন্তত সেখানে উচ্চারণানুগ বানান প্রবর্তন করা যেতে পারে। বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে, এই মত অনুযায়ী, বাংলা উচ্চারণের শর্ত বজায় রেখে বিদেশি শব্দের মূল উচ্চারণ প্রতিবর্ণীকৃত হবে।
শ, ষ, স
বাংলায় তিন 'শ' থাকলেও শ ও স এই দুটি ধ্বনিই কেবল পাওয়া যায়। স পাওয়া যায় কিছু যুক্তব্যঞ্জনে। স্বতন্ত্র ধ্বনি হিসেবে কেবল শ-ই আছে। যেমন, বিশ/বিষ, সব/শব, সোনা/শোনা, ভাষা/ভাসা—বানানেই শুধু ভিন্ন, উচ্চারণে কেবল তালব্য-শ। আবার যুক্তব্যঞ্জনে স পাওয়া গেলেও কোথাও কোথাও ষ-এর মতো উচ্চারিত হয়। যদিও একক ও আলাদা স ও ষ উচ্চারিত হয় শ-এর মতো। আরও স্মরণে রাখা দরকার যুক্তব্যঞ্জন মাত্রই স বা ষ পাওয়া যাবে তা নয়। শব্দের গোড়ায় স্ক, স্খ, স্প, স্ফ থাকলে স উচ্চারণ হয়, কিন্তু শব্দের মধ্যে উচ্চারণ শ হয়। যেমন : স্কন্ধ, স্পর্শ, স্ফটিক—উচ্চারণ হবে যথাক্রমে স্ ক, স্ প, স্ ফ। কিন্তু বিস্ফারিত, আস্ফালন ইত্যাদি শব্দের প্রমিত উচ্চারণে শ পাওয়া যায়। যেমন, বিশ্ফারিত, আশ্ফালন ইত্যাদি।
আবার শ-এর সাথে র-ফলা, ন-ফলা এবং ল-ফলা যুক্ত হলে স উচ্চারিত হয়। বিশ্রাম, প্রশ্ন, অশ্লীল প্রভৃতি শব্দের মান্য উচ্চারণ যথাক্রমে বিস্ স্রাম, প্রোস্ নো, অস্ স্লিল (লক্ষণীয় যে, বানানানুগ উচ্চারণ বা spelling pronunciation এ শব্দগুলোর উচ্চারণকে প্রভাবিত করেছে, তাই প্রোশ্ নো ও অশ্ শ্লিল উচ্চারণও প্রচলিত হয়ে গেছে)।
সে যা-ই হোক, এই বিষম গোলমালে পড়ে আমরা প্রায়ই ভাবনায় পড়ে যাই কোনটা লিখব—তালব্য-শ, না দন্ত্য-স? শুধু দন্ত্য-স, না তার নিচে ব-ফলাও থাকবে একটা? অথবা এসবের কোনোটাই নয়, লিখতে হবে মূর্ধন্য-ষ? এ সংশয় যথাসম্ভব দূর করতে শ, স, ষ ব্যবহারের কিছু নিয়ম বা সূত্র গ্রন্থিত করার চেষ্টা করছি :
শ ব্যবহৃত হবে
১. তৎসম শব্দে মূল সংস্কৃত শব্দ অনুসারে শ/স/ষ ব্যবহৃত হবে।
২. বিদেশি মূল শব্দে শ-য়ের যে প্রতিষঙ্গী বর্ণ বা ধ্বনি রয়েছে বাংলা বানানে তাই ব্যবহার করতে হবে। যেমন : শহর, শরবত, শামিয়ানা, শখ, শৌখিন, পোশাক, বেহেশ্ত, নাশতা, কিশমিশ, শরম, শয়তান, শার্ট, শনাক্ত। তবে, পুলিশ শব্দটি ব্যতিক্রমরূপে শ দিয়ে লেখা হবে। আরবি-ফারসি শব্দে 'শিন্'-এর প্রতিবর্ণরূপে শ ব্যবহৃত হবে। যেমন : এশা, শাবান (হিজরি মাস), শাওয়াল (হিজরি মাস), বেহেশ্ত। [১]
৩. ইংরেজি ও ইংরেজির মাধ্যমে আগত বিদেশি sh, -sion, -ssion, -tion প্রভৃতি বর্ণগুচ্ছ বা ধ্বনির জন্য শ ব্যবহৃত হবে। [২]
উদাহারণ : শো (show), কমপ্রিহেনশন (comprehension), প্রফেশন (profession), স্টেশন (station)।
স ব্যবহৃত হবে
১. বিদেশি মূল শব্দে স-য়ের যে প্রতিষঙ্গী বর্ণ বা ধ্বনি রয়েছে বাংলা বানানে তাই ব্যবহার করতে হবে। যেমন : সাল (=বৎসর), সন, হিসাব, মসলা, জিনিস, আপস, সাদা, স্মার্ট। আরবি-ফারসি শব্দে 'সে', 'সিন্', 'সোয়াদ' বর্ণগুলির প্রতিবর্ণরূপে স ব্যবহৃত হবে। যেমন : সালাম, তসলিম, ইসলাম, মুসলিম, মুসলমান, সালাত, মসলা। [৩]
লক্ষণীয় : সংস্কৃতের স বাংলায় ছ হওয়ার উদাহরণ এন্তার। যেমন, জোৎস্না>জোছনা, শ্রাদ্ধ>ছেরাদ্দ, কুৎসিত>কুচ্ছিত। তাই বিদেশি শব্দেও স-এর পরিবর্তে ছ লেখার কিছু কিছু প্রবণতা দেখা যায়, এটা ঠিক নয়। শুধুমাত্র যেখানে বিদেশি শব্দের বানান সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে স ছ-য়ের রূপ লাভ করেছে সেখানে ছ ব্যবহার করতে হবে। যেমন : পছন্দ, মিছিল, মিছরি, তছনছ। [৪]
২. ইংরেজি ও ইংরেজির মাধ্যমে আগত বিদেশি s বর্ণ বা ধ্বনির জন্য স ব্যবহৃত হবে। [৫]
উদাহরণ : সাইজ (size), স্টল (stall), স্টাইল (style), সোর্স (source), সারপ্রাইজ (surprise)।
৩. তৎসম শব্দে ট, ঠ বর্ণের পূর্বে ষ হয়। যেমন : বৃষ্টি, দুষ্ট, নিষ্ঠা, পৃষ্ঠা। কিন্তু বিদেশি শব্দে এই ক্ষেত্রে স হবে। যেমন : স্টল, স্টাইল, স্টিমার, স্টুডিও, স্টেশন, স্টোর, স্ট্রিট। ব্যতিক্রম : খ্রিষ্ট যেহেতু বাংলায় আত্তীকৃত শব্দ এবং এর উচ্চারণও হয় তৎসম কৃষ্টি, তুষ্ট ইত্যাদি শব্দের মতো, তাই ষ্ট দিয়ে খ্রিষ্ট শব্দটি লেখা হবে। [৬]
স বনাম স্ব
ইদানিং সস্ত্রীক, সপরিবারে প্রভৃতি বানানে স-য়ের নিচে ‘ব’ লাগানো হয়ে থাকে যা হাসির উদ্রেক করে। তাহলে কি কারও কারও কাছে 'স'-কে একটু বেশি সাদামাটা বা হালকা মনে হয়, যার সাথে একটু বাড়তি ওজন চাপিয়ে একে 'স্ব'-এর মতো একটা যুক্তাক্ষর বানালে তবেই পাণ্ডিত্যের কিছুটা ভাব আসে? নিশ্চয়ই না! এসবই আসলে শব্দার্থ বোঝায় ভুল হওয়ার কারণে হয়। স-এর অর্থ সহিত/সহ (With) আর স্ব-এর অর্থ নিজ (Self)। যেমন : সহসা, সমেত, সলাজ, সচকিত, সহর্ষ, সশব্দে, সবিনয়, সতীর্থ, সচিত্র। অন্যদিকে স্বগ্রাম, স্বরাজ, স্বদেশ, স্বনামে, স্বভাব, স্বধর্ম। লক্ষণীয়, বাংলায় এই অন্তঃস্থ ব সব সময়ই অন্য বর্ণের সাথে যুক্ত হয়। তবে বর্ণ হিসেবে এটি কখনো সংস্কৃতের মতো 'উঅ'-রূপে, ইংরেজি W (ওয়া) রূপে এবং আরবি 'ওয়া' রূপে উচ্চারিত হয় না। ব-ফলা শব্দের আদি বর্ণের সাথে যুক্ত হলে বর্ণটিকে শ্বাসাঘাতসম্পন্ন করে মাত্র এবং বর্ণটিকে একটু জোর দিয়ে উচ্চারণ করতে হয়। যথা : শ্বাপদ, দ্বারা ইত্যাদি। একইভাবে, স্বপন, স্বল্প, স্বগ্রাম, স্বরলিপি, স্বর্গ ইত্যাদি। ইংরেজি প্রতিবর্ণীকরণে SW ব্যবহৃত হয়। যেমন : Swaraj, Swadesh ইত্যাদি।
এখানে আরও কিছু শব্দের আলোচনা না করলেই নয়। যেমন : স্বাক্ষর/সাক্ষর। স্বাক্ষর অর্থ 'সই', 'দস্তখত'। আর সাক্ষর অর্থ 'অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন'। এই কারণেই সাক্ষরতা (লিটারেসি) শুদ্ধ, স্বাক্ষরতা নয়। আকছারই চোখে পড়ে এমন আরও কিছু উদাহরণ দিচ্ছি :
অশুদ্ধ বানান-----------------শুদ্ধ বানান
স্বাক্ষ্য/স্বাক্ষী------------------সাক্ষ্য/সাক্ষী
স্বপরিবারে-------------------সপরিবারে
স্বস্ত্রীক------------------------সস্ত্রীক
স্বার্থকতা---------------------সার্থকতা
স্বাপেক্ষ/স্বাপেক্ষে-------------সাপেক্ষ/সাপেক্ষে
লক্ষণীয় : অনেক সময় বিপরীত ঘটনাক্রমও লক্ষ করা যায়। যেমন, অশুদ্ধ=সাচ্ছন্দ্য>শুদ্ধ=স্বাচ্ছন্দ্য।
ষ ব্যবহৃত হবে
শুধুমাত্র তৎসম শব্দে (সংস্কৃত থেকে যেসব শব্দ সরাসরি এসেছে) শ, ষ, স-য়ের নিয়ম মানতে হবে। এ ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে সংস্কৃতের ষত্ব-বিধি প্রযোজ্য হবে না। [৭] অর্থাৎ, খাঁটি বাংলা ও বিদেশি শব্দে মূর্ধন্য-ষ হয় না।
তৎসম শব্দে স/ষ নির্ধারণ করার জন্য বর্ণটির আগের স্বরধ্বনি লক্ষ করা যেতে পারে : স্বরধ্বনি অ/আ হলে স, এ ছাড়া ই/ঈ, উ/ঊ প্রভৃতি হলে ষ, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া। উদাহরণ :
অ/আ হলে 'স'------ই/ঈ, উ/ঊ প্রভৃতি হলে 'ষ'
পুরস্কার-------------পরিষ্কার,
কল্যাণীয়াসু---------কল্যাণীয়েষু,
নির্বাসন-------------জিগীষা
প্রসার---------------জিজীবিষা,
মসৃণ----------------মুমূর্ষু
ব্যতিক্রম : শ্রদ্ধাষ্পদেষু, শুশ্রূষা
তৎসম শব্দে ষ ব্যবহারের আরও কিছু সাধারণ নিয়ম :
১.
ঋ বা ঋ-কার এর পর ষ (ণত্ব-বিধানের মতো)
ঋষি, কৃষক, কৃষ্ণ, তৃষা, তৃষ্ণা, বৃষোৎসব
ব্যতিক্রম : কৃশ্ ধাতুর বানানে শ বর্ণটি ধাতুটি থেকে উদ্ভূত শব্দেও অপরিবর্তিত থাকবে : কৃশকায়, কৃশাঙ্গ, কৃশোদর।
২. যুক্তব্যঞ্জনে ট, ঠ এর পূর্ববর্তী শীষ ধ্বনি হিসেবে ষ (আংশিক ণত্ব-বিধানের মতো)
ষ্ট (ষ+ট) অনিষ্ট, অন্বিষ্ট, আড়ষ্ট, আষ্টেপৃষ্ঠে, আবিষ্ট, হৃষ্টপুষ্ট
ষ্ঠ (ষ+ঠ) ওষ্ঠ, বয়োজ্যেষ্ঠ, গরিষ্ঠ, সুষ্ঠু
তৎসম শব্দের বানানে এই নিয়মটির কোনো ব্যতিক্রম নেই, তাই প্রচুর শব্দ এই নিয়মের ভেতর এসে যায়।
লক্ষণীয় : বিদেশি শব্দে মূর্ধন্য-ষ হবে না, এমনকি st যুগ্মবর্ণের ক্ষেত্রেও। st=স্ট হবে। যেমন : রোলারকোস্টার, পোস্ট।
(তৎসম শব্দে ষ ব্যবহারের বাকি নিয়মগুলো শুধুমাত্র প্রকৃত বানানার্থীদের জন্য, অর্থাৎ সবার না জানলেও চলবে।)
৩. রেফ-এর পরে ষ (ণত্ব-বিধানের মতো)
আকর্ষণ, ঈর্ষা, উপচিকির্ষা, বর্ষণ, বর্ষীয়াণ, মুমূর্ষু, সপ্তর্ষি, হর্ষ, ঘর্ষণ, অকর্ষিত, অনুচিকির্ষা, অমর্ষণ (ক্ষমাহীনতা), অয়স্কর্ষণী (চৌম্বকীয়), অভিকর্ষ
ব্যতিক্রম : অর্শ, আদর্শ, দর্শন, পরামর্শ, পার্শ্ব, স্পর্শ, পারদর্শী প্রভৃতি।
৪. ই-কারান্ত ও উ-কারান্ত উপসর্গের পর কিছু ধাতুর (শব্দের মূল অংশ) দন্ত-স স্থানে ষ
ই-কারান্ত উপসর্গ (অভি-, নি-, পরি-, প্রতি-, বি-); উ-কারান্ত উপসর্গ (অনু-, সু-) এদের পর কতিপয় ধাতুর (সন্জ, সদ্, সিচ্, সিধ্, সেন্, সেব্, স্থা, স্বপ্) দন্ত-স মূর্ধন্য-ষ তে পরিণত হবে।
ই/উ-কারান্ত উপসর্গ + ক/খ/প/ফ = ইষ্/উষ্ + ক/খ/প/ফ
অভি : সঙ্গ- >অভিষঙ্গ; সিক্ত->অভিষিক্ত
নি : সিক্ত- >নিষিক্ত; সুপ্ত->নিষুপ্ত
পরি : সদ- >পরিষদ (সভাসদ-এর সাথে তুলনা করুন); সেবা->পরিষেবা
প্রতি : সিদ্ধ- >প্রতিসিদ্ধ, প্রতিষেধক
বি : সম- >বিষম, সহ->দুর্বিষহ
অনু : সঙ্গ ->অনুষঙ্গ, অনুষঙ্গী
সু : সুপ্তি- >সুষুপ্তি, সম- >সুষম
লক্ষণীয় : অন্যান্য ধাতুর ক্ষেত্রে দন্ত্য-স পরিবর্তিত হবে না। যেমন : সম- >অবিসংবাদিত, প্রতিসংহার, অভিসন্ধি, অভিসন্তাপ ।
৫ সন্ধিতে বিসর্গ-স্থানে মূর্ধন্য-ষ (অনেকটা ৪ নম্বর নিয়মের মতো)
সন্ধিতে বিসর্গযুক্ত ই-কার (যেমন আবিঃ, বহিঃ, নিঃ) বা উ-কার (যেমন দুঃ, চতুঃ, প্রাদুঃ) এর পর ক/খ/প/ফ এর যেকোনোটি থাকলে বিসর্গ-স্থানে ষ হয়:
সন্ধির ক্ষেত্রে ইঃ/উঃ + ক/খ/প/ফ = ইষ্/উষ্ + ক/খ/প/ফ
আবিষ্কার (আবিঃ+কার), বহিষ্কার (বহিঃ+কার), নিষ্কাম (নিঃ+কাম)
দুষ্কর (দুঃ+কর), চতুষ্পদ (চতুঃ+পদ), ভ্রাতুষ্পুত্র (ভ্রাতুঃ+পুত্র)
৬. -সাৎ প্রত্যয়ের দন্ত্য-স কখনো পরিবর্তিত হয়ে ষ হবে না; স্পৃহ, স্পন্দ্, স্ফুর্, স্ফুট্ ধাতুর ‘স’ও অপরিবর্তনীয়। যেমন : ভূমিসাৎ, ধূলিসাৎ, আত্মসাৎ
নিস্পৃহ, নিস্পন্দ, বিস্ফোরণ, পরিস্ফুট ইত্যাদি।
৭. নিত্য মূর্ধন্য-ষ
আষাঢ়, ঈষৎ, উষ্ণ, ঊষা, ঔষধ, কোষ, তুষার, পুরুষ, পুষ্প, প্রত্যুষ, পাষাণ, ভূষণ, ভীষণ, ভীষ্ম, মহিষ, বিশেষ্য, বিশেষণ, বৃষ, মুষিক, মেষ, শোষণ, ষোড়শ, ষণ্ড।
ক্ষ
ক্ষ কে পৃথক ব্যঞ্জনবর্ণ হিসাবে দেখিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার। তাঁর বাঙ্গালা ভাষার ব্যাকরণে সর্বশেষ ব্যঞ্জনবর্ণ হিসাবে ক্ষ-কে দেখানো হয়েছে। কেরি তাঁর অভিধানে ক্ষ-কে পৃথক বর্ণের মর্যাদা দেননি। আরও পরে বিদ্যাসাগরও ক্ষ-কে পৃথক বর্ণ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। অন্য কোনো কোনো সংযুক্ত বর্ণের যেমন পৃথক চেহারা ছিল—ক+ত=ক্ত, ক+র-ফলা=ক্র ইত্যাদি, তেমনি ক+ষ=ক্ষ। একে পৃথক বর্ণ না বলাই উচিত। একালের অভিধানগুলিতে ক-এর শেষে ক-য় মূর্ধন্য ষ-ফলা হিসাবেই ক্ষ-কে দেখানো হয়েছে। —সুভাষ ভট্টাচার্য (বাংলাভাষা চর্চা, পৃষ্ঠা ৭)
লক্ষণীয় যে, ক্ষ (ক+ষ) শব্দের শুরুতে থাকলে খ উচ্চারিত হয়, শব্দের মধ্যে বা শেষে থাকলে ক্খ উচ্চারিত হয়।
খির, খুর ও খেত না লিখে সংস্কৃত মূল অনুসরণে ক্ষীর, ক্ষুর ও ক্ষেত-ই লেখা হবে। তবে অ-তৎসম শব্দ খুদ, খুদে, খুর, খেপা, খিধে ইত্যাদি লেখা হবে। [৮]
----------------------
তথ্যসূত্র : [১-৭] বাংলা একাডেমী প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম নং ২.০৪- ২.০৬।
[৮] বাংলা একাডেমী প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম নং ২.০২।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা : ১. বাংলাভাষা চর্চা (সুভাষ ভট্টাচার্য)
২. ষত্ব-বিধির জন্য : http://www.somewhereinblog.net/blog/Maveriick/28900673
-------------------------------------------------------------------------
পূর্ববর্তী পর্ব : বানানায়তন- ৫ | দন্ত্য-ন বনাম মূর্ধন্য-ণ |
বানানায়তন- ৪ | 'অনুস্বার' বনাম 'ঙ', সাথে 'এ' বনাম 'অ্যা' |
বানানায়তন-৩ | হ্রস্ব স্বর না দীর্ঘ স্বর |
বানানায়তন- ২ | ও কি এল, ও কি এল না |
বানানায়তন ১ | ই-কার বনাম ঈ-কার |
--------------------------------------------------------------------------
---------------------------
কুটুমবাড়ি
---------------------------
মন্তব্য
আজ্ঞে, আমি তো স-কে স-এর মতন করেই উচ্চারণ করি অনেক ক্ষেত্রেই...
আবার কলকেতার মস্তানরা শালা উচ্চারণ করার সময় যে স চাপিয়ে দেয়, তার বেলা? স্যামবাজারের সসিবাবু?
যাহোক, অনেকদিন আপনার লেখা দেখি নি। পেয়ে ভাল লাগল।
কৌস্তুভ ভাই,
স-কে স-এর মতন উচ্চারণ করা কি এতই সহজ? আমারই তো গোলমাল পাকিয়ে যায় প্রায়ই। আমার এক বন্ধুর নাম আসাদ। পাছে আশাদ বলে ডেকে ফেলি এই ভয়ে তাকে প্রায়ই ডাকা হয় আছাদ!
কলকেতার মস্তানদের কিন্তু আমি ভালু পাই। তাদের কাউকে কাছে পেলে অন্তত স-এর উচ্চারণ-কৌশলটা শিখে নিতে পারতাম।
হুম... অনেক দিন পর লিখলাম। বেশ কিছুদিন তো অনলাইনেই আসতে পারিনি। আপনাকে পেয়ে আমারও ভীষণ ভালো লাগল।
কুটুমবাড়ি
ভাই, মাইন্ড কইরেন না। পড়তে ব্যাকরণ বইয়ের মতোনই লাগলো। আমার মতোন আবাল জনগণ ব্যাকরণরে বড়োই ডরায়।
সেকি ভাই! কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য দিলেন, মাইন্ড করব কেন?
তবে ভাইজান, বাংলা বানান যে উচ্চারণানুগ নয় তা তো পোস্টেই আলোচনা করেছি। পড়েননি বুঝি? তাহলে আর কী বাকি থাকে, ব্যাকরণ ছাড়া? কাজেই বানান-সংক্রান্ত আলোচনা পড়তে ব্যাকরণ বইয়ের মতনই তো লাগার কথা, তাই না? আমি অবশ্য চেষ্টা করেছি সহজ করে লিখার। কিন্তু হায়! সহজ কথা যে সহজে লিখা যায় না তা নতুন করে উপলব্ধি করলাম।
কুটুমবাড়ি
কখনো-সখনো "বোঝায় ভুল হওয়ার কারণে" হতে পারে হয়তো, তবে অনেক সময়ই তা নয়। তাহলে 'সার্থকতা' কি করে 'স্বার্থকতা' হয় ? এখানে বোঝার ভুলটা কোথায় ? 'সার্থকতা'-এর 'স'-কে কি 'self' -অর্থে ভুল বোঝার কোন অবকাশ আছে? আসলে জানার ঘাটতিটাকে আমরা অনেকেই জটিলতা/অতি-পান্ডিত্য দিয়ে পুরন করার চেষ্টা করি। সবক্ষেত্রেই। এই 'সাক্ষরতা/স্বাক্ষরতা' নিয়ে একটি প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকের এক সাংবাদিকের সাথে আমার লম্বা তর্ক হয়েছিল (যার পত্রিকা নিজেরাই বোধহয় বানানের নিয়ম নিয়ে একটা বই বের করেছে) যিনি এই ভুলটা প্রায়ই করেন - এবং তাকে অনেক বোঝানোর পরও তিনি নিজের ভুলটা স্বীকার তো করেনইনি, বরং সেটাই সঠিক বলে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। যাই হোক, এটা হয়তো ব্যতিক্রমী ব্যাপার।
তবু আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, বানানায়তনের আগের পর্বে আমি যে অনুরোধটা করেছিলাম (স বনাম স্ব নিয়ে লেখার জন্য), সেটা এই পর্বেই তুলে ধরার জন্য।
আসলে, আমার মত আম-পাঠকের বেলায় এধরনের টুকটাক ভুলভাল হয়তো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা যেতে পারে - কিন্তু প্রথম সারির দৈনিকে এমন ধরনের ভুল ঘন ঘন দেখতে খুবই দৃষ্টিকটু ও বিরক্তিকর লাগে।
ওহহো, আরেকটা বিষয়ঃ বাংলায় 'J'-এর সঠিক উচ্চারনের কায়দাটা নিয়ে একটু লিখতে পারবেন ? আমার মনে হয় আমাদের দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলির রিপোর্টারদের জন্য এ প্রসঙ্গে (বাংলায় J ও Z -এর পার্থক্য নিয়ে) একটা ট্রেনিং ম্যানুয়েলের ব্যাপক প্রয়োজন রয়েছে! আপনি এখানে যদি কিছু লিখেন (বিশেষ করে আর্টিকুলেটরি ধ্বণিতত্ত্বের দৃষ্টিকোন থেকে), তাহলে একটা কঠিন অভাব পূরন হবে এবং বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের বার্তাবিভাগগুলিকেও আপনার লেখার লিঙ্ক পাঠানো যেতে পারে। ওনারা ভীষণ উপকৃত হবেন !
----------------------------------------------------
* ও হ্যাঁ, আগের পর্বে প্রতি-মন্তব্যে আমার 'ভীষ..ন..ণ..ন..ণ' বানান নিয়ে কি বলেছিলেন যেন? একদম ভুলে গেছি এবার আরো কয়েকটা ভুল নিঘঘাত করেছি!
এবার আসি 'সাক্ষরতা/স্বাক্ষরতা' বিষয়ে। স্বাক্ষর একটি বিশেষ্য পদ যার অর্থ সই বা দস্তখত। আর সাক্ষর হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যার অক্ষরজ্ঞান আছে বা দস্তখত করতে পারেন। তাহলে বোঝা গেল সাক্ষর একটি বিশেষণ পদ। আর কে না জানে বিশেষণ পদের সাথে 'তা' প্রত্যয় যুক্ত হয়ে বিশেষ্য পদ হয়। যেমনটি হয়েছে সাক্ষর+তা=সাক্ষরতা, যেমনটি হয় কোমল (বিশেষণ)+তা=কোমলতা, স্নিগ্ধ (বিশেষণ)+তা=স্নিগ্ধতা ইত্যাদি। এখন যে সাম্বাদিক (ওনাকে কি সাংবাদিক বলা যায়?) মহাশয় স্বাক্ষরতা বানান লিখতে চান তাকে জিজ্ঞেস করুন 'তা' প্রত্যয় যোগ করে বিশেষ্য পদ (স্বাক্ষর) থেকে উনি কীভাবে আরেকটি বিশেষ্য পদ সৃষ্টি করতে পারেন? এমন আর একটিও উদাহরণ কি উনি দিতে পারবেন? অথবা কোনো অভিধানে 'স্বাক্ষরতা' বানান আছে এমনটি দেখাতে পারবেন?
তবে একটা কথা ঠিক বলেছেন ভাই। আমাদের মতো আমজনতার ভুল হতে পারে। কিন্তু প্রথম সারির দৈনিক থেকে শুরু করে সবকটি মিডিয়ায় বানান ভুলের দৌরাত্ম্য সত্যিই অসহনীয় মনে হয় মাঝে মাঝে।
ভাই, পর্যায়ক্রমে বাংলা ভাষার সব বর্ণ নিয়েই কিছু-না-কিছু লিখার ইচ্ছে আছে। জ, য এর কথাও আসবে পরবর্তী কোনো পর্বে। জানি না সেটা কারও পাতে দেয়ার মতো হবে কি না। ভালো থাকুন।
কুটুমবাড়ি
------------------------------
*ও হ্যাঁ, আপনার বানান-জ্ঞান সত্যিই প্রশংসা করার মতো। কেবল যদি ণত্ব-বিধানের দিকে একটু নজর দিতেন...
পূরন> পূরণ
দৃষ্টিকোন> দৃষ্টিকোণ
পান্ডিত্য> পাণ্ডিত্য
দারুন উপকারী লেখা। খুব ভাল লাগল। এরপরে "র" এবং "ড়" এর ব্যবহার নিয়ে কিছু লেখুন। আমাদের এফএম এর হারজেরা সব "র" কেই "ড়" বলতে ভালবাসেন!!
-হুতোম প্যাঁচা।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। পরবর্তী কোনো পর্বে র, ড় নিয়ে যতটা সম্ভব বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব। আশা করি সাথেই থাকবেন।
ওনারাও যে বাংলা বলতে পাড়েন সেটা নয়তো আমরা বুঝব কীভাবে?
কুটুমবাড়ি
যথারীতি শ্রমসাধ্য লেখা। তবে এবারের পর্বে বেশি তথ্য চলে এসেছে যা হজম করা কষ্টকর। আমার মতে দু-একটি বিষয়ের উপর প্রচুর উদাহরণ দিয়ে আরো সহজ করে বলা গেলে একে বারে মাথায় ঢুকে যেতো। যেমন শুধু স্ব/স নিয়েই একটি পর্ব হতে পারে। এই লেখাটিকেই কয়েক পর্বে ভাগ করা যেতে পারে। টিপিকাল ব্যাকারণ বইয়ের মত করে লিখলে সেটা কার্যকর হবে না। বানান ভীতি রয়েই যাবে।
লেকচার টাইপ লেখার জন্য খান একাডেমির স্টাইলটি বেশি কার্যকর বলে মনে করি। একটি মাত্র বিষয়কে ফোকাস করে বলা এবং বারংবার বলা, যেন লেকচার শেষে সেটা মাথায় গেথে যায়। আমার মতে এই সহজ করে বলা এবং বারংবার বলার কারণেই খানের লেকচার এত জনপ্রিয় ও কার্যকর। আপনি নিজেও বানান নিয়ে এরকম ভিডিও বানানোর কথা চিন্তা করতে পারেন।
বানান নিয়ে আপনার এই পরিশ্রমের জন্য ধনবাদ জানাই। শীঘ্র আপনার হাচলত্ব কামনা করি।
স্বাধীন ভাই, আপনার মূল্যবান পরামর্শের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই লেখাটির পাঠক প্রতিক্রিয়াই বলে দিচ্ছিল আমার পরিশ্রম সম্ভবত বিফলে গেছে। মানে লেখাটি পাঠকের তেমন কোনো কাজে আসবে না। তবুও পোস্ট দেয়ার পর থেকেই আপনার মন্তব্য পাওয়ার অপেক্ষা করছিলাম। যথারীতি আপনার মন্তব্য পেয়ে অনুপ্রাণিত হলাম। সাথে সিরিজটি কীভাবে চালাতে হবে সে সম্পর্কেও ধারণা পেলাম।
ভিডিও বানানোর আইডিয়াটি দুর্দান্ত, মাথায় থাকল। তবে আমার মনে হয় এ বিষয়ে আরেকটু লেখালেখি করে কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিলে ভালো হবে।
আমার হাচলত্ব কামনা করায় কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আশা করি শীঘ্র ফ্যাসিস্ট মডুরামরা দৃষ্টি দেবেন এ ব্যাপারে।
কুটুমবাড়ি
এই যে অভিজ্ঞতা হলো এটাই পাওয়া। তাই মনে করি না যে পরিশ্রম বৃথা গিয়েছে। আমারো মনে হয় ভিডিও বানানোর আগে আরো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে। যে কোন পরিশ্রমসাধ্য লেখায় আমার অনুপ্রেরণা থাকবে। লেখাটি দেরিতে চোখে পড়েছিল, তাই মন্তব্য করা হয়নি। আর নির্দিষ্ট কারোর মন্তব্য পেতেই হবে কথা নেই। হয়তো অনেক লেখার ভীরে লেখা চোখে নাও পড়তে পারে। হয়তো ব্যস্ত থাকার কারণে অনেক দিন নাও আসা হতে পারে। সব কিছু নির্ভর করছে নিজের আত্মবিশ্বাসের উপর। নিজের উপর যদি আত্মবিশ্বাস থাকে যে কাজটি থেকে কিছু মানুষ উপকৃত হবে এবং নিজেরও ভালো লাগবে, তবে নিজের সেই আত্মতুষ্টির জন্যই কাজটি করে যাবেন। ভাল থাকুন সব সময়।
এমন একটা শব্দ তৈরি কর,যেটাতে তিনটা 'স' বিদ্যমান। উত্তরটা জানতে চাই।
নতুন মন্তব্য করুন