প্রতিদান
-সাদ মাহবুব
১.
সজীব আহমেদ অস্ট্রেলিয়া এসেছে মাস তিনেক হবে। সারাদিন রুমে একা একা সময় কাটে তার। দেশে বাবা মা আর ছোট একটা বোন আছে। এখানে আসার মাস দুয়েক আগে break up হয়ে গেছে girl friend এর সাথে। single ছেলেদের যা হয়-আশেপাশে মেয়ে দেখলেই গিলে খেতে ইচ্ছা হয়। আর যদি চেহারা ও দেহ সুন্দর হয় তাহলে তো কথাই নাই।
বিদেশের মাটিতে প্রথম আজ পাঞ্জাবী পড়েছে সে। একটা বাংলাদেশী মেলা ছিল। সেখান থেকেই ফিরছে সজীব। অনেক দূর থেকে দেখতে পেল্ ৫/৬টা মেয়ে দাঁড়িয়ে আড্ডা মারছে। হাঁটার গতি কমিয়ে দিল সে, যেন প্রতিটি মেয়ের পা হতে মাথা পর্যন্ত অন্তত একবার দৃষ্টি বুলিয়ে নিতে পারে। কিন্তু মেয়েগুলোর কাছাকাছি আসতে তার মনের ইচ্ছাটুকু অনেকটুকুই হ্রাস পেল।
মেয়েগুলো Australian Aboriginal. চেহারায় বিন্দুমাত্র মাধুর্যতা নেই, কোকড়া শুষ্ক চুল, কাপড় ময়লা, দাত ময়লা। ওরা প্রায় চিৎকার করেই কথা বলে বলা চলে। হাঁটার সময় যতটুকু সম্ভব জায়গা দখল করে। ওরা কাউকে side দেয়না। কোনো স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত ওই পথ দিয়ে যেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে অথবা ফুটপাত থেকে রাস্তায় নেমে ওদেরকে overtake করতে হবে।
সজীব সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ঠোটে ধরে আরেক হাতে লাইটারটা বের করে ওদেরকে পাশ কাটিয়ে যেতে চাচ্ছিল। এমন সময় কম বয়সী একটা মেয়ে তার পথ আগলে ধরে বলল, hey dude, do you have a spare cigarette? মেয়েগুলোর বয়স মনে হয়না ১৮ হবে। Australian homeless গুলো প্রায় ই এভাবে সিগারেট চেয়ে বসে। যদিও সিগারেটের দাম অস্বাভাবিক বেশী তবুও কেউ চাইলে সজীব সাধারণত দিয়ে দেয় সিগারেট। কিন্তু তার প্যাকাটে আর মাত্র একটা সিগারেট থাকায় সে বলল, sorry, I don’t have much. মেয়েগুলো রেগে গেল। অল্পবয়সী মেয়েটা তার ঠোটে ধরা সিগারেট টা কেড়ে নিয়ে বলল, what about this then?
মেয়েগুলো শব্দ করে হাসছে। সজীবের বিরক্ত লাগছে। কড়া কিছু কথা শোনাতে যাবে এমন সময় চোখে পড়ল ওই গ্রুপের ছোট্ট একটা মেয়ের দিকে। সবাই হাসলেও মেয়েটি হাসছেনা। বিষাদ ভরা চোখে তাকিয়ে আছে সজীবের দিকে। মেয়েটির বয়স ৪/৫ হবে। ছোট্ট বাচ্চাদের মত তার চোখে মুখে তেমন কোনো সৌন্দর্য নেই, সামান্য একটু মায়া আছে শুধু। তবে বলে দেওয়া যায় যে, বড় হলে এতটুকুও থাকবেনা। অন্যান্য মেয়েগুলোর মতই বিভৎস দেখাবে হয়ত তাকেও। কিন্তু ওতটুকু মেয়ে সজীবের অপমানের বিপরতে যে মায়াকড়া দৃষ্টি দিল তাতে সজীবের মনটা ভালো হয়ে গেল। নিমেষে ভুলে গেল সে সব। মেয়েটিকে প্রশ্ন করল, what’s your name dear? মেয়েটি পিচ করে দু’ দাঁতের মাঝখানে দিয়ে থুথু ফেলে সজীবের পাঞ্জাবীর এক প্রান্ত ধরে বলল, what's this? আদর জড়ানো প্রশ্নে সজীব হেসে দিল। বলল, it’s called Punjabi.
-pun……what? হি হি।
মেয়েটি হেসে দিল। ইতোমধ্যে ওই দলটি সামনে হাঁটা দিয়েছে-ছোট্ট মেয়েটিকে না নিয়েই। ওদেরকে ধরার জন্যে শিশু মেয়েটি বেঞ্চ থেকে উঠে দৌড় দেওয়ার জন্যে উদ্যেগ নিতে নিতে বলল, I am Linda, বলেই সে দৌড় দিল। সামনের মেয়েগুলো অনেক জোড়ে হাঁটছে। তাদের গতির সাথে কোনোভাবেই তাল মিলাতে পারছেনা লিন্ডা। হাপিয়ে উঠছে। বেশ কিছুদূর যাওয়ার পর পিছে ফিরে তাকালো সে। যখন দেখল সজীব তাকিয়ে আছে তার গমন পথের দিকেই তখন হাত নেড়ে বিদায় জানিয়ে আবার এগিয়ে গেল সে।
এক বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টের মালিকের সাথে প্রায়ই আড্ডা দেয় সজীব। সিগারেট যেখানে ছিনতাই হল সেখান থেকে ১০ কদম হাঁটলেই সেই রেস্টুরেন্ট। ছিনতাই এর ঘটনা বলতেই হেসে মনির জবাব দিল, আরে তুমি আবার ওদের সাথে পাগলামি করতে গেছ কেন? বড় বেয়াদব ওরা। আমার দোকানে এসেও প্রায়ই কোক, চকলেট, চিপস নিয়ে যায়। কিছু বলা যায়না। এইতো এখানেই একটা বাসা আছে। ওইখানে বেশ কিছু Aboriginal ছেলে মেয়ে থাকে। ওদের বাবা-মা’র অবস্থা ভালোনা বলে সরকার দেখাশুনা করে ওদেরকে, সব খরচ সরকার-ই দেয়।
-একটা ছোট্ট মেয়ে দেখলাম, লিন্ডা নাম।
-ওহ হ্যাঁ। ওর মা একটা ফাযিল মেয়ে। ওইযে মোটা করে পেত্নীর মত চেহারার একটা মেয়ে দেখছনা? ওটাই ওর মা।
অবাক হয়ে সজীব বলল, বলেনকি! ওটা ওর মা! আমি তো ভাবছি বড় বোন। বেশী বয়স না তো।
-আরে, ১৫ বছর বয়সে মা হইছিল। এখন বয়স ১৯। Extra ৮০০ ডলার পায় per week এ যদি কারো বাচ্চা থাকে তাহলে। সব সব টাকা দিয়ে মদ গাঁজা এসব খেয়ে বেড়ায়। বাচ্চার কোনো যত্নই করেনা।
সজীব বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল। রেস্টুরেন্ট থেকে তার বাসা ১০০ মিটারের মত হবে। লিন্ডার জন্যে তার মনটা মায়ায় ভরে উঠল।
২.
তিন-চার দিন পর। সজীব সিগারেট ফুকছে সেই রেস্টুরেন্টের সামনের ফুটপাতে বসে। মনের অজান্তেই তার চোখ লিন্ডা কে খুঁজছে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর সে দেখতে পেল রাস্তার ওপারে আপন মনে খেলছে লিন্ডা-একা। যে ব্লকগুলো দিয়ে ফুটপাত বানানো হয়েছে-সেগুলোর একটা বাদ দিয়ে আরেকটায় লাফিয়ে পড়ছে। চিৎকার করে লিন্ডার নাম ধরে ডাকল সজীব। চমকে এপারে তাকাল লিন্ডা। একহাত দিয়ে চুল ঠিক করতে করতে চিৎকারের উৎস খুঁজছে সে। হঠাৎ সজীবকে দেখতে পেয়ে তার মুখে হাসি ফুটল। গাড়িগুলোর তোয়াক্কা না করেই দৌড়ে রাস্তা পার হয়ে সজীবের কাছে চলে এল সে। এসেই সজীবের পাশের চেয়ারটায় বসে বলল, সেদিন তোমার নাম জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গিয়েছিলাম।
-আমি সজীব।
-ও, একটু কঠিন, কিন্তু মনে রাখতে পারব আমি।
হাসল সজীব। লিন্ডা বলল, সিগারেট কেন খাও তুমি?
-বাজে অভ্যাস, দেখি ছেড়ে দেব।
-mommy ও খায়। সিগারেটের গন্ধ খুব বাজে লাগে আমার।
-কিন্তু আমার যে ভালো লাগে।
-এ্যাহ! এই গন্ধ কারও ভালো লাগে নাকি আবার!
শব্দ করে হাসলো সজীব। বলল, কি খেলছিলে তুমি?
-কিছু না, এমনি সময় পার করছিলাম।
-তোমার মা কই?
-ওমা! আজকে Friday night না? আজ অনেক রাতে ফিরবে মা।
-তুমি একা?
-কেন তুমি জাননা ১৮ বছর না হলে কেউ কি ঢুকতে দেবে আমায় মা’র সাথে?
-তাও অবশ্য ঠিক।
-আজ কি হবে বলি?
-বল।
-মা অনেক রাতে ফিরবে-অনেক মদ খেয়ে। বমি করে ঘর ভাসাবে আর বলবে, লিন্ডা honey, hold me.
একটু খারাপ লাগলো সজীবের। বলল, তোমার খারাপ লাগে?
মাথা নিচু করে দু’দিকে মাথা নাড়ল লিন্ডা, জানাল, লাগেনা। কিন্তু হঠাৎ-ই চুপ হয়ে গেল সে। সজীব আর কিছু না বলে আরেকটা সিগারেট ধরাল। লিন্ডা বলল, সিগারেটের গন্ধ কিন্তু মদের চাইতে ভালো্……আসলে মা প্রায় প্রতি রাতেই এমন করে। তবে মা বলেছে, আমার জন্যে বাবা খুঁজছে সে। পেলে বলে আর এমন করবেনা।
লিন্ডার মিথ্যে আশা ভাংতে ইচ্ছা হলোনা সজীবের। শুধালো, তা, তুমি কি করবে আজ?
-আমি তো প্রতিদিন-ই এসময় একা থাকি। আরও কিছু বাচ্চারা আছে। ওদের সাথে দোকানে দোকানে ঘুরব……আমার আসলে ক্ষিধে পেয়েছে।
-কি খেতে ইচ্ছা করছে তোমার?
-Pizza.
সিগারেট ফেলে উঠে দাঁড়াল সজীব, বল, ok চল আমার সাথে।
Large Pizza অর্ডার দিল লিন্ডা। অর্ধেক খেয়ে বলল, উফফ, আর পারছিনা, তবে নিয়ে যাব বাকিটা।
হেসে সজীব বলল, আচ্ছা।
বের হয়ে লিন্ডা মৃদু স্বরে প্রশ করল, তুমি কি চলে যাবে?
চোখের দিকে তাকিয়ে সজীব জবাব দিল, হুমম।
নিমিষেই চোখের উজ্জ্বলতা কমে এল লিন্ডার। একটু মন খারাপ করে বলল, তা তো ঠিক-ই। আজ তো Friday night, আর তোমার বয়স তো ১৮ এর বেশি, না?
-না লিন্ডা, আমি বার বা ক্লাবে যাচ্ছিনা, বাসায় যাব।
মুখটা একটু উজ্জ্বল হল লিন্ডার, বলল, সত্যি?
-হুমম।
-আমাকেও নিয়ে চল তোমার সাথে।
-তোমার মা চিন্তা করবে না?
-আমার মা রাত একটা/দু’টার আগে আসবেইনা বাসায়।
-ঠিক আছে চল……তুমি cartoon দেখ?
সবগুলো দাঁত বের করে লিন্ডা বলল, যেকোন।
-চকলেট?
-চকলেট তো দেখিনা, খাই।
হেসে ফেলল সজীব, বলল, আচ্ছা ঠিক আছে চল। আমরা চকলেট আর আইসক্রিম কিনে নিয়ে যাই। খেতে খেতে cartoon দেখব।
সজীবের রূমে তিন ঘণ্টা ছিল লিন্ডা। অভিভুত হয়ে গেল সে। তার ধারণা ছিল বাচ্চাদের জীবনটা প্রকৃতপক্ষে তার টার মতই হয় হয়ত। তার নিজের মা-এর উপর প্রায় ই রাগ হয় বলে সে নিজেকেই খারাপ ভাবত। মনে করত সে একটা বাজে বাচ্চা। তার ধারণা ছিল, জীবনের সব আনন্দ ১৮ বছর থেকে শুরু হয়। তার বয়সী একজন মানুষের সময় যে ভাল কাটতে পারে, তাদের জীবনেও যে আনন্দের কিছু থাকতে পারে সেটা তার ধারণার বাইরে ছিল।
রাত বারটা বাজলে সজীব বলল, চল লিন্ডা, তোমায় দিয়ে আসি। তোমারও তো ঘুম পাচ্ছে, না?
-ঘুম পাচ্ছে, কিন্তু ঘুমাতে ইচ্ছা করছেনা।
-আচ্ছা ঠিক আছে, কাল তুমি আবার এস না হয়, এখন চল। তোমার মা চিন্তা করবে।
লিন্ডাকে পৌছে দিতে গিয়ে সজীব দেখল তোলপাড় পড়ে গেছে। এক ছেলে জুটে যাওয়ায় লিন্ডার মা অ্যামান্ডা তাড়াতাড়ি ফিরে এসেছে। এসে মেয়েকে না পেয়ে অস্থির অবস্থায় হাটাহাটি করছে রাস্তায়। সজীবের কাছ থেকে মেয়েকে কেড়ে নিয়ে রাগান্বিত কণ্ঠে প্রশ্ন করল, Who are you? What have you done with my little girl? You dirty bustard! এরপর মেয়েকে প্রশ্ন করল, Did he hurt you sweetie?
-No.
এরপর কানে কানে প্রশ্ন করল লিন্ডাকে। লিন্ডা লজ্জা পেয়ে তীব্র স্বরে প্রতিবাদ জানাল, Why does he do this?
কিন্তু মেয়ের কথা বিশ্বাস করলনা অ্যামান্ডা। সজীবের দিকে তেড়ে এসে বলল, Why did you take my girl? I will call police. Who are you?
শান্তভাবে দৃঢ় স্বরে সজীব উত্তর দিল, Listen Amenda, the time I’ve given to Linda should be given by you. Linda missed you a lot.
নতুন boy friend কে অ্যামান্ডা অনুরোধ করল সজীবকে ধরার জন্যে। হঠাৎ লিন্ডা তীব্রভাবে ছুটে এসে তার নরম হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তার মায়ের নতুন boy friend কে বলল, Don’t touch him. লিন্ডার এমন দৃঢ়তা আগে দেখে দেখেনি অ্যামান্ডা। থমকে গেল সে। অ্যামান্ডাকে বুঝানোর চেষ্টা করল তার boy friend। শেষ পর্যন্ত সে লিন্ডা আর সজীবকে উদ্দেশ্য করে কঠিন স্বরে বলল, এমন যেন আমি আর না দেখি।
সজীব ফিরে এল। ভাবছে, আজকে যদি অ্যামান্ডার নতুন boy friend টা Aboriginal হইত তাহলে খবর-ই ছিল আজকে তার।
৩.
এক রাতের প্রণয় শেষে হারিয়ে গিয়েছে ছেলেটি। আজ রাতে তাই আবার ছেলে খুঁজতে বের হচ্ছে অ্যামান্ডা। কিন্তু অদ্ভুত এক পরিবর্তন লক্ষ্য করল সে লিন্ডার মধ্যে। হঠাৎ যেন নিজের অধিকার নিয়ে বেশ সচেতন হয়ে গিয়েছে লিন্ডা। আসলে সে বুঝতে শিখেছে যে, তারও সময় সুন্দর ভাবে পার করা সম্ভব। অ্যামান্ডা সেজেগুজে বের হতেই কঠোর স্বরে লিন্ডা বলল, তুমি যাবেনা।
একটু অবাক হয়ে অ্যামান্ডা বলল, কেন? আমার নিজের একটা জীবন আছেনা? আর তোমার বাবাও তো দরকার একজন।
-না, দরকার নেই। তুমি আমাকে নিয়ে খেতে যাবে কোথাও। তারপর আমরা একসাথে টিভি দেখব।
অনেক তর্কাতর্কির পর লিন্ডা গো ধরল, তাহলে আমাকে সজীবের কাছে রেখে এস। কোনোভাবেই নিবৃত্ত করা গেলনা তাকে। লিন্ডা জানালো সে সজীবের বাসা চেনে। বাধ্য হয়ে তাকে সজীবের বাসায় নিয়ে গেল অ্যামান্ডা। বের হয়ে এসে একটু অবাক হল সজীব। বলল, আরে লিন্ডা, অ্যামান্ডা! কেমন আছ তোমরা?
অ্যামান্ডা জবাব দিল, ভাল…আচ্ছা শোনো, তোমার কি কোনো child care certificate আছে?
-না।
-তাহলে কিসের ভরসায় ওকে তোমার কাছে রেখে যাব?
-দেখ অ্যামান্ডা, সেদিন ওকে আমার কাছে রেখেছিলাম, তোমার ডেটিং এর যেন সুবিধা হয় সেজন্যে কিন্তু না। আমার ওর জন্যে খারাপ লেগেছিল আর মনে হয়েছিল যে ওকে আমার সময় দেওয়া উচিৎ। তুমি সময় দিতে পারলে আমার কাছে রেখে যাওয়ার দরকার কি?
কিছুক্ষণ চুপ থেকে অ্যামান্ডা বলল, আচ্ছা ঠিক আছে……কিন্তু বলত তুমি কিভাবে জানলে বাচ্চাদের সাথে কিভাবে সময় কাটাতে হয়, কিসে ওরা খুশী হয়।
মৃদু হেসে সজীব উত্তর দিল, ওর চাওয়া খুব-ই সামান্য। ওকে খুশী করার জন্যে কোনো tricks লাগেনা। আমি আসলে অবাক হচ্ছি এই ভেবে যে, তুমি জাননা-ও শুধু কারও সঙ্গ চায়। ওর সাথে যে কেউ ধৈর্য ধরে কথা বললেই ও খুশী।
...সময় থেমে থাকেনা। কত সময়, কত বছর পেরিয়ে গেছে। কত রকম সম্পর্ক-ই না আছে! এক অলিখিত অনার্পিত দায়িত্ব অনুভব করে সজীব লিন্ডার প্রতি। বিদেশী girl friend এর সাথে sex এর পরেই দৌড়ে ছুটে আসে-হয়তবা ছোট্ট মেয়েটা একা মন খারাপ করে বসে আছে। এ নিয়ে একজনের সাথে তার break up ও হয়ে গেছে। লিন্ডাও এখন স্কুলে যায়। তারও বন্ধুবান্ধব নিয়ে জগৎ তৈরী হচ্ছে। তবুও সজীবের জায়গা যেন কেউ নিতে পারেনা। তার সকল দাবি, সব আবদার সজীবের কাছেই। সজীব পড়ায় ব্যাস্ত থাকলে লিন্ডা সজীবকে চা বানিয়ে দেয়, জানে সজীব চা-এ কখনও না বলেনা। ব্যস্ত দিন শেষে তার অন্তত একবার আসতেই হবে সজীবের কাছে। সজীবও বাসা পরিবর্তন করেনি সেজন্যে। কত রাত সজীবের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে লিন্ডা! ওত বড় মেয়েটাকে কোলে করে বাসায় দিয়ে এসেছে সজীব।
মাস্টার্স, পি এইচ ডি শেষ করে কিছু বছর চাকরিও করেছে সজীব। চব্বিশ বছর বয়সে এখানে এসেছিল সে, আট বছর পেরিয়ে গেছে এর মধ্যে। লিন্ডার বয়সও এখন ১২ এর মত। এরকম কোনো একদিন পরিসমাপ্তি ঘটল তাদের সম্পর্কের।
সজীবের কোলে মাথা রেখে সিনেমা দেখছে লিন্ডা। হাত বাঁকা করে পপকর্নের বাটি থেকে একটা একটা করে পপকর্ন নিয়ে মুখে দিচ্ছে সে। সজীব মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। ধীরে ধীরে সে বলল, দেশে যাচ্ছি লিন্ডা।
মনোযোগ দিয়ে সিনেমা দেখছিল লিন্ডা, tv screen এর দিকেই তাকিয়ে বলল, কবে আসবে?
-আর আসবনা। একেবারে চলে যাচ্ছি।
পপকর্ণ চাবানো বন্ধ করে ধীরে ধীরে উঠে বসল সে, বলল, কেন?
অন্যদিকে তাকিয়ে সজীব বলল, এ দেশে আর ভালো লাগছেনা।
-আমি কি খুব বেশী জ্বালাই?
-থাবড়া খাবা, পাকনামো কম কর……. দেশের কথা মনে হয় খালি।
-তুমি তো সেই কবেই permanent residency পেয়ে গেছ।
-না রে মা, ফিরে যাব।
নিঃশ্বাস আটকে ধরে আছে লিন্ডা, চোখ হালকা ভিজে উঠেছে। যথাসম্ভব স্বাভাবিক কণ্ঠে সে প্রশ্ন করল, দেশে গিয়ে কি করবে?
-প্রথমে একটা বিয়ে করব।
-এত তাড়াতাড়ি!
-আমার বয়স এখন ৩২।
-ঠিক আছে, কিন্তু এখানে তোমার গার্ল ফ্রেন্ডের কি হবে?
-গত মাসে ওর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। mentality মেলেনা। দেশের মেয়ে বিয়ে করব। বাবা-মা মেয়ে দেখছে। একজনকে বেশ পছন্দ হয়েছে।
-কথা হয়েছে।
-chat হয়েছে।
অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল লিন্ডা। বলল, এতটুকু পরিচয়েই বিয়ে করে ফেলবে?
হেসে উঠল সজীব। Arrange marriage ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিল।
মৃদু হেসে লিন্ডা বলল, অথচ আমার মা ১২ বছরেও কাউকে খুঁজে পেলনা।
হঠাৎ সজীবের হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তীব্র আকুতি নিয়ে লিন্ডা বলল, আমার মা’কে বিয়ে করনা সজীব, please.
এত মায়া আর আবেদন ছিল কথায় যে সজীব চট করে না বলতে পারলনা। বলল, তোমার মা ভালো মানুষ, কিন্তু আমি দেশের মেয়ে বিয়ে করব, আমি ওই মেয়েকে কথা দিয়ে ফেলেছি।
মাথা নিচু করে লিন্ডা বলল, তুমি অবশ্য মায়ের চেয়ে অনেক ভাল মেয়ে deserve কর……তা যাচ্ছ কবে?
-দু সপ্তাহ পর।
-আচ্ছা সজীব আমি যাই।
লিন্ডা চলে গেল। সজীব ডাকলনা তাকে আর।
পরের দু সপ্তাহ লিন্ডা দেখে দিলনা। সজীবও চাকরি ছাড়বে বলে সবকিছু গুছিয়ে দিতে ব্যস্ত থাকল। মাঝে তবুও দু’দিন সে গিয়েছিল দেখা করতে। লিন্ডা খবর পাঠিয়েছিল সে বাসায় নেই। গত চার বছর তারা একে অপরকে না দেখে ছিল সর্বোচ্চ সাতদিন (সজীবের দেশে ঘুরতে যাওয়ার সময়গুলো বাদে)।
Flight ছিল রাতে। সকালে সজীব অনেকগুলো গিফট নিয়ে হাজির হল। দেখা দিল লিন্ডা। বলল, আমি তোমাকে airport এ নামিয়ে দিয়ে আসব। ততক্ষণ পর্যন্ত আমার সাথে থাকবে তুমি। সারাটা সময় সে চিপকে রইল সজীবের সাথে। শেষবারের মত একসাথে খাওয়া দাওয়া করল তারা।
শেষ পর্যন্ত সময় চলেই এল। নির্নিমেষে সজীবের দিকে চেয়ে আছে লিন্ডা। লম্বায় সে সজীবকে ছাড়িয়ে গেছে। ঝাপসা চোখে কিছুই দেখতে পারছেনা সে। ঠোট কাঁপছে তার। সজীব মাথায় হাত বুলিয়ে দিল আর চোখের পানি গড়িয়ে পড়ল লিন্ডার। বলল, একটা প্রশ্ন করি?
-কর।
-বাংলায় father কে কি বলে?
-বাবা।
-ও আচ্ছা।
-যাই রে মা, সময় হয়ে গেল।
হাতটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে লিন্ডা বলল, হুমম, ভালো থেকো তুমি, সিগারেট ছেড়ে দিও। আমি তো আর থাকবনা-নিজে চা বানিয়ে খেও। research এ frustrated হলে অন্যের উপর রাগ ঝেরোনা…আর হ্যাঁ, শরীরের যত্ন নিও, বেশী spicy food খাবানা…ভালো থেকো……বাবা।
সজীবও দুর্বল হয়ে পড়ল। লিন্ডাকে জড়িয়ে ধরে বলল, তুমিও ভালো থেকো আর অন্যের উপর কক্ষনও রাগ ধরে রাখবেনা।
এ নিয়ে কিছু না বলে লিন্ডা বলল, আচ্ছা বাবা, বড় হয়ে আমি কি হলে তুমি খুশী হও?
মৃদু হেসে সজীব বলল, আমাদের দেশে সবাই চায় ছেলে মেয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হোক। আমিও তাই চাই কিন্তু…
-কিন্তু কি?
-তোমার যদি কোনো creativity থাকে-অবশ্য Art তোমাকে দিয়ে হবেনা। তুমি বিড়াল আঁকলে সেটা allian কুকুর মনে হয়, allian বিড়াল মনে হলেও একটা কথা ছিল…
লিন্ডা হেসে দিল, সজীব বলে চলল, তাও যদি কখনও আঁকার হাত আসে তাহলে Art নিয়ে পড়াশনা করিও। যদি গান ভালো লাগে, তোমার গানের গলা ভাল, তাহলে গান নিয়ে কিছু কর, cinema নিয়ে passion থাকলে সেই দিকে যেও। মূল কথা হল, creativity থাকলে সেটা অপচয় করোনা।
প্লেন আকাশে উড়াল না দেয়া পর্যন্ত প্রায় দু’ঘণ্টা terminal এ বসে থাকল লিন্ডা। কেমন যেন হাহাকার উঠেছে চারিদিক। সবকিছু বিষন্ন মনে হচ্ছে। তার এই বার বছরের জীবনে সজীব ছাড়া তো আর কোনো স্মৃতি নেই, আজ সে মানুষটাই সবচেয়ে কষ্ট দিয়ে চলে গেল জীবন থেকে। কিভাবে কাটবে তার সময়! এলোমেলো পায়ে, সর্বহারার ভঙ্গিতে, নিরবে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বাড়ির দিকে পাড়ি দিল সে।
৪.
সজীব এখন পুরো সংসারী। দুই ছেলের বাবা সে। মেয়ের স্থানটা তাই এখনও লিন্ডাই দখল করে আছে হয়ত। দশ বছর পার হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে email আর কোনো উৎসব হলে ফোন করার মধ্যেই যোগাযোগ সীমিত। দশ বছর পর পুরো পরিবার নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে গেল সে।
সজীবের স্ত্রী শাহানা Sydney airport এ নেমেই বলল, কি? প্রথমেই নিশ্চয় মেয়েকে দেখতে যাবে।
হাসল সজীব। শাহানা বলল, চল আমিও দেখব ওকে।
লিন্ডা এখন আর তার মা’র সাথে থাকেনা। সজীবকে দেখে সে চমকে উঠল। লিন্ডাকে চেনা আসলেও কষ্টকর, অনেক পরিবর্তিত হয়ে গেছে চেহারা। সারাদিন তারা পাঁচজন একসাথে থাকল। রাতের বেলা হোটেলের বারান্দায় পুরোনো দিনের মত সজীবের কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে লিন্ডা। আকাশ জুড়ে থালার মত বিশাল চাঁদ।
ছেলেদের নিয়ে ঘুমাতে গেল শাহানা। তারা জিজ্ঞাসা করল, বাবা আসবেনা মা?
-আসবে বাবা। পরে। আজকে তোমার বাবাকে একটু সময় দাও।
নীরবে চোখের পানি ফেলছে লিন্ডা। বলল, বাবা তুমি চলে যাওয়ার পর আর কেউ ভালোবাসেনি আমায়। দেখতেই পাচ্ছ, যত বড় হচ্ছি ততই কুশ্রী হচ্ছি আমি। আমার কোনো boy friend নেই। আমার সব বান্ধবীরা এখন ওদের boy friend দের সাথে থাকে। আসলে কি জান বাবা? তোমার যদি চেহারা ভালো না হয়, সাথে যদি figure ও বাজে হয়, তাহলে ছেলেদের সংস্পর্শ পাবার একমাত্র উপায় হল slut হয়ে যাওয়া। আমি একটা খুব খুব সস্তা slut ছাড়া আর কিছুইনা।
-শোন রে মা, একেক দেশের একেক রকম culture. চাইলেও তা অগ্রাহ্য করা যায়না। শুধু একটা কথা বলে রাখি, ছেলেরা তোমার সাথে যে উদ্দেশ্য নিয়েই রাত কাটাকনা কেন, তুমি তাদের সাথেই সময় কাটাবে যাদের প্রতি তোমার কিছুটা হলেও ভালবাসা থাকবে। ছেলে ভালবাসুক আর না বাসুক, কোনো যায় আসেনা। তুমি তোমার ভালবাসা দিয়ে তার সাথে সময় কাটাবে।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে লিন্ডা আবার বলল, আমার কিচ্ছু নেই বাবা। কোনো creativity নেই। mathematics কঠিন লাগে বলে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়িনি, আর অনন্ত সময় ধরে medicin পড়ার ধৈর্য হয়নি। আমি তোমার কোনো আশাই পূরণ করতে পারিনি। কণ্ঠটা একটু ভাল বলে একটা call centre এ কাজ জুটেছে।
-solution একই লিন্ডা। এই কাজটাকেই ভালবাস, দেখবে কত ভাল লাগছে। এখান থেকেই তো শুরু, কাজের প্রতি এই ভালবাসাই তোমাকে অনের বড় কোনো position এ নিয়ে যাবে দেখবে একসময়।
একটা মাস শেষ হয়ে গেল দেখতে দেখতে। দ্বিতীয়বারের মত সজীবকে বিদায় জানিয়ে ফিরছে লিন্ডা। সজীব যখন প্রথমবার চলে গিয়েছিল তার পর থেকেই Airport মানেই লিন্ডার কাছে কেমন যেন বিষাদময়। মনে আর আচরণে সেই ১০ বছর আগেকার অনুভূতি। সন্ধ্যার আকাশ রাতের আগমনবার্তা জানাচ্ছে। রাস্তা পার হওয়ার জন্য এক intersection এ এসে হঠাৎ হাসি ফুটল লিন্ডার মুখে। চোখের পানি মুছে ১৮ বছর আগের মত গাড়ির তোয়াক্কা না করেই দৌড়ে রাস্তা পার হল সে।
এর ১০ বছর একটি email এ লিন্ডা সজীবকে লিখেছিলঃ
“বাবা, কেমন আছ? আমি খুব খুব ভাল আছি। আমার job এ আমি এখন one of the best. আমি এখন এক radio company-র RJ. আমার স্বামী আমার নিঃস্বার্থ ভালবাসা ফিরিয়ে দিতে পারেনি। তুমি চিন্তা করতে পারবেনা যে, কি ভয়াবহ handsome সে। ৩২ বছর ধরে আমার জন্য বাবা খুঁজতে খুঁজতে মা এখনও single ই রয়ে গেছে। তাকে আমার কাছে নিয়ে এসেছি। আমার ভালবাসায় সে লজ্জিত হয়ে বিগত বছরের আমার প্রতি জমে থাকা স্নেহগুলো বহুগুণে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সে ব্যতিব্যস্ত থাকে সবসময়।
দ্বিতীয়বারের মত তুমি যেদিন আমায় ছেড়ে চলে গেলে সেদিন আমি ব্যাপারটা বুঝেছিলাম, আর এখন রীতিমত বিশ্বাস করি। সেটা হল-তীব্র প্রচেষ্টাও কখনও কখনও ব্যার্থতা আনতে পারে, অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে করা আশা করতে পারে আশাহত। কিন্তু ভালবাসার কোনো বিকল্প নেই বাবা। নিঃস্বার্থ ভালবাসার প্রতিদানে নিখাঁদ ভালবাসাই পাওয়া যায় শুধু। তোমার কাছ থেকে সেটা আমি পেয়েছিলাম এবং সবাইকে তা ফিরিয়ে দিচ্ছি বহুগুণে।
তুমি ভাল থেক।
তোমার আদরের মেয়ে
লিন্ডা আহমেদ”
মন্তব্য
খুবই কুরূচিপূর্ণ কথাটা।
খুবই রেসিস্ট লাগল প্যারাটা।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ভাইয়া আমি ওইটা face করছি, racism এর কিছু নাই এখানে। অনেকেই করে।
আর ছেলেদের মধ্যে যা দেখছি সেটাই লিখছি
"single ছেলেদের যা হয়-আশেপাশে মেয়ে দেখলেই গিলে খেতে ইচ্ছা হয়। আর যদি চেহারা ও দেহ সুন্দর হয় তাহলে তো কথাই নাই।"
--এই বাক্যটাতে লেখনীর সৌন্দর্য টা পাই নাই। ওইটা বাদ দিয়া বিবেচনা করলে আমার কাছে মনে হয় এইটাও একটা পসিবল মানসিকতা হইতে পারে কারো কারো। গল্পের মূল চরিত্রের মধ্যে ( নন ভিলেন ) এই ধরনের মানসিকতাও যে প্রকাশ পাইতে পারে তা মানিক বন্দোপ্যাধ্যায় এর উপন্যাস পড়ার পরে ছাড়ান দিসি।
"মেয়েগুলো Australian Aboriginal. চেহারায় বিন্দুমাত্র মাধুর্যতা নেই, কোকড়া শুষ্ক চুল, কাপড় ময়লা, দাত ময়লা। ওরা প্রায় চিৎকার করেই কথা বলে বলা চলে। হাঁটার সময় যতটুকু সম্ভব জায়গা দখল করে। ওরা কাউকে side দেয়না। কোনো স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত ওই পথ দিয়ে যেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে অথবা ফুটপাত থেকে রাস্তায় নেমে ওদেরকে overtake করতে হবে।"
এই অংশটা যদি Australian Aboriginal দের সম্পর্কে লেখকের ভাবের প্রকাশ হয়, তাহলে একটু হিট খাইলাম। আর যদি "সজ়ীবের" মনের ভাবের প্রকাশ হয়, তাহলে কিসু কওনের নাই। আইন কানুন এ আছে যে রেসিস্ট মনোভাব প্রকাশ করা যাইবো না। কিন্তু আমরাও তো মানুষ , আমাগোর মনের ভিতরে যদি এই ধরনের চিন্তা আসে তাইলে তো মনটারে দুইটা ধমক দেওন ছাড়া তো আর কিসু করনের নাই।
ওভারঅল, লিখা পইড়া ভালো লাগলো। গল্পের ভিতরে দুই জায়গায় আট বছর আর দশ বছর এর লাফ বিভূতিভূষন বন্দোপাধ্যায় এর ছোটগল্পের কথা মনে করায়া দিলো।
-মেফিস্টো
মেফিটো ভাই,
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনি যে সমালোচনা করেছেন অনেকেই সেটা বলছে। আমি আসলে লেখার সময় এত কিছু ভেবে লেখিনি।
তবে আমার এই কথা লেখার মূল উদ্দেশ্য যেটা ছিল সেটা হল, সজ়িব একজন সাধারণ বাঙ্গালী ছেলে। আমি আপনি এবং এখানে যারা মন্তব্য করেছেন সবাই হয়ত ভালো মানসিকতার মানুষ। কিন্তু সব বাঙ্গালী ছেলেই যে এরকম তা আমার মনে হয়না। আর সব শেষে এটাই বুঝাতে ছেয়েছি যে, মানুষের নানা রকম দিক থাকে। এরকম মানসিকতার একজন মানুষের ভিতরেও মানবিকতা লুকিয়ে থাকতে পারে এবং সময় মত সেটা বের ও হয়ে আসতে পারে।
পুরোটা পড়ার পর আপনাকে বলি :
আমার নস্ট করা পাচঁটি মিনিট ফিরিয়ে দিন প্লীজ ।
প্রথম অংশটা ছাড়া অতটা খারাপ লাগেনি কিন্তু।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ধন্যবাদ ভাইয়া
হাহ হা............sorry ভাই, সাধ্য থাকলে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতাম
এরপর আর পড়ার ইচ্ছে হয় নি। কথাটা অন্যভাবেও বলা যেত কিংবা সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া যেত।
এনিওয়ে, হতাশ হবেন না।লেখালেখি চালিয়ে যান।
---আশফাক আহমেদ
আমার এই কথা লেখার মূল উদ্দেশ্য যেটা ছিল সেটা হল, সজ়িব একজন সাধারণ বাঙ্গালী ছেলে। আমি আপনি এবং এখানে যারা মন্তব্য করেছেন সবাই হয়ত ভালো মানসিকতার মানুষ। কিন্তু সব বাঙ্গালী ছেলেই যে এরকম তা আমার মনে হয়না। আর সব শেষে এটাই বুঝাতে ছেয়েছি যে, মানুষের নানা রকম দিক থাকে। এরকম মানসিকতার একজন মানুষের ভিতরেও মানবিকতা লুকিয়ে থাকতে পারে এবং সময় মত সেটা বের ও হয়ে আসতে পারে। সেজন্যে এটা এড়িয়ে যাবার প্রশ্ন-ই আসেনা। তবে হ্যাঁ অন্যভাবে হয়ত লেখা যেত কথাটা।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মন্তব্যের জন্য
লেখাটা অনেক ভালো লেগেছে.....একবারে বাস্তব মনে হয়েছে আমার কাছে...অন্যদের কাছে কেমন লেগেছে জানি না....চালিয়ে যান...!!!
tofayel71@gmail.com
তোফায়েল ভাই, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
ভালো লাগলো। খুব একটা খারাপ না। বাবা ও মেয়ের মধ্যকার গভীর আবেগপূর্ণ সম্পর্ক বেশ সফল ভাবেই চিত্রিত হয়েছে গল্পটিতে। স্নেহ-ভালোবাসা আর মায়া-মমতা যে কোনো দেশ,কোনো জাতি,কোনো ধর্ম মানেনা তা আবারও প্রমানিত হলো।
গল্পের কাহিনী পাঠককে মুগ্ধ করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বিদেশ সম্পর্কেও ভালো একটা ধারণা পাওয়া যাবে। তবে লেখনীতে কিছুটা ঘাটতি থাকবার ফলে সুন্দর কাহিনীটা পুরোপুরি গল্প হয়ে উঠতে পারেনি। আশা করি লেখকের কাছ থেকে সামনে আরও অনেক ভালো লেখা পাবো। লেখার হাত আছে,তবে আরেকটু নাটকীয়তা আর আবেগ আনতে পারলে আপনার কাছ থেকে ভালো সাহিত্যকর্ম পাওয়া সম্ভব।
শুভ কামনা রইল।
শাহেদ সেলিম
সেলিম ভাই, আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমি জানি আমার লেখনিতে ঘাটতি আছে। এটা আমার limitation. তবে চেষ্টা তো সবসময় করি-ই ভালো সাহিত্যকর্ম লেখার। আমি আগে আরও দুটি লেখা লিখেছিলাম। আর আমি আসলে বুঝিওনা যে গল্পের মূল উপকরণ কি। নাটকীয়তা আনতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোনো plot আসেনি মাথায়
আর যেহেতু এই আবেগের সাথে আমি এখনো পরিচিত নই সেজন্য মনে হয় ফুটিয়ে তুলতে পারিনি ভালোভাবে। তবে চেষ্টা করেছিলাম ভাই।
ভাই সাদ মাহবুব, limitation পৃথিবীর সব লেখকেরই আছে। এটা কোনো ব্যাপার না । লিখতে লিখতে দেখবেন আরও ভালো হচ্ছে আপনার লেখা! আপনি যে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছেন তার জন্য সাধুবাদ জানাই। আমি নিশ্চিত আপনি যদি এই আন্তরিকতা ধরে রাখতে পারেন তাহলে নিজেই একদিন নিজেকে ছাড়িয়ে যাবেন!
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
শাহেদ সেলিম
আরও কিছু কিছু বাক্য অন্যান্যরা ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছেন, আমার কাছে এই লাইনদুটোও খারাপ লেগেছে বলে উদ্ধৃত করলাম। এক প্রতিমন্তব্যে দেখলাম বলেছেন আপনি নিজেই অস্ট্রেলিয়ান অ্যাবোরিজিনালদের ওরকম ব্যবহার পেয়েছেন বলেই গল্পে লিখেছেন, এর মধ্যে রেসিজমের কিছু নেই। হতে পারে আপনি রেসিস্ট কোন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গল্পটা লিখতে বসেন নি - তবে, অস্ট্রেলিয়ান অ্যাবোরিজিনালদের প্রতি আপনার খুব সহানুভূতিপূর্ণ মনোভাব আছে বলেও কিন্তু মনে হচ্ছে না। ধরে নিলাম আমিও পাঞ্জাবী পরা পাঁচটা ছেলেকে দেখেছি রাস্তায় বোকার মত আছাড় খেতে, অথবা বাবা মায়ের পছন্দে দেশী মেয়ে বিয়ে করা দশটা বাংলাদেশী ছেলেকে দেখেছি বউএর সাথে ভণ্ড আচরণ করতে - এখন আমি যদি বলি, "ঐসব পাঞ্জাবী পরা ভূতের মত দেখতে ক্ষ্যাত বাংলাদেশী ছেলেগুলা তো দেশি মেয়ে বিয়ে করে ঠিকই, কিন্তু সারাজীবন আবার দুইনাম্বারিও করে যায়" - কেমন শোনাবে তাহলে কথাটা? আমি কিন্তু আপনার গল্পের চরিত্র 'সজীব'কে সাদ মাহবুব বানিয়ে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথাটা আপনাকেই শোনাচ্ছি না, বিচ্ছিন্ন কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা বাইরে থেকে দেখে তৈরী হওয়া ধারণার ভিত্তিতে এরকম অসম্মানজনক উক্তি করাটা কেমন শোনায়, সেটার উদাহরণ দেয়ার চেষ্টা করছি।
বেশি পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের বক্তৃতার মতো শোনাচ্ছে? হতে পারে, কিন্তু পলিটিক্যালি কারেক্ট কথা বলার চলটা তো এসেছেই শব্দের রাজনীতি থেকে। এবং, এই কথাটায় রাজনীতি যতটুকু আছে তার চাইতেও বেশি আছে মানবিকতা। কিছু কিছু কথা যে বলা নিষিদ্ধ বা অনুচিত তার কারণ শুধু 'শুনতে ভালো শোনানো'ই নয়, এটা একটা চর্চা। অনেকসময় হালকাভাবে বলতে বলতে আমরা অন্যের সম্মান রক্ষার ব্যাপারটা নিয়ে সতর্ক থাকি না। মানুষ হিসেবে নিজেদের অবস্থানটুকুও তাতে খুব পোক্ত হয় না।
লেখাটায় কিছু ভালো দিকও ছিলো, অন্যরকম একটা ভালবাসার কাহিনীটুকু পাঠক হিসেবে আরও অনেক উপভোগ্য হতে পারতো - যদি ওই বিরক্তিকর লাইনগুলো না থাকতো।
আমার এই দীর্ঘ সমালোচনায় দমে যাবেন না। আশা করছি আপনার পরের লেখাটা আরও ভালো লাগবে।
কথাগুলো অসামান্য লাগল, স্নিগ্ধা'পু!
স্নিগ্ধা আপু,
আপনার মন্তব্যটা ভালো লেগেছে। আপনার মন্তব্যেও সাহিত্যের ছোয়া পাওয়া গেল। কিন্তু আমার মধ্যে ভাষার দখল নেই। সামান্য imagination আছে, সেটা দিয়েই লেখালেখির চেষ্টা করি।
আমি যখন মেয়েগুলোর চেহারার বর্ণণা দিয়েছি, তখন কিন্তু বলিনি যে, সব aboriginal দের চেহারাই এমন। আমি ওইখানে দাঁড়ানো মেয়েগুলোর বর্ণণা দিয়েছি শুধু। গল্পের প্রথম পর্বটুকু বাস্তব ঘটনা। যে মেয়েগুলো আমার সিগারেট ছিনতাই করেছিল তাদের চেহারার বর্ণণা দিয়েছি। তবে হ্যাঁ, বর্ণণাগুলোতে সাহত্যের ছোয়া আনতে পারিনি। তবে আনলেও মূল ব্যাপার কিন্তু একই হত। আবার ভাববেন না যে ওরা আমার সামান্য একটা সিগারেট ছিনতাই করেছিল বলে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে লিখেছি। ব্যাপারটা তাও না। আর পেত্নীর মন মন্তব্যটা আমার ওই রেস্টুরেন্ট মালিক বন্ধু যেভাবে বলেছিল সেটাই তুলে দিয়েছি।
এভাবে নগ্নরুপে ভাষা ব্যাবহারের মূল কারণটা হল, এটা দেখানো যে সজীব কোনো মহামানব না, সে সাধারণ ছেলে, তার এমন ধারণাই ছিল, কিন্তু সে শেষ পর্যন্ত এসব ছাপিয়ে মানবিকতার কাছেই সমর্পন করেছে নিজেকে।
আমার এতা সচলে লেখা তৃতীয় গল্প। আমার দুটা উপন্যাস ও বেরিয়েছিল শেষ বইমেলায়। না, নিজের প্রশংসার জন্য কথাগুলো বলছিনা। বলছি এজন্য যে, আমি সবচাইতে অপছন্দ করি নায়ক হলেই তাকে একেবারে মহামনব করে প্রকাশ করা। একজন সাধারণ গড়পরতা মানুষ জীবনের কোনো একসময় ভালো/মানবিক কোনো কাজ করল এটাই আমার কাছে বেশী নায়কচিত এবং বাস্তব মনে হয়।
প্রথমদিকের কিছু কথা বেশ বর্ণবাদী এবং নোংরা লাগল। আরেকটু পরিশীলিতভাবে লিখলে খারাপ হতে না। বাকি লেখাটা ভালই লাগল।
প্রথম প্রথম লেখার কিছু কাঁচা-মিঠে স্বাদ রয়েছে--কিন্তু সব ছাপিয়ে গেছে গল্পের অন্তর্নিহিত মানবিকতার আভাসে।
আপনি আরো লিখুন--আমি নিশ্চিত, আপনার কাছ থেকে আমরা আরো অনেক ভাল লেখা পাব।
শুভেচ্ছা অহর্নিশ!
অনেকেতদা, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। চেষ্টা করব আবশ্যই আরো ভালো কিছু লেখার।
সচলে আপনার প্রথম লেখা? চালিয়ে যান, আর অন্য সচলরা যা বলেছেন সেগুলো এট্টু খেয়াল রাখবেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা, অবশ্যই খেয়াল রাখব। সবাই আমার lacking নিয়ে মন্তব্য করবে সেজন্যই তো সচলে লেখার চেষ্টা।
এটা আমার তৃতীয় লেখা সচলে। আগের ২টার নাম ছিল "প্রশান্তি" আর "প্রত্যাবর্তন"
এগিয়ে যান।
দোয়া রাখবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
লেখাটার সমস্যা লেখকের মানসিকতায় নয়, বর্ননার টেকনিকে আর কিছু কিছু বিষয় অতিমাত্রায় সরলীকরনে। শেষ পর্যন্ত এটা মানবিক গল্প এবং ভাল গল্প। কিছু কিছু মন্তব্য আরো পরিশীলিত আর গঠনমূলক হতে পারতো।
-সমুদ্র সন্তান
আপনার ছোট্ট মন্তব্যটাই এখন পর্যন্ত সবছাইতে perfect লাগলো ভাইয়া। যে বাক্যগুলো ব্যাবহার করেছি সব দরকার ছিল বলেই ব্যাবহার করেছি। তবে আপনি যেটা বললেন সেটাই, অন্যভাবে লেখা উচিৎ ছিল।
আপনার গল্প বেশ লেগেছে। আর কিছু লাইনের ব্যাপারে যে আপত্তি এসেছে তা আমার মনে হয় না ঠিক হচ্ছে কেননা আমার মতে কোন গল্পেতো লেখক তার ইচ্ছা মত লিখতেই পারে। সবশেষে এটাতো একটা গল্পই, তাই না?
পাগল মন
আপনার liberal মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। কারো লেখার ব্যাপারে আমিও এইরকম মনোভাব-ই প্রকাশ করি। আপনার সাথে এইখানে আমার মিল দেখে ভালো লাগল
নতুন লিখিয়েদের লিখা মূল্যায়ন ও প্রকাশে সচলায়তনের অগাধ ঔদার্য দেখে আশ্বস্ত হলাম।
(অফ-টপিকঃ রবীন্দ্রনাথ তাহলে সত্য সত্যই দেখি একটা দুষ্ট লোক)
আর আমি হয়েছি কৃতজ্ঞ
প্রথম দিকটা একটু আক্রমণাত্মক মনে হলেও পুরো গল্প সবদিক দিয়ে ভালই লাগল। লেখা চলুক।
ধন্যবাদ রাঙ্গা ভাই, লেখার চেষ্টা করব ভালো কিছু আরও
সমালোচনা তো হয়েই গেছে, সে অংশ বাদ দিয়ে আমি শুধু আমার মুগ্ধতা জানিয়ে যাই। গল্পটা অসম্ভব ভালো লাগলো।
নিয়মিত লিখুন।
emotional হয়ে পড়লাম রে ভাই আপনার মন্তব্যটা পড়ে। অবশ্যই লেখার চেষ্টা করব নিয়মিত
ভাই, আমার সেনসিটিভিটি মনে হয় কম। একটু কাঁচা হলেও খারাপ লাগে নাই। তবে নিচের লাইনটা সত্যি মন ছুঁয়ে গেছে।
"তীব্র প্রচেষ্টাও কখনও কখনও ব্যার্থতা আনতে পারে, অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে করা আশা করতে পারে আশাহত"
অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম
অনেকেই দেখা যাচ্ছে আপনাকে নতুন লেখক ধরে নিয়েছে। তাই উৎসাহ দিতে চেষ্টা করছে। আমিও দিতাম। কিন্তু স্নিগ্ধাপুর প্রতিমন্তব্যে দেখলাম গত বইমেলাতেই আপনার দুটো উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে।
তাহলে আপনাকে অবশ্যই নতুন লেখক বলে ছাড় দেওয়াটা অন্যায়।
দু দুটো প্রকাশিত উপন্যাসের লেখকের কাছে আমার প্রত্যাশাটা অবশ্যই বেশি। সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। গল্পটা ভালো হলেও অনেক প্রকাশভঙ্গি ভালো লাগেনি। বিস্তারিত বললাম না, আগে অনেকেই বলেছেন বলে...
আর সবচেয়ে খারাপ লেগেছে এতো বেশি বিদেশী শব্দের ব্যবহার দেখে...
১ দিলাম...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই, বিদেশী শব্দের ব্যাবহার কমানোর চেষ্টা করব। কোনো লেখক ই তো perfect না রে ভাই, আমারও অনেক limitation আছে।
খালি বলি, কেউ যদি ভেবে থাকে গল্পের নায়ককে অবশ্যই মহামানব এবং অবশ্যই শুদ্ধ রুচির হতে হবে এবং গল্গে যেসব মেয়েদের বর্ণণা আসবে তাদেরকে রুপবতী হতেই হবে এবং কবিদের মত তার রুপের বর্ণণায় আকাশ বাতাস একেবারে মোহিত করে ফেলতে হবে তাইলে সেটা আমার লেখায় মাঝে মাঝে প্রকাশিত হতে পারে, সবসময় না। এটাকে কেউ racism ভাবলে আমার মন খারাপ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
কী কারণে জানি না, আমরা যারা আপনার লেখা কিছু কিছু লাইন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছি, তাদের বক্তব্যটা আপনার কাছে স্পষ্ট হচ্ছে না! আমি বা অন্য কেউই বলিনি/বলেনি যে আপনার নায়ককে 'শুদ্ধ চরিত্র' হতে হবে! মেয়ে দেখলে গিলে খাওয়ার ইচ্ছেই হোক কি বেদীতে বসিয়ে পূজো করার ইচ্ছেই হোক, সেটা বলার 'ধরণ'টা ভালো লাগে নি। নায়িকা, সহনায়িকা, খলনায়িকা সব্বাই দেখতে সুন্দর না হোক, এমনকি দেখতে খারাপই হোক, তাতে তো কিছু যায় আসে না। এই বর্ণনা যেভাবে দেয়া হয়েছে সেটার সমালোচনা করা হয়েছে, কেন নায়কের কোন মেয়েকে দেখতে সুন্দর লাগলো না সেই ব্যাপারটাকে নয়! আপনার লেখাটা পড়লে পাঠকের মনে অস্ট্রেলিয়ান এ্যাবোরিজিনাল নামক জনগোষ্ঠীর সাথে তাদের চেহারা, আচরণ, স্বভাব বা এ্যাটিচুড সম্পর্কিত একটা নেগেটিভ কনোটেশন তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে - এতো কথা সেইজন্যই বলা।
রেসিজম এর প্রসঙ্গ এসেছে কারণ আপনি একটা উম্মুক্ত মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত অচেনা একটি জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কিছু কথা বলছেন। আমরা যারা কখনই অস্ট্রেলিয়ান কোন আদিবাসীর সংস্পর্শে আসিনি, তাদের আপনার এই লেখার মধ্য দিয়েই হয়তো প্রথম ওঁদের সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরী হচ্ছে। আপনি রেসিস্ট, বা আপনি অস্ট্রেলিয়ান এ্যাবরিজিনালদের দেখতে পারেন না - সেটা নাহয় ঠিক নয়। কিন্তু, আপনার নায়কের এঁদের সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকলেও শেষ পর্যন্ত মানবিকতারই জয় হয়েছে - এই ব্যাপারটা আরও ভালোভাবে ফুটে উঠতে পারতো, যদি লেখক হিসেবে আপনি আরও সতর্ক এবং যত্নবান হতেন। কোন লেখায় বা বর্ণনায় কোন জায়গাটায় পাঠকের মনোযোগ আটকে যাচ্ছে, সেটার দায় প্রথমত লেখকের।
আপনি একজন প্রকাশিত লেখক। বানান, টাইপো এবং বাক্যগঠনের ব্যাপারে আরও দক্ষতা আশা করি। আগেও বলেছি, আবারও বলছি - আপনাকে নিরুৎসাহিত করাটা আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং, পাঠক হিসেবে আপনার কাছ থেকে একটা ভালো লেখা আদায় করে নিতে পারার উদ্দেশ্যেই এতোসব বলা।
গল্প মোটের উপর ভালো লেগেছে।
তবে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের ব্যাপারে সজিবের ধারণার সাথে আমার নিজের ধারণার মিল পেলাম না খুব। আমি সিডনির রেডফার্ন এলাকায় বেশ লম্বা সময় থেকেছি। রেডফার্ন আদিবাসী অধ্যুসিত হিসেবে পুরো সিডনীতে বেশ পরিচিত। কিন্তু কখনো বাদামী চামড়ার আমার প্রতি তাঁদের কোনো বাজে ব্যবহার চোখে পড়ে নি। যতোটুকু দেখেছি, তাঁরা বেশ বন্ধুসুলভ ব্যবহারই করেছে আমার সাথে। সিগারেট বা ভাংতি কয়েন চেয়ে না পেলেও। তবে হ্যাঁ, স্থানীয় এবং পুলিশদের সাথে তাঁদেরকে খুব মিষ্টি ব্যবহার করতেও খুব কমই দেখেছি।
আদিবাসীদের ব্যাপারে আমার বন্ধুদের অভিজ্ঞতাও মোটামুটি একই রকম। তাই এটাকে 'ব্যতিক্রম' আখ্যা দিতে চাইছি না।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভাইয়া, আমি এখানে গপ্লটাতে খালি ওই মেয়েগুলোর আচরণের কথা বলেছি। glebe point road এ যে বাসাটায় এরা থাকে ওরা এমন প্রায়ই করে। অবশ্যই এটা সব aboriginal দের প্রতিমূর্তি নয়। আমারও অনেক ভাল ভাল aboriginal ফ্রেন্ড আছে। আর ওরা বাদামী চামড়ার সাথে শুধু এমন করে তা কিন্তু আমি বলিনি। সবার সাথে প্রায়ই করে থাকে
নতুন মন্তব্য করুন