দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় আমরা বিদেশি নামের ক্ষেত্রে ইংরেজদের অনুসরণ করা রপ্ত করেছি। ইংরেজি নয় এমন নামও উচ্চারণ করেছি ইংরেজি রীতিতে, বাংলায় বানানও লিখেছি সেই রীতিকে অনুসরণ করেই। তবে যদ্দেশীয় নাম তদ্দেশীয় কায়দায় উচ্চারণ করা বা বাংলায় প্রতিবর্ণীকরণ করার দাবিটা আজকের নয়। অনেক শিক্ষিত বাঙালিই ফরাসি, জার্মান, স্পেনিশ এসব ভাষার উচ্চারণ কিছুটা জানেন। তাঁদের মতে এসব ভাষার নাম সেসব দেশের রীতিতেই উচ্চারিত হওয়া উচিত। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন জাগে, বহুকাল ধরে বাংলায় উর্দু এবং আরবি ভাষা প্রচলিত। সম্প্রতি রুশ, চৈনিক প্রভৃতি ভাষার চর্চাও অনেকটা বেড়েছে। নিত্যই আমাদের আলোচনায় ইতালীয়, স্পেনিশ, পর্তুগিজ, চেখ, ডেনিশ, সুইডিশ, পোলিশ, কোরিয়ান, জাপানি প্রভৃতি নাম বা শব্দ চলে আসছে। এগুলির কোন উচ্চারণ নেব? প্রতিবর্ণীকরণই বা করব কীভাবে?
বিশ্বের সব ভাষার ক্ষেত্রে সমস্যাটি এ-রকম নয়। যেমন, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, স্পেনিশ, পর্তুগিজ, ইতালীয় প্রভৃতি ভাষায় রোমান হরফ প্রচলিত। এ কারণে এসব ভাষার একটি থেকে অন্যটিতে প্রতিবর্ণীকরণে সমস্যা নেই। যদিও উচ্চারণ করা হয় গ্রহীতা-ভাষার নিজস্ব রীতিতেই। ফলে নাম দৃশ্যত একই থাকলেও উচ্চারণে কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান ও স্পেনিশ ভাষায় Benjamin নামটি একই থাকে। শুধু উচ্চারণের ক্ষেত্রে আলাদা হয়ে যায়। ইংরেজি ও ফরাসিতে বেনজমিন্ (এই জ-এর অকারান্ত ধ্বনি কিছুটা হ্রস্ব, কেন্দ্রীয়), জার্মানে বেন্ইয়ামিন এবং স্পেনিশে বেনহামিন। আবার প্রায়শই এক ভাষার নাম অন্য ভাষায় ভিন্ন চেহারা নেয়। অর্থাৎ, অন্য ভাষার নামকে নিজ নিজ রীতি অনুযায়ী বদলে নেয়ার প্রবণতা সব ভাষারই রয়েছে। পার্থক্য এই যে, কখনো বানান ও উচ্চারণ উভয় ক্ষেত্রেই বদল হয়, কখনো বদল হয় শুধু উচ্চারণে।
কিন্তু বাংলা লিপির সাথে ইউরোপীয় লিপিগুলির কোনো মিলই নেই। বাংলায় সাতটি মৌলিক স্বরধ্বনি ও তিরিশটি ব্যঞ্জনধ্বনি আছে, এটা নিয়ে আমরা গর্ব করতেই পারি। বাংলা যে একটি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী ভাষা তা নিয়েও কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু মনে রাখতে হবে বাংলা ভাষার এসব ধ্বনি দিয়ে ইউরোপীয় ভাষাগুলির সব ধ্বনিকে বোঝানো সম্ভব নয়। এ কারণে অনেকেই এখনও সর্বত্র ইংরেজি রীতিকে অনুসরণ করার পক্ষপাতী। সমস্ত বিদেশি নাম ইংরেজিতে উচ্চারণ করা এবং সে উচ্চারণ অনুযায়ী বাংলায় প্রতিবর্ণীকরণ করা হলে একটা সুবিধা এই যে, এতে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে এ রীতি অনুসরণ করলেই যে সমস্যা দূর হবে তাও তো নয়। স্বয়ং ইংরেজরাই সব অনিংরেজি শব্দকে ইংরেজি কায়দায় উচ্চারণ করে না। সমস্ত ইংরেজি উচ্চারণ বাংলায় পুরোপুরি দেখানোও সম্ভব নয়। সর্বোপরি আমাদের নিজস্ব উচ্চারণ-প্রবণতা তো রয়েছেই। আমরা কি ইতিমধ্যেই বহু ইংরেজি শব্দের উচ্চারণকে বাংরেজিকরণ (নাকি ভারতীয়করণ?) করিনি? তাই শুধু স্থাননাম বা ব্যক্তিনামের ক্ষেত্রে এর অন্যথা হয় কী করে?
সব দিক বিবেচনায় বিদেশি নামের উচ্চারণ ওই ভাষার সমস্ত অনুষঙ্গসহ বাংলায় উপস্থিত করা যাবে এমন আশা করাটা যথোপযুক্ত মনে হয় না। অথচ এ সমস্ত নামের বাংলা প্রতিবর্ণীকরণ খুবই জরুরি। খুবই বাস্তব একটি সমস্যা। বোধকরি প্রত্যেক লেখক, পাঠক ও আলোচককেই কোনো-না-কোনো সময় এ নিয়ে দ্বিধায় পড়তে হয়। এর সহজ সমাধান কী? যেসব নামের উচ্চারণ জানা নেই সেগুলির ইংরেজি বা বাংরেজি উচ্চারণ অনুসারে প্রতিবর্ণীকরণ করা একটি সমাধান হতে পারে। কিন্তু তাহলেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? তা ছাড়া কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন কোনো সূত্রে কিছু নামের উচ্চারণ জেনে গেলেই সেগুলি সেই ভাষার রীতি অনুযায়ী লিখতে হবে কেন? সর্বাবস্থায় একটি রীতি অনুসরণ করাটাই কি অধিক যুক্তিযুক্ত নয়? এ কথার উত্তরে কেবল বলা যায় যে, সর্বত্র ইংরেজি রীতি অনুসরণ করলেও তো সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে না। তাই যদি নতুন একটি বিদেশি নামের উচ্চারণ জানাও থাকে তবু কেন কাউকে ইংরেজি রীতি বেছে নিতে হবে? কেন সে নিশ্চিন্তে তদ্দেশীয় রীতিতেই উচ্চারণ করতে পারবে না? এবং বাংলায় প্রতিবর্ণীকরণে কেন সেই উচ্চারণকেই বেছে নেয়া যাবে না (অবশ্য এক্ষেত্রে রোমান হরফও সংযুক্ত করা উচিত)? এ কথা ঠিক যে, সবারই সব ভাষার সব নামের উচ্চারণ জানা থাকবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু তাই বলে যেগুলি নিশ্চিতভাবে জানা আছে সেগুলির তদ্দেশীয় উচ্চারণ দেয়া যাবে না এমন ভাবনা ঠিক স্বস্তিকর মনে হয় না। অবশ্য যেসব স্থাননাম বা ব্যক্তিনামের উচ্চারণ ও বাংলা প্রতিবর্ণীকরণ প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে সেগুলি নিয়ে আমরা আপত্তি তুলছি না। আমাদের ধরে নিতে হবে সেই-সেই উচ্চারণ ও বানান সেই-সেই নামের বাঙালি রূপ। এই নিয়মে প্যারিস, প্রাগ, মস্কো, ডন কুইকজোট এসব জানা ও প্রতিষ্ঠিত নামকে পুনরায় তদ্দেশীয় উচ্চারণ অনুযায়ী বলা বা লেখারও তাই প্রয়োজন নেই।
বাংলা হরফ বনাম রোমান হরফ—জ বনাম J, Z, G
বাংলায় শুধু জ-ধ্বনিই আছে। যতই বাংলায় য লেখা হোক না কেন উচ্চারণে তা সব সময়ই জ। যিনি বা যত এর মতো বাংলা শব্দ, যক্ষ বা যম এর মতো সংস্কৃত শব্দ, আযান বা রমযান এর মতো আরবি শব্দও আমরা য দিয়ে লিখি এবং জ উচ্চারণ করি।
১. ইংরেজি ভাষা
ইংরেজি ভাষার J এবং Z বাংলায় উচ্চারণ হয় জ। যেমন, jack > জ্যাক, Zia > জিয়া*।
* কোনো কোনো ধ্বনিকে বোঝানোর জন্য বাংলায় হরফ উদ্ভাবিত হয়েছে, কিংবা পুরোনো হরফে কিছু হেরফের করা হয়েছে (অভিধান দ্রষ্টব্য)। যেমন /Z/ ধ্বনির জন্য এখন জ. (জ-য়ের নিচে ফুটকি বা নুক্তা) ব্যবহৃত হয়।
The pronunciation of ‘g’ generally (but not always) depends on the letter that follows it. The general rule is this: if the letter after ‘g’ is ‘e’, ‘i’ or ‘y’, the pronunciation is a ‘soft g’ as in ‘fringe’. Some examples of words with the soft ‘g’ are:
general, giant, gymnastics, large, energy and change.
Any other letter that follows requires a ‘hard’ pronunciation of ‘g’ as in ‘progress’ and some more examples are:
golf, pig, great, grasp and gum.
A bit of extra info for you: if a word derives from German, it’s usually a hard ‘g’, and if it is a Latin or French derivative, it’s a soft ‘g’.
Here are a few exceptions: tiger, gift, girl and gear.
সূত্র : বিবিসি লার্নিং ইংলিশ
ইংরেজি ভাষার G বাংলায় উচ্চারণ হয় জ অথবা গ। যেমন, energy > এনার্জি, great > গ্রেট।
২. ফরাসি ভাষা
The letter J in French is pronounced like the soft French G.
ফরাসি ভাষার j বাংলায় উচ্চারণ হয় জ। যেমন, Jeannine > জেনিন।
The letter G in French can be pronounced in one of two ways:
1. Soft pronunciation (see lesson on vowels for explanation) - In front of an E, I, or Y the G is pronounced like the G in "mirage": listen
2. Hard pronunciation (see vowels) - In front of an A, O, U, or a consonant, the G is pronounced like the G in 'good'.
When a G is in front of a soft vowel but has to be pronounced as a hard G, a U is added to make it hard, e.g., bague.
ফরাসি ভাষার G বাংলায় উচ্চারণ হয় জ অথবা গ। E, I, বা Y এই তিনটি বর্ণ বা স্বরধ্বনির আগের G উচ্চারণ হয় জ। যেমন, aubergine (eggplant) > ওবেরজিন, mirage > মিরেজ। আর A, O, U, বা ব্যঞ্জনধ্বনি (consonant)-এর আগের j উচ্চারণ হয় গ। যেমন, Gabriel > গাব্রিয়েল।
The letter Z in French is pronounced like the Z in English.
ফরাসি ভাষার Z বাংলায় উচ্চারণ হয় জ। যেমন, zoo > জু।
আরও ফরাসি শব্দের উদাহরণ দেখতে চাইলে (অডিও ক্লিপসহ) এখানে ক্লিক করুন।
৩. জার্মান ভাষা
The German letter J most frequently sounds Y, like 'y' in "yoga". When found in words that are obviously of foreign origin, the J sound may be maintained.
জার্মান ভাষার j বাংলায় উচ্চারণ হয় ইয়ো। যেমন Benjamin > বেন্ইয়ামিন। Judith> ইয়ুডিট্ বা ইয়ুডিঠ্।
The German letter Z always sounds like the English TS.
জার্মান ভাষার Z বাংলায় উচ্চারণ হয় ট্ স্। যেমন, Herz (heart) > হার্টস্
The German letter S sounds like a Z in the initial position and frequently in other positions as well.
জার্মান ভাষার S বাংলায় উচ্চারণ হয় ইংরেজি Z বা বাংলা জ-য়ের মতো। যেমন, Baron Munchausen > ব্যারন মুনশাউজেন।
আরও জার্মান শব্দের উদাহরণ দেখতে চাইলে (অডিও ক্লিপসহ) এখানে ক্লিক করুন।
৪. স্পেনিশ ভাষা
The Spanish letter j most frequently sounds like the ‘h’ in the word ‘hot’. When it is ‘raspier’(rasp- a harsh grating sound, similar to that of a rasp or saw cutting into wood), the J sounds like the ‘ch’ in ‘loch’.
স্পেনিশ ভাষার j বাংলায় সাধারণত উচ্চারণ হয় হ। যেমন, Jamás (never) > Hamás (হামাস), Tarjeta (card) > Tarjeta (তারহেতা), Mujer (woman) > Mujer (মুহের)। একটু কর্কশ উচ্চারণের ক্ষেত্রে এই হ খ-য়ের মতো শোনায়। যেমন, Objeto (object) > Objeto (ওখেতো), Viaje (trip)> Viachi (ভিয়াখি) ইত্যাদি।
The Spanish Z is pronounced differently in Spain than in Latin America. Generally in Spain, it is pronounced like the ‘th’ in the English word ‘think’. In center (Parts of Andalucía, Canary Islands and Americas), it is pronounced like the letter S but Before the vowels e and i like C. --http://www.studyspanish.com/pronunciation/letter_j.htm
স্পেনিশ ভাষার Z বাংলায় স্পেনিয়ার্ডদের উচ্চারণে হয় থ এবং ল্যাটিন আমেরিকান উচ্চারণে হয় স। যেমন, Jimenez>হিমেনেথ্ (স্পেনিয়ার্ড উচ্চারণে), হিমেনেস্ (ল্যাটিন আমেরিকান উচ্চারণে)।
আরও স্পেনিশ শব্দের উদাহরণ দেখতে চাইলে (স্পেনিয়ার্ড ও ল্যাটিন উচ্চারণের অডিও ক্লিপসহ) এখানে ক্লিক করুন।
------------------------------------------------------------------
পূর্ববর্তী পর্ব :বানানায়তন- ৬ | বাংলার তিন 'শ'—দন্ত্য-স, মূর্ধন্য-ষ আর তালব্য-শ| বানানায়তন- ৫ | দন্ত্য-ন বনাম মূর্ধন্য-ণ |
বানানায়তন- ৪ | 'অনুস্বার' বনাম 'ঙ', সাথে 'এ' বনাম 'অ্যা' |
বানানায়তন-৩ | হ্রস্ব স্বর না দীর্ঘ স্বর |
বানানায়তন- ২ | ও কি এল, ও কি এল না |
বানানায়তন ১ | ই-কার বনাম ঈ-কার |
-------------------------------------------------------------------
----------------------------
কুটুমবাড়ি
----------------------------
মন্তব্য
যদিও লেখার শেষে অন্যান্য লেখার লিংকগুলো আছে, তারপরেও বলবো, প্রতিটা লেখার ট্যাগেই 'বানানায়তন' শব্দটা যোগ করে দেন। এই j, k. g, z- ক্লিক মেরে বাকি লেখার কানাকড়িও মিলবে না। ট্যাগের সুযোগটারে কাজে লাগাই, আসেন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হুম, ট্যাগের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। তা, লেখার ব্যাপারে কিছু বললেন না যে?
কুটুমবাড়ি
জার্মান সেকশনে কিছু গিয়ানজাম পেলাম।
Herz (heart) > হার্টস্ হবে হ্যার্টস। আরোও সঠিক করে হ্যারৎস।
Baron Munchausen > ব্যারন মুনশাউজেন হবে বারন মুনশাউজেন।
ধুগার সাথে একমত। ট্যাগ ব্যবহারে যত্ন আবশ্যক।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
পড়া, মন্তব্য এবং সংশোধনীর জন্য ধন্যবাদ। ট্যাগ ব্যবহারে আরও সতর্ক হব আশা করছি।
কুটুমবাড়ি
লেখা শেষ হলে একটা ইবুক করে ফেলেন।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ধন্যবাদ, হাসিব ভাই। ই-বুক করার ইচ্ছা আমারও, দেখি লেখা শেষ করি আগে...
কুটুমবাড়ি
খাইছে, কিছু দূর পড়ার পর মাথা চক্কর খাইতে লাগলো। অত্যন্ত জরুরী ও দরকারি বিষয় তাতে সন্দেহ নাই।
সৈয়দ আখতারুজ্জামান ভাই,
যতটুকু পড়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ। ইয়ে... বাকিটা পরেও পড়তে পারেন, যদি আপনার ইচ্ছে হয় আর কি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন।
কুটুমবাড়ি
সৈয়দ আখতারুজ্জামান ভাই,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
কুটুমবাড়ি
বানানায়তনের পোস্ট কিনা তাই প্রেজেন্ট পিলিজ (নাকি পিলিজ় ) করে গেলুম।
জ় কীভাবে টাইপ করতে হয় সেটাই যে জানিনে, ভাই। শিখিয়ে দেন্না...
কুটুমবাড়ি
দেশী টিভি চ্যানেল গুলিতে প্রায়ই দেখা যায় রিপোর্টাররা 'জ' কে Z উচ্চারন করেন, কিছুতেই J বলতে পারেন না। জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমে আঞ্চলিক উচ্চারনের এই সমস্যাটা খুব বিরক্ত করে আমাকে। বিটিভিতে এইসব বিষয়ে একসময় খুব যত্ন নেয়া হত, কিন্তু প্রাইভেট চ্যানেল আসার পর সে তাগিদটা মনে হয় সবখানেই পড়ে গেছে।
মনমাঝি ভাই, আপনি বলেছেন,
বাংলায় শুধু জ-ধ্বনিই আছে। কেন যে আমরা এ কথাটি ভুলে যাই। যতই বাংলায় য লেখা হোক না কেন উচ্চারণে তা সব সময়ই জ। যিনি বা যত এর মতো বাংলা শব্দ, যক্ষ বা যম এর মতো সংস্কৃত শব্দ, আযান বা রমযান এর মতো আরবি শব্দও আমরা য দিয়ে লিখি এবং জ উচ্চারণ করি। মজার বিষয় হচ্ছে এই য কিন্তু ইংরেজি ভাষাতেও আছে। ইংরেজি ভাষায় Z এর উচ্চারণ আরবি ভাষার 'যে', 'যাল', 'যোয়াদ', 'যোই' এর মতো। আরবি ভাষার এমন অনেক শব্দই বাংলা গ্রহণ করে ফেলেছে যার মধ্যে এসব হরফ আছে। যে কারণে এসব শব্দে য ব্যবহার অসঙ্গতও নয়। যেমন আযান, ওযু, কাযা, নামায, মুয়াযযিন, যোহর, রমযান ইত্যাদি। আবার বিপরীতক্রমে জাদু শব্দটির মধ্যে আরবি ভাষার 'জিম' হরফটি আছে যার উচ্চারণ বাংলায় হয় জ। এত সব সূক্ষ্ণ বাছবিচার সাধারণ পাঠকের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই এবং বাংলায় মূলত শুধু জ ধ্বনি থাকাতেই একাডেমী সমস্ত বিদেশি শব্দে জ ব্যবহার করতে বলেছে। ২০১২ সাল থেকে পাঠ্যপুস্তকেও এই নিয়ম অনুসরণ করা হবে। ঠিক একইভাবে Zoo শব্দের উচ্চারণ বাংলায় হওয়া উচিত যু। কিন্তু তা আমরা লিখি না, দরকারও নাই। কেউ যদি যু উচ্চারণ করতে পারি তো ভালো, নয়তো জু উচ্চারণই যথেষ্ট। এতে বাঙালি কান অভ্যস্ত, তাই বিরক্তিবোধর সম্ভাবনা নাই। কিন্তু বিপত্তি বাধে ইংরেজি ভাষার J নিয়ে, যার উচ্চারণ হুবহু বাংলার জ-য়ের মতো। ইংরেজি ভাষার Z কে জ বললেও অসুবিধা নাই, কিন্তু J কে য উচ্চারণ করলেই চিত্তির। খট করে এসে আমাদের কানের মধ্যে লাগে। তাই আপনার বিরক্তির কারণ বুঝতে পারছি। ধন্যবাদ বিষয়টি শেয়ার করার জন্য।
কুটুমবাড়ি
দরকারি পোস্ট... অশেষ ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই,
মন্তব্যের জন্য সবিশেষ কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকুন।
কুটুমবাড়ি
নতুন মন্তব্য করুন