শাহেদ সেলিম
পর্ব-৫
নাদিয়ার মনটা আজকে সকাল থেকেই আনন্দে ঝলমল করছে! আজকে ওর সবচাইতে প্রিয় বান্ধবী তনিমার জন্মদিন! একেবারে প্রানের বন্ধু বলতে যা বোঝায়, তনিমা নাদিয়ার জীবনে ঠিক তাই।ওদের জীবনের এমন খুব কম ঘটনাই আছে যা একে অন্যের অজানা! তনিমা কয়েকদিন আগেই দেশে এসেছে। বিয়ের পর এই প্রথম বাংলাদেশে আসলো। ওর বিয়ে হয়েছে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জামানের সাথে। সম্পর্কে ওরা কাজিন। প্রেম ছিল দীর্ঘ সাত বছর। বিয়ের পরপরই তনিমা অস্ট্রেলিয়ায় চলে যায়। তার মানে প্রায় চার বছর পরে নাদিয়ার আজকে তনিমার সাথে দেখা হবে! সময় কত দ্রুতই না চলে যায়!
নাদিয়ার ভাগ্যও আজকে অনেক ভালো বলতে হবে। আজকে শুক্রবার। অফিস বন্ধ। সারাটা দিন তনিমার সাথে কাটানো যাবে। আর তনিমাও এখন ঢাকাতেই আছে। ও এই কয়দিন চিটাগাং এ ছিল। ওখানেই ওর শ্বশুর বাড়ী।ঢাকায় এসেছে পরশু। কালকে রাতেই অনেকক্ষন ফোনে কথা বলল তনিমার সাথে। তনিমা বললো, ‘কালকে সারাদিন তুই আমার এখানে থাকবি। বিকালে একসাথে ঘুরতে বের হবো। আমরা আগে যেখানে যেখানে আড্ডা দিতাম, সে সব যায়গায় যাবো। স্মৃতিচারন আরকি! বুঝলি? খবরদার দেরি করবিনা। তাড়াতাড়ি চলে আসবি।’
নাদিয়া হাসতে হাসতে বললো, ‘তোর বর আবার রাগ করবেনাতো?’
শুনে তনিমা বললো, ‘ঢং করবিনা,একটা চড় খাবি বুঝলি। জামানকে তুই চিনিস না?’
নাদিয়া হা হা করে হেসে বললো, ‘ চিনি, তোর চাইতে ভালো করে চিনি।’
অনেকক্ষন কথা হল দুইজনের! কত স্মৃতি! কত ঘটনা!
সকাল সকাল নাদিয়া ওর মা’কে বলে গাড়িটা নিয়ে সোজা শাহবাগ চলে গেলো।ছুটির দিনের সকাল। রাস্তায় ভীড় তুলনামূলকভাবে কম। তাই সাহস করে নিজেই ড্রাইভ করে আসলো। যদিও মা একটু আপত্তি করছিল। ওর হাতে একা গাড়ি ছাড়তে সাহস পাননা।
শাহবাগের মোড় থেকে ফুল কিনবে নাদিয়া। নানা রকমের ফুল। অনেক অনেক ফুল! ফুল নাদিয়ার অনেক প্রিয়। প্রিয় বন্ধুকে প্রিয় উপহার দিয়ে খুশী করতে চায় সে! তবে নাদিয়া চেয়েছিল ওদের বারান্দার ফুলের বাগান থেকে কিছু ফুল নিবে। কিন্তু মায়ের কড়া নিষেধ, একটা ফুলও সেখান থেকে ছেড়া যাবেনা। এ নিয়ে হাল্কা কথা কাটাকাটিও হয়েছে মায়ের সাথে।
কানাডা থেকে ফিরে মা’র মেজাজটা কেমন যেন তিরিক্ষি হয়ে গেছে। সারাদিনই কারনে-অকারনে চিৎকার চেঁচামেচি করেন। ওখানে আবার কি হয়েছে কে জানে। নাদিয়া শুনেছিল যে ভাইয়া আর ভাবীর মাঝে কি নিয়ে যেন মনমালিন্য চলছে। আবার নতুন কোনো গোলমাল কিনা কে জানে। দিনে দিনে মানুষের জীবনে জটিলতা যেভাবে বাড়ছে তাতে করে ভাইয়া আর ভাবীর মাঝখানে জটিল কোনো ঝামেলা তৈরি হওয়াটা মোটেও বিচিত্র কোনো বিষয় নয়!
শাহবাগের মোড়ে গাড়ি পার্ক করে নাদিয়া ফুল পছন্দ করতে শুরু করলো। আজকে সে তার মন-প্রাণ উজার করে প্রিয় বন্ধুর জন্য ফুল কিনবে!
‘আরে নাদিয়া! তুমি এখানে? কেমন আছো?’
নাদিয়া তখন আনমনে ফুলের স্বর্গীয় সৌন্দর্য উপভোগ করছিল! কথাটা শুনে চমকে প্রশ্নকর্তার দিকে তাকালো নাদিয়া।
মধ্যবয়সী অসম্ভব ফর্সা একটা মানুষ ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে! নাদিয়া প্রথমে ঠিক চিনতে পারলোনা। হঠাৎ ওর চোখ পড়লো লোকটির কপালের বাম দিকের লম্বা কাটা দাগটির দিকে! সাথে সাথেই নাদিয়া চিনতে পারলো তাকে! ঐ কাটা দাগটি তার মনে যে গভীর দাগ কেটে গিয়েছিল তাকে এত সহজে ভোলা কি সম্ভব? লোকটাকে দেখে নাদিয়ার মনের ভেতরে তোলপাড় শুরু হয়ে গেল। তীব্র ঘৃনায় ওর সমস্ত মন একেবারে বিষিয়ে উঠলো।
‘স্যার, কেমন আছেন?’ – নাদিয়া অবাক হবার ভান করে জিজ্ঞ্যাসা করলো।
‘যাক চিনতে পেরেছো তাহলে! আমিতো ভেবেছিলাম চিনতেই পারবেনা।’
‘না না কি যে বলেন স্যার। চিনতে পারবোনা কেন? আপনি এত সকালে এখানে কি করছেন?’
স্যার একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘তার আগে তুমি বল এই সাতসকালে ফুল কিনছো কার জন্য?’
নাদিয়া বেশ স্বাভাবিকভাবেই বললো, ‘আজকে আমার বান্ধবীর জন্মদিন। ঐ যে তনিমা, আপনার কাছেও তো এক মাস পড়েছিল। ওর জন্যই ফুল কিনছি। ওকে গিফট করবো বলে।’
‘বল কি? আজকালকার ছেলে-মেয়েরা এখনো ফুল দেয় নাকি উপহার হিসেবে? আমিতো ভেবেছিলাম এসব চল অনেক আগেই উঠে গেছে।’
নাদিয়া সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বললো, ‘স্যার বললেননা কি জন্য এসেছেন?’
স্যার একটু লাজুক হেসে বললেন, ‘এই মানে, আজকে আমার বিয়ে! ঐ যে বাম দিকে যে মেরুন কালারের টয়োটা প্রিমিওটা দেখছ, আমার বিয়ের গাড়ি! বড় আপার। বিয়ের গাড়ি সাজাতেই এখানে আসা। তেমন কেউ না থাকায় নিজেকেই আসতে হলো আরকি!’ – বলতে বলতে স্যারের মুখটা কেমন যেন লজ্জায় লাল হয়ে গেল!
‘কনগ্র্যাচুলেশন স্যার’- নাদিয়া হেসে বলল।
স্যার আবার বলতে শুরু করলেন, ‘বেশ ভালো সময়েই তোমার সাথে দেখা হয়ে গেলো। চলে আসোনা সন্ধ্যায়। শাহীন হলে বিয়ে। আসলে তোমার ভাবী অনেক খুশী হবে। আমিতো প্রায় তোমাদের সবার গল্প করি ওর কাছে।’
স্যার গড়গড় করে বলে যেতে লাগলেন, ‘আসলে আমার আগের স্টুডেন্টদের কারও ঠিকানাই নাই আমার কাছে। থাকলে সবাইকেই বলতাম।’
এরপর আরও কিছুক্ষন একথা সেকথা বলে স্যার বিদায় নিল ওর কাছ থেকে। স্যার এরপর বিয়ের গাড়ি সাজাতে চলে গেল। নাদিয়া দূরে দাঁড়িয়ে তা দেখলো।
নাদিয়ার ঝলমলে আনন্দের সকালটাতে হঠাৎ করেই যেন রাজ্যের বিষাদ এসে ভর করলো! আজকে স্যারের বিয়ে! এমন জঘন্য একটা মানুষ আবার বিয়েও করে? এইসব মানুষের আবার বিয়েও হয়! নববধূর জন্য নাদিয়ার কেমন যেন একটু মায়া লাগলো! সেই মেয়েটি কি জানে কি রকম একটা লম্পটের সাথে সংসার শুরু করতে যাচ্ছে সে?
স্যারের আসল নাম রেজাউল ইসলাম। আড়ালে ওরা ডাকতো ‘চ্যাংড়া স্যার’ বলে! স্যার সেই সময় এত শুকনা ছিল যে, ইউনিভার্সিটি পড়লেও তাকে ছোকরা ছোকরা লাগতো। সেই জন্যই এই নামকরন!
তখন নাদিয়া ক্লাস সেভেনে পড়ে। ওর গৃহশিক্ষক ছিল এই রেজা স্যার। শিক্ষক তো নয় যেন শিক্ষক নামের কলঙ্ক! এই রেজা স্যার-ই একদিন ওকে প্রেমপত্র দেয়। নাদিয়া হুমায়ূন আহমেদের লেখার খুব ভক্ত ছিল। স্যার ওকে হুমায়ূন আহমেদের লেখা বই পড়তে দিত। একটা বইয়ের ভেতরে ঐ চিঠিটা ছিল। তখন কতই বা বয়স ওর। এসবের কিইবা বোঝে সে? আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে এই যে, এর আগ পর্যন্ত স্যার যথেষ্ট ভদ্র ছিলেন। কিন্তু ঐ চিঠিটা দেয়ার পর থেকে কেমন যেন তার আচরন বদলে যেতে শুরু করলো! বহুরুপী একটা শয়তান। তবে স্যার ঐ চিঠির ব্যাপারে পরে আর কিছু জিজ্ঞেস করেনি ওকে। সেও আরেক রহস্য! চিঠির ব্যাপারে সবকিছু তেমন স্পষ্টভাবে মনে নেই নাদিয়ার। তবে এতটুকু মনে আছে যে ও প্রচন্ড ভয় পেয়েছিল। কি করবে, কাকে বলবে কোনোকিছুই বুঝে উঠতে পারছিলনা। তখন তনিমাই ছিল ওর একমাত্র ভরসা।
আরেকদিন রেজা স্যার ওকে একটা অ্যাডাল্ট জোকসের বই পড়তে দিল। বলল, ‘পড়ে খুব মজা পাবা। একটু অন্যরকম। তবে যেহেতু বড় হচ্ছো, এখন থেকেই সবকিছু ভালো করে জানা দরকার।’
নাদিয়া একেবারে থতমত খেয়ে গেল। ভয়ও পেলো খুব। মাকে বলবে কি বলবেনা তাই ভাবতে থাকলো। কলেজ জীবনের আগ পর্যন্ত মাকে ও খুব ভয় পেতো। মার সাথে তেমন কিছু শেয়ার করতোনা।
আবারও ওর একমাত্র কাছের বন্ধু তনিমার সাথে শলা-পরামর্শ! কি করা যায়! স্যারের হাত থেকে মুক্তি কিভাবে পাওয়া যায়? হুট করে যে মা’কে বলবে যে ও আর এই স্যারের কাছে পড়তে চায়না সেটা সম্ভব না। কারন স্যার পড়ায় ভালো। ওর রেজাল্টও ভালো হচ্ছিল। আর বাইরে বাইরে সে অনেক ভদ্র! মা’ও প্রথম প্রথম একটু নজর রাখতেন। মেয়ে বড় হচ্ছে। চোখকান খোলা রাখা ভালো। কিন্তু স্যারের অমায়িক ব্যবহার দেখে মায়ের মতো কড়া মানুষও একেবারে মোমের মত গলে গেলো!
সেই সুযোগটাই নিল ভালো মানুষরুপী সেই পশুটা! নাদিয়া যখন ভাবছে মা’কে কিভাবে বলা যায় আর কিভাবে এই স্যারকে বাদ দেয়া যায়, সেরকম একদিনে নাদিয়ার স্পষ্ট মনে আছে সেদিন ভ্যাবসা একটা গরম পড়েছিল। কেমন যেন দম বন্ধ করা একটা বদ্ধ পরিবেশ। ও সেদিন পড়তে চাচ্ছিলনা। আগে বেশ কয়েকদিন শরীর খারাপের অজুহাতে পড়া বাদ যাওয়ায় মা জোড় করে পড়তে পাঠালো। আর সেদিনই ওর জীবনে এমন একটা জঘন্য ঘটনা ঘটে গেলো যা ও হাজার চেষ্টা করেও মন থেকে সরাতে পারেনি। কোনোদিন পারবেওনা। সেই জঘন্য ঘটনা ওর কিশোরী মনে যেই গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছিল, সেখান থেকে আজও এতদিন পরেও অনবরত
রক্তক্ষরন হয়।
নাদিয়াকে পড়া বুঝানোর ভান করে ওর কাছাকাছি এসে সরাসরি ওর বুকে হাত দিল সেই লম্পটটা। এমন একটা কাজ যে স্যার করতে পারেন তা ওর কল্পনাতেও ছিলনা! নাদিয়া ঘটনার আকস্মিকতায় একেবারে হতভম্ব হয়ে গেল! সেই মুহূর্তেই ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে গেল। মাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো নাদিয়া।
এর পরের সব ঘটনা ওর মনে নাই। মা স্যারকে কি বলেছিল তাও ও যানেনা। যানতে চাওয়া হয়নি। নাদিয়ার বাবা কিংবা ভাই ব্যাপারটা জেনেছিল কিনা তাও নাদিয়া জানেনা।
মা’ও আর ওকে এ ব্যাপারে কিছু বলেনি। ঐ ঘটনার পর আর স্যার ওকে পড়াতে আসেনি। এখন নাদিয়ার শুধু মনে হয় সেটা একটা দুঃস্বপ্ন ছিল। ভয়ংকর একটা দুঃস্বপ্ন!
সেই রাতে অনেক কেঁদেছিল নাদিয়া। সারারাত মা ওর পাশে বসে ছিল। মাকে সব খুলে বলেছিল সে। এরপর আর স্যারের সাথে দেখা হয়নি ওর।
মায়ের সেই পাথরের মত মুখটা নাদিয়ার মনে আছে। মা’ও প্রচন্ড শোকড্ হয়েছিলেন। তিনি কল্পনাও করতে পারেননি যে তার মেয়ের জীবনে এত কম বয়সে এরকম একটা মারাত্মক মানুষিক আঘাত আসবে। তাও আবার এমন একজনের কাছ থেকে যাকে কিনা তিনি নিজের আপন ছেলের মত স্নেহ করতেন।
সেই ধূর্ত শয়তানটা এখন কত পরিপাটি ভদ্র সাজে! নাদিয়া ভেবে অবাক হয়! নাদিয়ার ইচ্ছা হলো স্যারের গাড়িটা আগুন জ্বালিয়ে একেবারে ছাড়খার করে দিতে।
ফুল কিনে তাড়াতাড়ি নাদিয়া নিজের গাড়িতে গিয়ে বসলো। স্যার তখনও তার বিয়ের গাড়ি সাজানোতে ব্যস্ত। নাদিয়া ইচ্ছা করেই কিছু না বলেই চলে আসলো। এই পশুটার সাথে আর একটি কথাও বলার মত মনের অবস্থা ওর নেই।
গাড়ি স্টার্ট দিয়ে নাদিয়া লক্ষ্য করলো ওর হাত-পা কাঁপছে। মনের অজান্তেই দু’চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। যেন সেই অবুঝ কিশোরী মেয়েটি এসে ভর করেছে ওর উপরে! চোখ মুছতে মুছতে নাদিয়া গাড়ি ড্রাইভ করছিল।
ওর ভেতরে যে চরম অপমানের জ্বালা এতদিন সুপ্তাবস্থায় ছিল, রেজা স্যারকে দেখে যেন ওর মনে তীব্র যন্ত্রনার সুপ্ত আগ্নেয়গিরিতে জীবন্ত অগ্নুৎপাত শুরু হয়ে গেল।
এমন সময় নাদিয়ার মোবাইল বেজে উঠলো। পরপর বেশ কয়েকবার। নাদিয়া ধরলোনা। কান্নায় ওর সমস্ত শরীর যেন ভেঙ্গে আসছে। এত কষ্ট জমা ছিল ওর এই মনে। যখন ও বড় হয়ে সবকিছু বুঝতে শিখেছে, তখন ও উপলব্ধি করেছিল যে সেই সেভেনে পড়বার সময় মানুষিকভাবে ধর্ষিত হয়েছিল সে।
নাদিয়ার গাড়ি এখন জ্যামে আটকে আছে। একটা বাচ্চা ছেলে ভিক্ষা চাইতে এসে নাদিয়াকে এভাবে কাঁদতে দেখে ওর দিকে হা করে তাকিয়ে থাকলো!
আবার মোবাইল বেজে উঠলো। নাদিয়ার প্রিয় রিংটোন-‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি---’।
‘-হ্যালো।’
-‘নাদিয়া, কি ব্যাপার মোবাইল ধরোনা কেনো? আমি হাসান। শোনো, আমি আজকে রাতে দুইদিনের জন্য রাঙ্গামাটি যাচ্ছি। তাড়াহুড়োয় তোমাকে বলা হয়নি। তোমার জন্য কি আনবো বলতো?’ – হর হর করে বলে গেল হাসান।
-‘আমার জন্য কিচ্ছু আনতে হবেনা। আর আপনি রাঙ্গামাটি যান আর জাহান্নামেই যান, আমাকে জানাচ্ছেন কেন?’ – কান্না ভেজা কন্ঠে কথাগুলো বলে মোবাইলটা বন্ধ করে দিল নাদিয়া।
ও প্রান্তে হাসান একেবারে হতভম্ব হয়ে গেল! নাদিয়াতো কখোনো ওর সাথে এভাবে কথা বলেনা! আর গলাটাও কেমন ভারী শোনালো। ব্যাপারটা কি! হাসান বেশ চিন্তায় পড়ে গেল। অনেকবার মোবাইলে চেষ্টা করলো। কিন্তু নাদিয়ার মোবাইল বন্ধ।
মনটা অসম্ভব রকমের খারাপ হয়ে গেল হাসানের। নাদিয়ার জন্য ওর মনে কেমন যেন একটা অদ্ভূত অনুভূতি কাজ করছে। এর মানে কি তা সে জানেনা। নাদিয়ার সাথে খুব দেখা করতে ইচ্ছা করছে হাসানের।জানতে ইচ্ছা করছে সবকিছু। মনটা খুব অস্থির লাগছে হাসানের।
হাসান আসিফ ভাইয়ের মোবাইলে ফোন দিল। আসিফ ভাইয়ের মোবাইলও বন্ধ। ব্যাপারটা কি? হাসান মনে মনে ভাবলো।
একবার চিন্তা করলো সরাসরি নাদিয়ার বাসায় উপস্থিত হবে কিনা। পরমুহূর্তেই তা নাকচ করে দিল। এভাবে হুট করে যাওয়াটা ঠিক হবেনা।
হাসানের মনটা কেমন যেন উদাস হয়ে গেল। ছাদে শীতল পাটিতে শুয়ে আকাশ দেখতে দেখতে অনেক কিছু ভাবতে লাগলো সে।
নাদিয়া একদিন বলেছিল, ‘সত্যিকারের ভালোবাসা আকাশের মতোই বিশাল।’
হাসান আকাশের দিকে তাকিয়ে নাদিয়ার কথা ভাবতে লাগলো।
(চলবে...)
২২ নভেম্বর,২০১০
মন্তব্য
ভালোই চলছে শাহেদ ভাই। বানান গুলো একটু দেখে দেবেন প্লিজ? কেমন যেন খট করে চোখে লাগে। ভালো থাকবেন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ মানিক ভাই। নিয়মিত পড়ছেন জেনে খুব খুশী হলাম।
বানান ভুলের ব্যাপারটি অনিচ্ছাকৃত
আশা করছি আর ভুল হবেনা
"মানুষিক" টা সম্ভবত "মানসিক" হবে। তাই না?
"বললো" হয়তো হবে "বলল"।
আর কোনো বড় ভুল এই মুহূর্তে আমার এই আনাড়ি চোখে ধরা পড়ছেনা
দু'একটা ভুল যদি উদাহরন হিসেবে একটু উল্লেখ করতেন তাহলে খুব উপকার হত।
আপনিও ভালো থাকবেন।
শাহেদ সেলিম
লেখা ঝরঝরে হলেও বানান ভুল হলে পড়া একটু হোঁচট তো খায়ই। ব্যাপার না, লিখতে লিখতে আর চেষ্টা থাকলে শুধরে নেবেন। আমার আনাড়ি চোখে যেগুলো লাগলো, সেগুলো দিয়ে দিলাম। আর কয়েকটায় খটকা থাকলেও নিশ্চিত না বলে দিলাম না। আমার নিজেরও একটা ডিকশনারি আনতেই হবে।
প্রান>প্রাণ
বাড়ী>বাড়ি
স্মৃতিচারন>স্মৃতিচারণ
মা"কে>মাকে
ছেড়া>ছেঁড়া
মা'র>মার
মনমালিন্য>মনোমালিন্য
নামকরন>নামকরণ
আচরন>আচরণ
ভ্যাবসা>ভ্যাপসা
রক্তক্ষরন>রক্তক্ষরণ
যানেনা> জানে না
শোকড>শকড
মানুষিক>মানসিক
কখোনো>কখনো
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
@টিউলিপ, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভুলগুলো ধরিয়ে দেবার জন্য।
বুঝতে পারছি যে আমার "ন" আর "ণ" তে ভয়াবহ সমস্যা আছে
ও-কারেও সমস্যা আছে
ভালো থাকবেন।
জব্বর হচ্ছে। হ্যাঁ, বানানগুলো একটু ঠিক করে দিলেই চলবে। শুধু চলবে না, দৌড়াবে।
আখতার ভাই, অনেক অনেক ধন্যবাদ এত আশা জাগানিয়া মন্তব্য করবার জন্য
আপনার আর মানিক ভাইয়ের মন্তব্য দেখে আমারতো জেট প্লেনের গতিতে উড়তে ইচ্ছা করছে!
ভালো থাকবেন।
শাহেদ সেলিম
ভাই, এই পর্বের একটা অংশ নিয়া একটু সমালোচনা করি? তার আগে একটা ডিস্ক্লেইমার দিয়া লই –
১) আমি অকপটে, কমপ্লিট হোশ অউর হাওয়াজ মে, স্বীকার করছি যে, আমি নিজ়ে ফিকশনাল লিখা লিখতে পারি না। দূই একবার চেষ্টা ক্ইরা দেখছি, লিখা শেষ কইরা তারপর বমি করতে যামু, না আগেই যামু এই ব্যাপারে কনফিউসড হয়া সব বারেই লিখা বন্ধ কইরা দিছি।
২) আমি নিজ়ে সচলায়তন এ এখন পর্যন্ত একটা লিখাও পোস্ট করি নাই। খালি দুই-একটা মন্তব্য করার বাইরে আমার তেমন কোন অ্যাক্টিভিটি এখন পর্যন্ত নাই। তাই আমার এই মন্তব্য কে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই, এই আশাই করি।
৩) এই গল্পে এখন পর্যন্ত ইন্ট্রোডিউসড সব চরিত্রের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। আমিও আর সবার মতই চরিত্রগূলোর ডেভেলপমেণ্ট এর দিকে তাকিয়ে আছি।
গল্প উপন্যাস এ এক ধরনের কাহিনী খন্ড ব্যবহার করা হয়। এই কাহিনী খন্ড গুলোকে আমার অপ্রযোজনীয় স্থান দখলকারী বলে মনে হয়। প্যাকিং বাক্সের ভিতর আসল জ়িনিষপত্র যাতে নড়চড়া না করতে পারে সেজন্য এক ধরনের ঝুরা কাগজ দিয়ে জ়িনিষটার চারপাশে গ্যাটিস দেয়া হয়। কাহিনীখন্ড গুলোকে আমার অনেকটা সেই রকম বলে মনে হয়। গল্প উপন্যাস এ এগুলোকে ব্যাবহার করার পিছনে একটাই মাত্র কারন আমি খুজে পাই, কাহিনী এর দৈর্ঘ্য বাড়ানো। কেনো যেনো মনে হয়, রচনার এই সময়টাই আসলে লেখকের মাথায় কিছু ছিলো না। কিন্তু তার লিখে যেতে ইচ্ছা করছিলো। তাই চিন্তা না খাটিয়ে লিখে যাওয়া। কাহিণীখন্ড গুলোকে ক্লিশে ছাড়া কিছু মনে হয় না। এই পর্বে প্রাইভেট টিউটর রেজা ভাই এর কাহিনীতে আগমন ও নির্গমন সেরকম ই একটা গ্যাটিস মনে হলো। রেজ়া ভাই যেভাবে আসলেন আর চলে গেলেন, তাতে মনে হয় না, এই পর্বের বাইরে মূল কাহিনীতে তার আর কোন কন্ট্রিবিউশন থাকবে। মাঝখান দিয়া উবদা ঝাড়ি খায়া ব্যাক্কল বনলেন হাসান ভাই।
এই পর্বের বাকি অংশটুকু মুখরোচক।
-মেফিস্টো
@মেফিস্টো, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এমন গঠনমূলক সমালোচনা আসলেই অনেক অনুপ্রেরণা দেয় আমার মত মূর্খ
লেখকদের।
আসলে উপন্যাসের পরিধি যেহেতু বড়, তাই কাহিনী দীর্ঘায়িত হওয়াটা স্বাভাবিক।
একটা-দুইটা বাক্যকেও টেনেটুনে রাবারের মত বড় করে ফেলা যায়
রেজা স্যারের ব্যাপারটা এখনও নিশ্চিত না। সে আবার কাহিনীতে ফিরে আসলেও আসতে পারে।
আর আপনিও নিয়মিত লিখুন।
অখাদ্য-কুখাদ্য যাই কিছু একটা হোক তবু লিখুন।
আমার মত আনাড়ি যদি সাহস করতে পারে তবে আপনি কেন পারবেননা?
আপনার আরও কঠিন সমালোচনা, মন্তব্য আর আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম
ভালো থাকবেন।
বানান সংক্রান্ত ছোট্ট একটা টিপস :
১. অভ্র ৫.০(বেটা) ভার্সন ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন।
২. Ctrl+F7 প্রেস করুন (অভ্র প্যাড ওপেন হবে)
৩. এই প্যাডে লিখে F7 প্রেস করুন
সব পরিষ্কার!!
আমার বিলুপ্ত হৃদয়, আমার মৃত চোখ, আমার বিলীন স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা
love the life you live. live the life you love.
@তারাপ কোয়াস, অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ডাউনলোড করছি কিন্তু Ctrl+F7 প্রেস করলে অভ্র প্যাড ওপেন হচ্ছেনা
এখন তাহলে কি করবো?
স্পেল চেকিং কিভাবে করবো? একটু বিস্তারিতভাবে বললে ভালো হত
ভালো থাকবেন।
আপনি তাহলে অভ্রবারের সেটিংস্ এ ক্লিক করে 'স্পেল চেকার' চালু করুন। আর অভ্র'র স্পেল চেকিং খুবই সহজ, একদম মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের মতই। ধন্যবাদ।
আমার বিলুপ্ত হৃদয়, আমার মৃত চোখ, আমার বিলীন স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা
love the life you live. live the life you love.
দুঃখিত, বুঝতে পারছিনা। 'স্পেল চেকার' নামে কোনো অপশন চোখে পড়ছেনা।
আরেক বার একটু বুঝিয়ে বলবেন কি?
আপনাকে বারবার বিরক্ত করার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দূঃখিত।
আপনি খুব সম্ভবত অভ্রর পুরাতন ভার্সন ডাউনলোড করেছেন। এখান থেকে নতুন ভার্সনটি ডাউনলোড করতে পারেন। এরপরও কোনও সমস্যা থাকলে আপনার পিসির বিস্তারিত বিবরণের সাথে সমস্যার বর্ণনা দিয়ে ওমিক্রন ল্যাবে মেইল করুন।
আমার বিলুপ্ত হৃদয়, আমার মৃত চোখ, আমার বিলীন স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা
love the life you live. live the life you love.
বস, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এখন লেখাটা খুব সহজ মনে হচ্ছে। :)
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার আর কখনো কোনো বানান ভুল হবেনা!
কি মজা!!!
নতুন মন্তব্য করুন