জহিরুল ইসলাম নাদিম
---------------------------------------------
ছোট বেলায় একটা নেশা খুব ভোগাত আমাকে।
ঘুড়ি ওড়ানোর নেশা।
কত বিষণ্ণ দুপুর নাটাইয়ের বক্রতায় জড়িয়ে নিয়েছি
তার ইয়ত্তা নেই।
ছাদ থেকে ছাদে ঘুড়ির গন্ধ শুঁকে শুঁকে লাফিয়ে বেড়িয়েছি
প্রায়শঃই বিপজ্জনক দূরত্ব অবলীলায় পার হয়ে গেছি দীর্ঘ লম্ফের আদলে
পরোয়া করিনি কোনো।
ভেবেছি অই এক টাকার ঘুড়িটাই হয়তো জীবনের শেষ কথা।
ধোলাই খালটি তখনো মানুষ হয়ে ওঠেনি।
খাল বলতে যা বোঝায় তাও ছিল না আসলে।
আবর্জনায় পোরা দুলাই নদীর শেষ স্মৃতি চিহ্ন।
তারই অনুদৈর্ঘ্যে দাঁড়িয়ে হল্লা করতে করতে
সাদা সুতোয় রঙিন মাঞ্জা দিয়েছি এন্তার।
সুতোয় কাচের গুড়ো লাগিয়ে দিয়েছি তরবারীর জেল্লা আনতে।
সাকরাইনের দিনে সারাদিন দুরন্তপনায় সময় কেটেছে
আকাশে বর্ণিল ঘুড়ির আমন্ত্রণ, ঘরে পিঠে-পুলির।
কার ঘুড়ি কত ওপরে ওঠানো যায় তার একটা কঠিন পাল্লা চলত।
আর চলত কাটাকাটি।
কত ঘুড়িঅলার মনোকষ্টের যে কারণ হয়েছি!
বাতাস পেয়ে আমার ঘুড়ির আস্তিন ফুলে ফুলে উঠছে
সুলতানের আঁকা পেশিবহুল পুরুষের বাহুর মতো- এখনো চোখে ভাসে
কখনো দেখতাম নাটাই আর আমার কথা শুনছে না
ঘুড়িই তার প্রভু তখন। তার আদেশে কখনো সরীসৃপের মতো সরসর করে
সুতো বিমুক্ত করছে কখনোবা গুটিয়ে নিচ্ছে নিজের ভেতর।
এখন আর ঘুড়ি ওড়ানো হয়না
অবশ্য ঘুড়ির সাথে সম্পর্কটা চুকে যায়নি একদম
আমরা এখন নিজেরাই একেকটা ঘুড়ি
জীবন নাটাইয়ের সুতো ধার নিয়ে ক্রমশঃ দূর থেকে দূরে যাই
আচমকা সুতো ছিঁড়ে কোনদিন ভোকাট্টা হব কে জানে!
মন্তব্য
ভাল লাগলো।
অনন্ত আত্মা
ভালো লাগলো জেনে ভালো লাগলো!
জহিরুল ইসলাম নাদিম
এই অংশটুকু খুব ভালো লাগলো!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
জহিরুল ইসলাম নাদিম
ভালো লেগেছে।
নতুন মন্তব্য করুন