মাহফুজ খান
ভূমিকা ও আর্সেনিক দূষণের বর্তমান চিত্র:
বেঙ্গল বেসিনে গ্রউন্ডওয়াটারে সর্বপ্রথম আর্সেনিকের উপস্থিতি সনাক্ত করা হয় ১৯৭৮ সালে পশ্চিম বঙ্গে, এবং একই রাজ্যে সর্বপ্রথম আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী সনাক্ত করা হয় ১৯৮৩ সালে। এর ঠিক ১০ বছর পরে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে সর্বপ্রথম আর্সেনিকের উপস্থিতি নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে ১৯৯৮-৯৯ সালে ব্রিটিশ জিওলজিকেল সার্ভে এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় সারা দেশে (৩ পার্বত্য জেলা বাদে) গ্রাউন্ড ওয়াটারে আর্সেনিকের উপস্থিতি সনাক্ত করার জন্য একটি জরীপ পরিচালনা করে। সে জরীপে দেখা যায় যে বাংলাদেশের দক্ষিণ ভাগ এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চল সমূহ ব্যাপক ভাবে আর্সেনিক দূষিত (চিত্র-১)। এই জরীপের ফলে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট হয় যে গ্রাঊন্ডওয়াটারে আর্সেনিক মূলত অগভীর একুইফারেই সীমাবদ্ধ। এবং এর উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে বাংলাদেশ আর্সেনিক মিটিগেশন এন্ড ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট (BAMWSP) এর আওতায় ২০০১-২০০৩ সময়ে, মোট ২৭১ টি উপজেলায় ব্যাপক আকারে জরীপ চালানো হয়। ঐ দুই বছরে মোট ৪,৯৪৩,২২৫ টি নলকূপের পানি মাঠ পর্যায়ে টেস্ট কিটস্ দ্বারা পরীক্ষা করা হয় যার ২৯% ভাগই ৫০পিপিবির (<৫০ পিপিবি বাংলাদেশে আর্সেনিকের গ্রহণযোগ্য মাত্রা) অধিক আর্সেনিক দ্বারা দূষিত বলে সনাক্ত হয়। এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন যে আর্সেনিকের মাত্রা সাধারণ ভাবে দক্ষিনাঞ্চলে বেশী হলেও এর মাত্রা সব জায়গায় সমান না বরং অতি স্বল্পদুরত্বের মধ্যেও ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। হয়তো একটি গ্রামের কিছু অংশে আর্সেনিক আছে কিন্তু অন্য অংশ আর্সেনিক মুক্ত বা একটি উপজেলায় হয়তো ২ টি ইউনিয়ন আর্সেনিক দূষিত কিন্তু বাকি ইউনিয়ন সমূহ আর্সেনিক মুক্ত। উক্ত জরীপের তথ্য থেকে কোন একটি ইউনিয়নে পরীক্ষা কৃত মোট নলকূপের শতকরা যত ভাগ আর্সেনিক দূষিত, সেই সংখ্যাকে সেই ইউনিয়নের আর্সেনিকের মাত্রা হিসেবে ব্যবহার করা হয় (চিত্র -২)। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পরবর্তীতে ইউনিসেফের সহায়তায় বাকি ১৯২ টি উপজেলায় জরীপ চালায় এবং আরও মোট ১৪ টি উপজেলাকে আর্সেনিক উপদ্রুত অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করে। যদিও BAMWSP পরিচালিত জরীপটি ছিল একটি বিশাল প্রাপ্তি তথাপি জরীপ কৃত এলাকায় মোট নলকূপের একটি বিরাট অংশ অপরীক্ষিত থেকে যায়। সম্প্রতি ব্র্যাক পরিচালিত এক জরীপে দেখা যায় যে ৩০% পর্যন্ত নলকূপ BAMWSP জরীপের সময় অপরীক্ষিত ছিল। কাজেই দেশের একটি বিরাট অংশ এখনো জানতেই পারছেনা যে তারা যে পানিটি পান করছে সেটি নিরাপদ কিনা।
সরকারি হিসাব মতে বাংলাদেশে বর্তমানে ৩ কোটি মানুষ ৫০ পিপিবির বেশি মাত্রার আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করছে। সারাদেশে মোট ৪৬৬টি ইউনিয়নের ৮০% এর বেশী নলকূপ আর্সেনিক দূষিত (টেবিল-১)। ২০০৮-০৯ সালের হিসাব মতে (স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের অফিস) বাংলাদেশে বর্তমানে মোট আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৮,৩২০ জন, যার মধ্যে চাঁদপুর, কুমিল্লা, যশোর এবং পাবনা জেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগীর বসবাস।
নিরাপদ পানির উৎসসমুহঃ
গ্রাউন্ড ওয়াটারে আর্সেনিক সনাক্তকরণের পর থেকেই সারা দেশে আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়। এ সমস্যা সমাধান কল্পে সরকার, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, দাতা গোষ্টি, গবেষকবৃন্দ একযুগে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহের বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি/সমাধান বাতলায়।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহের প্রযুক্তি সমূহ হল-
১) গভীর নলকূপ: যেহেতু গভীর পানির স্তরটি আর্সেনিক মুক্ত তাই গভীর নলকূপ একটি অতি কার্যকর প্রযুক্তি।
২) বৃষ্টির পানি ব্যবহার: বর্ষাকালে খুবই কার্যকর প্রযুক্তি।
৩) পুকুর বালি ফিল্টার: পুকুরের পানি আর্সেনিক মুক্ত কাজেই ছাঁকনের মাধ্যমে পরিষ্কার করে পান করা হয়।
৪) পাতকূয়াঃ কুয়ার পানি আর্সেনিক মুক্ত, কাজেই কুয়ার ব্যবহার।
৫) আর্সেনিক আয়রন দূরীকরণ প্রক্রিয়া
৬) পাইপলাইনের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সাপ্লাই
৭) স্বল্প গভীরতায় নলকূপ স্থাপন (Shallow shrouded tube well)
৮) বিভিন্ন ধরনের আর্সেনিক দূরীকরণ ফিল্টারের ব্যবহার ইত্যাদি।
নিরাপদ পানি সরবরাহের বর্তমান চিত্র:
২০০৯ সালে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), আর্সেনিক আক্রান্ত মোট ৩০১টি উপজেলায় আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহের বর্তমান চিত্র পর্যবেক্ষণের জন্য একটি জরীপ পরিচালনা করে। শুধুমাত্র সরকারি এবং বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক স্থাপিত আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস সমূহকে এই জরীপের আওতায় নেয়া হয়। এযাবৎ বাংলাদেশে সর্বসাকুল্যে মোট ১ মিলিয়ন পাবলিক পানির উৎস স্থাপন করা হয়েছে যার ৭৮% ই অগভীর নলকূপ। বাদবাকি ২২% এর মধ্যে ১৮% গভীর নলকূপ এবং বাকি ৪% অন্যান্য উৎস (টেবিল-২)।
স্থাপিত ১ মিলিয়ন উৎসের মধ্যে বর্তমানে চালু আছে মোট ০.৭ মিলিয়ন উৎস, বাকি ০.৩ মিলিয়ন অকেজো, যার ৮৭% ই অগভীর নলকূপ। যেহেতু দেশের বিভিন্ন জায়গায় অগভীর পানির স্তরটি আর্সেনিকযুক্ত তাই এই বিরাট সংখ্যক অগভীর নলকূপ বর্তমানে অব্যবহারযোগ্য।
বর্তমানে চালু উৎসগুলোর মোট ৪.১ কোটি মানুষকে পানি সরবরাহের ক্ষমতা আছে, যা এই ৩০১ টি উপজেলার মোট জনসংখ্যার ৫৪%। এই ৩০১টি উপজেলার মোট ৪৬% (প্রায় ৪ কোটি) মানুষের জন্য কোন নিরাপদ পাবলিক পানির উৎস নেই। যেহেতু আর্সেনিকের মাত্রা সব এলাকায় সমান নয়, এবং অনেক এলাকাতেই অগভীর নলকূপের পানি আর্সেনিক নিরাপদ, তাই ব্যক্তি মালিকানাধীন নিরাপদ পানির উৎস সমূহকে বিবেচনায় আনলে দেখা যায় যে সারাদেশে মোট প্রায় ২ কোটি মানুষের সত্যিকার অর্থে কোনরূপ নিরাপদ পানির উৎস নেই। চিত্র-৩ এ উপজেলা ওয়ারী নিরাপদ পানি বঞ্চিত মানুষের সংখ্যার একটি মানচিত্র দেওয়া হল।
এর জন্য যেমন সরকারি উৎস সমূহের অপ্রতুলতা দায়ী ঠিক তেমনি এর বণ্টন প্রক্রিয়াও দায়ী।
এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে এই নিরাপদ পানির উৎস সমূহের আবার চাহিদা অনুযায়ী বণ্টন হয়নি। যে সকল এলাকায় আর্সেনিকের মাত্রা বেশী (>=৮০%) সেই সকল এলাকায় সরকারি পানি সরবরাহের প্রয়োজন সর্বাধিক হলেও প্রকৃতপক্ষে তেমনটি না করে সব এলাকায় সমান ভাবে উৎস সমূহ বণ্টন করা হয়েছে। যার ফলে কোনও কোনও এলাকায় যেখানে ব্যক্তিগত পানির উৎস সমূহের প্রায় সবগুলোই অনিরাপদ এবং জনগণ সরকারি উৎস সমূহের উপর নির্ভরশীল সেই সকল এলাকায় নিরাপদ পানির কষ্ট প্রকট আকার ধারণ করেছে। টেবিল-৩ ও চিত্র-৪ এ নিরাপদ পানি সরবরাহের আওতা এবং আর্সেনিক দূষণের চিত্র তুলে ধরা হল।
উৎসসমূহের বণ্টন প্রক্রিয়ার সাথে আবার রাজনীতি জড়িত। কোনও এলাকায় একটি সরকারি নলকূপ হলে সেটি হয় সেই এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তির বাড়ির আঙ্গিনায়, এটা বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকারই সাধারণ দৃশ্য। এরপর শুরু হয় ঐ উৎসের উপর ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণ, এবং অনেক মানুষ শুধুমাত্র আত্মসম্মান বোধের কারণে ঐ উৎসটি থেকে পানি সংগ্রহ থেকে বিরত থাকে এবং জেনে শুনেও আর্সেনিক দূষিত পানি পানে বাধ্য হয়। এই হিসেবটিকে বিবেচনা করলে বোধহয় মোট নিরাপদ পানি বঞ্চিত মানুষের সংখ্যা আরও বেশী হবে।
আরও একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে অনেক নিরাপদ পানির উৎসের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া। এর জন্য দায়ী প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, এবং দুর্বল অবকাঠামো যা এই খাতে জড়িত কর্তা ব্যক্তিদের দুর্নীতির ফসল। একটি উৎসের পেছনে ১০টাকা বরাদ্দ হলে হয়তো শেষ পর্যন্ত ২ টাকা ব্যয়ে সেটি নির্মিত হয়, কাজেই সেটা কতটা টেকসই হবে সেটা সহজেই অনুমেয়। কোনও কোনও এলাকায় আবার বর্তমান প্রযুক্তির দ্বারা নিরাপদ পানি সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না, সুতরাং সেসব এলাকায় পানি সরবরাহ সত্যিই কঠিন। এমনই একটি এলাকার উদাহরণ খুলনার কয়রা (ভিডিও)।
বাংলাদেশে আর্সেনিক একটি মারাত্মক জাতীয় সমস্যা। আজ এটির গুরুত্ব সেভাবে উপলব্ধি করতে না পারলেও অদূর ভবিষ্যতে এর ভয়ঙ্কর রূপ আমরা ঠিকই দেখতে পাব। এই সমস্যা সমাধানে যেমন দরকার নিরাপদ পানির উৎস সৃষ্টি ঠিক তার চেয়েও বেশী দরকার জনসচেতনতা। আসুন আমরা যখন যেভাবে পারি মানুষকে আর্সেনিকের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করি।
তথ্যসূত্র: Situation Analysis of Arsenic Mitigation in Bangladesh 2009
মন্তব্য
মাহফুজ,
লেখা সম্পর্কিত ম্যাপ/ছবিগুলো ফ্লিকার থেকে লিংক হিসাবে না দিয়ে এমবেড করে দিলে পড়ার সময় দেখে দেখে পড়া যায়।
[ফ্লিকারে ছবির উপরে Share this এ ক্লিক করে grab the html/bbcode সিলেক্ট করে নিচের বক্স থেকে কোডটুকু নিয়ে লেখার মাঝে যেখানে ছবি সংযুক্ত করা প্রয়োজন সেখানে পেস্ট করলে ছবিটা লেখার মাঝে এমবেডেড হবে। ফলে পাঠক ম্যাপ/ছবির সাথে মিলিয়ে পড়তে পারবেন।]
২০০৯ সালে JICA দেশব্যাপী যে জরীপ পরিচালনা করেছে তার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে কি? অনলাইনে কোথাও সেটি পাওয়া যাবে? ২০০৫ সালে আমরা যে ডিপ অ্যাকুইফার ম্যাপিংয়ের প্রজেক্টটা শুরু করেছিলাম সেটার বর্তমান চিত্র কী?
কাকস্য পরিবেদনা
ভাই, আমারো মনে হয়েছিল যে ছবি গুলা লেখার মাঝখানে দিতে পারলে ভালো হত কিন্তু পদ্ধতিটা জানতাম না। ধন্যবাদ বুদ্ধিটা শেখানোর জন্য।
২০০৯ সালে জাইকা যে জরীপ পরিচালনা করে তার উপর ভিত্তি করে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে যেটার লিঙ্ক আমার লেখার তথ্যসুত্রে দেওয়া আছে।
তোমরা যে ডিপ অ্যাকুইফার ম্যাপিংয়ের প্রজেক্টটা শুরু করছিলা আমরা সেটারে ওয়েব বেজড করেছি, এখন তুমি অনলাইনে (এখানে) বোরহোল ডাটা সংগ্রহ করতে পারবা। সারা দেশে মোট ৩০০০ বোরহোল ডাটা আপডেট করে দিয়ে আসছিলাম আমি, এখন জাইকা ঐ প্রজেক্ট পুরোপুরি ডিপিএইচই'র উপর ছেড়ে দিছে। আমার মনে হয় ঐ প্রজেক্টটা এইখানেই শেষ।
মাহফুজ খান
লিথোলজিক লগ তো নাই! ওইটাই দরকার।
হুম। আছে। কিন্তু যে এলাকার দরকার সেগুলোতে নাই।
কাকস্য পরিবেদনা
ভালো তথ্যপূর্ণ লেখা।
নিরাপদ পানির উৎসকে ঘিরে যে রাজনীতি সেটাকে ঠেকাতে না পারলে কয়েক বস্তা প্রোজেক্ট রিপোর্টেও কোন লাভ হবে না।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
২০০১ সালে ব্রিটিশ জিওলজিকাল সার্ভে ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের যে দূষন মানচিত্র ছিল সেটা একেবারে নতুন আরেকটা জরীপ মানচিত্র দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। আমার কাছে এটার কপি নাই আপাতত, তবে গত ১৩ই নভেম্বরে অনুষ্ঠিত Progress towards creating an Arsenic-safe Environment in Bangladesh শীর্ষক সেমিনারে ব্যবহৃত হতে দেখেছি।
আর্সেনিক বিষয়ে একজন লেখক পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।
এই বিষয়ে আমার লেখাগুলো এখানে রেখেছিলাম।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
বিজিএস, এবং BAMWSP ছাড়া আর কোনও জরীপের কথা আমার জানা নেই, আর যে নতুন মানচিত্রের কথা বলেছেন সেটা আমার দেখা হয়নি, ঐটা পেলে নিশ্চয়ই পরিবর্তন্টা আনা যেত।
মাহফুজ খান
স্বল্পমূল্যে আর্সেনিক ফিল্টার উদ্ভাবন করেছেন George Mason University (Fairfax, VA, USA)-র একজন কেমিস্ট্রি প্রফেসর, ড. আবুল হুসাম। গর্বের সাথে বলছি উনি একজন বাংলাদেশি। এই SONO ফিল্টার আবিষ্কারের জন্য ২০০৭ এ গ্র্যাইঞ্জার চ্যালেঞ্জ উনাকে পুরস্কৃত করেন একটি সোনার মেডেল এবং এক মিলিওন দিয়ে। পুরস্কারের পুরোটা অর্থই প্রফেসর হুসাম দান করেছেন ফিল্টার বানান এবং বিতরন এক প্রতিষ্ঠানে। আরো জানতে চাইলে নিচের লিঙ্ক দুটো দেখতে পারেন।
http://www.gmu.edu/depts/chemistry/faculty/hussam/
http://cos.gmu.edu/news/coverage/arsenic-filter-water-offers-hope-milions
ইনি সম্ভবত অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাতের ভাই।
জ্বী। ড. বারাকাত বাংলাদেশে সোনো ফিল্টার পরিচিতি এবং প্রস্তুত করার দায়িত্বে আছেন। এই পুরো কাজটা উনারা করছেন কোন আর্থিক লাভের হিসাব না করে। আমি অবশ্য উনাদের প্রজেক্টের বর্তমান অবস্থা জানি না।
ধন্যবাদ মাহফুজ খান আপনার গুরুত্ত্বপূর্ণ পোষ্টের জন্য। তবে এই পোষ্টটিকে মুখবন্ধ ধরে এখন এটিকে আস্তে আস্তে ব্যাপ্তিতে বাড়ালে আর্সেনিকের উপর একটি পূর্নাংগ প্রতিবেদনে পরিনত করতে পারেন একটি সিরিজ হিসেবে। সচলায়তনে আর্সেনিক নিয়ে খুব বেশি পোষ্ট আমার চোখে পড়েনি অথচ বিষয়টি অতীব গুরুত্ত্বপূর্ন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। যা যা থাকতে পারে সেখানেঃ
ইতিহাস
আর্সেনিক দূষনের কারন ( অবশ্যই সহজ বিজ্ঞানের ভাষায়)
বাংলাদেশে আর্সেনিক দূষণের চিত্র
আর্সেনিক দূষণের স্বাস্থগত প্রভাব
সাধারণ আঙ্গিকে আর্সেনিক দূষণ রোধের উপায়
বর্তমান অবস্থা ( কি কি ব্যব্যস্থা গৃহীত হয়েছে, আলোচনা, সমালোচনা )
ভবিষ্যতে করণীয়
যাই হোক এটি পাঠক হিসেবে আপনার কাছে চাওয়া।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ধন্যবাদ জাহিদ ভাই, একা আমার পক্ষে হয়তো সবদিকে আলোকপাত করা সম্ভব হবে না, শামিম ভাই যদি সাহায্য করেন তবে হয়তো সম্ভব, উনিই মুলত এই লাইনের মানুষ। যাইহোক আমি
দুটি বিষয়ে লিখার চেষ্টা করব।
মাহফুজ খান
জাহিদ ভাই ঢাকা শহরে একুইফার ডিওয়াটারিং এবং এর ফলে ল্যন্ড সাবসিডেন্স এর বিষয়ে একটা লিখা দিব ভাবছিলাম। আপনি মনে হয় এই বিষয়ের উপর একটা ব্লগ লিখেছিলেন। কাজেই আপনার পারমিশন পেলে আগাব।
ভাই মাহফুজ,
যেকোন বিষয়ে ব্লগ লেখার অধিকার একজন লেখকের আছে এবং সেটা সবসময় থাকে। আমি পানিসম্পদ নিয়ে পড়াশুনা করি বলে এই নিয়ে লেখালেখি করতে ভালবাসি। পানিসম্পদের উপর যেকোন লেখালেখিই সচলায়তনকে এই বিভাগে শক্তিশালী করবে। আমি বেশ কিছু তথ্যসুত্র ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে সম্ভবত একটি ব্লগ লিখেছিলাম ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানিসম্পদের সমস্যা নিয়ে। কিন্তু ভূমিধ্বস বিষয়ে ভূত্তত্ববিদদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা একজন পানিবিশেষজ্ঞের চেয়ে অনেকগুন বেশি। তাই আপনি সাচ্ছন্দে তা লিখতে পারেন। আমার ব্লগ থেকে যদি কোন তথ্যসুত্র কাজে লাগে বা যদি কোন কিছুর প্রয়োজন হয় আপনি আমার সাথে ইমেইলে যোগাযোগ করতে পারেন।
আশা করি অতিসত্তর আপনার ব্লগ দেখতে পারব।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
তথ্যমূলক পোস্ট। বৃষ্টির পানি ব্যবহারের উপর শুনেছি অনেক প্রজেক্ট চলু আছে। ওগুলোর উপর তথ্য কোথায় পাব? যেমন: শতকরা কত ভাগ গ্রামে মানুষ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে? সঞ্চিত পানির কত ভাগ শুষ্ক মৌসুমের জন্য জমা রাখা হয়?
ধন্যবাদ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনি ঐ তথ্যগুলোর জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আর এন্ড ডি বিভাগে যোগাযোগ করতে পারেন। অন্যথায় আপনি যদি জাইকা/ডিপিএইচি থেকে, এখানে তথ্যসুত্র হিসেবে দেওয়া রিপোর্টটির হার্ডকপি সংগ্রহ করতে পারেন তবে ঐটার সাথে সি ডী তে আপনি বাংলাদেশের ৩০১ টি উপজেলার কোন ইউনিয়নে কতটি কি ধরনের নিরাপদ পানির উৎস আছে তার তথ্য পাবেন। সেখান থেকে আপনি শতকরা হিসাব বের করে নিতে পারেন। বৃষ্টির পানির ব্যাপারে আমি যতটুকু জানি সেটা হচ্ছে, এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র বর্ষাকালেই কার্যকর থাকে, শুস্ক মৌসুমে এটি অকেজো হয়ে পড়ে থাকে।
মাহফুজ খান
২০০২-২০০৩ সালে প্রায় ১৩ মাস নোয়াখালিতে ডিপিএইচই-ডানিডার আর্সেনিকের গবেষণায় চাকুরী করতাম। বেশিরভাগ সময়েই এই বৃষ্টির পানির বিষয়ে বিভিন্ন খুটিনাটি সমস্যা সমাধান নিয়ে কাজ করেছিলাম।
বৃষ্টির পানির মূল সমস্যা হল জলাধার। যেহেতু আমাদের এখানে বছরের অর্ধেকের বেশি সময় বৃষ্টি হয়না তাই পুরা সময়ের জন্য বৃষ্টির পানি সঞ্চিত রাখতে চাইলে যে আকারের জলাধার লাগবে সেটার খরচ হবে অত্যধিক।
এই সীমাবদ্ধতা সত্বেও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের জন্যই শুধু বৃষ্টির পানির ব্যাপারে সরকার বেশি আগ্রহী। কারণ ঐ অঞ্চলগুলোতে প্রথম ৩০-৩৫ ফুট গভীরতায় একটা পানির স্তরের পর পরবর্তী ৭০০-১০০০ ফুট লবনাক্ত পানির স্তর। কাজেই নিরাপদ পানির জন্য ১০০০+ফুট গভীরতায় নলকূপের ফিল্টার বসাতে হয়, যা শুধু খরচ সাপেক্ষই নয়, দেশের অন্য অঞ্চলের চেয়ে কঠিনও বটে। কিছু জায়গায় হয়তো প্রথম বোরিংটা ব্যর্থ হল, তাই ১০ ফুট দুরেই আরেকটা সফল বোরিং করা হল -- কিন্তু ওখান থেকেও সকালের পর থেকে নোনতা পানি ওঠে: পাশের বোরিঙের কারণে লবনাক্ত আর মিঠাপানির স্তরের মাঝের অপ্রবেশ্য স্তরে যে ফুটা হয়েছিলো সেটা এর জন্য দায়ী।
আবার কিছু ক্ষেত্রে পানির জলাধারে সুপারি জাগ দিতেও দেখেছি -- এই হল কিছু মানুষের সচেতনতার নমুনা (সকলে এমন নয়)।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
নভেম্বরের শেষে সাতক্ষীরার উপজেলা/থানাগুলো ঘুরে দেখলাম সব জায়গাতেই এই বৃষ্টির পানি আর মিষ্টি পানির সারফেস উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করে ফিল্টার করে খাবার পানি থেকে শুরু করে দৈনন্দিন সব কাজে ব্যবহারের ব্যবস্থা বহুল ব্যবহৃত। এমনকি সুন্দরবনের মাঝের ফরেস্ট অফিসেও দেখেছি এই সিস্টেম। সরকারিভাবে বন্দোবস্ত করে দেয় নাকি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
তথ্যসমৃদ্ধ লেখাটির জন্য সেলাম জানাই!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ভালো কাজ করেছেন মাহফুজ ভাই
সাবাস মাহফুজ! আরেক সেমিস্টার শুরু হবার আগে আরো এমন কিছু পোস্ট দাও আর আরেকটু সচল হয়ে উঠো!
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ধন্যবাদ সাইফ ভাই, আশা করছি অচিরেই ঢাকা শহরে ল্যান্ড সাবসিডেন্স নিয়ে একটা লিখা দিব। দোয়া করবেন।
তথ্য মূলক লেখা পড়ে অনেক ভালো লাগলো ।এ লেখাটির কি ফলো আপ কোনো লেখা আছে ?
নতুন মন্তব্য করুন