মনের কোন এক কোণায় একটা নকশীকাটা সিন্দুকে জমানো এই শহরকে ঘিরে রাজ্যের স্মৃতি। একটা ভীষণ ঝড়ো দুপুরে প্রথম এই শহরকে দেখা। সাথে এক মামা ছিলেন, বাবা-মা অন্য বাহনে। মফ:স্বলের একটা শহর থেকে লঞ্চে করে সদরঘাটে নেমে এসে শাপলার চত্বর, দোয়েলের চত্বর, মতিঝিলের সেই একমাত্র উঁচু বাড়িটা, সব অবাক হয়ে দেখতে দেখতে কখন সব কালো করে কালিগোলা মেঘেরা নেমে এসেছিলো। বছর চারেকের আমার মাথায় এসেছিলো ভীষণ কালচে ওই মেঘগুলাকে নিশ্চয়ই সেই উঁচু বাড়িটার ছাদে উঠলে পরে ঠিক ছুঁতে পারা যাবে। আর ওই বয়েসে যা হয় মেঘ ডাকা দুপুরে ভীষণ মায়ের কাছে যেতে ইচ্ছে করে, তাই আমার ফুঁপিয়ে কান্না শুরু। রিকশায় মালপত্তর আর আমাকে সামলাতে এমনিতে মামা হিমশিম খাচ্ছিলেন, কান্নায় আরো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলেন বোধহয়। তারমধ্যে কিছুক্ষণ পরেই শুরু হলো প্রবল কালবোশেখী, সেকি তাণ্ডব! কেমনকরে যেন তারই মধ্যে পথ ঘুরে ঘুরে পথ হারিয়ে আমি আর মামা হাজির হয়েছিলাম কমলাপুর রেলস্টেশানে। রিকশাওয়ালা সেই প্রবল ঝড়ে কিছুতেই আর কোথাও যেতে রাজি হচ্ছিলোনা। স্টেশানে নেমে বিস্মিত আমার কান্না থেমে গিয়েছিলো, সেই বিশাল উঁচু উঁচু খিলান আর তাদের ঝুলন্ত ক্যানোপি মনে হয় আমার দেখা প্রথম কোন স্থাপত্য যা মনের ভেতরে গেঁথে গিয়েছিলো অন্যরকম আবেদনে। এ্যাতো বছর পরে খুব স্পষ্ট করে কিছু মনে পড়েনা। কিছুটা নিজের স্মৃতি আর কিছুটা মা-বাবার গল্পে যা মনে পড়ে সে হলো ঝড়ের দাপট কমলে পরে বাবার বন্ধু (যার বাড়িতে গিয়েছিলাম বেড়াতে) আর বাবা মিলে ভড়কে গিয়ে মামা আর আমাকে খুঁজতে স্টেশানেই এসেছিলেন শেষমেষ। আমার সদ্য মেট্রিকুলেশান পাস মামা নাকি সিঁড়ির কোণায় বসে কাঁদছিলেন ভয়ে আর আমি আপনমনে এক ম্যাগাজিনওয়ালার সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়ে বিস্কিট খাচ্ছিলাম। প্রথম দেখার স্মৃতি এর চে বেশী আর কিছু মনে পড়েনা। আরো বছর খানেক বাদে সেই চেনা মফ:স্বলের গলি ছেড়ে এই শহরের রাজপথে এসে উঠেছিলাম বাবা-মায়ের সাথেই। কিন্তু সে অন্য গল্প।
মন্তব্য
চমৎকার লাগল!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অতিথির নাম নাইকা?
ভাই, মেহমানের নামটা জানতে না পারলে অস্বস্তি লাগে। এত সুন্দর লেখাটা দিয়ে নামটা দিলেন না যে?
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
অতীত
বিস্কিট খাওয়া শেষ হলে নামটা জানিয়ে দিয়েন।
...........................
Every Picture Tells a Story
ভালো লাগলো লেখাটা
চমৎকার। আরো লেখা পড়তে চাই
__________________
হামিদা রহমান
প্রতিটি দিন-ই হোক, একটি সুন্দর দিন
বাহ, চমৎকার বর্ণনা!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বাহ চমৎকার কিন্তু নামটা তো জানা হল না
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ভালো লেগেছে
আলু মিয়া
আমিই অভাগা লেখক, কিন্তু নিজের নামটা কিভাবে যোগ করবো অতিথি লেখকের পোস্টে তা বুঝতে পারছি না। আপাতত ধরে নিন আমার নাম, 'হিজিবিজিবিজ'. ইংরেজীতে blatherskite লিখেছিলাম, কিন্তু বাংলা নামটা তো মনে হয় সচলে সচল হবার আগে আসবে না কোথাও। নতুন কিনা, তাই রকম-সকম একটু সময় লাগছে ধরতে। যারাই আমার স্মৃতিচারণ পড়েছেন, সবাইকে ধন্যবাদ।
প্রতি লেখার শুরু বা শেষের কোন একখানে নিজের নামটা দিয়ে দিয়েন তাইলেই হবে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ভাল লাগার রেশ শুরু হতে না হতেই দুম করেই শেষ হয়ে গেল লেখাটা। লেখকের নাম জানার অপেক্ষায় রইলাম...
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
খুব ভালো লাগলো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো লাগল! রসালো আবেদন জানিয়ে মুখে দিতেই শেষ!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সুন্দর।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
লেখাটা পড়ে আচ্ছন্ন হবার আগেই দুম করে শেষ হয়ে গেল!!
লেখার আচ্ছন্নতা কাটতে না কাটতে কমেন্ট পড়ে হাসতে হাসতে শেষ। সবাই নাম জানায় ব্যাস্ততায় লেখা নিয়ে কমেন্ট করতেই ভুলে গেছে দেখে মজা লাগ্লো।
হিজিবিজিবিজের লেখা খু-উ-ব ভাল হয়েছে। লিখে যান
বন্দনা
সব্বাইকে ধন্যবাদ, লেখা পড়ার জন্য আর মন্তব্যের জন্যও।
ব্লগ মডারেটর সমীপে প্রশ্ন কোথায় স্থাপন করা যায়? আমি সম্ভবত গতকাল কিংবা পরশু রাতে আরেকটা ব্লগ লিখেছিলাম, কিন্তু সেখানা খুঁজে পাচ্ছিনা, কতোদিন বাদে অতিথিদের লেখা ছাপা হতে পারে এ নিয়ে কোন বিশেষ নিয়ম আছে কি? লেখার এক কোণায় হিজিবিজবিজ নামটা লিখেছিলাম, কিন্তু লেখাটার শিরোণাম নিজেই মনে করতে পারছিনা। একটা কাল্পনিক চিঠির মতো ছিলো লেখাটা, বংগদেশীয় বিশেষ ব্যবস্থাপনাময় ইন্টারনেটের কল্যাণে আমি সাধারণত যেখানে লেখাগুলো ড্রাফট করে রাখি, সেখানেও খুঁজে পেলাম না। সচলে ছাপবার উপযুক্ত না হলেও কোনভাবে আমি অন্তত আমার নিজের লেখাটা ফেরত পাবার কোন উপায় আছে কি? আবারো ধন্যবাদ সবাইকে।
contact@sachalayatan.com অথবা পাতার নিচে দেখুন যোগাযোগ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নতুন মন্তব্য করুন