চেষ্টা-চরিত্র করে আরো কয়েকটা লিখলাম।
২৫। “ব্যথা লাগছে?’ “নাহ”। “তাহলে চলুক।“ “আচ্ছা।“
২৬। নিস্ফলা জমিতে চাষ। দোষ হয় কপালের।
২৭। সারাক্ষণ টিভি কমপিউটরে থাকি। রাইটার্স ব্লক।
২৮। এক শব্দে গল্প? তাও হয়। “না”।
২৯। মেয়েটিকে দেখে কিশোরটি যুবক হয়ে ওঠে।
৩০। পূর্নিমা দেখবো। আলো নেভাও। মুখটা তোল।
৩১। খিদে লেগেছে। হালাল-হারাম কাল দেখবো।
৩২। রিকশাতে চড়ে ভিক্ষুকটি ভাবে, আমিই নবাব।
৩৩। লাং ক্যানসারের রোগী সিগারেটে সুখটান দেয়।
৩৪। আলসে লেখক। ষড়ল গল্প। খাপে খাপ।
৩৫। ঘরজামাইয়ের মাসের শেষ বলে কিছু নেই।
৩৬। নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি। “ফিরে আয়। সম্পত্তি নিবিনা?”
-নিলম্বিত গণিতক
মন্তব্য
অংশ বিশেষ অশ্লীল লেগেছে!
একটা প্রশ্ন, ছয় শব্দে (যত শব্দই হোক) অর্থবহ কিছু হলেই কি সেটা গল্প হবে?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
প্রশ্নটা আমারও।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
এইগুলা কি ***** গল্প? ১ তারা দাগাইলাম
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আপ্নে জীবিত?!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মোটিভ বুঝলাম না!
-ত্রিমাত্রিক কবি
কয়েকটা কিন্তু আমার ভালই লেগেছে।
তবে প্রশ্ন হল, গল্প কাকে বলে? কতটা পূর্ণতা দিলে, আর কতটা পাঠকের কল্পনাকে টেনে আনতে পারলে সেটা সার্থক অণুগল্প হয়? একটা অর্থপূর্ণ বাক্য কখন একটা পুরো ঘটনার ছবি ছটা শব্দে তুলে আনতে পারে? আপনি কোথাও কোথাও বড্ড বেশি বলে ফেলছেন। মনে হচ্ছে, বারবার অনেকগুলো করে ছয় শব্দের গল্প লিখতে গিয়ে বেশি চাপ নিয়ে ফেলছেন আপনি। একটু ধরন বদলে দেখুন না।
গল্পের ব্যাকরণ জানি না।
তবে, আমার পোস্ট ভালো লাগল।
এইটা ভাল্লাগসে
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
____________
হামিদা রহমান
আদিরসের গন্ধ পেলুম, ভালু পেলুম। চলুক
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
এজরা পাউন্ড লিখেছিলেন একটি চতুর্দশশব্দীঃ
হাইকু কিম্বা ইমেজিসম ধারার গদ্যচর্চা জারি থাকুক।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সত্যি সত্যি কি ছয় শব্দে গল্প লেখা যায়? হয়তো যায়, কিন্তু ব্যাপারটা যথেষ্ট কঠিন। একজন মন্তব্য করেছিলেন যে অর্থবহ ছয়টি শব্দ হলেই কি সেটি গল্প হবে? আমার মনে হয়, না। তাহলে ছয় শব্দের কি রকম বিন্যাসকে আমরা গল্প হিসেবে মেনে নেবো? এর উত্তর আমার মনে হয় রয়েছে অন্যখানে।
আমরা জানি যে যে কোন সাহিত্যই লেখক আর পাঠকের যুগলবন্দী। অর্থাৎ লেখক যা বলতে চেয়েছিলেন তা যদি পাঠক বোঝে, তাহলেই সেটি সাহিত্য হবে। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায় যে লেখক যা বলতে চেয়েছিলেন, তা না বুঝে পাঠক যদি অন্য কিছু একটা বোঝে তাহলে কি সেটি সাহিত্য হবে না? আমার মনে হয়, হবে। এবং সেটাই বোধহয় ছয়-শব্দী গল্পের বেলায় বেশী প্রযোজ্য। কেননা এখানে লেখক পারতপক্ষে তেমন কিছুই বলছেন না। তুলির দু একটা টান মাত্র, তা থেকেই পাঠককে বাকীটা অনুমান করে নিতে হবে। এখন যে যা বোঝে।
দুএকটা উদাহরণ দেওয়া যাক। “খিদে লেগেছে। হালাল-হারাম কাল দেখবো।“ এই লেখাটির গল্প হলো এই যে সারাদিন ঘোরাঘুরি করে খাওয়া হয়নি একটি ছেলের। ছেলেটি হালাল খাবার ছাড়া খায় না। মধ্যরাতে একমাত্র ম্যাকডোনাল্ডস ছাড়া আর কিছু খোলা নেই। কনকনে শীতের রাত, তার উপর প্রবল তুষারপাত হচ্ছে। খিদে পেটে ছেলেটি তাই ভাবছে যে সে এখন হালাল-হারামের বাছবিচার করবে না। সে তখন ম্যাকডোনাল্ডস এর দিকেই এগিয়ে গেল। কিন্তু এই লেখাটির মাঝে যদি কোন এক পাঠক আদিরসের গন্ধ খুঁজে পান, সেটাও সেই পাঠকের অধিকার।
আর একটা উদাহরণ নেই। “ব্যথা লাগছে?’ “নাহ”। “তাহলে চলুক।“ “আচ্ছা।“ এই লেখাটিতেও কোন পাঠক আদিরস আস্বাদন করতে পারেন। কিন্তু ধরা যাক, লেখক এই কথোপকথনের মাঝে বর্ণনা করেছেন নীচের সিচুয়েশনটি।
“প্রায় দু ঘন্টা হতে চললো, কিন্তু এখনো ছেলেটিকে ভাঙ্গতে পারা যায়নি। পাঞ্জাবী ক্যাপ্টেন গুলজার খানের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। তা কি রাগে নাকি হতাশায়, তা ঠিক বোঝা যায় না। ছেলেটির দিকে আর একবার তাকালো গুলজার খান। আজিব চীজ শালা এই বাংগালী, মারতে মারতে মেরে ফেললেও যেন এদের হারানো যায় না। ছেলেটির চোয়াল বেয়ে রক্ত পড়ছে, একটা চোখ বেঢপ ফুলে আছে। কিন্তু অন্য চোখটিতে কি অপার মায়া। শান্ত ভাবে সেও দেখছে গুলজার খানকে। ওই দৃষ্টির পিছনে কি লুকিয়ে আছে ঘৃণা?
চোখের সামান্য ইংগিতে রাজাকার সুলেমান বড় সাঁড়াশী নিয়ে এগিয়ে আসে। গুলজার খান ছেলেটির সামনে এসে দাঁড়ায়।
“এবারে একটা একটা করে তোমার আঙ্গুল ভাঙ্গা হবে। তুমি এখনো টর্চারের কিছুই দেখনি। এই শেষবারের মতো জিজ্ঞেস করছি, মুক্তিবাহিনীর এখন কোথায় লুকিয়ে আছে বলো।“
ছেলেটি শান্ত ভাবে হাসে একটু। “বলবো না। মরে গেলেও বলবো না।“
“ওকে। সুলেমান।“
সুলেমান সাঁড়াশী দিয়ে ছেলেটির বাম হাতের কড়ে আঙ্গুলটি উল্টোদিকে বাঁকিয়ে দেয়। ছেলেটির মুখ প্রবল ব্যথায় কুঁচকে আসে। সে কোন শব্দ করে না। শুধু তার ঠোঁট নড়ে কি এক গোপন উচ্চারণে।
গুলজার খান কুৎসিৎ ভাবে হাসে।
“ব্যথা লাগছে?’
“নাহ।“ ছেলেটি স্পষ্টস্বরে বলে।
“তাহলে চলুক।“
“আচ্ছা।“
মট করে আঙ্গুল ভাঙ্গার শব্দ হয়।
আসলে ছয় শব্দের লেখাগুলোকে গল্প বলা যাবে কিনা, তা সম্পূর্ণ পাঠকের উপর নির্ভর করে। তাঁরা এর মাঝে গল্প খুঁজে পেলে এরা গল্প, খুঁজে না পেলে এরা ফালতু বাকোয়াস।
লেখাগুলো পড়ার এবং আপনাদের মনোযোগের জন্য ধন্যবাদ রইলো।
-নিলম্বিত গণিতক
মনে পড়ে গেল একটা গ্রন্থের কথা -
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আমার কাছে কয়েকটি বেশ ভালো লেগেছে। ছয়টি শব্দ যদি পাঠককে ভাবাতে, কল্পনা করাতে পারে তাহলে তো সেটা গল্পই হয়ে যায়, নাকি? তবে পাঠক যদি ছয় শব্দেই আটকা পড়ে থাকেন তখন সেটাকে আর গল্প বলা যায় কিনা আমার সন্দেহ আছে। যেমন এখানে কিছু শব্দ সাজানো বুদ্ধিদীপ্ত মনে হলেও গল্প মনে হয়নি -
একদম খাঁটি কথা। এটাই বোধহয় শেষ কথা। ছয়টি শব্দের আড়ালে যদি পাঠকের মনে একটি গল্পের বেড়াল উঁকিঝুঁকি মারে, তাহলেই লেখক সার্থক। অন্যথায় নয়।
-নিলম্বিত গণিতক
স্টাইল্টা সুন্দরঃ) ভালো লাগল
আইডিয়াটা চমকপ্রদ। এটা পাঠকের মধ্যে একটা গল্পের সুত্র ধরিয়ে দেয়। পাঠক তার ইচ্ছেমতো গল্পের ভাবসম্প্রসারণ করে। এখানকার মধ্যে সবচেয়ে ভালো লেগেছে-
৩৬। নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি। “ফিরে আয়। সম্পত্তি নিবিনা?”
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
"পূর্নিমা দেখবো। আলো নেভাও। মুখটা তোল।"
"খিদে লেগেছে। হালাল-হারাম কাল দেখবো।"
চূড়ান্ত পর্যায়ের... 3:D
হিমাগ্নি
নতুন মন্তব্য করুন