গানটি আমার অসম্ভব প্রিয় ৷ মায়ার খেলার গান ৷প্রিয় হবার একটা ব্যক্তিগত কারণও আছে ৷সেটাই আগে বলি ৷
আমরা যারা চল্লিশ পেরিয়ে পঞ্চাশে পা দেব দেব করছি, তাদের বয়ঃসন্ধি আজকের পোলাপানদের বয়ঃসন্ধির মতো
ছিল না ৷বাঙালি তখনও পর্যন্ত যথেষ্টই রক্ষণশীল ছিল ৷দেশভাগের দাগা-খাওয়া তার মন তখনও সামন্ততন্ত্রের আবহকে যেন এক অদৃশ্য সিন্দুকে পোরা ততোধিক অদৃশ্য দলিলের মতো ক্ষিপ্র মমতায় রক্ষা করে চলত ৷সামন্ততন্ত্রে ব্যক্তির প্রকাশ সচরাচর স্বীকৃতি পেত না ৷আর প্রেম ? ওরে বাবা ,তা তো কেবল ব্যক্তির প্রকাশ ছিল না,
ছিল রীতিমতো ব্যক্তিগতর উল্লাস ৷বু.ব.কি আর সাধে লিখেছিলেন,তা-ই পবিত্র যা ব্যক্তিগত ?
সে যাই হোক, ওই আবহে বড় হতে থাকা আমি একদিন স্কুল থেকে এই গানটি শিখে এসে বাড়িতে গেয়ে বেধড়ক
বকুনি খেয়েছিলাম ৷অথচ আমাদের পারিবারিক আবহাওয়ায় রবীন্দ্রনাথ নিষিদ্ধ তো ছিলেনই না,রীতিমতো সু-সিদ্ধ
ছিলেন ৷বকুনি খাওয়ার পর ওই স্পর্ধার বয়সে গানটি আমার গলা ছেড়ে একলাফে প্রাণে আসন গ্রহণ করল ৷আর
প্রাণের কাছাকাছি যার আসন, সে-ই তো আমাদের প্রিয় ৷
বড় হয়ে,বড় হতে হতে গানটি যে কতবার কতজনের গলায় শুনেছি ৷কিন্তু কেউই গানের প্রথম লাইনের 'তাই' শব্দটির আড়ালে লুকিয়ে-থাকা অদৃশ্য ওই হাইফেনটিকে ঠিক গেয়ে উঠতে পারেন নি ৷এই 'তাই' তো 'তাই তোমার
আনন্দ'-র 'তাই' নয়,অত সুদূর কিছু নয় ,বরং অনেক অনেক কাছের এক 'তা-ই',নেহাৎই এক 'তা-ই'৷
অমিতাভ দেব চৌধুরী
(amitabha dev choudhury)
মন্তব্য
বুঝে উঠতে পাল্লুম না ঠিক! আপনি এই গানটা করার সময় ছবিটা তুলেছিলেন?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
স্বল্প পরিসরে খুব গোছানো লেখা। খুব ভালো লেগেছে।
সীমার মাঝে অসীম নয় বরং সসীমের সুর ধরতে গিয়েই কি আপনাকে বকুনি হজম করতে হয়েছিল? সেই সসীম কি অসীমের মতোই 'অধরা মাধবী' রয়ে গেল? হাইফেন কি তাই বাজলো না প্রাণের সুরে?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
নতুন মন্তব্য করুন