বদলহীন আগাপাশতলা প্রাত্যহিক ডায়াবেটিক রুটিন ঘুমহীন রাত্রি । যদিও শালবনের ওধারে হিংস্র শ্বাপদের শান্ত মমি হয়ে সে রাত দিগ-দিগন্ত ভেঙ্গে তাবৎ ভাস্কর্যময় সৃষ্টির ছাউনি নিয়ে আসে যে কোন স্রষ্টা মনে । ধুলোময় পথগুলোতে জলের রেখার বেসাতি সাজানো মিথ্যের রাংতা জড়াতে, কিংবা ধরা যাক ন্যাড়া গাছগুলোকে হুকুমের সূরে বনবীথিকায় কারুচুপির ওড়না পরাতে.... এই সব শিল্পিত স্বপ্ন খুঁজে নিতে নির্ঘুম স্বপ্নহীন রাতের মতো কারিগর আর নেই কোন খানে।
আমাদের ঘর অথবা দূর্গে ইটের পরে ইট গেঁথে সভ্যতায় বসতির বদলে ক্রমেই পাঁচিলের প্রশ্ন চিহ্নগুলো নিত্যনৈমিত্তিক হাড় হিম করা লক্ষ ভেদের দীক্ষা দিয়ে যায় । এমনকি জ্বলন্ত ধাতু উদগিরণ করে যে পাহাড়, তার থেকে অধিক কালশিটে জিভ গুলো সীমানা কিংবা টেরিটোরি পেরিয়েও বিরাণ করে যায় মানবিক সংগা । অথচ পঙ্গপালের ক্ষীপ্রতায় সেই মানবিক বসতি গড়তেই বিতিকিচ্ছিরি বাড়ি বদল করানো হয় বনবাসীদের । আঁকড়ে ধরার ছলে সামাজিকতায় গড়িয়ে চলার সংগা তেও অনেক রকম ফের আসে ।
চাইলেই ছাড়া যায় না শেভিং রেইজার কিংবা স্যানিটারি ন্যাপকিন । জঙ্গুলে মুখ কিংবা অপরিচ্ছন্ন জঠর নিজের কাছেই নিজের বিদ্রোহ গান লিখে । তাই বলে পরিষ্কার মুখ আর শুষ্ক সারাদিনের নিশ্চয়তাও কি স্বস্তি দেয় ? আধা কাপ জল আর সাদা লাল নীল ট্যাবলেট গুলে তাই দুর্ঘটনার মতো ঘুমের আমন্ত্রন । তার মাঝে আধ-খেঁচড়া ছাল তোলা কুকুরের সোনালি দাঁতের কামড়ের মতো কামড়ানো স্বপ্নের তেকোনা বাস ।
তারো মাঝে কখনো সখনো চেনা পারফিউম, ভুল ফিতেয় উল্টো বাঁধা ছোট বেলার মচমচে কেডস জোড়া, সারা দুপুর ঘুড়ির সুতো রঙ্গিন করার মাঞ্জা লড়াই, পুরো বিকেল ঘাসফড়িং আর প্রজাপতির ঘর সংসার, স্বপ্ন কিংবা অল্পবেলায় স্বল্প বয়সের উথালি পাথালি ভালো লাগা গুলোন স্তম্ভের মতোই বাড়াতে থাকে শেকড়বাকড় । জীবনের কমা কিংবা ফুলস্টপ গুলো বাদ দিলে এই সব বেড়ে ওঠা অক্ষয় ফরমুলাগুলোই আমাদের যুদ্ধ জয়ের অংক কষায় ।
নক্ষত্রের ইশারা পেতে সারা রাত কেটে যায় পালতোলা জানালার পর্দায় ঘুঘু কিংবা চন্দনার কুহুতানে । দশ আঙ্গুলের তোলপাড় উৎসাহে একাকী জীবনের বিলাসী উপাত্তে যতোই কবিতা ঝরুক আসলে ভিতরে তার একটাই দীর্ঘশ্বাস প্রমাণিত ।
জলের মাঝে আলাদা হয়না জলের চলন পা, কলস্বরে যতোই থাকুক নির্দয়তা তবু পানির বিন্দু হারায় না তার শীতলতা। রাতের বন্দনা থেকে ইস্কুল পলাতক ছাত্র হয়ে, বিছানার দু বাহু উস্মায় বুকের উদ্বেল মাঠ পাড়ি জমাতে সবারই তো খুব গহীনের কান্না থাকে।
তবু হায়, সামাজিক হতে হতে কেউ কেউ বুঝে নেয় মানুষের মূলত নিজেকে নিয়েই নিজের পথ চলা ।
জলের স্রোত যে, এক প্রকার রাস্তা এই বোধ টুকু বুঝে নিতে সমুদ্র পাড়ি দিতে হয় । সেই সব নাবিকেরও থাকে সবুজের হাতছানি । অভ্রের কুচি ছড়ানো প্রভাতের সাথে দেখা হয়ে যায় প্রতিটির রাত্রির শেষে । ঢালু পাহাড়ের স্তনচূড়ায় পিনোন্নত আলোর টু-দ্যা পয়েন্ট নৃত্যের ভঙ্গিমায় ধরণীর বুকে এক পা’ দু’পা ফেলে নেমে আসে সূর্য । আলোর পথে হোক তবে পরের দিনটির প্রার্থনারত মৌন উত্তরণ ......
মন্তব্য
একটা কাব্যময় ছাপ আছে...
@আনোয়ার সাদাত শিমুল - কৃতজ্ঞতা । কাব্যময় ছাপ বুঝতে কবিত্বের মন লাগে ।
@ সবুজ পাহাড়ের রাজা - আপনাকে ধন্যবাদ ।
নতুন মন্তব্য করুন