ছবি তোলার পরে সেগুলোর পোস্ট প্রোসেসিং নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। কেউ কেউ প্রোসেসিং করা ছবি দেখে নাক সিঁটকান। কেউ বা বাহবা দেন। আসলে সঠিক কোনটা....???
এই প্রশ্নের উত্তর আমি নিজেও জানি না। জানার চেষ্টাও করিনি কখনো। কারণ আমার কাছে মনে হয় এক একটা ছবি এক একটা স্বপ্ন। একটা ছবি, একটা স্বপ্নেরই রূপ মাত্র। প্রত্যেকেই চায় তার স্বপ্নকে তার ছবি দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে। অবশ্য ফটো-জার্নালিজমের ক্ষেত্রে এই কথাটা হয়তো অন্য রকম। সেখানে হয়তো স্বপ্নের চেয়ে সংবাদকে বেশি জোর দেয়া হয়। কিন্তু অন্যসব ক্ষেত্রে ?
আমি ছবিতে পোস্ট প্রোসেসিং করি। কারণ, বাস্তবের চোখে দেখার সাথে আমার স্বপ্নের রঙকে মেশাতে ভালো লাগে। হয়তো স্বপ্নবাজ প্রতিটা মানুষই চাইবেন, তার কাজের মাঝে তার স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটাতে। আমিও ঠিক সেটাই চেয়েছি। এর বেশি কিছু না।
জানি না সবাই ছবিগুলোকে কিভাবে গ্রহণ করবেন। তারপরেও যদি কোন ভুল-ত্রুটি চোখে পড়ে অবশ্যই ধরিয়ে দেবেন।
১. আলোর পথে
[স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখি আলোকিত কোন দিনের। আলোকিত কোন শহরের। যে শহরে থাকবে না কোন হানাহানি। থাকবেনা কোন দুঃখ, কান্না। ক্ষুধার জ্বালায় যেখানে মানুষের খাবার খুঁজতে হবে না ওই ডাস্টবিনের ময়লার স্তুপে। কিন্তু, সেই আলোর শহরের পথ আর খুঁজে পাইনা। তবুও স্বপ্ন দেখি সব বাধা পিছনে ফেলে চলছি সেই আলোর পথে।]
২. সবুজের খোঁজে
[বহুদিন হয় না কথা নিজের সাথে, সপ্তাশেষে যাবার সময় বাড়ির পথে...
বুঝতে পারি, কোথায় বাড়ি এ দূর দেশে? শিকড়ে তাও দিও জল দিনের শেষে।'
এই শহরে দিনকে দিন সবাই হাঁপিয়ে উঠছি। জ্যাম, ধূলো আর ধোঁয়ায় অস্থির জীবন। এখানে দেখা মেলে না সেই সবুজ মেঠো পথের। দেখা মেলে না ভোরের বেলায় সবুজ ঘাসের ডগায় শিশিরকণার ঝিলিক। কিন্তু এগুলোর অভাব বড্ড বেশী অনুভিব করি। তাই বার বার ছুটে যেতে ইচ্ছে করে চিরচেনা সেই গ্রামের সবুজ পথে।]
৩. যাত্রী
[যাত্রী। আলোর যাত্রী। যে যাত্রীরা অন্ধকারকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে আলোর দিকে।]
৪. স্বপ্ন
['স্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল, দু-হাজার বছরেও সব মনে রাখে…
ব্যাধের মতন জানে অরণ্যের আদ্যোপান্ত মূর্তি ও মর্মর|'
একটা সময়ে স্বপ্ন ছিলো গিটার বাজাবো। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠে নি। কিন্তু স্বপ্নটা আজো বেঁচে আছে।]
৫. অবকাশ
[ ♪♫'আমার লাস্ট বাসে বাড়ি ফেরা, মাথা তুলবার তাড়া,
আমার জাহাজের পাটাতন, ছেঁড়া নোঙর, ছেঁড়া মন....'♪♫
এই যান্ত্রিক নগরের পাল্লায় পড়ে সবাই কেমন জানি দিন দিন কোন যন্ত্রে পরিণত হচ্ছি। সব চিন্তাকে ঝেড়ে ফেলে আয়েশ করে কোথাও বসার কোন সুযোগ নেই। সুযোগ মেলে না সকালের সোনা রোদ গায়ে মেখে চায়ের কাপ নিয়ে বারান্দায় বসার। সুযোগ মেলে না সব বন্ধুরা মিলে মন খুলে গল্প করার। কোথাও দেখা মেলেনা একটুখানি অবসরের...]
৬. মেঘের ওপারে
[♪♪♫ উড়তে কি পারো বন্ধু আমার? ধরতে কি পারো তুমি মেঘের জল?
গাইতে কি পারো তুমি আমার গান?
শুনতে কি পারো তুমি আমার কান্না?
দেখতে কি পারো নিঃস্ব প্রাতে, নিঃসঙ্গ মোর একলা চলা..... ♪♪♫
রোদ আর মেঘের সাথে বন্ধুত্ব আমার আজন্মকালের। ছাদের রেলিং-এ শুয়ে আকাশ আর মেঘেদের ছুটে চলা দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। ইচ্ছে করে করে মেঘেদের মত স্বাধীনভাবে ছুটে চলতে। গ্রামের বাড়ি থেকে ফেরার পথে পদ্মার বুকে যখন ওই মেঘেদের দেখা পেয়েছিলাম.... তখন, খুব, খুব ইচ্ছে করছিলো .... হারিয়ে যাই ওই মেঘেদের দেশে।]
৭. সূর্যস্নান
[♪♫ 'অজস্র দিন হেঁটে চলে যায়, জেগে থাকা রাত দুর্বিষহ...
চুপ করে যাওয়া খামখেয়ালি, নিভে যায় সব তারা অহরহ...
রাজপথটাও এঁদোগলি আজ... আড্ডা জমে না সন্ধেবেলায়,
খালি পায়ে হাঁটা হয় না আমার, বাসে ঝুলে ঝুলে যাই না কোথাও...’ ♪♫
মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা হয়তো দাঁড়িয়ে আছি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যেখান থেকে ফিরে আসার কোন রাস্তা নেই। শুধুই চেয়ে থাকা....কী হয় সেটা দেখার জন্য। কিন্তু এই ধ্বংসের দ্বারে এসেও সাধ জাগে শেষ বারের মত সূর্যস্নান করে নিতে.....]
৮. জীবন তরী
[প্রতিটা মুহূর্তেই আমরা ছুটে চলছি। কিন্তু জানি না এই ছুটে চলার শেষ কোথায়। জানি না আমাদের আসলে গন্তব্য কী। যেন সবাই অকূল সাগরে ছোট্ট একটা ডিঙি নিয়ে ছুটে চলছি তীরের সন্ধানে। কিন্তু তীরের দেখা মিলবে কিনা আদৌ তা জানি না.....
'তবুও পায়ের চিহ্ন সেদিকেই চলে যায় কী গভীর সহজ অভ্যাসে...']
৯. ফেলে আসা শৈশব
[♫ ‘’সঞ্চয়ে ছিল সেই ফেলে আসা ভাবনার জোছনায় ঘোর অমানিশা।
সঞ্চয়ে ছিল সেই ছেলেবেলা, মনে নীল রঙের নেশা কোন ঘন মেঘের ভেলা।
সঞ্চয়ে ছিলো কতো অভিমান, হারিয়ে যাওয়া গান, পুরনো সম্মান……
এসময় - অসময়, ফুরালো সঞ্চয়।‘’ ♫♫
মাঝে মাঝেই বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি। কোন নির্দিষ্ট কোন জায়গার উদ্দেশ্য নয়। একেবারে অজানা অচেনা কোন জায়গার উদ্দেশ্য। আর এমনি এক ফেরার ঘোরাফেরার মাঝে দেখা মেলে এই বাচ্চাটির। রাস্তার পাশে বসে কাদামাটি নিয়ে আপন মনে খেলছিলো সে। মনে হচ্ছিলো পৃথিবীর কোন চিন্তাই তাকে এখনো ছুঁতে পারে নি। তার কাছে পৃথিবীটা আজো অনেক রঙিন....অনেক আনন্দের....অনেক খুশীর। কতই না রঙিন তার জীবন। দেখে ভীষণ ঈর্ষা হচ্ছিলো.... আর.... ফিরে যেতে ইচ্ছে করছিলো ছেলেবেলার সেই রঙিন দিনগুলোতে।]
উৎসর্গ- তিথীপু-কে
মন্তব্য
আমি হলে পোস্টের নাম দিতাম 'ছবির দেশে, কবিতার দেশে'... আমার খুব, খু-ব প্রিয় একটা বই।
তারা দাগিয়ে গেলাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমারো প্রিয় বই। কিন্তু প্রিন্ট কী বাজে!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
বাহ! পোস্ট প্রসেসিং এর উপরে অনুপম ত্রিবেদী ভাইয়ের ভালো কিছু পোস্ট আছে। আগ্রহ থকলে দেখতে পারেন।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ.... ফাহিম ভাই।
ছবি প্রোসেসিং এর উপরে আমার বেশ আগ্রহ আছে..... সময়করে অবশ্যই দেখাবো।
-----------
মেঘ রোদ্দুর
আপু...
২, ৩, ৫, ৭ ভালো লাগলো। ২ নম্বর দেখে মনে হচ্ছে সবুজের মধ্যে একটা লেডিবাগ।
অনেক সুন্দর লাগতাছে মেঘ রোদ্দুর!! সত্যি খুব খুব ভাল হইসে।।বিশেষ করে ১ম টা এবং ৭ নং টা।।অনেক সুন্দর হইসে
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ.....
----------
মেঘ রোদ্দুর
দোস্ত জোশ...তুই তো টু ইন ওয়ান
হুম.... তোরে ধইঞ্চা....
-------------
মেঘ রোদ্দুর
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
----------
মেঘ রোদ্দুর
৩, ৬, আর ৭ বদহজম হওয়ার মতো কঠিন হইছে
অতীত
একটু ধীরে সুস্থে খাইলে কী এমন ক্ষতি হইতো....????
তুবুও বদ-হজম যখন করেই ফেলছেন..... তখন (গুড়) -এর স্যালাইন খাইয়া দেখেন কাজ হয় কিনা....
আর..... মন্তব্যের জন্য এ কেজি
-----------------
মেঘ রোদ্দুর
৫ নাম্বার ছবিটা (অবকাশ) কোথায় তোলা? পোস্টের শুরু বা শেষে নিজের নাম দেননি দেখছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ছবিটা চারুকলার ভিতর থেকে তোলা.....
আর নাম দেই নি মানে.....!!!! আমি তো বরাবরই কামের আগে নাম প্রচার করার পাবলিক....... যেমন এখানে করলাম......ঠিক শিরোমানেই.... 'স্বপ্নের রঙ**//** মেঘ রোদ্দুর'
নাম তো 'মেঘ রোদ্দুর'....
৪ আর ৭ চমৎকার
...........................
Every Picture Tells a Story
নতুন মন্তব্য করুন