মাইক্রোকেডিট নিয়ে এর প্রবক্তাদের সোজা ভাবে বললে ড. ইউনুসের দারিদ্রকে জাদুঘরে পাঠানোর প্রচেষ্টা ও তার বিপরীতে বিরুদ্ধবাদীদের প্রশ্ন “মাইক্রোকেডিট নিয়ে কবে কার দারিদ্র বিমোচন হয়েছে ?” এ দু আংগিক থেকেই মাইক্রোকেডিট এর প্রভাব (Impact) বা তাৎপর্য জানা জরুরী ।
আর এ Impact বিশ্লেষন করতে হলে যে বিষয় গুলো মাথায় রাখতে হবে তা নিয়ে আমার প্রস্তাবনা :
১. বাংলাদেশের গরীব মানুষ তার জীবনের আয়ের সবচে বড় অংশ ব্যয় করে চিকিৎসা আর বিয়েতে (ছেলের এবং মেয়ের বিয়েতো বরং মেয়ের বিয়ের ঋণ থেকে সর্বশ্রান্ত হবার চক্র শুরু হবার উদাহরণ বোধ করি কম নয় )এ ক্ষেত্রে মাইক্রোকেডিট নেয়া লোকজনের আর না নেয়া লোকজনের ব্যায়ের আপেক্ষিক পরিমান নির্নয় করা গেলে এ খাতে মাইক্রোকেডিট এর কত অংশ দারিদ্র বিমোচনে ব্যবহার না হয়ে এ সব কাজে ব্যয় হয়েছে তা জানা যেত
২. বাংলাদেশে যে কোন লোকজনের ই দরিদ্র বা ধনী বাড়তি টাকা কিংবা আয় বাড়ার দিকে গেলেই প্রথম প্রবণতা বাড়ি বানানো বা পুন নির্মান । ধনী বা মধ্য বিত্তের জন্য এটা স্টাটাস সিম্বল বা বিলাসিতা হলেও দরিদ্রের জন্য বাড়ি বানানো বা মেরামতটা জরুরী ।যে টাকাটা বাড়ির পেছনে গেল তা কিন্তু সরাসরি আর কোন আর্থিক লাভ দেয় না (একই প্রবণতা প্রবাসিদের প্রেরিত টাকার ক্ষেত্রেও হয় ) সুতরাং এরকম কতগুলো র্গহ নির্মানে মাইক্রোকেডিট এর প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষ্য প্রভাব আছে তা জানা জরুরী
৩. মাইক্রোকেডিট এর সাথে মাইক্রোকনজিউম (Micro consume) বা Mass Expansion of Capitalism নামে আরেক টি টার্ম চালু করতে হবে (অর্থনীতি আমার অনার্সের সাবসিডিয়ারি ছিল মাত্র তার পরেও ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি , হয়তো অর্থনীতিতে কোন টার্মস চালু আছে )একটা উদাহরন দিলে বোধ হয় সহজে বোঝা যাবে : গ্রামে প্যারাসুট মিনি কিংবা সানসিল্ক মিনির ৫ বা ২ টাকার কনজউমার কারা ? গ্রামের পাড়ার দোকান দার ও প্রাণ আপ বা প্রাণ লিচু সহ প্রাণের আরো দশটা পণ্য কার কাছে বিক্রি করে । এ ভোক্তা গোষ্ঠির কত ভাগ মাইক্রোকেডিট এর গ্রহীতা কত ভাগ নয় ? একই কথা গ্রামে ডিশ ভিসিডি সহ এ জাতীয় সকল দ্রব্যর ভোক্তা প্রসংগে।
৪. মাইক্রোকনজিউম এর আরেকটা ধরন হচ্ছে ২০/৩০ বছর আগে এক জন দরিদ্র লোক গ্রামের জরঅশয় খাল বা নদী থেকে মাছ রাস্তার পাশে জংগল থেকে শাক পাতাটি সংগ্রহ করতে পারত । তার খাদ্যের চাহিদার একটি অংশ বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পারত ।আজকের বাস্তবতায় তাকে একটি পুটি মাছ( পুটি মাছ এখনও পাওয়া যায় কি ? ) ও পয়সা দিয়ে কিনতে হয় । তার এই খোরাকি চাহিদা পুরনে মাইক্রোকেডিট এর ভূমিকা কি ?
৫. ব্যবসায়িক উদোগ্যের প্রধান একটি উপায় দোকান দেয়া । মুদি দোকান ।মাইক্রোকেডিট এর কত অংশ এই উদ্যোগ দিয়ে সফল বা ব্যর্থ হয়েছে তা জানা জরুরী । কারন প্রবাসি এবং প্রবাসি পরিবারে প্রশ্ন করা হয়েছিল (একটি গবেষণার অংশ হিসেবে ) যে ৫ লাখ টাকা খরচ করে দেশে কিছূ না করে কেন বিদেশে যেতে চায় তখন অন্যতম প্রধান উত্তর ছিল বাকী দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসা লাটে উঠার কাহিনী । সুতরাং মাইক্রোকেডিট এর গ্রহীতা দোকানদাররা ও অল্প পুজির কারনে শিঘ্রই এ বাকী চক্রে পঢ়ে তার মুল টুকু খুইয়ে মাইক্রোকেডিট এর লাভের গুড় হারানোর হার কত ?
৬. এ বছর আলূর বাম্পার তো পরের বছর সবাই আলূর চাষ এবং ভরাডুবি এ গ্রুপে কত % মাইক্রোকেডিট ব্যবহার কারী আর কত % নয় তা জানা
৭. লালমণির হাট জেলার হাতি বান্ধা থানা লোকজনের টয়লেট , বেড়া , বাগান কোন না কোন এন জি ওর সাইন বোর্ড (মাইক্রোকেডিট থেকে বাইরে চলে গেলাম বোধ হয় ) কিন্তু নোয়াখালি জেলার সোনাইমুঢ়ি থানা ঐতিহাসিক গান্ধি আশ্রম ট্রাস্ট ছাড়া আর কোন এন জি ও নাই কেন? বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন ভু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বা ভিন্নতায় মাইক্রোকেডিট এর একই রকম মেকানিজম ব্যবহার করার পদ্ধতিগত ক্ষতি (System loss) কত বা কি ধরনের
এ সকল বিষয় বিবেচনায় আনলে বোধ হয় মাইক্রোকেডিট দারিদ্র বিামোচনে কত শতাংশ অবদান রাখছে কিংবা রাখছেনা তা স্পষ্ট হবে ।
এবং একই সাথে এটাও স্পষ্ট হবে মাইক্রোকেডিট কি পশ্চিমা পুজিবাদিদের কাছে উন্নয়নের বিকল্প মডেল না মাইক্রো লেভেল কে গ্লোবাল লেভেলের পুজিবাদের চক্রে সংযুক্ত রাখার নতুন হাতিয়ার ( যার কারনে পুর্ব পশ্চিমে মাইক্রোকেডিট নিয়ে এত মাতামাতি)
{কিছু পয়েন্ট হয়ত সব গুলোই বাল সুলভ হলো কিন্তু বাক স্বাধীনতা তো সবারই আছে আর যখন কোন পদ্ধতি বা প্রবক্তা কে নিয়ে হাসিনা টু হিলারী প্রবল নাটক চলে তখন আদার ব্যাপারিরও জাহাজের খবর না জানলেও এ বিষয়ে বয়ান দিতে ইচ্ছা হতেই পারে }
মন্তব্য
আপনার এই চমৎকার বিষয়টিকে আলোচনায় আনার জন্যে অভিনন্দন জানাই। তবে বিষয়টি যে অর্থনীতির নিয়মে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমেই চলমান প্রবণতা চিহ্নিত করার দাবী রাখে তা অনস্বীকার্য। আর এজন্যে মনে হয় যথেষ্ট সময় হাতে নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রয়োজনীয় মাঠজরিপ ছাড়া বাস্তবতা প্রতিফলন করানোর কোন উপায় নেই।
আমি অর্থনীতির ছাত্র নই বা এর ধারেকাছেও নেই, তবু এ বিষয়গুলো জানতে যথেষ্ট কৌতুহলী।
এ বিষয়ে প্রথম-আলোয় গত ১৩ মার্চ বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের একটি গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে এই বিষয়গুলো নিয়ে কিছু কৌতুহল উদ্দীপক আলোচনার সার-সংক্ষেপ প্রকাশ করে। এখানে তার লিংক দেয়া হলো।
আর পোস্টে লেখকের নামটা কোথাও থাকা বোধয় উচিৎ ছিলো।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আসলে আপনার লেখাটা পড়েই অনেক দিন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া কথা গুলা লেখা ।
আসলেই
“যথেষ্ট সময় হাতে নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রয়োজনীয় মাঠজরিপ ছাড়া বাস্তবতা প্রতিফলন করানোর কোন উপায় নেই।”
আর যথারীতি অন্য ব্লগের মত লেখা শেষ করেই এন্টার কি চাপার ফল লেখকের নাম বিহীন লেখা
মা-নবী ০৩
মাইক্রোক্রেডিট শব্দটা তো অন্তত ঠিকমতো লিখবেন?
বেনামে লেখা প্রকাশিত না হওয়ার ব্যাপারে সন্দেশ কিছু কথাবার্তা বলেছিলো। এর প্রয়োগ দেখি না কেন?
যথারীতি অন্য ব্লগের মত লেখা শেষ করেই এন্টার কি চাপার ফল লেখকের নাম বিহীন লেখা
আর মাইক্রোক্রেডিট শব্দটির বানান ভুল আসলেই গ্রহণ যোগ্য নয় (আমার বিজয় বায়ান্ন আর সচল এর বাংলা লেখা প্রায়ই ঝামেলা বাঝায় আর সে কারনেই এক বার ক্ষুদ্র ঋণ আরেক বার মাইক্রোক্রেডিট কি লিখব সেই জটিলতায় পঢ়ে একবারে োথা থেকে যেন কপি করেছিলাম আর সেটি পেস্ট করেই চালিয়েছিলাম )
মা-নবী ০৩
কি লেখা হয়েছিলো সন্দেশে? দেখতে চাই!
বেনামে ভালো লেখা কিংবা বিতর্কিত নয় এমন টপিক নিয়ে হলেও সেটা ছাপা হবে না নাকি? আর ব্লগের নাম গুলো তো ব্যক্তিকে ইঙ্গিত করে না খুব একটা, যদি না দীর্ঘদিন থেকে পরিচিতি তৈরি করা না থাকে। তাই আমি আম-জাম, তেলাপোকা, শিরিশ গাছ, গাব গাছ, সুরর্শণা কিংবা নেত্যকালী- যেই নাম(নিক) ই নেই না কেন, লেখা টা বেনামেই থাকছে।
এই বিষয়গুলো নিয়ে চর্বিহীন (ইউনুস ও তার মানসম্মান নিয়ে টানাটানি বা সুধীজনের জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য ও মতামতবিহীন) তথ্যভিত্তিক কোনো প্রকাশনা/ গবেষণা থাকলে কেউ তার লিংক দিবেন প্লিজ।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
পড়তে পার্লাম না।
নতুন মন্তব্য করুন