মিল

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১০/০৪/২০১১ - ৪:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তার সঙ্গে আমার অনেক মিল ছিলো।

তার সঙ্গে আমার অনেক মিল ছিলো।

মিল ছিলো না কোথায়? দু’জনেই বৃষ্টি ভালোবাসতাম। ভালোবাসতাম একে অন্যের কথা শুনতে। হাসতে ও হাসাতেও দু’জনেরই খুব ভালো লাগতো। যদিও তার হাসিটা আমারটা হাসির চেয়ে সুন্দর। সেও একই কথা বলতো। দু’জনই একটা ছোট্ট সংসারের স্বপ্ন দেখতাম। আমাদের একটা ফুটফুটে মেয়ে হবে, নাম হবে... না থাক, সবার সেটা জানা দরকার নেই। ছোট ছোট সিক্রেটগুলো নিজেদের মাঝেই থাক। হ্যাঁ, দু’জনই নিজেদের একান্ত অনুভূতিগুলো শুধু নিজেদের জন্যই রেখেছিলাম।

দু’জনের তখনও সামনা সামনি দেখা হয়নি। ছবিতেও না।

দু’জন তখনও নিজেদের মধ্যকার মিল খুঁজেই যাচ্ছিলাম। দু’জনেরই ভালো লাগছিলো।

অন্যদের মতও মিল। যেমন, দু’জনেই নিয়ম করে খাবার খাই। ঘুমাই। ক্লাসের ফাঁকে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেই। আলাদা ক্যাফেতে আড্ডা দেই। আমি সিগ্রেট ফুঁকিনা, এটাও মিল। সে যখন তখন অশ্রু বিসর্জন দেয়না, এটাও মিল। অনেক মিল ছিলো আমাদের আরও। টাইলস বা ইটের সাজানো ব্লকের মাঝে মেপে মেপে পা ফেলে হাঁটতে ভালো লাগাটাও দুজনের বেশ মিলেছিলো। দু’জনেই তাই মিল রেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম।

মনের মিলগুলোকে তাই সরাসরি চোখের মিলে আনতে দু’জনে মিলেই সিদ্ধান্ত নিলাম। তারিখটাও মিলিয়ে নিলাম। জানুয়ারীর চার। সময় মধ্যদুপুর। মিলগুলো বেশ ভালোই মিলছিলো। দৈবেই দু’জনের আলাপ। দেখা হওয়াতেও তাই আমরা দৈবের ইচ্ছের সুযোগ রেখেছিলাম। দেখা হবার সময় হাতে যোগাযোগের আধুনিক কোন মাধ্যম থাকবেনা। নির্দিষ্ট করে কিছু না, দু’জনই এক ব্যস্ত শহরের খুব বেশি ব্যস্ত সড়কের দু’পাশ দিয়ে হেঁটে আসবো। দেখা হবে। ওহ! দু’জনেই ব্যস্ত মানুষ দেখতে ভালোবাসতাম। এত মিল!

সে আসবে নীল রঙ্গের সাধারণ পোশাকে। আর বিশেষ কিচ্ছুটি নেই। যেন তাকে অন্য মেয়েদের থেকে খুব আলাদা না দেখায়। আমি পরবো যেকোন রকম চেক শার্ট আর কালো প্যান্ট। মনের মিল দিয়ে নিজেদের খুঁজে পাবোই। দু’জনেই এতে বিশ্বাসী ছিলাম। আজ দেখা না হলে, আর কখনই হবেনা- নিয়তি চায়নি বলে মেনে নেবো। দু’জনেই একমত ছিলাম এখানেও।

ঠিক সময়েই সে সড়কে পৌছে গিয়েছিলাম। অনেক মানুষ ছিলো সেখানে, অনেক গাড়ি ছিলো, তাই জ্যাম ছিলো। এপাশ থেকে ওপাশ দেখা যায়না। সব দেখা হলো, সব হলো। শুধু তার দেখা হলোনা। হলোই -না। ব্যস্ত সড়কে কি ঢেকে গেলো তার মুখ? আমিও কি তার কাছে অচেনাই থেকে গেলাম?

সব তো ঠিকই ছিলো! এমনকি ঠিক ছিলো, একই রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে এসে সড়কের ঠিক মাঝ দৈর্ঘ্যে এসে মিলবো- দু’জনেই তাই মিল রেখে একই সড়কের নিজেদের ডান পাশ ধরে হেঁটে পরস্পরের দিকে এগুবো!


মন্তব্য

অমিত আহমেদ এর ছবি

মজার।
তবে লেখকের নাম নাই কেনো?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

দেখাটা হলোই না??!! কি হলো শেষটায়?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

পাগল মন এর ছবি

ভালো লাগলো। তবে শেষটা ঠিক ধরতে পারলাম না।

নাম দিতে ভুলে গেলে চলবে?

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।