গত কয়েকদিন আগে হয়ে গেলো মহাকাশে প্রথম মানব বিচরণের (এপ্রিল ১২, ১৯৬১) সুবর্ণজয়ন্তী| যে মানুষটির চেহারা এরসাথে মনে ভেসে ওঠে তিনি ইউরি গ্যাগারিন| কৃষকের ঘরে জন্মানো ৫ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এই মানুষটি মানব সভ্যতার উজ্জলতম নক্ষত্র হয়ে থাকবেন চিরকাল| মহাকাশ থেকে ভেসে আসা প্রথম মানুষের প্রথম কথাটা ছিল "পৃথিবীটা দেখছি! সত্যিই এত সুন্দর এই পৃথিবী!"| তাঁর এই বিজয়ের পর তাঁকে এতটাই মূল্যবান বিবেচনা করা হতো যে এর পর দীর্ঘ ছয়টি বছর তাকে মহাকাশ ভ্রমণের ঝুঁকিতে পাঠাতে চায়নি সরকার| দায়িত্ব দেয়া হয় নতুন মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণে| তার কাছেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন প্রথম নারী মহাকাশচারী ভেলেন্তিনা তেরেসকোভা| ১৯৬৭ সালে আবার তাকে মহাকাশে পাঠানোর জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়| হয়ত দ্বিতীয়বারের মতন মহাকাশে বিচরণ করতেন যদি না সদাহাস্যময় মানুষটা ১৯৬৮ সালে মারা যেতেন জঙ্গি বিমানের (MiG-15) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে| মানুষের এতবড় অর্জনের পর মাত্র সাতবছর পেরোনোর আগেই তার অন্যতম নায়কের চলে যাওয়া সত্যি দুঃখ দেয়|
এই এপ্রিল ২০১১ তে কেন্দ্রীয় কমুনিস্ট পার্টি পরিচালিত ১৯৬৮ সালের একটি "সর্বোচ্চ গোপনীয়" অনুসন্ধান প্রতিবেদন উন্মুক্ত করা হয়| প্রতিবেদনটিতে উপসংহার টানা হয়েছিল যে আবহাওয়া বেলুন এড়াতে গিয়ে খুব দ্রুত বাঁক নেয়ার ফলে বিমানটি উড্ডয়ন সীমার একটি চরম ক্রান্তিকর অবস্থায় (Super critical flight regime) প্রবেশ করে এবং বিমানের পাখা বাতাসের উপর তার দখল হারায় (Stalling)|
তো এই দখল হারানোটা কি ব্যাপার? সেটা বুঝতে হলে দখল করার ব্যাপারটা আগে বুঝতে হবে| একটা বিমান মূলত ভেসে থাকে চার রকম বল এর ভারসাম্য রক্ষা করে| প্রথমেই ধরণী মায়ের মায়ার টান - ওজন, তাকে সামাল দিতে উর্ধবল (Lift)| এদুটো কাজ করে উলম্ব ভাবে| সাথে গতির কারণে বাতাসের বাধা বল (drag) আর তাকে প্রতিহত করতে সম্মূখী বল| যেগুলো কাজ করে অনুভূমিক ভাবে| যদি কোনো দিকে এই ভারসাম্য নষ্ট হয় তবে সংশ্লিষ্ট দিকে বিমান ত্বরিত বা মন্দিত হবে|
তো ওজন কিভাবে কাজ করে তা আমি নিজেই ভালো করে জানি না| পদার্থবিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন, গ্রাভ্রিট্রন না জিওডেসিক সরলপথ কার ভাগে তালগাছটা পড়বে| সাধারণ পাঠক হিসাবে আমাদের ধরে নিতে নিশ্চই আপত্তি নেই যে ওজন ছিল, আছে এবং থাকবে| তো বিমানটাকে এই ওজনের বিরুদ্ধে আরেকটা বল তৈরী করতে হয় উল্টো দিকে, যাকে বলে উর্ধবল (Lift)| সেই কাজটা সাধারনভাবে করে বিমানের পাখা| এই উর্ধমুখী বল তৈরী করতে গিয়ে একটা বাধার সৃষ্টি হয়| যাকে বলা যায় উর্ধবলজনিত বাধা (Drag due to lift)| সাথে বাতাসের সাথে সরাসরি ঘর্ষণের বাধা তো আছেই| আর এইসব বাধা এড়ানোর জন্য আছে হরেকরকমের এঞ্জিন যা বিমানটাকে ঠেলে সামনে এগিয়ে নেয়| ওজন আর এঞ্জিনটাকে সরিয়ে রাখলে দেখা যাচ্ছে যে নাটের গুরু হচ্ছে পাখা| এর জন্যই উর্ধবল তৈরী হয়, আবার এর জন্যই উর্ধবলজনিত বাধাও তৈরী হয়|
কিভাবে একটা পাখা উর্ধবল সৃষ্টি করে তা সাতকান্ড রামায়ন| হাল্কারুপর্ঝাপ্সা হিসাবে বলা যেতে পারে যে পাখা তার চারপাশের প্রবাহমান বাতাস কে একটা নিম্নমুখী গতি দেয়, আর ফলশ্রুতিতে নিজে উর্ধবল পায় (circulation theory)| যেমনভাবে নৌকার পালে তির্যক বাতাসের গতিপথ বদলে গিয়ে নৌকাকে সামনে ধাক্কা দেয় অনেকটা তেমনি (তবে সত্যি বলতে ব্যপারটা বেশ প্যাচালো)| এটা করতে গিয়ে প্রবাহমান বাতাসের ভূমির সমান্তরালে যে গতি থাকে তাকে কিছুটা কমিয়ে দেয়| কিন্তু আসলে বাতাস তো প্রবাহিত হয়না, বরং বিমানটাই বাতাসের ভেতর দিয়ে সামনে আগায়| তাই ভূমির সমান্তরালে বাতাসের গতি কে বাধা দেয়া মানে আসলে বিমানের নিজের গতিকেই বাধা দেয়া| যার কারণেই সৃষ্টি হয় উর্ধবলজনিত বাধার| এখানে আসল সুবিধাটা হলো যতটুকু উর্ধবল সৃষ্টি হয় উর্ধবলজনিত বাধা তৈরী হয় তারচাইতে অনেক অনেক কম| তাই মহাকাশযানকে যেখানে ৬০০ টন ওজন উড়ানোর জন্য ৬০০ টন ধাক্কাই (নিম্নমুখী) দিতে হয় সেখানে এয়ারবাস A-380 কে ৬০০ টন ওড়ানোর জন্য ২৩ টন এর কম ধাক্কা (ভূমির সমান্তরাল) দিলেই চলে, শুধুমাত্র পাখার উপর ভেসে অনুভূমিক ভাবে ওড়ার জন্য| ভেক্টর বলবিদ্যার সাহায্যে বাতাসের ভরবেগের পরিবর্তনের উপাংশ যাচাই করে সহজেই এটা দেখানো যেতে পারে|
একটু ভাবলেই বোঝা যায় যে পাখা বাতাসের সাথে যত বেশি তির্যক ভাবে অবস্থান করবে অথবা বলা যায় বাতাসের গতিপথ যত বেশি বদলে দেবে ততবেশী উর্ধবল তৈরী করবে| কিন্তু আসলে ঠিক ঠিক তা নয়| একটা নির্দিষ্ট কোণ পর্যন্ত সেটা বাড়তে থাকে কিন্তু সেই নির্দিষ্ট ক্রান্তি কোণ পেরিয়ে যাওয়ার পর উর্ধবল হঠাত প্রায় কয়েকগুন কমে যায় এবং উর্ধবলজনিত বাধা কয়েকগুন বেড়ে যায়! নিচের ছবিতে ব্যাপারটা দেখানো হয়েছে|
কেন উর্ধবল কমে যায়? সহজ বাংলায় এই বল এর একটা বড় অংশ আসে পাখার বক্র উপরিতলের কারণে বাতাসের গতিপথ বদলানোর জন্য| তো ক্রান্তি কোণের চাইতে বেশি কোণ চলে গেলে বাতাস আর কামড় বসাতে পারে না উপরিতলে, বাতাসটা "আলগা" হয়ে যায়, আর তাই উর্ধবল ও কমে যায়| ব্যাপারটা আরেকটু খোলাসা করা যাক| ধরুন আপনি আপনার বিমানের গতিবেগ কমাচ্ছেন, তো গতি কমাতে থাকলে আপনাকে পাখাটা আরো বেশি কোণে বাকিয়ে দিতে হবে একই পরিমান উর্ধবল তৈরির জন্য| এভাবে গতি কমাতে কমাতে আর পাখার কোণ বাড়াতে বাড়াতে এমন একটা অবস্থানে পৌছাবেন যেখানে পাখা বাতাসের উপর তার দখল হারাবে| এই সর্বনিম্ন গতিকে বলে ক্রান্তি গতি| একটা ব্যাপার লক্ষনীয় যে ক্রান্তি কোণ সবসময় নির্দিষ্ট, কিন্তু ক্রান্তি গতি বদলাতে পারে| ক্রান্তি গতি সম্পূর্ণ নির্ভর করে কতটুকু ভার তাকে বইতে হচ্ছে তার উপর| ধরুন একটা হালকা বিমান চালাচ্ছেন (মানে খুব কম উর্ধবলের দরকার) সেক্ষেত্রে ক্রান্তি কোণে পৌছানোর আগে পর্যন্ত সেই উর্ধবল অনেক কম গতিতেই পেতে পারেন| উল্টো ভাবে ভারী বিমানের ক্ষেত্রে (মানে বেশি উর্ধবলের দরকার) ক্রান্তি কোণে পৌছানোর আগে পর্যন্ত সেই উর্ধবল পেতে আপনাকে তুলনামূলক বেশি গতিতে থাকতে হবে| তো আমরা দেখছি যে ক্রান্তি গতির মান নির্ভর করে নিম্নমুখী বলের উপর|
এই নিম্নমুখী বল বিমানের ওজন ছাড়াও আরেকটা ভাবে আসতে পারে, তা হলো কেন্দ্রবিমুখী বল| বিমান তীক্ষ্ণ বাঁক নিতে গিয়ে বিরাট রকমের কেন্দ্রবিমুখী বলের মুখোমুখি হতে পারে| নিজ ওজনের ১০-১২ গুন পর্যন্ত| সাধারণত বৈমানিকরা ৯ গুন ওজনেই জ্ঞান হারান মস্তিস্কে রক্তসন্চালনের অভাবে| তো যাইহোক, যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে বাতাসের উপর দখল হারানোর এই ঘটনাটা খুবই সম্ভব যদি কেউ খুব বেশি গতিতে তীক্ষ্ণ বাঁক নেয়ার চেষ্টা করে| আর ঠিক এটাই হয়েছিল বলে রায় দিয়েছিল তদন্ত কমিটি| কথা হচ্ছে সেটা কি আবহাওয়া বেলুন এড়ানোর জন্য নাকি কোনো অজানা উড়ন্ত বস্তুর সাথে সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য? উত্তরটা একমাত্র গ্যাগারিনই দিতে পারতেন|
(শিরোনামটা হাস্যকর, ভাষাটাও পড়তে হয়ত খুব খাটোমটো হয়েছে| সব হয়ত ঠিকমত বোঝাতেও পারিনি| বিরক্তির উর্দ্রেক করে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী)
ঈগল
মন্তব্য
ভাল্লাগছে লেখা। যদিও পুরোটা বুঝি নাই। আমার এরিয়ার বাইরের জিনিস এগুলো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অনেক অনেক ধন্যবাদ হাসিব ভাই আপনি আমার প্রথম লেখায় প্রথম মন্তব্যকারী! পুরোটা না বোঝাতে পারার ব্যর্থতা আমার| আসলে এর আগে এইসব টেকনিকেল কথাবার্তা বাংলায় চিন্তা করিনাই কখনো, তাই বাংলা করতেগিয়ে যাকেবলে একদম লেজেগোবরে অবস্থা| আর আপনার লেখা কিন্তু আমার খুব ভাল্লাগে|
ঈগল
চমৎকার লেখা। দুয়েক জায়গায় একটু খটমট লাগল বিষয়টা আমার না দেখে। এরকম আরো লিখুন।
এটা প্রথম লেখা হলে, সচলায়তনে স্বাগতম।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অনেক ধন্যবাদ অনার্য সঙ্গীত| এটাই আপনার আর আমার পার্থক্য আপনি লিখলে কোনো খাটোমটো লাগে না, বিষয় টা আমার না হওয়া সত্তেও| আপনি জানেন আপনার লেখা পরে কতবার হাত কামড়াইতে ইচ্ছা করসে যে কেন অনুজীববিদ্যা/জীববিদ্যা পরলামনা জীবনে|
হ্যা এটাই প্রথম লেখা| শুরুতে লেখতে গিয়ে একটু বেশি সময় লাগছে| কয়দিন পর হয়ত অতটা লাগবে না|
আবার ধন্যবাদ
এতো বিনয় ছেড়ে দেদারসে লিখতে থাকুন। সচলের সবাই বানানের ব্যপারে একটু খুঁতখুঁতে, মনে রাখবেন। লিখতে লিখতেই হাত সড়গড় হবে। প্রথম প্রথম সবারই 'টাইপিং স্পিড' কম থাকে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আসলেই ভালো লেখা। অনেককিছু বোঝা হল।
অলস সময়
অনেক ধন্যবাদ পলাশ
চমৎকার লেখা।
অ.ট.: আপনি আর সোনার বাংলাদেশ ব্লগের ঈগল কি একই ব্যক্তি?
ধন্যবাদ দ্রোহীদা
না, এটাই আমার প্রথম বাংলা ব্লগ| সোনারবাংলাদেশ নামটাও সচলায়তনে শুধু শুনেছিই কিন্তু এখন গিয়ে তো দেখি ভয়াবহ অবস্থা মরেগেলেও আমি ওই ব্যক্তি না|
আপনার লেখা অনেকদিন মিস করি|
চমৎকার এবং পরিশ্রমী লেখা। ধন্যবাদ। সচলে স্বাগতম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনেক ধন্যবাদ পান্ডবদা| আপনার গল্পের ভক্ত কিন্তু আমি| আর আপনার মত গল্প কখনোই লেখতে পারব না তাই এই লক্কর ঝক্কর প্রচেষ্টা| আবারো ধন্যবাদ
আমার গল্প নিয়ে আপনার পোস্টে আর কিছু না বলি। স্নাতক পর্যায়ে অ্যারোডিনামিক্স পড়ার অভিজ্ঞতা আছে, তাই লেখাটা পড়তে বেশ ভালো লেগেছে। আর আপনি যেভাবে লিখেছেন তাতে আমার মনে হয় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞান পড়ুয়া যে কেউ এটা বুঝতে পারবেন। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানের জিনিশগুলো মনোজ্ঞ করে লেখার লেখক সংখ্যা খুব কম। আপনি চেষ্টা চালিয়ে যান, আখেরে আমাদের সবার উপকার হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হাহাহা অতবড় জিনিস ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে ঘাড় মাটকে যাবে| বাযুগতিবিদ্যা আমার খুবই প্রিয় বিষয়| অনেকেরই আগ্রহ আছে কিন্তু দুক্ষের কথা বুয়েটে পড়ানোর মত কেউ ছিলনা / নেই| প্রবীন শিক্ষক যারা আগে পড়াতেন তাদের হামবড়া ভাব আর ছাত্রদের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য অনেককেই নিশ্চই এই বিষয়টার প্রতি আগ্রহী করেনি| (অবস্য সেই লংকা বিভাগের প্রায় সব অধ্যাপকরাই রাবন)| দুনিয়ার বেশিরভাগ বড় এয়ারলাইনার গুলো এখন তাদের মেইনটেনেনস এর কাজ বাইরে করে| আমেরিকান এয়ারলায়ন্স এর বেশিরভাগ কাজ হাজার মাইল দুরে তুরস্কে এনে করানো হয়| দেশে সেইরকম কিছু থাকলে নিদেনপক্ষে এশিয়ান কোম্পানিগুলোর কাজ করে কিছু লোকের পেটের ভাত জুটত|
চেষ্টা করব লিখতে| তবে সমস্যা হচ্ছে বাংলা প্রতিশব্দে আমার দখল খুবই কম| তাই ইংরেজি শব্দগুলোর বাংলা করার সময় হোচট খেতে হয় বারবার| আর আমার মনে হয় যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক লেখা গুলো বরং অষ্টম-নবম শ্রেনীর বাচ্চাদের উপযোগী করে লেখা উচিত| কারণ ঐসময়্তাতেই ওদের আগ্রহটার মোড়ঘুরে| সোভিয়েত আমলের মীর বা রাদুগা প্রকাশনীর বই গুলো সেক্ষেত্রে আদর্শ ছিল|
১. বুয়েটে অ্যারোডিনামিক্স হচ্ছে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির "ক্ষেত্রজ সন্তান"-এর মতো। এই বিদ্যাটি এক কালে ভালো পড়াতেন মোশাররফ হোসেন খান স্যার আর তাহের আলী স্যার। তাঁদের অনুপস্থিতির দরুন যিনি এটা পড়ান তিনি তার narcissistic attitude-এর জন্য কোনো বিষয়ই ঠিকমতো পড়াতে পারেন না। ইএমই বিল্ডিং-এর সিঁড়ির নিচে বহু বছর একটা জেট ইঞ্জিন পড়ে ছিলো (এখনো আছে কিনা জানি না)। একটা জেট প্রপালশন ল্যাব করার কথা কেউ ভেবেছে বলেও মনে হয় না। সাব-কন্ট্রাক্টে বা অফ-শোর ফ্যাক্টরী হিসাবে ছোটখাটো (বিশেষত লেবার ইনটেনসিভ) কাজগুলো অনায়াসে বাংলাদেশে করা যায়। কিন্তু এই চিন্তা করার সময় কই বলুন!
২. ষাট-সত্তরের দশকে আবদুল্লাহ-আল-মুতী শরফুদ্দীন, আবদুল হক, স্বপন কুমার গায়েন, কানাই লাল শীল-এর মতো লেখকেরা পঞ্চম-অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে বাংলায় সহজ ভাষায় বিজ্ঞানের বই লিখতেন। সেই বইগুলোর অনেকগুলোর পুনর্মুদ্রণ যেমন জরুরী, তেমনই জরুরী ঐ বয়সটাকে টার্গেট করে নতুন নতুন বই বাংলায় প্রকাশ করা। বিজ্ঞান, যুক্তি, বোধ ইত্যাদি বিষয়গুলোর দিকে ঐ বয়সে আগ্রহী করতে না পারলে আমাদের কপালে ভোগান্তি বাড়বে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
স্যাররা যতদিন ইগোম্যানিয়াক এর মত আচরণ করবেন, আর নিজেদের প্রফেট টাইপের কিছু ভাববেন ততদিন মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট আরো পচতে থাকবে| যে এঞ্জিনটার কথা বলছেন সেটা এখন heat transfer ল্যাবে ডেমো দেয়া হয়| আর উদ্যোগ নিয়ে কি বলব বলুন, কিইবা বলার আছে?
নতুন বই না হোক, পুরনোগুলো অন্তত পুনর্মুদ্রণ করার উদ্যোগ নিতে পারে সামর্থ্যবান কেউ|
১। ডি দিয়ে নাম শুরু ডি দিয়ে শেষ? খচ্চর একটা।
২। হ।
১. মুর্শেদ, আমি ডি-মহাজনের কথা বলিনি। আমি এ-মহাজনকে বুঝিয়েছিলাম। ডি-মহাজনের ব্যাপারে এমন সব কথা জানাতে পারি যেগুলো শুনলে তাকে "খচ্চর" বলাটাও যথেষ্ট মনে করবেন না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
উচ্চতর বিজ্ঞান বা প্রযুক্তির লেখা সহজভাবে সাধারণ মানুষের কাছে পৌছানোর কাজ অনেক কম হয়েছে। আপনার ব্লগ এ দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আশা রাখি।
হা হা হা মুর্শেদ ভাই আমি শুধু ভাল লাগসে বলেই লিখসি। অত ভারিক্কি টাইপের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ধরিয়ে দিলে কিন্তু পালিয়ে যাব
চমৎকার লেখা। যেই পরিমাণ ঝুকি সেই যুগের কস্মোনট আর এস্ট্রোনট-দের নিতে হত (এখনও হয়), ভাবতেই অবাক লাগে।
সেরকমই একজন
ধন্যবাদ অমিতদা| আমারতো মনে হয় এইটা স্নায়ুযুদ্ধের একটা বেশ ভালো ব্যাপার ছিল| সাহস নিয়ে কত কিছু করে ফেলেছে মানুষজন| ঝুঁকিই যদি না থাকলো তাহলে কাজ করে আর মজাটা কি|
কমারভ এর মত লোকদের মৃত্যু কষ্ট দেয়| কিন্তু তবুও আমাদের মত অকৃতজ্ঞ, অজ্ঞাত হয়ে তো মরতে হলো না| পৃথিবীকে, সভ্যতা কে কিছুতো দিয়ে গেছেন| আর মানুষ তাদের মনেও রেখেছে| এরচে সার্থক জীবন তো আর হয় না|
বাহ, সহজ করে লিখায় অনেক কিছু জানলাম।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ রোমেল ভাই
আমার ছেলেবেলার প্রিয় নায়ক ইউরি গ্যাগারিন। অনেকদিন পর তাকে নিয়ে কোন লেখা পড়লাম।
এই বিষয়ে আমার আগ্রহ বিস্তর। আপনার লেখাটা সেই সুত্রে খুব উপাদেয় লাগলো। বাংলায় এসব নিয়ে খুব একটা লেখালেখি নেই। লিখতে থাকুন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধন্যবাদ ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম| চেষ্টা করব|
ধন্যবাদ মাহবুব রানা
সচলায়তনে স্বাগতম...
বিনয় বাদ দিয়া এসব নিয়া নিয়মিত লিখতে থাকেন...
যারা জানে তাদের অবশ্যই বাধ্যতামূলক লেখা উচিত...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজ্রুল্ভাই
আসলে প্রথম লেখা তো তাই একটু বিনয় আরকি
টেকনিকাল কথাগুলো বুঝতে সমস্যা হয়নি, তবে একটু সহজ হলে আরো ভাল হত হয়ত। যাহোক, লিখতে থাকেন নিয়মিত।
অনেক ধন্যবাদ কৌস্তুভদা, মূল্যবান মতামতের জন্য| একটু নির্দিষ্ট করে বলবেনকি কিরকম সহজ করার কথা বলছেন? মানে আমি এটা উচ্চমাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান সমমানের রাখতে চেয়েছি| যদিও কোনো সমীকরণ ব্যবহার করিনি|
আরো ব্যখ্যা করা যেতো কিন্তু তাতে কলেবর এত বেড়ে যেতো যে এই নিরস টাইপের লেখা পরার জন্য কেউ ব্লগ এ ঢুকতো বলে মনে হয় না| যদিও একান্তই আমার মতামত উপকৃত হতাম যদি বলতেন ঠিক কি রকম ভাবে চাচ্ছেন|
উচ্চমাধ্যমিক পদার্থবিদ্যা হলে ঠিক আছে। তবে একটু নামিয়ে এনে মাধ্যমিক বিজ্ঞানের স্তরে রাখলে হয়ত বেশি পাঠকের সুবিধা হত। ঠিকাছে, আপনার যুক্তিতে দোষ নাই।
নতুন মন্তব্য করুন