• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

গেরিলা: আবেগ, স্বপ্ন, সম্ভাবনা, অতঃপর…

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১৯/০৪/২০১১ - ৮:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শুরুতে দুটো ফেসবুক স্ট্যাটাস তুলে দিলাম, আলোচনার সঙ্গে যা প্রাসঙ্গিক। সেই সঙ্গে একটি স্ট্যাটাসের নিচে করা আমার মন্তব্য, যা অপর স্ট্যাটাসটির প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছিল।

১. ফাহমিদুল হক/১৩ এপ্রিল: 'মেহেরজান'বিরোধীরা দলে দলে 'আমার বন্ধু রাশেদ' আর 'গেরিলা' দেখছেন তো?

কয়েকটি প্রতিক্রিয়ার জবাবে তিনি এরপর বলেন: আমি মনে করি যারা মেহেরজানবিরোধীদের জন্য রাশেদ বা গেরিলা দেখা ফরজ। আজ হোক, বা কালে হোক, সৎ উদ্যোগে সমর্থন লাগবে কিন্তু!

২. আবু শাহেদ ইমন/১৫ এপ্রিল: "গেরিলা" সিনেমাটি একটা পূর্ণাংগ (Complete) সিনেমা...অসম্ভব ভালো লেগেছে আমার। প্লিজ প্লিজ ...সবাই হলে গিয়ে ছবিটি দলে দলে দেখুন এবং আপনার ভাললাগাটাকে ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে। কেবলমাত্র যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারের চর, জোচ্চর, হিংসুক, কালোবাজারি আর পাকিস্তানের সাপোর্টারদের ছবিটি ভালো নাও লাগতে পারে। এদের জন্য সিনেমাটি নিষিদ্ধ!!!

আমার প্রতিক্রিয়া ছিল: ভাই, সম্প্রতি দেশের একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র তাত্বিক, গবেষক এবং সমালোচক- যারা মেহেরজানের বিরোধিতা করেছে, তাদের জন্য আমার বন্ধু রাশেদ আর গেরিলা দলে দলে দেখতে যাওয়া 'ফরয'- এই বলে 'ফতোয়া' দিয়েছেন। আমরা এধরণের বালখিল্যতা না করি। সবাই দেখুক...যুদ্ধাপরাধীরাও। গাত্রদাহ নিয়ে বাসায় ফিরুক। আর বুঝে নিক 'রিকনসিলিয়েশন' নামের যে ঘোড়ার ডিমে তারা বসে বসে তা দিচ্ছিল, তা পিঁপড়েয় খেয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত: ১.ফাহমিদুল হক তখনও গেরিলা দেখেননি, কোনো একজনের মন্ত্যব্যের প্রেক্ষিতে জানিয়েছিলেন, যেহেতু ‘গেরিলারা’ তাকে চেনেননা এবং প্রিমিয়ারে ডাকেননি-তাই তখন পর্যন্ত ছবিটি তার দেখা হয়নি। তবে শিগগিরই দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন।
২. আবু শাহেদ ইমনের স্ট্যাটাসে মন্তব্যটা করার সময় আমিও ‘গেরিলা’-দেখা-হয়-নাই-দলে ছিলাম।বন্ধুদের নিয়ে দেখবার তারিখ-সময় ঠিক করছিলাম।

আবেগ.

আজ অফিসের ছুটির দিনের বিকেলটায় বলাকা হলে নাসিরউদ্দিন ইউসুফের ‘গেরিলা’ দেখা হ’ল। দেখতে দেখতে যতবার গত কয়েকদিনের রিভ্যু এবং পরিচিতজনদের প্রতিক্রিয়াগুলো মনে করছিলাম, ততবারই মনে পড়ছিল অন্য কোনো এক প্রসঙ্গে বলা এক বন্ধুর একটা কথা - সমর্থন ব্যাপারটা প্রায় সবসময়ই আবেগজাত, যুক্তিসিদ্ধ নয়।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ ছিল একই সঙ্গে প্রচন্ডভাবে যুক্তিপরম্পরাজাত এবং প্রবলভাবে আবেগী একটি অধ্যায়। আমি বিশ্বাস করি, যে বীর যোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করার জন্য অস্ত্র ধরেছিলেন, তাদের প্রত্যেকের মধ্যেই একটি বিশুদ্ধ আবেগ কাজ করেছিল, যা যুক্তির অনেক উর্দ্ধে মহত্তম কোনো স্থান দাবি করে। এবং আমরা যারা, মুক্তিযুদ্ধের অন্তত একযুগ পরে জন্মে বইয়ের পাতা, ভিডিও ফুটেজ আর সিনেমায় মুক্তিযুদ্ধকে জেনেছি, তারা কোনোদিনই এই আবেগকে পুরোপুরি উপলব্ধি করে উঠতে পারবোনা। করা যায়না।
কিন্তু তারপরেও কোনো কোনো বই পড়তে গিয়ে আমরা শিউরে উঠি, কোনো কোনো সিনেমা ভেতরে কোথাও মোচড় দেয়, গুড়গুড় করে বাজতে থাকে একটা চেতনার প্রতিধ্বনি - দেশটাকে ভালবাসি। দাঁড়িয়ে যাই ঐ বিশুদ্ধ, মহৎ আবেগের মুখোমুখি।
গেরিলা’র থেকে প্রত্যাশা ঠিক তাই ছিল। প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল যখন ফিল্ম সোসাইটির অনেক বন্ধু, ছোট এবং বড় ভাইদের কাছ থেকে ঐধরণের প্রতিক্রিয়াই পাচ্ছিলাম। এসবের পর আমিও ছবিটা দেখতে বসেছিলাম স্রেফ ঐ আবেগের মিছিলটায় সামিল হতে।
কিন্তু গেরিলা আমাকে পুরো পর্দা এবং পুরোটা সময় জুড়ে ভুলিয়ে রাখতে পারলো না- আমি আদতে একটি ছবিই দেখছি।

স্বপ্ন.

আমরা যারা বিভিন্ন সময় ফিল্ম সোসাইটি করেছি, প্রায় সবাই স্বপ্ন দেখেছি কখনো না কখনো ফিল্ম বানাবো। সেক্ষেত্রে বিষয়টা যদি হয় মুক্তিযুদ্ধ, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে আমার ভাবনাটি ছিল, আমি ঠিক মুক্তিযুদ্ধের সময়কালটার পটভূমি বেছে নেবোনা। কারণ একটাই, সেকেন্ডারি অভিজ্ঞতায় আমি কোনো না কোনোভাবে বিষয়টার প্রতি অবিচার করে ফেলবো, শত গবেষনার পরও সে সম্ভাবনা থেকে যায়। বরং ঐ চেতনাটাকে ধরে সমসাময়িক ইস্যুর সঙ্গে মিলিয়ে গল্প দাঁড় করানো আমার কাছে সৎ হবে বলে মনে হয়েছে। যা নতুন প্রজন্মকে অবক্ষয়ের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে একটা ঝাঁকুনি দেবে। উস্কে দেবে ঐ অদ্ভুত আবেগটাকে। এটা নিতান্তই আমার অভিমত, আমারই জন্য।
কিন্তু নাসির উদ্দিন ইউসুফের ক্ষেত্রে?
নাসিরউদ্দিন ইউসুফ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন আমরা সবাই জানি। '৭১ এ তাঁর অভিজ্ঞতাগুলো নিশ্চয় অমূল্য। তাঁর নিজের কাছে তো বটেই, আমরা যারা পরবর্তী প্রজন্ম তাদের জন্যও। সেগুলো ভাগাভাগি করার একটা সুযোগ হিসেবে ‘গেরিলা’ তাঁর স্বপ্নের ছবি ছিল। মিডিয়া মারফত জেনেছি। খুবই সঙ্গত স্বপ্ন। আমাদের কাছেও ছিল তাই প্রত্যাশিত ছবি । কিন্তু পরিচালকের স্বপ্ন গেরিলা কদ্দুর পূরণ করতে পেরেছে জানা নেই, আমার প্রত্যাশা একটা হোঁচট খেয়েছে। একই সঙ্গে ব্যথিত করেছে এর ‘অথেনটিক’ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাগুলোর অপমৃত্যু।

সম্ভাবনা.

সম্ভাবনা আসে ছবিটার ট্যাগলাইনের সাথেই- সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিষিদ্ধ লোবান’ ও একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অবলম্বনে নির্মিত। নিষিদ্ধ লোবান নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। সেদিকে যাবও না। বরং আগ্রহের জায়গা বিশেষভাবে ছিল ‘একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা’র অংশটি। এই মুক্তিযোদ্ধা, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু স্বয়ং। তাই সম্ভাবনার বেশিরভাগ ভার গিয়ে পড়ে এই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার সেলুলয়েডীয় পুণনির্র্মাণেই।অন্তত আমার কাছে। পুরো প্রথমার্ধ জুড়েই ছড়িয়ে আছে এই অভিজ্ঞতার সম্ভাবনাগুলো। মাঝে মাঝেই যা চমক লাগায়। বিলকিসদের পাড়ার শান্তি কমিটির লোকগুলোর তৎপরতা, আলতাফ মাহমুদ প্রসঙ্গ, শম্পা রেজার করা চরিত্রটির আত্মদানের ঘটনা,- সবকিছুতেই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ‘অথেনটিসিটি’ আঁচ করা গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন তৎপরতার দৃশ্যগুলো নির্মাণেও এই টাটকা অভিজ্ঞতা রসদ জুগিয়েছে ঠিকঠাক।শিল্পনির্দেশনায় অনিমেষ আইচের কাজের নেপথ্যেও নিশ্চই ইউসুফের অভিজ্ঞতার যোগান ছিল।

অতঃপর.

কিন্তু যা হ’লনা তা হ’ল- সবটাকে একটা অভিন্ন সুতোয় গাঁথা। গেরিলা স্পষ্টতই দুটো ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে- বিরতির আগে এবং পরে। অথবা অভিজ্ঞতা এবং নিষিদ্ধ লোবান। বিরতির আগে ছবির যে মুড, টোন, গতি এবং ভাষা- বিরতির পরের দ্বিতীয়ার্ধে তা সম্পূর্ণই বদলে যায়। দুই অংশ যেন বা দুটো ছবি হতে পারতো। অখন্ড কিছু নয়।
প্রথম অংশে চরিত্র এবং ঘটনার ঘনঘটা। বিলকিস, তার ভাসুর, শাশুড়ি, স্বামী, আলতাফ, বিলকিসের সহযোগী মেয়েটি (রিতু সাত্তার?), মিসেস খান, শাহাদত, সহযোগী ছেলেটি, পাড়ার কিছুটা বিভ্রান্ত শান্তি কমিটি সদস্য আযাদ আবুল কালাম, কাজের মেয়ে…ছোটখাটো আরো কিছু চরিত্র। চরিত্রগুলোর অনেকগুলোই আখ্যানকে এগিয়ে নিতে কোনো অপরিহার্য উপাদান হয়ে আসেনি। কোনো কোনোটির নেই কোনো যৌক্তিক বিকাশ বা পরিণতি। আযাদ আবুল কালামের চরিত্রটির সাথে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল যে কাজের মেয়েটির, তাকে ধর্ষনের (এবং সম্ভবত হত্যা, স্পষ্ট নয়)পর আযাদের কোনো প্রতিক্রিয়া বা পরিবর্তন নেই। যেন পরিচালকের সাথে সাথে চলচ্চিত্রের চরিত্রগুলোও বেমালুম ভুলে বসলো একটা মানুষের হঠাৎ অনুপস্থিতি। বিলকিসের সহকর্মী মেয়েটি ঠিক কী কারণে আখ্যানে উপস্থিত হয় এবং পরবর্তীতে একেবারেই অনুপস্থিতির তালিকায় যোগ হয়, তারও কোন ব্যাখ্যা নেই। বিলকিসই বা ঠিক কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লো তার কোনো বিশ্বাসযোগ্য নির্মাণ নেই। আলতাফ মাহমুদের চরিত্রটিও কাহিনীর সঙ্গে ঠিক স্বাভাবিকভাবে মেশেনি। বাকি যে চরিত্রগুলোকে প্রাসঙ্গিক করে আনার চেষ্টা করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগকেও বস্তুত গল্পে ঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়নি। চরিত্র তৈরির সবটাতেই তাড়াহুড়ো চোখে পড়ার মতো।
এলোমেলো দৃশ্য পরম্পরা। বিচ্ছিন্ন যুদ্ধ দৃশ্যের হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়া গল্পের মুড তৈরির ধারাবহিক প্রক্রিয়াটিকে ভীষনভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। গল্প এগিয়ে নেয়ার এবং ক্রমশ টেনশন তৈরির বিষয়টি ছিল বেশ অগোছালো, অসফল। প্রথমভাগে কাহিনী কোথাও জমাট বাঁধেনি। শুধু মিসেস খানের সঙ্গে অফিসার্স ক্লাবের সিকোয়েন্সটিতে বিচ্ছিন্নভাবে আবারও গল্পের সম্ভাবনা তৈরি হয়। যার অস্বস্তিকর সমাপ্তি ঘটে ধ্ংসস্তুপের মধ্য থেকে মিসেস খানের উঠে আসার দৃশ্যে (ঠিক কী বুঝিয়েছেন স্পষ্ট নয়-মিসেস খান বেঁচে গেলেন, নাকি অর্ধমৃতের শেষ উথ্থান?)।এই দৃশ্য পর্যায়টির একটি ভালো সম্ভাবনা ছিল দর্শকের ভেতর পর্যন্ত আলোড়িত করার। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনা অপটু দৃশ্য নির্মাণের কারণে। যেমন সম্ভাবনা ছিল দুধওয়ালা হিন্দু লোকটির পরিচয় বিলকিসের ভাবির কাছে বেরিয়ে পড়া এবং পরবর্তীতে রাজাকারদের হাতে তার নিগৃহিত হওয়ার ঘটনাগুলো। প্রসঙ্গত. দুধওয়ালার ক্যামিওটি ছবির সবচেয়ে সাবলীল চরিত্রায়ন ছিল বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। একইভাবে আসে আযাদ আবুল কালামের হাতে এটিএম শামসুজ্জামানের জবাই হওয়ার দৃশ্যটি। এটির মর্মান্তিক দিকটিও সেভাবে আলোড়িত করতে সমর্থ হয়না শুধুমাত্র শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি না করে ওঠার জন্য।
এই পুরো বিষয়টি আসলে ছবিটির চিত্রনাট্যের দুর্বলতাকে চিহ্নিত করে।
দ্বিতীয়ভাগে এসে যেন ছবিটি একটা পথ খুঁজে নেয়। পরিচালকের অভিজ্ঞতার সবটুকুকে ঢেলে দেয়ার অপরিমিতি থেকে বেরিয়ে অবশেষে একটা নির্দিষ্ট ছন্দে এগুতো থাকে। নিষিদ্ধ লোবান এখানে সম্বল হয়। ছবির চমৎকার কিছু খুঁটিনাটি এভাগেই বেরিয়ে আসতে থাকে। চোখে লাগা মেকআপ সংযত হয়ে আসে। ক্যামেরা নিসর্গগুণেই কথা বলতে শুরু করে। নৌকায় যেতে যেতে লাশ দেখে বিলকিসের বমি করা, পাশাপাশি মাঝির সঙ্গের ছোট ছেলেটির নির্বিকার হয়ে খাবার খাওয়া-যেন তার কাছে এসব ততদিনে চোখ সওয়া, মৃত খোকনের মুখে হাত বুলিয়ে আদর করতে করতে মুঠোয় একটা শালিক উঠে আসা-চমৎকার দৃশ্য নির্মাণের দৃষ্টান্ত। খোকনের জবাই হওয়ার ঘোষণা শোনার পরপর লাটিম হাতে ছোট খোকনের আবির্ভাবও ভালো প্রয়োগ ছিল, কিন্তু দৃশ্যটিকে দীর্ঘায়িত করা আবারো পরিমিতিবোধের অভাবজাত সর্বনাশটা ঘটিয়ে দেয়। পরমুহূর্তেই কোমল এই ইমেজ নিষ্ঠুরভাবে ভেঙে এর অভিঘাত হতে পারতো, অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টের সবুজ মাঠে বিশ্রাম করা যোদ্ধার হেলমেটে এস বসা প্রজাপতির দৃশ্যটির মতো। কিন্তু গেরিলার দৃশ্য নির্মাণ এবং দৃশ্যান্তরে এগিয়ে যাওয়া, এডিটিং পুরো ছবিতে কোনোভাবেই এই ছন্দটা ধরতে পারেনি।
সংলাপের ক্ষেত্রেও সঙ্গতি ছিলনা। কোথাও কোথাও বেশ যুৎসই, কোথাও খাপছাড়া।
অভিনয় মোটের ওপর ভালো ছিল। জয়া তার নিয়মিত অভিনয় দক্ষতাতেই থেকেছেন। বাকিরাও চরিত্রের দাবি মিটিয়েছেন কমবেশি।
বিপর্যয় ছিল, ছবির সঙ্গিত পরিচালনায়। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে ছবি হলে তাতে প্রাযুক্তিক এবং বাজেট সীমাবদ্ধতায় অনেক কিছুই সম্ভব হবেনা, এটা মাথায় রেখেই দেখতে বসা গেরিলার অনেক ছোটখাটো ত্রুটি যখন পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি, ঠিক তখনই ‘তেপান্তরের মাঠে…’ গানের আলটপকা প্রবেশ আমার প্রথম দীর্ঘশ্বাসটা বের করে নিল। বাকি ছবিতেও শিমুল ইউসুফ সাধ্যমতো ক্ষতি করে গেছেন।
ভালো লেগেছে ছবিটি যেখানে শেষ হয়। সত্যি বলতে এইখানে এসে আরেকবার আক্ষেপটা জেগে ওঠে-ছবিটা তার সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটা নতুন অধ্যায় লিখতে ব্যর্থ হ’ল।
গেরিলায় নাসিরউদ্দিন ইউসুফ মুক্তযুদ্ধের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা, আবেগ হয়তো পুরোমাত্রায়, শতভাগ সততার সঙ্গেই ঢেলে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে একজন নির্মাতার দ্বৈরথ অপরিহার্য মাত্রায় সমন্বিত হয়নি। অথবা হওয়াটা যে জরুরী নয়, বরং পরিচালক এবং মূল চিন্তকের ভুমিকায় ব্যাক্তিভিন্নতাও যে সম্ভাবনার একটা দিক হতে পারে-ভাবতে ইচ্ছে করে এই উপলব্ধি ‘গেরিলা’কে হয়তো একটা অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারতো।

* সারওয়ার রেজা


মন্তব্য

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ফাহমিদুলটা অর্ধশিক্ষিত রয়ে গ্যালো।

পাগল মন এর ছবি

রিভিউটা বেশ ভালো লাগল। ছবিটা যদিও দেখা হয়নি, কবে হবে সেটাও বলতে পারছি না। :(

আমার মতে বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে এত তাড়াতাড়িই বেশি আশা করা উচিত না। আমাদের সিনেমা এখন ৯৬ এর পরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের মত অবস্থা। মাঝে মাঝে দুএকটা ভালো খেলতে পারে কিন্তু সেটাও ঠিক হাই ক্লাস কিছু না।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

Golam Mostofa এর ছবি

ফাহমিদুল মগবাজার থেকে ডেইলি এলাউন্স কত করে পায়, এর বুদ্ধির যে দৌড় তাতে করে তারে তো মাসিক ভাতা দেবার কথা নয়!!

হিমু এর ছবি

যেহেতু ‘গেরিলারা’ তাকে চেনেননা এবং প্রিমিয়ারে ডাকেননি-তাই তখন পর্যন্ত ছবিটি তার দেখা হয়নি।

হো হো হো হো হো। হরিদাস পাল হাফমিদুল নিজেকে কী ভাবে কে জানে! প্রিমিয়ারে না ডাকলে সে যায় না! ওরে কে আছিস, হযরত হাফমিদুল খাজা বাবা গুলগুলিয়াকে প্রিমিয়ারে ডেকে সিনেমা দেখা! তামুক দে! পানি দে! বাতাস কর!

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

রিভিউ বেশ লেগেছে, ছবিটি দেখবার ইচ্ছে পোষণ করি।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

পোয়েট অব এ ডিমাইজ এর ছবি

রিভিউতে মিশ্রানুভূতি হল।

আমিও দেখেছি, রবিবার। প্রথমার্ধে প্রবাহ সত্যিই কিছুটা ইনকন্সিসটেন্ট মনে হয়েছিল, দ্বিতীয়ার্ধে বিপরীত বোধ হল, অসাধারণ লাগল, কাহিনিতে মিশে গিয়েছিলাম।

ইউসুফ সাহেবকে আমি সফল বলব কারণ>
*কেন পাকিস্তানীদের আমরা ক্ষমা করতে পারি না সেই চেতনা বর্তমান স্খলিত প্রজন্ম এই মুভি থেকে পাবে
*মুভিটি নাড়া দিতে সন্দেহাতীতভাবে পেরেছে।
*বেশিরভাগ ফ্রেমেই সিনেমাটোগ্রাফি যথার্থ ও বাস্তবপন্থী ছিল।
*মু্ভিটি বারবার দেখতে ইচ্ছে করবে।

আপনার রিভিউ এর কিছু মন্তব্য অনেককে মুভিটি দেখার ইচ্ছাকে অবদমিত করে ফেলবে, ব্যাপারটি দু:খজনক। মুভিটি সবারই দেখা উচিৎ।

কবি মৃত্যুময়,

সারওয়ার েরজা এর ছবি

@পোয়েট অব এ ডিমাইজ> রিভ্যুটা লেখার সময় অস্বস্তি যা কাজ করেছে, তার সবটুকুই এই বিষয়টি নিয়ে- কেউ এটি পড়ে নিরুৎসাহিত না হয়। আমি সবসময়ই মনে করি-অন্যের মুখে ঝাল খাওয়াটা কাজের নয়। অবশ্যই প্রত্যেকের ছবিটা দেখতে যাওয়া উচিৎ। শুরুতে আবু শাহেদ ইমনের স্ট্যাটাসে দেয়া মন্তব্যেও আমার সেই সমর্থন ছিল। বলতে চেয়েছিলাম, ছবিটি আবেগের জায়গাটিতে আমাকে 'চলচ্চিত্র' হিসেবে একে বিশ্লেষনের উর্ধ্বে নিয়ে যেতে পারেনি। পারলে আমি খুশি হতাম, বিশ্বাস করুন। পারেনি কারণ, দুর্বল গাঁথুনি। কিন্তু অন্য কারো তা ভালো লাগতেই পারে। লাগছেও। দেশে হলে গিয়ে দেখার উপলক্ষ তৈরি করে দেয়ার মতো ক'টা ছবিই বা হয় বলুন। যেক'টা হয়, তা দেখতে যাবোনা! আর আমার ধারণা এখনই এদেশে আরো ভালো ছবি হওয়া সম্ভব। ভিডিওতে কত ভালো কাজ হচ্ছে। সিনেমা পর্যন্ত তাদের পৌঁছনো বাকি। শেষ প্যারাতে তারই ইঙ্গিত ছিল।

পোয়েট অব এ ডিমাইজ এর ছবি

"দেশে হলে গিয়ে দেখার উপলক্ষ তৈরি করে দেয়ার মতো ক'টা ছবিই বা হয় বলুন। যেক'টা হয়, তা দেখতে যাবোনা! আর আমার ধারণা এখনই এ দেশে আরো ভালো ছবি হওয়া সম্ভব। ভিডিওতে কত ভালো কাজ হচ্ছে। সিনেমা পর্যন্ত তাদের পৌঁছনো বাকি। শেষ প্যারাতে তারই ইঙ্গিত ছিল।"

---------সহমত। কোন একদিন অবশ্যই প্রচুর বিশ্বমানের ছবি আমরা তৈরি করতে পারব।

ভালো থাকবেন।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

প্রথমেই ফাহমিদুল হক প্রসঙ্গ। ফেসবুকে এই কথোপকথনটি হয়েছে আমার সঙ্গে। এখানে প্রসঙ্গটি পুরো উঠেনি বলে আমি বিষয়টা পুরো তুলে দিতে চাই। তা না হলে বিষয়টির খণ্ডচিত্র থেকে আলাপটি টুইস্ট করা হয়েছে বলেই মনে হবে।

ফাহমিদুল হক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন:
Fahmidul Haq
‎'মেহেরজান'বিরোধীরা দলে দলে 'আমার বন্ধু রাশেদ' আর 'গেরিলা' দেখছেন তো?
April 13 at 12:17am · LikeUnlike ·

আমি বললাম এবং তিনি উত্তর দিলেন:
#
Arif Jebtik জ্বি না, এখনও এরা কেউ দেখতে পারেন নাই। প্রথমে আপনাদের মতো মিডিয়া বিশেষজ্ঞরা প্রিমিয়ার শোতে দেখবেন, তারপর আমাদের মতো সাধারণ পাবলিকের সুযোগ আসবে। সেই সুযোগটাও আবার মাসের পয়লা দিকে, কারণ ঐ সময়টাতেই বেতন টেতন পাওয়া যায়।
তা, এবার আবার পহেলা বৈশাখ পড়ে গেল, মাসের শুরুতে তাই আলাদা বিনোদনের কোনো সুযোগ নাই।
April 13 at 1:45am · LikeUnlike · 5 peopleLoading...
#
Fahmidul Haq জনাব, আরিফ জেবতিক, গেরিলারা আমাকে চেনননা। তাই প্রিমিয়ারে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে হলে গিয়ে দেখবো। রাশেদরাও আমাকে ডাকেননাই, তবে প্রিমিয়ারের আগে যেচে একটা আনফিনিশড ভার্সন দেখছিলাম। সেহিসেবে রাশেদ দেখেছি, গেরিলা দেখি নাই। তবে দেখবো।
-----------------------
এবার আসি আপনার লেখার প্রসঙ্গে।
গেরিলা দেখে আসা পরিচিতজনদের কাছে তেমন কোনো বিরূপ অনুভূতি পাইনি। তবে কেউ কেউ বলেছেন যে অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে করায় কিছুটা ভজঘট লেগেছে।
এই মতামত আপনার লেখার বিষয়ে আমি দিচ্ছি।
লেখার প্রথমেই ফাহমিদুল হকের উল্লেখ অনাবশ্যক ও অপ্রয়োজনীয় লেগেছে। যদি এমন হয় ( অপেক্ষায় আছি কারণ আশঙ্কা করছি এমনটা হবে) যে মেহেরজানপ্রেমীরা গেরিলাতে ইতিহাসের কোনো ভুলচুক বের করে সমালোচনামূখর হয়ে মেহেরজানকে জায়েজ করার চেষ্টা করেন, তখন আলাপ যাবে ভিন্নখাতে।
সেই আলাপে আমার আগ্রহ আছে।
কিন্তু মেহেরজানপ্রেমীরা সেটা করতে পারেননি এখনও। ফাহমিদুল হকের টোন দেখে আমি প্রথমে ভেবেছিলাম যে ঐ লাইনেই আলাপ যাবে, কিন্তু উনি নিজেই সিনেমাটি দেখেননি বলে স্বীকার করেছেন, সুতরাং ওটা অপ্রাসঙ্গিক।

এমনিতে আপনার মুভি সমালোচনার স্টাইল ভালো লেগেছে। আশাকরি আরো এরকম লেখা পাব। ধন্যবাদ।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমার মতে ফাহমিদুলের প্রসঙ্গটা এসেছে তার খোঁচা মারার স্টাইলের কারণে। "'মেহেরজান'বিরোধীরা দলে দলে 'আমার বন্ধু রাশেদ' আর 'গেরিলা' দেখছেন তো?"— এই রামছাগলসুলভ কথাটার মানে কী আরিফ ভাই? বুঝাই যাচ্ছে মেহেরজান নিয়ে ফাহমিদুলের পশ্চাদ্দেশের ঘা এখনো শুকায় নি। তো সে খোঁচা না মেরে ঘা'য়ে মলম ডললেই পারে। ছিঁটকা পানি দিলে তো লগুই'এর গুঁতা খাওয়া লাগবেই। এইটাই জগতের নিয়ম।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আমিও স্ট্যাটাস পড়ে প্রথমে ভেবেছি যে গেরিলা আর রাশেদ নামের দুইটা ভয়ংকর সিনেমার আবির্ভাব ঘটেছে বুঝি, যেগুলো মেহেরজানের তুলনায় অনেক বেশি পরিতাজ্য- অথচ মেহেরজান বিরোধীরা এটা নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য না করে ষড়যন্ত্রে মেতে আছে।
পরে দেখলাম, না, মেহেরজান প্রেমীরাও এই ছবি তখন পর্যন্ত দেখেন নাই।

সারওয়ার েরজা এর ছবি

আরিফ জেবতিক@ না দেখেই যে মন্তব্যটা করা হয়েছিল তা ঠিক ভালো লাগেনি আমার। উস্কানিমূলক, ছেলেমানুষী এবং অসঙ্গত মনে হয়েছিল। পরে আবু শাহেদ ইমনের স্ট্যাটাস দেখে ঐ স্ট্যাটাসটির প্রতিক্রিয়া এসেছিল। আগের জবাবে যা বলেছিলাম, নিরুৎসাহিত করার ধারণাটি যেন না আসে তাই আসলে স্ট্যাটাস দুটোর অবতারণা করা। অবস্থানটা পরিস্কার করার স্বার্থে। সবিনয়ে বলতে চাই, কোনো বিরোধ উস্কে দেয়ার ইচ্ছে আমার ছিলনা। আর মন্তব্যের প্রাসঙ্গিক যেটুকু তুলে দিয়েছিলাম, তাতে টুইস্ট করা হবে বলে আমার মনে হয়নি। সেখানেও স্পষ্ট করেছিলাম তিনি ছবিটি দেখতে যাবেন বলেছেন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

রিভিউ দারুণ লেগেছে। কিন্তু কয়েক জায়গায় সধারণ দর্শক হিসেবে কিছু অমত/দ্বিমত করার অবকাশ আছে আপনার সাথে। তবে সেগুলো হয়তো সিনেমাবোদ্ধা দৃষ্টিকোণ থেকে উড়িয়ে দেয়া যাবে। কিন্তু আশার কথা হলো, বাংলাদেশের দর্শকের সিংহভাগই আমার মতো সাধারণ দর্শক।

সিনেমাটা যদিও দেখার সুযোগ সহসা নেই আমার, তারপরেও আপনার রিভিউ থেকে যেটা বুঝতে পেরেছি- গেরিলা'তে ইতিহাসের ধর্ষণ দেখানো হয় নি 'যুদ্ধ নয়, ভালোবাসা'র নামে। এখানে প্রথমেই একজন নিজস্ব ইতিহাস সচেতন সাধারণ সিনেমাদর্শকের কাছে পাশমার্ক পাওয়া হয়ে যায় গেরিলার।

সেদিন 'অশনি-সংকেত' নিয়ে কথা হচ্ছিলো কয়েকজনের সাথে। বর্বরতার মাত্রাধিক্যে পুরো সিনেমা শেষ করা অনেকের কাছেই অসম্ভব। গেরিলা'য় পাকিস্তানী হানাদারদের বর্বরতার উপস্থাপন হয়তো অশনি-সংকেতের ধারে কাছেও যেতে পারবে না কিন্তু আমি যেটা বুঝতে পেরেছি, পাকিস্তানীদের ব্যাপারে একজন সাধারণ দর্শকের আবেগকে ঠিকই নাড়া দিতে পারবে। অন্তত, পাকিস্তানী সৈন্যের প্রতি কোনো বাঙালি মেয়ের প্রেম জেগে উঠবে না এই সিনেমা দেখার পর!

এই কিছুদিন আগেও পাকিস্তানের খেলা নিয়ে বাঙপাকিদের মধ্যে যে আদেখলাপনার মাত্রা আশংকাজনকভাবে বেড়ে গিয়েছিলো, গেরিলা দেখে বের হবার পরে বোধকরি সেই আদেখলাপনায় একটু হলেও ভাটা আসবে। "পাক সার জমিন সাদবাদ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত ছিলো" কিংবা "আমরাও একদিন পাকিস্তানী ছিলাম" বলে গৌরব প্রকাশ করার আগে অন্তত একবার হলেও চিন্তা করবে!

আশার কথা হলো, আমাদের দেশে গেরিলা'র মতো মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সিনেমা নির্মিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ওপর যতো বেশি ইতিহাস কেন্দ্রিক সিনেমা নির্মিত হবে ততোই নির্মানের সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে ওঠা যাবে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

রিভিউটা চমৎকার, একাডেমিক সমালোচনার মত লাগলো। পড়ে নেতিবাচক কিছু মনে হয়নি, বরং ছবিটির নির্মাণ আরো কত ভালো হতে পারতো তেমনটাই আপনি বলতে চেয়েছেন বলে মনে হল।

ছবি বানান আপনি?

সারওয়ার েরজা এর ছবি

প্রকৃতিপ্রেমিক@ আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার কথাতেই ঠিকঠাক আমার আলোচনার উদ্দেশ্যটি এলো দেখে ভালো লাগছে। ব্যাপারটি ঠিক তাই- আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ছবি যেমন চাই, তেমনি চাই সুনির্মিত, নান্দনিক, আরো ভালো ছবি। আলোচনা জারি রাখাটা সেকারণেই দরকার বলে মনে করি। কারণ, আবারও বলছি, আমি বিশ্বাস করি, এখানেই অনেক ভালো ছবি হওয়া সম্ভব।
না ভাই, এখনো পারিনি। তবে বানাবো নিশ্চয়ই। :)

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আমি অনেক দিন ধইরাই কোনো ছবির কোনো টেকনিকাল বিষয় নিয়াই ভাবি না। আমার কাছে ছবি দুই প্রকার। সৎ ছবি। অসৎ ছবি। আমার চিন্তাভাবনা খণ্ডিত। লেখক মনে হয় পূর্ণাঙ্গ আলোচনার প্রয়াস নিছেন। তাকে ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অনুপম এর ছবি

ছবিটি দেখেছি । মোটামুটি ভালোই লেগেছে । সিনেমাটোগ্রাফি খুবই সুন্দর । তবে আপনার সাথে সহমত যে বিরতির আগের এবং পরের অংশ অনেকটাই বিচ্ছিন্ন । আমার কাছে মনে হয়েছে প্রথমাংশে কেমন যেন তাড়াহুড়ো কাজ করেছে । দৃশ্যগুলো আসছে আবার কোথায় যেন হারিয়ে গেল , ছবি শেষ হবার পর সেগুলো খুঁজে পেলাম না । অনেক কিছুই যেন অজানা রয়ে গেল । তবে বাংলা ছবি হিসেবে ছোট-খাট ভুল ত্রুটি মেনে নেয়াই যায় । মূল বিষয় এটাই হতে পারে যে এই ছবিটি আমাদের বোধকে কতটুকু নাড়া দিতে পারলো , মুক্তিযুদ্ধের সময় বাস্তবতাটা কেমন ছিল , সেলুলয়েডের ফিতায় সেটা কতটা উঠে আসতে পারলো , মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা প্রতিটি দর্শকের কাছে পৌছে দিতে পারলো কিনা । এদেশের মানুষ কতটা ত্যাগ স্বীকার করেছে সেটা দর্শককে জানাতে পারলো কিনা । সে দৃষ্টিকোণ থেকে ছবিটিকে আমি সফল বলবো ।

তবে একটি ব্যাপারে আমার একটু ব্যক্তিগত অভিমত আছে । আশা করি ভুল হলে সবাই মার্জনার দৃষ্টিতে দেখবেন । আমি মনে করি মানুষের উপর যে নির্যাতন করা হয়েছে সেটা আরও বাস্তবভাবে উপস্হাপন করা যায় । আমাদের চলচিত্র নির্মাতারা কেন এটা করেন না আমি বুঝি না । মানুষকে অনুভব করতে শেখানো উচিৎ মুক্তিযুদ্ধ কি ? এটা কিভাবে এসেছে ? কতটা ত্যাগ ছিল এর পেছনে । আমি হাতের আঙুল কাটা বা ধর্ষণের দৃশ্য সরাসরি দেখাতে বলছি না । কিন্তু আরও বাস্তবভাবে দৃশ্যগুলো তুলে ধরা যেত , দর্শকের কাছে সরাসরি কষ্ট-ত্যাগের অনুভূতিটা পৌছে দেয়া যেত । এই কাজটা করতে পারলে , মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের অর্থটা পরিপূর্ণভাবে শেখাতে পারলে বাংলাদেশে এখনো এত পাকিপ্রেমী থাকতো না বলেই আমার বিশ্বাস । "ত্রিশ লক্ষ মানুষের জীবন , দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম " - এ ধরনের বাক্যের ব্যবহার , অথবা ছবিতে এই দৃশ্য উপস্হাপনের ক্ষেত্রে পাশ কাটানোর মনোভাব কখনোই মানুষকে প্রকৃত বাস্তবতাটা অনুভব করতে শেখায় না ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ছবিটি এখনো দেখা হলো না :(
শনিবারে দেখবো

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

গেরিলা দেখেছি। ব্যাকরণগত দিক সম্পর্কে আগ্রহ নেই। শব্দ নিয়ে কিছু আক্ষেপ বাদ দিলে আমার এটিকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত এ যাবৎ বাংলাদেশের সেরা ছবি মনে হয়েছে।

ছবির বীভৎসতা সইতে কষ্ট হচ্ছিলো ওই আড়াই ঘন্টাতেই। ১৯৭১ এরচেয়ে কতটা ভয়ঙ্কর ছিলো, কে জানে।

তাসনীম এর ছবি

খুব ভালো লাগলো রিভিউ। ছবিটা দেখতেই হবে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রাসেল মাহমুদ এর ছবি

ভালো লেখা। তবে লেখার শুরুতে ফাহমিদুল হককে টেনে আনার যথার্থতা বোঝা গেল না। ফেসবুকে তাঁর স্ট্যাটাস পড়ার সুযোগ আমার হয়েছে। আমি বলবো লেখক মি হকের স্ট্যাটাস এবং পরবর্তী লেখাগুলোকে তাঁর (লেখক) নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করেছেন। একই সাথে লেখকের ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রথম জন কমেন্ট করলেন মি হক কে নিয়েই। এটি আরো দৃষ্টি কটু হয়ে দেখা দিল, কারণ মনে হলো যে ওই মন্তব্যকারী মি হককে পছন্দ করেন না বলেই এমনি বাঁকা কথা বেরুলো তাঁ কী-বোর্ড দিয়ে।

ভালো লেখা লেখাটা কঠিন, তবে দু-একটি অপ্রাসঙ্গিক কথা সেটির বারোটা বাজানোর জন্য যথেষ্টের বেশি।

পুনশ্চ: মি হকের লেখা আমি যতটুকু বুঝেছি তাতে আমার মনে হয়ে তিনি যে কোন সিনেমা বন্ধ করে দেয়ার বিপক্ষে। তিনি বলতে চেযেছেন কোন সিনেমা ভালো কি মন্দ সেটি আলোচনা করা যেতে পারে কিন্তু বন্ধ করে দেয়া হলে সেটি হয় মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।

হিমু এর ছবি

এই সিনেমা বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত তো সিনেমা নির্মাতা গোষ্ঠীরই। আপনি নিজে বাজারে টুকরিতে করে গান্ধা বাঙ্গি বেচতে গেলেন, সুবিধা করতে পারলেন না, টুকরি গুটিয়ে বাড়ি ফিরে এলেন, তারপর কোনো এক হাফমিদুলকে সুপারি খিলিয়ে বাঙ্গি বেচার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নিয়ে কাল্পনিক পক্ষের ওপর ঝাড়িপট্টি নিলেন। পাবলিক কি এতই বলদ, যে এগুলো বুঝবে না?

ভালো মন্তব্য করা কঠিন, প্রাসঙ্গিক চামচামি মন্তব্যের উদ্দেশ্যকে আঁশটে করে ফেলে।

রাসেল মাহমুদ এর ছবি

মি হিমু, আপনার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখিয়েই বলছি, মেহেরজান নামে কি বানানো হয়েছে সেটি আমার বিবেচ্য কোন কালেই ছিল না। মেহেরজানের গল্প নিয়ে আমার নিজেরও আপত্তি রয়েছে। সেটি সিনেমা হল কি না অপগল্প (আপনি যাকে পচা বাঙ্গির সাথে তুলনা করলেন) হল সেটি নিয়ে আমরা সুস্থ তর্ক অন্য কোন জায়গায় করতে পারতাম। কিন্তু আপনি কি মেহেরজান (এবং অন্য যেকোন সিনেমা) বন্ধ না করার বিষয়টিতে আমার সাথে একমত। যদি না হন, তাহলে আমি শুধু এটাই বলতে চাই আপনার সাথে যুক্তি চলে না। কিন্তু আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি মি হক যতটা না মেহেরজান নিয়ে বলেছেন তার চাইতে বেশি আপত্তি জানিয়ছেন একটি সিনেমা বন্ধ করার বিষয়ে, এখন আপনি সেখানেও গন্ধ খুঁজছেন।
একই সাথে আপত্তিকর ভাবে তাঁর নামকেও বিকৃত করছেন। হয়তো এখানেই আপনারা মত প্রকাশের স্বাধীনতার যথার্থতা খুঁজবেনা।

হিমু এর ছবি

রাসেল সাহেব, আপনি "বন্ধ করা" আর "বন্ধ না করা" বিষয়ে কতটুকু পরিষ্কার, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। আপনার সেন্সরে ছাড় পাওয়া পচা বাঙ্গির ব্যবসা যদি কেউ আপনার ঘাড়ে ধরে বন্ধ করায়, সেটা আপত্তিকর, তার প্রতিবাদ আমাদের সবাইকেই করতে হবে। কিন্তু আপনি নিজেই যদি আপনার পচা বাঙ্গির টুকরি গুটিয়ে বাড়ি ফিরে যান, তাহলে আপত্তি বা প্রতিবাদ কার প্রতি? মেহেরজান "বন্ধ" করেছে এর ডিস্ট্রিবিউটর। আপনার পূজ্যপাদ হাফমিদুল ডিস্ট্রিবিউটরকে উদ্দেশ্য করে এ পর্যন্ত কী বলেছে, পারলে কোট করে দেখান। টুপির নিচ থেকে কথা বের না করাই ভালো।

এই গোটা "মেহেরজান বন্ধ" নাটককে একটা ভিন্ন রং চড়ানোর কাজে কিছু লোক শুরু থেকেই লেগে আছে, সেখানে মি. হাফমিদুলও আছে। অলরেডি প্রচুর ভাঁড় এবং বাটপার কাউকাউ শুরু করেছে, মেহেরজান "নিষিদ্ধ" করা হয়েছে। বলাকায় মেহেরজানের শেষ শোতে যে ৬০ জন দর্শকও হয়নি, সে কথাটা এরা আলগোছে চেপে যায়। তার বদলে এটা "নিষিদ্ধ" হয়েছে বললে একটা আলাদা ফ্লেভার এতে যোগ হয়, সিনেমা নির্মাতাদের "নিপীড়িত" পক্ষ হিসেবে দেখানো যায়। এই কাজে যেসব ভাঁড়-বাটপার নিয়োজিত, তাদের সাইনবোর্ডকে সম্মান দেখাচ্ছি না আমি। কারো নাকে এবং চোখে সমস্যা থাকলে সে মি. হাফমিদুলের অনেক লেখার পাঠোদ্ধারে ব্যর্থ হবে, আর আঁশটে গন্ধ টের পাবে না।

আপনার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখিয়েই বলছি, বাটপারদের পক্ষ নিয়ে সুস্থ তর্ক কোথাও করা সম্ভব না।

রাসেল মাহমুদ এর ছবি

মি হিমু, আপনি আবারো বাজে শব্দ ব্যবহার করলেন। এভাবে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমন করার অধিকার আপনার নিশ্চই নেই। আমি আগেও বলেছি মেহেরজান নিয়ে আমার কোন আবেগ নেই। তার কাহিনীও আমার পছন্দ নয়। কিন্তু আমার কিংবা আপনার অপছন্দ তো আমরা কারও উপর চাপিয়ে দিতে পারি না, তাই না? মি হক তো নিশ্চই বাজে ভাবে কারো নামকরন করেননি। আর তার বক্তব্যের বিপরীতেও নিশ্চই যুক্তি রয়েছে, সেই যুক্তি না দেখিয়ে তাকে আক্রমন করাতো শোভনীয় নয়। আপনি নিশ্চই আমার এই বক্তব্যের সাথে একমত হবেন?

হিমু এর ছবি

রাসেল সাহেব, "ব্যক্তিগত আক্রমণ" বা "বাজে শব্দ", কোনোটাই আমার মন্তব্যে দেখতে পেলাম না। আর আমার পছন্দ বা অপছন্দও আমি আপনার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছি না। আপনি হাফমিদুলের ছবিওয়ালা তাবিজ পরে ঘুরে বেড়ালে কিংবা গালে হাফমিদুলের হাস্যমুখের উল্কি এঁকে ঘুরলেও আমার কোনো আপত্তি নেই। আপনি রোজ সকালে উঠে হাফমিদুলের ছবিতে ধূপধুনা দিতে পারেন, তাতেও আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সবাইকে আপনার ভক্তি শেয়ার করতে হবে, এমন স্টেটমেন্ট দিতে এলে, আপত্তি আছে। হাফুর বক্তব্যের বিপরীতে বহু যুক্তি ইতিমধ্যে দেয়া হয়ে গেছে, পড়ে না থাকলে পড়ে আসুন। হাফুর নাম নেয়ামাত্র সেইসব যুক্তি দফায় দফায় লিখতে হবে নাকি?

আপনার একটি মাত্রই বক্তব্য আছে এই পোস্টে। সেটা হচ্ছে মি. হাফুকে বাঁকা কথা বলা যাবে না। কেন রে ভাই? বাটপারদের বাটপারি নিয়ে কথা বলা যাবে না কেন? বাটপারদের বাটপারি নিয়ে কেউ কথা বললেই সেটা "ব্যক্তিগত আক্রমণ" (শুদ্ধ শব্দযুগল হচ্ছে "ব্যক্তি আক্রমণ") বানিয়ে দিয়ে ঘ্যানঘ্যান করলে তো চলবে না।

আর বাই দ্য ওয়ে, আপনি কি বিবিসির রাসেল মাহমুদ? যদি তা-ই হয়ে থাকেন, দেখি আপনি সাংবাদিক হিসেবে কতটা যোগ্য। মেহেরজান সিনেমা নামিয়ে নিয়েছে ডিস্ট্রিবিউটর আশীর্বাদ চলচ্চিত্র। আপনি আমাকে লিঙ্কসহ কোট করে দেখাবেন, মি. হক আশীর্বাদ চলচ্চিত্রকে উদ্দেশ করে কোথায় সিনেমা বন্ধ করার প্রতিবাদ করেছেন। যদি না পারেন, স্বীকার করে যাবেন যে মি. হকের লেখা এবং মেহেরজান বিতর্ক সম্পর্কে আপনার জ্ঞান মন্তব্যে অংশগ্রহণের জন্য যথেষ্ট নয়। টুপির নিচ থেকে কথাবার্তা বের করা একটা বিশ্রী অভ্যাস।

রাসেল মাহমুদ এর ছবি

জনাব হিমু, আমি একজন সাধারণ মানুষ। তাই ভুল হতেই পারে। ব্যক্তি আক্রমন শব্দ যুগল ব্যক্তিগত আক্রমন হয়ে গিয়েছে। আপনারও বোধকরি ফাহমিদুল হক নামের বানানে সমস্যা হচ্ছে। মেহেরজান নিয়ে এখানে কোন বিতর্ক হচ্ছিল না কোথাও। মেহেরজান কিংবা গেরিলা সিনেমার সমালোচনা করার মতো যোগ্যতাও (আপনাদের দৃষ্টিতে) আমার নেই। আমি সেই ধৃষ্টতাও আপনাদের সামনে দেখাতে যাইনি। যাই হোক ওই সিনেমা নিয়ে মি হক যেসব যুক্তি দেখিয়েছেন এবং আপনারা তার প্রতিউত্তরে যেসব যুক্তি দেখিয়েছেন তা নিয়েও আমার কিছু বলার নেই। ছিলোও না। আমি শুধু এটুকু বলতে চাইছি যে আপনি কারো নামকে বিকৃত করতে পারেন না এটাই আমার ভাষায় বাজে শব্দ এবং কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমন করা। আমি শুধু এটুকুর প্রতিবাদ করেছি। ওই একই কাজ যদি মি হকও আপনার বিরুদ্ধে করতেন তাহলেও আমি এই একই ভাষায় প্রতিবাদ জানাতাম। আপনি আমার এই অবস্থানটাই বুঝতে পারেনি, হয়তো আমিই বোঝাতে পারিনি আপনাদেরকে। ভালো থাকবেন, আমার আর কিছু বলার নেই।

হিমু এর ছবি

হাফু নাম বিকৃতির চেয়ে অনেক বড় গিদরামি করেছে, সিনেমায় ইতিহাসের অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিকৃত উপস্থাপনের সাফাই গেয়েছে, আপনি হয়তো ইন্টারনেটের কোনো দুর্গম চিপাচাপায় তার প্রতিবাদও করেছেন। সেইসব প্রতিবাদের অন্তত একটার লিঙ্ক দেখিয়ে যদি আপনার এই সদাপ্রতিবাদমুখর চরিত্র, যা আপনি এই মন্তব্যে বিশদ করলেন, সম্পর্কে আমাকে আশ্বস্ত করতেন, কৃতার্থ হতাম।

আর কোট করে দেখালেন না, হাফমিদুল কোথায় আশীর্বাদ চলচ্চিত্রকে উদ্দেশ করে মেহেরজান "বন্ধ" করা নিয়ে প্রতিবাদ করেছে? ফসকাচ্ছেন কেন? কোট করে বলতে না পারলে স্বীকার করে যান যে মেহেরজান নিয়ে হাফু কী বলেছে আপনি সেটা ঠিকমতো জানেন না, কিছু না জেনেই শুরুতে হাফমিদুলের চামড়া বাঁচাতে এসেছিলেন, এখন চিবি দিয়ে ধরার পর বলছেন আপনি নাম বিকৃতির বিরুদ্ধে একজন মুজাহিদ।

হাসিব এর ছবি

আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি মি হক যতটা না মেহেরজান নিয়ে বলেছেন তার চাইতে বেশি আপত্তি জানিয়ছেন একটি সিনেমা বন্ধ করার বিষয়ে, এখন আপনি সেখানেও গন্ধ খুঁজছেন।

গন্ধ বেরুলে না শুকে উপায় আছে বলেন? শ্বাস নিয়ে তো বেঁচে থাকতে হবে, নাকি? আপনার কী ধারণা সচলের কেউ ফাহমিদুল কী লিখেছে বা কী বলেছে সেগুলো পড়েনি? খামোখা ভিত্তিহীন দাবিদাওয়া নিয়ে ফাহমিদুলের বিচরণক্ষেত্র সামুতে গিয়ে ব্লগান। এখানে সুবিধে হবে না।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মেহেরজানরে বন্ধ করছে কে?
এই তথ্য আপনেরে কে দিছে? কোথা থেকে পাইছেন?
মেহেরজানরে তো কেউ নিষিদ্ধ করে নাই
আইনত মেহেরজান এখনো হলগুলোতে চলতে পারবে
কিন্তু কেন চলতেছে না?
কারণ কোনো পরিবেশক এবং প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ এই বাতিল মাল আর চালাতে রাজী না
কারণ এইটা একেবারেই লস প্রজেক্ট।

আপনার এবং ফাহমিদুলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে পরিবেশক আশীর্বাদ চলচ্চিত্র ছবিটি প্রত্যাহার করার আগেই ৪টি হল থেকে মেহেরজান নেমে গেছিলো শুধু দর্শকের অভাবেই। আশীর্বাদ চলচ্চিত্র এই সিদ্ধান্ত যখন নিছে তখন শুধু স্টার সিনেপ্লেক্সেই ধুকে ধুকে চলছিলো ছবিটা। যেখানে সাকুল্যে সিটসংখ্যা মাত্র ২৮০টা

এটা পড়ে দেখেন

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সারওয়ার রেজা এর ছবি

স্ট্যাটাসটার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কথা উঠছে। ব্যক্তিগতভাবেও দুয়েকজন আমাকে বলেছেন। আগেও একবার খোলাসা করার চেষ্টা করেছি। আবারও বলি,

'গেরিলা' নিয়ে যে বিপরীতমুখী আগ্রহ সৃষ্টি এবং আলোচনা হচ্ছিল সেটাকে হাজির করা, তার পূর্বাপর কনটেক্সট সহ, এবং তা ধরে উচ্ছাস, আবেগ বা প্রতিহিংসা, ক্ষোভ জাতীয় ব্যাপারগুলোর বাইরে থেকে একটা 'চলচ্চিত্র' হিসেবে এর বস্তুনিষ্ঠ রিভ্যু করাই ছিল লেখাটার উদ্দেশ্য। আর এই বিভিন্নমুখী আগ্রহ, আলোচনা, কনটেক্সট তুলে ধরে আলোচনাকে এগিয়ে নিতেই স্ট্যাটাস দু'টির প্রয়োজন আছে বলে মনে করেছি।

কিন্তু প্রথম স্ট্যাটাসটির সূত্র ধরে যে ধরণের মন্তব্য এসেছে, তা আমার অভিপ্রেত ছিলনা। স্ট্যাটাসটির প্রবণতাটিকে চিহ্ণিত করাই আমার উদ্দেশ্য ছিল, ব্যক্তিকে আক্রমণ নয়। ফাহমিদুল হক কে আমিও ব্যক্তিগতভাবে চিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আমার সাক্ষাৎ শিক্ষক ছিলেন। বিভিন্ন বিষয়ে মতান্তর সত্বেও তিনি আমার কাছে শ্রদ্ধেয়। কিন্তু 'মেহেরজান' ইস্যুতে তার ভাবনা, অবস্থান, লেখা...পুরো সময়জুড়ে যে বিরক্তি, হতাশা উৎপাদন করেছিল, তাকে শুধু এইকারণে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন উপায় ছিলনা। বিরোধটা বৌদ্ধিক জায়গা থেকে, আদর্শগত অবস্থান থেকে চলাই সঙ্গত মনে করি। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত।

চলচ্চিত্র সমালোচনাটি নয়, বরং ফাহমিদুল হককে, লেখার বিন্যাসের ধরণটার কারণেই হয়তো, আলোচনার একটি অনভিপ্রেত মনোযোগ বিন্দু করে তোলার উপলক্ষ হওয়ার জন্য আমি বেশ কিছুটা বিব্রত। কিন্তু এর দায়ভারটা আমার লেখাকেই নিতে হবে। নিচ্ছি।

অদ্রোহ এর ছবি

গেরিলা দেখলাম। কয়েকটা ব্যাপারে মন খচখচ করলেও আপাতত সেগুলো ধর্তব্যের মধ্যে না আনলেও চলে। এককথায়, অনেকদিনের মধ্যে একটা বাংলা ছবিকে লেটার মার্ক দিতে কার্পণ্য করবনা, এটুকু বলতে পারি।

ও হ্যাঁ, আপনার বিশ্লেষণ বেশ লেগেছে (Y)

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

আবু শাহেদ ইমন এর ছবি

আলোচনা কোথায় কোথায় যেন চলে গেল!!!
রিভিউটা (মোটামুটি) ভালো লাগল জিমি।
সিনেমাতো আসলে বানানো যায় না। সিনেমা হয়ে উঠার বিষয়। "গেরিলা" সব মিলিয়ে সিনেমা হয়ে উঠেছে। এটাই এই ফিল্মের সবচেয়ে বড় স্বার্থকতা।

সত্য সন্ধানী এর ছবি

সারওয়ার রেজা@ গেরিলা দেখা হয়নি; কিন্তু এখন বেশ আগ্রহ বোধ করছি। এই আগ্রহের সূচনা সমালোচনা পড়ে। অসাধারণ, অভাবনীয়।একেবারে জাত বিশ্লেষকদের মতো ( যদিও আমার অজানাই রয়ে গেছে; সমালোচক নিয়মিতই বিশ্লেষক কিনা, এটা তাকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে কি না।)। ভাল লেগেছে।ধন্যবাদ; এখানকার প্রথম পাঠক হিসেবে উৎসাহিত হয়েছি।

কাউকে উদ্দেশ্যে করে নয়@ " সমালোচনা একটি ভাল জিনিস। এটি আপনাকে এগিয়ে রাখবে। যে আপনার সাথে একমত হতে পারবে না, সে আপনাকে বুঝতে পারলো না। আর যে আপনাকে বুঝলোনা, তার মানে আপনি এগিয়ে থাকলেন।" এই কথাটি একজন রন্ধন শিল্পীর। স্পেনের একটি বিখ্যাত হোটেলের শেফ এর কথা এটি। এ থেকে বুঝাই যায় পশ্চিমের একজন সাধারণ মানুষও সমালোচনার ক্ষেত্রে কতটা উদার।এর কারণ বোধ হয় এটিই যে, সমালোচনা থেকে ভুল গুলো সংশোধনের সুযোগ পাওয়া যায় আর এ থেকে ভাল কিছু বের হয়ে আসতে পারে, এটি তারা বিশ্বাস করে।

কথাটি বলার কারণ, দুটি। এক. একজন নতুন পাঠক হিসেবে সমালোচনার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অক্রমণের ব্যাপারটা থেকে কষ্টই পেয়েছি। আর দুই. ধারনা ছিল, এসব জায়গায় বুঝি জ্ঞানীদের আনাগোনাই হয়। আসলেও তাই। আর সবার চেয়ে চোক কান খোলা, একটু বইপুস্তক নাড়াচাড়া বেশী করে, একটু সচেতনভাবে প্রগতিশীল এমন সব মানুষরাই যুক্তির প্রতিযোগীতায় বেশী সামনে এগোয়। অনেকখানি সেরকম হলেও আমরা এখনো বোধহয় পুরোমাত্রায় উক্ত গুণগুলো অর্জন করতে পারিনি।

সে যাই হোক, সম্ভাবনার চিহ্ন দেখলে তৃপ্তি বোধ করি। বোধ হয় এমন আশা করাই যায় যে, আমরাও খুব শিঘ্রই এমন ভাল কিছু ছবি বানাবো, যা আলোচানা-সমালোচনা মধ্যেই সাফল্য পাবে, আন্তর্জাতিক পুরস্কার ছিনিয়ে আনবে, আমাদের জাতিসত্তার পূর্ণ বিকাশে সহায়ক হবে।

সারওয়ার রেজা এর ছবি

@আবু শাহেদ ইমন> ভাই, সিনেমা হয়ে ওঠাটা ঠিক প্রাকৃতিক নিয়মের মতো তো নয়। একে হয়ে ওঠাতে হয়। কোনো প্রতিভাবান সিনেমাওয়ালার হাতে হয়তো স্বতস্ফূর্তভাবেই তা হয়ে ওঠে, অন্যদের বেলায় কাঠখড় পোড়াতে হয়। নির্মাণ প্রক্রিয়াটা এখানে সেকারণেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। গল্প বলার (এক্ষেত্রে সিনেমা যখন গল্প বলছে, সবসময় সেটা জরুরী নয়) কায়দাটা সবার সমান রপ্ত থাকেনা। ভিস্যুয়ালি বলার ক্ষেত্রে সেটি তো আরো বেশ কিছু বিষয়ের সঙ্গে খুব জড়িয়ে যায়, যা আপনি ভালোই জানেন। তার গোলমালে বেচারা ভারি চমৎকার গল্পটা একটা চমৎকার সিনেমা হয়ে উঠতে পারেনা।
যাই হোক, গেরিলা প্রসঙ্গে একজনের কাছে ব্যক্তিগতভাবে বলা কথাগুলো উদ্ধৃত করলাম,
'গেরিলা'র মূল ব্যর্থতাটা কী জানেন, এইটার একটা ভালো সম্ভাবনা ছিল, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এই প্রজন্মের আবেগটাকে ফেনিয়ে তোলার। সেই জায়গাটায় (ঠিকভাবে) পারে নাই। শুরুতে একটা সামষ্টিক আবেগ কাজ করছিল, (মেহেরজানের বাজে অভিজ্ঞতার প্রতিক্রিয়াতেও হতে পারে কিছুটা) কিন্তু এইটা বেশিদিন থাকবেনা বলেই আমার ধারণা। নইলে অল্প পরিসরে, অসংখ্য ত্রুটিতে ভরা, নিম্নমানের সিনেমা ভাষার প্রয়োগেও 'আগুনের পরশমনি' যে কাজটা করতে পারে, বুক টনটন করে, চোখে পানি এনে দেয়- আর আমরা সব ত্রুটি মাফ করে এর গল্পে ঢুকে পড়ি, আবেগে সামিল হই, সেইটাই এই ধরণের ছবির মূল শক্তির জায়গা।'
এম্নিতে গেরিলার উদ্দেশ্যটা তো সৎ ছিল।

সারওয়ার রেজা এর ছবি

যারা লেখাটি পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন, তাদের ধন্যবাদ :)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।