[justify]ফ্রান্সে সম্প্রতি প্রকাশ্যে বোরকা বা মুখ ঢাকা হেজাব পরা নিষিদ্ধ করে তাদের পার্লামেন্টে পাস করা আইনটি কার্যকর হয়েছে। বেলজিয়ামেও একই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই সেখানে পার্লামেন্টে একটি বিল আনা হবে। শোনা যাচ্ছে, ফ্রান্সে কোনো কোনো মুসলিম নেতা সংগঠিত আইন অমান্য আন্দোলনের কথা চিন্তা করছেন। রেশিদ নেককাজ নামে এক ব্যবসায়ী পুলিশ আরোপিত সম্ভাব্য জরিমানা পরিশোধের জন্য প্রায় ২০ লাখ ইউরোর তহবিল জোগাড় করছেন। ওই আইনে আছে, যে কোনো নারী এ আইন ভঙ্গ করলে তাকে ১৫০ ইউরো জরিমানা করা হবে। আর যারা নারীদের বোরকা বা নেকাব পরতে বাধ্য করবে, তাদের শাস্তি হবে আরও কঠোর। তাদের অর্থদণ্ডের পরিমাণ হবে আরও বেশি। দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডও হতে পারে। ইতিমধ্যে প্যারিসে ১৯ বোরকাধারী নারীসহ ৫৯ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনো কোনো প্রতিবাদকারী নটর ডেম গির্জার সামনে নীরবে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদমূলক মানববন্ধন করার উদ্যোগ নিয়েছেন।১ সব মিলিয়ে নেকাব ইস্যু কিছুটা হলেও ইউরোপীয় সমাজ জীবনে একটি অস্থিতিকর অবস্থার সৃষ্টি করছে বলা যায়।
স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশেও এই ঘটনার কিছু ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে। একটি উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে আশা করি। সোনার বাংলাদেশ ব্লগে শাহ আবদুল হান্নান নামে একজন লেখক ফরাসি ও বেলজীয় সরকারকে এ আইন রচনা থেকে বিরত থাকার জন্য আবেদন করেছেন। পাশাপাশি তিনি জাতিসঙ্ঘ এবং ওআইসিকে অনুরোধ জানিয়েছেন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে।২ পাঠক, আপনিও কি মনে করেন, এই আবেদন বা প্রতিবাদ যুক্তিসঙ্গত হবে? সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আসুন একটু তলিয়ে দেখা যাক পুরো বিষয়টি।
******
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি বলেছেন যে, নেকাব হলো নারীর অবমূল্যায়ন এবং নিগ্রহের চিহ্ণ, যদিও লন্ডনের দ্য সানডে টেলিগ্রাফের (১৬ এপ্রিল, ২০১১ সংখ্যা) এই প্রতিবেদনটি অনুসারে লন্ডনের প্রধান মুসলিম-অধ্যুষিত অঞ্চল টাওয়ার হ্যামলেটের নারীরা মনে করেন কেউ তাদের বাধ্য করেনি এটি পরতে।
“আমি ক্লাবে যেতাম, ড্রিংক করতাম, স্কিনি জিনস পরতাম,” ২৮ বছর বয়সী তরুণী মিস জ্যামা-র মন্তব্য ছিল এই রকম। “কিন্তু এখন মনে হয় এগুলো সঠিক ছিল না। পুরুষদের তো কম দেখিনি, কিছুই পাইনি তাদের কাছ থেকে। তারা আমাকে ব্যবহার করেছে এবং তারপর চলে গেছে। তারা আমার দিকে এমনভাবে তাকাত যেন আমি এক টুকরো মাংস, এবং এটা (নেকাব) সবকিছু থামিয়ে দিয়েছে।
“অন্যদিকে এটা বেশ কষ্টকরও। আমি এসেক্সে বাস করি, কখনো কখনো জনতা বেশ আগ্রাসী আচরণ করে আমার সাথে। কিন্তু তবুও এইই ভালো। এটা আমাকে আত্মবিশ্বাস দেয়।”
মিস জ্যামা-র বান্ধবী, যে নিজের নাম প্রকাশ করতে চায়নি, বলে : “আমরা এটা করি কারণ এর পুরষ্কার রয়েছে। ইসলামের অনেক বিধিই আছে যা আমরা পালন করতে পারি না, কিন্তু এটা বেশ সহজ।"
“আমি এটি করি কারণ এটা আমাকে মুসলিম হিসেবে আইডেন্টিন্টি দেয়,” অন্য একটি তরুণী বলে, “প্রকৃতপক্ষে আমার বাবা-মা এটাকে ঘৃণা করেন। আমার বাবা তো ক্রমাগতভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বাসা থেকে বের করে দেয়ার।”
অবাক হবার মতো বিষয় এই যে, এসব নারীর কেউই এমনকি মসজিদে পর্যন্ত যান না। বা তাদের কেউই কোনো সংগঠন বা গ্রুপের সদস্য নয়। সর্বোচ্চ যা মনে হতে পারে, নেকাব একটি লক্ষণ, কোনো অনুঘটক বা কারণ নয়।
এদিকে হোয়াইট চ্যাপেল রোড সংলগ্ন ‘মাদানী গার্লস স্কুলে’ সব শিশুকেই বাধ্য করা হয় নেকাব পরতে। নিঃসন্দেহে তাদের সবাই এটা স্বেচ্ছায় পরেন না। শিক্ষা পরিদর্শকের রিপোর্টেও এই বাধ্যতামূলক নেকাব পরিধানের বিষয়টি আসে না, তার বদলে বহুসংস্কৃতির সমাজ হিসেবে লন্ডনের প্রশংসাই তাতে বেশি করে প্রাধান্য পায়।৩
প্রথমেই বলে নেয়া দরকার, নেকাব আর হিজাব এক কথা নয়। হিজাব অর্থ হাত আর মুখ ছাড়া বাকি সবকিছু ঢেকে রাখা। নেকাব বলতে একটি কাপড়ের টুকরাকে বোঝানো হয় যা মুখ ঢেকে রাখার কাজে লাগে এবং যেসব নারী এটি ব্যবহার করেন তাঁরা সাধারণত হাতও ঢেকে রাখেন। সউদী আরব থেকে শুরু করে ভারতীয় উপমহাদেশ এমনকি পাশ্চাত্যেও বহু নারী নেকাব পরিধান করে থাকেন।
ঐতিহাসিকভাবে, ইসলাম আবির্ভাবের বহু আগে থেকেই মুখ ঢেকে রাখার সংস্কৃতি চর্চিত হয়ে আসছে এবং গবেষকরা বলেন মুসলিমদের কর্তৃক এই চর্চা অব্যাহত রাখাটা সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতারই অংশ ছিল।
নারীর পর্দাপ্রথার সর্বপ্রথম উদাহরণ পাওয়া যায় একটি আসিরীয় আইনি দলিলে, খ্রিষ্টজন্মেরও ১৩ শ বছর আগে। ওই দলিলে পর্দাকে শুধুমাত্র অভিজাত নারীদের জন্য সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয় এবং পতিতা ও সাধারণ নারীদের এ সুবিধা গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়। প্রাচীন গ্রিক ভাষাতেও পর্দাপ্রথার উল্লেখ পাওয়া যায়। কিছু গ্রিক গবেষক এ বিষয়ে একমত যে, অন্তত উচ্চশ্রেণির নারীদের চুল এবং মুখ ঢেকে জনসম্মুখে আসার রীতিই প্রচলিত ছিল তখন।
শত শত বছর ধরে, ১১৭৫ খ্রিষ্টাব্দের আগ পর্যন্ত, অ্যাংলো-স্যাক্সন এবং তারপর অ্যাংলো-নর্ম্যান নারীরা হিজাব পরিধান করত। শুধুমাত্র অবিবাহিত তরুণীদের ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম ঘটত। ক্রিশ্চান নানরা এখনও সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। শত বছর ধরে এটি নারীদের শোক প্রকাশেরও পোশাক ছিল। এমনকি সূর্যতাপ এবং বায়ুঘাত থেকে রক্ষা পেতেও (তখনো আন-ট্যানড চামড়াই ফ্যাশনেবল ছিল) যুগে যুগে নারীরা পর্দার আশ্রয় নিয়েছে।৪
ইহুদী, ক্রিশ্চান, ইসলাম ধর্মে মাথা ঢাকার ধারণাটি পবিত্রতার সার্থে সম্পর্কিত। গত শতাব্দীর ষাটের দশক পর্যন্ত গির্জায় নারীদের হিজাব পরে যাওয়াটা একটা সাধারণ ব্যাপার ছিল, এবং কিছু কিছু ঐতিহ্যবাহী গির্জায় এখনও রয়ে গেছে এই রীতি। ভারতে হিন্দু নারীদের মধ্যে মাথা ঢাকার প্রচলন আছে, পল্লি এলাকায় বয়স্ক পুরুষদের সামনে ‘ঘোমটা’ টেনে যাওয়াটাই রীতি।
যদিও ধর্মকেই সাধারণভাবে পর্দাপ্রথার জন্য দায়ী মনে করা হয়, এটা রাষ্ট্রতন্ত্র ও ব্যক্তিগত অভিরুচিরও প্রকাশ ঘটায়। ফলে পর্দা যতটা না রাষ্ট্র বা ধর্মের অবদান, তার চেয়েও এটা ব্যক্তির নিজস্ব বিষয় বলে বিবেচনা করা হয়।৫
যদিও গবেষকদের অধিকাংশই মনে করেন যে, ইসলামে হিজাব বাধ্যতামূলক, কেবলমাত্র অল্প কিছু গবেষক মনে করেন যে, নেকাবও তা-ই।
যারা নেকাবকে বাধ্যতামূলক মনে করেন তাদের মধ্যেও বিভক্তিটা লক্ষ করার মতো। এদের কেউ কেউ বলেন চোখের ওপর পর্দা টানার দরকার নেই, অন্যরা সবকিছুই ঢেকে রাখার পক্ষে।
গবেষকদের সিংহভাগই একটি বিষয়ে একমত যে, নেকাব হিজাবের মতো প্রয়োজনীয় কিছু নয়, এটি না পরলেও কোনো ‘গুনাহ’ নেই। এদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন যে, নেকাব পরা ‘সওয়াবে’র কাজ, অর্থাৎ পরাটা বাধ্যতামূলক নয়, তবে পরলে পুরস্কার রয়েছে।
মাত্র কয়েকটি হাদিসে নারীদের মুখ ঢাকার প্রসঙ্গ এসেছে এবং এর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আদতে ‘খিমার’-এর কথা বলা হয়েছে, যা মাথা ঢেকে রাখার কাজে ব্যবহৃত হতো। মুখমণ্ডল আবৃত করার কথা কেবল তিনটি হাদিসে উল্লেখ পাওয়া যায়, তাও মুহম্মদ (সা) সরাসরি আদেশ করেছেন এমন কোনো নজির নেই। অন্তত একটি হাদিসে, নবীজীর সঙ্গীরা পর্যন্ত অবাক হয়ে গিয়েছিলেন একটি নারীর ব্যাপারে, যে মুখ ঢাকা অবস্থাতেই মাতম করছিল।
যারা বিশ্বাস করেন নেকাব বাধ্যতামূলক তারা কোরানের এই আয়াতটির কথা উল্লেখ করে থাকেন :
O Prophet! Tell thy wives and daughters, and the believing women, that they should cast their outer garments over their persons (when abroad): that is most convenient, that they should be known (as such) and not molested. And Allah is Oft- Forgiving, Most Merciful. (Qur'an 33:59)
"হে নবী! তুমি তোমার পত্নী, তোমার কন্যা এবং মোমেনগণের পত্নীগণকে বলো, যেন তাহারা তাহাদের চাদর নিজেদের ওপর ঝুলাইয়া লয়। এতদ্বারা তাহাদের পরিচয় অত্যন্ত সহজ হইবে এবং তাহাদিগকে কষ্ট দেওয়া হইবে না। বস্তুত আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়াময়।" (কোরান ৩৩:৫৯)
কিছু কিছু গবেষক, যেমন আবুল আলা মওদুদী, উল্লেখ করেন যে, এই আয়াতে হাত ও মুখসহ সম্পূর্ণ শরীর ঢাকার কথা বলা হয়েছে। 'cast their outer garments' আরবি ভাষায় 'draw together' শব্দবন্ধের সমার্থক। এসব গবেষকদের মতে, এই আয়াত নাজিল হবার ফলে নবীজীর জমানায় মেয়েদের মুখমণ্ডলসহ পুরো শরীরের ওপর কাপড় টেনে দেয়ার রেওয়াজ চালু হয়।
এই বক্তব্যের সপক্ষে যে হাদিসটির উল্লেখ করা হয় :
Narrated 'Aisha (wife of Prophet Muhammad): The Messenger of God, may the peace and blessings of God be upon him, used to offer the Fajr prayer and some believing women covered with their veiling sheets used to attend the Fajr prayer with him and then they would return to their homes unrecognized. (Bukhari)
এই হাদিসটির সময়কাল ছিল ৩৩:৫৯ আয়াত নাজিল হবার কিছুদিন পরেই। নেকাব সমর্থকেরা বলেন যে, এই হাদিসটিই প্রমাণ করে নবীজীর সময়ে নারীদের শনাক্ত করা সম্ভব ছিল না কারণ তারা নেকাব পরিধান করত।
যা-ই হোক, অন্যান্য গবেষকরা মনে করেন তাদের চেহারা শনাক্ত করা যায়নি তার কারণ এই নয় যে তারা মুখ ঢেকে রাখতেন, বরং সূর্যোদয়ের আগে যে অন্ধকার বিরাজ করে সেটাই ছিল কারণ। মজার বিষয় হচ্ছে, আয়শা বলেছেন, ‘কিছু’ নারী, সবাই নয়। শুধু তা-ই নয়, তিনি শুধু ফজরের ওয়াক্তের (অর্থাৎ সূর্যোদয়ের আগের সময়ের) কথাই বলেছেন, অন্য কোনো নামাজের কথা বলেননি।
আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই গবেষকরা বলেন, 'cast their outer garments over their persons' বাগধারার অর্থ বুঝতে ভুল করা হয়েছে। তারা বলেন যে মূল আরবি ভাষায় ‘মুখ’ শব্দটিকে নির্দেশ করা হয়নি, তাই ওই বাগধারাটির এই রকম অনাকাঙ্ক্ষিত সম্প্রসারিত রূপ অবশ্যই বিভ্রান্তিকর ও পরিত্যাজ্য।
নেকাবের অন্যান্য সমর্থকেরা কোরানের এই আয়াতটিকেও ব্যবহার করেন নেকাবের সপক্ষে :
...And when you ask (the Prophet's wives) for anything you want, ask them from before a screen: that makes for greater purity for your hearts and for theirs. (Qur'an 33:53)
কোরানের এই আয়াত অনুযায়ী নবীর স্ত্রীগণকে সত্যিই নেকাব পরতে হতো বলে ধারণা করা যায়। এর কারণ তাদের ছিল বিশেষ প্রায়োধিকার ও মর্যাদা, তা তাদের রক্ষা করতেই হতো সব ধরনের কুৎসা ও রটনা থেকে দূরে থাকতে হলে। গবেষকরা বলেন যেহেতু নবীর স্ত্রীদের (যাঁরা ছিলেন শ্রেষ্ঠ নারীর মর্যাদায় ভূষিত) নেকাব পরতে হতো, তাই এ নিয়ম বাকি সব নারীর জন্যই প্রযোজ্য।
যা-ই হোক, একই সূরার প্রথমদিকে, কোরানে স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে যে নবীর স্ত্রীগণ অন্য সব নারীর সমতুল্য নন :
O Wives of the Prophet! You are not like any of the other women. (33:32)
"হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মতো নও।" (৩৩:৩২)
অধিকাংশ গবেষকই একমত যে, ওই আয়াতে পর্দা অথবা মুখ ঢাকার যে-কথা বলা হয়েছে তা শুধুমাত্র নবীর স্ত্রীদের জন্যই বাধ্যতামূলক ছিল। তাঁরা বলেন এই আয়াতে এই বিষয়টি পরিষ্কার যে, নবীর স্ত্রীগণের চলাফেরা অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত ছিল তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে, এবং তাঁদের ক্ষেত্রে যে ‘কোড অব কনডাক্ট’ প্রযোজ্য ছিল তা অন্য সাধারণ নারীদের জন্য প্রযোজ্য হবার কথা নয়।
অধিকাংশ গবেষক একমত যে, ইসলামে নেকাব বাধ্যতামূলক নয়। এর পক্ষে তারা যেসব রেফারেন্স প্রদর্শন করেন :
Say to the believing men that they should lower their gaze and guard their modesty: that will make for greater purity for them: And Allah is well acquainted with all that they do.
And say to the believing women that they should lower their gaze and guard their modesty; that they should not display their beauty and ornaments except what (must ordinarily) appear thereof... (24:30-31)
"তুমি মুমেনদিগকে বলো, তাহারা যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাহাদের লজ্জাস্থানসমূহের হিফাযত করে। ইহা তাহাদের জন্য অত্যন্ত পবিত্রতার কারণ হইবে। নিশ্চয় তাহারা যাহা করে সেই সম্বন্ধে আল্লাহ ভালোভাবে অবগত আছেন। এবং তুমি মুমেন নারীদিগকে বলো,তাহারাও যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হিফাযত করে এবং নিজেদের সৌন্দর্যকে প্রকাশ না করে, কেবল উহা ব্যতিরেকে যাহা স্বাভাবিকভাবেই প্রকাশ পায়... " (২৪:৩০-৩১)
অধিকাংশ আধুনিক গবেষকের মতে, 'what is apparent of it' বলতে হাত এবং মুখের কথা বলা হয়েছে।
আরেকজন গবেষক, শায়েখ কুট্টি, একজন সিনিয়র লেকচারার এবং ইসলামিক ইন্সটিটিউট অব টরন্টোর একজন ইসলামি গবেষক, মত প্রকাশ করেন যে, যেহেতু আল্লাহ পুরুষ এবং নারী উভয়কেই তাদের দৃষ্টি সংযত করতে বলেছেন, এতে এটাই প্রমাণ হয় যে তাদের মুখ দৃশ্যমান, নয়তো ওই আদেশের কার্যকারিতা থাকে না।
যেসব গবেষক এই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন তাঁরা এটাও বলেন যে, নবীজী সুনির্দিষ্টভাবে মক্কায় হজ পালনের সময় মুখ এবং হাত ঢাকার কথা নিষেধ করেছেন। যদি হাত এবং মুখ ঢাকার ব্যাপারটি এতই প্রয়োজনীয় হতো, তাহলে একজন নারীকে তার জীবনের সবচেয়ে পবিত্র স্থানে তা করতে নিষেধ করা হতো না। এমনকি যেসব গবেষক বিশ্বাস করেন নেকাব বাধ্যতামূলক নয় তাঁরা এটাও স্মরণ করিয়ে দেন যে, নামাজের সময়ও নারীদের মুখ ঢাকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
নেকাব যে বাধ্যতামূলক নয় তার আরেকটি প্রমাণ পাওয়া যায় এই হাদিসে :
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস থেকে বর্ণিত, একদা রসুল উটের পিঠে চড়ে যাচ্ছিলেন, আব্দুল্লাহর ভাই আল-ফজলও ওনার পেছনে বসা ছিল। একটি সুন্দরী রমণী নবীজীর কাছে এল তার বাবার হজের ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন করতে। আল-ফজল মেয়েটির সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে বারবার তার দিকে তাকাতে লাগল। নবীজী এটি লক্ষ করেছিলেন। মেয়েটি যখন তার সঙ্গীদের নিয়ে চলে যাচ্ছিল তখন তিনি আল-ফজলের মুখ হাত দিয়ে ধরে মেয়েটির দিক থেকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেন। আল আব্বাস নবীজীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি উত্তর করলেন, “আমি লক্ষ করলাম ছেলেটি এবং মেয়েটি উভয়েই তরুণ; এবং আমি ভয় পাচ্ছিলাম শয়তান এখানে নাক গলাতে পারে।” (তিরমিযী এবং বুখারী)
গবেষকরা যুক্তি দেখান, নবীজী যুবক আল-ফজলের দৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন, কিন্তু ওই নারীর মুখমণ্ডল উন্মুক্ত থাকার বিষয়ে কিছু বলেননি। নিয়ম অনুযায়ী, নবীজী যেসব বিষয়ে নীরব থেকেছেন তা তাঁর সমর্থনেরই বহিঃপ্রকাশ। এই হাদিসটিকে তাই একটি শক্ত প্রমাণ হিসেবে মনে করা হয় নেকাব যে বাধ্যতামূলক নয় তা বোঝাতে।৬
একটা ব্যাপার নিশ্চিত করেই বলা যায়, কোরান বা হাদিসে নারীকে নেকাব পরতে বলার নির্দেশ খুঁজে পাওয়া যায় না। মোল্লারাই বরং অত্যুৎসাহী হয়ে নারীর জন্য পর্দা ফরজ বলে ফতোয়া দিয়ে আসছেন, কিসের স্বার্থে সেটা আমাদের বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয়। আর ধর্মের সাথে সমাজব্যবস্থার এই সংঘর্ষ তো আজকের নয়।
ধর্মীয় বিধান সম্বন্ধে না জেনে শুধু অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণের কারণে মানুষ ধর্ম থেকে ইতোমধ্যেই অনেকটা দূরে সরে গেছে। এই সরে আসা কেবল ‘আলোকপ্রাপ্ত’ মধ্যবিত্ত নয়, প্রান্তিক সমাজেও ঘটেছে। ফলে আমরা দেখছি কীভাবে একটা মধ্যপন্থী সমাজ ধীরে ধীরে চরম পন্থা গ্রহণ করছে। আমরা মনে করি, এখানে সচেতন বাঙালি মুসলিমদের বিরাট ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। তাঁদের এগিয়ে আসতে হবে এবং মানুষকে জানাতে হবে নেকাব কোনো ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নয়—যা না মানলে মুসলিমদের ধর্ম পালনের অধিকার ক্ষুণ্ন হবে।
নেকাব পরা মহিলা অন্যের প্রতি অবিশ্বাস, সন্দেহ ও সংশয়ের মূর্ত প্রতীক। যিনি নেকাব পরে মুখ ঢেকে রাখেন তিনি হয়তো আশঙ্কা করেন, মুখ দেখলে দর্শনকারীর মধ্যে অনভিপ্রেত উত্তেজনার সৃষ্টি হবে। এ ধরনের অন্যায় ও অবান্তর সন্দেহ বা অবিশ্বাস কোনো ভদ্র সমাজ মেনে নেবে কি?
এই নেকাব, অর্থাৎ মুখ ঢাকার সংস্কৃতি তো আমাদের নয়। বাঙালির তো নয়ই, ইসলামেরও নয়। বস্তুত এ এক মধ্যযুগীয় পন্থা, ধর্মীয় বাতাবরণের আড়ালে যা পুরুষতন্ত্রেরই জিগির গাইছে! নেকাব যে নারীর অধিকার নয়, তাদের প্রতি পুরুষের নিগ্রহেরই চিহ্ণ এটা আমরা আর কবে বুঝতে পারব?
ছবি-কৃতজ্ঞতা : http://www.zawaj.com/askbilqis/wp-content/uploads/2011/01/niqab-veil.jpg
কুটুমবাড়ি
মন্তব্য
একই বিষয় আমিও একটা লেখা তৈরী করছি।
শিগগিরি দ্যান। পড়ার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করছি...
আপাদমস্তক হিজাবে মোড়ানো নারীদের আমার নামপরিচয়হীন মানুষ মনে হয়। তবুও ব্যক্তিস্বাধীনতার খাতিরে আমি যেকোনো নিষিদ্ধকরণের বিপক্ষে। তবে হিজাবে বিশ্বাসীরা সাধারণত ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী হন না। জিন্স পরার কারণে পুরুষের নয়, বরং বোরকা পরা নারীদের কটাক্ষের শিকার হতে হয় আমাকে। আমার মতে এগুলো তীব্র অবদমনের বহিঃপ্রকাশ।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, বুনোদি। তবে অনেক নারীকে কিন্তু হিজাব না নেয়ার কারণেও কটাক্ষের শিকার হতে হয়। জানি না আমরা আর কবে জাতিগতভাবে সুস্থ মানসিকতার পরিচয় দিতে পারব!
আপনি বোধ হয় আমার মন্তব্য ঠিকমতো পড়েন নি।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
বুনোহাঁস, উপরের থ্রেডের সাথে অসম্পর্কিত একটি প্রশ্ন। আপনিও তো অন্তত এই লেখার মন্তব্যে শালীনভাবে নিকাবপরিহিতাদের সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যেগুলো তারা কটাক্ষ হিসেবে নিতে পারে। ধরে নেই, আপনার সাথে তাদের পার্থক্য, তারা তাৎক্ষণিক করে ফেলে এবং হয়তো এরকম শালীনভাবে প্রকাশ করে না। সেটা একটা পার্থক্য মেনে নিতেই হবে, কিন্তু মূলত গুনগত। কিন্তু দিনশেষে আপনিও তো ভ্যালু জাজমেন্টই আরোপ করছেন। এখন যদি তারা বলে এটাও একরকম অবদমনের বহিপ্রকাশ, আপনার আপব্রিংগিং-এর ফলাফল, আপনার মন্তব্য কি হবে?
আমার মন্তব্য হবে "দূরে গিয়া মরেন"। তারাও আমাকে দূরে গিয়া মরতে বলতে পারেন, আমার কোনো সমস্যা নাই। হেদায়েত করতে না আসলেই হলো। I just hate any kind of preaching...
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
বাট দেন হ্যাভন্ট ইউ বিন 'প্রিচিং' টু? এই পোস্টের উত্তরে আপনার মন্তব্যগুলার অংশবিশেষ পড়েন; 'অবদমনের বহিপ্রকাশ' বেশ কড়া একটা টার্ম (এর সমাধাণ কি কেবল নিকাব না পড়া?); আপনার প্রকাশমাধ্যম এবং ক্ষেত্রটা হয়তো ভিন্ন। আপনি হয়তো রাস্তায় এদের হাতে গুঁতো খেয়ে এখানে এসে ঝাড়ছেন (হাইপোথেটিকালি, হয়তো রাস্তায়ও 'দুরে গিয়ে মরেন' বলে এসেছেন )।
আপনি 'এদের' থেকে সুপেরিয়র কোন চলকে?
না, বাড়াবাড়ি না করলে আমি রূঢ় ব্যবহার করি না। এখানে যা লিখছি সেগুলো আমার মতামত। নিজের মতামত অন্যের উপর চাপানো আমার স্বভাববিরুদ্ধ। একইভাবে সবার মতামত আমার কাছে গুরুত্ব বহন করে না। আমার আচরণকে প্রিচিং বলা যেত যদি আমি কোনো হিজাবি রমণীকে বোঝানোর চেষ্টা করতাম যে তার আসলে হিজাব পরা উচিত নয়। "আমি হিজাব করি না তাই আমি ভালো, সে করে তাই সে খারাপ" এটা বোঝাতে যাওয়ার চেষ্টাটাই প্রিচিং। বিনা প্ররোচনায় যখন কোনো বোরকা পরা মেয়ে পাশ থেকে টিপ্পনি কাটে বা জ্ঞান দিতে চেষ্টা করে, আমার তখন তাকে অসুখী ও ঈর্ষাকাতর মনে হয়। একেই আমি অবদমনের বহিঃপ্রকাশ বলি। এ ধরনের ঘটনায় কাউকে "দূরে গিয়া মরেন" বলার প্রয়োজন হয় নাই এখনো। সুন্দর করে "আপনার কি খুব সমস্যা হচ্ছে?" বললেই তারা চুপসে যান।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
আমিও মোটামুটি এরকমই জানি, আর নিকাব জিনিসটা যে পুরুষতান্ত্রিকতারই প্রতীক, (ধর্মের আরো অনেক জিনিসের মতই) তাতে মনে হয় কোন সন্দেহ নেই।
তবে নিকাব নিষিদ্ধ করাটা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত, সেটা নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে। আপনার মতামত কি?
নেকাব নিষিদ্ধ করাটা কেন যুক্তিসঙ্গত মনে হয় না আপনার কাছে একটু বলবেন?
ও হ্যাঁ, বলতে ভুলে গিয়েছিলাম, আমি অতি অবশ্যই নেকাব নিষিদ্ধকরণের পক্ষে। শুধু ফ্রান্সে (বা ইউরোপে) না, বাংলাদেশেও। নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে আপনার কী কী যুক্তি আছে শোনার অপেক্ষায় রইলাম।
কোনো জিনিস নিষিদ্ধ করা হতে পারে ২ টা কারণে
১। বাস্তবিক বা প্রায়োগিক কোন কারণে--এই জিনিসটার কোন পরিমাপযোগ্য বা দর্শনীয় একটা ক্ষতি আছে
২। সিম্বলিক কারণে।
আপনি যে নিষিদ্ধকরণের পক্ষে, সেটা ঠিক কোন ক্ষেত্রে পড়ে সেটা জানালে বাধিত হব। আপনি একদিকে নিকাব নিষিদ্ধের পক্ষ নিয়ে বলছেন এটা "অবিশ্বাস, সন্দেহ ও সংশয়ের মূর্ত প্রতীক" আবার কবজি পর্যন্ত ঢাকা হিজাবের ক্ষেত্রে আপনার ভূমিকা অনুপস্থিত। মুখের সোয়া বর্গফুট ঢাকলেই অপমান, আর মুখখুলে একটা ঢাউস সান গ্লাস পড়ে বাকি পুরো শরীর ঢেকে রাখলে আপনি খুশী?
নিচে একজন সরাসরিই বলেছেন, ফ্রান্স ফরাসীদের দেশ, সেখানে "ফরাসী" মূল্যবোধই চলবে, কোন মুসলিমের ভাল না লাগলে সে চলে যেতে পারে। এই পেশীবহুল যুক্তিতে, কোন ফরাসী নাগরিক যদি মুসলীম ধর্মধারী হন এবং নেকাব/হিজাব করতে ইচ্ছুক হন, তাহলে তার কী হবে? সিটিএন বা ডিজিয়েম? "ফরাসী সংস্কৃতি" কি শুধুমাত্র সরলরৈখিক, ব্ল্যাক এনড হোয়াইট?
এই ধরনের যুক্তির সাথে সামহোয়ারইনের কিছু ব্লগারের কোন তফাৎ পাইনা, যারা "৯৭ ভাগ" মুসলিমের দেশে মুসলিম সংস্কৃতির জোয়ারের কথা বলে "হিন্দুয়ানী"/"ভারতীয়" সংস্কৃতি বর্জন করতে বলেন।
নিষিদ্ধকরণ এই ধরনের যুক্তির পালে ঝড়ো হাওয়া যোগাবে, সন্দেহ নেই।
আমি গায়ে পড়ে আপনার প্রশ্নের উত্তরটা দিতে পারি। রাষ্ট্রের আইন ব্যক্তির ইচ্ছার ওপরে প্রাধান্য পাবে। ধর্মীয় চর্চা যদি রাষ্ট্রের আইনের সাথে সংঘাতপূর্ণ হয়, তাহলে ধর্মীয় চর্চার অধিকার আইনের কাছে নত হবে। এ কারণেই আপনি ইয়োরোপে বা মালয়েশিয়ায় রাস্তার ওপর গরু কোরবানি দিতে পারবেন না, যেটা বাংলাদেশে সম্ভব। এ কারণেই কোনো কোনো পেইগান ধর্মে নরবলির চর্চা থাকলেও সেটা সভ্য সমাজে চলবে না।
ধন্যবাদ, মন্তব্যে একাধিক প্রশ্ন ছিল, আমি ধরে নিচ্ছি "কোন ফরাসী নাগরিক যদি মুসলীম ধর্মধারী হন এবং নেকাব/হিজাব করতে ইচ্ছুক হন, তাহলে তার কী হবে?" এটার উত্তরে আপনার মন্তব্য।
আপনার কথাগুলির সাথে একমত, তবে সেটা অবশ্যই আইন প্রণয়নের পরে। আমার (এবং এখানকার বেশীরভাগেরই ) যুক্তিগুলোর উদ্দেশ্য হল, যে এই আইন করাটা যুক্তিসম্মত কিনা, সেটা বোঝার বা বোঝানোর চেষ্টা করা। আর আইন প্রণীত হয়ে গেলেও সেটা ঠিক না বেঠিক, সেটা নিয়ে কথা হয়। আমার কথাগুলো সে উদ্দেশ্যেই।
আইন প্রণয়নের পরে নয়, আগেও। সব ধর্মীয় আচারকে তো বর্তমান সভ্য সমাজে অ্যাকোমোডেট করা সম্ভব নয়। খোদ ভ্যাটিকান এককালে লাইন ধরে উইচ হান্টিং করেছে ইয়োরোপ জুড়ে। আজ যদি তারা আবার সেই আবদার নিয়ে ফ্রান্সের মাঠেঘাটে নামে, ফরাসী সরকার কি অনুমোদন করবে? ইয়োরোপে হিন্দুরা পূজার পর প্রতিমা নদীতে বিসর্জন দিতে পারে না, কারণ বিশাল অঙ্কের জরিমানা হবে, অবৈধভাবে নদীতে ডাম্পিং করার জন্যে। ধর্ম তার কমান্ড এরিয়ার বাইরে গেলে কিছু আচারের যৌক্তিকতা আর পরিধি হারায়।
আপনি যে উদাহরণ গুলি দিলেন, সেগুলো সবই আমার মন্তব্যের নিষিদ্ধকরণ যুক্তি-১ এ পড়ে। সেগুলো নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু একজন ব্যাক্তির পোষাকের মত একটা ব্যাক্তিগত ব্যাপারে হস্তক্ষেপটা যে ব্যাক্তিস্বাধীনতায় বাধা হয় না, সে ব্যাপারে আমি নিঃসন্দেহ নই। এই আইনটা শুধুমাত্র পাবলিক প্লেসের জন্য হলেও।
আপনি সম্ভবত অবগত নন যে ব্যক্তির পোশাক পুরোপুরি ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। ব্যক্তিগত হলে রাস্তায় সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হয়ে চলার অধিকার মানুষের থাকতো, যেটা পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই নেই (আমার অজান্তে কোনো দেশে থাকতেও পারে, এ কারণে বেশিরভাগ বললাম, নইলে বলতাম কোনো দেশেই নেই)। আর রাষ্ট্রের বেশিরভাগ আইনই "ব্যক্তিস্বাধীনতা"র ওপর হস্তক্ষেপ করে।
আপনার আর আমার তফাৎ শব্দের অর্থ আর পরিধিতে। ব্যাক্তিস্বাধীনতা আর "ফ্রী উইল" আপনি সম্ভবত গুলিয়ে ফেলছেন, তাই বলছেন যে রাষ্ট্র এটায় হস্তক্ষেপ করে প্রায়শই। ব্যাক্তিস্বাধীনতা বা পারসনাল ফ্রীডম বলতে এখানে প্রচলিত অর্থই ব্যবহৃত হচ্ছে, শুধুমাত্র শাব্দিক অর্থ নয়।
আপনি বলছেন পোষাক "পুরোপুরি ব্যাক্তিগত ব্যাপার নয়", অর্থাৎ আপনার সীমারেখাটি "পুরো ব্যাক্তিগত" আর "পুরো রাষ্ট্রীয়" এই ২টির মাঝে এক জায়গায় পড়ে। আমারটিও তাই, হতে পারে আপনার থেকে একটু সরে গিয়ে। নিকাব নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে সেই সীমারেখাটি "পুরো রাষ্ট্রীয়ে"র দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, এবং এই কাজটির পেছনে যে যুক্তিগুলো দেখানো হয়েছে বা এখানে দেখানো হচ্ছে, সেগুলো নিয়েই আমি নিঃসন্দেহ নই।
না, স্বাধীন ইচ্ছা আর ব্যক্তিস্বাধীনতার মধ্যে গুলিয়ে ফেলছি না। তারপরও আপনি উইকির লিঙ্ক দিয়ে আমাকে ব্যক্তিস্বাধীনতা শেখাতে চাইলেন বলে সেখানে গিয়ে সিভিল লিবার্টিজের ওপর জ্ঞান লাভ করলাম। এবং ঐ লিঙ্কে যদি আপনি নিজেও গিয়ে থাকেন, তাহলে দেখবেন, এগুলোর প্রায় প্রতিটিই রাষ্ট্রের আইন দিয়ে সীমিত করা আছে। আপনার রাইট টু অ্যাসেম্বলিকে খর্ব করার জন্য ১৪৪ ধারা আছে উপমহাদেশের আইনে। আপনার রাইট টু প্রাইভেসিকে খর্ব করার জন্য রাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
আপনি যেহেতু যুক্তি নিয়ে নিঃসন্দেহ নন, বিপরীত যুক্তিই শুনতে চাইছিলাম আপনার কাছ থেকে। আপনি সেটা দিচ্ছেন না বা দিতে পারছেন না। আপনার ব্যক্তিগত সন্দেহহীনতার কোনো মূল্য দিতে পারছি না বলে এখানে থেমে গেলাম।
@দিফিও-1,
হাত ও মুখ ঢেকে রাখার সাথে বাকি শরীর ঢেকে রাখার তুলনাটা ঠিক কীভাবে হয়? মুখ মানুষের আইডেন্টিন্টি, সেটাই ঢেকে রাখলে ক্যাম্নে কী? যারা বলতে চান নেকাব পরা একজন মুসলিমের আইডেন্টিন্টি তারা কি ওই নারীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য নিয়ে চিন্তিত? মনে তো হয় না। এ রকম বর্বর একটা সিস্টেম কোনো সভ্য সমাজ কত দিন মেনে নেবে বলে আপনার মনে হয়?
মুখ ঢেকে চলাটা কোনো ধর্মীয় বিধানেই নেই। যদি থাকতও তাহলে তা রাষ্ট্রীয় বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হতো এবং সেক্ষেত্রে কী হতো তা হিমু ভাই ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন। আমার ধারণা, ফ্রান্স এক্ষেত্রে বাকি বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় হয়ে রইল।
তুলনাটা হয় আপনার লেখা থেকে। আপনি লিখেছেন "যিনি নেকাব পরে মুখ ঢেকে রাখেন তিনি হয়তো আশঙ্কা করেন, মুখ দেখলে দর্শনকারীর মধ্যে অনভিপ্রেত উত্তেজনার সৃষ্টি হবে।" আপনি লেখায় হিজাবের সম্বন্ধে এরকম কোন মনোভাব প্রকাশ করেননি, তাই আমার প্রশ্ন, গরমের মধ্যেও যে হিজাব নির্দেশ দেয় কবজি পর্যন্ত ঢেকে রাখতে, সেটাকে তো অনায়াসেই ধরা যায় যে "অনাবৃত বাহু দেখলে দর্শনকারীর মধ্যে অনভিপ্রেত উত্তেজনার সৃষ্টি হবে।" হিজাব আর নিকাব করার অন্তর্নিহিত স্পিরিচুয়াল কারণ হুবহু একই , একেবারে ১০০% একই, তফাৎ কেবল সোয়া বর্গফুটের। তবে আপনি কেন নিকাবের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়ে এটাকে নিষিদ্ধ করতে চান অথচ হিজাব নিয়ে আপনি কিছু বলেননা?
এই একটা কথার মধ্যেই অনেক রকম দ্বিমত উত্থাপন করা সম্ভব প্রথম কথা, মুখ যে মানুষের আইডেন্টিটি, এটা অতিশয় জেনারেল একটি কথা। অনেক ক্ষেত্রে চোখও একটি আইডেন্টিটি, চোখের ছবি দিয়ে মানুষ সনাক্ত করা সহজ, আবার আমরা মানুষরা চোখে চোখ রেখেই কথা বলি। তাহলে চোখ খোলা নেকাব দোষ করল কোথায়?
২য়ত, আইডেন্টিটি ঢেকে রাখাটাই বা "ক্যাম্নে কী?" হবে কেন? মনে রাখুন, এখানে কিন্তু ব্যাংক একাউন্ট ভেরিফিকেশন বা এয়ারপোর্টে পরিচয় নির্ধারণ নিয়ে কথা হচ্ছেনা, হচ্ছে পাবলিক প্লেসে নিকাব পরা যাবে কি না যাবে তা নিয়ে। পুলিশ এসে মনুষ সনাক্ত করতে চাইলে নিকাবের দোহাই দেয়া একটা জিনিস, আবার নিকাব পরিহিত, শুধুমাত্র এই কারণেই জরিমানা, দুটোয় কিন্তু তফাৎ আছে।
চোখের ছবি দিয়ে মানুষ সনাক্ত করা সহজ নয়। আইরিসের প্যাটার্ন ম্যাচিং করানোর জন্য সংবেদনশীল যন্ত্র লাগে, যেটা সঙ্গে নিয়ে পাবলিক প্লেসে লোকজন ঘোরে না। আপনি নিজেও দশজন নেকাব-পরা মেয়ের ভিড়ে একজনকে শুধু চোখ দেখে সনাক্ত করতে পারবেন না।
মানুষের চেহারাকে আপনার কাছে কেবল সোয়া বর্গফুটের একটা মাংসপিণ্ড মনে হয়? হাসালেন মশাই।
কোনো নারীকে হিজাব পরতে দেখলে আমার বিবমিষাও জাগে না, করুণাও বোধ করি না। এমনকি কোনো নারীকে হিজাব পরতে দেখলে তার প্রতি বাড়তি সম্ভ্রববোধও করি না। ভেবে নেই মানুষের মধ্যে হাজারো বৈচিত্র্য আছে, এটাও হয়তো তারই একটা। তাই হিজাবের প্রতি আমার সমর্থন বা বিরাগ কোনোটাই নেই। এই এক কথা আর কয়বার বলব? তবে জনাব, নেকাবকে আমার একদমই সহ্য হয় না। কী আর করা, এটা হয়তো আমারই প্রব্লেম, তাই নেকাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে কলম ধরেছি। নেকাব নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে আপনার কোনো যুক্তি থাকলে দেখান, নয়তো অনর্থক এই ত্যানা পেঁচিয়ে লাভ আছে কোনো?
@দিফিও,
আপনি বোধ হয় হিজাবের অর্থ গুলিয়ে ফেলেছেন। পোস্ট থেকেই উদ্ধৃতি দেই-
হিজাব অর্থ 'কবজি পর্যন্ত ঢাকা' এই তথ্য আপনি কই পাইলেন?
আমি সবচেয়ে বেশি খুশি নারীরা নেকাব বা হিজাব না পরলে। কিন্তু আমার খুশিতে কী আসে-যায়? তাই আসেন নারীকেই সিদ্ধান্ত নিতে দেই। যেসব নারী একান্তই পর্দা করতে চান তাদের জন্য শুধু কোরানের নিচের আয়াত দুটি স্মরণ করিয়ে দেই-
"হে নবী! তুমি তোমার পত্নী, তোমার কন্যা এবং মোমেনগণের পত্নীগণকে বলো, যেন তাহারা তাহাদের চাদর নিজেদের ওপর ঝুলাইয়া লয়।" (৩৩:৫৯)
এই চাদরের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-ব্যাপ্তি ওই নারীই ঠিক করুক যে কিনা সেটা পরবে, আসেন আমি, আপনি বা কোনো মোল্লা বা রাষ্ট্র সেটা ঠিক করার চেষ্টাটা বাদ্দেই।
এবং তুমি মুমেন নারীদিগকে বলো,তাহারাও যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হিফাযত করে এবং নিজেদের সৌন্দর্যকে প্রকাশ না করে, কেবল উহা ব্যতিরেকে যাহা স্বাভাবিকভাবেই প্রকাশ পায়... " (২৪:৩১)
অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবেই শরীরের যতটুকু অংশ প্রকাশ পায় তার কথা বলা হচ্ছে। এখন এটা তো ব্যক্তি, অঞ্চল, পরিবেশ, আবহাওয়া, লোকালয় ভেদে পার্থক্য হতেই পারে, তাই না? তাহলে বুঝতেই পারছেন এটা শুধু মুখের সোয়া বর্গফুট বা শুধু একটা সানগ্লাস পরা না পরার ব্যাপার নয়।
এই তথ্য সবজায়গায়, সে আপনি বিবিসিতেই দেখুন বা উইকিতেই বা হিজাব জানা কাউকেই জিজ্ঞাসা করুন না কেন। সব জায়গাতেই লেখা রয়েছে যে হ্যান্ড বা হাতের পাতার হিজাবের বাইরে।
আপনার পরবর্তী যুক্তিগুলোও আমি বুঝতে একেবারেই অপারগ হলাম।
চমৎকার শোনালো কথাটা, কিন্তু সেই আপনিই আবার আপনার মন্তব্যে পুরোপুরি কন্ট্রাডিকটরি ভাবে বলেন
"
"
আমি এই কন্ট্রাডিকশনের অর্থ বুঝতে অপারগ।
সাথে এটাও বললেন যে
অর্থাৎ কিনা, আপনি যেভাবে ধর্ম বোঝেন, সেভাবেই পালন করাতে চান, আর আপনার মতের সাথে আর কারো ধর্মীয় ব্যাখ্যা না মিললে সেটা নিষিদ্ধ করলেই আপনি খুশী!
তাহলে আপনার সাথে বাউলদের চুল কেটে দেওয়া লোকগুলোর তফাৎ রইল কোথায়? হাজার হোক, বাউলদের মত করে ধর্মপালন কতটুকু "শরীয়তসম্মত" সে সম্বন্ধে প্রশ্ন তোলার লোকের তো অভাব নেই!
এই মন্তব্যটা হয়ত করতামনা, নেহায়েতই আমার আগের কমেন্ট নিয়ে আপনার একটা প্রশ্ন ছিল, তাই এই কমেন্ট করলাম। আগেও আপনি আমার কমেন্ট কে ""ত্যানা প্যাঁচানি" বলেছেন, এটাকেও যদি মনে করেন, সেই জন্যই এই কৈফিয়ত। এর পর যদি আমি কিছু বলি, তাহলে আসলে আমার আগের যুক্তিগুলোর পুনরাবৃত্তি করতে হবে, তাই আপাতত আর কিছু বলার নেই।
ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন।
আপনি একটু লক্ষ করলেই দেখতে পেতেন যে, মুসলিম নারীদের কেউ মুখঢাকা/মুখখোলা বোরকা পরে কেউ হাতাওয়ালা জামা, ওড়না, স্কার্ফ ইত্যাদি পরে আবার কেউ স্রেফ শাড়ি পরে পর্দা পালন করছে। হিজাবের অর্থ একেক জনের কাছে একেক রকম বলেই এমনটা ঘটছে। কিন্তু হিজাব অর্থ 'কবজি পর্যন্ত ঢাকা' বলে আপনি 'হিজাব' আর 'নেকাবে'র পার্থক্যটা এনে দাঁড় করিয়েছেন 'মুখের সোয়া বর্গফুটে'র মধ্যে, এখানেই আমার আপত্তি।
আমি পোস্টে দেখিয়েছি নেকাব সংস্কৃতি বাঙালিরও নয়, ইসলামেরও নয়। এই সংস্কৃতি মধ্যযুগের, ধর্মীয় অনুশাসনের কথা বলে এই সংস্কৃতি এখনও আমাদের এখানে লালন করা হচ্ছে। এর আলটিমেট বেনিফিশিয়ারি আমিনীর মতো কুকুররা আর তাদেরকে খেলনা বানিয়ে ফায়দা লোটা রাজনীতিকরাই হবে। সচেতন, শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব এই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। এর অর্থ এই না যে, নেকাব পরা নারীর ওপর খড়গহস্ত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এর অর্থ এই যে, নেকাব পরা নারী যে নিগ্রহের চিহ্ণ বয়ে বেড়াচ্ছে সে সম্বন্ধে জনসচেতনতা তৈরি করা। ব্যস, এতটুকুই আমার বক্তব্য। একে আপনার কাছে কন্ট্রাডিক্টরি মনে হলে তা আপনার দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা, আমি এর দায় নিতে অপারগ। আর বাউলদের ধর্মপালন কোনোভাবেই রাষ্ট্রীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক নয়, তাই তাদের ধর্মাচার শরীয়তসম্মত কি না সে প্রশ্ন তোলা বাতুলতা মাত্র। ঠিক একইভাবে, নেকাবও শরীয়তসম্মত কি না সে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না। শুধু এইটুকু যুক্তি দেখানো হচ্ছে যে, নেকাব নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মপালনে বাধা দেয়া হচ্ছে না। বর্তমানের এই সংঘাত আরব ভূখণ্ডের একটি নির্দিষ্ট অংশের সংস্কৃতির সাথে ফ্রেঞ্চ বা ইউরোপীয় সংস্কৃতির সংঘাত। প্রশ্নটা যখন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ও মূল্যবোধের, তখন ভিন্ন একটি দেশের সংস্কৃতিকে ইউরোপ মূল্য নাও দিতে পারে, এতে আপত্তির কিছুই দেখছি না।
এখন পর্যন্ত আপনি কী কী যুক্তি দেখিয়েছেন? আসেন দেখা যাক-
আমার মতে উভয় কারণেই নেকাব 'নিষিদ্ধ জিনিসে'র তালিকায় পড়া উচিত। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না বাংলাদেশসহ বেশির ভাগ মুসলিম-প্রধান দেশে পর্দাপ্রথার ধুয়া তুলে কীভাবে নারীর এগিয়ে যাওয়ার পথে ব্যারিকেড দেয়া হচ্ছে? নারীর পিছিয়ে পড়ায় যে ক্ষতি হচ্ছে তা কি খুব বেশি পরিমাপঅযোগ্য? সহস্র বছরের নিগ্রহের চিহ্ণ নারীরা আর কত দিন বয়ে বেড়াবে বলতে পারেন? আমি তো দেখতে পাচ্ছি শুধু ইরান আর সৌদি আরবের কোথাও কোথাও (শুধুমাত্র শহর এলাকায়) নেকাবকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তাদেরই তৈরি করা কালো আইনের অংশ হিসেবে। অথচ মজার বিষয় হচ্ছে খোদ সৌদি আরবের কাবা শরীফে নারীদের নেকাব পরা নিষিদ্ধ। এমনকি নেকাব পরা নারীর হজ বা নামাজ শরীয়তসম্মত নয়। তাই নেকাব নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে অবস্থান নেয়া আর সৌদি আরব এবং ইরানের কালো আইনের পক্ষ নেয়ার মধ্যে কার্যত কোনো পার্থক্য নেই এটা কি আপনি বুঝতে পারছেন না? যদি বুঝে থাকেন তো ভালো, আর নয়তো যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে যাবেন কেন নেকাব নিষিদ্ধ করা উচিত নয়।
ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
আপনি আমার মন্তব্যের মনগড়া ব্যাখ্যা দিচ্ছেন কেন? আমি তো বলেছিই (হিমু ভাইও বলেছেন), নারীর ধর্মপালনের অধিকার ততক্ষণ পর্যন্ত থাকবে যতক্ষণ না সেটা রাষ্ট্রীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হয়। এই সহজ সত্যটা আপনি বুঝতে চাইছেন না কেন?
বাউলদের ধর্মপালন কোনোভাবেই রাষ্ট্রীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক নয়, তাই তাদের ধর্মাচার শরীয়তসম্মত কি না সে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। এটা আপনি ঠিকই বলেছেন যে একই রকম সুযোগ নেই নেকাব শরীয়তসম্মত কি না সে প্রশ্ন তোলারও। তবে প্রশ্নটা যখন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা আর মূল্যবোধের, তখন কোনো একটি দেশ যদি ভিন্ন সংস্কৃতিকে মূল্য না দেয় তাহলে অবাক হওয়ার কী আছে? আর আমরাই বা এমন একটি সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করব কেন, যা কি না নারীর প্রতি সহস্র বছরের নিগ্রহের চিহ্ণ করছে?
এখন পর্যন্ত আপনি কী কী যুক্তি দেখিয়েছেন? আসেন দেখা যাক-
আমার মতে উভয় কারণেই নেকাব 'নিষিদ্ধ জিনিসে'র তালিকায় পড়া উচিত। মুসলিম বিশ্বে নেকাব/হিজাবের কারণে কীভাবে নারীরা পিছিয়ে পড়ছে তা কি আপনি দেখতে পাচ্ছেন না? এর ফলে যে আর্থিক, মানসিক, শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে নারীর তা কি খুব বেশি অপরিমাপযোগ্য? আর নেকাব কি অবমূল্যায়ন ও নিগ্রহের সিম্বল নয়? আপনার কাছে কী মনে হয়?
শুভেচ্ছা।
আপনি আমার মন্তব্যের মনগড়া ব্যাখ্যা দিচ্ছেন কেন? ধর্মপালনের অধিকার ততক্ষণ পর্যন্ত থাকবে যতক্ষণ না সেটা রাষ্ট্রীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হয়।
নেকাব শরীয়তসম্মত কি না সে প্রশ্ন তো তোলা হয় নাই এখানে। তবে প্রশ্নটা যখন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা আর মূল্যবোধের, তখন কোনো একটি দেশ যদি ভিন্ন সংস্কৃতিকে মূল্য না দেয় তাহলে অবাক হওয়ার কী আছে? আর আমরাই বা এমন একটি সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করব কেন, যা কি না নারীর প্রতি সহস্র বছরের নিগ্রহের চিহ্ণ বহন করছে?
আপনার লেখা থেকেই উদ্ধৃত করি-
আমার মতে উভয় কারণেই নেকাব 'নিষিদ্ধ জিনিসে'র তালিকায় পড়া উচিত। নেকাব/হিজাবের কারণে পর্দানশীন নারীরা সবদিক থেকেই পিছিয়ে পড়ছে। এর ফলে নারীর যে আর্থিক, মানসিক, শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে তা কি খুব বেশি অপরিমাপযোগ্য? আর নেকাব কি অবমূল্যায়ন ও নিগ্রহের সিম্বল নয়? আপনার কাছে কী মনে হয়?
শুভেচ্ছা।
দারুণ তথ্যবহুল একটি লেখা।
ধন্যবাদ, আশফাক। এত দীর্ঘ একটা লেখা সময় করে পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন বলে।
এ বিষয়ে ফ্রান্সের এক মন্ত্রীর সাথে অক্সফোর্ডের লালিতপালিত ধান্ধাবাজ ইসলামী চিন্তাবিদ তারিক রামাদানের এক তর্ক দেখেছিলাম। তারিক রামাদানের মতে, এই নেকাব মুসলিম নারীর আইডেনটিটি। আর ফ্রেঞ্চ মন্ত্রীর বক্তব্য ছিলো, ফ্রান্সে থাকতে হলে ফ্রান্সের সংস্কৃতির মূলধারাকে সম্মান করতে হবে। মুখ ঢেকে সমাজের অন্যদের এলিয়েনেট করা ফ্রান্সের সংস্কৃতির বিরোধী।
শুনেছি সৌদি আরবে নারী তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে পুরুষ সঙ্গী ছাড়া টাকা তুলতে পারে না। যারা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য বা ব্যক্তিস্বাধীনতার জিকির তুলে ফ্রান্সের আইনের সমালোচনা করবেন, তাদের কাছ থেকে এই ধরনের সৌদি কালো আইনের সমালোচনাও শোনার অপেক্ষায় রইলাম।
আপনার তাহলে অনন্তকাল অপেক্ষা করে থাকতে হবে। যারা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য বা ব্যক্তিস্বাধীনতার জিকির তুলে ফ্রান্সের আইনের সমালোচনা করবেন তাদের ফান্ড কোথা থেকে আসে? সৌদি আরব থেকেই তো! কাজেই তারা সৌদি কালো আইনের সমালোচনা করে নিজের ভাত নষ্ট করতে চাইবেন না এটাই স্বাভাবিক!
নেকাব চালু হয় কোন এক খলিফার আমলে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে। ওই খলিফার স্ত্রী দাবী করেন, রোমান সম্রাটের স্ত্রীরা খান্দানের অংশ হিসেবে মুখ ঢেকে রাখেন নেকাব দিয়ে, আমরাও খান্দানী। সুতরাং আমরাও মুখ ঢেকে রাখবো সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। সেই থেকে নাকি রেওয়াজটা চালু হয়। ধর্মের কোন নির্দেশনাকে অনুসরন করে এটা চালু হয়নি। এমনকি নবীর কোন স্ত্রীকে বোরকা পরতে বলা হয়নি একটা সময় পর্যন্ত। সুতরাং বোরকা নেকাব হিজাব এইসব আচার অর্ধশিক্ষিত মোল্লাদের সৃষ্ট আচার। তারা হাদিসের সাথে খুজে খুজে লিংক তৈরী করে এটাকে বাধ্যতামূলক আচার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে যুগে যুগে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সহমত।
আমি নেকাব (মুখঢাকা বোরকা) সাপোর্ট করি না কেননা এটা আমার কাছে অমানবিক বলে মনে হয়, কিন্তু এটা মনে হয় না যে যারা এটা পরছেন তারা আমাকে অপমান করছেন। আমারো ধারনা ছিল, নেকাব পরাটা ইসলামে বাধ্যতামূলক না, হিজাব হতে পারে। আপনার লেখা পড়ে সেটা আরেকটু পাকাপোক্ত হল।
কিন্তু এটা পরাকে নিষিদ্ধ করে দেয়াটা কী ঠিক হল? আপনি যখন কোন কিছু করা নিষিদ্ধ করে দিবেন তখন সেটার পরিণতি কিন্তু খুব একটা ভালো হয় না। এখন ফ্রান্স সরকার কী খ্রিস্টান নানদের তাদের পোষাক (যেটা পরা বাধ্যতামূলক তাদের জন্য) পরতে নিষিদ্ধ করতে পারবেন, ইহুদীদের মাথার টুপি পরা নিষিদ্ধ করতে পারবেন? এমনকি যেসব নারী উগ্র পোষাক পরেন তাদের সেটা পরতে নিষিদ্ধ করতে পারবেন? পারবেন না, তাহলে যারা নেকাব পরেন ইসলামের নামে তাদের কেন এটা পরতে নিষেধ করবেন। আপনি আইন করতে পারেন নেকাব পরতে বাধ্য করা যাবে না, আপনি মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারেন যে নেকাব পরা ইসলামে বাধ্যতামূলক না কিন্তু এটা নিষিদ্ধ করতে পারেন না। কোন কিছু তখনই নিষিদ্ধ করা উচিত যখন সেটা অন্যের জন্য ক্ষতির কারণ, নেকাবধারীরা তো অন্যের ক্ষতি করছে না চেহারা লুকিয়ে, তাই না? যেমন আমেরিকায় তিনজন মানুষ একসাথে মুখঢাকা মুখোশ পরতে পারেন না (কোন স্পেসিফিক কারণ ছাড়া) সিকিউরিটির জন্য (সম্ভবত ব্যাংক ডাকাতি/ছিনতাই এসব কারণে), এটা রিজোনেবল কিন্তু নেকাব নিষিদ্ধ করে দেয়াটা মোটেই রিজোনেবল না, এতে করে আসলে মৌলবাদকে আসলে গুরুত্বই দেয়া হচ্ছে, উস্কে দেয়া হচ্ছে। মৌলবাদীদের প্রচারনা- পশ্চিমারা মুসলমানদের ধর্মপালনে বাঁধা দেয়- কে শক্তিশালী করা হচ্ছে। সেদিন একটা ভিডিও দেখেছিলাম এ ব্যাপারে, বাসায় ফিরে সেটা শেয়ার করব পারলে।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
তিনজন মানুষ মুখ মুখোশে ঢাকলে সিকিউরিটি বিপন্ন হয় যদি, নেকাবে ঢেকে রাখলে বিপন্ন হবে না?
নেকাবধারীদের দিয়ে কী কখনো কোন বিপদ হয়েছে?
এটা আমিও জানতে চাই।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
১. Gunman disguised in burka and sunglasses robs cash courier
২. Burqa Bandit? Man in Woman's Middle Eastern Dress Robs Bank, Say Md. Cops
৩. Australian police say man dressed in burqa robs cash courier at gunpoint in Sydney parking lot
ফরাসীদের এই আচরণকে দেখার দুটো সম্ভাব্য দৃষ্টিকোণ তুলে ধরি।
১. ফরাসীরা ইসলামী অনুষঙ্গ পালনে বাধা দিতে চায়
২. ফরাসীরা তাদের দেশের পথেঘাটে মুখ ঢেকে চলাফেরা নিষিদ্ধ করতে চায়
আপনি কোন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখবেন, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
আমেরিকায় ৩ জন একসাথে মুখোশ পড়তে পারেনা, এরকমটা শুনিনি কখনো। মুখোশ সংক্রান্ত যা নিয়মকানুন আছে, তা স্টেট থেকে স্টেটে ভিন্ন হয়, আর বেশীরভাগই মনে হয় পাবলিক ডিস্টার্বেন্স ঠেকানোর জন্য।
আমি একসাথে অনেকজন হিজাব পরিহিতা দেখলে ডিস্টার্বড ফিল করি। মনে হয় অনেকজোড়া চোখ আমাকে দেখতে পাচ্ছে অথচ তাদের আমি দেখতে পাচ্ছি না।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আমি অনেক কিছুই নিষিদ্ধ করণের পক্ষে। আপনি আমার বাসার পাশে পটকা ফোটাতে পারবেন না। শব্দ দুষণে আমার সমস্যা হয়। আপনি আপনার চেহারা লুকিয়ে (সে নেকাবে হোক আর যে কচুতে হোক) আমার সমাজে চলতে পারবেন না। আমি ভয় পাই। যে তার সবার মাঝে তার পরিচয় লুকাতে চায় তাকে আমি চোর মনে করি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কুটুমবাড়ি, আপনি বাহবা দিলেন - কিন্তু এটায় কি লিবারেল ফ্যাসিজম হওয়ার সম্ভাবনা নেই?
এই ভিডিওটা শেয়ার করতে চাচ্ছিলাম আমার মন্তব্যে:
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
আপনি একবার বলছেন অমানবিক, পরক্ষণে আবার নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে বলছেন।
অমানবিক যেটা মনে হয় সেটাকে নিষিদ্ধ করলে অসুবিধা কি?
কেউ যদি স্বেচ্ছায় (হ্যা, স্বেচ্ছায়, তার ফ্যামিলি কিংবা অন্য কারো ইচ্ছায় নয়) নেকাব পরে আপনি তাদের সেটা পরা নিষিদ্ধ করে দিতে চান? অমানবিক মনে হওয়াটা আমার নিজস্ব ব্যাপার, সেটার জন্য আমি অন্য কারো ইচ্ছায় বাঁধা দিতে পারিনা।
আমারতো অনেক কিছুই ভালো লাগে না, এখন আমি যদি দাবি তুলি সেগুলো নিষিদ্ধ করতে হবে তাহলে কী হবে?
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
আপনাকে এর আগেও একবার শিখদের কৃপাণ বহনের উদাহরণ দিয়েছিলাম। কৃপাণ ধারণ শিখদের ধর্মের অংশ [যেটা নেকাব নয়]। কোনো শিখ যদি স্বেচ্ছায় একটা কৃপাণ কোমরে গুঁজে সবসময় আপনার আশেপাশে ঘুরঘুর করে, আপনি কি নিরাপদ বোধ করবেন?
আপনার এই নিরাপত্তাবোধ যদি কালেকটিভ একটা ব্যাপারে পরিণত হয়, তখন কি আপনি আইন প্রণয়ন করে ঐ শিখকে কৃপাণ ধারণে নিবৃত্ত করতে পারেন?
ফরাসী কোনো লমেকার যদি বলতো, আমার নেকাব ভালো লাগে না, চলেন এই নেকাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইন বানাই, তাহলে আপনার লাইনে তর্ক চলতো। ওপরে দেখুন, কিছু উদাহরণ দিয়েছি, কেন তারা নেকাবকে নিরাপত্তার কমপ্রোমাইজ বলে মনে করছে।
আপনার অবশ্যই অধিকার আছে কোনো কিছু নিষিদ্ধ করার দাবি তোলার। কিন্তু আইন প্রণয়নের জন্য আপনার একার দাবি খুব একটা জোরালো নয়। আপনি যদি দাবিটাকে আইনপ্রণেতার কাছে জোরালো ভাবে উপস্থাপন করতে পারে, এবং সে যদি একটা বিল উত্থাপন করে পাশ করাতে পারে, তাহলে আপনার মনমতো একটা আ্ইন পাবেন।
হিমু ভাই, আপনার উদাহরণের কোনটাই ফ্রান্সে না আর ফ্রান্স নেকাব নিরাপত্তাজনিত কারণে নিষিদ্ধ করেনি করেছে এটা তাদের কালচারের সাথে যায় না এজন্য।
নিরাপত্তার জন্য নিষিদ্ধ করলে প্রেসিডেন্ট নিশ্চয়ই এটা বলতেন না?
আর আপনি বার বার শিখদের কৃপাণের প্রসংগে বলছেন, কৃপাণ আর নেকাব কী একই?
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
কেউ তেলাপোকা দেখে ভয় পায়, কেউ সাপ দেখে। এখন যদি জিজ্ঞেস করি তেলাপোকা আর সাপ কি একই?
ফ্রান্সে তো নিউক্লিয়ার বোমা বিস্ফোরণেরও কোনো উদাহরণ নেই। কিন্তু ফ্রান্সের পাওয়ার প্ল্যান্টগুলিতে তো তেজস্ক্রিয়ারোধী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তাই না?
নিকোলা সারকোজির কথায় তো কোনো ভুল দেখতে পাচ্ছি না। তবে নিকোলা সারকোজি একা কোনো আইন পাশ করায় না। ফ্রান্সের আইনপ্রণেতাদের কিছু যুক্তি শুনেছিলাম, তার আলোকেই বলছি। ফ্রান্সের সংস্কৃতির প্রশ্ন যেমন এসেছে, নিরাপত্তার কথাও সেখানে এসেছে।
আর হ্যাঁ, নেকাব আর কৃপাণ একই। ধর্মকাতরের কাছে দুটোই হচ্ছে ধর্মের প্রতীক, যা ধারণ করা তার একান্ত ব্যক্তিগত অপশন বলে সে মনে করে। যে সামাজিক বলয়ে সে বাস করে, সে সামাজিক বলয়ে এই প্রতীকের প্রভাব নিয়ে সে হয় নির্বিকার, নয়তো অসংবেদনশীল।
এইবার আমার প্রশ্নের উত্তর দিন। আপনি কি কৃপাণ কোমরে একজন শিখের সাথে দিনে আট ঘন্টা কাজ করতে রাজি আছেন?
পাগল মন ভাই, আমি কাল থেকে নেকাব পড়বো, আপনি কি সেটাকে ঠিক মনে করবেন?আমি স্বেচ্ছায় পড়বো, আপনি কি কোন ধরনের সন্দেহ করবেন না?
অলস সময়
অমানবিক শব্দটা এখন আবার "ভালো লাগে না" দিয়ে প্রতিস্থাপন করছেন কেন?
আপনার জানা আর আমার জানায় দেখি তফাত আছে... লেখক- উদ্ধৃত উইকি থেকেই দিচ্ছি -
"The law does not mention any particular symbol, and thus ban all Christian (veil, signs), Muslim (veil, signs), and other minor religions' signs. But it is considered by many to specifically target the wearing of headscarves (a khimar, considered by most Muslims to be an obligatory article of faith as part of hijab ["modesty"]) by Muslim schoolgirls. For this reason, it is occasionally referred to as the French headscarf ban in the foreign press."
http://en.wikipedia.org/wiki/French_law_on_secularity_and_conspicuous_religious_symbols_in_schools
জিজ্ঞেস না করে পারছি না... " উগ্র পোষাক " বস্তুটা কি জিনিস?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
আপনি যে লিংক দিয়েছেন আর লেখার বিষয়বস্তু কী এক? আপনার লিংক হচ্ছে স্কুলে কী পরা যাবে আর যাবে না। স্কুলেতো আমারও বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলড্রেস পরতে হত, জিন্স, অন্য রঙের শার্ট প্যান্ট পরতে পারতাম না। সেটা নিয়েতো কথা হচ্ছে না, কথা হচ্ছে পাবলিক্লি আপনি কী পরতে পারবেন আর পারবেন না সেটা নিয়ে।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
আপনি বললেন ফ্রান্স সরকার অন্য ধর্মের কারো কিছুই নিষেধ করতে পারবে না... বললেন দেখে উদাহরণ দিলাম মাত্র.... লেখার বিষয়ের ব্যাপারে দেইনি। আপনার প্রশ্নের ব্যাপারে দিয়েছি। লেখাটা পড়লেই দেখবেন ফ্রান্সে হিজাব নিয়ে এই কাহিনী নতুন না.. আগেও এই জিকির উঠসে.. তখনও এই তেনা পেঁচানো হইসে...
ইউনিফর্মের সাথে তুলনাটা বোধহয় ঠিকনা। সেটা সরকারি সিদ্ধান্ত না ঠিক, বিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত। পাব্লিকলি আপনি অনেক কিছুই পরতে পারবেন, আবার অনেক কিছুই না পরে থাকতে পারবেন না..
আমেরিকার আইনে বলে একটার বেশি বিয়ে করলে শাস্তি হবে । এখন আপনি কইলেন আপনার ধর্মে জায়েজ ( বাধ্যতামূলক না কিন্তু) আছে, তাই আপনাকে বউ স্বেচ্ছায় অনুমতি দিলে ৪টা বিয়ে করতে দিতে হবে, তাইলে কেমনে হবে.... যস্মিন দেশে যদাচারণ..
উগ্র পোষাক বলতে কি বোঝাচ্ছেন তা তো বললেন না?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
কেউ যদি স্বেচ্ছায় পড়ে তবে কোন শাস্তির ব্যবস্থা না থাকাই ভালো। যখন জোড়পূর্বক পড়ানো হয় তখনই শাস্তির ব্যবস্থা থাকা উচিৎ।
তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি এমন পোশাক পরিধান করা উচিৎ যা সভ্য, লজ্জাস্থানগুলো সম্পূর্ণ আবৃত করে এবং যা কিছুতেই বিন্দুমাত্র নেতিবাচক ও উত্তেজক নয়। বোরখা বা নেকাব এ জাতীয় প্রাগৈতিহাসিক পোশাকের কোন প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না; দুটো থেকেই আমাদের বের হয়ে আসা উচিৎ।
আপনার লেখায় কোনটা ধর্ম আর কোনটা ধর্ম নয় সেই বিভেদটা সঠিক কোথায় টানছেন সেটা বোঝা গেল না। আমি যা বুঝি সেটা হল ধর্ম-বিধান আছে ধর্মগ্রন্থে, তার কিছু বেশী হল কাহিনীতে, আরও বেশী কিছু হল মোল্লাদের ব্যাখ্যায়। একজন সাধারণ মানুষের কাছে মোল্লার বক্তব্যই ধর্ম। তাই আপনি যে অন্য ব্যাখ্যা দেবেন তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
আচ্ছা সৌদি বা ইরান সরকার বাধ্যতামূলক হিজাব কি কোনো ধর্মের রেফারেন্স ছাড়াই চালু করেছে? আমি তো উইকিতে অন্য কিছু পড়ছি। এখানে বরং অনেক কোরাণ ও হাদিসের রেফারেন্স দেওয়া আছে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমি মূল লেখায় যেসব রেফারেন্স দিয়েছি তাতে কি কোনো ভুল বা অসঙ্গতি আপনার চোখে পড়েছে? চোখে পড়লে বলতে পারেন। আর আমাদের দেশে কোরান-হাদিসের অনেক ভুল ইন্টারপ্রিটেশনের নজির আছে, তাই সেদিকে যেতে চাইছি না। উইকির বক্তব্য পরে সময় করে পড়ব এবং এখানেই বিস্তারিত মন্তব্যে আমার মতামত জানাব এই আশা রাখি।
আপনি দেখিয়েছেন ধর্মে নিকাব পরার কথা কোথাও বাধ্যতামূলক বলা নেই। কিন্তু এটাও বলেছেন নবীজির স্ত্রীরা নিকাব পরতেন। পরকালের কথা মাথায় রেখে কেউ যদি তাদের অনুকরণ করে, তাহলে কি সেটা ধর্মপালন করা হবে না?
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
কিন্তু দিগন্তদা, 'বাধ্যতামুলক' আর 'ঐচ্ছিক' যে এক কথা নয় সেটা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন?
শাহ আবদুল হান্নান তাহলে লেখক, আর মওদুদী গবেষক। এরপর কী লিখবেন, গোলাম আজম একজন ধর্মপ্রচারক?
শাহ আবদুল হান্নানের নামও আমি কখনো শুনিনি, তবে লেখেন যখন লেখক তো বটেই। তার কথা এই লেখাটার ম্যাটার জোগাড় করতে গিয়েই প্রথম জানতে পারি। আমি যে তার সাথে একমত নই তা আমার লেখা পড়ে বুঝেছেন নিশ্চয়ই। যদি না বোঝাতে পারি তাহলে সেটা আমারই ব্যর্থতা। মওদুদীকে আমার বড়জোর (গো+এষণা)কারী মনে হয় কিন্তু সে কথা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। আর গু আজমের কথা বলে পোস্টটাকে নাপাক না করলেই ভালো করতেন বলে মনে করি।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
মানিক ভাই, এই লোক কি খুব বিখ্যাত কেউ নাকি? হতে পারে আমারই জানাশোনার গণ্ডি খুব সীমিত, তাই বুঝতে পারছি না এই লোকের নাম না শোনাটা আমার অন্যায় হয়েছে কি না।
কন কি! বাঁচতে হলে জানতে হবে। সোনা ব্লগে গিয়ে এর বাকি লেখাগুলোও পড়ুন। আপনার সাহায্যার্থে এই মালের একটা লেখা থেকে কোট করি।
খাইছে আমারে! ইনি আবার কোন বোজর্গ? আচ্ছা শুভাশীষদা, সোনাব্লগটা কি দাদা?
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
চিনেছি হুজুরকে, নাম মনে ছিলোনা। টিভিতে দেখেছিলাম।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অনেক কষ্ট কইরাও এটা উচ্চারণ করতে পারলাম না
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
হিমুর এই পোস্টটা পড়ে আরো কিছুটা জ্ঞান ন্যান।
অঃটঃ এই ব্যাটা ২১শে আগস্ট বোমা হামলার জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী - এই তত্ত্বের অন্যতম প্রধান প্রবক্তা ছিল। তার কথা হাসিনা নিজেই নিজের উপর বোমা ফেলসে। আর এইডা নাকি বুঝা গেসে ঘটনার আল্টিমেট পলিটিকাল বেনিফিশিয়ারি কে ছিল সেইটা এনালাইসিস করে। কারন তা না হলে তো হাসিনা মইর্যাই যাইত। যেহেতু বাঁচছে, সেহেতু সেইই দায়ী। এই নিয়া সে সময় কোন একটা জানি ইন্টারনেট গ্রুপে বিশাল প্রবন্ধ ফাদছিল। কত্তবড় হারামী! অথচ এর নাকি অনেক ছদ্মবেশী ইসলাম-ঘেঁষা জ্ঞানীগুনী-ভেকধারী ভক্তও আছে।
****************************************
হুম, এইসব জ্ঞানপাপীদের চিনে রাখাটা জরুরি। লিংকের জন্য ধন্যবাদ, শুভাশীষদা!
লেখাটা আবার পর মনে হল, লেখায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু কিছু শব্দে বিভ্রান্তির সম্ভাবনা আছে। লেখক নিকাবকে কখনো কখনো "মুখ ঢাকা হিজাব" বলেছেন, যেমন প্রথম লাইনে, তাতে অলস চোখে মনে হতে পারে যে হিজাব নিষিদ্ধ হয়েছে। আবার "পর্দা" শব্দটা ব্যবহার করেছেন নিকাব বুঝিয়ে, কিন্তু পর্দা দিয়ে অনেক সময়ই হিজাব বোঝানো হয়।
হিজাব ব্যবহার যে ইসলাম ধর্মমতে পালনীয়, শুধুমাত্র মোল্লাসৃষ্ট নয়, এতে সব ইসলামী পন্ডিতই কমবেশী একমত।(লেখাতেও সেটা উল্লেখ আছে।)
ধন্যবাদ, দিফিও। 'নেকাব' আর 'মুখ ঢাকা হিজাব' (অর্থাৎ 'বোরকা') যে একই ব্যাপার, এটুকু বুঝেছেন নিশ্চয়ই। তবে স্বীকার করছি 'পর্দা' বলতে যে শুধু 'নেকাব' নয়, 'হিজাব'ও বোঝানো হয় এটা আমার অজানাই ছিল।
অন্যান্য অনেক ধর্মের মতোই ইসলামেও শালীন পোশাক পরার কথা বলা হয়েছে, আমার মতে এটাই হিজাব, আর এটা মোল্লাসৃষ্ট নয় তাও যথার্থই বলেছেন। তবে মোল্লারা ধর্মের অপব্যাখ্যায় ওস্তাদ, তারা কোরান-হাদিসের অনুবাদ নিজ নিজ স্বার্থ অনুযায়ী করতেই বেশি অভ্যস্ত। অথচ সাধারণ লোকজন (যেমনটি দিগন্ত ভাই বলেছেন) তাদের কথাই শুনবে, আমার আপনার কথা নয়।
মুসলিম অধ্যুষিত তুরষ্ক এবং তিউনিশিয়াতেও স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, সরকারী অফিসে হিজাব নিষিদ্ধ। মুসলিম নেতারা সেখানে আন্দোলন করছেন কি?
লেখাটি বিভ্রান্তিকর। লেখক নেকাবকে বাধ্যতামুলক মানছেন না কিন্তু হিজাবকে বাধ্যতামুলক মানছেন। তিনি
- এটাও মানছেন কিন্তু হিজাব পড়াকে একই সাথে খারাপ দেখছেন না। কোরান হাদিসের অনেক রেফারেন্স দেখিয়ে প্রমান করে দেখানোর চেষ্টা করলেন যে নেকাবের কথা কোরানে/হাদিসে বাধ্যতামুলক নয়। যুক্তিটি খুব সহজ, এখানে নেকাব অমানবিক না অবিশ্বাসের প্রতীক তা বিবেচ্য নয়। বিবেচ্য হল কোরানে বাধ্যতামুলক করা হয়েছে কিনা। অর্থাৎ কোরানে যদি এটা বাধ্যতামুলক হতো তবে আর লেখকের কলম ধরার প্রয়োজন হতো না। এটিকে যুক্তি বলে না, বলে অন্ধবিশ্বাস।
নেতিবাচক যদিও, তবু তো আপনার মন্তব্য পেলাম, তাও অ-নে-ক অ-নে-ক দিন পর। কেমন আছেন?
লেখাটা আবারও পড়ে দেখলাম। কোথাও এমন কথা বলেছি বলে চোখে পড়ছে না। ইসলাম হিজাবকে বাধ্যতামূলক মনে করে, তার মানে এই না যে আমিও তা-ই মনে করি।
এই লেখার শিরোনামই বলছে আমি নেকাবকে অমানবিক মনে করি। কিন্তু আমি কী মনে করি না করি সেটা সাধারণ্যে গ্রহণযোগ্য হবে না। আপনার কী মনে হয়, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী (যেমন জননেত্রী শেখ হাসিনা) উঠতে বসতে কোরান-সুন্নাহর কথা বলেন সে দেশে কোরান-সুন্নাহর বাইরের রেফারেন্স টেনে ধর্মান্ধ মানুষের মন পরিবর্তন করা সম্ভব হবে? ধর্মকে গালি দেয়াটা পৃথিবীর সবচেয়ে কাজ (এতে কিছু লোকের হাততালিও পাওয়া যাবে, সেটা আমিও জানি), তবে তাতে আসল কাজের কাজ কতটুকু হবে সন্দেহ কিন্তু থেকেই যায়।
ঠিক, সেই সাথে নেকাব এবং হিজাব দু'টো একই বিষয় নয় সেটিও পরিষ্কার করেছেন। কিন্তু নেকাবকে যেমন অমানবিক মনে করেন হিজাবকেও সেরকম মনে করেন সেটা কিন্তু কোথাও উল্লেখ করেননি। হিজাবকেও যদি অমানবিক মনে করতেন তাহলে তো উল্লেখ করতেন, ঠিক কি না। তাহলে আমি কি ধরে নিতে পারি যে হিজাবে আপনার অসম্মতি নেই।
আপনি উল্লেখ করেছেন আপনি কি মনে করেন সেটা সাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এই কথারই বিরোধিতা করছি। আমার কাছে এটা অনেক বড় ব্যাপার আমি কি মনে করি। আমি আমার নিজের যুক্তি দিয়ে যে সিদ্ধান্তে আসবো সেটাকেই আমি মানবো। কোন হাজার বছরের পুরোনো ধর্মগ্রন্থে কি লেখা আছে সেটা দিয়ে বিচার করবো না। এখানেই আমার সাথে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য। এই পার্থক্য যত দিন থাকবে ততদিন দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে যুক্তি তর্ক করে কোন কিছু লাভ করা সম্ভব নয়। আমি সাধারণ মানুষের কথা বলছি না। আপমি আপনার সাথে কথা বলছি, আপনার মনোভাব জানতে চাই। হিজাবকে কি আপনি অমানবিক মনে করেন? না করলে কেন? সমাজের সবার পরিবর্তন একত্রে সম্ভব নয় সেটা আমি মানি। কিন্তু একজন একজন করে সম্ভব।
ওয়েল, আপনি কিন্তু ধরেই নিয়েছেন আমার মনোভাবে পরিবর্তন আনতে হবে, আমার মনোভাব সম্বন্ধে ভালোমতো না জেনেই। সত্যিই দুঃখ পেলাম। মাঝে মাঝেই হিমু ভাইয়ের মন্তব্যে প্রকাশ পেয়ে যায় তিনি আমাকে জামাতী ছাগু (বা এ রকমই কিছু একটা) ধরে নিয়েছেন, এই পোস্টেই ওনার এ রকম একটি মন্তব্য শোভা পাচ্ছে এখনো। সে যা-ই হোক, এখন আসি হিজাব সম্পর্কে আমার কী মনোভাব সে বিষয়ে। হাত আর মুখ ঢাকার ব্যাপারটি বাদ দিলে শুধু বাকি থাকে মাথা বা চুল ঢাকার বিষয়টি। উইকির এই লিংকে গেলেই দেখতে পাবেন মাথা ঢাকার ব্যাপারটি পৃথিবীর অন্যতম প্রধান তিনটি ধর্ম অর্থাৎ ইহুদী, ক্রিশ্চান আর ইসলামে পবিত্রতার সাথে সম্পর্কিত। যারা এই তিনটি ধর্মে বিশ্বাস করেন তাদের কাছে মাথা ঢাকার বিষয়টি অমানবিক নয়, বরং পবিত্র একটি বিষয়। এখন, এইসব ধর্মীয় বিধি-বিধানে আমার খুব একটা আস্থা নেই, সেভাবে পালনও করি না বা এ নিয়ে মাথাও ঘামাই না। তাই, যখন দেখি মোল্লারা নারীর ওপর পর্দাপ্রথা চাপিয়ে দিতে চান তখন সেটা আমার খুবই অমানবিক মনে হয়। তবে কেউ (তা, যে ধর্মের অনুসারীই হোক না কেন) যদি স্বেচ্ছায় হিজাব পরেন তাতেও আমি আপত্তিকর কিছু দেখি না। আশা করি আমার অবস্থান এইবার আপনার কাছে পরিষ্কার হয়েছে কিছুটা। না হয়ে থাকলেও বলবেন, আরও বিস্তারিত বলব। ধন্যবাদ।
ওয়েল, আপনার মনোভাব জানার একমাত্র উপায় আপনার লেখা। এখন তাহলে আপনি দেখুন যে লেখায় আপনি আপনার মনোভাব প্রকাশ করেছেন কিনা। যদি না করেন তাহলে সেটার দায় তো আপনার উপরেই বর্তাবে, তাই নয় কি?
এখন দেখা যাচ্ছে যে আপনি নিজেও বলছেন ধর্মে বিধি নিষেধ তেমন মানেন না। শুধু তাই নয়, বিধি নিষেধে আপনার নিজের আস্থাও নেই। তাহলে এবার বলুন, আপনি কিভাবে আশা করেন আপনার লেখা পড়ে একজন নারী নেকাব পড়া দেখে বিরত থাকবে। আপনি নিজে বলছেন নীচের কোন এক মন্তব্যে যে একজন নারীও যদি নেকাব সংস্কৃতি থেকে বিরত হয় আপনি নিজেকে সার্থক মনে করবেন। আপনি কোরান/হাদিসের আলোকে প্রমান করার চেষ্টা করলেন নেকাব বাধ্যতামুলক নয়, এখন বলছেন এই সব বিধি নিষেধের উপর আস্থা নেই। দু'টো বিষয় কন্ট্রাডাক্টারি হয়ে গেল না? আমি এই হিপোক্রেসীর বিরুদ্ধে। তাই আমার মুল মন্তব্যের বিষয় ছিল ধর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে আপনি নেকাব বা হিজাব বন্ধ করতে পারবেন না। কারণ এটার ব্যাখ্যা একেক জনের কাছে একেক রকম। সে কেন আপনার ব্যাখ্যা মানতে যাবে।
এবার আসি দ্বিতীয় প্রসঙ্গে।
উপরে পাগল মনও বলেছে একই কথা। এটা আরো বড় হিপোক্রেসী। এখানে কেউই স্বেচ্ছায় হিজাব পড়ছে না। ধর্মে বলা আছে তাই পড়ছে। ধর্ম ভীতি থেকে পড়ছে। ধর্মে বলা না থাকলে কতজন স্বেচ্ছায় পড়তো সেটা প্রমান করার জন্য খুব বেশি কষ্ট করেতে হয় না। আমাকে একটি পরিসংখ্যান দিন তাহলে। মুসলিম/খ্রীষ্টান/ইহুদী এই তিন আব্রাহাম ধর্ম ব্যতীত আর কোন ধর্ম বা গোষ্ঠীর নারীরা স্বেচ্ছায় বোরকা/হিজাব জাতীয় কিছু পরিধাণ করে? কোন আদিবাসী মহিলাকে দেখেছেন কি নিজের আপাদমস্তক ঢাকতে? কোন হিন্দু বা বৌদ্ধ ধর্মাম্বলী কোন মহিলাকে কি দেখেছেন আপাদমস্তক ঢাকতে? নারী যদি পুরুষের দৃষ্টিকে এতই অবিশ্বাস করতো তাহলে এরা কেন স্বেচ্ছায় পড়ে না বোরকা। কারণ একটাই তাদের ধর্মে বলা নাই। তাদের ধর্মে হয়তো অন্য কিছু ছিল, যেমন সতিদাহের মত প্রথা। তাই এই ক্ষেত্রে হিজাব কোন নারী স্বেচ্ছায় পড়ছে না। ধর্মই তাকে বাধ্য করছে হিজাব পড়তে। ধর্ম থেকে বাধ্যতাটুকু উঠিয়ে নিন, তারপরে যদি কেউ স্বেচ্ছায় হিজাব পড়ুক আপত্তি থাকবে না। ধর্ম থেকে উঠানোর যখন ক্ষমতা নেই তখন আইন করেই সেটা করা ছাড়া কোন উপায় নেই, যেমনটা হয়েছে সতিদাহ প্রথার ক্ষেত্রে। এই ক্ষেত্রেও অনেকে বলতে পারে যে আমি যদি স্বেচ্ছায় সতিদাহ প্রথা মানি আপত্তির কি আছে? কিন্তু সতিদাহ প্রথা যে অমানবিক সেটা মানতে আপনার আপত্তি থাকার কথা নয়। একই রকম এই হিজাব/নেকাব/পুরুষের চার বিয়ে একগুলো নারী জাতির জন্য অপমান জনক।
আমার বা আপনার আস্থা আছে কি নেই সেটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ না। যে নারী নেকাব পরছেন তার আস্থা আছে কি না ওটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমি এখানে হিপোক্রেসির কিছুই দেখছি না।
আমার ব্যাখ্যা মানতে হবে কেন, আমি তো কোরান/হাদিস থেকেই রেফারেন্স দিয়েছি। কোরান/হাদিস তন্ন তন্ন করে খুঁজেও নেকাব পরার আদেশ পাওয়া যায় না। এ সম্বন্ধে অনুসন্ধান করার আগে আমি নিজেও জানতাম না নেকাবের ব্যাপারটির ধর্মীয় শাস্রে অনুমোদন নেই, সত্যি বলছি। এখন তাহলে সাধারণ ধর্মান্ধ লোকের কথা চিন্তা করে দেখেন, যাদের ধর্মীয় ব্যাখ্যা শোনার জন্য মোল্লা ভিন্ন উপায় নেই তাদের কী অবস্থা? এই লেখাটা তাদেরকে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে এমনটা আশা করেই লিখেছি (বা বলা ভালো ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছি, লেখার নিচের লিংকগুলোতে গিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন)।
আশ্চর্যের ব্যাপার, আমি কখন বললাম যে তারা স্বেচ্ছায় পরছে। আমি তো বললামই যে ধর্মে আছে বলেই আব্রাহামীয় ধর্মের লোকেরা হিজাব পরছে। এই হিজাব পরাটা বিশ্বের কোনো দেশের (এমনকি ফ্রান্সেরও) রাষ্ট্রীয় আইনের সাথেই সাংঘর্ষিক না। এটাকে তাই কিসের ভিত্তিতে আপনি ঢালাওভাবে অমানবিক বলবেন। তবে হ্যাঁ, কোনো নারীকে পরিবার বা সমাজ থেকে হিজাব পরায় বাধ্য/জোর করা হলে সেটা অবশ্যই অমানবিক হবে। আমি নিজেও এ ধরনের হিজাবকে অমানবিক বলব এবং সামনে পড়লে প্রতিবাদ করব।
সংযোজন : আমার আগে মন্তব্যটি ফিরে পড়তে গিয়ে লক্ষ করলাম যে স্বেচ্ছায় হিজাব পরার কথা বলেছি বটে। তবে ওই কথা বলে আমি ধর্মীয় আদেশ মানার ইচ্ছার কথাই বুঝিয়েছি। ভুল বোঝাবুঝির জন্য দুঃখিত। পর্দাপ্রথা বা পুরুষের চার বিয়ে নারীর জন্য অপমানজনক এ বিষয়ে আপনার সাথে একমত।
একটি হাইপোথেটিকাল প্রশ্নঃ ধরুন অনুসন্ধান করতে গিয়ে আপনি পেলেন যে কোরানে বলা আছে নেকাব পড়া বাধ্যতামুলক। তখন আপনার বক্তব্য কি হবে?
হাইপোথেটিকাল উত্তর : তখন ওই নারীকে নেকাব পরা থেকে বিরত রাখতে রাষ্ট্রীয় আইনের প্রয়োজন পড়বে। কোরানে তো অনেক কিছুই আছে, রাষ্ট্র কি তার সব মানতে বাধ্য নাকি? তবে যদি বলেন আইন করে হিজাব থেকেও বিরত রাখতে হবে, তাহলে আমি নাচার। কারণ হিজাব সারা বিশ্বেই আছে এবং এখন পর্যন্ত কোনো দেশই হিজাব নিষিদ্ধ করার মতো সাহস অর্জন করতে পারেনি বা তেমনটি করার প্রয়োজন মনে করেনি।
ও, আরেকটা ব্যাপার, হিজাবকে (নেকাব না কিন্তু) আমি নারীর অধিকার হিসেবে দেখতে চাই, দায়িত্ব না। কে ধর্ম পালন করবেন আর কে করবেন না সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার হিসেবেই থাকুক। অর্থাৎ আমি চাই না কোনো ব্যক্তির ধর্মপালনের অধিকারে রাষ্ট্র বা পরিবার বা মোল্লারা হস্তক্ষেপ করুক। আমার তাই মনে হয় না আপনার সাথে আমার দৃষ্টিভঙ্গির বড় ধরনের পার্থক্য আছে। এক কথায়, হিজাব - চাপিয়ে দিলে অমানবিক, আর স্বেচ্ছায় করলে অধিকার - আমি এভাবেই দেখতে চাই বিষয়টিকে। তবে নেকাব কিন্তু কোনোভাবেই মানবিক কিছু হয় না, তা মোল্লারা যতই ফতোয়া দিক না কেন। আমার মনোভাবটা বোঝাতে পারলাম কি?
১. নেকাব বা হিজাব বা পর্দাউসলামের গুরুত্ব পূর্ণ ভিত্তি । এ বিষয়ে অনেক রেফারেন্স দেয়া যেতে পারে ।ইসলাম বিশ্বাসিরা একে বিশুদ্ধ ধর্ম হিসেবেই মানে একজন সমাজ গবেষকের দৃষ্টিতে না । ফলে ট্রাডিশন দেখতে যায় না ধর্মকে সরাসরি মানে । (কিংবা হিন্দু ধর্মের বলী মুসলমানদের কুরবানী , হিন্দুদের গয়া কাশী তীর্থ ভ্রমন আর মুসলমানদের কাবায় হজ্জ ধর্মের মুল রিচুয়াল গুলার মিল ও তারা খুজে পায় না ) সুতরাং ধর্মীয় ব্যাখ্যার উদারীকরন দিন শেষে ধর্মের ব্যখ্যার বাইরে এসে করতে হবে । কারন ধর্মের উদারীকরন ব্যাখ্যা সাধারণত তারা করেন বা করার চেষ্টা করেন যারা নিজেরা মানবতাোধ কে বড় করে দেখেন কিন্তু (অবচেতনে বা চেতনে ) ধর্ম কে ও খারাপ মানতে চান না তারা । হয় ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি বা ধর্মের অনুসারীদের সন্তুষ্ট রেখে পজিটিভ দিকে অানার জন্য এই প্রচেষ্টা ।আপনি যদি ”ধর্মের অনুসারীদের সন্তুষ্ট রেখে পজিটিভ দিকে অানার জন্য এই প্রচেষ্টা” চালান তবে ধর্মীয় রেফারেন্স প্রসংগে বলার কিছূ নেই ।আর যদি ”ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি”(অামার ধর্মে খারাপ কিছু নেই সব মোল্লাদের অপব্যাখ্যা ) তবে আপনার সংগে কথা বলার আগেই জেনে নিতে হবে আপনি যে মানবিকতার কথা বলছেন দিন শেষে যদি দেখা যায় এটি আসলেই ধর্মএর সাথে যায় না বা ধর্মে বৈধতা নেই আপনি মানবিক আচরনটি বেছে নিবেন না মানবিক আচরনটি বেছে নেয়ার জন্য আপনার ধর্মের নতুন ব্যাখ্যা নতুন রেফারেন্স অবশ্যই লাগবে ?
২. এবার পর্দা নিয়ে বিভ্রান্তি আর অপব্যবহার প্রসংগে বলি :বাংলাদেশে এখন ও সাধারনের কাছে পর্দা অার বোরখা সমার্থক ।যদিও ২ টা এক নয় ।
”"তুমি মুমেনদিগকে বলো, তাহারা যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাহাদের লজ্জাস্থানসমূহের হিফাযত করে। ইহা তাহাদের জন্য অত্যন্ত পবিত্রতার কারণ হইবে। নিশ্চয় তাহারা যাহা করে সেই সম্বন্ধে আল্লাহ ভালোভাবে অবগত আছেন। এবং তুমি মুমেন নারীদিগকে বলো,তাহারাও যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হিফাযত করে এবং নিজেদের সৌন্দর্যকে প্রকাশ না করে, কেবল উহা ব্যতিরেকে যাহা স্বাভাবিকভাবেই প্রকাশ পায়... " (২৪:৩০-৩১) ” বাংলাদেশে ওয়াজ থেকে শুরু করে শিক্ষিতদের ব্লগীয় নসিহতেই বারবার ঘুরে ফিরে পর্দা আসে কিন্তু পুরুষদের “দৃষ্টিকে সংযত” রাখার কথা কেউ বলেন না কিংবা বাস্তব জীবনে পালন করার খুব একটা চেষ্টা চরিত্র করেন বলেও দেখা যায়না । সুতরাং এ বাড়াবাড়ির জন্য কেউ যদি পর্দা প্রথা বাদ দিতে বলে সেটা কি খূব অন্যায় আবদার হবে ?
৩. ফ্রান্স সরকার এর প্রকাশ্যে বোরকা বা মুখ ঢাকা হেজাব পরা নিষিদ্ধ করার সাথে আমি পুরুষ তান্ত্রিকতার কোন পার্থক্য দেখি না । কারন দু টার ই লক্ষ্য নারী কি পরবে কি পরবে না তা নির্ধারন করে দেয়া । শুধু আগে ছিল ধর্মীয় আইন এখন তার জায়গায় রাষ্ট্রীয় আইন
দু-একটা দেন্না। পড়ে দেখি।
ধর্মের ভালোমন্দ দুটো দিকই আছে। অন্তত আমার কাছে ধর্মের সবকিছুই ভালো বলে মনে হয় না। আর এই লেখায় আমি ধর্মের উদারীকরণ ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করিনি, বরং একটা সহজ, প্রতিষ্ঠিত সত্যকে সামনে আনার চেষ্টা করেছি।
আমি ভালো করেই জানি, ধর্মের অনুসারীদের সন্তুষ্ট করাটা সহজ নয়, যেমন নয় ধর্মবিরোধীদের সন্তুষ্ট করাটা। আমার খেয়েদেয়ে আরও অনেক কাছ পড়ে আছে, এসব আমার কম্ম নয়, ভাই। তবে আমি নিজে 'নেকাব সংস্কৃতি'র সাফারার, এই লেখা পড়ে যদি একজন লোকেরও মতি ফেরে তবেই নিজেকে সার্থক মনে করব।
আমি দেখি। কারণ মুখ ঢাকা হিজাব পুরুষতান্ত্রিকতার ফসল হলেও ফ্রান্স সরকারের পদক্ষেপ অনেক বেশি মানবিক, যুক্তিযুক্ত। আমি চাই বাংলাদেশেও মুখ ঢাকা হিজাব নিষিদ্ধ হোক! আপনি কি তা চান না?
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
ফ্রান্সে হিজাব-নেকাব-পর্দা নিষিদ্ধ হলে আমাদের জ্বালা করে ক্যান?
আমরা তো নিষিদ্ধ করিনি, আমরা বরং দিনে দিনে ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামী মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছি।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
সেই! দুনিয়া পিছনে গেলেও আমরা তো ঠিকই সামনে এগুচ্ছি।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
যেসব ইস্যু ধরে হিজাব নিকাব নিষিদ্ধ হওয়া না হওয়া হচ্ছে, সেসব ইস্যু আমাদের দেশেও আছে, ২ দিন আগে পরে এটা নিয়ে হাউকাউ হতে বাধ্য। কোনটা "বিজাতীয় সংস্কৃতি" আর কোন "মূলধারা"র, কোনটা "সংখ্যালঘু ইস্যু" আর কোনটা "সাংস্কৃতিক আগ্রাসন"---এই ব্যাপারগুলি আমাদের দেশে খুব একটা মোলায়েম অবস্থায় আছে বলে মনে হয়না।
সেই হিসাবে এই কেইসটা আর সেইগুলোরে নিয়ে আলোচনা আগ্রহোদ্দীপক তো বটেই।
নেকাব বা হিজাব যাই বলুন, পোশাক হিশেবে অতিতর অশ্লীল। এটি নারীদের বস্তার পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে আসে। ইসলামে নারীর মর্যাদা যেখানে একটি উটের চেয়ে বেশি নয়, সেখানে নারীকে বস্তা হিশেবে জনসমক্ষে চালিয়ে দেওয়া আশ্চর্যের কিছু নয়। সেজন্যই ফ্রান্সের মত সভ্য ও সুসংস্কৃত দেশে তা মানায় না। ফ্রান্সের তাই অধিকার আছে নিজের সংস্কৃতি সংরক্ষণার্থে আইন তৈরি করে তা নিষিদ্ধ করার। সৌদি আরবে কোনও ফরাসী নারী বেড়াতে গেলে তাঁকে আপাদমস্তক ঢেকে চলাফরা করতে হয়, এটিই মধ্যযুগীয় এই দেশটির সংস্কৃতি। সেটা মেনে নিয়েই ফরাসীরা সেখানে বেড়াতে যান, বা বসবাস করেন। ফ্রান্সে গেলে বা বসবাস করলে মুসলমানদেরও তাদের সংস্কৃতি মেনে নিয়ে থাকতে হবে।
পৃথিবীর সব সমাজকে বেদুইন বানিয়ে ফেলতে হবে, এমন পণ করে মুসলমানরা অন্য দেশে থাকতে গেলে এসব নিষেধ-বাধার মুখোমুখী হবে। আজকে নেকাব বা হিজাব পরা শুরু করলে কাল যে ধর্মের স্বাধীনতার নামে মুসলমান পুরুষরা হিসু করে মাটির ঢেলা ঘষতে ঘষতে নুনু ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে চল্লিশ কদম প্রকাশ্যে হেঁটে পার হবে না, সে নিশ্চয়তা কে দেবে? কারণ ওটাও বেদুইন সংস্কৃতি, যাকে ইসলামী নাম দিয়ে (কুলুখ) আরবরা সারা বিশ্বে ছড়ানোর চেষ্টা করছে গত চোদ্দশ বছর ধরে। তেপ্পান্ন বছর বয়সে ছয় বছরের মেয়েকে বিয়ে করা, দাসীকে বিছানায় তোলা, ধর্মমতের বিরোধিতা করলে কল্লা কেটে ফেলা, এসবও ইসলামের অংশ। অচিরেই যে এসবও শুরু করবে না ওরা, সে নিশ্চয়তা কোথায় মিলবে? মুসলমানদের জন্য বিশাল আরব সাম্রাজ্য (মরক্কো থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া অব্দি) রয়েছে বসবাসের জন্য, সেই সাম্রাজ্যের যেখানে খুশি তারা বসবাস করে বেদুইন প্রথা চালু করতে পারে। ফ্রান্সের জন্য তো কেবল ওই ফ্রান্সই, তাদের দেশে অন্য দেশের লোকে এসে এসব অসভ্যতা শুরু করলে তারা কোথায় যাবে?
মুসলমানদের এসব বিধিনিষেধ পছন্দ না হলে অন্য কোথাও চলে যেতে পারে। ফ্রান্স ফরাসীদের দেশ, তাদের মূল্যবোধই সেখানে সর্বোচ্চ মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রাখে। তাদের সমাজের একজন হয়ে মিশতে না চাইলে মুসলমানরা যে স্বর্গ থেকে এখানে বসবাসের জন্য এসেছে, সেখানেই ফিরে যেতে পারে।
ফ্রান্সের ইসলামী স্বর্গ হওয়ার কোনওই প্রয়োজন নেই।
নিতান্তই গেরস্ত মানুষ, চারপাশে কেবল
শস্যের ঘ্রাণ পাই।
ঠিক কথা। তবে কল্লা কাটার সাথে আরেকটা ব্যাপার যোগ করা যায়। এই ইসলামই বলে "কেউ যদি প্রতিশোধ নেয়ার সাধ্য থাকা সত্ত্বেও শত্রুকে ক্ষমা করে তাহলে তার জন্যই জান্নাত"। পুরো উল্টো কথা বলার মানে খুবই সোজা - ইসলাম যদি তোমার ক্ষতি করে, মাফ করে দিয়ে স্বর্গ নিশ্চিত করো - আর যদি তুমি ইসলামের কোন ক্ষতি করতে আসো, কল্লা নামিয়ে দেবো!
কোন জায়গারই নতুন করে ইসলামী স্বর্গ হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। যেসব অতি ধার্মিকের পরিচ্ছন্নতা এবং নোংরামী নির্বিশেষে ইসলামের সব বিধানই ভালো লাগে তারা ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত কোন ইসলামী স্বর্গে চলে গেলেই পারে।
অসাধারন বলেছেন। ইসলামি সংস্কৃতি বলে আদৌ কিছু নেই, যা আছে সেটা হল আরবদের সংস্কৃতি। ধর্মের নাম করে বর্বর আরবদের এসব প্রথা সারা বিশ্বে প্রচলিত করার চেস্টার কোন অন্ত নেই। ইসলাম মানেই ফ্যাসিজম, সেখানে মুক্তচিন্তা, গনতন্ত্র কিংবা বাক-স্বাধীনতার কোন অবকাশ নেই। বিরুদ্ধ মতকে কচুকাটা করাই ইসলামের নীতি। তারাই যখন ব্যক্তিস্বাধীনতার দোহাই তোলে তখন সত্যি হাস্যকর লাগে
এধরনের রেসিস্ট বর্ণবাদী ব্ল্যাঙ্কেট স্টেটমেন্ট নিজে বর্বর নন বা নিজেকে বর্বর মনে করেন না, এমন মানুষের মুখে মানানসই নয়। এধরনের জাতিগত ভাবে প্রযুক্ত বিশেষন যে কোন বিতর্কের মান নিম্নগামী করতে বাধ্য। আর হ্যাঁ, এখানে বিতর্কটা নিকাব/হিজাব বা বড়জোর ইসলামের কিছু অনুশাসন নিয়ে মনে হয়- আরব জাতি নিয়ে নয়। দু'টো ভিন্ন বিষয়। যাদের মনে জাতিগতভাবে আরবদের নিয়ে ধূমায়িত ঘৃণার বিষবাস্প আছে - তারা সে নিয়ে আলাদা পোস্ট দিলে ভালো হয় (তবে সচলায়তনের নীতিমালা বিবেচ্য)। এবং সেখানে অনারব মানবজাতি যে কত ধোয়া তুলসী পাতা, আরবরা যেসব খারাপ কাজ করেছে তারা যে সেসব কিছুই করেনি বা করছেনা তা বর্তমান ও ইতিহাস ঘেটে সংশয়াতীত ভাবে প্রমান করে দিতে হবে। নচেৎ রেসিজম রেসিজমই থেকে যাবে। আর সেক্সিজম ইত্যাদি খারাপ নিশ্চয়ই, কিন্তু রেসিজম তার চেয়ে ভালো কিছু না বা তার কোন গ্রহণযোগ্য প্রতিষেধকও না।
****************************************
তৎকালীন আরবদের ইতিহাস পড়ে দেখেন, তখনকার আরবদের বর্বর বলাটা কি খুব অযৌক্তিক হবে?
বর্বরতার কয়েকটা উদাহরণ দেবেন ?
বর্তমান আরবদের দেখেও মনে হয় না ইসলাম তাদের বিশেষ কোনো কল্যাণসাধন করতে পেরেছে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আপনি কথা ঘুরাচ্ছেন কেন? আপনার দৃষ্টিতে বর্তমান আরবদের কী অবস্থা? সভ্য, না এখনো বর্বরই আছে?
সাথে তৎকালীন ইতিহাসের দু-একটা সভ্য জাতির নামও বলেন, তাদের ইতিহাসটাও পড়ে দেখি।
কুটুম,
এতো সিরিয়াস আলোচনার মাঝে অপাংতেয় হলেও একটু নির্জলা রসিকতা করতে অভিপ্রায় করি, স্বপ্নে দেখি পঙ্কজ উদাস উদাসমনে গেয়েই চলেছেন, "নিকলো না বেনেকাব, জমানা খারাপ হ্যায়!"
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
দারুণ রিফ্রেশিং মন্তব্য! ধন্যবাদ, কবি। মন ভালো করে দেয়ার জন্য।
সাধারণভাবে আমি ব্যক্তিস্বাধীনতার পক্ষে, কিন্তু ব্যক্তিস্বাধীনতা যখন র্যাশনালিটির বাইরে চলে যায় আমি সেটার পক্ষে নই। সেই কারণের কারো পছন্দের গান মাইকে বাজানো যেমন আমি সমর্থন করবো না, তেমনি হিমু ভাইয়ের উদাহরণের কৃপাণ আর "পুরুষ মাত্রেই চরিত্রহীন" ধারণার সমর্থক হিজাব/নেকাব কোনটাই আমি সমর্থন করবো না। বিশেষতঃ হিজাব বা নেকাবের মত ব্যাপারগুলো যেগুলোর উৎস থেকে শুরু করে সবই ব্যক্তিস্বাধীনতার বিরোধী, সেটাকে সমর্থন করার কোন প্রশ্ন কখনোই আসে না।
পোস্টে টাওয়ার হ্যামলেট নিবাসীদের বক্তব্যে বেশ মজার কিছু জিনিস পেলাম (উদ্ধৃতিগুলো আংশিক, পুরোটা দেখতে চাইলে দয়া করে পোস্টে দেখুন):
এবং তাঁরাই আবার বলেনঃ
ওদিকে "শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছায়" করবো, আবার সেই ইচ্ছা পুরষ্কার আর ধর্মীয় আইডেন্টিটির থেকে আসবে! এর আগে কোন একটা পোস্টে হিজাব সংক্রান্ত তর্কবিতর্কেও কে যেন এক কমেন্টে বলেছিলেন তিনি হিজাব পরেন সেটা সম্পূর্ণ তাঁর স্বাধীন ইচ্ছা, আর ঠিক তার প্রতিমন্তব্যেই বলেছিলেন কারণটা আল্লাহর নির্দেশ! এইভাবে সব "স্বেচ্ছা হিজাব আর স্বেচ্ছা নেকাবধারী"দের গোড়া খুঁজতে গেলেও সেই ধর্মীয় কারণই পাওয়া যাবে। একটা চাপিয়ে দেয়া জিনিসের গায়ে ব্যক্তিস্বাধীনতার লেবেল সেঁটে দিলেই সেটা ব্যক্তিস্বাধীনতার ধারক হয়ে যায় না - এই জিনিসটা যে কিছু মানুষ কবে বুঝবে কে জানে!
একজাক্টলি আমার পয়েন্ট, অপছন্দনীয়। প্রশ্নটা ব্যক্তিস্বাধীনতার নয়, ধর্মপালনের। সেজন্যই লেখার মূল ফোকাস ছিল নেকাব যে ধর্মীয় বিধি নয়, বরং মধ্যযুগীয় বিজাতীয় কালচার সেটা তুলে ধরা।
এই আলোচনায় আগ্রহবোধ করছি কেন হিজাব পালন করাটা ব্যাক্তি স্বাধীনতা নয়, সেটা একটু বুঝতে চাইছি।
১। কোন এক ব্যাক্তি "নিজের ইচ্ছায়" ইসলাম ধর্মকে আঁকড়ে ধরেন (ধরে নিলাম সৃষ্টিকর্তায় তার বিশ্বাস আছে, এবং তিনি মনে করছেন ইসলামই সত্য ধর্ম) এবং সেই অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ পালনে ইচ্ছুক, যেহেতু "সৃষ্টিকর্তা" অবশ্যই বেশী জানার কথা। সব নির্দেশ অবশ্য এই যুগে পালন করা সম্ভব নয়, তবু তিনি চান যতটুকু সম্ভব পালন করতে, কারণ তার বিশ্বাস এতে করেই সমাজের উন্নতি সম্ভব, পরকালের পুরস্কার তো আছেই।
২। কোন এক ব্যাক্তি শেয়ারমার্কেটে বিনিয়োগ করবেন, তিনি খুঁজছেন এমন একজনকে যিনি শেয়ার মার্কেট সম্বন্ধে ভাল জানেন, খুঁজে পাওয়া গেল এক তুতো ভাইকে। তিনি পরামর্শ দিলেন, আপাতত "ক" শেয়ার বেচে দিয়ে "খ" শেয়ার কিনতে, তাতে নাকি বছর দুয়েকের ভেতরেই অনেক লাভ। অনেক ভেবেচিন্তে ঐ লোক দেখলেন, তার তুতো ভাই যখন বলছেন, তখন লাভ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী, তিনি "খ" শেয়ারই কিনলেন।
এই ২ টা দৃশ্যপটের কোনটাকে ব্যাক্তি স্বাধীনতায় ফেলা যায়, আর কোনটাকে ফেলা যায় না?
প্রথমতঃ, যে প্রথার শুরুটাই হয় নরকের ভয় আর স্বর্গের লোভ দেখিয়ে, সেটাকে শেয়ার মার্কেটের স্বেচ্ছা বিনিয়োগের সাথে তুলনা না করে, মাথায় পিস্তল ঠেসে ধরায় স্বেচ্ছায় মানিব্যাগ দিয়ে দেয়ার সাথে তুলনা করাটাই মনে হয় বেশী যুক্তিযুক্ত হতো।
শেয়ার মার্কেট এবং তুতোভাই দৃশ্যপটঃ
১.১। আমি নিজে তার কাছে পরামর্শ চাইতে গেছি (যদি তার আগেই সে আমাকে পরামর্শ দিতে আসে, তো রাস্তা মাপতে বলবো)
১.২। তুতোভাই আমাকে শুধুমাত্র "পরামর্শ" দিতে পারে। আমাকে নির্দেশ দেয়ার কোন ক্ষমতা তার নেই।
১.৩। তুতোভাইয়ের পরামর্শ আমি নেবো কিনা সেটা আমার ব্যাপার।
১.৪। আমি তার কথা শুনেই কিছু করিনি। আগে নিজের সমস্ত র্যাশনালিটি ব্যবহার করে তার কথার যৌক্তিকতা বিচার করে তারপরে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এক্ষেত্রে তার কাছ থেকে আমি শুধুমাত্র তার জ্ঞানের অংশবিশেষ নিচ্ছি, কোন সিদ্ধান্ত বা নির্দেশ নয়।
১.৫। তুতোভাই একজন শেয়ার ব্যবসায়ী - তার কোন কথাই বিতর্কের বাইরে নয়, সে কখনোই এই দাবী করবে না যে আমি কোন অবস্থাতে তাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবো না। সে সম্ভবতঃ কখনো ব্যবসায়ী নয় এই দাবীও করবে না। এই ক্ষেত্রে আমি একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ব্যবসা সংক্রান্ত বুদ্ধি নিচ্ছি।
হিজাব/নেকাব দৃশ্যপটঃ
২.১। আমি পরামর্শ চাইতে যাইনি, আমার জন্মের পৌনে চোদ্দশ বছর আগেই আমার জন্য সবকিছু তৈরী করা হয়েছে।
২.২। আমাকে পরামর্শ না, বরং নির্দেশ দেয়া হচ্ছে, এটা "করতে হবে"।
২.৩। আমি পরামর্শ নেবো কিনা সেটা মোটেই আমার ব্যাপার নয়, সেখানে একখানা স্বর্গের মূলো আর একখানা নরকের ব্ল্যাকমেলিং লেটার ঝোলানো আছে।
২.৪। হিজাব / নেকাব পালন করলে আমি স্রেফ নির্দেশপ্রদানকারীর কথা শুনেই সেটা করছি, কোন র্যাশনালিটি বিচার করে নয়, এবং নির্দেশপ্রদায়কের জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করা তো রীতিমত মহাপাপ!
২.৫। এখানে কিন্তু কেউ দাবী করে না যে তারা ব্যবসায়ী! বরং মানবকল্যাণ ইত্যাদি গালভরা বুলি আউড়ায়। এখানে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে মানবকল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ব্যবসাবুদ্ধি নেয়ার মত!
পার্থক্যটা আশা করি দেখতে পাচ্ছেন।
আরেকটা কথা, শেয়ার মার্কেট জেন্ডার স্পেসিফিক নয় - এবং বাংলাদেশে অন্ততঃ, সৌদী আরবের মত বিনিয়োগ করতে পুরুষ সঙ্গী লাগে না। হিজাব / নেকাব যদি একতরফাভাবে নারীদের ঘাড়ে না চাপিয়ে নারী পুরুষ উভয়ের ঘাড়েই চাপানো হতো, তাহলে হয়তোবা আমার দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা অন্যরকম হতে পারতো - তবে তার ফলেও এর সমর্থনে যেতাম বলে মনে হয়না।
অনেক বলেন তিনি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় স্বর্গ নরকে বিশ্বাস করে যা যা করতে বলা হয়েছে সেটা করেন। স্বর্গ নরক ইত্যাদিতে বিশ্বাস করতে কেউ বাধ্য করেনি কাজেই এগুলো স্বেচ্ছায় গৃহীত বিধিনিষেধ। সেক্ষেত্রে এটাও বলা যায়, আপনার মাথায় পিস্তল ঠেসে ধরে কেউ মানিব্যাগ চাইলে ১। পিস্তলে গুলি আছে এবং ২। গুলি থাকলেও সেটা ব্যবহার করা হবে, এই দুইটা পয়েন্ট বিশ্বাস করাটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। এক্ষেত্রে আপনি কি করবেন? কখনো শুনেছেন কেউ স্বেচ্ছায় ছিনতাইকারীকে মানিব্যাগ দিয়ে দিয়েছে?
আমার ইচ্ছায় আমি অন্যের সব ইচ্ছা/নির্দেশ পালন করবো এই কথাটার কোন অর্থ নেই। যাঁরা বলেন - দুঃখজনক হলেও সত্যি - নিজস্ব বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করার সাধ্য তো তাঁদের নেইই, সেটা স্বীকার করে নেয়ার মত সামান্য সাহসটুকুও নেই। তাঁদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বললেই দেখবেন "আমার ইচ্ছা" পালটে "নরকের ভয়" নাহলে "বাহাত্তরটা হুর নিয়ে মৌজমাস্তি" বসে গেছে।
ঠিক জানি না বোঝাতে পেরেছি কিনা, ব্যাপারটা যদি এমনও হয় যে নেকাব মধ্যযুগীয় বিজাতীয় কালচার নয়, বরং ইসলামে বা অন্য কোন ধর্মের পরিষ্কারভাবে সমর্থিত একটা ব্যাপার, সেক্ষেত্রেও এর বিরুদ্ধে আমার অবস্থানের কোন পরিবর্তন হবে না। এইসব নেকাব হিজাব জাতীয় ব্যাপারগুলো কোন সোর্স থেকে এসেছে সেটা বিবেচ্য নয়, বিবেচ্য এগুলোর অর্থ কি এবং এগুলো কেন করা হয়।
"নিগ্রহের চিহ্ন" মোল্লারাই হাজির করুক আর আকাশ থেকে কোন জনগোষ্ঠির মাথায়ই খসে পড়ুক, সেটা নিগ্রহের চিহ্নই থাকে - আকাশ থেকে পড়েছে বলে গ্রহণযোগ্য হয়ে যায় না।
আহা, সবাই যদি আপনার মতো ভাবতে পারত! দেশটা পালটে যেতে বেশি সময় লাগত না। কিন্তু পরিস্থিতি তো সে রকম নয়, অপছন্দনীয়। ধারণা করছি, দেশ থেকে দূরে আছেন বলে অথবা মানুষের সাথে সেভাবে মেশেননি বলে পাব্লিকের মনোভাব সম্বন্ধে আপনার ধারণাটা তেমন স্পষ্ট নয়। আপনি কি জানেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকেও নারীনীতির পক্ষে বলতে গিয়ে কোরান-হাদিসের বাইরে যাননি বলে সাফাই গাইতে হয়। 'নেকাব ইস্যু'টাও সমান স্পর্শকাতর, অন্তত ধর্মান্ধ মানুষের কাছে এটা অনেক বড় ব্যাপার। আমি আপনি কী মনে করি এটাও হয়তো গুরুত্বপূর্ণ, তবে কোরান-হাদিসের রেফারেন্স সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নয়তো মোল্লারা বলতে শুরু করবে, দেখো, ফ্রান্সের জালিম সরকার মুছলমানের ধর্মপালনে বাধা দিচ্ছে! ইসলামের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। তাই মোল্লাদের অস্র দিয়েই মোল্লাদের ঘায়েল করতে হবে, আপাতত এইটাই আমার পলিসি। তবে দিন বদলালে আর এসবের প্রয়োজন পড়বে না।
খুব বেশীদিন ধরে দেশ থেকে দূরে নেই। তবে মানুষের সাথে খুব বেশী মিশিনি, সেটা ঠিকই ধরেছেন । সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টের ব্যাপারে আপনার অ্যাসেসমেন্ট ঠিক আছে। অশিক্ষিতদের কথা বাদই দেন, অনেক তথাকথিক শিক্ষিতও আছে যাদেরকে দিয়ে যে কোন অমানবিক কাজ করাতে হলে খালি একটা ধর্মের রেফারেন্সই যথেষ্ট। এখানে আমার আশেপাশেই আছে গোটাকয়।
বেশীরভাগ মানুষ ধর্ম যা বলেছে সেটা ভালো না খারাপ এই চিন্তা করাটাও পাপ মনে করে। তাদের কাছে ভালোর সংজ্ঞা হচ্ছে ধর্ম যা বলেছে তাই। কেউ যখন আগে থেকেই এই ধরণের নির্দিষ্ট ধারণা নিয়ে এগোয়, তখন তাদেরকে কোনকিছু বোঝানো আসলেই কষ্টকর! কেউ জেগে থাকলে তাকে আর জাগাবেন কি করে?
সহমত।
'কেউ জেগে থেকে ঘুমানোর ভান করলে তাকে আর জাগাবেন কি করে?' বললে মনে হয় আরো জমতো।
(An HTTP error 403 occurred.
/ajax-markup এর জ্বালায় প্রায় দিনই মন্তব্য করা যাচ্ছেনা। ক্যাম্নেকী?)
রব
আপনার কিছু কিছু লেখা আগেই পড়া ছিল বলে এটা আঁচ করতে পেরেছিলাম।
পাবলিক সেন্টিনেন্টের ব্যাপারে আর কী বলি! চোদ্দ শ বছরের গোড়ামি রাতারাতি দূর করা সম্ভব নয়। এত দীর্ঘ সময়ের জঞ্জাল সরাতেও তো টাইম দরকার। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন না এলে বোধ হয় আমরা জীবদ্দশায় এই পরিবর্তন দেখে যেতে পারব না।
আপনার সাথে আমার শত্রুতাটা কি বলুন তো? আমার "কিছু কিছু" লেখা আপনি আগে পড়েছেন অথচ এ পর্যন্ত একটা বানানও শুধরে দেননি
না রে ভাই, শত্রুতা তো নেইই, বরং দিন দিন আপনি আমার পছন্দনীয় লেখক হয়ে উঠছেন।
বানান শুধরে দেয়াটা খুবই বিপজ্জনক কাজ! অতীতের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতাও আছে আমার। তা ছাড়া অতিথি লেখকদের পক্ষে মন্তব্য দেয়াটাও খুবই মুশকিলের কাজ। তবু আপনি যখন বলছেনই, এখন থেকে চেষ্টা থাকবে বানান শুধরে দেয়ার।
ও, ভালো কথা, আপনার আগের প্রতিমন্তব্যে কিছু বানান ভুল পেলাম।
আশেপাশেই=আশপাশেই (একই শব্দে দুবার 'এ' প্রত্যয় হয় না)
বেশী=বেশি (ফার্সি অর্থাৎ বিদেশি শব্দে ঈ-কার হয় না)
বেশীরভাগ=বেশির ভাগ (বিভক্তির পরে স্পেস দিতে হয়, যেমন- ঢাকার ছেলে)
ধরণের=ধরনের (তবে, ধারণ এবং ধারণা শব্দে ণ)
আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলো মনে হয় দেখেছি। আমার বানান / ব্যাকরণগত ভুল / অন্য কোন ভুল শুধরে দিতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হওয়ার কোনই সম্ভাবনা নেই ।
অনেক ধন্যবাদ এই চারটা শুদ্ধির জন্য। বুনোহাঁস ইতোমধ্যেই ধরন / ধারণা শিখিয়েছিলেন, গুলে খেয়ে বসে আছি ।
ধন্যবাদ।
যতদূর জানি ইসলাম ধর্মে পুরুষদেরকে তাদের দৃষ্টি অবনত রাখতে বলা হয়েছে। আর নারীদের জন্য পর্দা। পুরুষেরা তাদের দৃষ্টি অবনত না রেখে নারীদের আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে চেয়েছে পর্দায়। আর তাই জুন মাসের গরমেও দেখা যায় কালো হাত ও পা মোজাসহ চোখঢাকা বোরখা পড়া কিছু কিছু নারী! আমি তো জানি সৃষ্টিকর্তা মানুষের জন্য সব কিছু আরামদায়ক করে দিয়েছেন।
আপনি যদি ধর্মগ্রন্থকে সৃষ্টিকর্তার বাণী হিসেবে গ্রহণ করেন, তাহলে বলতে হবে তিনি "মানুষের" জন্য নয়, বরং "পুরুষের" জন্য সবকিছু আরামদায়ক করে দিয়েছেন। লুচ্চামোর সমস্যা থাকলে অসীম দয়ায় তাদের চারখানা বিয়ে এবং অসীমসংখ্যক যৌনদাসী রাখার ব্যবস্থা, বউকে বিছানায় তুলতে না পারলে ধরে পেটানোর বিধান, সম্পত্তি দেয়ার সময় ডবল খালি না, চাচাদের কারো ছেলে না থাকলে তার সম্পত্তিরও বেশ খানিকটা হস্তগত করার আইনগত ব্যবস্থা - সব কিছুই পুরুষের আরাম আয়েশের জন্যই করা।
মাঝে মাঝে অবাক লাগে, সৃষ্টিকর্তা বলে যদি সত্যিই কেউ থাকেন, এবং "সব মানুষ" যদি সত্যিই তাঁর সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাহলে তিনি এত প্রচন্ডরকম পুরুষতান্ত্রিক কেন?
ধর্মপ্রবক্তারা যদি পুরুষ হয় তবে সেটি পুরুষতান্ত্রিক হবে না কেন ।
সেই জন্যই এতগুলো "যদি"
মাঝে মাঝে অবাক লাগে, সৃষ্টিকর্তা বলে যদি সত্যিই কেউ থাকেন, এবং "সব মানুষ" যদি সত্যিই তাঁর সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাহলে তিনি এত প্রচন্ডরকম পুরুষতান্ত্রিক কেন?
পুরুষের কল্পিত ইশ্বর নারীবাদি হবে ভাবলেন কি করে? পুরুষ তার অন্তহীন কামনার বানী বলিয়ে নিয়েছে তার কল্পিত ইশ্বর কে দিয়ে। সে একদিকে নারীকে করেছে বন্দী এ জগতে। তাতেও তার কামনা মেটে না। তাই আরও ব্যবস্থা আছে। উপপত্নী, বান্দী ও যুদ্ধ বন্দী রক্ষীতা। আরও চাই। আছে.........শুধু কদিন অপেক্ষা করুন। জান্নাত ভরা আছে হুর । আরও আছে গেলমান।
আর নারী? তার পক্ষে আসলে কেউ নাই। আমিনী না। খালেদা না। হাসিনা না। বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, নারীবাদী সকলেই আললে নারীর প্রতিপক্ষ। সবাই মিন্ মিন করে । কেউ সাহস করে বলে না নারী মানুষ। সে পুরুষের অর্ধেক না। তাকে ভয়ংকর ইশ্বরের হাত থেকে বাচানর সাহস (কিম্বা ইচ্ছে) কারও নেই।
একটা পয়েন্ট অভ ভিউ অনুপস্থিত দেখলাম। উমম... আচ্ছা থাক। আমার পোস্টেই আলোচনা করবো।
ভিনদেশীয় সংস্কৃতির প্রতি সহনশীলতার কথা বলছেন? কিন্তু এক্ষেত্রে আমার ধারণা মূল্যবোধকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে, সাথে রাষ্ট্রের 'নিরাপত্তা ইস্যু'টিও মনে হয় উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়। যাকগে, আপনার পোস্ট কবে দিচ্ছেন?
ব্যাক্তিস্বাধীনতা আর রাখঢাক - এই দুটো একই অঙ্গে কিভাবে ধারন করা যায়, আমার মাথায় আসেনা। ভানু যেমন 'নিজের ইচ্ছায়' কাশ্মির গিয়েছিল, পর্দার মধ্যে ব্যাক্তিস্বাধীনতা কি অনেকটাই সেরকম?
যারা পর্দা না করার ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়, তাদের মুখে পর্দা করার ব্যক্তিস্বাধীনতার গফ হাস্যকর।
@দিগন্ত ভাই,
আপনি প্রশ্ন করেছেন-
আপনার দেয়া উইকি লিংকে গিয়ে তো পুরোই বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম :
ইরান
After the new government of Islamic Republic was established, the niqāb was not enforced by officials.
In modern Iran, the wearing of niqāb is not common and is only worn by certain ethnic minorities and a minority of Arab Muslims in the southern Iranian coastal cities, such as Bandar Abbas, Minab and Bushehr. Some women in the Arab-populated province of Khuzestan still wear niqab.
সৌদি আরব
Saudi women are not required by law to wear the niqāb. However, in cities such as Dammam, Riyadh, Mecca, Medina and Abha most women observe niqāb as tradition and it remains de facto obligatory. Women may be harassed by the religious police if they do not cover their faces. Jeddah, as the most liberal city of Saudi Arabia, is an exception.
নতুন মন্তব্য করুন