গেরিলা একটি যুদ্ধ বিষয়ক বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র
গেরিলা দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হল। জানা ছিল এটি মুক্তিযুদ্ধের ছবি এবং নির্মাণ করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা যিনি বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিত্ব। তাঁর সহায়তায় ছিলেন বর্তমানের কয়েকজন তরুণ নির্মাতা যাদেরকে হরদম মিডিয়ায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ভবিষ্যত কর্ণধার বিবেচনা করা হচ্ছে। তাই ছবিটি নিয়ে জল্পনা কল্পনা ছিল, ছিল প্রবল আগ্রহ। আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে এই ছবিটি বেশ বড় বাজেটে নির্মিত; এর কলাকুশলী বেশ দক্ষ ও সৃজনশীল হিসেবে পরিচিত। এরকম বিশদ কলেবরে বাংলাদেশে এর আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র নির্মাণ হয় নাই।
কী দেখলাম
দেখলাম একটি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র। টার্গেট অডিয়েন্স মনে হল মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত। যুদ্ধের ছবি হিসেবে ধুম ধাড়াক্কা, গোলাগুলি খুনোখুনি আছে । ঘটনার ঘনঘটা আছে । দ্রুত লয়ে দৃশ্যের পরিবর্তন, যাকে ফাস্ট টেম্পো বলা হয় তা আছে, কিন্তু টেম্পো এর উত্থান পতন না থাকলে তা যেরকম ফ্ল্যাট হয়ে যায় সেটি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য। লিনিয়ার স্টোরিটেলিং এবং মাঝে মাঝে গতানুগতিক ফ্ল্যাশব্যাক দৃশ্য (যেখানে চিত্রনায়ক ফেরদৌসের উপস্থিতি ও ভয়াবহ দুর্বল অভিনয়ের প্রদর্শনী)। তবে চিত্রনাট্য রচয়িতাকে একক ভাবে দোষারোপ করা যায় না। কারণ পরিচালক নিজে চিত্রনাট্য রচনার অংশীদার।
ছবিটি বাণিজ্যিক উপকরণে ভরপুর। ফাস্ট টেম্পো, হলিউডি স্টোরিটেলিং ইত্যাদি প্রসঙ্গে আরো কিছু নমুনা দিচ্ছি।
নমুনা কঃ ছবিটিতে গেরিলাদের অপারেশন গুলো দেখানো হয়েছে অনেকটা হিন্দি ছবির অথবা জেমস বন্ডের ছবির একশন দৃশ্যের মত। অপারেশনের আগে কোন প্রস্তুতির বালাই নেই ( থাকলেও ছবিতে দেখানো জরুরী মনে হয় নি বোধহয়), মুক্তিযোদ্ধাদের সব গুলিই বুলস আই । তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে ও শত্রুকে কচুকাটা করে, কিন্তু তাদের কিছু হয় না। এর থেকে বিনোদন আর কি হতে পারে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের একশনের পেছনে যে চিন্তা, কী তারা ভাবছে, তারা যা করছে তা কেন, কোন প্রেরণায়, কীসের তাড়নায় করছে, সে সবই তুমুল একশনের তলায় চাপা পড়ে গেল। গোলাবারুদ থাকলে ফাটাফাটি একশন যে কোন পক্ষই দিতে পারে, এটাতে মুগ্ধ হবার কিছু নাই। অনুপ্রেরণা ও তাড়নাটা বোঝা যায় এমন দৃশ্য থাকা দরকার ছিল।
নমুনা খঃ ছবিতে যাত্রাপালার মঞ্চের মতন অনেক চরিত্র এলো আর গেলো, খাপছাড়া খাপছাড়া। কয়েকজন চরিত্রকে বেশ হাইলাইট পেতে দেখা গেল, যেমন, মিসেস খান (শম্পা রেজা), আলতাফ (আহমেদ রুবেল) এ টি এম শামসুজ্জামান (চরিত্রের নাম ভুলে গেছি) এবং এরা প্রত্যেকেই উচ্চ মধ্যবিত্তের প্রতিনিধি । মূল চরিত্র জয়া আহসানও অবশ্যি তাই । ছবিতে নিম্নবিত্তের উপস্থিতির তাই বলে অভাব নাই, কিন্তু তাদের আসা যাওয়ার দৃশ্যগুলো জমাট বাঁধে না। কাহিনী এগিয়ে নেওয়াতে তাদের কোন ভূমিকা নেই। যেমন আজাদ আবুল কালাম এর চরিত্রটি। লুঙ্গি পরা মুক্তিযোদ্ধা যাদের দেখেই বোঝা যাচ্ছে কৃষক মজুর সমাজের প্রতিনিধি, তাদের চরিত্রগুলি ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যাবহার হয়েছে। তারা যে এলো/গেলো তাতে ছবিতে কিছু এলো/গেলো না।
নমুনা গঃ এক পর্যায়ে বোধহয় টনক নড়ে ছবিটা শুধু ‘রামগড়ুড়ের ছানা’ সুশীল সমাজ দেখবে না, সাধারণ দর্শকও দেখবে। এর জন্য তাই একটু সুঁড়সুড়ি থাকা দরকার। তাই ট্রেনে হঠাৎ ক্যনভাসারের উপস্থিতি এবং স্থুল ডায়লগের আদি ও অকৃত্রিম বাঙ্গালী হিউমার পরিবেশনা, যার সমাপ্তিতে রাজাকার যাত্রীর ঔষধ কেনা।
নমুনা ঘঃ একজন ‘সুপার ভিলেনের’ উপস্থিতি। আমার মতে নিষিদ্ধ লোবান উপন্যাসটা অবলম্বনের পেছনে একটাই কারণ — মেজর জামশাদ ও ক্যপ্টেন সরফরাজের চরিত্রগুলি। একটি ব্যবসাসফল একশন ছবির জন্য একজন সুপার ভিলেন অতীব প্রয়োজন! এই চরিত্রে শতাব্দী ওয়াদুদ দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন । অনেক ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ছবিতে খলনায়ক মূলনায়ক (বা নায়িকা) কে অতিক্রম করে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বাণিজ্যিক/একশন ছবি হিসেবে আরো নমুনা দেওয়া যেতো, কিন্তু এতেই চলবে আশা করি। যারা গেরিলা ছবিটি আর একটা মুক্তিযুদ্ধের আর্টফিল্ম ভেবে হলে যাননি তাদের অভয় দিচ্ছি যে টানটান উত্তেজনায় পয়সা উসুল হবেই।
যাদের কাছে চলচ্চিত্র সমালোচনা মানে শুধু এর কাহিনী, অভিনয় ও ‘দৃশ্যের দানা বাঁধা না বাঁধা প্রসঙ্গ’ তাদের নিচের অংশ না পড়লেও চলবে কারণ কাহিনি কীভাবে এগিয়েছে/পিছিয়েছে, জোড়া লেগেছে নাকি লাগেনি, অভিনয়, এতেই ছবির সমালোচনা শেষ হয়ে যায় না
আমার কাছে চলচ্চত্রের সংঞ্জা খুবই সাধারণ ‘এক বা একাধিক শট যখন কোন অর্থ প্রকাশ করে তাহাই চলচ্চিত্র।‘ দৃশ্যায়ন এখানে মুখ্য। চলচ্চিত্রের ভাষা অভিনয় নয়, নয় শব্দ বা দৃশ্যের নান্দনিকতা। এক একটা শট এক একটা বর্ণ। এই বর্ণগুলি যুক্ত হয়ে শব্দ হয়, ভাষার জন্ম দেয়। গেরিলা ছবিতে সুন্দর ও বাস্তবসম্মত দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। বিপুল আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু চলচ্চিত্রের ভাষা দাঁড়ায় নাই । এমন কোন দৃশ্য বা শট চোখে পড়ল না যেটি অভিনেতার ডায়ালগ বা আবহসঙ্গীতের প্রভাব ছাড়া নিজগুণে প্রতিষ্ঠিত। ঠিক যেন ‘ইহা একটি আম’ বলে আমকে চিনিয়ে দেওয়ার মত বাহুল্যময় সুরের ও শব্দযন্ত্রের ব্যবহার । যেমন, যখন আলতাফ একটি দৃশ্যে প্রবল সাহসের পরিচয় দিয়ে উঠে দাঁড়ালো, সেই মুহুর্তটাকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য যে নাটকীয় সঙ্গীত ব্যাবহার করা হল, তা দৃশ্যটির আবহ প্রতিষ্ঠা করার বদলে যে কমিয়ে দিল। দৃশ্যটি প্রেক্ষাপটের কারণেই যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পারত। এটি পরিচালকের ব্যর্থতার একটি নমুনা। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। শেষ দৃশ্যটি জোরালো ব্যতিক্রম। এই ছবিটি রিমেক করার কোন সম্ভাবনা থাকলে শট ডিভিশন নতুন করে করতে হত।
এতদূর পর্যন্ত যারা পড়েছেন তারা হয়ত ভাবছেন আমি শুধু নেতিবাচক কথা বলার জন্য বসেছি এবং আমি হয়ত মেহেরজানের পান্ডা। কিন্তু ইহা সঠিক নয়। আমার গেরিলার অনেক কিছুই ভালো লেগেছে। শিল্পনির্দেশনা চমৎকার, লাইটিং অসাধারণ, ছোট ছোট চরিত্র প্রত্যেকেই দুর্দান্ত অভিনয় করেছে( হ্যাটস অফ)। কিন্তু মূল চরিত্রে জয়ার অভিনয় খুব ওঠানামা করেছে। আর যুদ্ধের দৃশ্যগুলিতে স্পেশাল ইফেক্ট যাচ্ছেতাই । আবহ সঙ্গীত ... আহারে! আবার নেতিবাচক কথা!
যাই হোক যারা এতক্ষণ কষ্ট করে আমার এই শিশুতোষ লেখা পড়লেন তাদের ধন্যবাদ।
শেষ কথাঃ এটি মুক্তিযুদ্ধের ছবি হয় নাই কেননা কোন হলিউডি ধাঁচের কমার্শিয়াল ছবি মুক্তিযুদ্ধকে রিপ্রেসেন্ট করতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধের ছবির ভাষা হবে আমাদের নিজস্ব। সেই ছবি হবে দলিল। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সত্যিকার ছবিটি আমাদের বানাতে হবে।
- ইসরার আহমেদ আদনান
মন্তব্য
পোস্টে লেখকের স্ববিরোধীতা বেশ প্রকটভাবে ফুটে ঊঠেছে বৈকি। শুরুতেই তিনি জানালেন, গেরিলা দেখে তার প্রতিক্রিয়া হল "মিশ্র" । কিন্তু লেখাটার সবখানেই সমালোচনার তীব্র স্রোতে সেই "মিশ্র" শব্দটই যে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে এটা বোধকরি লেখক নিজেই ঠাহর করতে পারেননি। ছবিটার নির্মাণকৌশল নিয়ে তর্ক থাকতে পারে, অভিনয়ের মান নিয়ে খেদ থাকতে পারে, কিন্তু "সুপার ভিলেন" আর "মেহেরজানের পাণ্ডা" জাতীয় শব্দের ব্যবহার কিন্তু আমাদের চিন্তাকে অন্য খাতে নিয়ে যেতে পারে। তবে লেখকের সাথে মোটা দাগে কিছু ব্যাপারে একমত। আবহসঙ্গীত মাঝে মাঝেই বেশি উঁচু তারে বাঁধা মনে হয়েছে, এসব জায়গায় আবেগের রাশটা আরেকটু টেনে ধরা যেতেই পারত। তবে
এই বাক্যটি আসলে অপ্রয়োজনীয়। নিন্দা করতে নেমে আলগা ভড়ং না দেখালেও বোধহয় চলে। ভাল কথা, ছবিটা হলে গিয়েই দেখেছেন তো?
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
হয়তো খুব বোদ্ধা নই, কিন্তু আপনি গেরিলা দেখে যে প্রতিক্রিয়াটা জানিয়েছেন একই অনুভূতি আমার হয় নি এবং এখন পর্যন্ত কাউকে পাইনি যে এই চলচ্চিত্রটি দেখে প্রশংসা ছাড়া অন্যকিছু করেছে। ছবির অনেক ভূলত্রুটি আছে মানছি, এবং সেই ভূলত্রুটিগুলো নিয়ে এর আগেও সচলে একজন পোস্ট করেছেন, কিন্তু আপনার সুরটা ভালো ঠেকছে না কেন জানি। আপনি "গেরিলা"কে "খোজ দা সার্চ"এর পর্যায়ে নামিয়ে আনতে চাচ্ছেন, সেটা মনে হয় যৌক্তিক নয়।
গেরিলা দেখা হয়নি। তথাপি, লেখাটিতে ছবিটার যে সমালোচনাগুলো এসেছে সেগুলো অন্য কোন ছবিতে ভালভাবে নিশ্চই এসেছে। লেখক যদি সেইসব বেস্টপ্র্যাক্টিসের উদাহরণ গুলো উল্লেখ করতেন, তাহলে তার লেখাটিকে আরেকটু ভাল বুঝতে পারতাম।
অফটপিক,
ইউটিউবে এবং কান্না নামক একটা নাটক দেখে ঠিক এই কথাগুলোই মনে হয়েছিল।
এই ব্যাপারে আমার একটা বক্তব্য আছে। ছবিটা দেখে তারপর আপনার সাথে কথা বলতে চাইঃ যদি আপনার আপত্তি না থাকে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আমি চলচ্চিত্রে খুব একটা আগ্রহী নই। চলচ্চিত্র নির্মাণ কিংবা এর গ্রামার সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ। কিন্তু আপনার লেখা পড়ে মনে হলনা এটা কোন সমালোচনা। বরং মনে হল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে সচলায়তনের অবস্থান এবং আলোচ্য চলচ্চিত্র সম্পর্কে (হয়তো অধিকাংশ) সদস্যের উচ্চাশার বিপরীতে আপনার লেখাটি 'স্রোতের বিপরীতে'-ধরনের করতে গিয়ে অহেতুক কিছু শব্দ/বাক্য-বন্ধ জুড়ে দিয়েছেন। এ থেকে আমার মনে হচ্ছে আপনি ছবির প্রতিক্রিয়া নয়, বরং গেরিলা নিয়ে সচলদের প্রতিক্রিয়া দেখে নিজের প্রতিক্রিয়া লিখতে চেয়েছেন। আমার ভুলও হতে পারে, তবে লেখাটার টোন কিন্তু খুব স্পষ্ট।
দু:খিত, আরো কিছু উদাহরণ দিলে আমার ভালো লাগবে। ছবিটি দেখার যেহেতু সুযোগ নাই, তাই আরেকটু বিস্তারিত জানলে ভালো হতো। না জানালেও ক্ষতি নাই।
এই বাক্যটি আপনার উদ্দেশ্যকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছেনা?
মনে হওয়ার কোন যুক্তি নাই কিন্তু এইটা আমারো মনে হয়েছে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনার পোস্টের ব্যাপারে আমি কিছু কথা বলতে চাই।
১। বুঝলাম গেরিলা একটি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র। কিন্তু এটা তো ব্যবচ্ছেদ করে বের করার কিছু নাই। পরিচালক সেলুলয়েডে মুক্তি দিয়েছেন সিনেমা হলে চালানোর জন্য। তা না হলে উনি ১৬ মিমি বা ৮ মিমি তে বানাতে পারতেন বা ডকুমেন্টারি বানায় ইউটিউবে দিতে পারতেন। বাণিজ্যিক মানেই খারাপ - এটা অতি সরলীকরণ মনে হল ভাই। যুদ্ধের উপর নির্মিত বিখ্যাত, মন ছুঁয়ে যাওয়া এবং সিনেমা ক্রিটিকদের মুগ্ধ করা অনেক ছবি-ই বাণিজ্যিক। ছবি বাণিজ্যিক হতেই পারে - দোষের কিছু নাই, ফলাও করে হেডিং দেওয়ার কিছু নাই।
২।
কেন মনে হল তা তো বললেন না। খালি বললেন -
টার্গেট অডিয়েন্স মনে হল মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত - কিভাবে বুঝলেন? আর টার্গেট অডিয়েন্স মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত হলেই বা সমস্যা কি? "খাইছি তোরে" ছবির টার্গেট অডিয়েন্স তো ছিল নিম্নবিত্ত - তাতে ছবির নান্দনিক দিকের কোন উন্নতি হয়েছে কি? আপনি অনুমান করে নিচ্ছেন টার্গেট অডিয়েন্স মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত হওয়াটা খারাপ। এমন ভাবার কারণ কি?
কিভাবে বুঝলেন যে কেবল উচ্চবিত্ত / উচ্চমধ্যবিত্ত ধুম ধাড়াক্কা অ্যাকশান পছন্দ করে? আদতে কোন যোগসূত্র আছে কি?
বাণিজ্যিক উপকরণ কিন্তু রিভিউ লিঙ্গুয়ার একটা জার্গান। আপনি শব্দটা ব্যবহার করলেন সাথে আরো কিছু জার্গান দিয়ে - যেমন: ফাস্ট টেম্পো, হলিউডি স্টোরিটেলিং
এগুলো কবে থেকে বাণিজ্যিক হল? ফাস্ট টেম্পোর কথা বলছেন? চ্যাপলিনের ছবিতেও টেম্পো অনেক ফাস্ট। গঁদারের breathless এ দর্শককে নড়তেই দেয় না - একের পর এক জাম্প কাট, মিনিমাম এডিটিং। তো কি হয়েছে? টেম্পো ফাস্ট হলে আমি কোন সমস্যা দেখি না। Fast and Furious টেম্পো ফাস্ট নিয়ে বাণিজ্যিক ছবি। হিন্দি ছবি "গোলমাল" স্লো টেম্পো নিয়ে বণিজ্যিক ছবি।
হলিউডি স্টোরিটেলিং শব্দটা বুঝলাম না। নানা জঁনরার স্টোরিটেলিং তো একেক রকম ভাই। হরর মুভিতে গল্প একভাবে বলা হয়, রহস্য/মিস্ট্রিতে অন্যভাবে, অ্যাকশানে অন্যভাবে, কমেডিতে আরেকভাবে। "রশোমানে"র বা "ভ্যান্টেজ পয়েন্টে"র মত স্টোরিটেলিং "গেরিলা"তে নাই - তাতেই ছবিটা বাণিজ্যিক হয়ে গেল? বাণিজ্যিক ছবির নমুনা এমন হলে তো মুশকিল।
একটা ছবিতে বাণিজ্যিক উপকরণ (যদিও আমি এই টার্মের সাথে একমত না। আর্ট ফিল্ম বলেন আর বাণিজ্যিক বলেন - এভাবে ছবিকে সংজ্ঞায়িত করতে পারেন না) বলতে সেগুলাকেই বোঝায় যা অনাবশ্যকভাবে ছবিতে উপস্থিত থেকে ছবির মানের পরিবর্তন ঘটায়।
যেমন - "অন্তহীন" নামের বাংলা ছবিতে বারবার ভারতের "রিলায়েন্স" কোম্পানির প্রোডাক্ট দেখানো ও তার গুণকীর্তন করা।
অথবা - হিন্দি ছবির আইটেম গান "কাজরা রে"
অথবা - ডিপজলের অনাবশ্যক ধর্ষণদৃশ্য।
আপনাকে সচলায়তনে লেখার জন্য শুভেচ্ছা। আপনার লেখাটা ভালো লাগে নি। কিন্তু তা স্রেফ মতের পার্থক্য। আশা করি কিছু মনে করবেন না।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ঐ
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
'গেরিলা' চলচ্চিত্র পেয়েছে দশে নয়।
এই আলোচনাটা পেলো দশে এক।
না ভাইজান নিশ্চিন্তে দোষারোপ করেন, এবাদুড় নাকি এইটার ফাইনাল স্ক্রিপ্ট লেখে নাই।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এই বাক্যটা পোস্টের শুরুতে দিলে কষ্ট করে আর ভুল বানানে লেখা এতোগুলো অক্ষর আর বর্ণ পড়তে হইতো না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ইয়ে মানে এই শট কি শটগান থেকে আসে?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ঐ
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ভালো কথা
ঠাকুরঘরে কে রে, আমি কলা খাইনা...
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
আরেকটু যোগ করছি-
আপনি বলেছেন -
"অপারেশনের আগে কোন প্রস্তুতির বালাই নেই ( থাকলেও ছবিতে দেখানো জরুরী মনে হয় নি বোধহয়), মুক্তিযোদ্ধাদের সব গুলিই বুলস আই ।"
সিনেমাতে তো সব রিয়েল টাইমে ঘটে না। সেভবে দেখানো সম্ভবও না। অপারেশানের প্রস্তুতি না দেখানো পরিচালকের নিজস্ব সিদ্ধান্ত - এতে সিনেমার পর্দার যে রিয়েলিটি তা নষ্ট না হলেই হল। আমি ছবিটা দেখি নাই, এজন্য বলতে পারছি না। কিন্তু সাধারণভাবে মনে হয় এই ধরনের দৃশ্য দেখানো, না দেখানো অনেক কিছুর উপর নির্ভরশীল। হয়ত পরিচালক অতিরিক্ত ডিটেলিং বাদ দিতে চেয়েছেন। এভবে দেখানো শিল্পসম্মত কিনা তা নিয়ে তর্ক হতে পারে, কিন্তু বাণিজ্যিক সিল মারাটা অযৌক্তিক।
হা হা হা - এইটা একটা ভালো পয়েন্ট। এইটা পরিচালকের/ সিনেমাটোগ্রাফারের ব্যর্থতা। বাস্তব যুদ্ধদৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে পারে নাই - বেশি হিরোইক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এতে করে কি ছবিকে বাণিজ্যিক বলা যায়?
আপনি বলেছেন -
সমস্যা কী, বুঝলাম না। "যাত্রাপালা" শব্দটাতে অবজ্ঞারছাপ স্পষ্ট। বোঝা যাচ্ছে যাত্রা নিয়ে আপনার ধারণা ঠিক না। যাত্রায় প্রপস কম থাকে - তা ব্যালান্স করার জন্য সংলাপ, আলো, শব্দ হয় ভিন্ন। চরিত্রের এন্ট্রি যাত্রাতে অন্যভাবে হয় কারণ তা ঘটে দর্শকের চোখের সামনে।
যাত্রার ফ্রেমটা দেখেন - এইটা তো স্রেফ সিনেমার পর্দার মত চারকোণা না। স্পেসটা ত্রিমাত্রিক। মঞ্চটাও ত্রিমাত্রিক। সিনেমাতে কিন্তু দ্বিমাত্রিক (যতক্ষণ না পারস্পেক্টিভ আনছেন)। পাসিং শটের কেউ সিনেমাতে মূল চরিত্র হয়ে যেতে পারে। যাত্রাতে পারে না, মঞ্চনাটকেও না। এজন্য মঞ্চে চরিত্র হঠৎ করে আসে বলে মনে হয়। "যাত্রা" যখানে অনেকখানি কল্পনা নির্ভর, সিনেমাতে সেই কল্পনার ভিত্তি গড়ে দেয় ব্যাকগ্রাউন্ড, ফোরগ্রাউন্ড। এখন কথা হল - এজন্য সিনেমতে সব চরিত্রকেই কি ইন্ট্রোডাকশান দিয়ে আসতে হবে? মোটেই না। এটা নির্ভর করবে ছবিতে সেই চরিত্রে ভূমিকা, গুরুত্ব ইত্যাদি। খন্ডদৃশ্যে খন্ড চরিত্র হুট করে আসতেই পারে।
আবারো পাঞ্চ লাইন - উপরের কোনটাই বাণিজ্যিক ছবির নমুনা হতে পারে না।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
পুনশ্চ:
আপনার শেষ কথার সাথে একমত নই -
কেন হই নাই তা উপরের আলোচনা থেকেই বুঝছেন আশা করি। "হলিউডি ধাঁচের কমার্শিয়াল ছবি" এইটা আসলে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। কথাটার নিজস্ব অর্থ নাই।
মুক্তিযুদ্ধের ছবি দলিল হবে এইটাও অতি সরলীকরণ।
আগুনের পরশমণি দলিল না - কিন্তু আমার ভালো লেগেছে। প্রামাণ্য তথ্যচিত্রের সাথে ফিকশনাল ছবির পার্থক্য আছে - এইটা বোঝা জরুরী।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
চলচ্চত্রের সংঞ্জা না জাইনা ল্যাঞ্জা খুঁজতে যাওন ঠিক্না। আগে মহান এই প্রভুখণ্ডখানি ধাতস্থ করেন, শিখার আছে অনেক কিছু
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
সিনেমাটি দেখিনি। কিন্তু আপনার লেখাটি অপছন্দ করার জন্য সিনেমাটি দেখার প্রয়োজন নেই।
আপনি সিনেমাটির জন্য গর্ত খুঁড়তে খুঁড়তে অতি আবেগে নিজেই সেই গর্তে পড়ে গেছেন!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আগে বলে নেই গেরিলা সরকারী সহায়তায় তৈরি একটি ছবি। বাণ্যিজিক চলচ্চিত্রের সংজ্ঞাটা আপনার কাছে কি তা জানতে চাইছি।
উপকরণসমূওহ জানতে আগ্রহী। হলিউডি স্টোরিটেলিং-ঢালিউডি স্টোরিটেলিং কিভাবে হল,একটু বুঝিয়ে বলবেন কি????
ভাই, গায়ে কি জ্বালা হচ্ছে তাতে???কোন সমস্যা???? খুলে বলুন, ঝেড়ে কাশুন।
আপনি কি দেখতে চাইছেন, অল্পকিছু চরিত্র থাকবে, গুলি হবে সাথে রোমান্টিক কিছু দৃশ্য???
সংলাপের কথা বলেছেন। সংলাপ দরকার হয় না, চলচ্চিত্রকে কথা বলাতে। এই জিনিসটা ন্যূনতম ২০ বার গেরিলা ছবিতে দেখা গেছে। অনুভূতি সৃষ্টি করাটাই আসল, মানুষকে সে সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করানোই এর উদ্দেশ্য।
আপনি যদি বুলেট গোনা বাদ দিয়ে একটু লক্ষ্য করতেন, তাহলে দেখতে পেতেন, বাস থেকে নামিয়ে মানুষের কাপড় খোলার দৃশ্য। কি অর্থ বহন করে তা আপনার কাছে???
নাকি তাও সুন্দর এক দৃশ্য???দুধওয়ালা নগেশের লুঙ্গি খোলার সময় কি দেখছিলেন বলেন তো??
ঢাকা থেকে জলেশ্বর যাওয়ার পথে ময়না বেওয়াকে ট্রেন থেকে জোড় করে নামানো হয়। মনে আছে???কেবল তো লিখলেন পোস্টটা,মনে থাকা উচিত। তাকে রাজাকার কি বলছিলো মনে আছে???
"এইটা কি তোমার ইন্ডিয়া পাইসো, যে শরীর চিতায়ে রাখসো" সাথে কেউ না থাকায় মেয়েটাকে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। কই এখানে আপনার উচ্চবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত???
জয়া আহসান ওরফে বিলকিস ট্রেনে বোরখা খুলে ফেলে, কেন????বুঝেছেন কি কিছু???মনে হয় না। এখানে ভেবেছেন হলিউডি স্টাইলে নায়িকা পোশাক খুলেছে।
চরিত্রের নাম মনে থাকার কথা না। আপনাদের মত লোকদের চরিত্রের নাম মনে থাকে না।
আপনাকে মেহেরজানের পাণ্ডা বলার কিছু নাই, আপনি মেহেরজানের পাণ্ডাই। রগরগে প্রেমের ছবি আর হলিউডি মাশালা দেখে হাওয়া বদলের জন্য বাংলা ছবি দেখলে আপনারদের মত মানুষ এই রকম লেখাই লিখবে।
অলস সময়
খুব ভালো লিখেছেন। এবার মেহেরজান নিয়ে আরেকটা পোস্ট তৈরি করে ফেলুন। এটা নীড়পাতা থেকে সরে দ্বিতীয় পাতায় চলে যাবার পর মেহেরজানকে নিয়ে লেখাটা পোস্ট করুন।
অথবা নীতিমালা অনুযায়ী, এইটাকে স্টিকি করা হৈলে, উনি এখনি আরেকটা দিতে পারেন। ফিরি উইলে বাঁধা ক্যান?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
অলস সময়
বেনেডিক্ট অ্যান্ডারসন আর গায়ত্রী স্পিভাক নিয়ে কিছু চোথা যোগাড় করতে হবে না? আপনারা আদনান সাহেবকে এইভাবে চিবি দিয়ে ধরলে জিনিসটা কেমন দেখায়? পথের বাধা সরিয়ে দিন, দেশকে এগোতে দিন।
কী বলেন, বাঙালি না আমরা? নরকের এক্সিট ডোরে আমরণ অবস্থান ধর্মঘট নিলাম।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
দেখব-দেখব করেও এখনও সিনেমাটা দেখা হয়ে উঠেনি। রিভিউ অনেক গুলোই চোখে পরেছে এখন পর্যন্ত, তবে এখানে সিনেমাটির নির্দিষ্ট রেফারেন্সের তুলনায় লেখকের বক্তব্য অনেক বেশি মনে হলো। কম তেলে সবসময় মচমচে ভাঁজা নাও হতে পারে।
গেরিলা নিষিদ্ধ করা হউক।
সিনেমাটি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র হলে অসুবিধা কোথায়?
মারাত্মক লিখছেন ভাই... ফাডায়া... এই পোস্ট স্টিকি করা হৌক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এটা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কথা। আমি আপনার পোস্টটি বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম। সেই আগ্রহ আর পরে ধরে রাখতে পারিনি। সিনেমায় ত্রুটি আছে জানলাম, কিছু জায়গায় ফোকাস ঠিকমতো পড়েনি সেটাও বুঝলাম, সাউন্ড নিয়ে মন্তব্য পড়লাম। সিনামাটি বাণিজ্যিক ছবি এটাও আমি শুনলাম।
আপনি যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন (মন্তব্য ঘরের সমালোচনাগুলোর একটা বড় কারণ ওটা) সেটা হলো এটাকে যে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা বলা হচ্ছে সেটা কতটা যৌক্তিক। এই আলোচনাটা মেহেরজান পরবর্তী প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
গেরিলার পরিচালক নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুকে ১০১টি দোর্রা মারা হোক।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
<যারা গেরিলা ছবিটি আর একটা মুক্তিযুদ্ধের আর্টফিল্ম ভেবে হলে যাননি তাদের অভয় দিচ্ছি যে টানটান উত্তেজনায় পয়সা উসুল হবেই।>
আপনার ফিলিম-বোঝা এখনো আর্ট ফিল্ম আর বাণিজ্যিক ফিল্ম-এ রয়ে গেছে দেখে আমোদ পাইলাম।
সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিটাকে টিকিয়ে রাখতে হ'লে, সিনেমা হলগুলোকে ভেঙে ফেলা থেকে বাঁচাতে হ'লে, শ্রমজীবী শ্রেণীকে- যারাই এখনো টিকিয়ে রেখেছে ইন্ডাস্ট্রি- তাদের বিনোদন ছিনিয়ে নিয়ে,পুরোই উপেক্ষা করার চরম স্বার্থপরতায় টাকাওলার জন্য বহুতল টাওয়ার মার্কেটের চূড়ায় মাল্টিপ্লেক্স বসানোর ফাজলামি না করতে হ'লে ভালো বাণিজ্যিক ছবি নির্মাণই এ মুহুর্তে এদেশে সবচেয়ে বেশি দরকার। ইন্ডাস্ট্রি শক্ত মাটিতে দাঁড়ালে তা ১০টা তথাকথিত বাণিজ্যিক ছবির মধ্যে ২টা স্বাধীন ধারার ছবিকেও পোষাতে পারবে।
আমার মূল ক্ষোভের যায়গাটা কেউ ধরতে চাইলনা দেখে আহত হলাম। আমি পরিস্কার করে বুঝাতে চেয়েছিলাম যে গেরিলা ছবিটি মুক্তিযুদ্ধ বেচে মুনাফা করতে চেয়েছে। একি কাজ মেহেরযান ও করছে। এটা অনেক কষ্টের যে আমরা দুই দলে ভাগ হয়ে দাত খিচাচহছি এর ফাকে ওরা আখের গুছিয়ে বগল বাজাবে। আমাদের তখন তাকায়া তাকায়া দেখা আর পশ্চাতদেশ চুলকান ছারা কিছু করার থাকবেনা। গেরিলা ছবিটি বিপুল বাজেট এ নিরমিত। এটি house full চলছেনা। তাতেও নিরমাতা বরগের কিছু যায় আসবেনা। কারন ইহা "রবি" নিবেদিত। যারা এখনও হলে দরশক ফেরার আসা করেন তাদের একটু চোখ কান খুলতে বলছি। সিনেমা ব্যাবসার ধরণ পালটে গেছে।
আমি এই প্রথম ব্লগ এ লিখলাম। লেখার অভ্যাস তেমন নেই বলে গুছিএ লিখতে পারিনাই। তবে যা লিখেছি বোধ থেকে লিখেছি। যারা যারা comment করেছেন, ধন্যবাদ। জবাব দেবার চেস্টা করব।
আপনার বোধবুদ্ধি ঠিক পরিপক্ক মনে হচ্ছে না। গেরিলা ছবিটা অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধ বেচে ব্যবসা করছে। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে ছবি বানালে মুক্তিযুদ্ধ বেচবে না তো কী বেচবে, আপনার ক্ষেতের আলু? আপনি একটা সিনেমার নাম বলেন যেটা কোনো কিছু বেচে ব্যবসা করে নাই। আর পোস্ট পড়ে পশ্চাদ্দেশ চুলকানোর চেয়ে জরুরি কিছু আপনি এখনও করেছেন বলে তো মনে হলো না। একটু চোখ কান খুলে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র বানালে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের ক্ষতিটা কোথায়, যদি সেই চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধকে অসৎ বা অদক্ষভাবে উপস্থাপন করা না হয়?
এইরকম পাব্লিক আজকাল প্রচুর পরিমানে ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে! কিছুদিন আগেই আরেকটা ব্লগে দেখেছিলাম, এক তথাকথিত Bumপন্থী গেরিলার একটা রিভিউ পোস্টে এসে জানতে চাইসে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা বানানোর প্রয়োজন কি?
এদের একটাই ট্রীটমেন্ট... বোঙ্গা বোঙ্গা টিল ডেথ!
অবশ্য সে বিশ্ব শান্তির বুলিও কপচাচ্ছিলো... ('লক্ষন বিচার' বইয়ের অত্যাধুনিক সংস্করনে এদেরকে 'মেহেরুপিয়ারুপাকি' নামে বর্ননা করা হয়েছে!)
মানে আপনি মেহেরজানের সম পর্যায়ে গেরিলাকে আনতে চাচ্ছেন!!!
সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরে পাচ্ছে এবং হলমুখী হচ্ছে- এটা আপনার ভালো লাগছে না!!
এইটাই আসল কথা, বোধ ঠিকই তবে পূর্বে একটা 'নি:' যুক্ত হবে!!!!!!
[পাবলিশ্ড হবার পরও কোন অযৌক্তিক, ইর্যাশনাল, অসংগতিপূর্ণ এধরণের পোস্ট মুছে ফেলার নিয়ম থাকা উচিৎ!!!( আছে কি না আমার অজ্ঞাত)]
আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের যদি সুপারহিরো হিসেবে রিপ্রেজেন্ট করা হয় তাতে সমস্যা কি ? আমেরিকানরা কি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাদের স্নাইপারদের অবদান নিয়ে সিমেনা বানিয়ে মহিমান্বিত করেনি ? আমাদের কেন এই স্টিরিওটাইপ মনোভাব থাকবে যে মুক্তিযোদ্ধা মানেই লিকলিকে হাড় জিরিজিরে চাষাভুষার দল ? কেন আমরা দেখাতে পারব না যে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের "ওয়ান শট ওয়ান কিল" ? আমি মনে করি ছোট বাচ্চাদের মননে যদি একবার মুক্তিযোদ্ধাদের সুপারহিরো হিসেবে প্রবেশ করানো হয়, তবে সেই বাচ্চা পরবর্তীতে পাকমনপেয়ারু হিসেবে বেড়ে উঠবে না- যেমন হইনি আমরা, যারা স্পাইডারম্যান ব্যাটম্যান দেখার আগে দেখেছি ওরা ১১ জন।
"গেরিলা" চলচিত্র নিয়ে আমার একটাই আক্ষেপ- ফেরদৌসের অভিনয়।
ভালো লাগলো.....................
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে এই লেখাডার জন্ম কোথায় তা আমার জানা! কোথায়? কোথায়? মনে পড়সে, হাফমিদুল চার লম্বর স্তম্ভ খাটে লাগানোর আগেই তো এইডা শুরু করসে…
লেখক কি আসলে চলচ্চিত্র বুঝে গেরিলা সম্পর্কিত সমালোচনা করতে বসেছে নাকি সবাই এই চলচ্চিত্র কে ভাল বলে কেন আমি খারাপ বলব এমন মনভাব নিয়ে লিখতে বসেছে! লেখকের লেখার একটাই পযেটিভ দিক পেলাম যে লেখা শেষে লেখক নিজেই বুঝতে পেরেছেন যে লেখাটা শিশুতোষ হয়েছে।
আমি সবচেয়ে বেশি অবাক হলাম লেখকের বাণিজ্যিক ছবি বিদ্দেশ দেখে? বাণিজ্যিক ছবি যদি এমন হয় তাহলে সমস্যা কোথায়?
গেরিলা তে আবহ সঙ্গিতের সামান্য বাহুল্য ব্যবহার ছাড়া বাকি সবই একটা ভাল চলচ্চিত্র হয়ে উঠার জন্য যথেষ্ট ছিল। চলচ্চিত্রটি দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়এত চমৎকার একটি চলচ্চিত্র উপহার দেয়ার জন্য আবহ সঙ্গিতের বাহুল্যতাও ক্ষমা করে দেয়া যায়।
আপনার লেখা পড়ে খুব আফসোস হচ্ছে। শুধু শুধু সময় নষ্ট করলাম। আচ্ছা, স্রোতের বিপরতে অবস্থান নিতেই কি আপনার এই লেখা প্রসব? আর আপনার বাণিজ্যিক আর আর্ট ফিল্মের কচকচানী শুনে হাসতেই আছি..!
মূল পোস্ট থেকে মন্তব্য/ সমালোচনাগুলো সরেস। মন্তব্য/ সমালোচনাগুলোর পাঠক হিসেবে নিজেকে সফল মানছি। পোস্টটি শুধুই একটি পোস্ট বৈ আর কিছু না যার শুরু আগ্রহ দিয়ে আর শেষ হতাশায়।
নিশাচর পার্থ
"শেষ কথাঃ এটি মুক্তিযুদ্ধের ছবি হয় নাই কেননা কোন হলিউডি ধাঁচের কমার্শিয়াল ছবি মুক্তিযুদ্ধকে রিপ্রেসেন্ট করতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধের ছবির ভাষা হবে আমাদের নিজস্ব। সেই ছবি হবে দলিল। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সত্যিকার ছবিটি আমাদের বানাতে হবে।"
নিজস্ব ভাষা বলতে কি বুঝাচ্ছেন?
আর প্রধান চরিত্রগুলো সব উচ্চবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত হলেই বা কি সমস্যা? '৭১এ উচ্চবিত্ত ,উচ্চমধ্যবিত্তদের কোন অবদান নাই বলতে চাচ্ছেন? শুধু নিম্নবিত্তের অবদান দেখালেই "আমাদের ভাষার" চলচ্চিত্র হয়ে যাবে? একটা মুভিতে সবকিছু তো দেখানো সম্ভব না , সেটা আশা করেন'ই বা কীভাবে !!!!
মুক্তিযুদ্ধের ছবি "রবি" নিবেদিত হলে আপনার সমস্যা কোথায় ???
মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুকে কচুকাটা করে ফেলে তাতেই বা আপনার এতো লাগে কেন !!!!!!!
লেখক কে ধন্যবাদ জানাই আমার মনের কথা গুলো গুছিয়ে লেখার জন্য...গেরিলা দেখে আমার ও একি কথা মনে হয়েছে।মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা হলেই এর সাফাই গাইতে হবে এমন কোন কথা নেই। চলচিত্র টি অ্নেক যত্ন করে করা হয়েছে,কিন্তু এর গভিড়তা নেই।অভিনয় অসধারন, চিত্রনাট্যে দুর্বল।
লেখকের লিখার উপস্থাপন ভাল নয় , এইটা উনার লেখার ব্যার্থতা নাকি ইচ্ছাকৃত জানি না । তবে আর্টফিল্ম , মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বানিজ্য এই সব যুক্তি খুবই হাস্যকর । গেরিলা ছবিটা সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয় অবশ্যই অনেক অপূর্ণতা আছে । হ্যাঁ এইটাও সত্য বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেও আছে , কারন এইটা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই বানানো ছবি , আপনি কি বলতে চাচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাণিজ্যিক ছবি বানানো যাবে না ?
এর বাইরে কিছু কিছু সমালোচনার সাথে আমিও একমত , ছবিটাতে আরো বেশ কিছু জায়গা ভাল করার সুযোগ ছিল
আমরা সাধারণ দর্শক চলচ্চিত্রের এইসব খুটিনাটি দেখি না বা দেখার সময় পাই না। কারণ আমরা গল্পের ভেতরে ঢুকে যাই। এসব বিষয় দেখতে হলে কিছুটা বাইরে থেকে দেখতে হয়। তাই সমালোচকের দৃষ্টিতে বলতে পারবো না, সাধারণ দর্শকের দৃষ্টি থেকে বলছি, চলচ্চিত্রটি অসাধারণ হয়েছে। মুভি দেখে বের হওয়ার সময় আমার এই অনুভুতিই হয়েছে।
আহারে আদনান ভাই!!!!! আমার তোমার এই পোষ্ট নিয়া বলার মত আর কিছু নাই।
সিনেমা একটু বেশিই বুইঝা ফালাইছো, বুঝতে পারতেছি!!!!
কার কি মন্তব্য বুঝে উঠতে পারছিনা কিংবা লেখাটাও। খুব মাথা ধরেছে। আজকে সন্ধ্যায় এই ছবিটি দেখে ডুকরে ডুকরে কেঁদেছি। শেষ পর্যন্ত হয়তো এটা সিনেমাই। কিন্তু এখনো মাথা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জবাই করার দৃশ্য আর বিভৎসতাগুলো সরাতে পারছিনা। যতবার মন বলে উঠে কিংবা আম্মু-আব্বুর মুখে শোনা ৭১ কে রিলেট করতে চাই, আমি জেনে যাই সিনেমার এই দু ঘন্টায় পুরো একাত্তর তুলে আনা সম্ভব না, সাড়ে নয়মাস ধরে চলেছে এই নির্মমতা। সিনেমার দৃশ্যগুলি আমি সহ্য করতে পারিনি, সিনেমার শিল্পগুন বানিজ্যিক- অবানিজ্যিক এই সব আলোচনা আমার কাছে একেবারেই অপ্রাসংগিক। একাত্তরের খন্ডাংশ দেখেছি।সব মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ আর বীরাঙ্গনা দের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতা। পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ কে ধন্যবাদ।
আপনার মত বোদ্ধা বাংলাদেশের পথে-ঘাটে কোনো অভাব নাই...তারা না পারে সৃষ্টিশীল কিছু করতে,না পারে কোনো কিছু কে ভালো বলতে। ভালো কিছুকে খুঁচিয়ে এর ভেতরের গন্ধ(!) সংগ্রহ করাই আপনাদের কাজ।
আপনি 'গেরিলা' নিয়ে রিভিঊ না লিখে 'নাম্বার ওয়ান,শাকিব খান' নিয়ে রিভিউ লিখতে পারেন। এফ,ডি,সি তে জায়গা পাবেন।
আজকে সন্ধ্যায় 'গেরিলা' দেখেছি ও কেঁদেছি। এখনো মাথা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জবাই করার দৃশ্য আর বিভৎসতাগুলো সরাতে পারছিনা। যাদের নিয়ে গল্প তারা প্রত্যেকেই আমার পরিবারের গুরুজন। আমি গর্বিত। সকল মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, শহীদ জননী আর বীরাঙ্গনাদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতা। পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ ও পুরো টিমকে ধন্যবাদ।
শিরোনাম দেখে টাস্কিত। মুক্তিযুদ্ধের ছবি নিয়ে আলোচনা করছেন, কিন্তু শিরোনাম দিয়েছেন "যুদ্ধ বিষয়ক"??? মুক্তিযুদ্ধ কি শুধুই একটা যুদ্ধ? মুক্তিযুদ্ধ বললে কী হয়?
আপনি রম্য রচনা লিখলে অনেক ভালো করবেন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ছবিটি দেখে আমার এক মুক্তিযোদ্ধা বন্ধু তার ফেসবুকে লিখেছেন--"আজকে 'গেরিলা' দেখলাম। আমিও ফিরে গিয়েছিলাম ৭১ সালে। হলে বসে দেখছি, ছবি ও স্মৃতি ছিল সমান্তরাল। সচলায়তনে 'গেরিলা' সম্পর্কে পড়েছি, ছবির মান এবং কি নেই বা কি হতে পারত সে সম্পর্কে। কিন্তু আমি মোটেই সে রকম ভাবিনি। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র নারী। আমার মায়ের কথা মনে পড়ে। আমার মা তার বিয়ের আংটি তার কিশোর ছেলে, এই আমাকে, দিয়েছিলেন পথের খরচ হিসেবে, যখন আমি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে যাই..."
চলচ্চিত্র সমালোচক মসিজীবি কুলিদের ক্থা আমাদের কানে না তুললেও চলবে! গেরিলা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রায়িত উপস্থাপন।
নতুন মন্তব্য করুন