মুখবন্ধ: ইহা কোন সাহিত্যকর্ম নয়। ইহা জীবনে প্রথমবারের মত একটি রেসিপি লেখার চেষ্টা মাত্র।
ভুমিকা: ঘোল, যার অপর নাম মাঠা, অতি সুস্বাদু পানীয় হলেও বাংলা ভাষায় ঘোল শব্দটি অকারণ নেতিবাচক ব্যাবহারের দোষে দুষ্ট। সাহিত্যে ‘দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো’, ‘সে আমাকে ঘোল খাইয়েছে’ ধরনের বাক্যের ব্যবহার উপদেয় এই পানীয়টির উপর যথেষ্ট অবিচার করেছে বলে আমার ধারনা। ঘোল-প্রিয় সকল সাহিত্যিকদের একত্র হয়ে তাদের লেখালেখিতে এ ধরনের বাক্যের ব্যাবহার বর্জনের মাধ্যমে, উপরন্তু ঘোলের গুণগান লিখে এই দায় মেটানোর চেষ্টা করে যেতে হবে।
দেশ থেকে থেকে হাজার মাইল দূরে বসে এতদিন আমি ঘোল খাওয়া থেকে আমি বঞ্চিত ছিলাম। আজ আমার বন্ধু মিরাজের সহজ ঘোল বানানোর রেসিপির কল্যাণে আবার সেই স্বাদ পেলাম। সচলায়তনের পাঠকদের সাথে সেই স্বাদ ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।
যেহেতু আমি সুইডেনে থাকি তাই এই লেখায় সুইডেনে প্রাপ্ত উপকরণের মাধ্যমে সহজ ঘোল বানানোর প্রস্তুত প্রণালী বর্ণনা করা হলো।
উপকরন:
১। ইয়গার্ট
২। চিনি
৩। লবণ
৪। ঠাণ্ডা পানি
প্রস্তুত প্রণালীঃ
দুটো খালি গ্লাস নিন। একটি গ্লাসের চারভাগের একভাগ পরিমাণ কোন ধরনের ফ্লেভার ছারা ন্যাচারাল ইয়গার্ট নিন। বাকি তিনভাগ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভর্তি করুন। দের টেবিল চামচ চিনি এবং চা চামচের এক চামচ লবণ দিন। চামচ দিয়ে এমন ভাবে নাড়ুন যাতে সব কিছু মিশে যায়। এরপর গ্লাসের সম্পূর্ণ তরল পাশের খালি গ্লাসটাতে ঢালুন। এভাবে যত উঁচু থেকে সম্ভব এক গ্লাস থেকে আরেক গ্লাসে ঢালা ঢালি করতে থাকুন। গ্লাসে পর্যাপ্ত পরিমাণ বড় বড় বুদ বুদ উঠলেই তৈরি হয়ে গেলো আপনার প্রিয় ঘোল। বৈশাখের এই গরমের কর্মব্যস্ত দিনে, উপরের ঠোট বুদবুদে মাখিয়ে, ঘোল নিজে খান এবং বন্ধুদেরকেও খাওয়ান।
পুষ্টিগুণ: এইবার বলে নেয়া ভালো আমার বন্ধুর এই প্রস্তুত প্রণালী অনুসরণ করে যে তরল পানীয়টি আপনি প্রস্তুত করবেন তা সত্যিকারি ঘোল না হলেও ঘোলের মতই! (ক্ষ্যাপেন কেন? ঘোল বানানোর রেসিপি পড়তে এসে এটুকু ঘোল তো খেতেই হবে।) আমার জানা মতে ঘোলের সাথে এটার পার্থক্য হচ্ছে, সত্যিকারের ঘোলে প্রোটিন (Casein) থাকে না আমাদের এই ঘোলে হয়তো থাকে।
কারিগরি সহয়ায়তায়: মিরাজ
মন্তব্য
ঠিক আছে
আপনি কোট করার পর লাইনটা কে সামাজিক সচেতনতা মুলক কোন স্লোগান মনে হচ্ছে!
এটা আমিও পারি কিন্তু হাতের কাছে যদি বীট লবন থাকে সেটা আর গোলমচির গুড়া দিলে স্বাদটা আরো ভালো হয়। গ্লাসে গ্লাসে ঢালাঢালি না করে হ্যান্ড ব্লেন্ডার দিয়ে পিটিয়ে নিলে কিন্তু খাটুনী কিছুটা কমে যায়। আপনার প্রথম রেসিপি পোষ্ট বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলুক। নিকটা বেশ পছন্দ হলো, ছাইপাশ শুভকামনা।
আসলেই, বিটলবন আর গোলমরিচ ছাড়া ঘোল হয় না।
ভালোই। সাথে ছবি দিলে আরো ভালো হতো।
ফ্লিকারে ছবি আপলোড করে ইউআরএল দিয়েছিলাম। কিন্তু কেন যেন ছবিটা পোস্টে আশে নাই!
ধন্যবাদ। রাস্তার ধারে যেখানে মাঠা খেতাম সেই মাঠাওয়ালা গোল মরিচ আর বীট লবন মিশাতো না বলে হয়তো ব্যাপারটা মাথায় আশে নাই। রেসিপির মালিক মিরাজ কে আপনার এই নতুন উপকরনের কথা জানানো হবে। আপনার জন্যও শুভ কামনা।
আপনাকে ছাইপাশ ভাই/ছাইদা/ছাইভাই ডাকলে ভালো লাগবে আপনার?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মোটেই ভালো লাগবে না!
আসলে যখন নিকটি সচলায়তনের জন্য ঠিক করেছিলাম তখন নিক ব্যাপারটা কি সেটাই ঠিক বুঝতে পারি নাই। এর আগে নিজের লেখালেখি গুলো পোস্ট করার জন্য ছাইপাশ ডট কম ডোমেইনে আমার একটা পার্সোনাল ব্লগ ছিল (বার্ষিক রেন্ট না দেয়াতে সেটা এখন বন্ধ)। তাই এই নামটাই দিয়ে দেই। অবশ্য ভেবে রেখেছি, যদি কখনো অতিথি সচল হয়ে লেখা লেখি করি তখন মডারেটরদের অনুরোধ করে নিকটা ছাইপাশ থেকে পালটে কমল নিব।
জীবনে এই প্রথম একটা রেসিপি পড়লাম, যেটা পড়লে সেটা খাওয়াও হয়ে যায়।
আপনাকে ধন্যবাদ দেবার ভাষা নাই।
আপনার পোষ্ট না পড়লে বুঝতে পারতাম না কত বছর যাবত আপোষে ঘোল খেয়ে দিন পার করছি।
ঘোল আমার সবচে প্রিয় পাণীয়
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
সিলেট অঞ্চলে ঘোলকে বলে মাঠা।
আহারে মাঠা খাওয়ার জন্য আমার প্রান প্রায় ওষ্ঠে আগত
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ভোরবেলায় চানখাঁরপুলে মিতালীর সামনে একটা মাঠাওয়ালা বসতো। আহারে......... কী সে দিনগুলি!
'ঘোল খাওয়ার' ক্ষেত্রে কেউ আমাকে ছাড়াতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। একেবারে প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত তো খালি ওই জিনিসই খেয়ে যাচ্ছি...
তবে আপনার রেসিপিটা মন্দ নয়।
যদি কিছু মনে না করেন, দু'একটা বানান বড্ড চোখে লাগছে।
ঘোলের নেগেটিভ অর্থায়নের প্রতিবাদ জানিয়ে গেলাম, ছাইদা কে ধন্যবাদ মনে করিয়ে দেবার জন্যে।
ঘোল আমার প্রিয় পাণীয়, আমাদের এলাকায়(নরসিংদী) ঘোলের প্রচলন নেই, মাঠা বলে, স্থানীয়ভাবে - 'মাডা'।
ঘোল আমার খুউব ভালো লাগে। অবশ্য অনেকদিন খাওয়া হয়না। আপনার প্রস্তুতপ্রণালীটাও ভাল লেগেছে। কেমন যেনো ঘোল ঘোল স্বাদ পেলাম।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বেশ!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পুরাই ঘোল'আটে পরিস্হিতি...
ঘোল ভালো হইসে!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বাহ্ সবাই দেখি ঘোল না খেতে পেরে বেশ কষ্টে আছেন
আপনি ঘোলের ছবি পোস্ট করেন। ঘোলের স্বাদ তখন ছবিতে মেটানো যাবে।
ভালো লেগেছে ঘোলের সহজ সরল রেসেপি।
সারারাত আড্ডা মেরে আর রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে শাহবাগ মোরে ভোরবেলা গ্লাসের পর গ্লাস ঘোল খাওয়ার সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেলো
বানানে নজর দিন, নাইলে বিপদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য। বানানে আমি সত্যিই অনেক কাঁচা। এই পোস্টটা করার আগে অনলাইন বাংলা অভিধানও খুলছিলো না কেন যেন!
চমৎকার একটা পানীয়ের মজা করে লেখা রেসিপি পড়ে মজা পেলাম।
নিকও মজার মনে হলো, ছাইদা, ছাইভাই ডাকলেই বা ক্ষতি কী!
ইয়ে, আপনার কি 'ণ'-ভীতি আছে? কিছু মনে নিয়েন না, আসলে বানান বিভ্রাট অত না হলে পড়ার স্বাদ আমার ক্ষেত্রে বাড়তো সত্যি, প্রথমবার পড়তে গিয়ে বেশ ঘোল খেয়ে গেলাম।
সচলায়তনে স্বাগতম।
অকারন, ধারনা, কল্যানে, উপকরন, প্রনালী, পরিমান, লবন, সম্পুর্ন, পুষ্টিগুন - সব 'ণ' হবে!!
গুনগান > গুণগান
সম্পুর্ন > সম্পূর্ণ
এশে, আশা > এসে, আসা (to come)
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধন্যবাদ আপনাকে ভুল গুলো ধরিয়ে দেবার জন্য।
আমি কিন্তু সচলায়াতনের সাথে ১ বছর ধরে ধরে প্রতিদিনই আছি। ৪/৫টা পোস্টও লিখেছি। বানান ভুলের ভয়ে লেখি কম পড়ি বেশি!
হা হা হা ...
আপনার রসবোধ বেশ ভালো, লেখাতে ভালো মতো প্রমাণ পাওয়া গেলো। আশা করি নিয়মিত এরকম লিখে যাবেন
অলমিতি বিস্তারেণ
ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যে উৎসাহ পেলাম।
সেদিনের ঘোলের ছবিঃ
নতুন মন্তব্য করুন