চার্চিল, আপনার হাতে বাঙালির রক্তের দাগ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ২৭/০৪/২০১১ - ৯:১৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রগতির কারণে গত কয়েক দশকে সভ্যতা অনেকটাই এগিয়ে গেছে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে তথ্য সংগ্রহ, এবং যে কোনো হাইপোথিসিস পরীক্ষা করে দেখার মতো একটি প্রজন্ম তৈরি হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় যেকোনো অনুসিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বাস্তবতার আরও বেশি কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব বলে প্রমাণিত হয়েছে।

অবশ্যই ঐতিহাসিকভাবে, এই প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় বাধানিষেধের কবলে পড়ে। এ ধরনের সামাজিক বাধাকে যদি একপাশে সরিয়েও রাখা যায় তথাপি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে অতীতের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নিলে। যা-ই হোক, আমরা হয়তো একটি নক্ষত্রের পুনঃবিস্ফোরণ ঘটাতে পারব না, তবে আমরা এ ধরনের মডেল তৈরি করে সেই বাস্তবতাকে যাচাই করে দেখতে পারি। একইভাবে, আমরা এ মুহূর্তে জীবন সৃষ্টি করতে পারব না, কিন্তু জীববিজ্ঞানীদের কাছে বর্তমান এবং অতীতের জৈবিক গঠন ও কার্যপ্রণালী ব্যাখ্যা করার জন্য ডারউইনিয়ান বিবর্তনবাদ একটি শক্তিশালী মডেল হয়ে আছে।

মানব ইতিহাসের প্রতি আমাদের এই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি একইভাবে বাধাগ্রস্ত হয়, যখন বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে ঐতিহাসিক মডেলগুলোকে যাচাই করে দেখা সম্ভব নয় এই বাস্তবতা আমরা বুঝতে পারি (যদিও তা কল্পনা করা সম্ভব, যেমন- অতীতের যুদ্ধগুলোর কম্পিউটার সিমুলেশন)।

মোদ্দা কথা, ইতিহাসবিদদের অবশ্যই তথ্যের প্রতি সম্মান দেখাতে হয়, ঠিক বৈজ্ঞানিকদের মতোই। ‘ইতিহাস বিজয়ীর হাতে লিখিত হয়’ এই সত্য মেনে নিয়েও বলতে হয়, বিংশ শতাব্দীতে যে কটি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকা থেকে আনাতোলিয়া পর্যন্ত, বা পূর্ব তিমুর থেকে রুয়ান্ডা পর্যন্ত, বারবার এই সত্যটিই সামনে নিয়ে এসেছে যে, ‘অস্বীকৃত ইতিহাস একই ইতিহাসের পুনর্জন্ম দেয়।’ ইতিহাস থেকে মানবসৃষ্ট বিপর্যয়গুলো মুছে ফেলাটা শুধুই বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল এবং অনৈতিক নয়, এটা এই সম্ভাবনাও বৃদ্ধি করে যে, ওই একই সামাজিক রোগবিজ্ঞান ভবিষ্যতেও একই রকম বিপর্যয়ের জন্ম দেবে।

ইতিহাসকে হোয়াইটওয়াশ করার এমনই একটি অনন্যসাধারণ নজির হয়ে আছে দু শতাব্দী ধরে ব্রিটিশ ভারতে ঘটে চলা হৃদয়বিদারক, মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষগুলো বিশ্বের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ঘটনাটি। দু শ বছর ধরে এই বৃহৎ আকারের প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে এমন একটি সমাজে যেখানে সংসদীয় গণতন্ত্র আছে, আছে শিক্ষিত একটি জনগোষ্ঠী, যাঁরা যেকোনো তথ্যকে যাচাই-বাছাই করে নিতে সক্ষম। শুধু তা-ই নয়, এই মিথ্যে প্রচারণা এখনও চলছে ব্রিটেনে এবং ইংরেজিভাষী দেশগুলোতে, যেমন অস্ট্রেলিয়ায়, যাঁদের মুক্তমনা বলে খ্যাতি আছে, আছে উচ্চ সাক্ষরতার হার, গণতন্ত্র, সমৃদ্ধি এবং সব ধরনের এক্সক্লুসিভ মিডিয়া।

এই বিকৃতিকে আরও বেশি নাটকীয় মনে হবে যদি কল্পনা করে নিতে পারেন যে, ইহুদি নিধনের ইতিহাসকে আমাদের ইতিহাস বই থেকে মুছে দেয়া হয়েছে এবং সরিয়ে দেয়া হয়েছে আমাদের সাধারণ জনগণের দৃষ্টি থেকেও, একটু ভাবুন যে এসব নির্যাতনের সবকিছুই কার্যত অনুপস্থিত আছে স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি বা পত্রপত্রিকা এবং ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে। বাস্তবতা, কারণ, নৈতিকতা, মানবতা এসব পাশে সরিয়ে রাখুন, নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতেও ধরা পড়ে যে এ রকম একটি পরিস্থিতি বর্ণবাদী গণহত্যার পুনর্মঞ্চায়নের সম্ভাবনাকে কতটা বাড়িয়ে দেয়। সৌভাগ্যবশত, বাস্তবতা এই যে, সকলেই এই ব্যাপারটি সম্বন্ধে সচেতন এবং আদতেই বর্তমানে খোদ জার্মানিতে ইহুদি গণহত্যার কথা অস্বীকার করাটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

বিপরীতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, একটি মানবসৃষ্ট বিপর্যয় নেমে এসেছিল ব্রিটিশ রাজের অধীনে, যার ফলে প্রায় তত সংখ্যক মানুষেরই মৃত্যু হয় যত সংখ্যক মানুষ মারা গিয়েছিল ইহুদি হলোকাস্টের সময়, কিন্তু তা সার্থকতার সাথে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছে, এটি একটি ‘ভুলে যাওয়া গণহত্যা’। ১৯৪৩-৪৪ সালে (১৩৫০ বঙ্গাব্দে) ব্রিটিশশাসিত বাংলায় এই মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ কেড়ে নেয় প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষের প্রাণ, যা ওই অরাজকতায় নিহত লোকদের প্রায় ৯০ শতাংশ, এবং এর সাথে জুড়ে আছে বহুমাত্রিক আতঙ্ক ও ক্ষুধার জ্বালায় জর্জরিত নারী এবং কিশোরীর ওপর সিভিল ও মিলিটারি যৌন নির্যাতন, যা কোনোভাবেই জাপানি সৈন্যদের নারী নিগ্রহের চেয়ে কম ভয়াবহ নয়।

দুর্ভিক্ষের কারণ ছিল অবিমিশ্র, কিন্তু যখন চালের দাম কার্যত গ্রামীণ ভূমিহীন, দরিদ্র মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায় তখন স্রেফ একটি সচেতন, মানবিক সরকারের অনুপস্থিতির কারণেই লাখো আদম সন্তান অনাহারে ধুকে ধুকে মারা যাচ্ছিল। খাদ্য সংগ্রহের বিভিন্ন সম্ভাবনা ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও, চালের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল, কারণ : জাপান অধিকৃত বার্মা থেকে চাল আমদানির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়া; নাটকীয় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কারণে ভারতে খাদ্য আমদানি হ্রাস পাওয়া; কৌশলগত কারণে ভারত মহাসাগরে জাহাজ চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ; স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলোতে অবৈধ চালের স্টক আটক ও যথাযথ বিলিবণ্টনে সরকারের ব্যর্থতা; নৌযান এবং গরুর গাড়ি, যা চাল সংগ্রহ এবং বিতরণের জন্য অত্যাবশ্যক ছিল তা আটক ও ধ্বংস করা; এবং চূড়ান্তভাবে ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পলিসি, যার ফলে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মজুদ খাদ্যের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা। বিশেষত উন্নত, অগ্রসর এবং শিল্পসমৃদ্ধ কোলকাতার মানুষ বেশি দামে চাল কিনতে সমর্থ ছিল, যা খাদ্য উৎপাদনকারী প্রত্যন্ত এলাকাসমূহের লোকদের আরও বেশি বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল।

চূড়ান্তভাবে, লাখো বাঙালি মারা যায় কারণ তাদের ব্রিটিশ শাসকরা হাত গুটিয়ে বসেছিল, কোনো ধরনের কৌশলগত পদক্ষেপ না নিয়ে। ১৯৪৩ সালের অধিকাংশ সময়জুড়েই ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালির সংখ্যা বাড়ছিল সম্পূর্ণই ব্রিটিশদের নির্লিপ্ত অথবা অপর্যাপ্ত ভূমিকার কারণে। চার্চিলের নিজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ীই ভারতীয়দের প্রতি তাঁর কোনো সহানুভূতি ছিল না এবং দুর্ভিক্ষের সময় তিনি যেসব লোকের মানবিক পদক্ষেপ নেয়ার উদ্যোগের বিরোধিতা করেছিলেন তাঁদের মধ্যে রয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী লুই মাউন্টব্যাটেন, ভাইসরয় জেনারেল ওয়াভেল, এবং এমনকি জাপানিদের সাথে হাত মেলানো সুভাষ চন্দ্র বসু। দৃশ্যত পঞ্চাশের মন্বন্তর এতটা ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়াটা ছিল একটা ক্রমাগত চলমান, উদ্দেশ্যপূর্ণ নীতিরই অংশবিশেষ।

পঞ্চাশের মন্বন্তর বর্তমানে পরিণত হয়েছে একটি ‘ভুলে যাওয়া গণহত্যা’য় এবং ইতিহাসের বই, বা স্কুল ও ভার্সিটির শিক্ষাক্রম এবং সাধারণ মানুষের বোধের সীমানা থেকে সার্থকতার সাথে নিশ্চিহ্ণ করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। ব্রিটেনর প্রধানমন্ত্রী স্যার উইন্সটন চার্চিলের ছয় ভলিউমের ‘হিস্ট্রি অব দ্য সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ার’ নামক বইয়ে এই মহাবিপর্যয়ের বিষয়টি, যা ব্রিটিশ রাজের অধীনে যত অপমৃত্যু হয়েছে তার ৯০% অংশের জন্য দায়ী, তার কোনো উল্লেখ তো পাওয়া যায়ই না, বরং সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী এই দাবি তোলা হয় : "বিশ্ব জনসংখ্যার আর কোনো অংশই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক এবং ধ্বংসযজ্ঞ থেকে এতটা কার্যকরভাবে রেহাই পায়নি যতটা পেয়েছে হিন্দুস্তানের অধিবাসীরা। তারা আমাদের ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রের কাঁধে চড়ে এই মহাবিপর্যয়ের বৈতরণী পার হয়ে গেছে।"

ইহুদি নিধনযজ্ঞের সাথে তুলনা করে দেখলেই আমরা বুঝতে পারব এই বাঙালি নিধনযজ্ঞের বর্ণনা ইতিহাসের কোথাও ঠাই পায়নি। শুধু তা-ই নয়, এজন্য এ পর্যন্ত কেউ ক্ষমাভিক্ষাটুকুও চায়নি, ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার সেই কোন কালের (ঊনিশ শতকের মধ্যভাগ) আইরিশ মন্বন্তরের জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে পারেন, কিন্তু পঞ্চাশের মন্বন্তরে যে চল্লিশ লাখ বাঙালির মৃত্যু হয়েছে তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে ভুলে যান।

মধুশ্রী মুর্খাজির চার্চিল-স সিক্রেট ওয়ার বই প্রসঙ্গে কটি কথা

পঞ্চাশের মন্বন্তর নিয়ে অদ্যাবধি অনেক কিছুই লেখা হয়েছে। তবে সেসব লেখায় এ দুর্ভিক্ষের স্থানীয় কারণগুলোর প্রতি জোর দেয়া হয়েছে। ভারতবর্ষে যখন 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠছে তখন এ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। জার্মান নিবাসী বাঙালি পর্দাথবিদ মধুশ্রী মুর্খাজির 'চার্চিল-স সিক্রেট ওয়ার' নামক বইতে দুর্ভিক্ষের বিষয়ে বৃটিশ রাজের ভূমিকার কথা যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলার দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জন্য খাদ্যশস্য পাঠানোর জন্য ভারতের দুই ভাইসরয়, চার্চিলের ভারতবিষয়ক সচিব এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত চার্চিলকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, চার্চিল তাদের সে আহ্বান বা অনুরোধে সাড়া দেননি।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইন্সটন চার্চিল সচেতনভাবে লাখো ভারতীয়কে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়েছেন, মধুশ্রী মুখার্জি তাঁর বইয়ে এমনটিই দাবি করেছেন। এই বইয়ে আরও বলা হয়, চার্চিলের বর্ণান্ধ মনোভাবই এর জন্য অনেকাংশে দায়ী।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান বার্মা অধিকার করে নিলে বাংলায় চল্লিশ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়, ইতিহাসে যা খ্যাত হয়ে আছে 'পঞ্চাশের মন্বন্তর' নামে। বার্মা ছিল চাল আমদানির অন্যতম প্রধান উৎস—এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা তখন ভারতে খাদ্য গুদামজাত করছিল সৈন্য এবং যুদ্ধকর্মীদের জন্য।

বাজার থেকে সব চাল কিনে নিতে শুরু করায় এর দাম হয়ে পড়ে আকাশচুম্বী, এবং বাংলার খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে যখন কর্মকর্তারা অধিকাংশ নৌকা এবং গরুর গাড়ি আটক বা ধ্বংস করে দিতে শুরু করে যেন সেগুলো 'শত্রু'র হস্তগত না হতে পারে। 'শত্রু' বলতে জাপান, যদিও কখনোই তারা এখানে আসেনি।

চালের অভাবে চারদিকে হাহাকার দেখা দেয়, গ্রামগুলোতে পরিস্থিতি দ্রুতই অবনতির দিকে যাচ্ছিল, কিন্তু চার্চিল জরুরি খাদ্য সাহায্যের প্রস্তাব ক্রমাগতভাবে প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছিলেন।

গ্রামের মানুষ খাবারের আশায় দলে দলে কলকাতা শহরে ভিড় জমায়। রাস্তাঘাটে তখন ভয়াবহ দৃশ্য দেখা যেত। শিশুসহ কঙ্কালসার মায়েদের মৃতদেহ পড়ে থাকত। অন্যদিকে ব্রিটিশ শাসক ও উচ্চ মধ্যবিত্ত বাঙালিরা দিব্যি খেয়েদেয়ে বেঁচে ছিল।

মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ অনেকদিন ধরেই ব্রিটিশ রাজের একটি কালো অধ্যায় হয়ে আছে, কিন্তু মধুশ্রী মুখার্জি বলেন, তিনি এই বিপর্যয়ের কারণ যে স্বয়ং চার্চিল তা উদ্ঘাটন করতে পেরেছেন।

মধুশ্রী মুখার্জি এই বইটি লেখার জন্য দীর্ঘ আট বছরব্যাপী ইতিহাসভিত্তিক ব্যাপক গবেষণা করেছেন। তিনি চার্চিল সম্পর্কে অপ্রকাশিত প্রচুর দলিলপত্রের সাহায্য নিয়েছেন। চার্চিল ভক্তরা সাহায্য পাঠাতে জাহাজস্বল্পতার কথা বলে আসলেও এসব দলিলপত্র এ দাবিকে অসার বলে প্রমাণ করে এবং ভারতীয় ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান মরিয়া আবেদনও যে চার্চিল নাকচ করে যাচ্ছিলেন সে কথাই তুলে ধরে।

এসব দলিলপত্রের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, ওই সময় অস্ট্রেলিয়া থেকে জাহাজভর্তি খাদ্যশস্য ভারত অতিক্রম করে মেডিটেরেনিয়ান অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, যেখানে পাহাড় পরিমাণ খাদ্য গুদামজাত করার কাজ চলছিল।

“এটা শুধু বাংলায় ত্রাণ পাঠাতে চার্চিলের নিস্ক্রিয়তার প্রশ্ন নয়, বরং তিনি এবং তাঁর ঘনিষ্ট অমাত্যবর্গ খাদ্য সরবরাহের প্রতিটি উদ্যোগকে ব্যর্থ করে দিয়েছেন,” একটি টেলিফোন সাক্ষাৎকারে মুখার্জি এসব কথা বলেন।

“যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া সাহায্য পাঠাতে চেয়েও পারেনি, কারণ 'ওয়ার ক্যাবিনেট' কোনো জাহাজ ছাড়তে রাজি হয়নি। এবং যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের জাহাজে করে খাদ্য পাঠানোর প্রস্তাব দিলে ব্রিটিশদের আপত্তির মুখে সে উদ্যোগও ভেস্তে যায়।”

“তিনি ভারতীয়দের সম্বন্ধে জঘন্য কথা বলেছেন। তিনি তাঁর সেক্রেটারিকে বলেছেন যে, ওদের ওপর বোমা ফেলা হলেই তিনি খুশি হতেন,” মুখার্জি বলেন। “তিনি ভারতীয়দের নিয়ে ভীত ছিলেন কারণ তিনি বুঝতে পারছিলেন আমেরিকা ভারতে ব্রিটেনের শাসন আর চলতে দেবে না।”

ভারতীয়দের নেতা মহাত্মা গান্ধীকে চার্চিল চিহ্ণিত করেছেন অর্ধ উলঙ্গ পবিত্র নেতা হিসেবে, এবং ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের ত্রাণ সাহায্যের অনুরোধের জবাবে টেলিগ্রাম করে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, "তাহলে গান্ধী এখনও মরেনি কেন।"

“আমি ভারতীয়দের ঘৃণা করি। দে আর অ্যা বিস্টলি পিপল উইদ অ্যা বিস্টলি রিলিজিয়ন,” ভারতবিষয়ক সচিব লিও আমেরি-কে বলেছেন তিনি। অন্য এক সময় তিনি বলেছিলেন ভারতে ঘন ঘন দুর্ভিক্ষ হবার কারণ 'তারা জন্মায় খরগোশের মতো।'

লিও অ্যামেরি একবার তাঁর এমন মন্তব্য শুনে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি। রাগে ফেটে পড়ে তিনি বলেছিলেন, “চার্চিলের মনোভাবের সঙ্গে হিটলারের মনোভাবের মিল রয়েছে।”

অ্যামেরি তাঁর ডায়েরিতে লেখেন : “ভারতের প্রতি তাঁর আচরণ কতটুকু যৌক্তিক সে বিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ নই।”

“সাম্রাজ্যবাদের প্রতি এ এক অন্ধ মোহ, যা উইনস্টনকে বর্ণবাদী করে তুলেছিল। একে তুলনা করা যায় সেই হিংসুটে স্বামীর সাথে যে তার স্ত্রীকে মৃত দেখতে ইচ্ছুক, তাকে চলে যেতে দেয়ার চেয়ে,” মুখার্জি বলেন।

মুখার্জির বইটিকে একটি নব দিগন্তের উন্মোচনকারী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যার কল্যাণে পৃথিবীবাসী নতুন অনেক তথ্য জানতে পেরেছে, যদিও ইতোমধ্যেই চার্চিলের জীবন নিয়ে শত শত ভলিউম লেখা হয়ে গিয়েছিল।

এতকাল ধরে বাংলার দুর্ভিক্ষ নিরসনে চার্চিল যে কোনোই পদক্ষেপ নেননি এ কথা চেপে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। চার্চিলের ভক্তরা দাবি করে, ভারতে খাদ্যশস্য পাঠানোর মতো জাহাজের তখন ঘাটতি ছিল। মধুশ্রী মুখার্জি তাঁর বইতে দেখিয়েছেন, ১৯৪৩ সালের গ্রীষ্ম ও হেমন্তে ব্রিটেনে জাহাজের ভিড় লেগে গিয়েছিল। আর এ ভিড় লাগার কারণ ছিল, সে সময় যুক্তরাষ্ট্র নিজ মালবাহী জাহাজগুলো বৃটেনের কাছে তুলে দিয়েছিল।

লন্ডনের দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকা মধুশ্রীর বইয়ের সমালোচনা করার সময়ে এ দুর্ভিক্ষকে 'হলোকাস্ট' হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, এ হলোকাস্ট সম্পর্কে তথ্য উদ্ধারের জন্য মধুশ্রী মুখার্জি অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে গবেষণা করেছেন। মধুশ্রী দেখিয়ে দিয়েছেন, গত শতকের সবচেয়ে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ প্রকৃতির কারণে হয়নি, বরং এ ধরনের দুর্ভিক্ষ হয়েছে চার্চিল বা হিটলারদের কারণে।

“দুর্ভিক্ষ, আপনারা হয়তো একমত হবেন, অংশত মানবসৃষ্ট ছিল। যুদ্ধের আগের বছরগুলোতে ভারতকে বাধ্য করা হয়েছিল খাদ্য রপ্তানি করতে এবং ১৯৪৩ সালে চাল রপ্তানি করা হচ্ছিল চার্চিলের ব্যক্তিগত অভিপ্রায় অনুযায়ী। যুদ্ধের সময় ব্রিটেন ভারতকে এক্সপ্লয়েট করেছে এবং যখন দুর্ভিক্ষ শুরু হলো তখনও তা বন্ধ হয়নি।”

মুখার্জি, ৫০ বছর বয়সী বাঙালি নারী যিনি ফ্রাঙ্কফুর্টে বাস করেন তাঁর জার্মান স্বামীর সাথে, বিশ্বাস করেন ভারতীয় ইতিহাসের বই থেকেও বাংলার দুর্ভিক্ষের করুণ ইতিহাস যত্নের সাথে মুছে ফেলা সম্ভব হয়েছে।

*শিরোনামের আইডিয়া নেয়া হয়েছে সচল আরিফ জেবতিকের একটি লেখা থেকে

কুটুমবাড়ি

পূর্ববর্তী কয়েকটি লেখা : যেভাবে সাকিব জয়ী আর উৎপল শুভ্রের জামানত বাজেয়াপ্ত
অভীক সরকার, আপনাদের আপডেট হবার সময় এসেছে
নেকাব নারীর অধিকার নয়, নিগ্রহের চিহ্ণ

পাদটীকা


মন্তব্য

অপছন্দনীয় এর ছবি

ভালো লেখা। এই ব্যাপার নিয়ে স্কুলে পড়া ইতিহাসেও কিছু পড়েছি কিনা মনে করতে পারছি না।

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

সত্য ইতিহাস এখনও লেখা হয়নি ভাইটি, স্কুলে পড়া ইতিহাসে পাবেন কোথা থেকে। পড়া এবং মন্তব্যের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। কয়েকটা ফুটো পয়সা যোগ করি।

১. বৃটিশ আমলে ভারতে, আরো ভালোভাবে বললে বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়েছে দুই বার। দ্বিতীয় বারেরটার কথা আপনি বলেছেন। প্রথম বার হয়েছিল ১৭৭০ সালে (১১৭৬ বঙ্গাব্দ)। সেবার কতো মানুষ মারা গিয়েছিলেন তার খুব শক্ত-পোক্ত হিসাব নেই। তবে আনুমানিক হিসাবে সংখ্যাটা প্রায় ৭৫ লাখ। এই দুর্ভিক্ষটা নিয়ে কথা হয়েছে কম, গবেষণা প্রায় শূন্যের কোঠায়।

২. ১৯৪৩-৪৪ সালে খাদ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন যা ছিলো তাতে আমদানী না হলেও এই আকারের দুর্ভিক্ষ হবার কথা না। সমস্যা তৈরি করা হয়েছিলো অভ্যন্তরীণ পরিবহনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং অ্যাকসেস বন্ধ করে দিয়ে। এমন কথাও পড়েছি (কে বলেছেন মনে নেই) যে, বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়া হয়েছিলো।

৩. ১৯৪৩-৪৪-এর দুর্ভিক্ষ ঠেকানো বা প্রশমণের জন্য সরকারী উদ্যোগ প্রায় শূণ্য ছিলো। আরো হতাশাজনক ছিলো প্রধান দুই রাজনৈতিক দল "ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস" ও "নিখিল ভারত মুসলিম লীগ"-এর ভূমিকা। এই দুই দলের সাম্রাজ্যবাদের দালালী ও নিজেদের ক্ষমতা লাভের মোহ এমন পর্যায়ে গিয়েছিলো যে লাখ লাখ মানুষ মরলেও গোটা দেশব্যাপী দূরে থাক গোটা বাংলা জুড়েও এটা নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোন আন্দোলন হয়নি। যে সরকার নিজ উদ্যোগে মানুষের মুখের খাবার কেড়ে নেয় তার কাছেই আবার খাবার চেয়ে টেলিগ্রাম করাটা কোন প্রকার সচেতন কর্ম বা আন্দোলন! লঙ্গরখানা খুলে দুর্ভিক্ষ ঠেকানোর নামে আসলে গণবিদ্রোহ ঠেকানো হয়েছিলো। সরকারকে এই কাজে তার দুই বশংবদ দল খুব কার্যকর ভাবে সহযোগিতা করেছিলো।

৪. আমাদের ইতিহাস বইগুলোতে সাধারণ মানুষের কোনো কথা থাকে না। সেখানে মোগল সম্রাটরা কোন প্রাসাদ-মসজিদ বানিয়েছে, পাল রাজারা কোন বিহার বানিয়েছে, সেন রাজারা কোন মন্দির বানিয়েছে, ব্রিটিশরা কোন রাস্তা বানিয়েছে এসব লেখা থাকে। অথচ এরা প্রত্যেকে এদেশের মানুষের উপর কী কী অত্যাচার চালিয়েছে, কীভাবে শোষণ করেছে, কীভাবে তাদেরকে মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য করেছে সেগুলো লেখা থাকে না। এইসব ইতিহাস তথাকথিত মহান রাজা-বাদশাহদের কেচ্ছা-কাহিনী - তাদের নিজেদের বা তাদের পয়সাখাওয়া লোকদের দিয়ে লেখানো। সত্য ইতিহাস এখনো লেখা হয়নি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১. ব্রিটিশ আমলের একেবারে শুরু থেকেই, অর্থাৎ ১৭৬৫ সাল থেকেই দুর্ভিক্ষের আলামত পাওয়া যাচ্ছিল, কিন্তু তা পূর্ণতা পায় ১৭৬৯-১৭৭০ সালের (১১৭৬ বঙ্গাব্দ) দিকে। ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত এই দুর্ভিক্ষে মারা যায় প্রায় এক কোটি বাঙালি, এই একটা দুর্ভিক্ষের ধাক্কায় বাংলার জনসংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ কমে গিয়েছিল। না, এত বড় একটি বিপর্যয় নিয়ে সেভাবে গবেষণা হয়নি। তবে একটি কোটেশন পেলাম শ্রী গুগলনাথের সৌজন্যে, বেশ ইন্টারেস্টিং, পড়ে দেখতে পারেন- হাসি

“ In the wake of British spoilation, famine struck and in 1770 alone took the lives of an estimated one-third of Bengal's peasantry .... What finally roused the British parliamentary concern over the state of Bengal was not the plight of India's peasantry, but the company's professed inablility to pay a promised annual tax of 400,000 pounds to the treasury in 1767 . ...” Stanley Wolpert's A New History of India, fifth edition, 1997.

এক কোটি মানুষের মৃত্যুর জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে কোনো কৈফিয়ত দিতে হয়নি! অ্যাঁ ট্যাক্স আদায় হয়নি কেন সেটা নিয়েই ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বেশি পেরেশান ছিল মনে হয় চিন্তিত (আলী সায়েবের 'পন্ডিত মশাই' গল্পের কথা মনে পড়ছে)

২. আপনার এই পয়েন্টটি নিয়ে আরেকটি পোস্ট এলে ভালো হয়। উইকি বলছে চাল উৎপাদন অন্যান্য বছরের চেয়ে কিছুটা কম ছিল। তবে তা এতটা কম নয় যে লক্ষ লক্ষ মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে। খাদ্যশস্য বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়ার বিষয়টিও সত্য নয় মনে হয়। আমার ধারণা যুদ্ধের কৌশল হিসেবে নেয়া সরকারের 'পোড়ামাটি নীতি'-র কারণে এইসব মানুষগুলোকে না খেয়ে মরতে হয়েছে।

৩ এবং ৪ এর বিষয়ে একমত। আমার ভেবে অবাক লাগছে দু শ বছরের হলোকাস্টের ইতিহাস কতটা চাতুর্যের সাথে হোয়াইটওয়াশ করা হয়েছে। একই রকম হোয়াইটওয়াশের প্রচেষ্টা চলছে এখন ৭১-এর জেনোসাইড নিয়েও। সত্য ইতিহাসটা আমাদের এই প্রজন্মকেই লিখে যেতে হবে।

সূত্র :, ,

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

"মধুশ্রী মুর্খাজির চার্চিল-স সিক্রেট ওয়ার বই প্রসঙ্গে কটি কথা" এর নিচে যা লিখেছেন তা এই বইটি নিয়ে লেখা নানা রিভিয়্যুর জটপাকানো অনুবাদের মতো লাগছে। বইটা পড়ার পর আপনার বিশ্লেষণ কই? এই বই নিয়ে একটা ভালো রিভিয়্যু পড়েছিলাম দা নিউইয়র্ক রিভিয়্যু অব বুকসে

একটা টুকুন গল্পে এই প্রসঙ্গ এসেছিল।

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

ওই রিভিউটা আমারও চোখে পড়েছে। পুরোটা পড়তে পারিনি (সাবস্ক্রিপশন ফি দেখি সর্বনিম্ন $6.00! ইয়ে, মানে... ), তাই মতামত দিতে পারছি না। তবে প্রথমটুকু পড়েই রিভিউর টোনটা একটু কেমন কেমন যেন লাগল।

মুখার্জির বইটা এখনও পড়তে পারিনি। মন খারাপ জোগাড় করার চেষ্টায় আছি। পড়া শেষ হলে একটা বিশ্লেষণী লেখা দেয়ার চেষ্টা করব হাসি (প্রকাশোপযোগী হলে আমার ক্রেডিট, আর না হলে মডুদাদাদের দোষ খাইছে )।

আপনার টুকুন গল্পটা আগেই পড়ছি, অ-সা-ম।

দিফিও-1 এর ছবি

এইখানে দেখতে পারেন, পুরোটা আছে বোধহয়।

পুরো আর্টিকেল না পেলে অনেকসময় ১ম ২ টা লাইন কপি করে গুগল মারি, আর্টিকেল ভাল হলে এদিক ওদিক ২/১ কপি পেয়ে যাই।

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

(গুড়)

শাখইকঢ় এর ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য পাকিস্তানীদের বিচারের মুখোমুখি দেখতে চাই,ব্রিটিশরা কেন বাদ যাবে?পাকিরা ৩০ লক্ষ মানুষ মেরেছে চোখ বন্ধ করে,ব্রিটিশরা ২০০ বছরে তার কয়েকগুণ মানুষ মেরেছে ।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চার্চিল সাহেব লোক সুবিধার না। সে যখন লেফটেন্যান্ট ছিলো তখন ব্যাঙ্গালোর ক্লাবের মদের বিল ১৩ রুপী বাকী রেখে ভেগে গিয়েছিলো। পরে অবশ্য ক্লাব ওই বদ-ঋণ রাইট অফ করে তাকে মাফ করে দেয়।

Lt. Winston Churchill did not pay INR 13.00 to Bangalore Club in India

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

এই বিল তার একার ??? গড়াগড়ি দিয়া হাসি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এটা হচ্ছে বাকীর খাতার একটা পৃষ্ঠা। নিচের দিক থেকে ৬ নম্বর নামটা চার্চিলের। ১৩ রুপীর খেলাপী।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

আসমা খান, অটোয়া। এর ছবি

ধন্যবাদ, এই পোস্টটির জন্য। সভ্য মানুষের তৈরি দুর্ভিক্ষ, নোংরা রাজনীতির ফসল, অসহায় সাধারন ক্ষুধার্থ মানুষের মৃত্যুর চিত্রটি প্রকাশ করার জন্য।

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

@আসমা খান, আপনার সহৃদয় মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগল। ভালো থাকুন, সব সময়।
@শাখইকঢ়, সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার হওয়াটাই কাম্য। নয়তো আগামী প্রজন্মের কাছে আমরা মুখ দেখাব কেমন করে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।