বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেট কোচ জেমি সিডন্স। মাত্র গত সপ্তাহেই তিনি নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে গেলেন। চার বছরে বাংলাদেশকে তিনি কম চিনেননি। আমরাও তাঁকে কম জানিনি। যাওয়ার আগে এদেশের অনেক ক্রীড়ামোদীর শ্রদ্ধামিশ্রিত ভালোবাসা তাঁকে ঘিরে ছিল। কিন্তু নিজের দেশে ফিরে যেতে না যেতেই তিনি যেসব কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন তা শুনলে অবাক হতেই হয়। ইএসপিএন স্পারস্পোর্টসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি যেসব অভিযোগ করেছেন তা যে কোনো ক্রিকেটভক্তকেই আহত করবে। বিসিবিও ইতোমধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
অসময়ে চলে যেতে হওয়ায় তাঁর হয়তো বেজায় রাগ হয়ে থাকবে, কিন্তু বিসিবি কি অন্যায় কিছু করেছে? বোর্ডের সাথে তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল সে দায় তো বিসিবির নয়। হ্যাঁ, চুক্তি নবায়ন করা হয়নি সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। সত্যি বলতে কি, চুক্তি নবায়ন করা হবে এমন আশা করাটাও তাঁর ঠিক হয়নি। এই চার বছরে তাঁর অধীনে কতটা সঠিক পথে ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট? কতখানি এগোতে পেরেছে টাইগার বাহিনী? প্রত্যাশিত উন্নতি যদি না হয়ে থাকে, কেন হয়নি? সিডন্স তাঁর দায়িত্ব কতটুকু যথাযথ পালন করেছেন? অথচ দেশে গিয়েই তিনি বলছেন, রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বাংলাদেশকে। রাজনীতির কথা তিনি কীভাবে বলেন। যেখানে তাঁর চাহিদামতো সব কিছু দেয়া হয়েছে। ক্রিকেটার বাছাই থেকে শুরু করে সুযোগ-সুবিধার কোনটিরই ঘাটতি ছিল না। এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সার্বিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কই, চার বছর থাকার সময় কখনোই তো সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আপত্তি তোলেননি। বরং চেয়েছিলেন আরও কিছুদিন থেকে যেতে। সেটা হয়নি বলেই কি তাঁর এই উষ্মা প্রদর্শন? কে জানে! তিনি এই সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন-
সংকীর্ণ রাজনীতি আর সিদ্ধান্তহীনতার চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে ক্রিকেট-জাতি হিসেবে কখনোই বেড়ে উঠবে না বাংলাদেশ।
বাহ! দেশে ফিরেই কেমন সুর পালটে ফেললেন। অথচ কদিন আগে এই তিনিই না কত ভালো ভালো কথা বলে গেলেন।
‘যতটুকু বলা উচিত ছিল হয়তো তার চেয়ে বেশিই বলে ফেলতাম। সম্ভবত সে কারণেই আমার চাকরিটা গেছে। তবে আমি তাদের ভালো চাইতাম, উন্নতি চাইতাম। আমি জানতাম কেন তারা ভালো করতে পারছে না। চাইতাম সবাই যেন আমার কথা শোনে।’
তিনি জানতেন কেন উন্নতি হচ্ছে না, কিন্তু করে দেখাননি। তিনি চাইতেন সবাই যেন 'তাঁর' কথা শোনে! সরল স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু কে তাঁর কথা শোনেনি? কবে শোনেনি? এসব কথা তিনি আগে বলেননি কেন? এখন কেন বলছেন?
অস্ট্রেলিয়ায় কোনো সমস্যা দেখা দিলে আমরা সবাই মিলে সেটা সমাধানের চেষ্টা করি। সেক্ষেত্রে সবাই আমরা মতামত প্রকাশ করি। কিন্তু বাংলাদেশের বেলায় সম্ভবত সেভাবে বেশিদূর এগোনো সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সতর্ক হতে হবে এবং সঠিক লোকদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।'
এখানে আসার আগেই তিনি জানতেন এটা বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া নয়। এখানকার বাস্তব পরিস্থিতি জেনেই তিনি এসেছিলেন, এবং চুক্তিও নবায়ন করতে চেয়েছিলেন। তাহলে এখন কেন এখানকার অবকাঠামো নিয়ে, লোকজন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন?
বাংলাদেশের একাডেমী ক্রিকেট নিয়ে সমালোচনা করার পাশাপাশি এখানকার উইকেট নিয়েও হাঁড়ি ভেঙেছেন সিডন্স। 'বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট প্রতিযোগিতা একেবারে ভিন্ন। স্লো এবং লো উইকেটে স্পিনাররা রাজত্ব করে। যদিও সেই মানের স্পিনার নেই সেখানে। চারটি প্রথম শ্রেণীর মাঠেরই একই অবস্থা সেখানে। মিরপুরে পেসারদের জন্যই উইকেট তৈরি করে রাখা। অথচ সেখানে বিদেশি কোনো দল গেলেই স্পিন উইকেট বানানোর তোড়জোড় চলে। যে কারণে সেখানে পেসাররা সুবিধা করতে পারে না। একজন পেসার প্রথম স্পেলে বোলিং করার পর অপেক্ষায় থাকে কখন আবার নতুন বল আসবে। আর এ কারণেই বাংলাদেশি পেসারদের পক্ষে খুব বেশি গতিতে বোলিং করাটা একটা সমস্যা। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো অনেকটাই বদলাতে হবে।'
বিদেশি কোনো দল এলেই স্পিন উইকেট বানানোর প্রেসক্রিপনটা তাঁর মুখ থেকেই আমরা পেতাম নিয়মিতভাবে। এই চার বছরে একটাও আন্তর্জাতিক মানের পেসার উঠে আসতে দেখা যায়নি। তিনি সেই মানের স্পিনার নেই বলছেন, কিন্তু কেন নেই? তাঁর অধীনে ব্যাটিংয়ের কোনো উন্নতি কি হয়েছে? এ কথা সত্যি ২০১০ সালটি টাইগাররা অনেক ভালো কাটিয়েছে। অনেকগুলো জয় পেয়েছে, অনেকগুলো ম্যাচ ক্লোজ ছিল, বা হেরে গেলেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে হেরেছে। এভাবে চিন্তা করে দেখলে সিডন্সকে সফল কোচ বলেই মনে হবে। কিন্তু দলের এই সামগ্রিক উন্নতিটা হয়েছে মূলত স্পিনারদের কল্যাণে। এবং তিনিও এতেই সন্তুষ্ট থেকেছেন। বাংলাদেশ সব সময় নিজের দেশে খেলবে না এবং এখানে সব সময় এমন টিম খেলতে আসবে না যারা স্পিনে দুর্বল। অতি মাত্রায় স্পিননির্ভরতা যে আত্মঘাতী সে কথা বুঝতে তাঁর চার বছর লাগল কেন? মেয়াদ বাড়ানো হলেও কি তিনি এই কথাই বলতেন, নাকি ফিরে যেতেন পুরোনো স্পিনসহয়াক উইকেট-তত্ত্বে?
সূত্র : http://m.espncricinfo.com/s/5643/49?countryId=6&country=topNews&itemTitle=Bangladesh%20held%20back%20by%20indecision&storyNo=512910&allinOne=true
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-04-29/news/150469
http://www.samakal.com.bd/details.php?news=18&action=main&menu_type=&option=single&news_id=152355&pub_no=677&type=
কুটুমবাড়ি
মন্তব্য
কর্মসূত্রে বা অন্যান্য সূত্রে যে কয়জন অসিকে চিনি সিডন্সের এই আচরণ তাদের থেকে ভিন্ন কিছু দেখলাম না। এদের যখন মেজাজ একটু খারাপ থাকে তখন কি বলে আর না বলে তার হিসেব করে না।
তার বক্তব্যের কিছু অংশ হয়তো সত্যি। কিন্তু সমালোচনা দেশে থাকতে করলে সংশোধনের প্রক্রিয়া কিছুটা এগিয়ে থাকতো। পাবিলকলি সমালোচনা না করেও তিনি নীতিনির্ধারণী লেভেলে তার এই মতামতগুলো দিতে পারতেন। দলের সামগ্রিক উন্নতি ঘটলে আখেরে এতে তারই লাভ হতো। কোচিং বাজারে নিজের দর বাড়ানোর অনেক সূযোগ থাকতো।
আমি নিয়মিত ক্রিকেট ফলোয়ার না হলেও সিডন্সের আমলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের যেটুকু উন্নতি হয়েছে তারজন্যে অবশ্যই তাকে ধন্যবাদ জানাবো। এখানে কুন্ঠা করবো না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
রাতঃদা, আপনি ক্রিকেট ফলোয়ার না হয়েও অনেক সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি সিডন্সের কথায় কোন সমস্যা দেখলাম না। বাংলাদেশে যেকোন সংগঠনের চরিত্র তো এমনই, তাই না? সেইটা কেউ বললে এতো রাগ করেন কেন?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এটাই এখানে কী পয়েন্ট। এবং এটাকেই সিডন্স ব্যবহার করছেন। তিনি খুব ভালো করেই জানেন, বাংলাদেশে সব দোষ রাজনীতির ওপরে চাপালেই হয়। সিডন্স নিজে কি করেছেন, সে হিসাবটা দেখা যাবে কেউ চাইবে না, সব দোষ লোটাস কামালের ওপর দিয়েই যাবে। ফলে সিডন্সের পারফর্ম্যান্স নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলার অবকাশ পাবে না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
বোর্ডের সাথে এতদিন চুক্তিবদ্ধ ছিলেন দেখেই সংবাদ মাধ্যমে এ ধরণের কিছু প্রকাশ করেননি সিডন্স। এখন চুক্তি শেষ, এখন বলতেই পারেন। বরং আমাদের ভালর জন্যই কথাগুলো বলেছেন, এবং কথাগুলো যে সত্য সেটা হালকা গ্রে ম্যাটার ব্যবহার করলেই যায়। আর আপত্তিগুলো যে বোর্ড কর্মকর্তাদের সামনে তুলে ধরেননি সিডন্স তাই বা ভাবছেন কি কারণে ? আর সিডন্স কর্মক্ষেত্রে আসার আগে কিভাবে জানবে যে এখানে কিভাবে কাজকর্ম চলে ? বোর্ডের রাজনীতির কতটুকু দেখেছেন আপনি ? ভাল পেসার না উঠে আসার দায় একমাত্র সিডন্সের না, বরং ভাবুন আগে যেখানে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ তুলে ফেরত আসার (এবং একই ধরণের ইডিয়টিক প্রসেসে) এবং ৩০/৪০ রানের মধ্যেই ৫/৬টা উইকেট নাই হয়ে যাওয়ার পর ধুকতে ধুকতে ১৪০/১৫০ রান করার মত অবস্থা থেকে সিডন্স দলকে বের করে এনেছেন। সিডন্সের শিষ্য জুনায়েদ আজকেও দঃআফ্রিকায় ৯৬ রান করেছে, মোটামুটি ধারাবাহিকভাবে রান করে যাচ্ছে ইমরুল-মাহমুদুল্লারা। কিছুটা ধারাবাহিকতা এনে দেওয়ার জন্য হলেও সিডন্সের আমাদের কাছ থেকে ধন্যবাদ প্রাপ্য। ভদ্রলোকের কথাগুলোকে নিন্দা হিসেবে না নিয়ে শুভাকাঙ্খীর সমালোচনা মনে করে এগোলেই বোধ করি সার্বিকভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটই লাভবান হবে।
হ ভাই, এই ধারাবাহিকতার রেশ ধরেই ২০০৭ এর বিশ্বকাপের ৭ম অবস্থান থেকে ২০১১ এ প্রথম রাউন্ডে আউট হওয়ার চরমোন্নতি এসেছে।
ভদ্রলোক স্রেফ মিথ্যা কথা বলছেন। বাংলাদেশে পলিটিক্সের ওপরে সব দোষ চাপানোর ট্রিক্স প্রয়োগ করেছেন মাত্র। তার কনট্রাক্ট না বাড়ানোর জন্য দলের পারফর্ম্যান্স দায়ী, তিনি নিজের কাজের বিন্দুমাত্র সমালোচনা না করে পলিটিক্সের কারণে নিগ্রহের শিকারজাতীয় একটা স্ট্যান্স নিচ্ছেন। এটা মিথ্যাচার।
জুনায়েদের ৯৬ এর কথাই বললেন, তার আরেক শিষ্য স্যার আশরাফুল যে সেঞ্চুরি করলো, তার ক্রেডিট সিডন্সকে না দিলে তিনি মাইন্ড করবেন।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
রাজনীতি বলতে শুধু বোর্ডের রাজনীতি হতে হবে সেটা ধরে নিতে হবে কেন? সাকিব আল হাসান এর বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক অপপ্রচার, সংবাদ সম্মেলনের খবরকে টুইস্ট করে প্রচার, আলু/কালু পত্রিকার দ্বন্দ্বে খেলোয়াড়দের গুটি বানানো, কিছু সাবেক খেলোয়াড়দের রুটিরুজির ধান্দায় দলের মাঝে কোন্দল বানানোর চেষ্টা, এগুলো সবইতো রাজনীতি।
সাফি ভাই, রাজনীতি, মিডিয়ার ঝামেলা কোন দেশের ক্রিকেটে নাই? সবদেশেই কমবেশি আছে। এটা অবশ্যই সমস্যা; কিন্তু সিডন্সের কনট্রাক্ট না বাড়ানোর কারণ এই আলু-কালু বা পলিটিক্স না, দলের পারফর্ম্যান্স। ৫৮/৭৮ ওয়ান-অফ ব্যাপার ধরলেও বাকি ম্যাচগুলোয়ও আমরা যেভাবে খেলা উচিত, সেভাবে খেলি নাই। কেভিন আউট হওয়ার সময় আইরিশদের ওভারে ৩ রানের মতো লাগতো, ইংল্যান্ডের সাথে ইজি চেজ ট্রাক বিচ্যুত হয়ে সাফির (আপনি না, হে হে) মিরাকল ইনিংস দরকার হয়েছে, ইন্ডিয়ার সাথে শেষ ১০ ওভারে ৪৭ রান - কোচের চাকুরি নট হওয়ার জন্য এগুলোই যথেষ্ট।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
কোচের চাকরী নটের ব্যপারে দ্বিমত নাই, সে যা দেবার দিয়েছে আর বেশী কিছু দেবার নেই বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু তাই বলে অবদান অস্বীকার করার ও কিছু নাই।
যাই হোক বাবু কেমন আছে? ছবি দিয়ে পোস্ট দেন আর কী নাম রাখলেন জানা হয়নি কিন্তু।
নাম এখনো বাছাই চলছে। পিচ্চির ছবি ওই পোস্টে যোগ করে দেব।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমিও তো আপত্তিজনক বা মিথ্যা কিছু দেখলাম না....
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
মিথ্যা বলার কৌশল হচ্ছে, ৯ টা সত্যের সাথে মিথ্যাটা মেশানো। বাংলাদেশের পলিটিক্স খারাপ - সত্য। ক্রিকেট বোর্ডে পলিটিক্স আছে - সত্য। মিডিয়ায় আলু-কালুর উৎপাত আছে - সত্য। এগুলোর কারণে সিডন্সের চাকুরি রিনিউ হয় নাই - মিথ্যা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
।।।।।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সমস্যা কী? ঠিকইতো বলেছে।
উৎপল-আশ্রাফুল গং ছাড়া আর কেউ সিডন্সের উপর অসন্তুষ্ট মনে হয়নাই কখনও। সে বাংলাদেশ দলকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছে এ ক'দিনে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
অনেকদূর? কতোদূর?
৭ম -> প্রথম রাউন্ড।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
৭ম -> প্রথম রাউন্ড এই হিসেব করাটা কিন্তু ঠিক হচ্ছেনা। দুই বিশ্বকাপের ফরম্যাট কিন্তু দুই রকম। আগের বিশ্বকাপে তিন জয়, এই বিশ্বকাপেও তাই। তবে আগেরবার দুইটা হেভীওয়েট ছিল (ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা), বিনিময়ে ছিল একটা ছোট দলের(আয়ারল্যান্ড) কাছে হার। এই বিশ্বকাপের ১টা হেভীওয়েট, কিন্তু কোন ছোট দলের কাছে হার নেই।
সাফি ভাই, আগের বিশ্বকাপ দেশের বাইরে হয়েছিল। পরিবেশ বিরূপ ছিল, খেলা হয়েছে সিমিং উইকেটে। এবারের বিশ্বকাপটা কিন্তু হোমগ্রাউন্ডে ছিল। দর্শক, উইকেট, আবহাওয়া সবকিছুই অনুকূলে ছিল।
পরিবেশ বিরুপ ছিল কিনা জানিনা, কিন্তু খেলা সিমিং উইকেট এ হয়নি, স্লো উইকেট এই হয়েছে। যে দুটো বড় ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছে দুটোতেই বাংলাদেশ ৩ স্পিনার, রফিক রাজ্জাক সাকিব কে দিয়ে বোলিং করিয়েছে এবং তারাই রান আটকেছে, বিশেষ করে সাউথ আফ্রিকার সাথে ম্যাচের কথা বিশেষ ভাবে বলতে পারি। এবার দর্শক উইকেট আবহাওয়া সব যেমন অনুকূলে ছিল, তার সাথে কিন্তু বাইরের মাতবরদের এক্সেসটাও সুলভ ছিলো।
স্লো আর টার্নিং পিচের মধ্যে একটু পার্থক্য আছে মনে হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিছু কিছু মাঠে স্লো পিচ তৈরি করা হয়, তবে ওখানকার বেশির ভাগ দেশই ফাস্ট এবং বাউন্সি উইকেট তৈরি করে। সাউথ আফ্রিকার সাথে বাংলাদেশের ম্যাচটা যদ্দুর মনে পড়ছে গায়ানায় হয়েছিল, আর সেটা স্লো পিচই ছিল বটে। তবে ওই একটি ম্যাচেই বাংলাদেশ উইকেট থেকে কিছুটা সাহায্য পেয়েছিল। পক্ষান্তরে এবার বাংলাদেশ সবগুলো ম্যাচই খেলেছে নিজের দেশে, নিজেদের তৈরি করা উইকেটে। এই সুবিধাটা বাংলাদেশ হেলায় নষ্ট করেছে বলা যায়। এইখানে এসে সিডন্সের আবারও একটু সমালোচনা করতে হয়। তিনি কিউরেটরের কাছে স্পিনিং উইকেট চেয়েছেন, কিন্তু একটি ম্যাচেও ৩ স্পিনার খেলাননি। তাঁর দলে মিডিওকার প্লেয়ারের ছড়াছড়ি ছিল, এ ব্যবস্থা যে সব সময় কাজ করে না এটা তাঁর বোঝা উচিত ছিল। তবে আপনি ঠিকই বলেছেন, এবার বাইরের মাতবরদের এক্সেসটা বড় বেশি সুলভ ছিল। সেই সাথে বিশ্বকাপ-পূর্ব পারফর্ম্যান্স এবং মিডিয়ার তৈরি করা হাইপের কারণে দর্শকের প্রত্যাশাও ছিল আকাশচুম্বী। ফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে, একেবারে পপাত ধরণীতল যাকে বলে! তবে আমি নিজেও এই এক টুর্নামেন্ট দিয়ে সিডন্সের পারফর্ম্যান্স মূল্যায়ন করার পক্ষপাতী না।
পার্থক্য তো আছেই। বাংলাদেশের পিচ স্পিনিং হয়না সচরাচর, বরং স্লো হয়। এই বিশ্বকাপেও তাই ছিল, স্পিনিং ছিলোনা। আর বাংলাদেশ ৩ স্পিনার খেলায়নি কে বলল ভাই? সাকিব, রাজ্জাক সব ম্যাচেই খেলেছে এর বাইরে খেলেছে মাহমুদুল্লাহ/সোহরোয়ার্দি/নাইম/আগুনের গোলা কম্বিনেশন করে, যারা প্রত্যেকেই স্পিনার! দলে মিডিওকার খেলোয়াড় কারা ছিল আর এক্সট্রা অর্ডিনারী কারা দলের বাইরে ছিল সে সম্পর্কে জানতে ইচ্ছে করছে। তবে এই মন্তব্যে যে ক্রিকেট প্রজ্ঞার নিদর্শন দিয়েছেন তাতে আর সময় নষ্ট করতে ইচ্ছে করছেনা।
ভাল থাকবেন।
রাগ করলেন বস?
বাংলাদেশে 'সবুজ' আর 'বাউন্সি' ছাড়া সব ধরনের পিচই হয়। কখনো শুধুই 'স্লো' থাকে, কখনো যুক্ত হয় 'টার্ন' বা 'আন ইভন বাউন্স'। এক মিরপুরের ছয়টি পিচ যে ছয় রকম সেটা নিশ্চয়ই জানেন? এই বিশ্বকাপের ভারত আর আয়ারল্যান্ড ম্যাচের কথাই ধরুন না। ভারতের ম্যাচে উইকেট ছিল ফ্ল্যাট, ব্যাটে বল আসছিল ঠিকঠাকমতো, ফলে আমরা একটি বিগ স্কোরিং ম্যাচ 'উপহার' পেয়েছিলাম। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের ম্যাচে উইকেটের আচরণ ছিল একেবারেই ভিন্ন। এ যেন স্পিনারের স্বপ্নের উইকেট। আগুনের গোলাও যে ওই ম্যাচে দু উইকেট পাবে তাতে আর অবাক হবার কী আছে?
রফিক রাজ্জাক সাকিব তিনজনই জেনুইন স্পিনার। 'জেনুইন' আর 'পার্টটাইম' স্পিনার যে এক নয় সেটা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন? মাহমুদুল্লাহ/নাইম/আগুনের গোলা এরা কেউই জেনুইন স্পিনার নয়, এরাই সেই মিডিওকার প্লেয়ার, যাদের মধ্যে মাহমুদুল্লাহ ছাড়া সবাই দলের ব্যর্থতার পাল্লা ভারি করেছে। একমাত্র মাহমুদুল্লাহই ব্যাটিং রেকর্ডের (মিডিওকার প্লেয়ারদের মধ্যে সেরা ব্যাটিং অ্যাভারেজ/স্ট্রাইক রেট) কারণে প্রথম একাদশে খেলার যোগ্য ছিল, কিন্তু বেচারাকে অনেক ম্যাচে নেয়াই হয়নি! বাকি থাকে নাইম/আগুনের গোলা। তারা বিশ্বকাপে কী পারফর্ম্যান্স করেছে নিশ্চয়ই দেখেছেন? অথচ নাইম/আগুনের গোলা যে প্রথম একাদশে আসার যোগ্য নয় তা বিশ্বকাপ শুরুর একদিন আগে এই সচলেই আমি পোস্ট দিয়ে বলেছিলাম। হাজার হোক, কাঙালের কথা বাসি হলে ফলে। মাঝখান থেকে দলের তৃতীয় 'জেনুইন' স্পিনার সোহরাওয়ার্দীর জায়গা হয়নি দলে (গুরুত্বহীন হল্যান্ড ম্যাচ ছাড়া)। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন?
আরেকজন মিডিওকার প্লেয়ার নিয়েও একটু বলি। তিনি সিডন্সের পেয়ারের শিষ্য জুনায়েদ সিদ্দিক। (আবারও সেই গুরুত্বহীন হল্যান্ড ম্যাচে সুযোগ পাওয়া) শাহরিয়ার নাফীসের সাথে তার ক্যারিয়ার রেকর্ডটা একটু তুলনা করে দেখি আসেন-
-------------Mat---Inns---NO---Runs----HS-----Ave-------SR
Siddique---69-----69------5-----2134------123*----33.34------70.61
Nafees------52-----51------1------1170------100-----23.40------68.26
সিদ্দিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারকে 'অর্ডিনারি' ধরলে নাফীসের ক্যারিয়ারকে একটু 'এক্সট্রা অর্ডিনারি' কি মনে হচ্ছে না? তবুও জুনায়েদকে অগ্রাধিকার দেয়ার কারণ সে ফিল্ডিংটা ভালো করে! অর্থাৎ আবারও সেই মিডিওকার থিওরি। দলে যে কিছু স্পেশালিস্ট প্লেয়ার থাকা লাগে এটা সিডন্স কখনোই বুঝতে চাননি। প্রায় চার বছর কাটিয়ে দিয়েও ফাইনাল এক্সাম অর্থাৎ বিশ্বকাপ চলার মুহূর্তেও তাই আমরা দেখেছি দল নিয়ে, দলের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। পুরোটাই রাজনীতির খেলা নয় ভাই, ক্রিকেটটা মস্তিষ্ক দিয়ে খেলতে হয়, সিডন্স সেখানে পুরোপুরি ব্যর্থ।
আপনার সময় নষ্ট করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
আমার সেই পোস্ট : http://www.sachalayatan.com/guest_writer/37709
তথ্যসূত্র : http://www.espncricinfo.com/ci/content/player/55946.html
সংশোধনী : উপ্রের মন্তব্যে সিদ্দিক ও নাফীসের ক্যারিয়ার রেকর্ড ভুল ছাপা হয়েছে। আসলে হবে :
-------------Mat---Inns---NO---Runs----HS-----Ave--------SR
Nafees------69-----69-----5-----2134------123*----33.34------70.61
Siddique----52-----51------1------1170------100-----23.40------68.26
সময় নষ্ট করা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে আবার সেই একই কাজ করলেন। নাফিস আর জুনায়েদ এর ক্যারিয়ার গড় তুলে দিয়ে নাফিসকে বানায় দিলেন এক্সট্রা অর্ডিনারী - এই যদি আপনের হিসেব হয় আমার আর কি কওয়ার আছে? তাইলেতো ভাই জীবনে নতুন প্লেয়াররা ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ খেলতে পারবেনা। কারণ তাদের গড় থাকে ০। তারপরেও যখন ক্যারিয়ার গড়ের কথা তুলেছেন, তখন আসেন এই ক্যারিয়ার গড়(বিশ্বকাপের শুরু পর্যন্ত) থেকে আমরা ছুডু দল গুলারে বাদ দিয়া দেই। বাকী ৮টা টেস্ট খেলুড়ে দলের সাথে তুলনা করলে কি আসে দেখি -
-------------Mat---Inns---NO---Runs----HS-----Ave--------SR
জুনায়েদ 28 28 0 647 97 23.10 65.15
নাফিস 33 33 0 601 75 18.21 65.18
হায়রে আমার এক্সট্রা অর্ডিনারি নাফিস!
এবার আসি কেন বিশ্বকাপে জুনায়েদ খেলল নাফিস কেন নয়? বিশ্বকাপের আগে নাফিস জাতীয় দলে খেলেছে নিউজিল্যান্ডের সাথে সিরিজে তামিমের ইঞ্জুরির সুবাদে, তার আগে খেলেছে ২০০৮-এ। তামিম ইঞ্জুরি থেকে ফিরেছে নাফিস স্বাভাবিকভাবেই দলের বাইরে গেছে। বিশ্বকাপের আগে শেষ খেলা ৩ ম্যাচে জুনায়েদের ২টা হাফ সেঞ্চুরি আছে (জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজে)। বিশ্বকাপে জুনায়েদ খারাপ করেছে, নাফিস অস্ট্রেলিয়ার সাথে দলে ঢুকেছে তার জায়গায়। স্বাভাবিক ব্যপার।
একটা খেলোয়াড় যখন দলে থাকে, তখন কয়েক ম্যাচ ব্যর্থ হলেও তাকে সুযোগ দেওয়া হয়, মতান্তরে দলের বাইরে থেকে একটা খেলোয়াড়কে দলে ঢুকতে হলে হয় কারোর কয়েক ব্যার্থতা অথবা ইঞ্জুরির জন্য অপেক্ষা করতে হয় - দলের বাইরে সে যতই ভাল ফর্মে থাকুক বা যতই বর্ণাঢ্য ইতিহাসের অধিকারী হোক না কেন। এগুলা ক্রিকেট না যেকোন খেলারই জেনারেল নলেজ। আলোচনা চালাইতে হলে এসব নলেজ প্রয়োজন।
আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলায় পিচ স্লোই ছিল, স্পিনিং ছিলোনা। স্পিনারের স্বপ্নের উইকেট ও না। স্পিনারের স্বপ্নের উইকেটে ক্র্যাক থাকে, তাতে বল ফেলে টার্ন পাওয়া যায় সহজে। বাংলাদেশ স্পিনিং পিচ বানায় না কারণ বাংলাদেশ দলের স্পিনাররা প্রথাগত স্পিনারদের মতন বলের টার্নের উপর নির্ভর করেনা। বরং বলের পেস/বাউন্স/ফ্লাইট ভ্যারি করায়। আয়ারল্যান্ডের সাথের পিচ যে স্লো ছিল আমার কথা বিশ্বাস না হইলে সময় করে এখানে যেয়ে কমেন্ট্রি পড়ে দেখতে পারেন।
পাঁচ স্পেশালিস্ট বোলার খেলানোর যে আব্দার করেছেন সেই বিলাসিতা বাংলাদেশ এখনও করতে পারেনা। সাকিবও দলে অলরাউন্ডার হিসেবে এসেছিলো। সিডন্স-ই প্রথমে ইংল্যান্ড বা নিউজিল্যান্ড সফরের আগে বিশ্বের সেরা স্পিনার জাতীয় একটা মন্তব্য করে। এর পর থেকেই বোলার হিসেবে সাকিব আরো বিকশিত হয়। এর আগে প্রথম সাত/আট ম্যাচে বোলার হিসেবে সাকিবের পরিসংখ্যান দেখতে পারেন বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেট-এ। সাকিব যে বিবেচনায় দলে আসছে, নাঈম, মাহমুদুল্লাহরাও সেই বিবেচনায় দলে আসছে। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং এর কথা চিন্তা করেই সবসময় এখন পর্যন্ত দলে মাল্টি স্কিল্ড খেলোয়াড় রাখা হয়। মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং এর কথা বললেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তার বোলিং গুলা পারলে এক্টু দেখেন। স্পিনার হিসেবে সে যথেষ্টই ভাল।
আপনি একবার বলছেন, "জুনায়েদ খারাপ করেছে, নাফিস অস্ট্রেলিয়ার সাথে দলে ঢুকেছে তার জায়গায়। স্বাভাবিক ব্যপার।" আবার বলছেন, "একটা খেলোয়াড় যখন দলে থাকে, তখন কয়েক ম্যাচ ব্যর্থ হলেও তাকে সুযোগ দেওয়া হয়"! কয়েক ম্যাচ ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও দলে সুযোগ পাওয়ার অধিকার কি শুধু জুনায়েদেরই আছে, নাফীসের নাই? জুনায়েদ খারাপ করলে যদি নাফীস ঢুকতে পারে, তাহলে নাফীস ভালো করলে জুনায়েদ বাদ পড়তে পারে না কেন? জুনায়েদ সিডন্সের পেয়ারের শিষ্য বলে? ব্যাটিং অর্ডারের কথা বলে লাভ নেই, কারণ ব্যাটিং অর্ডার নিয়া বিশ্বকাপের মধ্যেও ফালতু সব এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছে। কাজেই জুনায়েদের আর নাফীসের ব্যাটিং পজিশন এক না এই ধরনের অজুহাত দেখানো ঠিক না।
যেহেতু এবার বিশ্বকাপটা দেশে হবে তাই বিশ্বকাপের আগে এখানে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে সিরিজগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সিরিজগুলায় সিডন্সের সামনে সুযোগ ছিল দল নিয়ে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে নেয়ার। অর্থাৎ চূড়ান্ত দল বাছাই, পাশাপাশি প্রথম একাদশ নির্বাচন এবং ব্যাটিং অর্ডারটা ঠিক করে নেয়া। কিন্তু সিডন্স এ জায়গাটাতে কতটুকু বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পেরেছেন সেটাই প্রশ্ন। জুনায়েদ বনাম নাফীসের বিষয়টা আরেকটু তলিয়ে দেখলেই কিছুটা আঁচ করতে পারবেন।
বিশ্বকাপের আগে নাফীস সর্বশেষ জাতীয় দলে খেলেছে নিউজিল্যান্ডের সাথে সিরিজে। কে ইনজুরিতে পড়েছে আর তাই সে দলে ঢুকেছে সেটা এখানে বিবেচ্য হবার কথা না। নাফীস কিছুদিন জাতীয় দলের বাইরে ছিল এটা সত্য, কিন্তু তা আইসিএল জনিত কারণে, দুর্বল পারফর্ম করার কারণে না। কিন্তু সে দলে ফিরেই আবার পারফর্ম করেছে, তবুও বিশ্বকাপের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগে আর তাকে সুযোগই দেয়া হলো না! কেন? অতীত রেকর্ডের কথা বাদ্দেন, ওই সিরিজে তার পারফর্ম্যান্স জুনায়েদের চেয়ে কোনো অংশেই খারাপ ছিল না।
আসেন ওই সিরিজে জুনায়েদের পারফর্ম্যান্স কেমন ছিল দেখি-
Runs--BF-----SR--------------Opposition--------Ground--------Date
30----- 54------55.55----------v New Zealand------Dhaka--------5 Oct 2010
14------27------51.85----------v New Zealand----- -Dhaka--------11 Oct 2010
17------14------121.42----------v New Zealand------Dhaka--------14 Oct 2010
10------10----- 100.00---------v New Zealand------Dhaka--------17 Oct 2010
আমি তো দেখতে পাচ্ছি জুনায়েদ কয়েক ম্যাচ না, এই সিরিজের সব ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছে। মাত্র একটি ম্যাচেই সে কিছুটা 'ভালো' করেছে- রান করেছে ৩০ (যদিও ৫৪ বল খেলে, তাতে কী)। টোটাল রান ৭১, স্ট্রাইক রেট ৬৭.৬২। বিশেষত স্ট্রাইক রেটটা খেয়াল করলেই বোঝা যায় রান পেতে কতটা স্ট্রাগল করতে হয়েছে বেচারাকে।
অন্যদিকে নাফীসের পারফর্ম্যান্স ছিল এ রকম-
35------38-----92.10----------v New Zealand------Dhaka--------5 Oct 2010
73------73-----100.00-------- v New Zealand------Dhaka--------11 Oct 2010
0-------1-------0.00----------v New Zealand------Dhaka-------- 14 Oct 2010
11------ 13------84.61----------v New Zealand------Dhaka-------- 17 Oct 2010
দেখতে পাচ্ছি নাফীস একটি ম্যাচে বেশ ভালো খেলেছে, ৭৩ বলে ৭৩ রান, বেশ ভালো, তাই না? আরেকটি ম্যাচে আছে ৩৮ বলে ৩৫ (খারাপ না, চলে)। জুনায়েদ শুধু সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি নাফীসের চেয়ে ভালো খেলেছে, কারণ ওই ম্যাচে নাফীস 'ডাক' মেরেছে। নাফীসের টোটাল রান ১১৯, স্ট্রাইক রেট ৯৫.২। জুনায়েদের চেয়ে বেশ ভালো, এবং নিউজিল্যান্ড টেস্ট দলই ছিল (মানে ছুডু দল না)। তবু তাকে বিশ্বকাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে দলে ঢোকার জন্য।
এইবার আসেন এক্সট্রা অর্ডিনারি বিষয়ে। শুধু নাফীস কেন, আমরা এখন পর্যন্ত একটাও এক্সট্রা অর্ডিনারি ব্যাটসম্যান পেয়েছি বলে মনে হয় না (তবে এক্সট্রা অর্ডিনারি অলরাউন্ডার পেয়েছি, যেমন- সাকিব)। তুলনাটা টানা হয়েছে স্রেফ নাফীসের রেকর্ড যে জুনায়েদের চেয়ে এক্সট্রা কিছু সেইটা বোঝানোর জন্য। বাংলাদেশ কি শুধু টেস্ট দলের সাথেই খেলবে? এই বিশ্বকাপেই দুটো ম্যাচ ছিল ছুডু দলের সাথে এটা ভেবে দেখবেন না? আর এমন না যে জুনায়েদ শুধু টেস্ট টিমের সাথেই ওয়ানডে খেলেছে, ছুডু দলের সাথে সে রান তুলতে পারে নাই সেইটাও তাহলে নাফীসেরই দোষ? এখানে আরেকটা বিষয় উল্লেখ্য, নাফীসের রেকর্ড টেস্ট ম্যাচেও জুনায়েদের চেয়ে ভালো (রানের গড় সমান, কিন্তু স্ট্রাইক রেটের দিক থেকে অনেক ভালো)।
আয়ারল্যান্ড ম্যাচে উইকেট স্পিনিং ছিল না, তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবশ্যই স্পিনবান্ধব ছিল। ওই ম্যাচের দু দিন পর আমি এই পোস্টের ১৩ নং মন্তব্যে কী বলেছিলাম দেখতে পারেন। উইকেট স্লো ছিল, আন ইভন বাউন্স ছিল, যৎসামান্য টার্নও ছিল, অন্তত বাংলাদেশে এর চেয়ে বেশি স্পিনিং উইকেট আশা করা যায় না। প্রথাগত স্পিনারদের বল টার্ন করাতে উইকেটে ক্র্যাক থাকতে হয় না, তবে টেস্ট ম্যাচে দেখা যায় কয়েকদিন খেলা হওয়ার পর কিছু ক্র্যাক তৈরি হয়, তখন হয়তো স্পিনাররা আরেকটু বেশি সুবিধা পান। বাংলাদেশি স্পিনাররা মূলত আর্ম বল করেন, তবুও সিডন্স স্পিনিং উইকেট পাননি বলে কান্নাকাটি করেছেন (আয়ারল্যান্ড ম্যাচের পরদিনের পত্রিকা দেখুন)। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন?
আর মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং বোলিং নৈপুণ্যের কথাই বললেন, সে দলে নিয়মিত সুযোগ পায় নাই কেন সে কথা বললেন না?
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
পুনশ্চ : আমার প্রশ্নগুলো মূলত সিডন্সের উদ্দেশে করা, আপনি চাইলে উপেক্ষা করতে পারেন।
নাফিস নয়, নামের বানানটা হবে নাফীস
আমার যে দুটো কথা আপনি উদ্ধৃত করেছেন তারা পরষ্পর বিরোধী নয়। দলে থাকা জুনায়েদকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, সুযোগের সদ্যবহার করতে পারেনি বলে তাকে বাদ দিয়ে নাফিস কে অস্ট্রেলিয়ার সাথে দলে নেওয়া হয়েছে।
আপনি বিশ্বকাপের দল নিয়ে প্রশ্ন করেছেন আপনার ব্লগে (বিশ্বকাপ শুরুর কয়েকদিন আগে), তাই বিশ্বকাপের আগে খেলা সিরিজ জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজের পারফর্ম্যান্স তুলনায় এসেছে। জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজের দল হলে তাতে নিউজিল্যান্ডের সাথে সিরিজ বিবেচনায় আসত।
এক্সট্রা অর্ডিনারী খেলোয়াড়ের বিষয়ে আপনি উত্থাপন করেছেন, আমি উদাহরন দেবার পরে এখন বলছেন বাংলাদেশে কোন এক্সট্রা অর্ডিনারী খেলোয়াড় নেই।
স্পিন পিচের বিষয়ও আপনি আপনার ব্লগে বলেছেন, আমি ধরিয়ে দেবার পরে এখন স্পিন বান্ধবে গেছেন।
মাহমুদুল্লাহ দলে সুযোগ পায়নাই, বাইরের রাজনীতির কারণে আগুনের গোলাকে দলে ঢুকাতে হবে দেখে। মাহমুদুল্লাহ বরং সিডন্সের অন্যতম প্রিয় খেলোয়াড়। তাকে দলে না নেওয়া হলে আপনার পোস্টের মূল বক্তব্যের বিরুদ্ধে যায়।
মন্তব্যে একাধিকবার আপনার মাঝে পিছলানোর প্রবণটা লক্ষ্য করলাম যেটা ভালো লাগেনি।
পুনশ্চ ঃ সম্প্রতি জানতে পেরেছি, সিডন্স বাংলা শিখতে ভর্তি হয়েছেন। বাংলাটা আরেকটু সড়গড় হলেই, অভ্র শিখে আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে যাবেন।
ধন্যবাদ, আপ্নিও ভালো থাকবেন।
লক্ষ করছি বারবার আপনি আমার মন্তব্যকে নিজের মতো করে অনুবাদ করে নিচ্ছেন। আগে বা পরে ব্লগে বা মন্তব্যে কোথাও আমি আয়ারল্যান্ড ম্যাচের পিচকে স্পিনিং বলি নাই (বলে থাকলে কোট করে দেখাতে পারেন), তবে আগুনের গোলার উইকেট প্রাপ্তির কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছি স্পিনারের স্বপ্নের উইকেট। আমার হয়তো বোঝা উচিত ছিল যে, স্পিনারের 'স্বপ্নের উইকেট' বলতে বাঙালি কেবল 'টার্নিং পিচ'ই বোঝে। স্লো উইকেট, আন ইভন বাউন্স এগুলোও যে স্পিনারের আরাধ্য বিষয় (অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে) হতে পারে সেটা বোঝে না। তবে স্বীকার করে নিচ্ছি আমারই ভাষিক সীমাবদ্ধতার কারণে পিচ নিয়ে এই ভুল বোঝাবুঝিটা তৈরি হয়েছে। সেজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
আর এক্সট্রা অর্ডিনারি খেলোয়াড়ের বিষয়ে আমি উত্থাপন করিনি। আপনার মন্তব্য থেকেই কোট করি, "এক্সট্রা অর্ডিনারী কারা দলের বাইরে ছিল সে সম্পর্কে জানতে ইচ্ছে করছে।" এই প্রশ্নের জবাবে আমি নাফীস ও জুনায়েদের ক্যারিয়ার রেকর্ড তুলে ধরে আপনার কাছে জানতে চেয়েছি, জুনায়েদকে যদি অর্ডিনারি ধরে নেয়া হয় তাহলে নাফীসকে এক্সট্রা অর্ডিনারি মনে হয় কি না? এর জবাবে আপনি বললেন ছুডু দলের সাথে নাফীস ভালো খেলে আর জুনায়েদ খারাপ খেলে। এই কারণে দুইজনের ক্যারিয়ার গড়ে এত পার্থক্য। এই যদি হয় আপনের হিসাব তাহলে আর আমার কী কওয়ার থাকতে পারে। তবে বলে রাখি আপনি ক্যারিয়ার গড়ের যে উদাহরণ দেখিয়েছেন তা একটি বহুল তর্কিত বিষয়, এটা আপনিই প্রথম উত্থাপন করেননি, বা আপনার কাছ থেকেই আমি প্রথম শুনিনি। সে কারণেই আমি বিতর্ক এড়াতে চেয়ে বলেছি বাংলাদেশে কোনো এক্সট্রা অর্ডিনারি ব্যাটসম্যানই নেই। তবু বারবার এই প্রসঙ্গ কেন টেনে আনছেন তা বুঝতে অক্ষম হলাম।
এখন আসি আপনার বলা কথামালাগুলায়। আপনার যে কথা দুটো আমি উদ্ধৃত করেছি তারা পরষ্পরবিরোধী। আপনার দ্বিতীয় কথার শেষ লাইনগুলো ছিল এ রকম- "দলের বাইরে থেকে একটা খেলোয়াড়কে দলে ঢুকতে হলে হয় কারোর কয়েক ব্যার্থতা অথবা ইঞ্জুরির জন্য অপেক্ষা করতে হয় - দলের বাইরে সে যতই ভাল ফর্মে থাকুক বা যতই বর্ণাঢ্য ইতিহাসের অধিকারী হোক না কেন।" নাফীস নিউজিল্যান্ড সিরিজে দলেই ছিল, তামিম ইনজুরিতে পড়ে বাইরে ছিল। তামিম যতই ভালো ফর্মে থাকুক বা বর্ণাঢ্য ইতিহাসের অধিকারী হোক না কেন তাকে দলে ঢোকার জন্য (আপনার কথা অনুযায়ী) কারোর কয়েক ব্যর্থতা অথবা ইনজুরির জন্য অপেক্ষা করতে হতো। সেটা কি হয়েছে? জুনায়েদের কয়েক ম্যাচে ব্যর্থতা ছিল, কিন্তু তামিমকে জায়গা দিতে গিয়ে জুনায়েদ নয়, বাদ পড়েছে নাফীস! এবং আপনি মন্তব্যে বারবার সিডন্সের এই অন্যায়কেই জাস্টিফাই করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আশ্চর্য!
আপনি বলেছেন, "জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজের দল হলে তাতে নিউজিল্যান্ডের সাথে সিরিজ বিবেচনায় আসত।" একজ্যাক্টলি। বিবেচনা যে করা হয়নি সেটাই আমি প্রমাণ করেছি তুলনামূলক বিশ্লেষণ টেনে (আমার আগের প্রতিমন্তব্য দেখুন)।
আপনি বলেছেন, "পাঁচ স্পেশালিস্ট বোলার খেলানোর যে আব্দার করেছেন সেই বিলাসিতা বাংলাদেশ এখনও করতে পারেনা।" অথচ আমি এমন আব্দার করিইনি। আমি ৩ জন স্পিনার খেলানোর আব্দার করেছিলাম মাত্র। সেটাকেই আপনি আপনার মতো অনুবাদ করেছেন পাঁচ স্পেশালিস্ট বোলার খেলাতে হবে। আচ্ছা দেখুন তো এভাবে সমীকরণ মেলে কি না- ৩ জন ফুলটাইম স্পিনার+১ জন পেসার+১ জন সিমিং অলরাউন্ডার+১/২ জন স্পিনিং অলরাউন্ডার= চার স্পেশালিস্ট বোলার। ব্যাটিং বোলিং দুটোই শক্তিশালী হলো, আবার উপমহাদেশের উইকেট থেকে ফায়দা তোলার ব্যবস্থাও থাকল। সিডন্স যে এভাবে দল তৈরির কথা ভাবেননি সে ব্যর্থতা কার? বিসিবির, না মিডিয়ার? সব দোষ বাংলাদেশিদের ওপরে চাপিয়ে দিলেই হবে? কিছু গ্রে ম্যাটারও থাকা লাগে ভাইয়া।
আপনি বলেছেন, "মাহমুদুল্লাহ বরং সিডন্সের অন্যতম প্রিয় খেলোয়াড়।" বুঝলাম আগুনের গোলা মিডিয়ার ইনপুট, তাহলে তিনি মাহমুদুল্লহকে বাদ দিয়ে নিয়মিতভাবে নাঈমকে দলে নিয়েছেন কেন (বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচ, অর্থাৎ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ বিবেচ্য)। মাহমুদুল্লাহর চেয়ে নাঈম কোন দিক দিয়ে বেটার? বোলিংয়ে, না ব্যাটিংয়ে?
কে যে সিডন্সের অন্যতম প্রিয় খেলোয়াড় আর কে যে নয় এখন সেটা বোঝা যাবে কীভাবে? উনি তো ঢালাওভাবে বাংলাদেশের 'পেটি রাজনীতি'র ওপর দোষারোপ করে যাচ্ছেন। শুধু মিডিয়া বা বিসিবির ওপর দোষ চাপাচ্ছেন না। বরং তিনি আক্রমণ করছেন আমাদের গোটা সংস্কৃতিকেই। আমাদের সংস্কৃতি কি এতই খারাপ যে কেউ কিছু বললে প্রতিবাদটাও করা যাবে না?
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
আপনারে কি বলছি মন্তব্যে সেইটা বুঝেন নাই। না বুঝলে প্রথমেই সেটা জিগাইতে পারতেন। আর আপনারে যখন জিগাইসিলাম এক্সট্রা অর্ডিনারির কথা তখন নাফিসের উদাহরন আপনিই দেখাইসেন। আবার এখন সিমিং অলরাউন্ডারও চাইতেছেন, জানিনা কার কথা মাথায় রেখে বলছেন।
এর বাইরে কিছু বলার নাই।
ক্যান, আধা শক্তির মাশরাফি?
আরও দুয়েকটা বিকল্প তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল চার বছরে। কিন্তু ভদ্রলোকের মাথায় সেটা থাকতে হবে তো?
@অছ্যুৎ বলাই:
আপনার অবস্থা সেই 'এক বইয়ের পাঠক'দের মত। শুধু একটা টুর্নামেন্ট দিয়েই সব বিচার করলেন শেষে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আমার অবস্থা নিয়ে বেশি টেনশন নিয়েন না। আমি সিজনাল ক্রিকেটপ্রেমী না, স্যার জেমি সিডন্সের প্রায় ৪ বছরের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে আমার মোটামুটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ধারণা আছে। তার কাজের বিচার সেটা দিয়েই করা হয়। বিশ্বকাপটা অনেকটা ফাইনাল পরীক্ষার মতো। বিশ্বকাপের আগ পর্যন্তও তার পারফর্ম্যান্স আশানুরূপ না থাকায় তার কন্ট্রাক্ট রিনিউ করার জন্য বিসিবি বিশ্বকাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বিশ্বকাপেও যে তিনি ফেল মেরেছেন, সেটাই বুঝছেন না।
এরপরে অস্ট্রেলিয়ার সাথে সিরিজে ম্যাচহারা নিশ্চিত করে ২০০ রান স্কোর করার লুজার অ্যাপ্রোচও তার জব কন্ট্রাক্ট রিনিউ করাতে পারে নি।
সিডন্সের ব্যাপারে আমার বিচারের মানদন্ড এক বিশ্বকাপ না, তার চাকুরির পুরো সময়কাল। আর আমি খেলা দেখি, শুধু বাংলাদেশ না, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটের প্রায় প্রত্যেকটা ম্যাচের সাথেই আমি বল-বাই-বল বাস করি। স্কোর কার্ডে ২০০ দেখেই উন্নতির পরিসংখ্যান তাই আমাকে ভোলাতে পারে না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সিডন্স যে সব দোষ আমাদের ওপরেই চাপাবেন, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নাই। চাকুরি রিনিউ না হওয়ার পরে ড্যানিয়েল ব্রেটিগ যেভাবে সিডন্সের হয়ে লিখে চলেছেন, তাতে বাংলাদেশের পক্ষে নোতুন কোচ পাওয়া ঝামেলার হবে। সিডন্সের বর্তমান রাজনীতি এটাই। তিনি খুব ভালো করেই জানেন, একটা বিরাট সংখ্যক বাংলাদেশি নিজেদের পুন্দে বাঁশ ঢুকলেও সিডন্সকে সমর্থন করে যাবেন, তার প্রচেষ্টার শানে নুযূল বুঝতে সক্ষম হবেন না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এইটা বুঝলাম না, সিডন্সের কি আবার বাংলাদেশের কোচ হওয়ার চান্স আছে নাকি? না থাকলে, এই "রাজনীতি" করে লাভটা কী হবে?
২য়ত, আপনার মন্তব্যের পর প্রআলো আর ক্রিকিনফোর লেখাটা আবার পড়লাম, সেইখানে সিডন্স "পলিটিক্সের কারণে নিগ্রহের শিকারজাতীয় একটা স্ট্যান্স নিচ্ছেন। " এই কথার সত্যতা পাইলামনা। নাকি অন্য কোনো লেখার কথা বলতেছেন?
Siddons told ESPNcricinfo. "I've probably said more than I should and that probably is why my job is gone. - এই বাক্য দিয়ে কি বুঝায়?
এখানে একটা জিনিস উল্লেখযোগ্য, সিডন্সের চাকুরি আসলে যায় নি, তার মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার পরে আর রিনিউ করা হয় নি। এটা নিয়ে খেদোক্তির কি আছে বুঝলাম না। তিনি ৪ বছরের মতো জব করেছেন, বিপুল পরিমাণে বেতন-বোনাস পেয়েছেন, মেয়াদ শেষ, গুডবাই। এটাকে 'জব গন' বলে কান্নাকাটির কি উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
রাজনীতি করে তার লাভ অনেক। প্রথমত, তার নিজের পারফর্ম্যান্সের বিশ্লেষণ হওয়ার আগেই আমাদের পলিটিক্স ইত্যাদির ওপর দোষ চাপিয়ে একটা আক্রমণাত্মক অবস্থানে যাওয়া। সিডন্স নিজের কাজের মূল্যায়ন করে কোনো কমপ্লিট বিবৃতি দেন নি (এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ নাকি ৪ বারের বেশি ২০০ ক্রস করার সাফল্য অর্জন করেছে - এই মিথ্যাই তার আমাদের ওয়ার্ল্ডকাপ পারফর্ম্যান্সের মূল্যায়ন); কিন্তু বোর্ড ও বাংলাদেশি পেটি পলিটিক্সের সমালোচনা শুরু করেছেন। এ অবস্থায় বোর্ড স্বভাবতই নিজেদেরকে ডিফেন্ড করতে কোণঠাসা অবস্থায় থাকবে, সিডন্সের কাজের বিশ্লেষণ জিনিসটা প্রায়োরিটি লিস্টে নিচে চলে যাবে। দ্বিতীয়ত, আমার কথা সিডন্স ভক্তদের খারাপ লাগতে পারে; কিন্তু ব্যর্থ প্রেমিক যে তাড়নায় এসিড মারে, সিডন্সও এখানে একই কাজ করছেন। বাংলাদেশের দুর্ণাম করলে আমাদের জন্য ভালো কোচ পাওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে। টু-বি কোচ বিদায়ী কোচ হিসেবে সিডন্সের মূল্যায়নকে যথেষ্ট পাত্তা দেয়ার কথা। এক্ষেত্রে দর কষাকষির ক্ষেত্রে আমরা অসুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাবো। কোচ পাওয়া গেলেও তার জন্য উচ্চ বেতন দিতে হবে, এটা নিশ্চিত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
লেখাটা কিঞ্চিত সরলীকরণ দোষে দুষ্ট। উপরে যেমন অনেকেই বলেছেন, সিডন্স যে রাজনীতির কথা বলেছেন সেটা দলীয় রাজনীতি হওয়া ছাড়াও অনেক রকমের হতে পারে। আর বিসিবি'র সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকাকালীন অনেক কথা মিডিয়ায় প্রকাশ করা নিয়ে প্রতিবন্ধকতা তার থেকে থাকতে পারে--এমন কথাও একজন উল্লেখ করেছেন।
আমার মনে হয় --টিম বাংলাদেশ, এই আইডিয়াটা সিডন্স খুব ভাল করে আমাদের দলটার মাঝে প্রোথিত করে দিয়ে যেতে পেরেছেন। যতদূর মনে পড়ে---তার সময়েই বাংলাদেশ একটা সামগ্রিক 'টিম' হিসেবে খেলতে শুরু করে। এবারের বিশ্বকাপে আমরা খারাপ করেছি--সেটা সত্যি। কিন্তু যেসব খেলায় ভাল করেছি সেগুলোর কথা তো ভুলে গেলে চলবে না। প্রায় হারতে বসা ম্যাচ জিতিয়ে নিয়ে আসার মত ঘটনা ঘটাতে পেরেছে আমাদের টিম। ৫৮ আর ৭৮ আমাদের যেমন আছে---তেমনি আছে আয়ারল্যান্ড,ইংল্যান্ডকে ধরাশায়ী করার ঘটনা। ব্যক্তিগতভাবে আমি দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার চাইতে কম করেও তিনটি জয় পাওয়া নিয়েই সন্তুষ্ট।
আমাদের ছেলেরা নিশ্চিত ভাবে উন্নতি করেছে--আর সেটার পেছনে নিঃসন্দেহে সিডন্সের অবদান রয়েছে বলে মনে করি।
সিডন্স, আপনাকে ধন্যবাদ!!
একমত।
এবারের বিশ্বকাপটা নিজের দেশের মাঠে খেলেছে বাংলাদেশ, গতবারে খেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ক্রিকেটে দেশের মাঠে খেলার সুবিধা বিশেষভাবে উল্লেখ্য, দেখে নিন উপমহাদেশের বাকি তিনটে টিমই এবার বিশ্বকাপের সেমিতে খেলেছে। সুতরাং, বাংলাদেশের কোয়ার্টারে না খেলার কারণ ছিল না। উপমহাদেশের পিচ ব্যাটিং সহায়ক, তাই চারটে ম্যাচে ২০০+ করাটা এখানে বড় কিছু নয়, বরং দুটো ম্যাচে কিভাবে ১০০-র কমে অল-আউট হচ্ছে টিম সেটাই প্রশ্ন। সুতরাং আমার কাছে বিশ্বকাপে পারফর্ম্যান্স ভাল কিছু নয়। এটা পরের বিশ্বকাপে আরও ভাল বোঝা যাবে।
তবে শুধু বিশ্বকাপ দিয়ে সিডন্সের পার্ফরম্যান্স যাচাই করতে আমি আগ্রহী নই। তার আগে দেশের মাঠে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটা ভাল সিরিজ খেলেছে, বিশেষত নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট-ওয়াশ সিরিজ শুরুর আগেও ভাবা হয়নি। বিশ্বকাপ একটা টুর্নামেন্ট মাত্র, তাতে ফেল করলেই ডাহা-ফেল এরকম কোনো মানে নেই। টিমের ধারাবাহিকতা দেখলে উন্নতিই চোখে পড়ে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
একজ্যাক্টলি। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সে দিয়ে সিডন্সের যুগকে মাপাটা ঠিক হবে না। বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত মনে হয় অপ্রাপ্তিই বেশি। তবে সামগ্রিক পারফরম্যান্সে উন্নতি চোখে পড়ে- ধারাবাহিকতার ভালো অভাব সত্ত্বেও।
পারফরম্যান্সে সার্বিক উন্নতি হয়েছে এ ব্যাপারে একমত। তবে উন্নতিটা হয়েছে মূলত বোলিংয়ে, আরও স্পেসিফিক্যালি বললে স্পিন বোলিংয়ে। সিডন্সের মূল দায়িত্ব কিন্তু ছিল ব্যাটিংয়ে উন্নতি আনা, আর এক্ষেত্রে তাকে ব্যর্থ না বললেও সফল বলতে পারছি না। উপমহাদেশের উইকেটে নিয়মিতই বড় দলগুলো ৩০০ করছে, ছোট দলগুলো হয়তো ২০০-এর আশপাশে থাকে। তাই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ৭ ম্যাচে ৪বার ২০০ করেছে বলে উৎফুল্ল হবার কিছু নেই, এই উদাহরণ কোনোভাবেই বাংলাদেশের ব্যাটিং উন্নতিকে জাস্টিফায়েড করে না, অথচ সিডন্সের বিশ্বকাপ মূল্যায়নটা এমনই। তবে এসব কিছু না, আমার কাছে খারাপ লেগেছে যেভাবে তিনি বিশ্ব মিডিয়ার সামনে বাংলাদেশকে হেয় করলেন সেটাই। এতে করে কোচিং বাজারে তাঁর দর কমবে বৈ বাড়বে না, আর বাংলাদেশও একটু বিপদে পড়ে যাবে নতুন কোচ খোঁজার ক্ষেত্রে। তাই সিডন্সের বোধ হয় আরেকটু সংযত হয়ে কথা বলা উচিত ছিল। তাঁর কিছু বলার থাকলে (এবং প্রকৃতই শুভাকাঙ্ক্ষী হলে) এই দেশে বসেই বোর্ড বা মিডিয়ার সামনে যা বলার বলতে পারতেন।
দেশে বসে সমালোচনা করলে তাকে যে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কোচ ডিডোর পথ ধরতে হতো না, তার নিশ্চয়তা আছে কি ?? ... সিডন্স যা করেছেন, খুবই স্বাভাবিক। ডেভ হোয়াটমোর আমাদের কোচ থাকাকালীন সময়ে অন্য দলের কোচ হতে চেয়েছিলেন- ভুলে যাইনি। ... আর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মানসিকতাতেই গলদ রয়েছে অনেকখানি, সেটার নিজ দায়িত্বে উন্নতি না করলে কোচ ব্রাডম্যান হলেও কিছু আসবে-যাবে না। এখন বাংলাদেশ দল একটা 'দল' হিসেবে খেলে, এটাই সিডন্সের কৃতিত্ব। ...
তবে চুক্তি নবায়নের সাথে এইসব কথার সম্পর্ক নেই। সিডন্সের এই কথাটা মেনে নিলাম না।
হ্যাঁ, যদ্দুর মনে করতে পারছি ডিডোকে বাফুফে অপমানজনকভাবে বিদায় দিয়েছিল, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই। কিন্তু সিডন্স চাইলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাঁর কথাগুলো এখানেই মিডিয়ায় বলে যেতে পারতেন। যা-ই হোক, তাঁর ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও চুক্তি নবায়ন করা হয়নি সেজন্য তিনি ক্ষুব্ধ হতেই পারেন। অন্তত ডেভ হোয়াটমোরের মতো দুমুখো আচরণ তিনি করেননি এজন্য তিনি অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। দেখা যাক, নতুন কোচ আসার পর বাংলাদেশ কেমন খেলে আর সিডন্সই বা কোচ হিসেবে কত ওপরে উঠতে পারেন। আসলে সময়ই বলে দেবে সিডন্সের আমলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের কতটা উন্নতি হয়েছে।
টিম বাংলাদেশ - এইটার বিষয়ে একমত।
সিডন্সের বকর বকর কোনমতেই ধন্যবাদ পাওয়ার দাবিদার না।
আর, আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডকে এক কাতারে ফালাইয়া দিলেন????
লাল মোহন গাঙ্গুলি (মদন লাল) থেকে শুর করে সিডন্স মোহন গাঙ্গুলি সবারই কিছু না কিছু অবদান আছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে। কেউ হয়ত প্লেয়ারদের ২৪ তলায় উঠানামা করাইত আবার কেউ ব্যাটিং এর গ্রামার শিখাইত। সিডন্স বাংলাদেশে একটা হইলেও "ব্যাটসম্যান" বানাইয়া দিয়া গেছে।
সিডন্স বাংলাদেশের জন্য এযাবতকালের সেরা কোচ। তার অবদান অনেক...কিন্তু যাওয়ার পর তিনি যা করলেন, দুঃখিত, সেটা একজন শুভাকাঙ্ক্ষীর কথা বলে মনে হলো না! তিনি এসব কথা আলু-কালুতে বলতে পারতেন, শুভাকাঙ্ক্ষী হলে তাই করতেন। কিন্তু তিনি ক্রিকইনফোতে গিয়ে এসব কথা বলার উদ্দেশ্য একটাই, নিজেকে ফেরেশতা বানিয়ে নিজের ভবিষ্যতের সুব্যবস্থা করা এবং বাংলাদেশের জন্য ভাল কোচ পেতে সমস্যা তৈরি করা। তিনি যা বলেছেন তার অনেকটাই সত্য, কিন্তু শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তিনি সেটা বাংলাদেশের মানুষকে জানালেই পারতেন...এমন শুভাকাঙ্ক্ষী থাকলে কারো শত্রুর দরকার হয় না!
কারো চাকরি চলে গেলে সে সেই কোম্পানির গুণগাণ গাইবে, এইটা মনে হয় না দুনিয়াতে ঘটে...কেউই বলে না, আমার দোষে চাকরি গেছে। তিনি যা করেছেন, সেটা আরেকটু সরেস...উনাকে এক্সটেন্ড করা হয়নি, তাই তার খেদ! আমি সিডন্সকে ধন্যবাদের সাথে বিদায়ে খুশি ছিলাম, কারণ স্থবিরতা পেয়ে বসছিল...তাকে ধন্যবাদ দিতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ নেই, কিন্তু শেষ কাজটা অন্যায় করলেন...
একটা মানুষ একটা দেশের সিস্টেমকে রাতারাতি বদলাতে পারেন না...উনি কথায় কথায় অস্ট্রেলিয়ার কথা টানেন, তারা কেমন সেটা সারা পৃথিবী জানে। চ্যাপেল এসে ভারতকে পুরো কবর দিয়ে দিয়েছিলেন...টিমে ডিভাইড এন্ড রুল জারি করে। সিডন্সও তাই করেছেন...লাকিলি সেটা খুব বেশি ক্ষতি করেনি, কারণ বিকল্পের অভাব! কারস্টেন এসে জাস্ট খেলোয়াড়দের বন্ধু হয়ে, টিম থেকে পলিটিক্স খেদিয়ে, পিঠচাপড়ে একটা টিমকে কি করে দিয়ে গেলেন! আমাদের এখন এমন একজন দরকার...
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
কারস্টেন এর হাতে শচীন, শেওয়াগ, যুবরাজ, ধোনি, জহির খান ছিল। সিডন্স এর হাতে ছিল আশরাফুল (!)। এক সাকিব ছাড়া নিয়মিত পারফরমার কম ছিল। তবে তার একটা কথা আমার ভাল লেগেছে। বর্তমানে যারা আছে তারাই আমাদের আগামী দুটি বিশ্বকাপের জন্য দলের নিউক্লিয়াস হিসাবে কাজ করবে। ঐ জায়গায় বেশি হাত না দেয়াটাই ভাল হবে।
দলে খুব বেশি পরিবর্তনের প্রয়োজন নাই, এমন কী বড় কোন পরাজয়ে অধিনায়ক বদলেরও প্রয়োজন নাই। মাশরাফিকে খেলোয়াড় বা মানুষ হিসাবে ভাল লাগলেও আমি মনে করি সাকিবকে অধিনায়ক হিসাবে রেখে দিতে হবে পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য। স্টিফেন ফ্লেমিং বা গ্রায়েম স্মিথ এর দল বেশিরভাগ সময়েই আন্ডার এচিভার ছিল, কিন্তু তাই বলে ফ্লেমিং বা স্মিথকে পাল্টানো হয়নি। এধরনের সংস্কৃতি আমাদের দলেও প্রয়োজন। একই সময়ে দলে আটজন সাবেক অধিনায়কের কুৎসিত পাকিস্তানী উদাহরণটা দেখতে চাইনা আমাদের দলে।
আপনি মনে হয় স্বপ্নহারার মন্তব্য মন দিয়ে পড়েননি। চ্যাপেলের হাতেও শচীন, শেওয়াগ, যুবরাজ, ধোনি, জহির খান ছিল। কিন্তু চ্যাপেল নয়, কার্স্টেন দেখিয়েছেন কীভাবে একটা 'দল' হিসেবে খেলতে হয়। এখানেই কোচের মাহাত্ম্য।
সিডন্স আশরাফুলকে ডন ব্রাডম্যান বানিয়েছেন। আশরাফুল একটা ভুয়া প্লেয়ার, দক্ষিণ আফ্রিকাকে পেঁদিয়ে ম্যাচ জয় করা সবই ফ্লুক। সিডন্সের কল্যাণে আশরাফুল সেসব ফ্লুকমুক্ত হয়ে মাশাল্লাহ এখন সিঙ্গেল ডিজিটের বেশি স্কোর করতে পারেন না।
বাকিটায়ও একমত। দেশের সমস্ত ক্রিকেট কার্যকলাপ বন্ধ করে দিয়ে আগামি ৮ বছরের জন্য এই দলটাকে পালন করে যেতে হবে। তাতে এরা চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবে। দেশে ক্রিকেট চালু থাকলে নোতুন নোতুন খেলোয়াড় এসে এদেরকে দলে থাকার জন্য পারফর্ম করার চাপে ফেলে দিতে পারে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সিডন্সের কথায় খারাপ কিছু মনে হয় নি। ভদ্রলোক চাকরিতে থাকতে কেন এসব বলেন নি সেটা আপনি আমি সবাই বুঝি। এখন কেন বলছেন? হোক সেটা নিজের ঝাল মেটাতে, হোক তা নিজেকে ডিফেন্ড করতে, কিন্তু আমি বলবো ভদ্রলোক যা বলেছেন তা অবশ্যি ভেবে দেখার মত। অন্যভাবে দেখলে, সিডন্স বলেই হয়তো একথাগুলো বলতে পেরেছেন। অন্যকেউ পাবলিকলি এগুলো কখনোই বলতেন না। অন্যরা শুধু বোর্ডের কাছেই এই সমস্যাগুলো তুলে ধরতেন এবং দুদিনেই কোন বায়বীয় প্রক্রিয়ায় বোর্ড তা ভুলে যেত। পাবিলিকও এগুলা ভুলে যাবে সন্দেহ নাই, তবে একটু দেরী হবে, আর কাজের সময় ঠিকই আবার মনে করিয়ে দিবে- 'সিডন্স কিন্তু এটা বলে গিয়েছিলো, এবার এটা করে দেখতে পারো'।
সিডন্সের কথাগুলো তো নতুন কিছু নয়, বলতে পারেন পুরোনো কাসুন্দিই ঘেঁটেছেন ভদ্রলোক। সদিচ্ছা থাকলে তিনি এদেশে থাকতেই কথাগুলো বলে যেতে পারতেন। তিনি বোর্ডের সামনে, বা পাবলিকলি, যেভাবেই বলতেন আপত্তির কিছুই ছিল না। কিন্তু তা না করে তিনি সেগুলো বলছেন বিশ্ব মিডিয়ার সামনে, আমার আপত্তি এখানেই। এসব কথায় বোর্ডের কতটুকু টনক নড়বে বা পরিবর্তন হবে তা বলা মুশকিল, তবে ভালো কোচ পাওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও হোঁচট খাবে তাতে সন্দেহ নেই।
সিডন্সের অবদান অস্বীকার করার কিছু নেই, তবে তার চাকরি নবায়ন না করার সিদ্বান্তও ঠিক আছে।
সিডন্সের কথা ভালো লাগলো কি খারাপ লাগলো তাতে কিছু যায় আসে না, বরং সে যে অভিযোগগুলো করেছে তার সত্যতা কতটুকু সেটাই বিবেচ্য। ক্রিকেটের স্বার্থেই অভিযোগগুলো তলিয়ে দেখা দরকার। বোর্ড থেকে বেতন নিচ্ছে এরকম কেউ বোর্ডের বিরুদ্ধে কথা বলবে এরকম হওয়ার সম্ভবনা নাই, কাজেই এই কথাগুলো চাকরি-নট-হওয়া সিডন্সের মুখ থেকেই বের হওয়ার কথা।
সিডন্সের অবদান কেউ অস্বীকার করছে না, ভাইয়া। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাঁর অবদান অবশ্যই আছে এবং সে কারণে নিঃসন্দেহে তিনি ধন্যবাদ প্রাপ্য।
কিন্তু বাংলাদেশের কিছু ছোটখাটো সাফল্যে সিডন্সের ব্যর্থতাগুলো ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। তাঁর ঘাটতি ছিল সঠিক রণকৌশলে ও দল বাছাইয়ে। ঘাটতি ছিল ব্যাটিংয়ে উন্নতি আনার ক্ষেত্রেও। ফলাফল- বিশ্বকাপে দলের খারাপ পারফরম্যান্স। আর এসব ব্যর্থতাকে আড়াল করতেই তিনি পালটা অভিযোগের তীর ছুড়তে শুরু করেছেন। তাই তাঁর অভিযোগের সত্যতা নিয়ে হয়তো প্রশ্ন নেই, কিন্তু সততার ব্যাপারে সন্দেহমুক্ত হতে পারছি না।
সিডন্সের অবদান কেউ অস্বীকার করছে না ভাইয়া। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাঁর অবদান অবশ্যই আছে এবং সে কারণে নিঃসন্দেহে তিনি ধন্যবাদ প্রাপ্য।
কিন্তু সিডন্স যে পুরোপুরি সফল হয়েছেন তাও বলতে পারছি না। এর দায় কতটুকু কথিত বিসিবির রাজনীতির আর কতটুকু তাঁর নিজের সে বিতর্কে আপাতত না যাই। কিন্তু ব্যাটিংয়ে তেমন উন্নতি না আসা এবং স্পিন উইকেট তৈরি ও ফলাফল হিসেবে পেসার না উঠে আসার দায় তিনি কার ঘাড়ে চাপাবেন? বিসিবি নিশ্চয়ই তাঁকে বাধা দেয়নি এসব করায় (নয়তো তিনি চুক্তি নবায়ন করতে চাইবেন কেন?)। মূলত তাঁর এসব ব্যর্থতাকে আড়াল করতেই তিনি পালটা অভিযোগের তীর ছুড়ে দিয়েছেন বিসিবির দিকে। এসব অভিযোগ বাংলাদেশের ক্রিকেটের মঙ্গল কামনা থেকে আসেনি, এসেছে নিজের চামড়া বাঁচাতে চাওয়া একজন কোচের মুখ থেকে।
সিডন্সের অবদান কেউ অস্বীকার করছে না ভাইয়া। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাঁর অবদান অবশ্যই আছে এবং সে কারণে নিঃসন্দেহে তিনি ধন্যবাদ প্রাপ্য।
কিন্তু সিডন্স যে পুরোপুরি সফল হয়েছেন তাও বলতে পারছি না। এর দায় কতটুকু কথিত বিসিবির রাজনীতির আর কতটুকু তাঁর নিজের সে বিতর্কে আপাতত না যাই। কিন্তু চার বছরেও ব্যাটিংয়ে তেমন উন্নতি না আসা এবং (স্পিন উইকেট তৈরি ও ফলাফল হিসেবে) পেসার না উঠে আসার দায় তিনি কার ঘাড়ে চাপাবেন? বিসিবি নিশ্চয়ই তাঁকে বাধা দেয়নি এসব করায় (নয়তো তিনি চুক্তি নবায়ন করতে চাইবেন কেন?)। মূলত এসব ব্যর্থতাকে আড়াল করতেই তিনি পালটা অভিযোগের তীর ছুড়ে দিয়েছেন বলে মনে করি। এসব অভিযোগ বাংলাদেশের ক্রিকেটের মঙ্গল কামনা থেকে আসেনি, এসেছে নিজের চামড়া বাঁচাতে চাওয়া, চাকরি-নট-হওয়া একজন কোচের মুখ থেকে। তাই এসব অভিযোগের কোনোই মূল্য নেই আমার কাছে।
ডুপ্লি মন্তব্য ঘ্যাচাং করার কোনো ব্যবস্থা নাই?
আপনারা দেখি সিডন্সকে হেভি ভালোবাসেন! ৪ বছরে একটা টেস্ট খেলুড়ে দেশের কতোটা উন্নতি হওয়া উচিত আর কতোটা হয়েছে তা দিয়েই তো সিডন্সের কাজের বিচার করতে হবে। দুইটা ব্যাটসম্যান বানাইছে, ৫ বার ২০০ করছে, এতোটা ম্যাচ জিতছে (আয়ারল্যান্ড-স্কটল্যান্ড-ব্রাজিল ইত্যাদি হিসাব কইরা), এগুলা বইলা তো লাভ নাই। এখনো বাংলাদেশ ২০০ করার জন্য খেলে, শেষ ৫ ওভারের আগে পাওয়ার প্লে নিতে পারে না- এগুলা তো কোন টেস্ট খেলুড়ে দলের লক্ষণ না।
একজন আশরাফুল কোন ব্যাটসম্যানই না বইলা উড়ায় দিলেন। সিডন্স ওরে উড়ায় দিয়া মহৎ কর্ম করিছেন। আপনি কি আশরাফুলের খেলা নিয়মিত দেখিছেন? আর সিডন্স তাকে নিয়ে যে জোকসগুলো করিছে তার খবর রাখিছেন? এতোদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সিডন্স আবিষ্কার করিলেন তাহার ব্যাট লিফটিংয়ে গোল আছে! তারপর আবারও তার পজিশন নিয়ে খেলা করতে শুরু করলেন। এমন পরীক্ষা কয়দিন করা যায়? আপনাকে যদি ১০ দিনে ১০টা মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতে হয়, আপনি কি গ্যাঞ্জাম পাকাবেন না?
আমার সবচেয়ে অবাক লেগেছে, আমাদের দেশে বিশ্বকাপ, সেটা নিয়ে দলের কোন পরিকল্পনা ছিল না। বিশ্বকাপ খেলতে এসে তাদের মনে পড়ল, আমাদের তো টু ডাউনে কেউ নাই, কি করা যায়? নামাও মুশফিককে! পাওয়ার প্লেতে পিটাবে কে? নামাও আশরাফুলকে! এগুলা তো আরো ৬ মাস আগে ঠিক করে সেভাবে খেলে খেলে সবার পজিশন ঠিক করে ফেলার কথা!!
হে হে আপনি নিজেও তো আশুকে হেভি ভালোবাসেন! আপনি সিডন্সভক্তদের চেয়ে 'সুপিরিয়র' কোন চলকে?
নতুন মন্তব্য করুন