বাহিরটা আজ দেখা হয়ে উঠেনি।হয়তো সেখানে প্রখর রৌদ্রতাপেও মানুষ ছুটে চলেছে জীবনের তাগিদে।আমার ভুবনে আমি একা আছি,নিজেতে ডুবে আছি।জানালাটা খুলে দেখি বেলা পরে আসছে।তবু বন্ধ করে দিলাম ওটাকে।থাক,একটা দিন সময় ভুলেই দেখিনা।হোক বাইরে দিন কিংবা রাত।আমি শুধু জানি,আমার এখন সময় বয়ে যাচ্ছে।দিন-রাত বুঝতে ইচ্ছে করছেনা।
আমার এখন আর বাসার কথা তেমন মনে পড়ে না।আমার রুমে ঢুকলে চারপাশের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে ইচ্ছে করে।বাসায় কথা বলতেও খুব উৎসুক হয়ে থাকি তা না।আমার বাসায় কথা বলার সিস্টেম হলো,যখন তখন ফোন দিবানা।সবসময় কথা বলার মুড থাকেনা।মাঝে মাঝে কিছু করিনা,তবুও।আমার যখন কথা বলতে ইচ্ছা করে শুধু তখন কথা বলতে হবে।আমি মিসকল দিলে আবার সাথে সাথে ফোন না দিলে ভাল লাগেনা।হাহ হাহ হা...সেটা হয়ওনা।সাথে সাথে ফোন আসে।সারাদিন চুপ করে বসে থাকি।যখন খেতে যাই,তখন শুধু সবার সাথে কথা হয়।
আমার সময় নিজে নিজে যে কিভাবে কেটে যায়...!!!কখনো মনে হয়না,কি করি...কি করি...!!!খুব যে কাজের কাজ করতে থাকি তাওনা।তাই কখনো একাকী লাগেনা।তবে মানসিক সাপোর্ট দরকার।প্রিয় মানুষগুলো যখন অচেনা লাগে,তখন সত্যিই খুব খারাপ লাগে।সবার সাথে যখন থাকি,আনন্দে থাকার চেষ্টা করি।বন্ধুদের সাথে দেখা না হলে খুব খারাপ লাগে।বাসায় গেলে শুধু এই একটা কারণে ক্যাম্পাসটাকে মিস করি।
জীবনের স্রোত যে আমাকে কোন দিকে প্রবাহিত করছে ঠিক বুঝতে পারছিনা।বাবা-মা ছাড়া এই এখানে থেকে একটু অন্যরকম লাগে।হাহ হাহ হা...বাসায় থাকলে আমার খবর ছিল...কথা বলবানা আবার...আমার দুই ভাই এর যখন কথা বলতে ইচ্ছা করে,তখন ওদের থামানো অসম্ভব!!!...ওদের মুড অফ থাকলে কথা বলা যাবেনা।কিন্তু আমার মুড অফ থাকলেও,আমাকে কথা বলতেই হবে।আর মুড রাখার সাদ্ধি নাই...আমার ছোট ভাইটা যে কি!!!...পন্ডিতটার ভাব দেখলে মনে হয় আমার চাইতে বড়ো।আমার কাজিনগুলোকে এখানে বেশি মিস করি।চোখের সামনে সবাই বড়ো হয়ে যাচ্ছে!!!...আমার কোল থেকে সারাদিন একজন নামতে চাইতোনা...সেও এখন এইটে পড়ে!!!ওকে এখনো দেখলে আমার সেই ছোট্টটাই লাগে...আহারে...দেখতে দেখতে সবাই কেমন বড়ো হয়ে যাচ্ছে...!!!আর আমি হচ্ছি বুড়ো... ..আজ কেমন জানি,নস্টালজিক হয়ে যাচ্ছি...
গ্রীষ্ম চলে এলো।ইস...বাসায় যেতে যে কি ইচ্ছা করছে!!!সব কিছু বাদ দিয়ে,মা-বাবা,ভাইদের নিয়ে গ্রামে যেয়ে কিছুদিন থেকে আসতে ইচ্ছে করছে।মাটির গন্ধ পেতে ইচ্ছে করছে।বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করছে।গ্রামে বৃষ্টিতে ভিজতে যে কি মজা!!!যে না ভিজেছে সে বুঝতে পারবেনা।ওখানে থাকলেই শুধু মাটির গন্ধটা ঠিকমতো পাওয়া যায়।আর চারপাশে এতো গাছ!!!ভিজে সব সারা।বৃষ্টি শেষ হবার পরও অনেক্ষণ বোঝা যায়না,কারণ গাছগুলো থেকে পানি পরতে থাকে।আর একটা মজার ব্যাপার হলো,একদিন বৃষ্টি হলেই চারপাশের পরিবর্তন বোঝা যায়।কোত্থেকে যে একবেলায়ই কিসব ছোট ছোট গাছ হয়ে যায়,আজব!!!আর আছে ব্যাঙ...আরে বাবা,এগুলো যে সারাবছর কোথায় থাকে!!!ডাকতেই থাকে...রাতে পাওয়া যাবে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক।গ্রামে আর একটা জিনিস খুব আশ্চর্য্য লাগে।তা হলো শিয়ালের ডাক।আমি প্রথমে শুনে ভয় পেয়ে গেছিলাম।মনে হচ্ছিলো কথাও কি কোন গন্ডগোল হচ্ছে নাকি।মনে হইছিল কোথাও ডাকাত পড়েছে,আর সবাই মিলে চিল্লাচিল্লি করছে।সত্যি...!!!অনেক লোক সমবেত হয়ে চিল্লাচিল্লি করলে যেমন আওয়াজ,আমার কাছে তেমন লাগে!!!পরে আম্মু বলে,না ওই কাহীনি...
সবকিছুই বদলে যাচ্ছে।একসময় প্রতি ঈদেই অবশ্যি বাড়িতে যেতেই হবে।তখন শুধু চাইতাম ঢাকা ঈদ করতে।বন্ধুদের সাথে থাক্তে।আরো বেশি চাইতাম টিভি'র অনুষ্ঠানগুলোর লোভে।কিন্তু ইম্পসিবল...!!!বাড়ি যেতেই হবে।আর এখন চাইলেও যাওয়া যায়না।একেক জনের একেক পরীক্ষা লেগেই আছে।নয়তো অন্য কাজ।
গ্রামগুলোও চোখের সামনে বদলে যাচ্ছে।আগের মতো আর নেই।আগেই ভাল ছিল।এখনকার গ্রামের মনুষগুলোও তেমন নেই।জীবন-যাত্রার মান এতো পরিবর্তিত হচ্ছে,যে তারা ঠিক সেটাকে ধরতে পারছেনা।ফলে সবাই জীবন বাঁচাতে ব্যাস্ত।গ্রামের ছেলে-মেয়েগুলোও এখন বখে যাচ্ছে।আগে যারা ছিল গোবেচারা।তারাই দেখা যায় নানা অকাজে জড়িয়ে যাচ্ছে।"অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডা।"...অবস্থাটা এমন,শরীরে যৌবনের উদ্দামতা আছে,কিন্তু সঠিক নির্দেশনার অভাবে সেগুলো বাজে কাজে ব্যয় করে সমাজকে চিন্তায় ফেলছে।মামলা-মোকদ্দমা এখন গ্রামের একটা বড় সমস্যা।তারা ভাবে দেশে আইন আছে।কার এতো বড় সাহস আমাকে কিছু বলে।সামান্য অযুহাতে মাম্লা।কিন্তু এর অপকারিতাটা কেও বুঝেনা।
হায়রে আমার দেশ।লিখতে লিখতে বুকে কেন জানি খুব কষ্ট লাগছে।আমাদের ভাগ্যের উন্নয়নের পথে যেসব পশু থাবা দিয়ে,আমার দেশ...আমার মাকে...ক্ষত-বিক্ষত করছে...তাদের প্রতি খুব অভিমান হচ্ছে।
মন্তব্য
'বাহির'- পয়লা শব্দে আটকে গেলাম তো...
বিরামচিহ্নের পর একটা স্পেস দিন।
সচলে স্বাগতম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ইনি তো দেখি দিব্যি নাম পরিচয় ছাড়া লিখে ফেললেন! আমাদের কি হবে! আমি যে লেখাই ছেড়ে দিলাম পরিচয় দেবার বেড়াজালে পড়ে!!
""অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডা।"...অবস্থাটা এমন,শরীরে যৌবনের উদ্দামতা আছে,কিন্তু সঠিক নির্দেশনার অভাবে সেগুলো বাজে কাজে ব্যয় করে সমাজকে চিন্তায় ফেলছে।"...বড় সুন্দর একটা কথা বলেছেন...
বাহির শব্দটা আমার আবার ভাল্লাগছে। কিছু শব্দ আমরা ঝাটায়া বিদায় করে দিছি, এইটা আমার কাছে ঠিক লাগে না লেখাটা সরল। একাধিক বিষয়ে এলোমেলো লাগতেছে একটু। কিন্তু পড়তে ভালোই লাগল। আর অভিমান কইরা লাভ নাই, পারলে লড়াই করতে হবে ...
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
নতুন মন্তব্য করুন