[ডিস্ক্লেইমার : সচলে অনেক বাঘা বাঘা ফটুরে আছে। তাদের ফটুক দেখলে অন্য ফটুক দেখতে মঞ্চায় না। তারপরেও সাহস করে আমার অ-ছবি গুলো আপ্নাদের পাতে দেওয়ার দুঃসাহস দেখাচ্ছি।]
গত আগস্টে আমরা চারজন ফেনী-নিঝুম দ্বীপ-চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি-বান্দরবন-কক্সবাজার জয় করতে বের হলাম। আমাদের পরিকল্পনার ভুলে নিঝুম দ্বীপ অদেখাই থেকে গেল। তো যাই হোক ফেনীতে বন্ধুর বাড়িতে এক রাত থেকে চট্রগ্রাম গেলাম। চট্রগ্রাম ঘুরে পাহাড়ীকা-ই চড়ে রাঙ্গামাটি। গাড়ি থেকে লেক-পাহাড় পরিবেষ্টিত রাঙ্গামাটি দেখে এক কথায় বলা চলে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। তখন ছিল রমজান মাস। পুরো রাঙ্গামাটিতে পর্যটক বলতে আমারা চারজন। রাতে থাকার জন্য পর্যটনে হানা দিলাম। আমাদের পরম দূর্ভাগ্য যে বউ ছাড়া হানিমুন কটেজে রাত্রিযাপন করতে হলো।
দুপুরে খেয়েদেয়ে রাজবন বিহার ও রাজবাড়ি ঘুরতে গেলাম।
রাতের আলোকিত রাঙ্গামাটি দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। পাহাড়ী মেনু দিয়ে রাতের খাবার খেলাম। পাহাড়ী খাবারের স্বাদ এখনো আমার মুখে লেগে আছে। রাত দশটার দিকে কটেজে ফিরে গেলাম ঝুলন্ত সেতুতে। এর মাঝেই এক পশ্লা বৃষ্টি হয়ে গেছে। চারদিক ঘন অন্ধকারে ঢাকা, শীতল বাতাস, নিঝুম নিস্তব্ধতার মাঝে সেতুতে যে রাত্রিকালীন আবহের সৃষ্টি হয়েছিল তা কখনো ভুল্বার নয়।
পরদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সোজা সেতুতে চলে গেলাম। এইরকম সুন্দর সকাল আমি খুব কম দেখেছি।
নাস্তা সেরে বোটে চড়ে সুবলং এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। এতক্ষন লেক দেখেছি মাটি থেকে। লেকের মাঝ খানে এসে মনে হল একে লেক নয় বরং সমদ্র বলা উচিত।
দুই পাশে সবুজ পাহাড় মাঝ খানে লেকের সবুজ জল, সুবলং যাওয়ার এই পথটাকে মনে হবে সবুজ স্বর্গ।
দুর থেকে সুবলং ঝর্ণা
অবশেষে সুবলং ঝর্ণা।ঝর্ণার ঠান্ডা জলে দেহ এলিয়ে দিলাম।
চঞ্চলা ঝর্ণা
পেদা টিং টিং এ দুপুরে খেয়ে শহরে ফিরে এসে কাপ্তাই ড্যাম দেখতে চল্লাম। রাঙ্গামাটি- কাপ্তাই ড্যাম নতুন রাস্তাটি এককথায় অসাধারণ। রাস্তাটির প্রতি বাঁকে বাঁকে, প্রতি চড়াই উৎরাই এ ছড়িয়ে আছে উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ।
পরী
রাঙ্গামাটি এসে এই পথে না আসলে রাঙ্গামাটি ভ্রমন অসম্পূর্ন থেকে যাবে। মামা খালুর অভাবে কাপ্তাই ড্যাম দেখা হলো না। ফেরার পথে আসাম বস্তি ব্রীজ থেকে রক্তিম সুর্যাস্তের দৃশ্য কাপ্তাই ড্যাম না দেখার কষ্টকে ভুলিয়ে দিল।
সূর্য বিদায়
রাতে ওরজিনাল লোকাল কাপ্তাই লেকের জল দিয়ে ডিনার পর্ব শেষ করে দে ঘুম।পরদিন খুব ভোরে অতি কষ্টে ঘুম থেকে উঠে বান্দরবন এর উদ্দেশ্যে যাত্রা। বিদায় রাঙ্গামাটি- স্বাগতম বান্দরবন।
লাল কমল
pronaya@yahoo.com
মন্তব্য
খুবই সুন্দর ছবিগুলো। অনেক সুন্দর। ব্রিজের ছবিটার কম্পোজিশন আরেকটু ভালো হলে দারুণ হতো।
ধন্যবাদ।
‘এমন দেশটি কোথাও খুজে পাবে নাকো তুমি----‘ ছবি গুলি খুব খুব সুন্দর!!!অনেক ধন্যবাদ!
রাঙ্গামাটি আমার খুব প্রিয় একটা জায়গা। লেকে সাঁতার কাটতে পারিনি, কিন্তু ঝাপাঝাপি করেছি। রাজবন বিহার আর রাজবাড়িতে যাওয়া হয়নি কখনও। ছবি ব্লগ ভালো লেগেছে। সেতুর ছবিটাতে কেন যেন আশপাশের ময়লা ভাবটা বেশি দেখলাম, আমার মনের ময়লার কারনে হতে পারে। পরী আর লেকের ছবিগুলো খুব ভালো লেগেছে।
ভাই এইটা তো ভাই ময়লার স্যাম্পল। আমি বুঝি না এতো সুন্দর জায়গায় মানুষ কেম্নে ময়লা ফেলে!
ভাইরে আমার বোন দার্জিলিং, ঘুম, দিল্লী-আগ্রা জয়পুর ঘুরে এসে রাঙ্গামাটি-বান্দরবান দেখতে বাহির হইছিল। ফিরা আইসা কয়, হুদাই ইন্ডিয়া গিয়া টাকা নষ্ট হইল....আমার তো স্টাডি ট্যুর থেকে আইসা মাথা পাগলা পাগলা লাগত....এ বছর নিশ্চয়ই আবারো যাবো, রাঙ্গামাটির লেক আর বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ওঠার রাস্তা...উফ স্বর্গ এর চেয়ে কোনোভাবেই সুন্দর হতে পারে না............আপনার ছবিগুলা খুব সুন্দর. তয় আমার কাছে রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত ব্রিজের তুলনায় বান্দরবানের মেঘলা'র ঝুলন্ত ব্রিজটা অসম্ভব ভাল লাগছে....
ধন্যবাদ।আসলেই সিলেট রাঙ্গামাটি বান্দরবন না গেলে বাংলাদেশ অদেখাই রয়ে যাবে।
সুন্দর সব ছবি। আরেকটু বর্ণনা দিলে ভালো লাগতো।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ।ভাইরে আমার হাত দিয়া এতোটুকু লেখা বের হবে এইটা আমি কখন চিন্তাও করি নাই। এইটুক হাবিজাবি লেখা শেষ করে পুরা ১০ মিনিট নিজেই অবাক হয়ে বসেছিলাম।
৪ নম্বর ছবিটা দারুণ! ৯ আর ১২ ও খুব ভালো লাগলো।
সুবলং ঝরণা আসলেই চমৎকার। আপনি কী সুন্দর ছবি তুলতে পেরেছেন, আমি যখন গিয়েছিলাম অনেক মানুষের ফাঁক দিয়ে এমন ছবি তুলতে পারিনি।
বান্দরবনের ছবিও দিয়েন। বান্দরবন দুর্দান্ত জায়গা!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধন্যবাদ। পর্যটক না দেখে প্রথমে এক্টু মন খারাপ হইছিল। পরে ঘুরতে গিয়ে মনে হল কেউ না থাকায় বরং ভালো হয়েছে। শান্তিমত সব কিছু দেখতে পেরেছি। বড় কথা হলো আমাদের খরচ টা অর্ধেক কমে গেছিল।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অতীত
সুবলং ঝর্নার অনেকখানি উপরে উঠে গিয়েছিলাম-অনেকখানি, সে এক রোমাঞ্চকর স্মৃতি!!
ভালো লাগল ছবিগুলো।
ধন্যবাদ। মাধবকুন্ড ঝর্ণার উপরে উঠছিলাম। এখন বয়স হয়ে গেছে তাই সাহস পাই নাই ।
পেদা টিং টিং এর কটেজগুলা রাত কাটানোর জন্য দারুন। লেকের উপর বাশের তৈরি আদিবাসী ঘর আর বিশাল বারান্দা। সঙ্গে এটাচড বাথ্রুম ও আছে। আরাম আয়েশের ব্যাবস্থাও খারাপ না। এরপর কেউ গেলে শুধু খাওয়া দাওয়া না থেকেও আসবেন। হানিমুন করার জন্য পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন এরকম চমৎকার জায়গা আর হয় না।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
পেদা টিং টিং এর কটেজগুলা দেখে আমি হতাশ। দরজা ভাঙ্গা, বেড়া কাটা, মাকড়সার জাল, বোটকা গন্ধ সব মিলেয়ে ৫ মিনিটের বেশি বসতে পারি নাই। হয়তো অফ-সিজন ছিলো বলে!
সুন্দর লাগলো ছবিগুলো। আরও দিতে থাকেন। জানিনা কবে দেশের এই প্রান্তটা এই চামড়ার চোখে দেখতে পাবো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
খুব ভালো লাগলো! আরো লিখুন।
আচ্ছা সুবলং, না শুভলং?
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
ভালো লাগছে জেনে আমারও ভালো লাগল। যতটুকু জানি সুবলং ই হবে।
সমস্যাটা হল আসলে স্থানীয়রা 'শুভলং'এর কাছাকাছি কিছু একটা উচ্চারণ করে, সঠিক 'সুবলং' এতেও সন্দেহ নাই।
নৌকার প্রথম ছবিটা অসাধারণ।
আমি গিয়েছিলাম এবার, ঝর্ণা শুকিয়ে গেছে। কাপ্তাই বাঁধ দেখি নি, এটা কি রাঙামাটির পাশেই? কীভাবে যায়?
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
নতুন মন্তব্য করুন