(ছবি ও লেখা দুটোই অত্যন্ত দুর্বল, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি কামনা করলাম।)
পরীক্ষা শেষ হল কিছুক্ষণ আগে, ২-৩ ঘণ্টা, তখন বিকেল ফিরছে। রাজ্যের ক্লান্তি কাবু করে ফেলেছে, হঠাৎ মুঠোফনে আর.বি.'র নাম ভেসে উঠল, আমরা বন্ধুমহল আর.বি. ডাকি, (এই নামের পশ্চাতেহাস অজ্ঞাতই থাক আজ!)। ও বললো চলে আসতে, টিকেট কাটতে যেতে হবে, আমি তখন বিস্ময়ঘোরে! জানা ছিল আমরা কোথাও গেলে এমনই হুঁট করে যাই।...
রাতের ট্রেন দূর পাল্লার, আমাদের পরিচিত নাগরিক জীবন অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে পিছনে ধূসরতা ফেলে, সামনে গন্তব্য এবার পাহাড়রাজ বান্দরবন, অবাধ ছুটে চলা।
প্রভাতের শুভ্রতম আলো চোখে এসে ধাঁধিয়ে দিল, জানালা দিয়ে তাকিয়ে নিজেকে সবুজে মোড়া মনে হল, এত জীবন্ত সবুজ যেদিকে দুচোখ যায় সুদূর পাহাড়ে আকাশ মিশে আছে একাকারে! মন ও চোখ মুগ্ধতার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ল। আহা কী অপূর্ব বাংলা তার স্বরূপ!!!
চট্রগ্রাম থেকে বাসে উঠেছিলাম। বান্দরবন যাওয়ার পথটা সরু, আঁকাবাঁকা, পাহাড়ের কোল ঘেসে নি:সঙ্গময়। প্রতিটি বাঁক শেষে নতুন কিছু যেন অপেক্ষা করে, বিস্ময় তখন পরতে পরতে। এত নির্মল সবুজ আর সারি সারি পাহাড় দেখে কণ্ঠরুদ্ধ হয়ে যাই।
১.
আকাশের কথা বলা হয় নি। আকাশটাকে নিজের জমিন মনে হচ্ছিল, কত উপরে উঠে গেছি এক সময়, মেঘদের সাথে যেন ভেসে যাচ্ছিলাম আকাশ ছাড়িয়ে অন্য আকাশে, এত নীল কোমলতা ছড়ানো, সাদা পেজা মেঘ স্বচ্ছ ছেড়া ছেড়া, প্রকৃতি যেন আমাদের নিজের অংশ করে নিল!!
২.
গাছগুলোও যেন অন্যরকম, বিমূর্ত কোন নকশা যেন সে তৈরী করে ফেলছে বিস্তৃত।
৩.
বান্দরবনে পৌছে সার্কিট হাউসে উঠলাম, বেশ উঁচু এক পাহাড়ের উপর সেটি, পুরো পাহাড়ঘেরা শহরটা সেখান থেকে দেখা যায়। পরদিন নীলগিরির উদ্দেশ্যে বের হলাম। পথে শৈলপ্রপাতে কিছুক্ষণ থামলাম। আমার অবশ্য সব কিছু ছাপিয়ে শুধু সবুজ আর তার পাহাড়গুলো চোখে পরছিল। (ছবিতে আমার এক বন্ধু 'দি জেনারেল')
৪.
চিম্বুক পাহাড়ে কিছুক্ষণ থেমে নীলগিরিতে পৌছালাম তখন ভর দুপুর। অনেক উচু পাহাড়, মেঘ হাতে ধরা যাবে এমন যেন। কিছু মেঘ আমাদের থেকেও নিচে ভেসে বেড়ায়, ছোঁয়া যায়। সুদূর পাহাড়ের সমুদ্রে চোখ হারিয়ে গেল। কী নয়নাভিরাম সে দৃশ্য!!
৫.
৬.
ফিরলাম এবং স্বর্ণ-মন্দিরে যাবার জন্য মনস্থির করলাম। পথে এক অনিন্দ্য সুন্দর শিশুর দেখা পেলাম, কী আন্তরিক অতিথিপরায়ণ ছিল তার পরিবার মনে পড়ে!!
৭.
স্বর্ণ-মন্দির যেন প্রকৃতার্থেই স্বর্ণময়, 'অহিংসা পরম ধর্ম' দীক্ষায় দীক্ষিত বৌদ্ধছাত্রদের ব্যবহারে চমৎকৃত হয়েছিলাম। তাদের কল্যাণ হোক।
৮.
ইনি যেন পুরো পৃথিবীর জন্য মঙ্গলবার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
৯.
এরপর রূপসিকন্যা রাঙামাটির বাঁকে পথ হারাই, এখানেও আগের রূপটিই আরো কোমল অথচ তীব্রভাবে ফিরে পাই। পরের কোন একদিন বিকেল শেষের দিকে হঠাৎ প্রকৃতি কিছুটা ম্লান হয়ে পড়ে, দূরের কাপ্তাই কৃত্রিম হ্রদ সেই বিষণ্নতা কীভাবে আঁচ করতে পেরেছিল জানি না।
১০.
সন্ধ্যায় সব ঘরে ফিরে আসে- আকাশ, মেঘ, ডানামেলা পাখি। জীবনের নি:শ্বাস গাঢ় হয়। এই অদ্ভুত মাদকতামাখা হ্রদটির কাছে ফিরে যাবার অসীম সাধ জাগে বারবার।
১১.
মন্তব্য
ছবিব্লগ ভালো হয়েছে, বান্দরবানের আবেদন সবসময়ই আলাদা। কিন্তু লেখকের নামটাই তো জানা হলনা...
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
ওরে মোস্তা-কীমকীম, ইডা এই নরাধমেরই দেওয়া। ভালা হয় নাই তাই নাম দেই নাই!!!
ভালো বললি. বিরাট ভদ্রতা মনে হইল, তোরে ।
আফসোস...রাঙামাটি গেছিলাম একেবারে ভরা গ্রীষ্মে...সবকিছু শুকিয়ে কাঠ, লেকটাও 'ডিহাইড্রেটেড' নিজেও দুই দিনে 'ডিহাইড্রেটেড' হয়ে গেছিলাম...
অসময়ে গেছিলেন দেখি ভাই, অপূর্ব সৌন্দর্য মিস করছেন, তবে আবার যাবেন, বারবার ওখানে যাওয়ার মতই জায়গা।
এ যাত্রা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি ছাড়াই পাড় পেয়ে গেলেন। ছবিব্লগ খুব ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ। এই সাধারণ ছবিকে ভালো বলছেন, এ বদান্যতা!
ছবিগুলো বেশ ভাল্লাগলো। লেখাও। কিন্তু লেখকের নাম কী?
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
অসংখ্য ধন্যবাদ। সেরকম কিছু নয় ভাইয়া।
অনুপ্রেরণা পেলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ। সেরকম কিছু নয় ভাইয়া।
অনুপ্রেরণা পেলাম।
আমার অন্য লেখাগুলো:
পড়বেন ও মন্তব্য করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
পাহাড় আর সবুজ সত্যিই মুক্তির বাঁধন খুলে দেয়!!!!
নতুন মন্তব্য করুন