মাথায় কোনভাবেই ঢুকত না, ফেইলরস কিভাবে পিলারস হয়?
তাও অনেক কষ্টে ঢুকালাম, স্কুলের দৌড় প্রতিযোগীতায় যখন শেষের দিকে প্রথম হলাম,
স্যার বলেছিলেন, ফেইলরস আর দা পিলারস অফ সাকসেস। মনে সান্ত্বনা একটাই, খালি হাতে তো আর বাড়ী ফিরি নাই, পিলারটাতো পেয়েছি। সেই আমার শুরু।
অসীমটা খুব ই দুষ্ট ছিলো, হলে কি হবে, আমি ওর অন্ধভক্ত। কত যে অনুরোধ করেছি একদিন আমাকে ওর সাথে মেয়েদের স্কুলের গেটের সামনে নিয়ে যেতে, না নিবে না, আমি নাকি কাপুরুষ। আমি অনেক বুঝালাম, যেহেতু সপ্তম শ্রেনীতে উঠেছি মাত্র, তাই আমরা এখনো পুরুষ হইনি। যেহেতু পুরুষ ই হইনি, সেহেতু কাপুরুষের প্রশ্নই আসে না। ওস্তাদ মানুষ, আমার এইসব হালকা যুক্তি ফু মেরে যখন উড়িয়ে দেওয়ার যোগাড়, শেষ রফা হলো ২টাকার বাদামের বিনিময়ে।
আশা অনেক, কিন্তু পা আর চলে না, ওস্তাদ তার সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও যখন মেয়েদের স্কুলের সামনের রাস্তা পর্যন্তই নিতে পারল না আমাকে, কপালের ঘাম মুছে বলেছিল, চিন্তা করিস না, আরেকটু বড় হয়ে নে, তখন আর এত ভয় লাগবে না। সেই বড় হওয়াটা এখনো হয়ে উঠেনি।
মফস্বলের ছেলে যখন ঢাকায় এসেছি ভর্তি পরীক্ষা দিতে, পাশে বসা ছেলেটা প্রশ্ন করে উত্তর না পেয়ে কিভাবে জানি টের পেয়ে বলেছিল ”গ্রাম থেকে এসেছ?” ঢাকা থাকি আজ এগারো বছর, এখনো আমি বুঝতে পারি না কে গ্রামের আর কে শহরের, হয়তবা কোন একদিন ঠিকই বুঝে ফেলতে পারব সেই রহস্য।
পাশের বাসার মেয়েটাকে কেমন কেমন জানি লাগত,ভাড়া বাসায় থাকার দরুন বাসা পাল্টানোর সাথ সাথে পাল্টাত পাশের বাসার মেয়েটাও, আজ না হয় কাল করে এতগুলো বছরেও কেমন কেমন লাগার কথাটা কাউকেই বলা হয়নি কখনো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাসে যখন স্যার আমাকে ষাট সত্তর জন ছেলেমেয়েদের মাঝে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন এইখানে কেন পড়তে এসেছি, হাজারো লজ্জার মাথা খেয়ে সত্যি কথাটাই বলে ফেলেছিলাম, সার্টিফিকেট টা নিয়ে টাকা রুজি করতে।
পাস করেছি বছর তিনেক হলো, এখন ভাল একটা চাকরি ই পাইনি, টাকা তো অনেক দূর।
অনেক প্রস্তুতি, অনেক পড়াশুনা করেও যখন পরীক্ষায় ভাল হতো না, মনকে বলতাম আজ না হয় কাল ভাল হবে, কেন জানি সেই ভালটা এখনো হয়ে উঠেনি, সেই কালটা আজো আসেনি, তবুও মনে মনে ভাবি ফেইলরস আর দা পিলারস অব সাকসেস।
আচ্ছা, একটা বিল্ডিং বানাতে কতটা পিলার লাগে?
কি জানি, সাকসেস টা হয়তো বিদ্যুতের লাইন, যার পিলারের কোন শেষ নেই।
Kankan
29-05-2011
মন্তব্য
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ!'
উত্তরটা আমিও খুঁজছি..
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
একটা দিয়েই বানানো যায়, আবার চাইলে হাজারটাও লাগানো যায়
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
পিলার বেশি হইলে বিল্ডিং পোক্ত হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এটা রাজনৈতিক নেতার ক্ষেত্রে ভাল যায়। নির্বাচনে ফেল করলেন, কিন্তু মন্ত্রীত্ব বা উপদেষ্টাত্ব পেয়ে গেলেন যাদুকরী উপায়ে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কিছু মানুষের আসলে কখনোই হয় না।আমরা না হয় সে দলকে আর একটু ভারী করলাম এই যা।
পিলার অনেকগুলোই হয়েছে, কিন্তু সেগুলো একের উপর আর এক উঠে সাফল্যকে উর্দ্ধমুখী করেনি বরং পাশাপাশি শুয়ে থেকে ব্যর্থতাকে প্রলম্বিত করেছে।
কোন না কোনদিন হয়ত আপনি সফল হবেন চিন্তা করার কোন মানে হয়না। জীবন তো একটাই। কতটুকু অভিজ্ঞতা আর আনন্দ সাথে নিয়ে গেলেন সেটাই সত্য প্রশ্ন। এখন মন খারাপ করে এতটুকু সময়কে বিষাদের হাতে তুলে দেবেন সুখ বড়ই কষ্ট পাবে।
শোলার পিলার দিয়ে তো কংক্রীটের ভবন তোলা যায় না। ছোট ছোট Failure কে বড় বড় Success এর পিলার ভাবলে Success বিদ্যুতের পিলার হয়ে যায় ভ্রাতা !
পিলার থাকলেই তো চলে না, কোন সারবস্তু পিলারের ফিলার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটাই আসল কথা।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
নতুন মন্তব্য করুন