শিরোনাম:: 'অপঘাত'
মনন:: রেলে যত অপমৃত্যু।
লিখিত:: ৩১ অক্টোবর, ২০০৯।
জড় দেহ প্রাণহীন তবু বাহুভাজে
চোখে পড়ে বলিষ্ঠ পেশীময় রৌদ্রদগ্ধ ধ্রুবত্বকে
আধো কালোরং ঘর্মাক্ত পশমও
ঢেকে আছে লোহার পাথরে- ব্যথা কি সে পেল?
কত ঊর্ণনাভে মায়াবী আঁচলে মায়াবিনী মা
কোমল পনিরের মত গড়েছিল নরম শরীর,
একবারও কি স্মৃতির ট্রেনে সেই অমৃতস্বর ভেসে আসে নি!
ফুরসত কি পেল না অব্যক্ত কণ্ঠে ধ্বনিটি তুলে
ঘাসের শরীরে অসংখ্য দাগ এঁকে ছুটে যাবার! কোলে
ঘুমাসক্ত নিমগাছের ডালে যেমন জোড় ঘুঘু নিঝুম,
অকস্মাৎ ঝঞ্ঝা কি আসে? দুমড়ে মুচড়ে ঘুঘুর তুলতুলে কায়!
এখানে মৃতঘ্রাণ পাই খুব রক্তে ধোয়া
রেলেকাঁটা মস্তকছিন্ন গলাটিতে
থেতলে গেছে লোহার চাকা, অপ্রতিরোধ্য
আড়াল কি আড়াল ছিল, চেতন কখন ফিরে তার, ফিরে কি?
যখন উদ্দাম যুবকটির আগুনঝরা কণ্ঠে
উৎরোল ওঠার কথা ছিল সচকিত আন্দোলনে,
স্বাপ্নিক তেপান্তরে প্রিয়মুখে চেয়ে
গোধূলি আবিরে জড়াবে বলে হাত বাড়িয়েছিল,
ছুটে গিয়েছিল পথের মুমূর্ষু শারমেয়টির কাছে
তখন কোন অবসরে মাছির চাকের মত
মানুষের চোখ ঠিকরে গলিত ধড়
থেতলে যায়, তীক্ষ্ণ নাক বেয়ে অরুণের মত
সূর্য চিকমিক করে নয়নতারায় নিভুপ্রায় দুটি পল্লব
আঙুলে রক্ত ছড়ায় রক্তের দাগ মেখে অম্লজান
নাসিকা থেকে ছুটে আসে ফুসফুস খুঁজে, পেয়ে যায়
পাথরের ধার, রেলেকাটা মস্তক! কী গাঢ় অমানিশা!
অভিমান! অপ্রাপ্তি! কোন অমানবীয় আচরণে
সে মিশে গেল একা, যেমন ছিল, পরাভূত মৃত্যুকে
হাসির প্রবাহটি কি তখন খেয়াল করেছ কেউ?
যেমন এঁকেছিল ঠিক আগে, মুহূর্তে কেটে গেল লাশ!
অসভ্য সভ্যতার বুক চিড়ে রক্তস্রোত থেকে বলি,
পৃথিবী অপমৃত্যু মুক্ত কবে আর হবে!
(কবি মৃত্যুময়)
[লেখাটি খোমাখাতার ব্যক্তিগত নোট ব্যতীত কোথাও প্রকাশিত নয়।]
মন্তব্য
নাস্তা খাওয়ার পরে চা খাওয়ার বদলে আস্ত একটা লেবু গুলে ১ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেয়েছিলাম। চা এর রিপ্লেসমেন্ট হিসাবে ভালই কাজ করছে লেম্বু ইজ ভেরী গুড টনিক
একদমই বুঝলাম না!! এ কবিতাটিতেই কি মন্তব্য করেছেন?!!!
বিষয় বৈচিত্র্য, বাক্যবিন্যাস ও শব্দচয়নে ধার আছে।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,
"অর্থের প্রবলতা বেড়ে উঠলে কবিতার সম্মোহন যায় কমে।"
আপনার এই কবিতাটিতে বোধকরি এ বিষয়টি বিবেচনা করার সুযোগ আছে। আপনার সৃজন ক্ষমতা ঈর্ষনীয়, আশাকরি আরো অনেক সম্পন্ন কবিতা উপহার পাবো।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আন্তরিক ধন্যবাদ ভাইয়া। এ আপনার ঔদার্য। কেবলি চেষ্টা করছি আরো ভালো লেখার। তবে বেশিরভাগ কবিতা লেখা হয়ে উঠে না, কল্পনায় তৈরী হয়ে কল্পনাতেই হারিয়ে যায়। আর ভাইয়া একটা শব্দ শোনার যে আগ্রহ তৈরি হল খুব, 'সম্পন্ন' এর আগে কোন শব্দটি বলেছিলেন?
কখনো কখনো কবির একটি বিশেষ শক্তির অতিব্যবহার হয়ে উঠতে পারে কবিতাবিনাশী। এখানে তাই ঘটেছে। শব্দচয়নে কবির দক্ষতা অসামান্য, কিন্তু শুধু শব্দচয়নই কবিতা নয়। আশা করি কবি এই বিষয়ে নজর রাখবেন।
ভাইয়া আপনার পর্যবেক্ষণ অনেকটাই সঠিক, কবিতাটি ছিল একটি দৃশ্যের বর্ণনা, অনেক বিবৃতিমূলক, কিন্তু অবশ্যই কবিতাটিকে নির্মেদ রাখা যেত-রাখলে ভালো হত!!!
নতুন মন্তব্য করুন