"যদি তুমি সফল হতে পারো, তাহলে ২০১৫ সালে এটা বাস্তবায়ন হবে", বলল ডেভিড। হাত মিলিয়ে যেতে যেতে বলল "আর মনে রেখো এটা কিন্তু টপ সিক্রেট। আমরা কাউকে জানতে দিতে চাই না যে আমরা এরকম কিছু নিয়ে কাজ করছি। বেস্ট অফ লাক। আশা করি তুমি সফল হতে পারবে"। আমার হার্ট বিট কি একটা মিস হলো? এত বছরের পরিশ্রম আর গবেষণা কি সফল হতে যাচ্ছে?
কি কোনো রহস্য গল্পের ডায়লগ মনে হচ্ছে? আসলে এই কথাগুলি বলছিল আমার মেন্টর ডেভিড। ওর সাথে কাজ শুরু করেছি মাত্র কয়েকদিন হলো। বড় একটা কোম্পানির রিসার্চ ল্যাবে। আর কাজটা হলো নেক্সট জেনারেশন মাইক্রোপ্রসেসর ডিজাইন করা। এত গোপনীয়তার কারণ হলো কোম্পানিগুলি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই এ এগিয়ে থাকতে চায়। আমার গ্রুপ এ আছে ছয় সাত জন। সবাই পিএইচডি করা। এই রকম অনেক গুলি গ্রুপ মিলে গবেষণা করে কিভাবে ভবিষ্যত প্রসেসরকে আরো দ্রুত করা যায়, কম তাপে কম খরচে। স্বাভাবিক ভাবেই চাকরির পূর্ব শর্ত হলো ডক্টরেট ডিগ্রী। আমি তিন মাসের জন্য কাজ করতে এসেছি ইন্টার্ন হিসাবে। আমার নিজের কোনো ডিজাইন ভবিষ্যত কোনো প্রসেসরে যেতে পারে এই চিন্তা করেই আমার হার্ট বিট মিস হবার যোগাড়।
পিএইচডি যখন শুরু করেছিলাম তখন ঠিকমত জানতাম না পিএইচডি জিনিসটা কি। কিছু দিন পরেই বুঝলাম স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি পার হয়ে এত দিনে মনের মত কিছু করার সুযোগ পেলাম। পিএইচডি একমাত্র জায়গা যেখানে যা খুশি পড়া যায়। পছন্দের বিষয় নিয়ে রাত দিন কাটায় দেয়া যায়। পড়ো, চিন্তা করো, নতুন কিছু করার চেষ্টা করো, এই হইলো কাজ। প্রচন্ড খারাপ এক স্কুলে পি এইচ ডি করি। কিন্তু ভাগ্য ভালো যে পেপার রিভিউ করার সময় কে কোন স্কুল এ পরে সেটা কোনো ব্যাপার না, কাজটা কেমন সেটাই আসল।
তাই বলে যদি মনে হয় পিএইচডি স্বপ্নের মত একটা ব্যাপার, তাহলেও সেটা ভুল হবে। পি এইচ ডি মানে বছরের পর বছর আটকে থাকা। হতাশা, পরিশ্রম আর ব্যর্থত়ার মাঝে এক দুই ঝলক সাফল্য। অনেকে মনে করে পিএইচডি এক ধরনের চাকরি, যেটা প্রচন্ড রকমের ভুল ধারণা। পিএইচডি হলো ২৪/৭ জব। যখন কোনো কাজ করছি না , তখনও মাথার মধ্যে একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থ্রেড কোনো প্রবলেম নিয়ে চিন্তা করে যায়। পিএইচডি ছাত্ররা সারা দিন রাত ল্যাবে বসে থাকে তাদের আর কিছু করার নেই এই জন্য না, বরং এই জন্য যে তারা নতুন কিছু করতে চায়, তারা যা করছে সেটাকে তারা ভালবাসে।
মন্তব্য
ভালো লিখেছেন, তবে শেষ প্যারাটা অনেকটা শুভেচ্ছা'র উপস্থাপক ডাঃ তুষারের শেষ দিকের বক্তব্যের মত লাগলো । আর লিখার শেষে নাম নেই কেন?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমি তো শুনছিলুম নাম ছাড়া লেখা নিয়ে মডুরা আরো কড়া হচ্ছেন...
পিএইচডি পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছি , খারাপ দিক তাই চেপে গেলাম।
আপনার জন্য শুভকামনা থাকলো।
ধন্যবাদ। আমি চাই আরো বেশি মানুষ রিসার্চ লাইনে আসুক যাতে তাদের সবাইকে আমি শুভ কামনা জানাতে পারি।
এ পাড়ায় (phd) নতুন এয়েচেন বুঝি দাদা, সব কিছুতেই উত্তেজিত। আপনার জন্য দুটি ছবিঃ
পুনশ্চঃ হালকা রসিকতা করলাম, মাইন্ড খাবেন না প্লিজ। মাইন্ড খেলেও ক্ষমা করে দেবেন, কেননা আমি একজন হতাশাগ্রস্হ সিনিয়র phd ছাত্র যার উত্তেজনা সব ধয়ে মুছে গেছে। পরিশেষে আপনার শুভ কামনা করছি।
/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।
আমিও আসলে সিনিয়ার ছাত্রী, একাডেমিক ভাষায় ABD (All About Dissertation)
সরি, all-but-dissertation
আমার শুধু মুভি দেখতে ভাল লাগে আর আমার বাপ মায়ে চায় আমি পিএইচডি করি। আমার জন্য কি দাওয়াই ???
কিডিং এনিওয়ে , শুভ কামনা
কোনো কালজয়ী মুভি বানায় ফেলেন, আপনার জন্য ও শুভ কামনা
phdcomics-ই তো মুভি বানাচ্ছে - http://www.phdcomics.com/movie/
আমি আমার পি এইচ ডি অফার ফেলে দিয়েছি
প্রথমেই ডিরেক্ট পি এইচ ডি অফার ছিলো, সেটা পালটে এম এস সি নিলাম। তারপরে গুরু বড্ড জ্বালাচ্ছিলেন এটাকে এম এস সি লিডিং টু পি এইচ ডি নেয়ার জন্য, কোনমতেই রাজি হইনি।
আমার পি এইচ ডি করতে মুন চায় সান চায় । কিন্তু ইদানিং পড়াশোনা বিষ লাগছে একদম । আতঙ্কে আছি কবে মেন্টর বাবাজি কানটি ধরে চাঁনটি দেখান
যা ভালো লাগে তা করা উচিত, এইটাই আসল কথা
পিএইচডি = পারমানেন্টলি হেড ড্যামেজড্ ... ... কাজেই বেশি কিছু বলার থাকতে পারে না।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
বাংলাদেশের জনসংখা হিসাবে অনেক মানুষের রিসার্চ লাইন ভালো লাগার কথা, তাদেরকে অনুপ্রানিত করার চেষ্টা করছি।
এই Fall এ যাচ্ছি পিএইচডি করতে।কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের কিছু লেখা পড়ে ভয় লাগছে..
পছন্দের বিষয় খুঁজে নেবেন, ভালোলাগার কাজ কে কাজ মনে হয় না
গুডলাক আপনার রিসার্চে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
ধন্যবাদ
আমার মতো মূর্খ্যর কাছে পিএইচডির কোনো দামই নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমি নাই। এক বন্ধুর মাথা আউলাই গেছে এবং খুব কাছ থেকে দেখেছি গবেষনার কাজ। তাই ঐ লাইনে নাই আপাতত। ভবিষ্যতেও হবে না আশা করি।
ভাতের জন্য কামলা খাটি।
পিএইচডি তে আমার গবেষনা ছিল ল্যাব বেইসড। চার বছর ধরে ইচ্ছা মত ল্যাবের জিনিষ-পত্র ভাঙলাম। প্রফেসর যখন দেখল যে এই ব্যাটাকে বেশীদিন রাখলে আমার ফান্ডের লাল বাতি জ্বালায়া দেবে, ডিগ্রী দিয়ে বের করে দিল। বের করার সময় জিগাইল সাহোশি আমার তত্ত্বাবধানে পিএইচডিতে কি শিখলা। আমি কইলাম, মেলা কিছু শিখছি, ল্যাবের কোন জিনিষ কত সহজে ভাঙা যায়, এইটা আমার চেয়ে ভালো খুব কম লোকই জানে। আমার কথায় প্রফেসর মনে হয় একটু রুষ্ট হইল। আমি জিগাইলাম, কি প্রফেসর আমার কথায় ,মনে হয় মাইন্ড খাইছ? প্রফেসর কয় খাইছিই তো। এতদিন মনে করতাম আমিই একমাত্র ব্যক্তি এই দুনিয়ায় যে ল্যাবের জিনিষ-পত্র ভাঙায় অদ্বিতীয়। আিজ আমার একজন কম্পিটিটর আইসা পড়ল মার্কেটে।
নতুন মন্তব্য করুন