No one killed Jessica এবং আমাদের রুমানা মঞ্জুর

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০১/০৭/২০১১ - ১১:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কিছুক্ষণ আগে No One Killed Jessica ছবিটা দেখা শেষ করলাম। ছবিটি যারা দেখেননি বা এর কাহিনী সম্পর্কে যারা জানেন না, তাদের জন্য বলছি - ছবিটিতে জেসিকা নামের একজন মেয়েকে হত্যার পরের কিছু ঘটনা দেখানো হয়েছে যেখানে হত্যার ঘটনার সময় চাক্ষুষ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও হত্যাকারীর বাবা একজন ক্ষমতাশালী এমপি হওয়ার কারণে অর্থ ও ক্ষমতার দাপটে ঘটনার চাক্ষুষ সকল সাক্ষী আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়, যার ফলে জেসিকার হত্যাকারী ছাড়া পেয়ে যায়। মিরা নামের এক সাংবাদিকের উদ্দ্যেগের ফলে পরে জেসিকার হত্যাকারীর শাস্তি নিশ্চিত হয়, তাও ঘটনার ছয় বছর পর।

ছবিটা দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথমভাগে দেখানো হয়েছে কিভাবে অর্থ ও ক্ষমতার কাছে কোন দেশের আইন-আদালত, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নুব্জ হয়ে থাকে সবসময়। একজন প্রভাবশালী এমপির সন্তান হওয়ার কারণে ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষীদের অর্থের লোভ বা বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কিনে নেয়া হয়, যার ফলে হত্যাকারী নিষ্কৃতি পেয়ে যায়। ছবির দ্বিতীয় ভাগ এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এক অকুতোভয় সাংবাদিকের সাহসী উদ্দ্যেগের ফলে সারা দেশের মানুষের বিবেক জাগ্রত হয়, যার ফলশ্রুতিতে খুনী অবশেষে সাজা পায়।

ছবিটি দেখতে দেখতে কেন জানি আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রুমানা মঞ্জুর-এর কথা বারবার মনে পড়ছিল। রুমানা'র সাথে যা ঘটেছে , তার সাথে ছবির ঘটনার অনেকটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও ছবিতে জেসিকা মারা যায় আর বাস্তবে আমাদের রুমানা ম্যাডাম জীবিত আছেন। কিন্তু রুমানা জীবিত আছেন ঠিকই, যে পরিস্থিতিতে এখন তিনি আছেন, দুই চোখের দৃষ্টি চিরজীবনের জন্য হারিয়ে এবং মুখমন্ডলের বিকৃত অবস্থা নিয়ে, তিনি আদৌ বেঁচে থেকে ভাল আছেন - এ কথা কি আমরা বলতে পারি? ছবির কাহিনীর মতই এক্ষেত্রে রুমানার ওপর নারকীয় যজ্ঞ চালনাকারী কুখ্যাত সাঈদ শুধুমাত্র প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয় হওয়ার কারণে ঘটনার এতদিন পার হওয়ার পরও এখনও বারবার শুধু তাকে রিমান্ডেই আনা হচ্ছে, তাও অনেকদিন পার হয়ে গেল - সংবাদমাধ্যমে ঐ ব্যাপারে আর কোন খবর খুঁজে পাওয়া যায়না। জেসিকার খুনীর মতই সাঈদও একসময় অর্থ ও ক্ষমতার দাপটে ছাড়া পেয়ে একসময় লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যাবে আর আমাদের কিছুই করার থাকবেনা - এ কথা কি আমরা এখন দিব্যদৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছিনা? ছবিটার দ্বিতীয়ভাগের কাহিনীর মত কি আমাদের দেশে ঠিক তেমনই জনমত গড়ে তোলা সম্ভব, যার কারণে আদালত বাধ্য হবে সাঈদ নামের ঐ নপুংসক কে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে?

আমাদের দেশের বাস্তব অবস্থা চিন্তা করলে সেরকম জনমত গড়ে ওঠার আশাটা দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু ভাবা নির্বুদ্ধিতারই নামান্তর। '৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকেই নোংরা ও কলুষিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা এখন এমন বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, ফোঁড়াটি আমাদের সারাজীবনই দেহের একটি অংশ হিসেবে বয়ে বেড়াতে হবে, এর কোন উপশম নেই, হতে পারেনা। অর্থ ও ক্ষমতার দাপটে বড় বড় অপরাধীরা ধীরে ধীরে ছাড়া পেয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যায় আর রুমানা মঞ্জুর -এর মত আরও শত শত নারী আমাদের দেশে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়ে হয় একসময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, নাহয় স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত নির্যাতনের দুঃসহ স্মৃতি মাথায় নিয়ে বেঁচে থাকে।

এই বেঁচে থাকাটি কি আসলেই সত্যিকার অর্থে বেঁচে থাকা?

উন্মাদ_নাঈম


মন্তব্য

রনিম এর ছবি

আচ্ছা, মানবজমিন পত্রিকায় ২৪তারিখে একটা নিউজ আসছে, তাতে রুমানা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্বীকার করছে নাভিদ নামের ঐ ইরানী যুবকের সঙ্গে সে নিয়মিত আইস স্কেটিংয়ে যেত। এই খবরটার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কখনো?
সাইদের অপরাধের জাস্টিফিকেশন করছিনা, কিন্তু পরকীয়া প্রেমও মেনে নেয়া যায়না। বলতে পারেন আইস স্কেটিংয়ে গেলেই পরকীয়া হয়ে গেল নাকি? কিন্তু প্রশ্ন হল, শুরুতে তো নাভিদের অস্তিত্বকেই কেউ বিশ্বাস করতে চাইছিলনা। এটা পুরোটাই একটা পারিবারিক কলহ, কিন্তু কতিপয় গড্ডালিকায় ভাসা সুশীলদের আচরণে মনে হচ্ছে নারী-পুরুষ ইস্যুটাই সবকিছু। এইধরনের স্ট্যান্টবাজিকে ধিক্কার জানাই। সাইদের বিচার চাই, তবে সেটা অপরাধী হিসেবে; সেইসঙ্গে রুমানার প্রতিও ঘৃণা, নো মার্সি।

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

সেইসঙ্গে রুমানার প্রতিও ঘৃণা, নো মার্সি।

আপনার এই মন্তব্যে ধিক্কার জানানোর উপযুক্ত শব্দ খুঁজে পেলাম না!!! শেইম, শেইম!!!!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সাইদের অপরাধের জাস্টিফিকেশন করছিনা, কিন্তু পরকীয়া প্রেমও মেনে নেয়া যায়না। বলতে পারেন আইস স্কেটিংয়ে গেলেই পরকীয়া হয়ে গেল নাকি? কিন্তু প্রশ্ন হল, শুরুতে তো নাভিদের অস্তিত্বকেই কেউ বিশ্বাস করতে চাইছিলনা। এটা পুরোটাই একটা পারিবারিক কলহ, কিন্তু কতিপয় গড্ডালিকায় ভাসা সুশীলদের আচরণে মনে হচ্ছে নারী-পুরুষ ইস্যুটাই সবকিছু। এইধরনের স্ট্যান্টবাজিকে ধিক্কার জানাই। সাইদের বিচার চাই, তবে সেটা অপরাধী হিসেবে; সেইসঙ্গে রুমানার প্রতিও ঘৃণা, নো মার্সি।

আপনি এই নোংরা কমেন্টটা নিজে আরো একবার পড়েন। তারপর বলেন ঠিক কী বলতে চাইছিলেন।

(উন্মাদ_নাঈম) এর ছবি

কাক একটা পাখি, আর মানবজমিনও একটা পত্রিকা হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি

অপছন্দনীয় এর ছবি

'পারিবারিক' মানে কী জানা আছে আপনার? ফ্যামিলি ভায়োলেন্সকে ফ্যামিলি ইস্যু বলার মত মেরুদন্ডহীন জানোয়ার কম দেখিনি আজ পর্যন্ত, সেজন্যই আপনাকে দেখে অবাক হচ্ছি না।

সাবিহ ওমর এর ছবি

"...সেইসঙ্গে রুমানার প্রতিও ঘৃণা, নো মার্সি।"

কিছু মানুষকে হাত-পায়ে শেকল পরিয়ে রাখা জরুরি।

anik এর ছবি

ধরে নিলাম পরকীয়া প্রেম করতেন। তার জন্য দুই চোখ নস্ট করে দিতে হবে? পরকীয়া প্রেম এইখানে ইস্যু হয় কিভাবে? একজন মানুশ তার দুই চোখ হারাইসে। এর পরেও "ঘৃণা, নো মার্সি" ? আপনি কি মানুশ না অটোমেটেড স্প্যামবট?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মানুষ কখনো কখনো একটা জানোয়ার। তাই এক জানোয়ারের প্রতি আরেক জানোয়ারের সহমর্মীতা দেখে অবাক হলাম না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এই মন্তব্যটা স্টিকি করা হোক হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মির্জা এর ছবি

Either Ranim himself is the monster called Syaeed or he is simply another moster waiting for an opportunity to be a Sayeed, in both instances- you’re

অন্তিম এর ছবি

শুধু শিক্ষিকা রুমানা নয় এরকম অজস্র রুমানার কাহিনী আমাদের দেশে চাঁপা পড়ে যায়। আমি নারীপুরুষ ভেদে বলছি না। আমাদের দেশে যদিও আমরা স্বাধীন বিচারবিভাগ পেয়েছি তবুও জনগনের মনে প্রশ্নবিদ্ধ এই বিচারবিভাগ।
সত্য কথা বলতে কি আমরা নামধারী গনতন্ত্রের দেশে বাস করছি কিন্তু গনতন্ত্রের কোন প্রতিফলন নেই।

আমি দোয়া করি দুজন যেন মারা যায় খুব শীঘ্রই তবে যদি দেশের একটি পরিবর্তন হয় :)।

(উন্মাদ_নাঈম) এর ছবি

কোন দুইজনের কথা বলছেন খোলাষা কৈরা কৈলে একটু সুবিধা হৈত চোখ টিপি চোখ টিপি চোখ টিপি

দুর্দান্ত এর ছবি

রুমানা আপনার 'ঘৃণা, নো মার্সি' পেয়ে গেল কারন বিডিনিউজ ছাপিয়েছে যে সে পরপুরুষের সাথে স্কেটিং করতে গেছে। এত সহজে ঘৃণা জেগে গেলে তো ভাই মানুষ হবার দরজাগুলো সহজেই হারিয়ে ফেলবেন। আক্রান্তের প্রতি আরেকটু কম ঘৃণা করতে শিখুন, পরকিয়ার সন্দেহে যে পশু স্ত্রীর দৃষ্টিশক্তি হনন করে সেও যে ঠিক এই ধরনের ঘৃণা থেকেই কাজটি করেছে সেটা বুঝে নিন, ও শেষমেশ একজন আক্রান্ত মানুষের দ্রুত আরোগ্য ও সে যেন সুবিচার পায় সেই কামনার মাধ্যমে নিজে মানুষ হবার পথে প্রথম পদক্ষেপ নিন। সুম্মা আমিন।

(উন্মাদ_নাঈম) এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

লীন মরিসন এর ছবি

ঠিক বুঝলাম না!! গোয়েন্দা পুলিশ কি রুমানাকে এই সব প্রশ্ন করছে নাকি?! কোথাকার ছাগল এগুলা!! রনিম, আপনার মন্তব্যে বিস্মিত হইনি মোটেও। এরকম কিছু কমেন্ট কিছু মানুষের কাছ থেকে আসবে, এরকম আশাই করছিলাম আসলে।

বন্দনা কবীর এর ছবি

আমাদের দেশের বাস্তব অবস্থা চিন্তা করলে সেরকম জনমত গড়ে ওঠার আশাটা দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু ভাবা নির্বুদ্ধিতারই নামান্তর।
এটা আমিও বিশ্বাস করি এখন।

রুমানা মঞ্জুর ইস্যুতে " সাপোর্ট গ্রুপ ফর রুমানা মঞ্জুর" নামে একটা গ্রুপ কাজ করছে। তারা একটা পিটিশনে সই নিচ্ছে জনমত তৈরী করার জন্য। এটা নিয়ে উচ্চ মেধাযুক্ত অনেকেই প্রশ্ন করছেন, প্রধানমন্ত্রির সমিপে পিটিশন নাজেল করলে কি লাভ হইবে? প্রধানমন্ত্রি কি বিচার করবে?"
তার উপরে গোঁদের বিষফোঁড়ার মতন সর্বোপ্রথম মন্তব্যকারীদের মতন চিন্তাশৈলীর মানুষ(!) তো আছেনই ভুরি ভুরি।
সংবাদ মাধ্যম গুলো এর মধ্যেই রুমাকে ভুলতে বসেছে। শুধুমাত্র মানবজমীন টাইপের পত্রিকারগুলো কেচ্ছা কাহিনী দিয়ে কাটতি বাড়ানোর ধান্দাতেই ইস্যুটাকে জীইয়ে রেখেছে। কি আর বেশি আশা করতে পারি আমি বা আপনি?
জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে আছেন রুমানা। বাংলাদেশের রুমানারা জেসিকাদের ভাগ্য নিয়ে জন্মায় না। তারা জন্মায় লোকের ঘৃনা আর নো মার্সি নিয়ে অন্ধকারে বেঁচে থাকার জন্য।

(উন্মাদ_নাঈম) এর ছবি

ধন্যবাদ, আপনার মনোভাব সম্পূর্ণ আমার সাথে মিলে যাচ্ছে। আসলেই আমাদের কিছুই করার নেই, রুমানা জেসিসকার মতো সৌভাগ্য নিয়ে আসেননি।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

নাঈম আমার কিছু বলার নেই তেমন। আমরা থাকবো, আবার রনিমের মতো মানুষেরাও থাকবে। সাঈদ থাকবে কিন্তু সব যুগেই। একবার সে জিতবে আর একবার হয়তো আমরা। কিন্তু আমরা মানুষ হবো না! মন খারাপ

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

(উন্মাদ_নাঈম) এর ছবি

হুমমম..........

রাতমজুর এর ছবি

নাঈম ভাই, একটা জিনিষ উল্লেখ করি, সাংবাদিক কিন্তু একটা হট স্টোরির জন্যেই প্রথমে ঘটনাটা নিয়ে নামে, যতদুর মনে পড়ে, তাই না? এইটাই খারাপ, আজকে রুমানা ম্যাডাম থেকে শুরু করে সবাইকেই মিডিয়া দু'দিনের জন‌্য হাইলাইট করছে পরদিন তাদের কাটতি বাড়াতে আবারো অন্য কিছু হাইলাইটেড। আমরা যতদিন স্থির না হতে শিখবো, ততদিন এসব করে এরা পার পেয়েই যাবে।

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

স্থির হবার জন্য আমাদের কি করার আছে? যতদিন পর্যন্ত না ঐসব মন্ত্রীদের ছত্রছায়ায় অপরাধীরা থাকবে, ততদিন আমরা কি-ই বা করতে পারি?

উন্মাদ_নাঈম

এম আব্দুল্লাহ এর ছবি

শুধু নারীরাই যে কেবল নিপড়িত- নির্যাতিত তা কিন্তু নয়, সাইদের মতো উ‍ৎপীড়ক নারী ও কিন্তু সমাজে রয়েছেন। গতকালকের প্রথম আলো'তে হয়তো অনেকেই দেখে থাকবেন পাবনায় কিভাবে একজন বিশ্বাসঘাতক স্ত্রী তার স্বামীকে ঘুমন্ত অবস্থায় ছেলেবন্ধুর সহযোগীতায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে । তারপর, মোশারফের লাশ বস্তায় ভরে গুম করারও চেষ্টা চালায় তার স্ত্রী বিউটি । স্ত্রী'র পরকীয়ার কথা চাউর হয়ে গেলে সৌদী-ফেরত স্বামী লোক-লজ্জার ভয়ে স্ত্রীকে নিয়ে পূর্বের বাসা বদল করেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি । রবীন্দ্রনাথের ভাষায় সাইদের মতো বিউটি র প্রতি "তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে" ।

এম আব্দুল্লাহ

অপছন্দনীয় এর ছবি

আছে - এমনকি আমার পরিচিতর মধ্যেই আছে।

প্রতিটি সমাজেই এই ধরনের কিছু ঘটনা থাকে। কিন্তু ধর্ম আর সামাজিক রীতির সমর্থন নিয়ে আমাদের দেশে নারী নির্যাতন রীতিমত বলা যায় একটা প্রথার রূপ নিয়েছে - সমস্যাটা সেখানেই। রুমানা মঞ্জুরের ঘটনাটাকে আমি স্রেফ একটা ঘটনা হিসেবে দেখতে রাজি নই, বরং এই ঘটনাটা যুগ যুগ ধরে চলে আসা ধর্মীয় এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর ফল। এবং সেই একই দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে নারী নির্যাতন বলা যায় একটা আটপৌরে সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে দিনদিন। এমনকি এটা যে অপরাধ সেই বোধও অনেকের নেই - আমার আশঙ্কা এবং সমস্যার শুরু এখানেই।

অন্যদিকে পুরুষের প্রতি পারিবারিক নির্যাতন কোথাও নেই এমন নয়, কিন্তু সেটা এখনো এরকম প্রথার রূপ নেয়নি - ভবিষ্যতে নেবে এমন সম্ভাবনাও আছে বলে মনে হচ্ছে না। "অনেক" পুরুষ মনে করে বিয়ে করা মানেই স্রেফ নিজের ইচ্ছাধীন একটা দাসী কিনে নিয়ে আসা, যে সর্বক্ষেত্রে তার চেয়ে পশ্চাদপদ এবং তার একান্ত বাধ্য থাকবে। এই ব্যাপারটা কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে একই নয় - তাঁদের মধ্যে কেউ বিয়ে করা মানে নিজের দাস কিনে নিয়ে আসা যদি মনে করেও থাকেন, তার সংখ্যা একটা দুইটার বেশি হবে বলে মনে হয় না।

নারী নির্যাতন বর্তমান সমাজের মূলধারার সাথে একই রাস্তায় হাঁটে আর পুরুষ নির্যাতন চলে তার উলটো পথে। আপনার উদাহরণগুলো প্রচলিত রীতির উল্টো - আর নারী নির্যাতন প্রচলিত রীতির ফলাফল। এই কারণেই বর্তমানের সাপেক্ষে আমি রুমানা মঞ্জুরের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করি না, কিন্তু আপনার দেয়া উদাহরণগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলতে পারি। এবং একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা "একই সময়ে" একটা সামাজিক সমস্যার সমান মনোযোগ দাবী করে না।

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

চলুক

এম আব্দুল্লাহ এর ছবি

যদি ও আপনি লিখেছেন "ধর্ম আর সামাজিক রীতির সমর্থন নিয়ে আমাদের দেশে নারী নির্যাতন রীতিমত বলা যায় একটা প্রথার রূপ নিয়েছে - সমস্যাটা সেখানেই"; আসলে এ সমস্যাটা শুধু আমাদের দেশের না, বিশ্বের বহু দেশেই আছে। বরং, বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে অনেক দূর এগিয়েছে। সামাজিক উন্নয়নের সাথে সাথে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটেছে।
আমাদের দেশে আইনী কাঠামোটা অনেকটাই নারীর অনুকুলে। পারিবারিক আইনের সংস্কার করা হয়েছে নারীদের অনুকুলে। পারিবারিক আদালতের বিচারকরা প্রায় সবাই নারী। নারী নির্যাতন রুখতে করা আইনের ধারাগুলো বেশীরভাগই জামিন অযোগ্য। এই সুযোগে এক শ্রেণীর নারীরা পুরূষদের একহাত দেখে নেওয়ার প্রয়াস পেয়েছেন। যার ফলে মামলাজট বেড়েছে এবং বিবাদী স্বামী যারা অনেক ক্ষেত্রেই দোষী নন তারা হয়রানির শিকার হয়েছেন। "আইনি প্যাঁচে ঝুলছে নারী নির্যাতনের মামলাগুলো" শীর্ষক একটি রিপোর্ট বিডিনিউজে (http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=159761) প্রকাশিত হয় তাতে ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি মোহাম্মদ ফোরকান মিয়া বিচারের জন্য ১৮০ দিন সময় বেঁধে দেওয়ার বিরুদ্ধে তার মত প্রকাশ করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে অনেক 'মিথ্যা' মামলাও হয় বলে দাবি করলেন অনেক আইনজীবী। এ সংক্রান্ত অনেক মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী বদিউল ইসলাম তপাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এ আইনে দায়ের করা অধিকাংশ মামলা মিথ্যা। কিন্তু মিথ্যা মামলার শাস্তি নেই। এ আইনের ১৭ ধারায় মিথ্যা মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত ঢাকার আদালতে মাত্র আট থেকে ১০টি মামলায় বাদির শাস্তি হয়েছে।"
আমিনুল গনি বলেন, "এটা ঠিক যে অপহরণ ও যৌতুকের কারণে, মারধর ও যৌতুকের কারণে, হত্যার অপরাধের এ আইনের ৭ এবং ১১ (খ) ও (গ) ধারার মামলার অধিকাংশই মিথ্যা। সুতরাং ওই অপরাধের মামলাগুলো আমলে নিতে বিচারকদের যে পরিমাণ যতœবান ও মনোযোগী হওয়া উচিৎ, সে পরিমাণে তারা মনোযোগী হন না। যে কারণে বেড়ে যায় মামলার সংখ্যা। আর মিথ্যা বলে এর সাক্ষীরাও মামলা প্রমাণ করতে তৎপর থাকেন না। মামলাগুলো বছরের পর বছর ঝুলে থাকে বিচারের অপেক্ষায়।"
আপনি পুরূষ নির্যাতনকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলছেন। কিন্তু, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকার পাঁচটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে প্রায় ৯ হাজার মামলা বিচারধীন। এটা স্পষ্টত: প্রতীয়মান যে পুরূষরাও নানাভাবে নিগ্রহের শিকার হন। মোশারফের ঘটনা এটই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
হ্যা, আপনি এটা বলতে পারেন নারীরা অধিক হারে নির্যাতনের শিকার। যেহেতু নারীদের মধ্যে অসাক্ষরতার হার বেশী এবং শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যে প্রবেশগম্যতা কম, তাই তারা নির্যাতনের শিকার হন বেশী। সুতরাং, নিপীড়নকারী সে পুরূষ হোক কিংবা নারী তার কঠোর শাস্তিই কাম্য।

এম আব্দুল্লাহ

The Reader এর ছবি

সর্ব প্রথম মন্তব্যকারি রনিম কে বলছি-------
রুমানা মঞ্জুর কে নো মারসি বলার আপনি কে?? সায়িদ কে আপনি শুধুই ধিক্কার জানান, আর রুমানা কে নো মারসি?? তারমানে আপনি কি বলতে চান , পরকীয়া প্রেমের শাস্তি কি দুটি চোখ অন্ধ করে দেয়া?? কারো সাথে আইস স্কেটিং করার মানে কি পরকিয়ায় লিপ্ত হওয়া?? আপনার একচোখা মন্তব্য পরে মনে হল আইস স্কেটিংএর মানে না জেনেই আপনি অযথা এই ইস্যুয়ে লাফালাফি করছেন ।
আসলে রনিম ,
আপনি চাইছিলেন যেন রুমানা মঞ্জুরের বিরুদ্ধে পরকিয়ার অভিযোগ সত্যতা পায় । আর তাই মানব জমিন এর খবর পড়েই লাফিয়ে এসেছেন কমেন্ট দেবার জন্য ।
আমাদের জন্য আপনার কমেন্ট হল সতর্কবানী সরূপ, বোঝা গেল সমাজে এখনো সব নীতি অস্বীকার করে প্রকৃত অপরাধীর দোষ ঢাকার মানুষের অভাব নেই । আপনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, আমাদের এই সমাজে আপনার মত অসভ্য বর্বর একচোখা দুপেয়ে প্রাণীরা এখন মানুষের রুপ ধরে ঘুরে বেড়ায় ।
আপনার জন্য আমি বলি----
"আপনার একচোখা আচরন এবং সায়িদ কে ধিক্কার জানানোর মধ্য দিয়ে নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমান করার হাস্যকর প্রচেষ্টার জন্য আপনাকে ঘৃণা, আপনাকে নো মারসি। "

guest_writer এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

উন্মাদ_নাঈম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।