রূপার্ট মারডকের মালিকানাধীন এই ট্যাবলয়েড বহুল প্রচারিত। মারডককে বলা হয় মিডিয়া মোঘল। স্কাই টিভি, টাইম সহ তার মালিকানাধীন অনেকগুলো প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া রয়েছে। অনেকেই নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ড বিলুপ্তি বিষয়ে মারডকের সদিচ্ছা সম্পর্কে সন্দিহান। মারডকের কোম্পানির এই বছরের শেষের দিকে বি স্কাই বি”মিডিয়ার দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছে। সমালোচকদের মতে বৃহ ত্তর ব্যবসায়িক লাভের স্বার্থে মারডক নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ডকে বলি দিয়েছেন।
রূপার্ট মারডকের সাথে ক্ষমতাসীনদের সখ্য বেশ পুরনো। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সাথে তার ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক ছিল। বৃটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের সাথেও তার গভীর পারিরারিক বন্ধুত্ব রয়েছে যার জন্য ক্যামেরুন স্বদেশে প্রভূত সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছেন। নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ডের প্রাক্তন সম্পাদক এন্ডি কুলসনকে (Andy Coulson) প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন কোয়ালিশন সরকারের যোগাযোগ-সংক্রান্ত উচ্চপদে নিযুক্ত করেন। এন্ডি কুলসন সম্পাদক থাকাকালে ফোন হ্যাকিংয়ের ঘটনাগুলো ঘটেছিল। তবুও ক্যামেরুন তাকে দ্বিতীয়বারের মত সুযোগ দিয়েছিলেন, যদিও এ দফায় কুলসন যথারীতি ব্যর্থ হন। নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ড বন্ধের পর প্রদত্ত ভাষণে ক্যামেরুন কুলসনের নিযুক্তিতে তার ব্যর্থতার দায়িত্ব স্বীকার করেন।
ক্যামেরুন তার বক্তৃতায় রেবেকা ব্রুকসেরও সমালোচনা করেন। রেবেকা ব্রুকস হচ্ছেন নিউজ ইন্টারন্যাশনালের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং মারডকের একান্ত আস্থাভাজন। প্রধানমন্ত্রীর মতে প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে তার ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করা উচিত ছিল।
বিলুপ্তির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মিডিয়া মোঘলের ছেলে জেমস মারডক, যিনি কি-না ট্যাবলয়েডটির চেয়ারম্যানও, বলেন, ট্যাবলয়েডের ভাল কাজগুলো-"have been sullied by behaviour that was wrong - indeed, if recent allegations are true, it was inhuman and has no place in our company"। জেমস মারডকের মতে নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ড অন্যের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হলেও নিজেদের বেলায় তা নিশ্চিত করতে ট্যাবলয়েডটি শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়টি বিলাতে অত্যন্ত সংবেদনশীল। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য বিলাতে ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট রয়েছে। ইতিমধ্যে ব্রিটেনের বিরোধী দলীয়নেতা এড মিলিব্যান্ডও মারডকদের হাতে বিস্কাইবি এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বিরূদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যুগপৎ ফোন হ্যাকিংয়ের ঘটনা এবং নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ডেরসহ সমগ্র মিডিয়ার ভূমিকা বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সাম্রাজ্য বাঁচাতে মারডক উড়ে চলে এসেছেন যুক্তরাজ্যে। তার এই বিশাল মিডিয়াসাম্রাজ্য বাঁচাতে সম্ভব সবকিছু তিনি করবেন। তার হাতও অনেক লম্বা। দেখা যাক, তার তৎপরতা কতটুকু সফল হয়।
এম আব্দুল্লাহ
মন্তব্য
"Thank you and Good bye!!!"
ধন্যবাদ আপনাকেও পড়ার জন্য। এমনিতে গুডবাই বললেও মারডক ব্যাটা কম খাচ্চর নয়। হয়তো তারা তাদের সান পত্রিকার একটি রোববারের সংস্করণ বের করে ভ্যাকুয়াম পূরণ করবে।
বিবিসি (http://www.bbc.co.uk/news/uk-14097275) খবর প্রকাশ করেছে যে অভিনেতা হিউ গ্রান্টসহ অনেকের মতে নাউ (NoW) বন্ধ করা বুড়া মারডকের একটি পাশ কাটানো তৎপরতা বৈ আর কিছু নয়।
এম আব্দুল্লাহ
বড়লোকদের বড় বড় ব্যাপার। ছোটর উপর ভাল লিখেছেন। হ্যাকিং ইত্যাদি ঘটনাগুলোয় আরেকটু ডিটেল দিলে পারতেন।
ধন্যবাদ মন্তব্য এবং সাজেশনের জন্য। সমস্যা হচ্ছে বড়লোকেরা মিডিয়াগুলো কিনে নিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করছে।
আজকে নাউ হ্যাকিংয়ের জন্য মাফি চেয়ে পুরো ১ পৃষ্ঠা রেখেছে।
এম আব্দুল্লাহ
এত আইন কানুন থেকেই কী হলো! বজ্র আঁটুনির গেড়ো এভাবেই ফস্কে যায়
আপনার কথায় সত্যতা আছে। তবে, আইন থাকলে জবাবদিহিতা চাওয়া যায়। এন্ডিকে ইতিমধ্যে একবার পুলিশে ধরেছে। তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন।
ধন্যবাদ।
এম আব্দুল্লাহ
বিবিসি (http://www.bbc.co.uk/news/uk-14097275) খবর প্রকাশ করেছে যে অভিনেতা হিউ গ্রান্টসহ অনেকের মতে নাউ (NoW) বন্ধ করা বুড়া মারডকের একটি পাশ কাটানো তৎপরতা বৈ আর কিছু নয়।
...এতো বড় দৈত্যকে একটু পাশ কেটে যেতে বাধ্য করা গেছে; এটাই বা কম কিসে!!!!
ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্যের জন্য । এই দৈত্য কিন্তু সাংঘাতিক। অনেকেই হয়তো জানেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ব্রাউনের একটি সন্তান অসূস্থ। এ বিষয়ে পর্যন্ত গোপন তথ্য সংগ্রহে র প্রচেষ্টা চালিয়েছে তার মিডিয়া গ্রুপ। শুধু নাউ নয়, মারডকের মালিকানাধীন অন্য মিডিয়াগুলোও বিভিন্ন ধরণের কারসাজির সাথে জড়িত।
নিউজউইক মারডকের ওয়াটাগেইট (http://www.newsweek.com/2011/07/10/murdoch-s-watergate.html) শীর্ষক একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে যাতে মারডকের মিডিয়া সাম্রাজের অপতৎপরতার প্রতিবেদন রয়েছে ।
নতুন মন্তব্য করুন