মুগ্ধ আকাশ, দুগ্ধ কপোত তোমার ব্যাকুল হাতে
ঋতুবতী মেঘ, পাখির প্রবাহ, শালিকের গ্রহলোক
পালক পুকুরে টলোমল করে তোমার গভীর চোখ
তোমাকে একাকী উড়তে দেখেছি নক্ষত্রের রাতে।
তোমাকে দেখেছি উদিত গৃহের বৃক্ষদিনের ছাতে
তাঁতের শাড়িতে খেয়ালি বালিকা একেছো অবাক ছবি
নভোবালিকার সন্ধানে ফিরি রাঢ়বঙ্গের কবি
তোমাকে একাকী উড়তে দেখেছি শর্তবিহীন রাতে।
অচিনপুরের রুপোর থালায় জ্যোৎস্না ঝরানো ভাতে
তোমার মরাল গ্রীবার নেশায় রাত হয়ে গেছে পার
শনি, রবি, সোম, মঙ্গল শেষে এসেছে রৌদ্রবার
তোমাকে একাকী উড়তে দেখেছি বৃষ্টিবিলাসী রাতে।
দূর বাংলার নির্জন ফুল ঝরেছে পুষ্পপাতে
জলসিঁড়ি তীরে জীবনবাবুর চিলেরা তোমাকে খুঁজে
কবিতার ডালি পাঠিয়ে দিলাম - কবিতা কি কবি বোঝে?
তোমাকে একাকী উড়তে দেখেছি তোমারই রূপোলি রাতে।
দশটি আঙুল, দশখানি নোখ, তোমার ব্যাকুল হাতে
তাবৎ পৃথিবী, রৌদ্র-বৃষ্টি, জ্যোৎস্না ঝরেছে এসে
চলো তুমি-আমি উড়ে চলে যাই ধানশালিকের দেশে
আমরা দু'জন ভালোবাসা শিখি পাখিবন্যার রাতে।
---
মন্তব্য
শেষ স্তবকে একটি টাইপো নজরে এলো। ভুলটির কারনে মাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে।
'দশটি আঙুল, দশটি নোখ' না হয়ে হবে - 'দশটি আঙুল, দশখানি নোখ তোমার ব্যাকুল হাতে'
(অতিথি একাউন্ট বলে এডিট করতে গেলে বলছে - 'Access Denied'। এডমিন কি অনুগ্রহ করে ঠিক করে দিতে পারবেন?)
অনেক ধন্যবাদ !
-- সুমন তুরহান
বাহ, এই তো চাইছিলাম!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অসাধারণ, অসাধারণ!! মাত্রাবৃত্তের ছয়ের চাল (৬+৬+৬+২) চমৎকৃত করলো। 'মুগ্ধ' ও 'দুগ্ধ' শব্দটি শুরুতে স্বরবৃত্তের দুলকি চালে চলতে গিয়েও মাত্রাবৃত্তের বিশ্লেষী স্বভাববলে তিনটি করে মাত্রা আদায় করে নিয়ে কি সুন্দর মানিয়ে গেল।
কিন্তু
এই চরণে এসে মাত্রাফের হলো কেন? তিনমাত্রা আদায় করে নেবার মতো শব্দ সুমন তুরহানের ঝুলিতে নেই, বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
খুব ভালো লাগলো সুমন ভাই...................
প্রথমত যে আবেশ এসে আপনাকে একটা ঘোরের ভেতর নিয়ে যেয়ে লিখে ফেলতে বাধ্য করে তার আসাযাওয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আপনি এর আগে কীটস এর কবিতা অনুবাদ করেছিলেন, সেটা হয়েছিলো মনোমুগ্ধকর। সেই মুগ্ধতা নিয়েই কবিতা পড়তে শুরু করেছিলাম। জীবনানন্দের জলছাপ জায়গায় জায়গায় পড়েছে, সেটি দোষের কিছু নয় - আমারও পরে, সবারই পরে, পরতে পারাটাই বিরাট ব্যাপার মনে হয় আমার কাছে। আমার লেখা পড়ে খুবই উন্নাসিক ভঙ্গিতে এই কথা অনেকেই বলেছেন, তারপর একজন একদিন মনের ব্যাথা দূর করে দিয়েছিলেন এই বলে যে, ওটাই বাংলার টান, জীবনানন্দের মত খাটি বাঙালীর লেখার ছাপ সব বাঙলীর মধ্যে পড়তে বাধ্য কারন তার মত করে আর কেউ এইভাবে বুকের কথা বলেননি।
সুমন ভাই, আপনি লিখুন, লিখতে লিখতেই একজনের নিজ ভঙ্গীটা চলে আসে, মানুষ সমালোচনা করতেই থাকে, ছাপেনা কিন্তু যে লিখে তার কাজ লিখে যাওয়া - আমাদের নির্বান লিখে।
নিজের কথাগুলো বলতে খুব ইচ্ছে করলো কারন মনে হলো আমার দেখে দেখে যতটা শিখন তা আপনার সাথে সহযোগ করি।
লেখার খাতা, মোবাইল এর মেসেজ অপশন, ডায়েরী সবকিছুতে যখনই লেখা আসে - লিখুন, লিখে লিখে ভরিয়ে ফেলুন, কার ভালো লাগলো আর লাগলোনা তার জন্য অপেক্ষা করবেননা, নিজের জন্য লিখুন।
পাখিবন্যার মত কোন এক রাতে জোছনার মাঠে বসে কারো সাথে আদৌ কি হয়েছিলো ভালোবাসা!!!
রোমেল ভাই, অশেষ ধন্যবাদ। আপনার ভালো লাগা আমার জন্যে বিশেষ অনুপ্রারণার, সবসময়ই। এই নিন
ভাই মৃত্যুময়, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পরীক্ষার মধ্যেও সময় নিয়ে এসে পড়ে যাওয়ার জন্যে। আপনি প্রকৃতই কবিতার মানুষ। শুভ কামনা, আপনার পরীক্ষা ভালো হোক।
ধন্যবাদ কবি ধন্যবাদ...........
তানিম এহসান ভাই, অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে, আমার জীবনের সাথে আপনার জীবন ও চিন্তার মিল পাচ্ছি। আপনার অনুপ্রেরণার জন্যে ধন্যবাদ।
অসাধারন বলেছেন!
হা হা! কিছুটা সত্যতা তো রয়েছেই এই উন্মথিত কৈশোরক কাতরতার পেছনে।
কৈশরক কাতরতা বজায় থাকুক শুধু লেখনী নয়, মনেও
অনেকদিন পর তোর নতুন লেখা পড়লাম। ভালো লাগলো অনেক। আছস কেমন?
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
@ বালক - ভালোই আছি, সোহাগ। তুমি কেমন আছো? আসলেই অনেকদিন পর ...
যতবার পড়ছি, ততবারই ভাল লাগছে। কোথায় যেন পড়েছিলাম, কবিতা হচ্ছে, শব্দের তাজমহল। সুমন তুরহানও যেন এমনি এক তাজমহল বানিয়েছেন! শব্দ, ছন্দ, ভাবালুতা- সব মিলিয়ে কবিতাটি বারবার এক অচেনা জগতে নিয়ে যাচ্ছে। 'বৃক্ষদিনের ছাতে', 'শর্তবিহীন রাতে', 'জ্যোৎস্না ঝরানো ভাতে', 'পাখিবন্যার রাতে'-ইত্যাদি শব্দ কেমন এক আকুলতা সৃষ্টি করে মনে!
ধন্যবাদ মামুন ভাই, আপনি মন দিয়ে পড়েছেন বলে।
ভালো থাকবেন।
নতুন মন্তব্য করুন